♥Love At 1St Sight♥
~~~Season 3~~~
Part – 31
writer-Jubaida Sobti♥
রাহুলের বুকে মাথা রেখেই শুয়ে আছে স্নেহা,স্নেহার চুল বিলি করে দিচ্ছে রাহুল…
ঠেরই পেলো না কখন যে চোখটা লেগে এলো….
গাড়ীর হর্ণে ঘুমটা ভেঙে গেছে স্নেহার…. চোখ খুলতেই চোখে সকালের আবছা আলো ভেসে আসছে…হঠাৎ খেয়াল করলো সে রাহুলের বুকের মাঝেই এখনো শুয়ে আছে রাহুল তাকে জড়িয়ে রেখেছে…
চোখ তুলে তাকালো রাহুলের দিক,
রাহুল : গুড মর্নিং [ With tedi smile ]
[ স্নেহা তাড়াতাড়ি সোজা হয়ে উঠে বসে আশেপাশে তাকিয়ে দেখে রাস্তাঘাটে মানুষজন ও কাজে বেড়িয়ে পড়েছে ]
রাহুল : না এই শহর দেখো, না এই লোকজনকে দেখো, [ স্নেহা অবাক হয়ে তাকালো ]
– ব্যাস চোখ খুলো আর তোমার রাহুলকে দেখো [ বলেই চোখ টিপ মারলো, স্নেহা মুচকি হাসে ]
রাহুল : [ স্নেহার কাছে মাথা এনে কানে নাক লাগিয়ে স্মেল নিয়ে ] আগুন সূর্যের কাছে আছে,কিন্তু জলতে হয় জমিনকে, সকালের খুশবু আছে তোমার কাছে কিন্তু জলতে হয় আমার এই বেচারা দিলকে,
স্নেহা : [ হেসে রাহুলকে ধাক্ষিয়ে সরিয়ে দিয়ে ] সকাল সকাল পাগল হয়ে গিয়েছেন নাকি?…
রাহুল : [ তেডি স্মাইল দিয়ে ] পাগল তো হয়েছি সেদিন রাতে যেদিন তোমাকে প্রথম স্টেশনে দেখেছি, [ স্নেহার কাছে মাথা এনে ] পাগল তো হয়েছি সেদিন সকালে যেদিন প্রথম তোমাকে ভার্সেটিতে দেখেছি, [ চোখ মেরে ] আর তুমি এই পাগলের পাগলী বুঝলে,
[ স্নেহা লজ্জায় ব্লাশিং হয়ে হেসে নিচের দিক তাকিয়ে ফেলে ]
রাহুল : ” হেসো না এতো যেনো এই সকাল না ঠের পাই ” নাহলে তারিফ করতে থাকবে ও তোমার, আর নজর লেগে যাবে আমার স্নেহার ”
স্নেহা : [ হেসে রাহুলের দিক তাকিয়ে ] হয়েছে?…হুম?…
রাহুল : [ তেডি স্মাইল দিয়ে স্নেহার কাছে মুখ এনে ] আমার মর্নিং কিস্!
স্নেহা : [ হেসে হাত দিয়ে রাহুলের মুখটা সরিয়ে দিয়ে ] কোনো মর্নিং কিস্ টিস্ না বাই! [ বলেই গাড়ীর দরজাটা খুললো হঠাৎ তখনি ]
রাহুল : “তোমার চুল উড়বে বাতাসে আর জলবে গাছের পাতা ” “কাধ থেকে সরতে দিওনা ওড়না, নাহলে পাগল হবে আমার মতো আরো কতোজনের মাথা ”
[ স্নেহা তাড়াতাড়ি ধুপ করে দরজাটা আবার বন্ধ করে দিলো,রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে অন্যপাশ ফিরে যায় ]
রাহুল : Listen! আজকে আর ভার্সেটি আসতে হবে না,
স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] হোহ! কেনো?…
রাহুল : [ ভেংগিয়ে ] হোহ! কেনো? তাই না?..তিনঘণ্টা ঘুমিয়েছো শুধু! বাসায় গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ো, আর ডান্স ক্লাসে যেতে নিষেধ করলে তো শুনবানা, বলবা নাহ রাহুল এটা আমার জন্য খুব দরকার আপনি বোঝার চেষ্টা করছেন না কেনো! এই সেই আরো কতো কিছু!
স্নেহা : [ একটু হেসে ] কিন্তু রাহুল! আমি ভার্সেটি ও যেতে পারবো, কারণ রাতে ও তিনঘণ্টা ঘুমিয়েছি, আমার ঘুমতো দুটোই ভেঙেছে তাই না!
রাহুল : কথা যা বলছি তা শুনো! যাবা না বলছি ব্যাস যাবা না!
স্নেহা : আচ্ছা ওকে!
রাহুল : আর শুনো ডান্স ক্লাসে আমি ড্রপ করে দিবো!
স্নেহা : কিন্তু রাহুল! আপনি সারারাত ও ঘুমাননি!
রাহুল : ঘুম তো তুমি আমার অনেক আগেই হারাম করে দিয়েছো! [ With tedi smile ] ডোণ্ট ওয়ারি আমি ম্যানেজ করে নিবো!
স্নেহা : তাও রাহুল…
রাহুল : আবার?..
স্নেহা : আচ্ছা ঠিকাছে! [ বলেই গাড়ীর দরজা খুলে আবার বেরুতে ছিলো হঠাৎ মনে পড়লো সে তো ওড়না ছাড়া এভাবে হেটে যাবে কি করে ধুপ করে আবার বন্ধ করে দিলো ]
রাহুল : [ একটু হেসে তার জ্যাকেটটা খুলে স্নেহার দিক এগিয়ে দিয়ে ] এটা পড়ে নাও, [ স্নেহা অবাক হয়ে তাকালো ] ইটস্ ওকে স্নেহা! আমি জানি তোমার শীত লাগছে! তাই বেরুতে পারছো না! অন্যকিছু মনে করিনি,
[ স্নেহা বুঝতে পেরে একটু হেসে রাহুল থেকে জ্যাকেটটা এগিয়ে নিয়ে পড়ে নিলো ]
রাহুল : স্নেহা একটু বডিসডি বানাও, জ্যাকেটটা তোমাকে গিলে খেয়েছে!
স্নেহা : হোহ! আমি কেনো বডি বানাবো?.. আপনি নিজেই বডি কমিয়ে আসুন তাহলে আপনার জ্যাকেট পড়লে আমার ফিট হবে,
রাহুল : কামঅন! স্নেহা এই সিক্সপেক বডি বানাতে কতো মেহনত করতে হয় জানো?..
– তুমি তো রেডিমেড পেয়েছো তাই গুরুত্ব দিচ্ছো না, [ স্নেহার কাছে মুখ এনে চোখে চোখ রেখে ] নাহলে কতো মেয়েই লাইন ধরে আছে জানো এই সিক্সপেক বডির জন্য
[ বলেই রাহুল তার শার্টের বাটন খুলতে লাগলো, দুটো খুলতেই ]
স্নেহা : [ ঘাবড়ে গিয়ে রাহুলের হাত থামিয়ে দিয়ে ] ওকে ওকে! স্টপ…
রাহুল : [ তেডি স্মাইল দিয়ে ] দেখলা তো দুটো বাটন খুলতেই ভয় পেয়ে গেছো… আর যদি সব বাটন খুলি….
স্নেহা : [ চেঁচিয়ে ] ছিঃ রাহুল! [ বলেই দরজা খুলে নেমে দৌড়ে গেইটের দিক গিয়ে দাঁড়ালো, রাহুল ও হেসে নেমে দাঁড়ালো ]
রাহুল : বাট স্নেহা! আমার মর্নিং [ বলেই হাত দিয়ে ঠোটের দিক ইশারা করলো ]
স্নেহা : [ হেসে ] বাইই! [ বলেই ভেতরে ঢুকে গেলো ]
[ রাহুলের ও আর কি করার একটা তেডি স্মাইল দিয়ে গাড়ীতে উঠে বেড়িয়ে পড়লো ]
[ স্নেহা বাসায় ঢুকতে গেলে দেখে দরজা বন্ধ,তাই বেল দিলো ]
জারিফা : [ দরজা খুলে হাতে হাত বটে স্নেহার দিক কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে ] স্নেহা! মেরি জান! আমার জিজুটাকে ও সাথে নিয়ে আসতি বিনা ব্রেকফাস্টে পাঠিয়ে দিয়েছিস ?…
স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] তুত…তুই কি করে…
জারিফা : আমি কি করে জানি?..[ হেসে ] ঘুম ভাংগলে দেখি তুই নেই আর মার্জান তো মাইকে এনাউন্স করার জন্য ও রেডি হয়ে গিয়েছিলো, তাই না মার্জান? [ বলেই কিটকিটিয়ে হাসতে থাকে ]
স্নেহা : [ হেসে জারিফার মাথায় বারি দিয়ে ] সিরিয়াসলি জারিফা তুই ও না,[ বলেই ভেতরে ঢুকে পড়ে ]
জারিফা : [ পেছন পেছন এগিয়ে গিয়ে ] আসলে তুকে বাসায় না দেখে প্রথমে তো ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম তারপর টেবিলে তোর সেলফোনটা দেখতে পাই, আর লাষ্ট কলটা দেখি আমাদের জিজুর [ বলেই স্নেহাকে ধাক্ষাতে থাকে ]
স্নেহা : লাষ্ট কল দেখেই শিয়র হয়ে গিয়েছিস আমি ওর সাথে? এমন তো না ও হতে পারতো!
মার্জান : আরে বারান্দা থেকে রাহুলের এতো বড় খাটারা টা দেখা যাচ্ছিলো না ওটা দেখে আরো ডেমন শিয়র হয়েছিলাম!
স্নেহা : খাটারা না এটা গাড়ী!
জারিফা : [ হেসে ] ওহো গায়ে লাগলো স্নেহার! [ চেঁচিয়ে ] এই মার্জান তুই রাহুলের গাড়ীকে খাটারা বললি কেনো?… গাড়ী বল গাড়ী… [ বলতেই মার্জান জারিফা দুজনেই হেসে উঠে ]
স্নেহা : তোরা ও না [ বলেই লজ্জা পেয়ে খাটে বসে কম্বলটা গায়ে টেনে নিলো ]
মার্জান : বাই দ্যা ওয়ে! স্নেহা মাই ডিয়ার! রাহুলের জ্যাকেটটা তুকে অনেক স্যুট করেছে, কি বলিস জারিফা?..
জারিফা : [ স্নেহার পাশে বসে গান করে করে ] ” শা্রমানা মাথ্ সা্জান নে পেহনায়া জ্যাকেট আব্ তো্ উথা্রনা নেহি হে ইসে্ সি্নে মে লাগাকে রাখনা হে বাস্ …..
স্নেহা : [ কিটকিটিয়ে হেসে ] Shut-up জারিফা!
জারিফা : আচ্ছা! সারাদিনে তো রোমান্স করা যায়…কিন্তু অর্ধেক রাতে উঠে তোরা কি রোমান্স করতে গিয়েছিলি বলতো?…হুম? হুম?
মার্জান : আহা, ছাড় জারিফা আমাদের কি আর বলবে কি কি করেছে….
স্নেহা : তেমন কিছুই না যেমনটা তোরা ভাবছিস!
জারিফা : আচ্ছা তাহলে তুইই বলেদে কেমনটা হয়েছে!
[ স্নেহা কোনো জবাব না দিয়ে ব্লাশিং হয়ে একটু হেসে মুখের উপর কম্বল দিয়ে শুয়ে পড়ে ]
মার্জান : আরে স্নেহা! ভার্সেটি যাবিনা?..
স্নেহা : [ মাথা থেকে কম্বল তুলে ] নাহ!
জারিফা : আচ্ছা সারারাত তো ঘুমোইনি রোমান্সে কাটিয়েছে,বেচারিকে ঘুমাতে দে!
মার্জান : ওহ হ্যা! আমিতো ভুলেই গেছি!
[ বলেই জারিফা আর মার্জান দুজনেই হাসতে থাকে ]
স্নেহা : হয়েছে?..এখন না খিলখিলিয়ে রেডি হয়েনে!
[ বলেই স্নেহা আবার মুখের উপর কম্বল দিয়ে দেই, চোখ বন্ধ করতেই স্নেহার রাতে রাহুলের সাথে কাটানো মোমেন্ট গুলো মনে পড়ছে, ব্লাশিং হতে হতে ঘুমিয়ে পড়লো স্নেহা ]
মার্জান আর জারিফা বেড়িয়ে পড়েছে ভার্সেটি যাওয়ার উদ্দেশ্যে, রাস্তার একপাশ দাঁড়িয়েছে বাসে্র জন্য! হঠাৎ শা– করে একটা কালো গাড়ী এসে তাদের সামনেই থামলো,
জারিফা আর মার্জান অবাক হয়েই তাকিয়ে আছে, ধীরেধীরে গ্লাস নামালে দেখে আসিফ,
জারিফা : আরে! আপনি?…
আসিফ : ভার্সেটি যাচ্ছো?…
জারিফা : হ্যা!
আসিফ : আমি ও ভার্সেটিতেই যাচ্ছি,
– সো্ চলো.. সে্ইম রাস্তায় যখন যাচ্ছি একসাথেই যায়!
মার্জান : [ নাক ফুলিয়ে ] Listen! আমাদের না আপনার হেল্প এর কোনো প্রয়োজন নেই! আল্লাহর ওয়াস্তে আপনি আমার সামনে থেকে দাফা হয়ে যান বলেদিলাম!
জারিফা : [ মার্জানের কানে ফিসফিসিয়ে ] আরে মার্জান এভাবে বলছিস কেনো অনি কি মনে করবে?…
মার্জান : সো্ হোয়াট?..
[ আসিফ কিছু বললো না হেসেই তাকিয়ে রইলো মার্জানের দিক ]
জারিফা : এক্সুলি ও আজ সকালে নাশতা করেনি তো তাই মাথা একটু বিগ্রে আছে!
আসিফ : তাই নাকি?…যে কোনো একটা আইটেম হলে ও খেয়ে আসা উচিৎ ছিলো… যেমন হাতি তো আর ঘাস খেয়ে বেচে থাকতে পারে না…ঠিক..তেমনি…
মার্জান : [ চেঁচিয়ে ] স্টপ! কি বুঝাতে চাচ্ছেন আপনি হ্যা! [ জারিফার দিক তাকিয়ে ] এই আমাকে কি দেখতে হাতির মতো লাগে?..
জারিফা : [ একটু দূরে সরে দাঁড়িয়ে মার্জানের বডির দিক তাকিয়ে ] কইই নাতো… দেখেতো ছাগলের বাচ্চাই মনে হচ্ছে, [ বলতেই আসিফ কিটকিটিয়ে হেসে উঠে ]
মার্জান : [ রাগান্বিত ভাবে ] কিহ?..ছাগলের বাচ্চা?..
জারিফা : নাহ.. আই মিন…আমি ও এনিমেল দিয়ে এক্সেম্পল দিলাম আরকি! আচ্ছা চল রাগ করিস না [ বলেই গাড়ীর দিক টেনে উঠাতে চাইলে ]
মার্জান : আরে! পাগল নাকি?.. আমি বাসে্ই যাবো ওনার গাড়ীতে উঠবো না!
আসিফ : আসলে জারিফা কি জানো?…ও ভয় পাচ্ছে গাড়ীতে উঠতে…আই মিন যেমন ধরো এখন যদি কোনো হাতি আমার গাড়ীতে উঠে তাহলে তো গাড়ী এখানেই দুমড়ে-মুচড়ে যাবে তাই না?…
[ মার্জান রাগান্বিত চোখে তাকিয়ে আছে আসিফের দিক ]
জারিফা : [ মুখ লুকিয়ে হেসে ] দেখেন আপনি কিন্তু আমার ফ্রেন্ডকে ইন্সাল্ট করছেন…ও মোটেও হাতির মতো না…সেটা আপনাকে প্রুফ করে দেখাবে!
আসিফ : তাই?.. তাহলে দেখাও…
জারিফা : [ মার্জানের কানে ] দেখা মার্জান…নাহলে প্রাউড করে যা বলেছি সব ধুলোই মিশে যাবে!
মার্জান : [ মুখ ভেংগিয়ে ] হুহ! আমার কেনো ওকে প্রুফ দেখাতে হবে?…এসব ওর বাহানা আমি বুঝি সব ওকে? হুহ!
আসিফ : দেখলা? ও জানে এমনটাই হবে! তাই এখন বাহানা বলে উড়িয়ে দিচ্ছে!
জারিফা : [ নাক ফুলিয়ে ] নাহহহ! এ হতে পারেনা… আপনাকে ও এক্ষুণি প্রুফ করে দেখাবে…আর ইউ রেডি মার্জান?…
[ মার্জান অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে জারিফার দিক ]
জারিফা : [ একটু হেসে ] যা…মেরি জান! নাহলে সত্যিই তোকে হাতি ভেবে বসে থাকবে!
[ মার্জান কিছু না বলে নাক ফুলিয়ে গাড়ীর পেছনের সি্টের দরজা খুলে উঠে বসলো, আসিফ ইশারা করতেই জারিফা ও দরজা লাগিয়ে দিয়ে দৌড়ে গিয়ে উঠে বসলো ]
মার্জান : [ হেসে ] লুক! দেখলি তো আমি বললাম না এসব ওর বাহানা, আর তুকে তো আমি পড়ে দেখে নেবো! [ বলেই দরজা খুলার চেষ্টা করে কিন্তু দরজাটা ওপেনই হচ্ছে না, রাগান্বিত চোখে আসিফের দিক তাকালে আসিফ লুকিং গ্লাস দিয়ে তাকিয়ে হেসে গাড়ী টান দেই ]
মার্জান : [ চেঁচিয়ে ] আপনি অটো লক দিলেন কেনো?…
আসিফ : জারিফা!
জারিফা : হুম?…
আসিফ : বলছি যে এমন মেয়েকে বউ বানাবো যে অল্প খাবার খায়, কারণ বেশি খেলে তো আবার হাতির মতো লাগবে তাই না!
জারিফা : হ্যা হ্যা! ঠিক…
মার্জান : [ চেঁচিয়ে ] জারিফা!
জারিফা : [ চমকে উঠে ] হ্যা! বল…
মার্জান : কিছুক্ষণ চুপ থাকবি?…
জারিফা : ওকে…ওকে!
আসিফ : [ হেসে ] আচ্ছা জারিফা! তুমি মিনিমাম একবসায় কইটা ডিশ খেতে পারবে?…
জারিফা : ডিশ ইউ মিন আইটেম?…
আসিফ : ইয়াপ!
জারিফা : ফুলফিল হলে…তিনটা ফুল কমপ্লিট করতে পারবো!
আসিফ : ওয়াহ! মেয়েতো নয় যেনো ফুলের পাতা,
[ মার্জান নাক ফুলিয়ে আসিফের দিক একবার তাকিয়ে আবার জানালা দিয়ে তাকিয়ে ফেলে ]
আসিফ : জানো জারিফা! ঐদিন ক্যান্টিনে আমার পাশে একটা মেয়ে বসেছিলো খেতে… একসাথে দশ-বিশটা আইটেম অর্ডার করে খেয়েছে! কি মেয়েরে বাবা!
জারিফা : [ অবাক হয়ে ] দশ-বিশটা?..অহ মাই গড কোন খাদকের বাচ্চা এটা!
[ আসিফ হেসে উঠে ]
মার্জান : [ নাকফুলিয়ে ] এক্সকিউজ মি! আমি সব গুলো থেকে একটু একটু করে খেয়েছি ফুলফিল খায়নি! ওকে?
জারিফা : তুই ছিলি এটা?…
মার্জান : আব…না হ্যা! [ চেঁচিয়ে ] মানে হ্যা! [ বলেই জানালার পাশ ফিরে যায় ]
[ জারিফা কিটকিটিয়ে হেসে উঠে, সাথে আসিফ ও ]
মার্জান : [ চেঁচিয়ে ] জারিফাআআ!
জারিফা : ওকে ওকে! ওকে…আমি চুপ!
________________________________
দুপুর ১২ টা বেজে ১০ মিনিট, ফোন বাজছে স্নেহার!
স্নেহা : [ ঘুম কন্ঠে ] হ্যালো!
রাহুল : ওয়াও! হোয়াট এ ভয়েস্!
স্নেহা : মানে?…
রাহুল : ওয়েক আপ! মাই এঞ্জেল!
স্নেহা : [ একটু হেসে কম্বল আরো মুড়িয়ে নিয়ে ] আপনি…গুড মর্নিং!
রাহুল : [ একটু হেসে ] মর্নিং অনেক আগেই শেষ!
[ স্নেহা উঠে বসে ঘড়ির দিক তাকিয়ে দেখে ১২টা বাজতে চলছে, ]
স্নেহা : সরি! আমি… আসলে…
রাহুল : আচ্ছা বলো ঘুম কেমন হয়েছে?…
স্নেহা : ভালো! আপনি ঘুমিয়েছেন?…
রাহুল : আমি রাত ছাড়া ঘুমাতে পারিনা,
স্নেহা : রাতে ও বা কই ঘুমিয়েছিলেন?…
রাহুল : আচ্ছা ছাড়ো এসব,রেডি হয়ে নিচে আসো আমি গাড়ীতে আছি!
স্নেহা : আপনি নিচেই?…
রাহুল : হুম! কেনো ভুলে গেছো কি বলেছি?…
স্নেহা : হুম! মনে আছে…
রাহুল : হুম!
স্নেহা ফোন কেটে টেবিলে রেখে ওয়াসরুমে যাওয়ার জন্যই উঠলো হঠাৎ আবার বারান্দা দিয়ে উকি দিয়ে দেখে রাহুল হোয়াইট শার্ট, ব্লু-জ্যাকেট, ব্লাক জিন্স, সাথে ব্লাক সানগ্লাস পড়ে মোবাইলটা হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে এদিকওদিক তাকাচ্ছে, উপরের দিক একটু তাকিয়ে গাড়ীতে ঢুকতেই যাচ্ছে হঠাৎ স্নেহার দিক চোখ পড়লো, স্নেহা তাড়াহুড়ো করে লুকে পড়লো, আর রাহুল বুঝতে পেরে তেডি স্মাইল দিয়ে গাড়ীতে ঢুকে পড়ে,
কিছুক্ষণ পর রাহুল গেইট এর দিক তাকাতেই দেখে স্নেহা এগিয়ে আসছে, সাথে রাহুল এটাও খেয়াল করলো স্নেহা একটি ব্লু সালোয়ার কামিজ পড়েছে…চোখে আজ চশমা পড়েনি,ঘন করে কাজল লাগিয়েছে…হালকা ভেজা ভেজা চুল গুলো ও বিলিয়ে রেখেছে, কপালে সিলভার স্টোনের ছোট্ট একটি টিপ, হাতে সিলভার চুরি,কানে সিলভার ইয়ার রিং!
গাড়ীর দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে বসলো স্নেহা,রাহুল হা করেই তাকিয়ে আছে স্নেহার দিক,
স্নেহা : [ রাহুলের দিক তাকিয়ে ] কি হলো?..এভাবে তাকিয়ে আছেন কেনো?..
রাহুল : স্নেহা! তোমার কি আমাকে মেরে ফেলার প্লান আছে নাকি?…
স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] হোহ! তা কেনো হবে?
রাহুল : আই থিংক উপরওয়ালা তোমাকে বানানোর পড়ে যা খুঁটিনাটি বেচে গিয়েছিলো তা দিয়েই চাঁদকে বানিয়েছে! [ স্নেহা ব্লাশিং হয়ে হেসে অন্যপাশ ফিরে যায়, ]
রাহুল : বাই দ্যা ওয়ে, নাইস্ কম্বিনেশন! [ With tedi smile ]
স্নেহা : [ রাহুলের দিক একবার তাকিয়ে আবার সোজা তাকিয়ে ফেলে ] তাইতো! মিলে গেছে!
রাহুল : স্নেহা!
স্নেহা : হুম?..
রাহুল : তোমাদের বারান্দায় একটা বেড়াল ঢুকেছে মনে হয় চেক করে নিও,আমাকে উকি দিচ্ছিলো,
[ স্নেহা হেসে লজ্জায় জানালার দিক তাকিয়ে ফেলে ]
কিছুক্ষণ পর, স্নেহা রাহুলের দিক তাকিয়ে দেখে রাহুল এখনো তেডি স্মাইল দিয়ে তার দিক তাকিয়েই আছে,
স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] রাহুলল!
রাহুল : [ একটু হেসে ] আহহ! মনে হয় খোদা রেখেছে আমার দিল তার নিজের হাতে, নিলো স্নেহা আমার নাম খুব যত্নের সাথে!
স্নেহা : [ কিটকিটিয়ে হেসে ] সত্যি রাহুল! আপনি তো দেখছি সিংগার থেকে পোয়েট্রিক হয়ে যাচ্ছেন!
রাহুল : [ ব্লাশিং হয়ে ] ব্যাস্ এভাবেই হাসতে থেকো চিরজীবন, আমি পোয়েট্রি বলে যাবো আজীবন!
স্নেহা : হুম! এবার যাবেন?..লেইট হচ্ছে!
রাহুল : [ গাড়ী স্টার্ট দিয়ে ] হলে সমস্যা কি?…
স্নেহা : হোহ! লেইট হলে স্যালারি কেটে নিবে,
রাহুল : [ হুট করে গাড়ী থামিয়ে স্নেহার দিক তাকিয়ে ] তুমি এসব টাকার জন্য করছো রাইট?…
স্নেহা : আব…টা..টাকা? কক..কই নাতো?…
[ আড় চোখে রাহুলের দিক তাকিয়ে দেখে রাহুল স্নেহার দিক তাকিয়েই আছে মাথায় ও কিছু আসছে না স্নেহার কি বলবে! ]
স্নেহা : [ রাহুলের দিক তাকিয়ে ] আস…আসলে আপনি বডি বানানোর জন্য জিমে যান না?…তো আমি ও ফিগার মেইনটেইনের জন্য এটা করছি! [ বলেই হেসে সোজা তাকিয়ে ফেলে ]
– [ একটুপর রাহুলের দিক আবার তাকিয়ে ] কি হলো চলেন!
রাহুল : বোকা পেয়েছো আমাকে? তাহলে ওভারটাইম করছো কেনো?…
স্নেহা : [ কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে ] আই থিংক আমাদের এখন যাওয়া উচিৎ রাহুল!
রাহুল : [ নাক ফুলিয়ে ] ইয়াহ! [ বলেই জোড়ে গাড়ীর Steering ঘুড়িয়ে টান দিলো ]
কিছুক্ষণ পর স্নেহা রাহুলের দিক তাকিয়ে দেখে রাহুল কিছু বলছে না নিশ্চয় মন খারাপ করে আছে,
স্নেহা : রাহুল!
রাহুল : [ চেঁচিয়ে ] স্নেহা! তোমার টাকার প্রয়োজন এটা আমাকে বললেই পারতে,এতে কি বিগ্রে যেতো?…
স্নেহা : তেমন কিছুই না রাহুল!
– আচ্ছা! আপ..আপনি দেখেছেন…আমি আজ চশমা পড়িনি,
রাহুল : দেখেছি, কাজল পড়েছো…
স্নেহা : মন খারাপ করে বলছেন কেনো?..
[ রাহুল কোনো জবাব দিলো না চুপ করেই রইলো ]
ডান্স ক্লাসে এসে পৌছালো,দুজনেই চুপ করে আছে,
রাহুল : কি হলো এভাবে হয়ে আছো কেনো?…
স্নেহা : কিছু না!
[ বলেই গাড়ী থেকে নেমে দাঁড়ালো, রাহুল ও নেমে বেড়িয়ে স্নেহার দিক এগিয়ে এলো ]
রাহুল : [ অন্যপাশ তাকিয়ে ] সরি!
স্নেহা : কেনো?…
রাহুল : তোমার মন খারাপ করে দিয়েছি তাই! কিন্তু স্নেহা আমি আসলে…
– ওকে ফরগেট ইট! [ বলেই স্নেহার দিক তাকাতেই দেখে স্নেহার চোখে পানি টলমল করছে ]
রাহুল : হেইই! হোয়াট হ্যাপেন,.. আর আরে কাদছো কেনো?…ওকে ওকে আম সরি! আর চেঁচাবো না…প্লিজ ডোন্ট ক্রাই! [ বলেই যত্ন করে স্নেহার চোখের পানি গুলো মুছে দেই যাতে কাজল না লেপ্টে যায় ]
চলবে…..