Love At 1st Sight Season 3 Part – 43

0
5333

Love At 1st Sight
~~~ Season 3~~~

Part – 43

writer-Jubaida Sobti

রাহুল : হ্যালো!

মার্জান : হ্যালো! পেয়েছেন স্নেহাকে?..

রাহুল : না এখনো পাইনি আই ডোন্ট নো হয়ার ইজ শি! বারবার বলেছিলাম একা বের হবা না বাট আমার কথা কেয়ারই করলো না!

মার্জান : আ..আচ্ছা!

রাহুল : পেলে জানাবো!

মার্জান : ওকে! [ ফোন কেটে রাগান্বিত ভাবে পাশের সিটে ছুড়ে মারলো রাহুল, ফাষ্ট ড্রাইভিং করছে, তাও যেনো পথ ফুরাচ্ছেই না ]
_______________________________________
শায়লা : কি বললো রাহুল?..

মার্জান : [ চিন্তিত ভাবে ] এখনো পাইনি! রাহুল ও অনেক রেগে আছে,

শায়লা : রাগারই তো কথা, তখন আসলে ওকে আমাদের যেতে দেওয়া উচিৎ ছিলো না! রাহুল যখন নিষেধ করেছিলো নিশ্চয় কোনো কারণ ছিলো তাই হয়তো নিষেধ করেছে!

মার্জান : আমিও তাই ভাবছি! এ..এক সেকেন্ড [ বলেই ফোনটিপে আবার জারিফাকে কল দিলো ]

জারিফা : হ্যা মার্জান বল?..

মার্জান : জারিফা! স্নেহাকি তোর সাথে আছে?..

জারিফা : স্নেহা? ওকে তো অনেক আগেই পৌছেদিলাম!

মার্জান : আচ্ছা?..

জারিফা : কেনো কি হয়েছে? সব ঠিকাছে তো?..

মার্জান : কিছুই ঠিক নেই! রাহুল ওকে রিসিভ করতে গেলো, কিন্তু গিয়ে দেখে ও নেই,

জারিফা : নেই মানে?..

মার্জান : হুমম! ভাবলাম তুই কিছু জানিস নাকি একটু চেক করে দেখি! কিন্তু তুই ও তো দেখছি কিছু জানিস না,তাহলে গেলো কই!

জারিফা : আরে এমনি কেমনি নেই! গেলো কই ও?..

মার্জান : আই ডোন্ট নো! [ কাদো ভাবে ] আমারই দোষ ছিলো কেনো যে তখন ওকে পাঠালাম!
– আচ্ছা আমি এখন রাখছি পরে কথা হবে! [ বলেই কেটে দিলো ]

শায়লা : [ অবাক হয়ে ] কোথায় যাচ্ছিস?..

মার্জান : [ ব্যাগ কাধে নিয়ে ] তাহলে কি বসে থাকবো?ওকে আমরা পাঠিয়েছি দোষ আমাদের!

শায়লা : কিন্তু কোথায় খুজবি?..

মার্জান : ওর মামার বাসায় গিয়ে আরেকবার চেক করে আসি, উফফ আর যেখানেই খুজতে হয়না কেনো! খুজতে তো হবেই!

শায়লা : আচ্ছা চল আমিও যাবো!

মার্জান : নাহ তুই থাক, জারিফা এক্সট্রা চাবি নিয়ে যায়নি! যদি বাসায় আসে দরজা কে খুলবে! তুই থাক,

শায়লা : আচ্ছা সাবধানে যাস! [ বেড়িয়ে গেলো মার্জান ]
_______________________________________
এইদিকে, গাড়ী চলছে,জারিফাও টেনশনে পড়ে গেলো,
– [ মনে মনে ] কোথায় হবে স্নেহা! উফফ কেনো যে একা রেখে এলাম ওকে! আমার ও সাথে থাকা উচিৎ ছিলো,

রিদোয়ান : কি হয়েছে? অনেক টেনশনে মনে হচ্ছে?

জারিফা : স্নেহাকে পাওয়া যাচ্ছে না! রাহুল ওকে খুজে বেড়াচ্ছে, না জানি কই আছে,

রিদোয়ান : হোয়াট?.. পাওয়া যাচ্ছে না মানে কি?..

জারিফা : [ চেচিয়ে ] সেটাই তো!

রিদোয়ান : আচ্ছা ওয়েট আমি দেখছি! [ বলেই মোবাইলটা এগিয়ে নিয়ে রাহুলকে ফোন দিলো ]
_______________________________________
ফোন বেজে উঠলো রাহুলের,

রাহুল : [ বিরক্তি হয়ে ] ডেম ইট! আবার কে! [ হাত বাড়িয়ে পাশের সি্ট থেকে এগিয়ে নিলো ফোনটা ]

আসিফ : রাহুল! কোথায় তুই দোস্ত ? কখন থেকে বসে আছি সব আ্যরেঞ্জ করে, [ হেসে ] এবার বল আমাদের ভাবিকে নিয়ে কবে আসছিস [ চুপ করে রইলো রাহুল, কথাটা শুনতেই বুকটা মোচোড় দিয়ে উঠলো ]

আসিফ : কি হলো? কিছু বলছিস না কেনো?

রাহুল : [ কাদো ভাবে ] আরে ওকেই তো পাচ্ছি না!

আসিফ : [ শকড হয়ে ] এটা কি বলছিস?..

রাহুল : [ রাগান্বিত ভাবে দাতকিলিয়ে ] সামির!

আসিফ : ওহ নো! কই আছিস এখন?..

রাহুল : নেহার বাসায় যাচ্ছি!

আসিফ : ওকে আমি আসছি!

রাহুল : লিসেন্ট! গাড়ীর পেট্রোল ও বোতোলে ভরে আনিস! ইজিলি মুখ খুলবে না, মাথার রাগ সব ওকে জালিয়ে ঠান্ডা করবো,

আসিফ : ওকে ডোন্ট ওয়ারি! রিলেক্স থাক, [ রাহুল ফোন রাখবে ঐটাইমেই রিদোয়ানের কল এসে হাজির ]

রিদোয়ান : কার সাথে কথা বলছিলি ?

রাহুল : আসিফ!

রিদোয়ান : পেয়েছিস! স্নেহাকে?

রাহুল : নো! ব্যাস যাচ্ছিই..

রিদোয়ান : কোথায়?

রাহুল : ঐ শেমলেস্ লেডির কাছে!

রিদোয়ান : [ অবাক হয়ে ] নেহার বাসায়?.. কিন্তু ওর বাসায় কেনো?..

রাহুল : এখন কিছু আস্ক করিস না দোস্ত!

রিদোয়ান : আচ্ছা চিন্তা করিসনা! বাট আমার মনে হয়, নেহার কাছে না গিয়ে ডিরেক্ট সামিরের কাছে যাওয়া উচিৎ নিশ্চয় ওই স্নেহাকে,আই মিন বুঝতে পারছিস তো!

রাহুল : আই ডোন্ট নো হয়ার ইজ সামির! এন্ড আই এম ডেম শিয়র! স্নেহা সামিরের সাথেই আছে, সো্ সামির কোথায় এটা জানার একমাত্র ওয়ে হচ্ছে নেহা!

রিদোয়ান : দ্যাটস্ দ্যা পয়েন্ট! আচ্ছা ওকে তুই ফোন রাখ! [ বলেই কেটে দিলো ]

জারিফা : কি হলো?ঐ সামিরই নিয়ে গেছে স্নেহাকে তাই না!

রিদোয়ান : হুম!

জারিফা : [ কাদো ভাবে ] যেটা ভাবিওনি সেটাই হয়ে গেলো! নাজানি স্নেহা কোন অবস্থায় আছে, [ চেচিয়ে ] আর আপনি করছেনটা কি?চলেন তাড়াতাড়ি সামিরের কাছে,

রিদোয়ান : আরে টেনশন নিচ্ছো কেনো! কিছু হবে না স্নেহার! [ বলেই গাড়ী ফাষ্ট ড্রাইভ করে নেহার বাসায় এসে পৌছালো ]

জারিফা : এটা কার বাড়ি!

রিদোয়ান : তুমি গাড়ীতে থাকো বের হবা না! আমি আসছি!

জারিফা : বাট আপনি কোথায় যাচ্ছেন?

রিদোয়ান : জারিফা! এটা নেহার বাসা!

জারিফা : [ চেচিয়ে ] আপনি এই পেত্নীর বাসায় কেনো আনলেন এইখানে কাজ কি?..

রিদোয়ান : দেখো! এখন এতোকিছু বলার টাইম নেই! আমি তোমাকে সব পরে বুঝিয়ে দিবো! ব্যাস দয়া করে গাড়ী থেকে নেমো না!

জারিফা : কিন্তু আপনাদের যদি আমার প্রয়োজন হয়? [ আড়চোখে তাকালো রিদোয়ান ]

জারিফা : আচ্ছা আচ্ছা! ঠিকাছে! [ রিদোয়ান বেড়িয়ে এলো গাড়ী থেকে, তাড়াহুড়ো করে এগিয়ে গিয়ে নেহার বাসার বেল বাজালো, সারভেন্ট এসেই দরজা খুললো, রিদোয়ান ভেতরের দিক তাকালো কিন্তু কাউকেই দেখতে পেলো না, তাহলে গেলো কই বাকিরা]

রিদোয়ান : নে..নেহা কোথায়?

সারভেন্ট : মেম রুফটফে আছে, এক্সারসাইজ করছে!

রিদোয়ান : আ..আর কেউ আছে সাথে?..

সারভেন্ট : দু-জন ফ্রেন্ড এসেছে! রুফটপেই আছে!

রিদোয়ান : ওকে থেংক্স [ বলেই হুটহাট করে শিরি বেয়ে রুফটপে উঠে পড়লো, সামনে এগুতেই থমকে দাঁড়িয়ে পড়ে, রাহুল বসে আছে চেয়ারে দু-হাত একসাথেই মুচরামুচড়ি করছে, আসিফ দাঁড়িয়ে আছে পকেটে হাত রেখে, নেহা হেসে হেসে দাঁড়িয়ে জুস খাচ্ছে ]

নেহা : [ চেচিয়ে ] ওয়াওও হোয়াট এ সারপ্রাইজ রিদ! কাম কাম,ব্যাস তোরই কমতি ছিলো,বল কি নিবি?..চা,কফি,জুস?.. [ রিদোয়ান অবাক হয়ে রাহুলের দিক তাকালো ]

নেহা : আরে ওদের দিক তাকিয়ে কি দেখছিস?ওদের অনেক্ষণ ধরেই আস্ক করে যাচ্ছি কি নিবে কিন্তু ওদের মুখে সেই একই কথা!

রাহুল : [ রাগান্বিত ভাবে দাঁড়িয়ে ] দেখ নেহা! তুই মেয়ে! সো আমি চাই না তোর গায়ে হাত তুলতে!

নেহা : [ রাহুলের কাছে এসে ] বাট আমি চাই রাহুল! তুই আমার গায়ে হাত তুল [ নিজের গলায় নিজে স্লাইড করে ] এভাবে আদর করে!

রাহুল : [ নেহার হাতে বাড়ি মেরে জুসের গ্লাসটা ফেলে দিয়ে ] লিসেন্ট লাষ্ট ওয়ার্নিং

নেহা : বাট রাহুল! আই লাভ ইউ..[ চেচিয়ে কেদে কেদে ] আমিতো ওর আগে থেকেই তোকেই ভালোবেসেছি! এখনো বাসি, কই আমার জন্য তো কখনো এভাবে অস্থিরতা বোধ করিসনি…

রাহুল : [ দাতকিলিয়ে ] বিকজ আই ডোন্ট লাভ ইউ! ইনফ্যাক্ট আই হেট ইউ!

নেহা : [ মাথা নাড়িয়ে ] ইয়াহ! আই নো ওর জন্য! তাই না? [ চেচিয়ে ] ওর জন্যই এখন আমাকে হেট করছিস!

রাহুল : [ নেহার হাত চেপে ধরে ] লিসেন্ট আমি তোর সাথে এসব ফালতু কথা বলে টাইমওয়েষ্ট করতে আসিনি বল সামির কোথায়?..

নেহা : বলবো না! যদি তুই আমার না হস! তাহলে আর কারো হতে পারবি না সেটার জন্য কারো জানই যদি নিতে হয় তাও আমি রাজি [ প্রচন্ড রাগ উঠছে রাহুলের নেহার কথা শুনে,ইচ্ছে করছিলো এই মুহুর্তেই মেরে লাশ বানিয়ে দেবে, কিন্তু মেয়েদের গায়ে হাত তোলার অভ্যাস নেই রাহুলের, তাই বেচে গেলো, নাহলে এতোক্ষণে ওর ফেইস আয়নার সামনে ও নিজেই চিনতে পারতো না, রাগ কন্ট্রোল করতে না পেরে আশেপাশে যতোসব চেয়ার, টেবিল,আম্ব্রেলা ছিলো সবই টেনে লাত্তি মেরে মেরে ভাংগতে শুরু করলো ]

আসিফ : রাহুল! কন্ট্রোল! [ মুখে হাত রেখে মাটিতে বসেই ফুফিয়ে কেদে উঠলো রাহুল, চোখ-নাক-মুখ সবই লাল হয়ে গেছে, সকালে স্নেহার সাথে কাটানো মুহুর্তগুলোই মনে পড়ছে বারবার, স্নেহার ব্লাশিং করা চেহেরাটা চোখের সামনে ভেসে উঠতেই ভেতরের কলিজাটা মুচড়ে যাচ্ছে, বাচ্চা ছেলেদের মতো হাত দিয়ে ঘষে চোখ মুছে উঠে দাঁড়িয়ে এগিয়ে এলো নেহার দিক ]

রাহুল : প্লিজ! নেহা! দেখ..জোড় করে ভালোবাসা হয়না! সেটা মন থেকে আসতে হয়, তোকে দেখে আমার ঐ ফিলিংসটাই কখনো আসেনি যেটা স্নেহার জন্য আসে প্লিজ বল কোথায় নিয়ে গেছে সামির স্নেহাকে?[ মুচকি হাসলো নেহা ]

নেহা : বাট আমার তো তোকে দেখে ঐ ফিলিংসটা আসে রাহুল! [ চেচিয়ে ] তাহলে আমার কি হবে? [ বিরক্তি হয়ে কিছুক্ষণ চুপ করে রইলো রাহুল ]

রাহুল : [ চিৎকার করে ] দ্যাটস! নট মাই ম্যাটার নেহা! তোর কি হবে তাতে আমার কিচ্ছু যায় আসে না, বাট স্নেহার যদি কিছু হয় তাহলে তখন..

– [ জোড়ে একটি শ্বাস ফেলে ] তাহলে তখন কেনো এক্ষুনি দেখ কি করি… [ রাহুল ইশারা করলো আসিফকে, আসিফ ফোন কানে দিয়ে ওপাশ সরে গেলো ]

নেহা : [ রাহুলের জ্যাকেট ধরে ] লিসেন্ট রাহুল! আই রিয়েলি লাভ ইউ! দেখ! আমি সত্যিই তোকে অনেক ভালোবাসি! আ..আমি তোকে স্নেহার চেয়েও অনেক ভালোবাসি…

রাহুল : [ চেচিয়ে ] গেট লষ্ট! [ বলেই ধাক্ষা দিলো নেহাকে ]

রিদোয়ান : দেখ নেহা! তুই বাচ্চা নাকি?..সবই তো বুঝিস! তাহলে এমন কেনো করছিস?.

রাহুল : [ রাগান্বিত ভাবে আসিফের দিক এগিয়ে গিয়ে ] হোয়ার ইজ ইট?..হ্যা?..

আসিফ : ড্রাইভার আনছে!

রাহুল : ড্রাইভার এর দরকার নেই আমিই আনছি [ বলেই দৌড়ে অর্ধেক শিরি নামতেই দেখে ড্রাইভার পেট্রোল এর বোতোল নিয়ে উঠছে, রাহুল দৌড়ে গিয়ে বোতোল কেড়ে নিয়ে উপরে উঠলো, রিদোয়ান আর আসিফ তাকিয়ে আছে চুপ করে, রাগে ফুফাতে লাগলো রাহুল, এদিকওদিক না তাকিয়ে সোজা গিয়ে বোতোল খুলে পেট্রোল সব নেহার গায়ে ঢালতে লাগলো শকড হয়ে তাকিয়ে আছে নেহা ]

নেহা : [ চেচিয়ে ] হোয়াট দ্যা হেল রাহুল! কি করছিস এসব!

রাহুল : তোকে জ্বালাবো এখন! আর আমার রাগ মেঠাবো!

নেহা : দেখ এসব নিয়ে মজা করিস না!

রাহুল : [ চিৎকার করে ] তখন থেকে এটাই তো বলে যাচ্ছি! এসব নিয়ে মজা করিস না না..আমি সিরিয়াসলি আস্ক করছি সিরিয়াসলি জবাব দে![ ভয়ে চমকে উঠলো নেহা ] লিসেন্ট আই এম নট কিডিং! [ বলেই পকেট থেকে লাইটার বের করলো ]

নেহা : দেখ আমি কিন্তু পুলিশকে ফোন দিবো!

রাহুল : তো দে! পুলিশের ট্রেড দিচ্ছিস আমায়?

নেহা : মা..মাই ফোন! [ বলেই পাশফিরে তাকিয়ে মুখ গোমড়া করে ফেললো, অলরেডিই রাহুল তখন টেবিল লাত্তি মারতে গিয়ে নেহার ফোন ভেংগে ফেলেছে ]

রাহুল : লাষ্ট বার বলছি নেহা! সামির স্নেহাকে কোথায় নিয়ে গেছে? [ চুপ করে থমকে দাঁড়িয়ে রইলো নেহা, রাহুল ও অপেক্ষা করছে নেহার জবাবের, দুই থেকে তিন মিনিট পেড়িয়ে গেলো, কিন্তু নেহা সাইলেন্টই রয়ে গেলো কোনো জবাবই এলো না ]

রাহুল : ওখে আই আন্ডারস্ট্যান্ড! [ বলেই লাইটার এর সুইচ চাপ দিলো, সাথে সাথেই ফায়ার জ্বলে উঠলো লাইটারের, বুক ধরে উঠলো নেহার, চোখ বড় করে শকিং হয়ে তাকিয়ে রইলো রাহুলের হাতের দিক ]

রিদোয়ান : আরে রাহুল! অতো কি ভাবছিস ছুড়ে ফেল! [ রাহুল হাত নড়াচড়া করতেই ]

নেহা : [ হুট করে রাহুলের হাত ধরে ফেলে ] নো রাহুল! আ..আ..আমি ব..বলছি!

রাহুল : থিংক নেহা আমার তোকে মারতে হাত কাপছে না আর ভালোবাসা তো অনেক দূরের কথা! সো্ ওভার এক্টিং কম কর! আমার কাছে এসব দেখার টাইম নেই!

নেহা : সি..স্লিভিং স্টেডিয়ামের পাশে!

আসিফ : [ চেচিয়ে ] সানফ্লাওয়ার গার্ডেন? [ নেহা মাথা নাড়ালো,দৌড়ে নেমে পড়লো রাহুল,পেছন পেছন আসিফ আর রিদোয়ান ও নামলো, আসিফ ড্রাইভার কে পাঠিয়ে দিয়ে রাহুলের গাড়িতেই উঠে বসলো, রিদোয়ান গিয়ে তার গাড়িতে উঠলো ]

জারিফা : কোথায় ছিলেন এতোক্ষণ?..

রিদোয়ান : জারিফা বললাম না সব পড়ে বলবো! ব্যাস এটা জেনে নাও স্নেহাকে কোথায় নিয়ে গেছে এটা জেনে গেছি এখন জাষ্ট ওখান থেকেই ওকে আনতে যাচ্ছি!

জারিফা : কিন্তু আপনারা ডিরেক্ট সামিরকেই ফোন দিলে তো পারেন!

রিদোয়ান : আসিফ থেকে শুনলাম ফোন অফ! ট্রেস করার ভয়ে শালা বন্ধ করে রেখেছে! [ আর কিছু বললো না, জারিফা চুপ করে আছে, হঠাৎ ফোনটা বেজে উঠলো ]

জারিফা : হ্যালো!

মার্জান : এতোবার কল দিচ্ছিলি কেনো ?..

জারিফা : আর তুই রিসিভ করছিলি না কেনো?

মার্জান : আরে আমি স্নেহার মামার বাসায় ছিলাম কথা বলছিলাম তাদের সাথে তাই রিসিভ করতে পারিনি!

জারিফা : বাট স্নেহাকে তো ঐ সামির শয়তানটা নিয়ে গেছে!

মার্জান : [ শকড হয়ে ] হোয়াটটট?…

জারিফা : হুম কিন্তু চিন্তা করিসনা আমি যাচ্ছি ওকে আনতে..

মার্জান : তুই যাচ্ছিস ওকে আনতে হ্যা?..এটা ভিডিও গেমস চলছে?..

জারিফা : নাহ..মানে রাহুল,রিদোয়ান, আসিফ ওরা ও..আছে!

মার্জান : আচ্ছা কোথায় যাচ্ছিস এড্রেস বল?..

জারিফা : [ রিদোয়ানের দিক তাকিয়ে ] আ..আমরা কোন জায়গায় যাচ্ছি?..

রিদোয়ান : সানফ্লাওয়ার গার্ডেন!

জারিফা : [ ফিসফিসিয়ে ] সানফ্লাওয়ার গার্ডেন!

মার্জান : ডেটিং করতে নিয়ে গেছে নাকি শালা! সানফ্লাওয়ার গার্ডেন কেনো নিয়ে গেছে! ওকে তো আজ আমি…[ বলেই ফোন কেটে দিলো, জারিফা কনফিউজড হয়ে ফোনের দিক একবার তাকিয়ে আবার ব্যাগে ভরে নিলো ]
_______________________________________
একঘন্টা হয়ে গেলো,সন্ধ্যা গভীর হতে চলছে,
এইদিকে টেবিল সাজানো রয়েছে হরেকরকমের ক্যান্ডেলাইট,স্নেহা চেয়ারে বসে আছে,আর ফুফিয়ে কেদে কেদে চোখ থেকে পানি ফেলছে,

সামির : ওহ কামঅন স্নেহা! আমি তোমাকে কিডন্যাপ করেছি নাকি? জাষ্ট তোমার সাথে কিছু টাইম স্পেন্ড করতে এলাম! কতো কিছুই অর্ডার করলাম কিছুই খেলে না,আর তুমি কিনা সেই কখন থেকে কেদে চলছো [ বলেই স্নেহার সামনে চলে আসা চুলগুলো সরিয়ে দিতে চাইলো, সাথেসাথেই স্নেহা হাত ঝাড়ি দিয়ে সরিয়ে দিলো ] দেখো, তুমি কেদো না,আমি তোমাকে বিয়ে করবো না, বাট এক রাত তোমার সাথে স্পেন্ড করবো!

স্নেহা : [ দাঁড়িয়ে গিয়ে ] আপনি খারাপ জানতাম কিন্তু এতোটা খারাপ ভাবিওনি!

সামির : [ হেসে ] আরে খারাপের কি হলো?

স্নেহা : দেখেন আমার ফোন দেন প্লিজ! [ বলতেই সামির স্নেহার ফোনটা জোড়ে ছুড়ে ফেললো সাথে সাথেই ফোন ভেংগে দু-খন্ড হয়ে গেলো ]

স্নেহা : আরে আপনি কি করছেন এসব?..

সামির : [ রাগান্বিতভাবে স্নেহার কাছে এসে ] এখনো কিছু করিনি, আর কি বললে আমি খারাপ? তাই না? কেনো আমার সাথে রাত কাটালে তোমার আশিক তোমাকে মেনে নেবে না? বিয়ে করবে না তোমায়?..

স্নেহা : দে..দেখেন প্লিজ! এসব বাজে ক..কথাবার্তা আমার সাথে বলবেননা!

সামির : বাজে তাই না? তাহলে দেখিয়েই দেবো আজ বাজে কি জিনিষ! যতোটুকু না কষ্ট আমার বোন পেয়েছে তোমার অবস্থা দেখে তারচেয়ে দিগুণ কষ্ট তোমার আশিককে পেতে হবে!

স্নেহা : [ কাদোভাবে ] দেখেন আপনি কি বলছেন আমি কিছুই বুঝছি না প্লিজ আমাকে যেতেদিন!

সামির : [ স্নেহার হাত ধরে ] এসব আমার জন্য নতুন কিছুই না! স্নেহা! তবে জোড় করে কখনো কোনো মেয়েকে নেওয়া হয়নি! আজ এটার এক্সপেরিয়েন্স ও হয়ে যাবে সাথে তোমার রাহুলের করা ভুলের রিভেঞ্জ!

স্নেহা : রা..রাহুল কি ক্ষতি করেছে আপনাকে? কখন থেকেই একই কথা বলে যাচ্ছেন, কি করেছে ওটাতো বলেন!

সামির : কি করেছে ওটা মুখে বললে তো মজা নেই! ও যেমন হাল করেছে আমার বোনের আমিও তেমন হাল করবো তোমার, তারপর ও বুঝবে কষ্ট কি জিনিষ!

স্নেহা : কেক..কে..আপনার বোন? কিক..কি করেছে? [ সামির আর কোনো জবাবই দিলো না স্নেহাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছিলো তার গাড়ির দিক ]

স্নেহা : [ হাত ঝাড়ি মেরে ছুটিয়ে ] কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন আপনি?

সামির : [ চেচিয়ে ] চুপপ! একদম আওয়াজ করবা না [ শান্ত গলায় ] কামঅন স্নেহা সবাই ভাবছে আমরা কাপল এসেছি! আর তুমি এমন করলে ওরা কি ভাববে বলোতো? [ মুচকি হেসে ] আর তুমি চেচালেও তোমাকে কেউ বাচাতে আসবে না, সবাই সবার পার্টনার নিয়ে ব্যস্ত! সো্ কাম উইথ মি!

স্নেহা : প্লিজ দেখেন আপনি [ বলতেই হঠাৎ কাচের একটি বোতোল এসে পড়লো সামিরের মাথায় ভয়ে চমকে উঠলো স্নেহা, সামির শকড হয়ে মাথায় হাত রেখে পেছনে ফিরে তাকালো ]

রাহুল : উপসস্ সরি সামির! আই থট অন্য কেউ ছিলো! [ স্নেহা ফুফিয়ে কেদে দৌড়ে ঝাপিয়ে জড়িয়ে ধরলো রাহুলকে, রাহুল ও আগলে নিলো ]

স্নেহা : [ কাদো কন্ঠে ] এতো লেইট করেছেন কেনো আসতে হ্যা! জিকির করার মতো আপনার নাম মনে করছিলাম, [ বলে বলেই কাদতে লাগলো, রিদোয়ান আর আসিফ হেসে উঠলো স্নেহার কান্ডে, আশেপাশের কয়েকজন তাকিয়ে আছে, সামিরের দিক তাকিয়ে চোখ টিপ মারলো আসিফ, নাক ফুলিয়ে তাকিয়ে আছে সামির ]

রাহুল : [ স্নেহার মাথায় হাত বুলিয়ে ] ওকে ডোন্ট ক্রাই!

স্নেহা : [ কেদে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ] আম সরি রাহুল! আমার একদমি বের হওয়া উচিৎ ছিলো না,আর কখনো হবে না এমন প্রমিস!

রাহুল : [ দু-হাত দিয়ে স্নেহার মাথা তুলে ধরে ] রিলেক্স স্নেহা! ইটস ওকে! যাও ওদিকে গাড়ী আছে ওখানে গিয়ে বসে পড়ো!

স্নেহা : কিন্তু আপনি?

রাহুল : আসছি! ওর চেহেরার পেন্টিং করে!

রিদোয়ান : আরে সামির তুই আর জায়গা পেলিনা, ড্রাইভ করতে করতে আমার হাত ব্যাথা হয়ে গেলো,কাছাকাছি কোথাও বুকিং করতি,

রাহুল : গো্ স্নেহা! [ স্নেহা আর কিছু বললো না কিছুটা দূর হেটে এগিয়ে যাওয়ার পর আবারো কাচ ভাংগার শব্দ এলো,তাড়াতাড়ি ফিরে তাকিয়ে দেখে, রাহুল সামিরের মাথায় আবারো কাচের বোতোল ভাংগলো সামির রাহুলের জ্যাকেট মুচড়ে ধরে ছিলো, রক্ত বেয়ে পড়ায় মাথায় হাত দিয়ে চেয়ারে বসে পড়লো সামির, থমকে চেয়ে আছে স্নেহা ]
_______________________________________
এইদিকে, ১০মিনিট হয়ে গেলো, গাড়ীতে বসে অপেক্ষা করছে জারিফা, টেনশনে মাথাটা ছায় হয়ে যাচ্ছে তার, এখনো তারা আসেনি স্নেহাকে নিয়ে, হঠাৎ গাড়ীর সামনে দিয়ে চেনা কেউ হেটে চলে যাচ্ছে এমন কাউকে দেখতে পেলো, উকি মেরে নামবে কি নামবে না আবার ভাবতে লাগলো, সাথেসাথে ফোনটা বেজে উঠলো,

জারিফা : হ্যালো!

মার্জান : ইডিয়ট জারিফা! কোথায় মরেগেছিস তোরা কাউকেই দেখতে পাচ্ছিনা!

জারিফা : তুই এইখানেই?

মার্জান : হ্যা! এক্ষুনি এসে পৌছেছি কিন্তু তোরা কই? পেয়েছিস স্নেহাকে? আমার তো জানই বেড়িয়ে যাচ্ছে!

জারিফা : এ..একমিনিট দাড়া [ বলেই গাড়ি থেকে নেমে দাড়িয়ে ] ডানদিকে দেখ, [ মার্জান ডানদিক ফিরে তাকাতেই দেখে জারিফা হাত নাড়াচ্ছে, দৌড়ে এগিয়ে গেলো মার্জান ]

মার্জান : ওরা কই? স্নেহা কোথায় পেয়েছে?..

জারিফা : আমাকে সাথে নিয়ে গেলেই তো জানবো!

মার্জান : আচ্ছা বল কোনদিকে গেছে [ জারিফা আংগুল দিয়ে দেখাতেই মার্জান আর এক সেকেন্ড ও ভাবলো না দৌড়ে চলে গেলো ঐদিকটা, জারিফার ও আর মন মনছিলো না কি আর করার সেও পেছন পেছন এগিয়ে গেলো মার্জানের ]
_______________________________________
[ স্নেহা পিছিয়ে যাচ্ছিলো এসব মারামারি দেখতে না পেরে হঠাৎ জোড়ে কারো সাথে ধাক্ষা খেয়ে চমকে উঠলো ]

মার্জান : [ অবাক হয়ে ] স্নেহা! তুই! থেংক গড ঠিকাছিস!

স্নেহা : মার্জান! [ বলেই জড়িয়ে ধরলো ]

জারিফা : সরি স্নেহা! আমাদের আসলে তোকে পাঠানো উচিৎ হয়নি!

মার্জান : হ্যা তোকে না পাঠালে হয়তো আজ এসব হতো না!

স্নেহা : আরে তোরা নিজেকে কেনো দোষ দিচ্ছিস! ভুলটা আমারই ছিলো!

মার্জান : [ রাগান্বিত ভাবে ] ভুল তোর না ভুল তো ঐ শয়তানটা করেছে ওকে তো আমি আজ [ বলেই দৌড়ে এগিয়ে গেলো ]

স্নেহা : আরে মার্জান শোন! [ মার্জান দৌড়ে সামিরের দিক এগিয়ে যাচ্ছিলো ঐ টাইমেই ]

আসিফ : [ মার্জানের হাত টেনে ধরে আটকিয়ে ] আরে তুমি?তোমরা এইখানে কি করছো!

মার্জান : [ চেচিয়ে ] ছাড়েন! আমাকে ওকে তো আজ আমিই মেরেই শান্তি পাবো! শয়তান একটা তোর এতোবড় সাহস! আমার ফ্রেন্ডকে তুলে এনেছিস তুই! কে দিলো তোকে এই সাহস [ আসিফের হাত ছুটাতে ছুটাতে ] আরে ছাড়েন বলছি,

আসিফ : [ মার্জানকে আলগে ধরে টেনে একপাশে নিয়ে গিয়ে ] আরে পাগল হয়ে গেছো তুমি শান্ত হও! আমরা দেখছি!

মার্জান : দেখছেন মানে? এমনি এমনি যদি আজ ওকে ছেড়ে দেওয়া হয় না! আমিই আপনার ব্যান্ড বাজিয়ে দিবো বলেদিলাম!

আসিফ : ওকে! এইদিকেই থাকো! সলভ করছি আমরা! [ নাকফুলিয়ে দাড়িয়ে আছে মার্জান, পাশে জারিফা আর স্নেহা ও এসে দাড়ালো, কি কি যেনো কথা হচ্ছে রাহুল আর সামিরের মধ্যে কিছুই শোনা যাচ্ছিলো না জাষ্ট একটু একটু শোনা যাচ্ছে, মার্জান কৌতুহলি ভাবে একপা একপা এগিয়ে কান পেতে রইলো ]

স্নেহা : দেখ মার্জান ওরা করছে যা করার! এতো সামনে যাস না বলা যায় না কি হয়! একটু আগেই দেখছিলাম রাহুল ডিম ভাংগার মতো, সামিরের মাথায় কাচের বোতোল ভাংছিলো [ বলতেই সাথেসাথে আবারও কাচভাংগার শব্দ এলো, চমকে উঠে তাকালো স্নেহা ]

মার্জান : [ শিস বাজিয়ে ] ওহো গ্রেট গ্রেট রাহুল! আরো কয়েকটা ভাংগো ওর মাথায়! কেমন নির্লজ্য ছেলে দেখ মার খেয়ে ও হাসছে!

জারিফা : আরে কি যেনো বলছে শুনতে দে না! [ বলেই কান পেতে রইলো সবাই ]
_______________________________________
রাহুল : [ দাতকিলিয়ে ] হ্যা! আমি মানছি আমি ডেট করেছি ওর সাথে তবে কন্ডিশন অনুযায়ী, কিন্তু ঐদিন রাতে তেমন কিছুই হয়নি যেমনটা তোকে বলেছে [ চেচিয়ে ] আমি নেহার সাথে চিট করিনি!

সামির : আচ্ছা! তো দিয়ে দে স্নেহাকে! আমিও এক-দু-মাস ডেট করে একরাত কাটিয়ে, বলবো ঐদিন রাতে তেমন কিছুই হয়নি রাহুল যেমনটা তোর স্নেহা বলছে!
[ রাহুল সামিরের গলা চেপে কাচ ভাংগা বোতোলটা গলায় ধরতেই রিদোয়ান রাহুলকে টেনে ধরে হাত থেকে কেড়ে নেই ভাংগা কাচটি ]

রাহুল : [ চেচিয়ে ] উলটাপালটা বলবি স্নেহার ব্যপারে! তাহলে ঐ দিকেই পুতে রাখবো!

সামির : আরে বলবো কেনো, আমিতো করবো যেমনটা তুই করেছিস আমার বোনের সাথে, [ রাহুল রিদোয়ানকে পেছনে ধাক্ষা দিয়ে দৌড়ে গিয়ে আবার ধরলো সামিরের গলা, দুজনেই বেজে গেলো মারামারি, আসিফ আর রিদোয়ান মিলে টেনেটুনে ছুটিয়ে নিলো ]

আসিফ : [ ফিসফিসিয়ে ] কন্ট্রোল রাহুল! প্লিজ কন্ট্রোল, এক্কেবারে মেরেফেলবি নাকি! নয়তো আবার পুলিশ-কোর্ট এসব নিয়ে পড়ে থাকতে হবে,

রাহুল : ওকে মেরে জেলে থাকাটা ও শান্তি লাগবে আমার,

আসিফ : লিসেন্ট রাহুল উল্টোপালটা কথা বলিস না, স্নেহার দিক তাকা একবার, এখন সিংগেল না তুই! [ চেচিয়ে ] দেখ সামির! তুই অলরেডি জানিস তোর বোন কেমন! ও রাহুলকে চাই, কিন্তু একজনের চাওয়াই তো সব হয় না, আর ও যা বললো তুই ও তা বিশ্বাস করে ফেললি!

সামির : একমাত্র বোন আমার! ছোট থেকে গায়ে একটা আচ ও আসতে দেইনি আমি! [ হঠাৎ টুকটাক আওয়াজে সবাই পাশ ফিরে তাকালো ]

জারিফা : ওহ মাই গড! মার্জান এরা কারা?..

[ স্নেহা দৌড়ে রাহুলের কাছে যেতে চাইলো, জারিফা আটকে ধরলো স্নেহাকে, আসিফ পেছনের দিক তাকিয়ে ইশারা করলো মার্জানদের যাতে গাড়ীতে চলে যায় ]

মার্জান : আরে বাপরে এই সৈন্যদলের হাতে তো লাঠিসোটা আছে! এখন কি হবে? ওরা তিনজন আর ওরা দশজন, আর এ..এই নেহা পেত্নীটা এই শয়তানের বোন আগে তো জানতাম না,

রাহুল : [ হেসে ] আই থট! সামির, তুই অনেক সাহসী, বাট মুখে তো অনেক গালবাজি করিস, তবে এই বাচ্চাদের ভাড়া করে এনে!

সামির : আমিও ভেবেছি তুই অনেক সাহসী, কিন্তু তাহলে তো একা আসতি, ফ্রেন্ডসদের সাথে নিয়ে না,

রাহুল : আমার ফ্রেন্ডসরা তোর গায়ে হাত তুলেনি!

সামির : বাধ্য হয়ে সবকিছুই করতে হয় রাহুল!তাই আমিও করেছি,

রাহুল : ওকে উই আর রেডি! গাইস্! চোরের দশদিন তো গেরস্তের একদিন, আজ না হয় মার খেলাম, কিন্তু কোনো না কোনো একদিন তো ভার্সেটি আসতেই হবে বাচ্চারা, তোমরা সেকেন্ড ইয়ারের মেবি! রাইট! [ চুপ করে রইলো ছেলেগুলো ]

রিদোয়ান : পুরুষ বলা যায় না তোকে সামির, এসব বাচ্চাদের সাহারা নিয়ে আসলি!

মার্জান : [ দৌড়ে এগিয়ে এসে ] একমিনিট একমিনিট [ হাত টেনে ধরলো আবার আসিফ ]

মার্জান : [ রেগে রিদোয়ানের হাত থেকে কাচের বোতোলটা আসিফের গলায় ধরে ] কথা ক্লিয়ার করতে দিন আটকাবেন তো সবার আগে আপনাকে টপকাবো,

রাহুল : [ অবাক হলো মার্জানকে দেখে তাও এইসময় এতো প্রশ্ন করা ঠিক হবে না ভেবে জাষ্ট এটাই বললো ] আরে মার্জান! তুমি কার টিমে?..

মার্জান : উফফো আমি তো আপনাদের টিমেই! [ চেচিয়ে ] ওকে গাইস্ কেউ পুরুষ কাপুরুষ এটা মুখে ডিসাইড করলে চলবে না! কাজে ও তো করে দেখাতে হবে তাই না, তারপর ডিসাইড হবে কারা পুরুষ, কারা কাপুরুষ! আপনারা যেহেতু দশ-এগারো জন, তাহলে আমি বর্ডার করছি আপনারা টিম করে একপাশ দাড়ান আমরাও দাড়াচ্ছি! তারপর আপনাদের থেকে দু-জন আসবে বর্ডারের মাঝে আর আমাদের থেকে একজনই যাবে,

জারিফা : [ স্নেহার কানে ] আরে স্নেহা! তুই মারপিট পারিস আমার তো এখন থেকেই বুক কাপছে, আমি একা কেমনি যাবো, এই মার্জানটাও না কেমন কেমন রুলস্ করে বসে,

সামির : দেখ এসব হাবিজাবি করার টাইম নেই আমার, বলেই রেগে লাঠি উঠাচ্ছিলো!

রিদোয়ান : [ চেচিয়ে ] আরে বাদ দাও মার্জান! ও কাপুরুষ না ডারপোক ও, টিম নিয়ে এসে ও ভয় পাচ্ছে চ্যালেঞ্জ নিতে,

সামির : [ নাক ফুলিয়ে ] ওকে চ্যালেঞ্জ এক্সেপ্টেড! [ বলেই একটিম হয়ে দাড়ালো, বড় করে পাশ কেটে একটি বর্ডার বানিয়ে মার্জানরা ও একটিম হয়ে দাড়ালো ]

মার্জান : ও..ওকে! এট ফার্ষ্ট আমি!

সামির : [ হেসে ] ওহহ লেডিস ফাষ্ট! [ সামিরের পুরো টিমই হেসে উঠলো ]

রাহুল : লিসেন্ট মার্জান এটা রিস্ক!

স্নেহা : হ্যা! মার্জান প্লিজ ডোন্ট গো! আমরা ওদের বুঝিয়ে বলি,

মার্জান : ভরসা রাখেন আমার উপর জাষ্ট স্নেহার হাত ধরেন শক্ত করে,আর আপনার হোপলেস্ ফ্রেন্ডটাকে ও ধরেন! [ বলেই এগিয়ে বর্ডার এর পাশে দাড়ালো, মন মানছিলো না রাহুলের তাও ভরসা রাখলো সে তো আছেই পাশে, সবাই তাকিয়ে আছে মার্জান এর দিক, হেসে হেসে দু-জন লাঠি নিয়ে এগিয়ে এলো, মেয়ে মানুষ বলে হেসে লাঠি গুলো ও ফেলে দিলো, যেই না মার্জান এর পাশে এলো দু-জন, হাতে থেকে ছুড়ে মাড়লো মরিচের গুড়ি, চোখ কচলে চেচিয়ে বসে পড়লো দু-জন ]

মার্জান : [ চিৎকার করে ] ভাআআগোওও!

রাহুল, আসিফ, রিদোয়ান হাসবে নাকি দৌড়াবে কিছুই বুঝতে পারছিলো না, তাও হাসতে হাসতে দৌড়ে গাড়ীর দিক এগুতে লাগলো,

জারিফা : [ হেসে ] আরে তাড়াতাড়ি দৌড়ান ওরা আসছে, [ আসিফ আর রাহুল দুজনেই একটু থেমে পেছন তাকালো, রাহুল ধাক্ষা দিলো আসিফকে ]

আসিফ : [ চেচিয়ে ] তোকে দোস্ত বললে দুনিয়ায় ভুল হবে,

রাহুল : আরে মার্জানের হাত ধর, ও পিছিয়ে পড়ছে, [ আসিফ হাত বাড়ালো, মার্জান ও বেখেয়ালি হয়ে হাসতে হাসতে হাত এগিয়ে দিলো, সবাই মিলেই তাড়াহুড়া করে একগাড়ীতে উঠে পড়লো, রিদোয়ান তাড়াহুড়ো করে গাড়ী স্টার্ট দিয়ে টান দিলো,বাকিরা জোড়ে জোড়ে শ্বাস নিচ্ছে আর কিটকিটিয়ে হাসছে ]

রিদোয়ান : [ চেচিয়ে ] ওহোওও উই আর সাক্সেস্

জারিফা : [ হেসে ] ভাই আমার তো অনেক মজা লাগছে বলেদিলাম! [ বলছে আর হাসছে ]

আসিফ : কিন্তু কাপুরুষ তো এবার আমরাই হয়ে গেলাম পালিয়ে এসে তাই না?..

মার্জান : মার খাওয়ার চেয়ে পালিয়ে আসা অনেক বেটার বুঝেছেন! ওদের হাতের হকিস্টিক গুলো দেখেছেন?

রাহুল : [ হেসে ] দোস্ত আমাদের বউ জানলে হলো আমরা পুরুষ নাকি কাপুরুষ! [ সবাই হেসে উঠলো খিলখিল করে ]

রাহুল : [ স্নেহার দিক তাকাতেই দেখে সে গাড়ীর গ্লাস দিয়ে পেছন তাকিয়ে আছে ]আরে স্নেহা! ওদিক কি দেখছো ওরা আর আমাদের ধরতে পারবে না,

স্নেহা : আপনার গাড়ি [ বলতেই সবাই মাথা গুড়িয়ে পেছন তাকালো, এবং দেখতে পেলো রেগে গিয়ে সবাই ধুমধাম করে রাহুলের গাড়ীটাই ভাংচুর করছে ]

রাহুল : [ মুচকি হেসে ] ফরগেট ইট!

রিদোয়ান : আরে নিজে বাচলে,কতো গাড়ীই আসবে আর যাবে, বাই দ্যা ওয়ে মার্জান ইউ আর গ্রেট!

রাহুল : আরে আমিতো অবাক হচ্ছিলাম টোটালি মাথায় আসছিলো না মার্জান কি করতে যাচ্ছে! [ কিটকিটিয়ে হেসে ] তারপর দেখলাম মরিচের গুড়া!

আসিফ : বাই দ্যা ওয়ে! তুমি মরিচের গুড়া পেলে কোথায়!

জারিফা : আরে ওর ব্যাগে তো মরিচের গুড়া বাধে ছুড়ি ও থাকে!

মার্জান : [ আসিফের দিক তাকিয়ে ] ইয়াহ কোন সময় কোন কাজে লাগে কে জানে!

রাহুল : [ মার্জানকে জড়িয়ে আগলে ধরে ] ওয়েল ডান! ডেরিং বেবি!

মার্জান : [ ঝাড়ি দিয়ে রাহুলকে সরিয়ে ] ছুড়িটাও বের করবো নাকি বলবেন, বিয়েটা কবে করছেন? [ রাহুল স্নেহার দিক তাকালো, স্নেহা ও হেসে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে ]

রাহুল : এইবার শিয়র করবাতো বিয়ে? নাকি আবারো কথা না শুনে কিছু একটা করে বসবা [ মুচকি হেসে রাহুলের হাত জড়িয়ে কাধে মাথা রাখলো স্নেহা ]

চলবে..

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে