♥Love At 1st Sight♥
~~~Season 3~~~
Part – 45
writer-Jubaida Sobti♥
স্নেহা : [ উঠে বারান্দায় গিয়ে ] হ্যালো!
রাহুল : আহহ! মন যেনো শান্তি খুজে পেলো?
স্নেহা : তা এতোক্ষণ অশান্তিতে ছিলেন বুঝি?
রাহুল : তা তো বটে, কারণ! তোমার পাশে থাকলে শান্তি লাগে, তোমাকে বুকে জড়িয়ে রাখলে শান্তি লাগে, তোমার কন্ঠ শুনতে শান্তি লাগে,সো্ তাই এখন শান্তি লাগছে! [ মুচকি হাসলো স্নেহা ]
– আচ্ছা! আমার ফাদার-ইন-লো কোথায়? আছে নাকি চলে গেছে? [ বলেই হাসতে লাগলো ]
স্নেহা : আম শিয়র! জারিফা,মার্জান আর আপনার তিনজনেরই মাথার একটা করে তার ছিড়া!
রাহুল : [ হেসে ] আচ্ছা? তা কেনো?
স্নেহা : আপনি তো করে গেলেন বাবার সামনে কান্ড সব, আর আপনি যাওয়ার পর শুরু করলো ওরা দু-জন!
রাহুল : কি করলো ওরা? [ স্নেহা হেসে হেসে সব বলতে লাগলো আর রাহুল ঐ দিকে হাসতে হাসতে শেষ হয়ে যাচ্ছে ]
স্নেহা : এমনভাবে বানিয়ে সাজিয়ে বাবার মাথা ঘুরিয়ে দিয়েছে, বাবা কোনো জবাবই দিলো না, চুপচাপ চিন্তা করতে করতে বেড়িয়ে গেলো রুম থেকে,
রাহুল : [ হেসে ] ইহাদের বলে আমার কিউট শালী, বাই দ্যা ওয়ে, ওরা কিন্তু সব সত্যিটাই বললো এইখানে বানানো কিছুই তো দেখলাম না,
স্নেহা : আচ্ছা? তো শুনি আপনার সানগ্লাস খোলা দেখে ক-জন মেয়ে বেহুশ হয়েছে?
রাহুল : [ হেসে ] কামঅন স্নেহা এসব কাউন্ট করে রাখার টাইম আছে নাকি?
স্নেহা : আচ্ছা! তাহলে আমি হলাম না কেনো বেহুশ?
রাহুল : হতেই তো ছিলা প্রথমদিনই স্টেশনে আমার প্রেমে পড়ে বেহুঁশ হয়ে যেতে ছিলা, বাট আমি ধরে ফেলেছিলাম,
– [ হেসে ] এনিওয়ে বলেও লাভ নেই তুমি এমনিতেও শিকার করবে না,
স্নেহা : নেভার! আমি কখনোই ঐ দিন বেহুশ হতে ছিলাম না! ওটাতো..
রাহুল : হ্যা! হাফ বেহুঁশ হয়েছিলা,কজ আমি সানগ্লাস খুলিনি পড়েইছিলাম! তাই..
স্নেহা : এক্সকিউজ মি! আপনি নিজের মুখে বলেছেন ঐদিন আপনি আমাকে ইচ্ছে করেই ধাক্ষা দিয়ে ফেলেছেন!
রাহুল : কি করার বলো ঐদিন তো আমি নিজেই বেহুঁশ গিয়েছিলাম, তোমাকে দেখে মনের মধ্যে গিটার বাজা শুরু করে দিয়েছিলো,
– হালকা বাতাসে উড়ছিলো তোমার কালো কালো চুল, লাল লাল গাল, গায়ে পেছানো কালো শাল, হলুদ রঙের জামা পড়ে যখন দৌড়ে যাচ্ছিলে পুরো মনে হচ্ছিলো বাদামে ভরা রসালো ভ্যানিলা আইস্ক্রীম,ধরার আগেই যেনো গলে পড়ে যাবে,
– সো্ আমি জাষ্ট সামনে পা এগিয়ে দিলাম তুমি হোচোট খেলে আমি ধরে ফেললাম, হিহি এত্তো সহজে গলতে দেই কিভাবে এই ভ্যানিলা আইস্ক্রীমকে বলো?[ স্নেহা একটু লজ্জা পেয়ে হেসে উঠে ]
রাহুল : আচ্ছা স্নেহা! একটা কথা জিজ্ঞেস করার ছিলো!
স্নেহা : হুমম! বলেন?
রাহুল : সামির তোমার বাবাকে কতো টাকা দিয়েছিলো?
স্নেহা : হ..হঠাৎ এটা জিজ্ঞেস করছেন?
রাহুল : স্নেহা! তুমি এখনো আমাকে ফাইনেন্সিয়াল ব্যাপারগুলো শেয়ার করতে আনইজি ফিল করো!
– কেনো? [ চুপ করে রইলো স্নেহা ]
রাহুল : লিসেন্ট! আমি চাইনা ঐ সামিরের ছায়া ও আর তোমার ফ্যামিলির উপর পরুক! সো্ বলো কতো টাকা দিয়েছিলো ?
স্নেহা : থা..থার্টি লাকস্!
রাহুল : ওকে![ স্নেহা কিছু বলতে যাবে হঠাৎ তখনি ]
মার্জান : [ ফোন কেড়ে নিয়ে ] আজ এতো কথা বলে ফেললে কাল কি বলবেন শুনি? কিছু কথা তো অন্তত জমা রাখেন জিজু!
রাহুল : আরে লিসেন্ট!
মার্জান : কিসের লিসেন্ট! কাল থেকে তো আপনার বকবক শুনতে শুনতে বেচারির কান জ্বালাপালা হয়ে যাবে, সো্ আজ আপনার ছুট্টি বাইইই! গুড নাইটটট! [ বলেই কেটে দিলো ফোন, রাহুলের ও কি আর করার হাসতে লাগলো সে, আর স্নেহাকে নিয়ে তার ফ্রেন্ডসরা আড্ডা দিতে দিতে রাত ঘনিয়ে ফেললো ]
পরদিন সকালে,
আজ তাড়াতাড়িই ঘুম ভাংলো রাহুলের,উঠেই দেখে লিভিং সোফায় ব্যাঙের মতো চিৎ হয়ে শুয়ে আছে আসিফ, আর দরজার দিক তাকাতেই দূর থেকে দেখা যাচ্ছে ড্রইং রুমের সোফায় চিৎ হয়ে শুয়ে আছে রিদোয়ান,
মনে মনে হাসতে লাগলো রাহুল,দুনোটা রাতে ড্রিংক্স খেতে খেতে ওতোটুকুতেই ঘুমিয়ে পড়েছে, আলসেমি কেটে উঠে পাশ থেকে পানির জাগটা নিয়ে আসিফের দিক এগিয়ে গেলো, বেখবর হয়েই ঘুমুচ্ছে একদম, রাহুল ও আর দেরী কিসের ঝরঝর করে ঢেলে দিলো পানি সব আসিফের মুখের উপর,
মুখে হাত রেখে চমকে উঠে বসলো আসিফ, মাথা নেড়ে পানি ঝেড়ে উপরের দিক তাকাতেই দেখে রাহুল হেসে হেসে দাঁড়িয়ে আছে, আসিফ ও আর এক সেকেন্ড লেইট করলো না পাশ থেকে ছোট একটি কশুন নিয়ে ছুড়ে মারলো রাহুলের গায়ে, রাহুল কেচ নিয়ে আবার রিটার্ন আসিফের দিক ছুড়ে মেরে হাসতে হাসতে ওয়াসরুমে চলে গেলো,ফ্রেশ হয়ে কাপড় চোপড় চেঞ্জ করে রুম থেকে বেড়িয়ে দেখে আসিফ দাঁড়িয়ে আছে ড্রইং রুমের বারান্দায়,আর রিদোয়ান এখনো ঘুমুচ্ছে চিৎ হয়ে,
রাহুল : [ রিদোয়ানের পাশে গিয়ে বসে কের্চ পড়তে পড়তে ] হেইই রিদ! উঠনা, আমাদের ওর আগে পৌছাতে হবে তো তাই না!
রিদোয়ান : [ ঘুমন্ত অবস্থায় ] ইয়াহ বেবী! আ লাভ ইউ টু
রাহুল : [ অবাক হয়ে ] হোয়াটট?
আসিফ : [ হেসে হেসে এগিয়ে এসে ] এই তো দিনের মধ্যে সপ্ন দেখছে এখনো!
রাহুল : [ রিদোয়ানকে নাড়িয়ে দিয়ে ] ও হ্যালো! আম নট জারিফা! আই এম রাহুল!
রিদোয়ান : রাহুল! আজকে, হ্যা! আজকেই ওর বিয়ে!
রাহুল : [ কিটকিটিয়ে হেসে ] ওহ মাই গড! এই তো এখনো ড্রাংকে!
আসিফ : হ্যা! তো পানি গুলো ওকেই মারা উচিৎ ছিলো না? ইডিয়ট [ বলেই ডাইনিং টেবিল থেকে এক গ্লাস পানি ঢেলে নিয়ে ছুড়ে মারলো রিদোয়ানের মুখের উপর ]
রিদোয়ান : [ চমকে গিয়ে মাথা ঝেড়ে উঠে বসে ] হোয়াট দ্যা হেল?
আসিফ : [ চোখ টিপ মেরে ] গুড মর্নিং!
রিদোয়ান : উইন্টারে ঠান্ডা পানি মেরে ঘুম থেকে উঠিয়ে আবার বলিস গুড মর্নিং, [ চেচিয়ে ] এটাতো বেড মর্নিং এর চেয়ে ও খারাপ!
আসিফ : এক্সুলি তোর মাথায় চেপে থাকা ভুতটা ঝাড়ছিলাম!
রিদোয়ান : ভুত আমাকে না! তোদের চেপেছে, আর এসব কি পড়ে ঘুরছিস? জামা কাপড় না পড়ে, হাফ-প্যান পড়ে হট সেজে বসে আছিস!
আসিফ : আচ্ছা? আর তুই জামাকাপড় পড়ে অনেক কুল সেজে বসে আছিস তাই না! [ বলতেই রিদোয়ান নিজের দিক তাকিয়ে দেখে অলরেডি সে নিজেও থ্রি-কুয়াটার প্যান্ট পড়ে খালি গায়ে বসে আছে ]
রিদোয়ান : [ রাহুলের দিক তাকিয়ে ] ওওও আবার আপনি কোথায় যাচ্ছেন এভাবে ক্রেজুয়েল সেজেগুজে, সেক্সি সেক্সি পার্ফিউম লাগিয়ে? বিয়ে তো রাতে তাই না?
রাহুল : তো আমি কি ক্রেজুয়েল পড়ে বিয়ে করতে যাবো? তোর দিমাগ গেছে আজ! [ দাঁড়িয়ে গিয়ে ] আমি যাচ্ছি দাদীর কাছে, তোরা ফ্রেশ হয়ে ব্রেকফাস্ট করতে আয়,
রিদোয়ান : ওকে, দাদীকে আমার পক্ষ থেকে গুড মর্নিং বলেদিস! [ বলেই আবার শুয়ে যায় ]
রাহুল : ওকে [ বলেই এগিয়ে গিয়ে টেবিল থেকে জাগটা হাতে নিতেই, রিদোয়ান একলাফে উঠে দৌড় মারে ওয়াসরুমে,রাহুল আর আসিফ হাসতে থাকে ]
রাহুল দাদীর কাছে যাওয়ার উদ্দেশ্যে গেষ্ট হাউজ থেকে বেড়িয়ে বাড়ীতে ঢুকলো, ড্রইং রুমে আসতেই দেখে দাদী বসে আছে ডাইনিং টেবিলে নাশতা নিয়ে,
রাহুল : গুড মর্নিং দাদী! [ বলেই চেয়ার টেনে দাদীর পাশে গিয়ে বসলো ]
দাদী : আরে! তোর সারভেন্ট বললো আসিফ আর রিদোয়ান ও এসেছে ওরা কই?
রাহুল : আসছে! ফ্রেশ হচ্ছে!
দাদী : আচ্ছা! এই নে, তাহলে তুই শুরু কর! [ বলেই বাটার লাগিয়ে একটি ব্রেড এগিয়ে দিলো রাহুলের প্লেটে ]
রাহুল : দাদী! আমার একটা চেক লাগবে! থার্টি লাকস্ এর!
দাদী : এবার আবার কোন গাড়ীর উপর ক্রাশ খেয়েছিস? গাড়ী কিনতে কিনতে তো গ্যারেজটাকে শো-রুম বানিয়ে ফেললি!
রাহুল : উফফো দাদী গাড়ীর জন্য না! ব্যাস লাগছে!
দাদী : তা আমি দিতে যাবো কেনো? তোর একাউন্ট থেকেই নে!
রাহুল : ফিনিশ!
দাদী : তোর একাউন্ট ফিনিশ করে আমার একাউন্ট ফিনিশ করার ধান্ধায় থাকিস সবসময়!
রাহুল : আহা এতো কিপ্টামি করছো কেনো? তোমার তো বড়লোক ছেলে আছে, ওয়ান-টু তেই একাউন্ট ভরিয়ে দিবে!
দাদী : এর চেয়ে বড়লোক তো নাতি আছে, বিনা মেহনতে যার একাউন্ট ভরে যায়, নিজেরটা শেষ হলে ও কোনো চিন্তা নেই দাদীরটার পেছনে পড়ে থাকে, আজেবাজে কাজে টাকা অপচয় করতে থাকে সারাক্ষণ!
রাহুল : দেখো দাদী, দাদা তো নেই! তুমি সিংগেল মানুষ, এতো টাকা একাউন্টে ফেলে রাখলে মরিচা ধরে যাবে, সো্ কিছু টাকা আমাদের শেয়ার করলে প্রবলেমটা কই বলো তো?
দাদী : ব্যাস! রাহুল শুধু তোকে এটা মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য যে এভাবেই জীবনটা চলে যাবে না, তোর বাবার ও বয়স হচ্ছে, একজন মানুষ একা এতোকিছু সামলাতে কতো কষ্ট হচ্ছে জানিস?
– এখন তো তুই ও বিয়ে করতে যাচ্ছিস তোর ও এসব দায়িত্ব নেওয়া দরকার, বিজনেসে হাত বাটা, তারপর যা নিজের ইচ্ছা মতো কর তাতে আমার কোনো প্রবলেম নেই!
– এমনিতে ঠিকই তো করছে স্নেহার বাবা! এমন বেকার ছেলেকে নিজের মেয়ে কেই বা দিতে চাইবে!
রাহুল : তুমি আর স্নেহার বাবা, আই মিন আমার ফাদার-ইন-লো সেইম ব্লাডের তৈরী এবার বুঝলাম,
দাদী : আর তুই তো স্পেশাল ব্লাডের তৈরী তাই না?
রাহুল : তা নয়তো কি? যদি তোমার ব্লাড আমার ব্লাডের মতো স্পেশাল হতো তাহলে আমার বিরুদ্ধে কথা বলতে না,
– আচ্ছা আচ্ছা প্লিজ এসব বাদ দাও, এবার বলো দিচ্ছো কি দিচ্ছো না?
দাদী : কি করবি শুনি এতো টাকায়?
রাহুল : [ দাত দেখানো একটা হাসি দিয়ে ] আমার কাফনের কাপড় কিনবো!
দাদী : থার্টি লাকস্ টাকার?
রাহুল : জী! মিসেস ওয়াহিদ তাওয়াবের নাতি বলে কথা!
দাদী : [ হেসে ] শয়তান কোথাকার! [ বলেই উঠে রুম থেকে চেক আনতে চলে যায় ]
_______________________________________
এইদিকে স্নেহা ফ্রেশ হয়ে ওয়াশরুম থেকে বেরুতেই দেখে মার্জান,জারিফা,শায়লা তিনজনই কাপড়-চোপড় পড়ে রেডি হচ্ছে,
স্নেহা : আরে! তোরা ভার্সেটি যাচ্ছিস?
মার্জান : না..নাহ তো! আ..আমরা একটু শপিং এ যাচ্ছি!
স্নেহা : এই সময়?
[ কনফিউজড এ পড়ে গেলো মার্জান, পড়লো তো ধরা, কি বলবে মাথায় কিছুই আসছে না ]
শায়লা : [ হেসে ] মজা করছিলো মজা! কোথাও তো যাচ্ছিলাম না! তাই না!
জারিফা : হ্যা! হ্যা!
স্নেহা : কিছু লুকাচ্ছিস তোরা আমার কাছ থেকে?
মার্জান : আ..আন্টি ডাকছে ব্রেকফাস্ট করতে! হ্যা! [ বলেই চলে গেলো পাশের রুমে ]
জারিফা : খিধেই পেটে ডিজে চলছে, ব্রেকফাস্ট করে আসি! তুই ও আয়! কেমন [ বলেই চলে গেলো মার্জানের পিছু পিছু শায়লা ও একটু হেসে বেড়িয়ে গেলো রুম থেকে ]
স্নেহা : [ কনফিউজড হয়ে ] আজিব! সকাল সকাল সবাই এমন বিহেভ করছে কেনো?
– এনিওয়ে, এদের মাথায় তো ভুত চড়তে দু-মিনিটই লাগে না,
[ বলেই মাথা আঁচড়ে চোখে চশমা লাগিয়ে টেবিলে চলে যায় ব্রেকফাস্ট করতে, ব্রেকফাস্ট শেষে সবাই আবারো রুমে এসে বসে থাকে, স্নেহা সবার দিক ঘুরঘুর করে তাকাচ্ছে, কেমন যেনো মনে হচ্ছে ওদের মাথায় কিছু পাকিয়েছে ]
স্নেহা : গাইস্ তোরা ঠিকাছিস তো?
জারিফা : হ্যা! ঠিকই তো আছি! একদম ফাটাফাটি! তুই বল? তোর কি অবস্থা?
স্নেহা : আমার কি অবস্থা মানে?
মার্জান : [ জারিফাকে চিমটিয়ে ] না নাহ! এক্সুলি ও এটা বুঝাতে চাইছে যে রাহুল আর তোর রাতে কথা হয়েছে, যা যা কথা হয়েছে সব ঠিকাছে তো?
স্নেহা : কিসব পাগলের মতো কথা বলছিস তোরা? সবই তো ঠিকাছে!
মার্জান : আচ্ছা?
স্নেহা : হুমম!
মার্জান : রাতে তো ভালো করে কথা বলতে পারিস নি, ফোন নিয়ে ফেলেছিলাম এখন ফোন দিয়ে কথা বল,
স্নেহা : এখন হয়তো ঘুমাচ্ছে! আর এমনিতেই লাগলে ও নিজেই দিবে, কিন্তু তোরা হঠাৎ..
জারিফা : [ চেচিয়ে ] না নাহ আসলে ও ভাবছিলো তুই এখন রাহুলের সাথে কথা বলবি, আর যদি না বলিস তোর মোবাইল ফ্রি থাকলে একটু গেইমস খেলবে! তাই..
স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] সিরিয়াসলি?
মার্জান : [ একটা তালি দিয়ে ] আরে ওয়াহ! মাইন্ডব্লোয়িং আইডিয়া!
[ স্নেহা হা করে তাকিয়ে আছে তাদের দিক কিছুই বুঝতে পারছে না ]
মার্জান : আই মিন..বোরিং হচ্ছিলাম এতোক্ষণ তাই গেইমস খেলাটা কি মাইন্ডব্লোয়িং আইডিয়া তাই না?
জারিফা : হ্যা হ্যা! মোবাইলটা দে এইবার!
স্নেহা : [ মাথা নাড়িয়ে ] টে..টেবিলেই আছে!
মার্জান : [ মোবাইল এগিয়ে নিয়ে ] আরে হ্যা! টেবিলেই তো ছিলো! [ দাতকিলিয়ে জারিফার দিক তাকিয়ে ] দেখিস নি এতোক্ষণ!
[ স্নেহা আর কিছু বললো না তাদের বিহেইভিয়ার দেখে সে নিজেই পাগল হয়ে যাচ্ছিলো ]
আধঘন্টা হয়ে গেলো, হঠাৎ দরজায় বেল বেজে উঠলো,জারিফা, মার্জান, শায়লা তিনজনই একলাফে উঠে এগিয়ে যেতে লাগলো দরজা খুলতে, তাদের কান্ড দেখে অবাক হয়ে স্নেহা ও এগিয়ে গেলো তাদের পেছন পেছন, স্নেহার বাবাই আগে গিয়ে দরজা খুললো,
স্নেহা : [ মনে মনে অবাক হয়ে ] রাহুল?
রাহুল : [ হাত নাড়িয়ে ] হ্যালো স্যার! আ..স্নেহা আছে বাসায়?
– [ একটু চিন্তা করে ] ওহ সরি! স্নেহা তো এইখানেই থাকবে তাই না? একটু সাইড প্লিজ! [ স্নেহার বাবা সাইড দিয়ে পেপার হাতে নিয়ে সোফায় বসে পড়লো ]
রাহুল : [ ভেতরের দিক এগিয়ে গিয়ে চিৎকার করে ] হেইই সুইটহার্ট, অওওও কিনা লাগছে তোমায়, আজ বিয়ে বলে একদম গোলাপের পাপড়ির মতো ফুটে উঠেছো! [ স্নেহা তার বাবার দিক একবার তাকিয়ে সাথে সাথে আবার মাথা নিচু করে ফেললো ]
রাহুল : [ হালকা করে স্নেহার ঘাড়ের চুল সরিয়ে দিয়ে, আলতো করে স্লাইড করে করে ] কি যেনো একটা এইখানে? [ বাকিরা মিটমিট করে হেসে মুখ লুকাতে ব্যস্ত ]
স্নেহা : [ রাহুলের হাত তাড়াতাড়ি সরিয়ে দিয়ে ] কি করছেন আপনি?
রাহুল : [ আবারো স্নেহার চুলের দিক ঝেড়ে দিয়ে ] নাহ কিছু না! [ বলেই তেডি স্মাইল দিয়ে স্নেহার ফ্রেন্ডসদের দিক তাকিয়ে চোখ টিপ মারলো ]
রাহুল : [ ফিসফিসিয়ে ] স্নেহা! সব ঠিকাছে তো? আই মিন তুমি ঠিকাছো তো? যেভাবে মেসেজ দিয়ে বললা, সুইটহার্ট এক্ষুনি দেখা করো আমার সাথে লেইট করলে কিন্তু দেখবা বিয়ে ক্যান্সেল! যেভাবে হুমকিটুমকি দিলা আমিতো ভয়ে তাড়াহুড়ো করে চলেএসেছি,
– বাই দ্যা ওয়ে! আই লাইক ইট! সরাসরি বলতে না পারলে ও মেসেজে তুমি করেই বললা!
স্নেহা : [ শকড হয়ে ] এক্সকিউজ মি? আমি আপনাকে এসব মেসেজ কবে দিলাম?
– সুইটহার্ট তারউপর তুমি করে ? দেখেন আপনার হয়তো কোথাও ভুল হচ্ছে,
রাহুল : ওকে, [ বলেই পকেট থেকে মোবাইলটা বের করে মেসেজ গুলো এনে স্নেহার হাতে ধরিয়ে দেই ]
স্নেহা : [ কনফিউজড হয়ে ] আরে এসব আমি.. [ বলতেই হঠাৎ মাথায় এলো মোবাইল নিয়ে তো এতোক্ষণ ঐ তিনজনই ঘাটাঘাটি করছিলো, পাশফিরে আড়চোখে তাকালো তিনজনের দিক, সাথে সাথে তিনজন চেহেরায় এমনভাব নিয়ে এলো যেনো কিছুই জানেনা ]
রাহুল : কি হলো?
স্নেহা : কিছুনা! [ মার্জান, জারিফা, শায়লা তিনজনই মাথা এগিয়ে কান পেতে রইলো কি বলাবলি করছে ]
রাহুল : আচ্ছা আমার সাথে চলো একটু গাড়ীতে, লেপটপে তোমার ড্রেসের ডিজাইন দেখাবো!
মার্জান : [ এগিয়ে এসে ] আরে জিজু! শুধু ডিজাইন কেনো? ডিজাইন চয়েজ করার পর দুজন একসাথে গিয়ে ড্রেসটাও নিয়ে আসুন,একসাথে ঘুরাঘুরি ও হয়ে যাবে!
রাহুল : বাট! আমাদের গিয়ে আনতে হবে না! সিলেক্ট করে দিলে ওরাই পাঠিয়ে দিবে সন্ধ্যার আগে!
মার্জান : আচ্ছা! তাহলে এমনিই ঘুরে আসুন কোথাও,
– আ..আই মিন আর কিছু ঘন্টার জন্যই তো ব্যাচেলর থাকবেন এরপর তো আপনারা ম্যারেড হয়ে যাবেন তাই না?
রাহুল : ওহ ইউ মিন! ব্যাচেলর পার্টি!
মার্জান : ইয়া ইয়াহ!
রাহুল : ওওও..নট বেড আইডিয়া! থেংক ইউউ! বাট তোমরাও সাথে চলো আরো মজা হবে!
মার্জান : না নাহ! [ হেসে ] আমরা আপনাদের মাঝে কাবাব মে হাড্ডি হয়ে যাবো! আপনারাই যান শুধু! আর আমাদের এমনিতেও রাতের জন্য অনেক কিছু তৈরী করা বাকি!
রাহুল : নো দ্যাটস্ ওকে চলো কিছু হবে না, তৈরী সৈরী এগুলো এসেও করা যাবে,জাষ্ট দু-তিন ঘন্টায় তো!
মার্জান : আরে জিজু বললাম তো, আপনারাই যান শুধু, আমার তো সকাল সকাল কোথাও বেড়াতে গেলে প্রেশার বেড়ে যায়, আর জারিফার?
– ওর মাথা ঘুরায়, শায়লার কথা তো বাদই দিলাম ও বমি করতে থাকে,ইয়াককক! [ জারিফা আর শায়লা ও মাথা নাড়ালো, রাহুল আর স্নেহা হা করে তাকিয়ে আছে ]
মার্জান : আরে এ..এতো অবাক হচ্ছেন কেনো? যান! লেইট হয়ে যাচ্ছে তো, ঐদিকে আবার তাড়াতাড়ি ও তো ফিরতে হবে তাই না?
রাহুল : [ মাথা নাড়িয়ে ] হুমম! ওকে চলো স্নেহা!
স্নেহা : আমি এখন কোথাও যাচ্ছিনা! আর অতো ডিজাইন-টিজাইন ও লাগবে না আমার ড্রেসে, আপনি যে কোনো একটা নিলেই হবে!
জারিফা : ইয়াকক, কতো নিরামিষ এই স্নেহা!
শায়লা : চুপ কর!
রাহুল : [ হুট করেই স্নেহাকে কোলে তুলে নিয়ে ] তুমি না গেলে তোমায় উঠিয়ে তো নিয়ে যেতে পারি! [ স্নেহা কিছু বলতে যাবে তখনিই ]
রাহুল : শিসসস! চেচাবা না, তোমার বাবা হয়তো পেছন থেকে দেখছে, তুমি চেচালে উনি ভাববে হয়তো আমি তোমাকে জোড় করে নিয়ে যাচ্ছি!
স্নেহা : ঠিকিতো জোড় করেই তো নিচ্ছেন!
রাহুল : কথা বেশি বলো!
স্নেহা : নামান আমাকে, আপনার লজ্জাশরম কিছু নেই! বাবার সামনে এসব..
রাহুল : [ চেচিয়ে ] স্নেহা! তোমার বাবা-মা তোমাকে ঠিক মতো খাওয়াতো তো?
– না আসলে তোমাকে কোলে তুলে ওজন দেখে মনে হচ্ছে ঠিকমতো খাবারটাও দিতো না,
স্নেহা : আপনি আবার..
রাহুল : শাট-আপ! [ বলেই স্নেহাকে নিয়ে হেটে চলে যাচ্ছে, হঠাৎ স্নেহার মাকে দেখে ]
– হ্যালো আন্টি! গুড মর্নিং! ব্রেকফাস্ট করেছেন?
স্নেহার মা : [ মুচকি হেসে ] হুমম! তুমি করেছো?
রাহুল : না এক্সুলি,আমি না স্নেহার সাথে দেখা হোওয়ার পর থেকে ওর হাত ছাড়া ব্রেকফাস্ট করতে পারিনা,তাইই…
স্নেহা : মিথ্যুক!
রাহুল : [ ফিসফিসিয়ে ] শাট-আপ স্নেহা! কথার মাঝে কথা বলে আটকিয়ে দিও না,[ বলতেই স্নেহা দিলো একটা চিমটি ]
রাহুল : [ ব্যাথা কন্ট্রোল করে স্নেহার মায়ের দিক তাকিয়ে ] ওকে আন্টি আসি! [ বলেই তেডি স্মাইল দিয়ে স্নেহার দিক একবার তাকিয়ে সোজা হেটে বেড়িয়ে যায় ]
_______________________________________
মার্জান : [ এক্সাইটেড হয়ে ] বাহহ! প্লেন তো বরাবর কাজে লেগেছে! কিন্তু এখন আমাদের বেরুতে হবে তাড়াতাড়ি,তুই বলেছিস রিদোয়ানকে?
জারিফা : হ্যা হ্যা! চল এইবার তাড়াতাড়ি!
শায়লা : আমাদের কিন্তু রাহুল স্নেহাকে নিয়ে বিজি থাকা অবস্থায় তাড়াতাড়ি ফিরতে হবে,নাহলে একবার রাহুলের চোখে পড়লে পুরাই সর্বনাশ!
মার্জান : দেখ টেনশন দিশ না! এমনিতেই টেনশনে আছি যেটা করতে যাচ্ছি ওটা হয় কিনা কি জানি, [ জারিফা আর শায়লা বেড়িয়ে যাচ্ছে ব্যাগ কাধে নিয়ে ]
মার্জান : [ চেচিয়ে ] আরে আরে কোথায় যাচ্ছিস?
জারিফা : কেনো?
মার্জান : [ বারান্দায় উকি দিয়ে ] রাহুলের গাড়ী এখনো বেরুইনি, ওর গাড়ী বের না হওয়া পর্যন্ত আমরা বের হতে পারবো না,
– তখন আমাদের বেরুতে দেখলে সন্দেহ করবে!
শায়লা : হ্যা সেটাও ঠিক! [ বলেই কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে রইলো সবাই ]
জারিফা : আরে দেখ বেড়িয়ে যাচ্ছে রাহুলের গাড়ী!
মার্জান : ওকে ব্যাস! চল এইবার!
চলবে…