♥ Love At 1st Sight ♥
~~~Season 3~~~
Part – 8
writer-Jubaida Sobti♥
স্নেহাকে চারদিক খুজে রাহুল হাপিয়ে উঠলো,
আসিফ : রাহুল! টেনশন নিস না! এইখানে কোথাও হবে!
রাহুল : [ চেঁচিয়ে ] টেনশন নিবো না মানে?…স্নেহাকে পাওয়া যাচ্ছে না…আমি টেনশন নিবো না?..
আসিফ : ওকে! ওকে রিলেক্স!
রাহুল : Damn it! কোথায় চলে গেলো না বলে!
শ্রেয়া আর নেহা এগিয়ে আসে তাড়াহুড়ো করে,
শ্রেয়া : আরে রাহুল এইখানে দাঁড়িয়ে আছিস এখনো?
তোর নাম Announced করা হচ্ছে! আর স্নেহা কোথায়?..
আসিফ : তাকেই তো খুজছি!
শ্রেয়া : এখনো খুজছিস?
নেহা : [ রাহুলের কাছে গিয়ে ] বাট্! রাহুল সময়তো পেড়িয়ে যাচ্ছে! [ রাহুলের কাধে হাত রেখে ] তুই যদি চাস আমি পার্টনার হতে পারি!
রাহুল : [ নেহার হাত ঝাড়ি দিয়ে ফেলে ] No need your help!
শ্রেয়া ডান্স ক্যান্সেল কর!
নেহা : বাট! রাহুল!..
রাহুল : [ চেঁচিয়ে ] I say dance cancel!
[ বলেই রাহুল হেটে গাড়ীতে উঠে চলে যায়! ]
প্রোগ্রাম শেষ! রাত প্রায় গভীর, রাহুল গাড়ী নিয়ে ফিরে এসে দেখে…স্নেহার ফ্রেন্ডসরা রাহুলের ফ্রেন্ডসরা সবাই এখনো বসে আছে!
রাহুলের গাড়ী দেখে মার্জান দৌড়ে এগিয়ে আসে!
মার্জান : স্নেহা?
রাহুলের মন খারাপ দেখে…মার্জান বুঝতে পারলো… স্নেহাকে এখনো পাওয়া যায়নি!
সবাই এগিয়ে আসে,
রাহুল : [ স্নেহার ফ্রেন্ডসদের দিক এগিয়ে গিয়ে ] Don’t worry! আমি স্নেহাকে খুজে বের করবো…তোমরা এক কাজ করো বাড়ী যাও! রাত অনেক হয়েছে! আসিফ ওদের ড্রপ! করে দে!
মার্জান : বাড়ী যাবো! স্নেহাকে ছাড়া! পাগল নাকি?..
আসিফ : Guys! try to understand! এখানে আর বেশিক্ষণ থাকা যাবে না!
রাহুল : দেখো ভরসা রাখো আমার উপর! কথা দিচ্ছি আমি!
শায়লা : চল মার্জান! ও যখন বলছে…
জারিফা : [ মার্জানের কানে ] চল আমরা বাড়ী গিয়ে চেক করি! এটাও তো হতে পারে,হয়তো ও বাড়ী চলে গেছে!
মার্জান : [ কেঁদে ] জানিনা কোথায় গেছে কোন অবস্থায় আছে…
আসিফ : Come guys!
[ আসিফ স্নেহার ফ্রেন্ডসদের বাড়ী পৌছে দিয়ে আবার ভার্সেটি এসে দেখে রাহুল দাঁড়িয়ে ভার্সেটির দিক এক ধেয়ানে চেয়ে আছে ]
আসিফ : [ রাহুলের দিক এগিয়ে এসে ] সবাইকে বাড়ী পাঠিয়ে দিয়ে নিজেই একা দাঁড়িয়ে আছিস! [ রাহুলকে নাড়িয়ে দিয়ে ] হেই! রাহুল! কি দেখছিস এভাবে?
রাহুল : [ রেগে ] তুই এখানে কি করছিস! তুই ও বাড়ী যা! রাত অনেক হয়েছে!
আসিফ : Cool Bro! Cool!
রাহুল : [ ভার্সেটির দিক তাকিয়ে ] কেনো যেন মনে হচ্ছে! স্নেহা এইখানে কোথাও আছে…
আসিফ : অনেক তো খুজলাম এইখানে!
রাহুল : একবার ক্লাসগুলো চেক করা উচিৎ!
আসিফ : ইয়ার! রাহুল অবাক লাগছে তুই কোনো মেয়ের জন্য এতো উইক হয়ে পড়েছিস! কয়েকদিনে এতোটা! [ রাহুল রাগান্বিত ভাবে তাকালে ] আরে ক্লাস সবগুলো বন্ধ ছিলো! আর ও ঐখানে একা গিয়ে কি করবে বলতো!
[ রাহুল কিছু না বলে দৌড়ে ভার্সেটির দরজার সামনে গিয়ে দাঁড়ায় ]
আসিফ : [ এগিয়ে এসে ] Locked!
আর সিকিউরিটি ও এতোরাতে ঢুকতে দেবে না!
সিকিউরিটি : [ এগিয়ে এসে ] কি হচ্ছে এতোরাতে! প্রোগ্রাম এখনো শেষ হয়নি?
রাহুল ফিরে তাকালে,
সিকিউরিটি : সরি! আসলে খেয়াল করিনি ভাইয়া!
রাহুল চিন্তিতো হয়ে দরজার দিক তাকিয়েই রইলো!
আসিফ : [ রাহুলের কাধে হাত দিয়ে ] চল রাহুল!
রাহুল : [ চেঁচিয়ে ] যাবো?.. কই যাবো?..বল? আরে! ৮ ঘন্টা হয়ে গেছে! এখনো এটা জানিনা স্নেহা কোথায় আছে!
আসিফ : ওকে! রিলেক্স I understand কিন্তু রাহুল!
রাহুল : [ আসিফকে ধাক্ষিয়ে ধাক্ষিয়ে ] যাহ তুই যাহ! আমার কারো হেল্প লাগবে না…যাহ!
আসিফ : [ রেগে রাহুলকে ধাক্ষিয়ে ] Stop it! রাহুল নিজের দিক তাকিয়ে দেখ একবার! ঘেমে ভিজে আছিস! কখন থেকেই স্নেহা স্নেহা করেই যাচ্ছিস!
রাহুল : [ জোড়ে শাস ফেলে ] ব্যাস! বললাম না…চেক করবো! [ সিফিউরিটির দিক ফিরে ] চাবি!
সিকিউরিটি : আমাদের কাছে পার্মিশন নেই! এভাবে তো চাবি দেওয়া যাবে না!
রাহুল : [ তাড়াহুড়ো করে পকেট থেকে মানিব্যাগ বের করে ধরিয়ে দিলো সিকিউরিটির হাতে ] চাবি চাবি?..
সিকিউরিটি রাহুলের পাগলামো দেখে তাড়াতাড়ি চাবি দিয়ে দিলো!
রাহুল তাড়াহুড়ো করে দরজা খুলে সব ক্লাসে ঢুকে ঢুকে দেখছে!
আসিফ ও তার সাথে খোজা শুরু করে দিলো!
হঠাৎ আসিফ একটা ক্লাসে ঢুকে আবার তাড়াহুড়ো করে বেড়িয়ে যায়!
রাহুল : What happen? …[ চেঁচিয়ে ] আরে কি হলো?…
আসিফ : তুই ঢুক!
রাহুল তাড়াহুড়ো করে ঢুকে নিস্থব্দ হয়ে থেমে যায়! স্নেহাকে দেখে চোখে মুখে হাসির ঝলক ফুটছে রাহুলের!
রাহুল : [ দৌড়ে এগিয়ে গিয়ে ] স্নেহা! তুমি এখানে! কোথায় কোথায় খুজেছি! আমার মন বলছিলোই তুমি এখানে কোথাও হবে! [ স্নেহার ঘাম মুছে দিয়ে ] ঠিকাছো তুমি?…
স্নেহা : [ মাথা নাড়ালো ]
হঠাৎ, রাহুল খেয়াল করলো স্নেহার হাত, মুখ বাধা..হাতের নীল চুরি গুলো ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে ছিটে আছে! গায়ের পরনের নীল শাড়ীটি প্রায় খুলে গেছে!
রাহুল তাড়াতাড়ি স্নেহার মুখ থেকে টেপ খুলে দিলো! স্নেহা শাস নিতে লাগলো জোড়ে জোড়ে!
স্নেহা : [ চোখ বটে আসছে…] রা..হুল!
রাহুল : [ অবাক হয়ে ] হ্যা! বলো…[ স্নেহার মাথা ঢলে পড়ে গেলো রাহুলের বুকে…জোড়ে জোড়ে শাস ফেলতে লাগলো… শুধু কিছু বলার চেষ্টা করছে…কিন্তু শক্তি দিয়ে কিছুই বলতে পারছে না ]
রাহুল : [ ধীরে ধীরে স্নেহার বাধা হাত গুলো খুলে দিলো ] স্নেহা! কিভাবে হয়েছে এসব! কে করেছে?…[ চেঁচিয়ে ] আরে বলছো না কেনো?…
স্নেহার চোখ বন্ধ হয়ে এলো,
রাহুল : [ স্নেহার মাথা তুলে নিলো তার বুক থেকে ] হেই স্নেহা!
আরে কি হলো স্নেহা কথা বলছো না কেনো?.. Ok Ok I m sorry! Ok এবার কথা বলো! [ রাগান্বিত ভাবে চেঁচিয়ে ] Say something Sneha! কিছুতো বলো!
বুঝতে পারলো রাহুল স্নেহা সেন্সলেস্ হয়ে গেছে..
[ শাড়ী ভালো করে পেঁচিয়ে দিয়ে কোলে তুলে নিলো স্নেহাকে, স্নেহার চেহেরার দিক তাকিয়ে আছে রাহুল!
মনে পড়ছে স্নেহার সাথে প্রথম দিনের দেখা, স্নেহা পড়ে যাচ্ছিলো রাহুল ধরে ফেলেছিলো, লাইব্রেরীতে স্নেহার চোখ থেকে চশমা খুলে নিয়ে চলে এসেছিলো, র্যাগিং এর সময় স্নেহার হাত থেকে সিগারেট কেড়ে নিয়ে ফেলে দিয়েছিলো, ডান্স করবে না বলাতে স্নেহার হাত চেপে ধরেছিলো, ]
স্নেহাকে নিয়ে রাহুল বেড়িয়ে আসলো,
আসিফ : অনেক ট্রাই করলাম এতোরাতে কোনো ডক্টরই পাওয়া যাচ্ছে না!
রাহুল কিছু না বলে স্নেহাকে নিয়ে গাড়ীর পেছনের সি্টে শুয়ে দিয়ে দরজা বন্ধ করে দিলো!
আসিফ : আরে হ্যা! শ্রেয়া..ইয়েস্ শ্রেয়াকে কল দিয়ে বলি আসতে,ও তো ডাক্তারি পড়ছে! হয়তো ও কিছু..
রাহুল : এতো রাতে শ্রেয়ার একা আসাটা ঠিক হবে না!
আসিফ : [ কিছুক্ষণ ভেবে ] হ্যা তাও ঠিক.. আচ্ছা শোন! স্নেহা কিছু বলেছে?..কে করেছে?..কি হয়েছে?
রাহুল : [ জানালার গ্লাস দিয়ে স্নেহার দিক তাকিয়ে ] She is out of sense! [ রাগান্বিত ভাবে ] তবে যেই এই কাজ করেছে…তাকে আমি ছাড়ছিনা!
Anyway এইদিকে যে শর্টকার্ট রাস্তাটা আছে ওদিকে একটা হস্পিটাল পড়ে! ওখানে ম্যানেজ করে নেবো! ডক্টর..
আসিফ : হ্যা এটা ঠিক আইডিয়া! ওদিক দিয়ে স্নেহার বাসাও কাছে হবে! কিন্তু রাস্তাটা খুব একটা ভালো না…
রাহুল : Don’t worry! [ বলেই গাড়ীতে উঠে পড়ে ]
আসিফ : [ জানালা দিয়ে এগিয়ে এসে ] হেই রাহুল! আমিও যায়! তুই একা কেমনি?..
রাহুল : It’s ok! অলরেডি আন্টি টেনশন করছে তোর জন্য! যাহ এবার বাড়ী যা!
আসিফ : ওকে! টেক কেয়ার! আর শোন! স্নেহাকে পৌছে দেওয়ার পরে ফোন দিস কিন্ত!
[ রাহুল মাথা নাড়িয়ে চলে যায় ]
কিছুদূর আসারপর দেখে সামনের দিক পুলিশের গাড়ী! রাহুল তাড়াতাড়ি গাড়ী থামিয়ে ফেলে! পকেটে হাত দিয়ে দেখে টাকা আছে নাকি…তারপরই মনে পড়ে সে তো মানিব্যাগটাই সিকিউরিটির হাতে দিয়ে দিয়েছিলো! পকেট থেকে ফোনটা বের করে আসিফকে কল দিতে যাবে…ঐসময় দেখে Bettery Low এবং ফোনটা বন্ধ যায়!
রাহুল : What shit! damn it! এখনি বন্ধ হওয়ার ছিলো! [ বলেই ফোনটা পাশের সি্টে ছুড়ে মারে ]
রাহুল : [ পেছন ফিরে স্নেহার দিক একবার তাকালো, আর ভাবতে লাগলো মনে মনে ] এইভাবে স্নেহাকে নিয়ে সামনে যাওয়া Possible না! পুলিশ ধান্ধার জন্য গাড়ী চেক করবে হান্ড্রেড পার্সেন্ট!… আর উলটা পালটা ভেবে বসে থাকবে!
কি করা যায়! বাবাকে কল! No No…Never! আমার ওনার হেল্প চাইনা! [ বলেই গাড়ী বেক দিলো, এবং ঘুড়িয়ে রাহুল স্নেহাকে তার গেষ্ট হাউসে্ নিয়ে আসে, কোলে তুলে গাড়ী থেকে বের করে…নিজের খাটে শুয়ে দিলো স্নেহাকে… কি করবে কিছুই বুঝতে পারছে না রাহুল! কপালে পড়ে থাকা চুল গুলো সরিয়ে দেই নিজ হাতে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে ধীরে ধীরে স্নেহার কপালে একটি চুমু খেলো!…
রাহুল : [ স্নেহার কানের কাছে এসে ] don’t worry sneha! যে করেছে এসব [ দাত খিলখিলিয়ে ] ওকে আমি… ?
[ ধীরে ধীরে স্নেহার হাতের ভেতর হাত রাখে… হঠাৎ খেয়াল করলো.. স্নেহার শরীর গরম হয়ে এসেছে রাহুল বুঝতে পারলো স্নেহার জর উঠছে!… কম্বলটা গায়ের উপর টেনে দিয়ে রাহুল গিয়ে সোফায় বসে.. দূর থেকেই চেয়ে আছে স্নেহার দিক…স্নেহার ঘুমন্ত চেহেরা..বার বার প্রেমে পড়ে যাওয়ার মতো! ]
এভাবেই সময় ঘনিয়ে গেলো কবে যে চোখটা লেগে এলো ঠেরই পেলো না রাহুল!
হঠাৎ কাচ ভাংগার শব্দে চমকে উঠে চোখ খুললো রাহুল! উঠে দেখে স্নেহা টেবিল ধরে উঠে দাড়াতে যাচ্ছিলো..নিশ্চয়, তাই হাতের সাথে বাড়ী খেয়ে গ্লাস ভেংগে ফেলেছে!
রাহুল : [ তাড়াহুড়ো করে এগিয়ে গিয়ে ] স্নেহা! You Ok?.. হাত দেখি.. [ হাত টেনে নিয়ে দেখে ব্লিডিং হচ্ছে! ] Shit! আমাকে ডাক দিতে! নিজে নিজে উঠার কি দরকার ছিলো?…[ বলেই পাশের রুম থেকে ফার্ষ্ট এইডস বক্স আনতে চলে যায়… স্নেহা অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে… কিছুক্ষণ পর এগিয়ে এসে স্নেহাকে খাটে বসিয়ে হাতে ব্যান্ডেজ করে দিচ্ছে রাহুল! ]
স্নেহা : আপনি?… ও..ওরা
রাহুল : [ স্নেহার দিক তাকিয়ে ] No question! Ok?..
[ স্নেহার কপালে হাত দিয়ে দেখে জর আছে কিনা ] এখনো আছে সামান্য!
[ স্নেহা অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে রাহুলের দিক ]
রাহুল : তুমি বসো আমি খাবার আনছি!
[ রাহুল উঠে চলে যায়… স্নেহা ভাবতে লাগলো কাল রাত তার সাথে যা হয়েছে…মনে পড়তেই চোখ বেয়ে পানি পড়ছে.. কি হচ্ছে এসব! আর সে রাহুলের বাসায় কিভাবে এলো ?… চোখ মুছে রুমের আশেপাশে তাকিয়ে দেখছে চারদিক! জানালা দিয়ে আলো ফুটে আসছে…নিশ্চয় সকাল হতে যাচ্ছে…
জানালার দিক এগিয়ে যাওয়ার জন্য উঠে দাড়ালো! পা বাড়াতেই হঠাৎ টান খেয়ে শাড়ীটা খুলে যায়! সামনের দিক তাকাতেই দেখে রাহুল আসছে…স্নেহার এই অবস্থা দেখে রাহুল তাড়াতাড়ি পেছনে মুড়ে যায়…আর স্নেহা নার্ভাস্ হয়ে তাড়াহুড়ো করে শাড়ীটা তুলে মুড়িয়ে পেঁচিয়ে পড়ে নেই!
স্নেহা : জি!?এখন! আসতে পারবেন!
রাহুল স্নেহার দিক ফিরে তাকিয়ে তেডি স্মাইল দিতে থাকে! স্নেহা অন্যদিক ফিরে যায়! রাহুল এগিয়ে এসে নাশতার ট্রলিটা একপাশে রাখলো!
স্নেহা : হা..হাসছেন কেনো?..আ..আপনি?
[ রাহুল কিছু না বলে তাকিয়ে রইলো স্নেহার দিক ]
স্নেহা : আমি ফার্ষ্ট টাইম শাড়ী পড়েছি! তাত.. তাই এমন হচ্ছে!
রাহুল : [ কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে ] ওকে! I understand এমন Mistake হয়ে থাকে! [ বিড় বিড় করে ] ভাগ্যিস আমার সামনেই হয়েছে অন্য কারো সামনে হয়নি!
স্নেহা : কিছু বললেন?..
রাহুল : No..Nothing! ওকে..বসো নাশতা করে নাও…[ বলেই রাহুল স্নেহার জন্য পাউরুটিতে বাটার লাগাতে লাগলো ]
হঠাৎ কিছুক্ষণ পর তাকিয়ে দেখে স্নেহা এখনো চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে!
রাহুল : স্নেহা!
স্নেহা : হ্যা!?.. [ বলেই চোখের পানি মুছে ফিরে তাকালো ]
[ রাহুল বুঝতে পারলো স্নেহা কাঁদছে, স্নেহার হাত টান দিয়ে তার কাছে এনে বসালো…স্নেহা হা করে তাকিয়ে আছে রাহুলের দিক! ]
রাহুল : কাঁদছো কেনো?…[ স্নেহা অন্যদিক ফিরে যায় ] স্নেহা এদিকে তাকাও…
স্নেহা : [ কেঁদে ] কেনো তাকাবো?..
রাহুল : [ কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে ]গতকাল এক সেকেন্ডের জন্য এমন মনে হয়েছিলো! যে আমি তোমাকে হারিয়ে ফেলেছি!
কোথায় কোথায় খুঁজেছিলাম তোমাকে!
স্নেহা রাহুলের দিক তাকালো…রাহুল তাকাতেই আবার অন্যদিক ফিরে যায়!
[ রাহুল জুসের গ্লাসটা হাতে নিয়ে স্নেহার দিক এগিয়ে দিলো ]
স্নেহা : আমার খিদে নেই!
রাহুল : ওহ! কামঅন স্নেহা কাল রাত থেকে আমি নিজেই কিছু খায়নি! আমি জানি খিদে কেমন পেয়েছে! So take it!
[ স্নেহা জুসের গ্লাস এগিয়ে নিয়ে এক চুমুক খেলো রাহুল তাকিয়ে আছে ]
পুরোটা ফিনিশ করবা!
[স্নেহা কিছু বলতে যাবে তখনি,]
রাহুল : হো! পুরোটা কেমনি?… এটাই বলতে চেয়েছিলে রাইট! [ স্নেহা তাড়াতাড়ি চোখ সরিয়ে ফেলে..
কিছুক্ষণ পর তাকিয়ে দেখে…হাত দুটো একসাথে মুচড়া-মুচড়ি করছে..যেন এক্ষুণি কারো ঘাড় চেপে ধরবে… স্নেহা ভয়ে তাড়াতাড়ি একশাসে সব জুস খেয়ে ফেলে,
গ্লাসটা টেবিলের উপর রাখতেই রাহুল স্নেহার দিক তাকায় আর স্নেহা ঘাবড়ে উঠে ]
রাহুল : What happen?…
স্নেহা : কিক..কি..কিছুনা!
রাহুল : Listen স্নেহা! গতকাল কি কি হয়েছে তোমার সাথে কে কি করেছে…সব ডিটেল বলো!
[ স্নেহা আবারো অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে ]
রাহুল : হা করে কি দেখছো?..আমার সব ডিটেল চাই!
স্নেহা : [ ভয়ে ভয়ে ] ডিটেল নিয়ে কি করবেন?..
রাহুল : [ রেগে কিছু বলতে যাচ্ছিলো আবার কন্ট্রোল হয়ে যায় ] আদর করবো ওদের একটা একটা করে চকলেট দিবো!
দুজনেই চুপ হয়ে থাকে…এরকিছুক্ষণ পর,
রাহুল : স্নেহা! তুমি আমাকে কিছু না বললে! নেক্সট টাইম তোমার উপর এমন এট্যাক আবার ও হতে পারে!
[ স্নেহা ফুফিয়ে কেঁদে উঠে… ]
রাহুল : স্নেহা! Ok Ok! don’t cry! কিছু বলতে হবে না রিলেক্স!
স্নেহা : [ কাদো কাদো ভাবে ] আ..আমি গার্ডেনের দিকই ছিলাম! গাছের নিচে! তারপর একজন ছেলে এসে আমাকে বলে…কেউ একজন ঐদিকটা বেহুশ হয়ে গেছে..তাই একটু হেল্প করতে, তাই আমি ওর সাথে ঐ দিকটা গেলাম হঠাৎ আমার মুখের মধ্যে কি যেন এসে পড়ে,
রাহুল : তারপর তুমি নিজেই বেহুশ হয়ে গেলে!
স্নেহা : [ মাথা নাড়িয়ে ] হুম!
রাহুল : ওয়াও গ্রেট.. Then!
স্নেহা : তারপর কিছু মনে নেই! পরে যখন চোখ খুলি! অন্ধকার ক্লাসটাই দেখি!.. চিৎকার করতে লাগলাম.. হঠাৎ, দরজা খুলে দুটি ছেলে এগিয়ে আসে..আরেকজন.. আমার কাছে এসে..
[ বলেই আবার ফুফিয়ে কেঁদে উঠে ]
রাহুল : [ চেঁচিয়ে ] চুপ কেনো বলো?..তারপর? [ স্নেহার সামনে এসে হাটু গেড়ে বসে ] স্নেহা কি করেছে ছেলেটা?..
স্নেহা : আমার!..?
রাহুল : তোমার?..
স্নেহা : আমার শাড়ী টান দেই! এবং আমার দিক তাকিয়ে হাসতে থাকে! [ বলেই কেঁদে উঠে…]
রাহুল : [ রেগে হাত মুঠি বাধতে থাকে ] চেনো ছেলেগুলোকে?..
স্নেহা : নাহ!
রাহুল : দেখলে চিনবা?..
স্নেহা : [ মাথা নাড়িয়ে] হুম!
রাহুল : [ রাগান্বিত ভাবে উঠে দাঁড়িয়ে স্নেহার দিক ফিরে চেঁচিয়ে ] Listen নেক্সট টাইম থেকে অপরিচিত কারো সাথে কোথাও যাবা না.. ওকে?..
স্নেহা : [ ভয়ে ঘাবড়ে গিয়ে মাথা নাড়ালো ] হুম!
রাহুল : চেনে না জানো না..হুট করেই হেল্প করতে চলে গেলা! [ চেঁচিয়ে ] যদি উলটা পালটা কিছু হয়ে যেতো?.. [ স্নেহা ভয়ে নিচের দিক তাকিয়ে কেঁদে উঠে.. রাহুল কিছুক্ষণ চেয়ে থেকে স্নেহার সামনে এসে আবার হাটু গেড়ে বসে চোখের পানি মুছে দিলো!
রাহুল : তোমার ফ্রেন্ডসরা রাত থেকেই অনেক টেনশন করছে! Listen Don’t cry ওকে?..আর আমার সামনে তো মোটেও না!
[ দাঁড়িয়ে গিয়ে ] পাশে ওয়াশরুম আছে ফ্রেশ হয়ে এসে… এইখানে যা যা নাশতা আছে সব ফিনিশ করবা… আমি ফ্রেশ হয়ে এসে যাতে দেখি সব ক্লিয়ার! তারপর বাড়ী যেতে পারবা!
স্নেহা : [ অবাক হয়ে তাকিয়ে ] স..সব?..
রাহুল : কথা রিপিট করতে আমার মোটেও পছন্দ না! তাও বলছি! সব.. [ চেঁচিয়ে ] শুনেছো?..
স্নেহা : [ ভয় পেয়ে ] হ্যা!
[ রাহুল চলে গিয়ে দূর থেকে আবার ফিরে তাকিয়ে দেখে…স্নেহা পাউরুটি গুলো সব এক টানে ছিড়ে ছিড়ে আবার প্লেটে ছুড়ে মাড়ছে
রাহুল একটু হেসে, (মনে মনে)… বেচারা পাউরুটি! আমার রাগগুলো তার উপরই উঠছে! তেডি স্মাইল দিয়ে চলে যায় ]
কিছুক্ষণ পর রাহুল… ফ্রেশ হয়ে তৈরী হয়ে ফুল গেটাপে রুমে আসে, এবং চারদিক একবার তাকিয়ে.. আবার অবাক হয়ে স্নেহার দিক তাকায়!
[ স্নেহা রাহুলকে দেখে শাড়ী ঠিক করে দাঁড়িয়ে পড়ে ]
রাহুল : খাবার তুমি খেয়েছো নাকি, পুরো রুমকে খাইয়েছো?…
স্নেহা : আ..আমি এইভাবেই খায়! খা…খাওয়ার সময় চারদিক পড়ে যায়!
রাহুল : হ্যা! তা তো আমি দেখছি! বাই দ্যা ওয়ে তুমি রাগলে অনেক…
স্নেহা মাথা নিচু করে অন্যদিক ফিরে যায়!
রাহুল : [ কাছে এসে স্নেহার হাতে একটা জ্যাকেট এগিয়ে দেই! ] এটা পড়ে নিচে এসো! আমি গাড়ীতে ওয়েট করছি!
[বলেই চলে যাচ্ছিলো ]
স্নেহা : এটা?..কিন্তু এটা আমি কেনো..
রাহুল : [ ফিরে তাকিয়ে ] বাইরে অনেক ঠান্ডা! তোমার শরীরে ফেভার আছে এখনো!
[ সানগ্লাসটা চোখে লাগিয়ে চলে যায়… স্নেহা হা করে তাকিয়ে আছে… [ মনে মনে ] ও কিভাবে বুঝলো আমার ঠান্ডা লাগছে..[ হেসে ] আজিব এখনো তো সূর্যই উঠলো না উলটা কুয়াশায় ভরা… আর ইনি সানগ্লাস..
ভাবতে ভাবতে কখন যে ঠোটের কোণে হাসি ফুটছে স্নেহা নিজেও জানে না…]
চলবে….