♥Love At 1st Sight♥
~~~Season 3~~~
Part – 10
writer-Jubaida Sobti♥
জারিফা : দেখেন আমি তো সরি বলছি! আপনি এতো রিয়েক্ট করছেন কেনো? সত্যি ঐদিন আমার ফ্রেন্ড স্নেহা [ বলেই পাশ ফিরে তাকালো ] আরে স্নেহা কই গেলো?
রিদোয়ান : হলের দিক গিয়েছে!
জারিফা : ও..ওহ! তাহলে আমিও যায় কেমন! [ বলেই চলে যাচ্ছিলো ]
রিদোয়ান জারিফাকে টেনে আলাদা একটা নিরিবিলি সাইটে গিয়ে দাড় করালো!
জারিফা : [ অবাক হয়ে ] আপনি এইখানে কেনো আনলেন?…
রিদোয়ান : তোমার সাথে রোমান্স করবো বলে!
[ জারিফা নিজের মুখ নিজে চেপে ধরে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে ]
রিদোয়ান : কি হলো অবাক হচ্ছো কেনো?..দেখো দোষ যখন করেছো পানিশমেন্ট তো পেতেই হবে! [ জারিফার মুখ থেকে হাত নামিয়ে দেই এবং তার অনেকটা কাছে এগিয়ে আসে ]
জারিফা : আরে কি করছেনটা কি [ বলেই রিদোয়ানকে ধাক্ষা দিয়ে দৌড়াতে থাকে ]
এইদিকে,
স্নেহার ছুটে আসার হাজারো চেষ্টার বৃথা দেখে…রাহুল ধীরে ধীরে স্নেহার হাত ছেড়ে দিলো, অমনিই স্নেহা তার দু-হাত দিয়ে রাহুলকে ধাক্ষিয়ে সরিয়ে দেই,
রাগান্বিতভাবে রাহুলের দিক তাকিয়ে স্নেহা তার মুখ মুছে হাপাতে লাগলো,ব্যাগ কাধে নিয়ে দৌড়ে রুম থেকে বেড়িয়ে গেলো,
হঠাৎ সজোড়ে ধাক্ষা খেয়ে থেমে যায়,
জারিফা : আহ! স্নেহা দৌড়াচ্ছিস কেনো?…
স্নেহা : আ..আমি আসলে…তুত..তুই কেনো দৌড়াচ্ছিস!
জারিফা : আ..আমি… তুত তুকে খুজছিলাম!
স্নেহা : ওহ! চল তাড়াতাড়ি, [ বলেই জারিফাকে টেনে নিয়ে নেমে যায় ]
রাহুল হল থেকে বেড়িয়ে আসলে দেখে রিদোয়ান খুব টেনশন ভাব নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে,
রাহুল : [ গিয়ে কাধে হাত রাখলো ] Alright দোস্ত?
রিদোয়ান : ইয়ার! এই জারিফা নিজেকে কি মনে করে?…আমাকে বারবার এভোইড করছে!
রাহুল : জারিফা?..ইউ মিন স্নেহার ফ্রেন্ড জারিফা?…
রিদোয়ান : [ হাটতে হাটতে ] আরে হ্যা!
রাহুল : ওহ! I see র্যাগিং নিতে গিয়ে ফিদা হয়ে গেলি?…
রিদোয়ান : [ হেসে ] don’t know ইয়ার! একটা আলাদা এট্রেকশন কাজ করে! কেমন জানি…
রাহুল : She is a good girl!
রিদোয়ান : How do you know?…
রাহুল : স্নেহার ফ্রেন্ড! ওকে A to z সব খবর জানি!
রিদোয়ান : [ রাহুলের কোমড় ঝড়িয়ে ] ইয়ার! নাম্বারটা নিয়ে দে না….
রাহুল : আরে কি করছিস! ছাড়..
রিদোয়ান : আরে তুই কেমন দোস্ত রাহুল!
রাহুল : আরে মেয়েদের নাম্বার নিতে তো আমার চেয়ে তুই বেশি এক্সপার্ট! আর তুই উলটা আমার থেকে…
রিদোয়ান : আরে এক্সপার্টটা এখন কাজ করছে না কেনো জানি!
রাহুল : [ চেঁচিয়ে হেসে ] ওকে ওকে!
রিদোয়ান : [ খুশিতে রাহুলের কাধের উপর ঝাপিয়ে উঠে ] থেংক্স দোস্ত!
ক্লাস শেষে সবাই কথা বলতে বলতে বেড়িয়ে যাচ্ছে,
শায়লা : স্নেহা! তোর চশমা কোথায়?…
স্নেহা : [ চোখে হাত দিয়ে দেখে চশমা নেই মনে মনে বলতে থাকে ] আরে! আমিতো চশমাটা ওর কাছেই ফেলে এসেছি!
মার্জান : মনে হয় এইবার ও রাহুলের কাছে চশমা জমা দিয়ে এসেছে!
[ সবাই হেসে উঠে ]
শায়লা : পার্কিং এর দিক দেখ রাহুল তাকিয়ে আছে!
জারিফা : স্নেহা দেখনা! তোর দিকই তাকিয়ে আছে! [ জারিফা রাহুলকে হাত নাড়ালো হঠাৎ পাশে রিদোয়ানকে দেখে লজ্জা পেয়ে হাত নামিয়ে ফেলে ]
স্নেহা : হয়েছে অনেক?..এইবার চল
[ বলেই হাটা শুরু করলো… হঠাৎ কিছুদূর এগিয়ে যেতে না যেতেই রাহুলের গাড়ী তাদের ক্রস্ করে সামনে এসে থামে…সবাই অবাক হয়ে দাঁড়িয়ে যায় ]
রাহুল জানালা খুলে..স্নেহার চশমাটা এগিয়ে দিলো,
শায়লা : [ স্নেহার কানে ] হুম! এখন ক্লিয়ার হলো চশমা কোথায় ছিলো!
জারিফা : [ স্নেহার আরেক কানে ] ইয়ার! স্নেহা..কি এন্ট্রি ছিলো দোস্ত!
স্নেহা চোখ রাংগিয়ে রাহুলের দিক চেয়ে দেখে রাহুল তেডি স্মাইল দিয়ে হাতে চশমাটা এগিয়ে ধরে আছে,
মার্জান : স্নেহা! মাই ডিয়ার চশমাটা নিয়ে নে…আর কিছুক্ষণ হলে হাত ভেঙে পড়ে যাবে,
জারিফা : আরে স্নেহা যাহ না… [ স্নেহাকে ধাক্ষা দিয়ে সামনে এগিয়ে দেই ]
স্নেহা টান দিয়ে চশমাটা নিয়ে নেই! রাহুল একটু হেসে…গাড়ী নিয়ে চলে যায়,
মার্জান : [ এসে চশমাটা স্নেহাকে পড়িয়ে কাধে হাত দিয়ে হাটা শুরু করে ] স্নেহা! মেরি জান আমার না একটা শায়েরি মনে পড়ে গেলো!
“হামনে্ মানা্ কি্ তাগা্ ফুল্ নেহি্ কারোগি্ লেকে্ইন”
“খাগ্ হোযা্ইয়েংগে হাম্ তুমকো্ খাবার হোনে্ তাক্”
[ বাকিরা হেসে উটে ]
জারিফা : ওয়াহ ওয়ায়াহ!
স্নেহা : আরে তোরা এতো সিরিয়াসলি নিচ্ছিস কেনো?…আমি জাষ্ট ওকে ওর জ্যাকেট রিটার্ন করতে গিয়েছিলাম…[ বলেই স্নেহা লজ্জা পেয়ে দৌড়ে হাটা শুরু করে ]
হঠাৎ,
পেছন থেকে ডাক আসে, এক্সকিউজমি!
সবাই ফিরে তাকায়,
নেহা : হ্যালো! চাম্বুস আন্টি!
সবাই অবাক হয়ে একে অপরের দিক তাকাতে লাগলো,
নেহা : হ্যা হ্যা! তোমাকেই বলছি! এক্সুলি তোমার নামটা না আমার মনে থাকেনা! কিন্তু আমি যেটা দিয়েছি ওটাও Not bed! তোমার ক্যারেকটার এর সাথেও মিল আছে!
মার্জান : [ রেগে এগিয়ে গিয়ে ] ও হ্যালো! কাকে চাম্বুস আন্টি ডাকছেন?.. হুম?..
নেহা : Cool! যাকে ডেকেছি সে বুঝে নিয়েছে! [ বলেই স্নেহার সামনে গিয়ে দাঁড়ালো ] So মিস্ চাম্বুস..আপনি না কেয়ারফুল হয়ে যান! রাহুলের পিছে এমন অনেকেই ভাগছে কিন্তু No chance আর তোমার সাথে তো রাহুলের প্রশ্নই আসে না আই মিন্ আপ-ডাউন ডিফারেন্স!
[ স্নেহা ভয়ে চশমা ঠিক করতে থাকে ]
মার্জান : [ হেসে ] আচ্ছা! আপ-ডাউন ডিফারেন্স…? So ইউ মিস্ জ্যালাসি্ এতোক্ষণ আমাদের ফলো করছিলে?..
নেহা : Mind your language! আমি তোমার সিনিয়র! ভুলে যেও না!
মার্জান : হুহ! So what? সিনিয়র হয়েছেন বলেই কি গিলে খাবেন নাকি?..আর আমার ফ্রেন্ড এর সাথে কার ম্যাচ হবে..কার সাথে ডিফারেন্স হবে তা আমরাই ভালো বুঝবো! ভালোই হবে যদি আপনি নিজের চরকাই নিজে তেল দেন!
নেহা : লুক! ইটস্ মাই ওয়ার্নিং! রাহুল থেকে দূরেই থাকো… নাহলে এইবার যা হাল করবো না…মুখ তুলেও তাকাতে পারবা না…
মার্জান : আরে যান যান যা করার করেন! উই আর ওয়েটিং!
স্নেহা : [ মার্জানের হাত ধরে ] চল মার্জান!
জারিফা : বাই দ্যা ওয়ে! স্নেহার এখন আর কেউ কিছু করতে পারবে না..কারন [ নেহার দিক চেঁচিয়ে ] রাহুল! বলেছে…
মার্জান : [ জারিফার সাথে তাল মিলিয়ে ] ক্যারেক্ট! এমনই তো বলেছিলো! না নাহ আরো অনেক বলেছে কি যেন জারিফা!?
[ শায়লা হাসতে থাকে তাদের কান্ড দেখে আর স্নেহা ঘাবড়াতে থাকে ]
জারিফা : বলেছে! যেই স্নেহার দিক আংগুল তুলে তাকাবে…তার আংগুল ভেঙে দেবে!
মার্জান : হ্যা! সাথে এটাও বলেছে যে শুধু আংগুল না আংগুলের সাথে বোনাস্ ও দেবে [ নেহার চোখের দিক ইশারা করে ] মানে চোখ গেলে নিয়ে নেবে!
জারিফা : আচ্ছা ঐদিন রাহুল স্নেহাকে কি যেন গান শুনিয়েছিলো?…
মার্জান : হ্যা! ঐ যে কাহো্ না্ পেয়ার্ হে্!
জারিফা : হ্যা তুমসে্ পেয়ার হে! ইয়ার! রাহুল কি রোমান্টিক তাই না!
[ নেহা রেগে ফুফিয়ে মুখ ভেংগিয়ে চলে যায় ]
জারিফা আর মার্জান হাসতে হাসতে হাই ফাইভ করে ঝড়িয়ে ধরে,
মার্জান : আসছে বরং ওয়ার্নিং দিতে! নিজেকে কি ভাবে বলতো! এসব ওয়েষ্টার্ণ ড্রেস পরে..যে কেউই মডেল হতে পারবে!
জারিফা : আমাদের স্নেহাকেতো ওয়েষ্টার্ণ ড্রেসে আরো ফাটাফাটি লাগবে!
শায়লা : তোরা যখন! ঐগুলো বলছিস! আমার না ওর এক্সপ্রেশন দেখে..পেট ফেটে হাসি আসছিলো! বাই দ্যা ওয়ে! রাহুল ওসব তোদের কবে বললো বলতো..?আংগুল ফেলে দেবো চোখ গেলে নেবো!
মার্জান : আরে ধুর ওসব তো ঐ মিস্ জ্যালাসি্কে জ্যালাস্ করানোর জন্য বললাম!
[ সবাই হেসে উঠে হঠাৎ মার্জান স্নেহার দিক তাকাতেই দেখে স্নেহা আপসে্ট হয়ে হাটছে ]
মার্জান : আরে স্নেহা! তুই আপসে্ট হয়ে আছিস কেনো?…[ স্নেহাকে তার দিক ফিরিয়ে ] তুই ওকে ভয় পাচ্ছিস?…আরে রাহুল তোকে কেয়ার করে ওকে পাত্তা দেই না বলেই ও তোর উপর জ্যালাস্
স্নেহা : আমার মনে হয়! ও রাহুলকে…
জারিফা : ও রাহুলকে কি?..হুম?..দেখ স্নেহা ও হয়তো রাহুলের পিছে পাগল! কিন্তু রাহুলতো তোর পিছে তাই না?..[ বলেই চোখ টিপ মারে ]
স্নেহা : হয়েছে অনেক তোরাও না! এবার বাড়ী চল!
জারিফা : [ হেসে ] আরে স্নেহা লজ্জা পাচ্ছিস কেনো…
বিকেলে,
স্নেহা তৈরী হচ্ছে ডান্স ক্লাসের জন্য!
জারিফা : আচ্ছা গাইস্ আজ দেখেছিস! মার্জান না রাহুলের অনেক তারিফ করেছে!?
মার্জান : তোর মানুষের পেছনে লেগে না থাকলে হয়না?…
জারিফা : আরে রিলেক্স! আমি তো বাজিয়ে দেখছি!
মার্জান : বাজাতে তো আমার ওর মাথায় ইচ্ছে করছে!
জারিফা : কার?..
মার্জান : মিস্ জ্যালাসি্র আর কি..
ঐ ইডিয়ট নিজেকে কি মনে করে বলতো! ওর কথায় না আমার মাথার রক ট্যারা করে দিয়েছে কাল ভার্সেটি গিয়েনি একবার তারপর দেখিস কি করি!
স্নেহা : গাইস্ এতো সিরিয়াস্ হয়ে যাচ্ছিস কেনো তোরা?..ওদের গ্যাংগ দেখিসনি কি ভয়ানক ওরা সিনিয়র অনেক কিছুই করতে পারে! আমাদের উচিৎ ওদের থেকে দূরে দূরে থাকা…
মার্জান : [ চেঁচিয়ে ] আরে আরে! আমি কি ওদের গ্যাংগ কে ভয় পায় নাকি?..
স্নেহা : দেখ আমি এখন থেকে রাহুলের কাছ থেকে দূরে দূরে থাকবো! তারপর দেখবি নেহা ও ঠান্ডা হয়ে যাবে!
মার্জান : [ স্নেহাকে টেনে তারপাশে বসিয়ে ] দূরে দূরে থাকবি মানে?..এখন থেকে তুই রাহুলের আরো কাছে কাছে থাকবি! [ দাঁড়িয়ে গিয়ে ] আমি দেখবো ঐ নেহার কান্ড! আমি দেখতে চাই ওর এক্সপ্রেশন!
জারিফা : [ এক্সাইটেড হয়ে ] ইয়েস্ আমার তো অপেক্ষায় হচ্ছে না..কাল কখন ভার্সেটি যাবো!
স্নেহা : [ দাঁড়িয়ে ] সব পাগল হয়ে গিয়েছিস নাকি?..তোদের সাথে থাকলে আমিও পাগল হয়ে যাবো আমি যাচ্ছি ডোর অফ করে দিস!
মার্জান : জি! টিচার! যাহা আপনার আদেশ… [ স্নেহা হেসে মার্জানের গাল টেনে দিয়ে বেড়িয়ে যায় ]
স্নেহা : [ মনে মনে ভাবতে ভাবতে হাটতে লাগলো ] ঠিকই তো আমার আর রাহুলের মধ্যে অনেক ডিফারেন্স! কোথায় আমি আর কোথায় রাহুল! নেহা তো অনেক সুন্দর ষ্টাইলিশ! কিন্তু রাহুল ওকে এভোইড করে কেনো?..[ কিছুক্ষণ ভেবে ] মার্জান বলেছিলো ও সবসময় মেয়ে নিয়েই থাকে, কোনো আমাকে ও ইউজ করছে না তো?..আর আজ ভার্সেটিতে যা করলো ছিঃ এভাবে বিনা পার্মিশনে কেউ করে নাকি?..
হঠাৎ শা…করে পাশ কেটে একটা গাড়ী স্নেহার সামনে এসে দাঁড়ায়! আর স্নেহা ঘাবড়ে উঠে…গায়ের লোম সব খাড়া হয়ে গেছে স্নেহার! [ মনে মনে রেগে গাড়ী ওয়ালাকে বকছে এভাবে কেউ গাড়ী থামায় নাকি?..হার্টের রোগী থাকলে এতোক্ষণে ষ্ট্রোক করে ফেলতো ]
ধীরে ধীরে গাড়ীর গ্লাস নামছে…এবং দেখে ব্লাক জ্যাকেট ব্লাক সানগ্লাস কিছু চুল খাড়া করিয়ে রেখেছে..সেই পুরোনো তেডি স্মাইল দিয়ে তাকিয়ে আছে,
স্নেহা : আপনি?..এভাবে কেউ গাড়ী থামাই নাকি?..
রাহুল : গাড়ীতে উঠো!
স্নেহা : কেনো উঠবো?…
রাহুল : আগেই বলেছি কথা রিপিট করতে আমার ভালো লাগে না!
পেছন থেকে কিছু গাড়ী ওয়ালারা চেঁচিয়ে উঠে,
– আরে ভাই গাড়ী সরান! রাস্তার মাঝে কেউ এভাবে গাড়ী থামাই নাকি?…
– ও হিরো! প্যাসে্ঞ্জার গালি দিতাসে্ তাড়াতাড়ি সাইড করেন আমাদের ও তো যাওয়া লাগবো!
স্নেহা : দেখেন আপনার জলহস্তীটা এইখান থেকে সরান! রাস্তা জ্যাম হয়ে যাচ্ছে দেখছেন না?…
রাহুল : গাড়ীতে উঠো!
স্নেহা : [ বিরক্তি হয়ে ] কি আজিব এমন কেনো আপনি?..সব আপনার ইচ্ছেতেই হবে নাকি?..দেখেন আমার ক্লাসের লেইট হয়ে যাচ্ছে…আমি যাচ্ছি! [ বলেই স্নেহা হাটা শুরু করে রাহুল রাগান্বিত ভাবে তাকিয়ে থাকে ]
হঠাৎ কানের কাছে জোড়ে গাড়ির হর্ণ বেজে উঠে… স্নেহা শুনে তাও হাটছে…কিন্তু হর্ণ বাজা বন্ধই হচ্ছেনা…তার উপর আশেপাশে গাড়ী ওয়ালাদের চেঁচামেচি! স্নেহা পেছন ফিরে তাকিয়ে দেখে…রাহুল এখনো তার গাড়ী ঐভাবে দাঁড়িয়ে করে রেখেছে! আর ও পাসে ইয়া বড় লম্বা জ্যাম লেগে যাচ্ছে!
স্নেহা : [ আবার রাহুলের দিক এগিয়ে আসলে রাহুল হর্ণ বাজানো বন্ধ করে ] কি হচ্চে এইভাবে হর্ণ বাজাচ্ছেন কেনো…জোড়ে হর্ণ বাজানো শব্দ দূষণে পরিণত করে, আপনি পড়েন নি?..
রাহুল চোখ দিয়ে স্নেহাকে গাড়ীর সিটে্র দিক ইশারা করে বসার জন্য!
স্নেহা আবারো কিছু বলতে যাবে…তখনি রাহুল আবার হর্ণ বাজানো শুরু করে আর না পেরে বিরক্ত হয়ে স্নেহা গাড়ীর দরজা খুলে বসে পড়ে, রাহুল গাড়ী টান দেই!?
গাড়ী চলছে…কারো কোনো সাড়া শব্দ নেই!
হঠাৎ,কিছুক্ষণ পরে,
স্নেহা : আরে আপনি এইদিকে কোথায় যাচ্ছেন?…
রাহুল কিছু না বলে সোজা তাকিয়ে গাড়ী চালাতেই আছে…মুখের মধ্যে কি যেন চিবাচ্ছে!
স্নেহা : দেখেন! আমি কিছু জিজ্ঞেস করছি! আমার ক্লাসে যেতে হবে দেরী হলে…বাচ্চারা এসে ফেরত যাবে!
রাহুল স্নেহাকে একটা চুইংগামের প্যাকেট এগিয়ে দেই খেতে…
স্নেহা : [ নাক ফুলিয়ে চুইংগাম হাতে নিয়ে জানালা দিয়ে ফেলে দেই ]
[ রাহুল হেসে দেই ]
স্নেহা : [ রাহুলের দিক তাকিয়ে ] আজিব মানুষ তো আপনি?..হাসছেন কেনো?..কোনো জবাবই দিচ্ছেন না…
[ কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে ]
গাড়ী থামান প্লিজ! আমি নামবো! [ রাহুল কিছু জবাব দিলো না ]
স্নেহা : আরে কি হলো?..কিছু বলছেন না কেনো?..
[ রাহুল সুইচ্ টিপ দিয়ে গান ছেড়ে দিলো ] রানবির কাপুরের বেশারাম মুভির একটা গান বেজে উঠলো,
♪♪ দিল্ কা্ জো্ হাল হে্
বো্ তুজে্ কেসে্ বায়া্ কারে্
কেহেনে্ তুঝে্ ইয়া্ দিল্ মেরাপে্ বলো্ না্ কিয়া্ কারে্.. ~~~~
♪♪ দিল্ জো্ তুমহারা্ হে্ কেসা্ বেচা্রা হে্ মানে্ না্ বেশা্রাম্ বিল্কুল্ খাট্টা্ রাহে্
তু্ কারে্ দিল্ বেকা্রার♪
কিউ~~ কারু্ মে্ তুঝ্ছে পিয়া্র ♪♪
সাথে রাহুল ও গুনগুনিয়ে গাইতে লাগলো,
হুট করে টিপ দিয়ে স্নেহা গানটা বন্ধ করে দেই!
রাহুল স্নেহার দিক একবার তাকিয়ে দেখে রেগে মেয়েটা লাল হয়ে গেছে…তবে রাহুলের অনেক মজা লাগছিলো তাই আবার তেডি স্মাইল দিয়ে গাড়ী চালাতে লাগলো…
স্নেহা : [ কোণা চোখে রাহুলের দিক তাকিয়ে মনে মনে ] মানুষ যেমন তেডি হাসিটাও তেমন তেডি…
হঠাৎ গাড়ী একটা সুন্দর গেইট দিয়ে ঢুকলো! চারদিক বাগান মাঝে সরু একটা নিরবিলি রাস্তা…স্নেহা মাথা বের করে সাইনবোর্ড পড়ে দেখে… মার্মিড হাউজ!
স্নেহা : [ অবাক হয়ে ] ওয়াও মার্মিড হাউজ,..কি সুন্দর জায়গা.. ছোট বেলায় শুনেছিলাম এইখানে জলপরীরা থাকতো,
জানেন আমি এইখানে অনেকবার আসার ট্রাই করেছি..কিন্তু যতোবারই এসেছি দূর থেকেই দেখে চলে গিয়েছিলাম…..[ সবকথা একশাসে বলে ফেলে… রাহুলের দিক তাকালে ]
রাহুল : দূর থেকে দেখে কেনো চলে গিয়েছিলে?…
স্নেহা : আরে! এইখানে ঢুকতে যতোটাকা লাগে…ঐ টাকায় আমার ফ্যামিলি ৩/৪মাস চলে যেতে পারবে!
রাহুল গাড়ী থামিয়ে একটু হেসে… নেমে স্নেহাকে ও গাড়ী থেকে নামায়,
স্নেহা : কিন্তু আপনি আমাকে এইখানে কেনো আনলেন?…
রাহুল স্নেহার হাত ধরে ভেতরে ঢুকে গেলো, সিকিউরিটি গুলো রাহুলকে হ্যালো জানালো সাথে স্নেহাকে ও জানালো…
ভেতরে ঢুকে স্নেহা যা দেখতে পেলো…সবার ড্রেস এর তুলনায় স্নেহার ড্রেস কিছুই না…বাকিরা পড়ে আছে ওয়েষ্টার্ণ, আর স্নেহার পড়নে আছে একটা হোয়াইট লং স্কার্ট ব্লু লংহ্যান্ড টি-শার্ট, আর গায়ে পেছানো ব্লু-ব্লাক কম্বিনেশন এর একটা শাল!, কাধে হ্যান্ড বেগ!
রাহুল : [ স্নেহার দিক তাকিয়ে বুঝতে পারলো স্নেহা বাকিদের দেখে uncomfortable ফিল করছে..] স্নেহা! এতো uncomfortable ফিল করছো কেনো ? রিলেক্স থাকো…
স্নেহা : সবাই আমার দিক কিভাবে তাকিয়ে আছে দেখেন..প্লিজ চলেন এইখান থেকে…[ বলেই রাহুল থেকে হাত ছুটানোর চেষ্টা করছে ]
রাহুল : Shut-up স্নেহা এতো টানাটানি করছো কেনো…. রিলেক্স হয়ে হাটো!
[ রাহুল স্নেহাকে নিয়ে লিফটে ঢুকলো এবং ১৪ নম্বর বাটনে টিপ দিলো তা দেখে ]
স্নেহা : [ রাহুলের দিক তাকিয়ে ] কোথায় যাচ্ছি আমরা?…
রাহুল : [ স্নেহাকে টেনে তার আরো পাশাপাশি দাড় করালো ] গিয়েই দেখো!
স্নেহা : দেখেন আমার না আপনার কোনো মতলব ঠিক লাগছে না…[ বলেই গ্রাউন্ড বাটনে টিপ দিতে গেলো…রাহুল স্নেহাকে আবার টেনে তার কাছে চেপে ধরে রাখে…স্নেহা ছুটাছুটির চেষ্টা করেও বৃথা ]
লিফট ১৪নং ফ্লোরে এসে পৌছালো…রাহুল স্নেহার হাত ধরে লিফট থেকে বেড়িয়ে আসে, একপাশ থেকে আওয়াজ আসে,
– মিষ্টার রাহুল!
রাহুল : হেই ম্যালিসা্ হাউ আর ইউ?..
ম্যালিসা্ : অলরাইট! হাউ এবাউট ইউ?..
রাহুল : ওয়েল! অহ! শি ইজ স্নেহা! [ বলেই স্নেহাকে পাশে টেনে নিলো ]
ম্যালিসা্ : হ্যালো স্নেহা!
স্নেহা : হাহ..হাই!
ম্যালিসা্ : ওকেই গাইস্ নাইস্ টু মিট ইউ এন্ড এনজয় ইউর ডে! [ বলেই রাহুলের হাতে একটি কার্ড এগিয়ে দেই ]
রাহুল : [ কার্ড হাতে নিয়ে ] কাম স্নেহা!
স্নেহা : [ রাহুলকে ফিসফিসিয়ে ] ইনি কে?
রাহুল : [ চোখ মেরে ] আমার এক্স!
স্নেহা : [ কিটকিটিয়ে হেসে ] আপনার এক্স…? আপনি ফরেনার এর সাথেও প্রেম করেছিলেন?..
রাহুল : কেনো ওরা কি মানুষ না?..
স্নেহা : না তা হবে না কেনো?..কিন্তু মনে হচ্ছে আপনি ওনার অনেক ছোট হবেন!
রাহুল : ছোট বড়ই কি আছে লাভ ইজ লাভ! এটার কোনো এক্সপ্লেশন নেই!
স্নেহা : আপনি মজা করছেন তাই না?..
রাহুল : [ হেসে ] নো আই এম সিরিয়াস স্নেহা!
স্নেহা : কারণ আমি এইখানে সেইম চেহেরার অনেকগুলো ম্যালেসা্কে দেখছি!
[ এইবার রাহুল নিজেই কিটকিটিয়ে হেসে উঠে এবং কার্ডটা একটা মেশিনে প্রেস্ করলো সাথে সাথে একটা দরজা খুলে গেলো.. স্নেহা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে..]
রাহুল স্নেহার হাত ধরে ভেতরে ঢুকতেই দরজা আপনা আপনি বন্ধ হয়ে গেলো…
স্নেহা চারপাশ চোখ ঘুরিয়ে অবাক হয়ে দেখছে…যেন লাগছে ও কোনো আউট কান্ট্রিতে আছে! চারদিক ফ্লাওয়ার আর ক্যান্ডেলাইট দিয়ে সাজানো…
স্নেহা অবাক হয়ে রাহুলের দিক তাকালো,
রাহুল : শকড হওয়ার কিছু নেই!
স্নেহা : [ চোখে মুখে এক্সাইটমেন্ট নিয়ে ] নাইস্ আচ্ছা! আপনি আমাকে এইখানে কেনো আনলেন?..
রাহুল : সি্ট ফার্ষ্ট [ বলেই একটা চেয়ার স্নেহাকে বসার জন্য এগিয়ে দিলো… স্নেহা কথা না বাড়িয়ে বসে গেলো.. রাহুল ও স্নেহার পাশে একটা চেয়ার টেনে বসে গেলো.. তেডি স্মাইল দিয়ে তাকিয়ে রইলো স্নেহার দিক ]
স্নেহা : [ নিচের দিক তাকিয়ে ] এভাবে তাকিয়ে আছেন কেনো?..
রাহুল : তুমি তাকিয়ে থাকার মতোই তাই!
স্নেহা : আ..আপনি বলেছিলেন আমার চোখ চাইনিজদের মতো, নাক বোচা, তাহলে তাকিয়ে থাকার মতো কই হলো?..
[ রাহুল হেসে অন্যদিক ফিরে গেলো ]
স্নেহা : হাসছেন কেনো?..আপনি আমাকে বোকা পেলেন নাকি?
রাহুল : বোকা তো ভেবেছিলাম কিন্তু আজ কিস্ করার সময় তুমি যে কামড়টা দিয়েছিলে এরপর বুঝে গিয়েছি…তুমি বোকা না আমিই বোকা!
[ স্নেহা লজ্জায় মাথা নিচু করে ফেলে ]
রাহুল ধীরে ধীরে স্নেহার হাতটা তার হাতের মুঠোই বন্ধি করে নিলো…
স্নেহার বুকটা ধুপ ধুপ করছে…এই স্পর্শে স্নেহার গা শিউরে উঠে,
চলবে….