হারিয়ে যাওয়া পথ খুঁজে পাওয়া part:17
writer: সুলতানা ইতি
এই ভাবে কেটে গেলো পাঁচটি বছর, পাঁচ বছর পর আজ আনুশা দেশে ফিরছে,
হুম এই পাঁচ বছরে অনেক পরিবর্তন হয়েছে সব দিক দিয়ে,,আনুশা বিদেশ এ চার বছরের business মেনেজমেন্ট এর কোর্স শেষ করে
নিজের প্রচেষ্টায়য় একটা কম্পানিতে জয়েন হয়ে,কম্পানির এমডির বিশ্বাস অর্জন করে,
তার সাহায্য নিজে একটা হোটেল দেয়, আজ সেটা খুব নামি দামি হোটেল এ পরিচিত, বিদেশী ক্লাইন্টরা এসে এই,হোটেল উঠে,
যাই হোক আনুশার এখন কোন কিছুর অভাব নেই এতোদিন এমডি ছিলো না, তাই অন্নি ভার পাপ্ত এমডি হয়ে সব কিছু সামলে নিয়েছে
আজ আনুশা দেশে ফিরছে, কতো আয়োজন করা বাকি,অফিসে সবাই ব্যাস্ত, নতুন এমডি আসবে তাকে ওয়েলকাল করতে,হবে,অন্নি তো সকাল থেকে নিশ্বাস ফেলতে ও সময় পায়নি
এই দিকে বাড়িতে আনুশার আম্মু খুব ব্যাস্ত,আজ তার ছোট মেয়ে আদরের ধন বাড়িতে ফিরবে,
সুমি আনুশার মেঝো বোন শশুড় বাড়ি থেকে চলে আসছে প্রব্লেম তার বাচ্চা হয় না,এই নিয়ে শাশুড়ি নানান কথা শুনাতো,তার বর মায়ের কথাতে উঠে আর বসে, বউ এর প্রব্লেম টা বুঝতেই চায় না,আর সহ্য করতে না ফেরে কিছুদিন আগেই মায়ের কাছে চলে আসে
আনুশা আম্মু: সুমি এই সুমি কই গেলি,কতো দিন পর আজ আমার আনু দেশে ফিরছে ওর সব কিছু ঠিক করে রেখেছিস তো
সুমি: হ্যা মা তুমি চিন্তা করো না সব একদম আমাদের ছোট রানির মনের মতো করে রেখেছি,
আনুশার আম্মু: আমি আজ নিজের হাতে আমার মেয়ের জন্য রান্না করবো বুয়ারে দিয়ে আজ কাজ হবে না
অন্নি: স্টাফ দের বার বার তাড়া দিচ্ছে সব কিছু যেন ঠিক ভাবে হয়,দুপুর ১২ টায় আনুশার ভিমান এয়ারপোর্ট এ ল্যান্ড করবে, তার আগে সব রেডী করতে হবে
মহনা অফিস স্টাফ : ম্যাম আপনি তো নতুন এমডি কে এয়ারপোর্ট এ আনতে যাবেন,,স্টাফরা এখন ও জানে না তাদের নতুন এমডি স্যারর নাকি, ম্যাম, অন্নি এই কথা ইচ্ছে করে গোপন রেখেছে,যেন সবাই একটু অভাক হয়
অন্নি: হুম আমি বেরুচ্ছি অলরেডি টাইম হয়ে গেছে , এই দিকে যেন তোমাদের কোন ভুল না হয়, মনে রাখবে যিনি আসছে না উনি ডিসিপ্লিন ওর ডিসিপ্লিন, এর বাইরে কিছু উনি লাইক করে না
মহনা: ওকে ম্যাম,আপনি চিন্তা করবেন্না
দুপুর ১২ টায় আনুশার ফ্লাইট এয়ারপোর্ট এ ল্যান্ড করে
অন্নি: ওয়াও কি দেখতে লাগছে আনুশাকে পুরো হিরোইন, অন্নি আনুশাকে খুশিতে জড়িয়ে ধরলো
আনুশা: অন্নি কে থামিয়ে দিয়ে বললাম, এতো এক্সাইটেড হওয়ার কিছু হয়নি অন্নি,, এখন আমি অফিস এর কাজে যাবো সো আপনি সেখানে আমার পিএ, ফ্রেন্ড নন, বাসায় গিয়ে জড়িয়ে ধরবেন ওকে,
অন্নি: মনে মনে, যাক বাবা এখন অফিসে আমি আমার প্রিয়ো বান্ধুবীকে ম্যাম বলে ডাকবো এটা ও কি সম্ভব, আনুশার দারা সব সম্ভব যাই আবার রেগে যাবে
আনুশা অন্নি অফিসে পৌছে গেছে,
অফিস স্টাফ রা তো তাদের নতুন এমডি একজন মেয়ে,এটা দেখেই হা হয়ে গেলো তবু ও অন্নির বলা কথা গুলো মহনার মনে পড়তেই সে নিজেকে সামলে নিয়ে আনুশা কে ওয়েলকাম জানালো
আনুশা নিজের কেবিনে গিয়ে বসলো অন্নি ও পিছু পিছু গেলো
আনুশা: অন্নি আপনি গত মাসের হিসেব আমাকে মেইল করেননি,সো এখন আমি গত মাসের হিসেব গুলো দেখতে চাই
অন্নি: আনু তুই,(বলে মুখে হাত দিয়ে মুখ বন্ধ করে দিলো, এই রে কি বলতে কি বলে ফেলি)না মা,মানে আপনি এখন এসেছেন একটু রেস্ট নিন ম্যাম তার পর না হয়,
আনুশা: মিস অন্নি কাজের সময় ফাউল কথা বলা আমি পছন্দ করি না, সো যা বলেছি তা করুন,
অন্নি: ওকে ম্যাম, অন্নি ফাইল গুলো আনুশা কে দিয়ে বল্লো ম্যাম একটা কথা বলবো,
আনুশা: বলুন
অন্নি: বাসা থেকে আপনার মা,মানে আন্টি ফোন করে জানতে চাইলো আপনি কখন বাসায় যাবেন,উনি আপনার জন্য অপেক্ষা করছে
আনুশা: আবার ফোন করলে বলে দিবেন যেন অপেক্ষা না করে কাজ শেষ করে ফিরতে দেরি হবে
অন্নি: ম্যাম যদি অনুমতি দেন তো কাজের বাইরে একটা কথা বলবো
আনুশা রাগি চোখে অন্নির দিকে তাকায়
অন্নি: ওকে ম্যাম আমি বলে দিবো আন্টি ফোন করলে, মনে মনে এই আনুশা টা এমন হয়ে গেলো, ওকে ঠিক করবে কে,কে জানে,
ফোন ভেজে উঠলো, আনুশার আম্মু কল দিয়েছে আচ্ছা উনার কি দোষ এতো বছর পর মেয়ে দেশে ফিরেছে তাকে না দেখে কি করে থাকবে,কিন্তু এই কথা টা উনার মেয়ের মাথায় ডুকাবে কে,
আনুশা: মিস অন্নি আপনার ফোন ভাজছে রিসিভ করুন,,কিসের ভাবনায় ডুবে থাকেন আপনি
অন্নি: ম্যাম আমি কথা বলে আসছি,অন্নি বেরিয়ে গেলো
আনুশা: মনে মনে আমি জানি এখন মা অন্নি কে ফোন দিয়েছে আর অন্নি এখন এতো গুলো কথা বলবে আমার নামে মাকে, এই অন্নিটা আর চেঞ্জ হলো না,,নাহ আমার কাজের জন্য অন্নির বিয়েটা আর আটকে রাখা যাবে না এই বার একে বিয়ে দিতেই হবে
অন্নি: কেবিন থেকে বের হতেই সব অফিস স্টাফ রা ওকে ঘিরে ধরলো,ম্যাম আপনি কেনো বলেননি আমাদের নতুন এমডি ম্যাম, স্যারর নয়
আরে এখানে বলার কি আছে, আর শুনো আমি আবার,বলছি, অফিসের সব কিছু যেনো রুলস অনুযায়ী হয়,আমাদের ম্যাম কিন্তু এই সব ব্যাপারে ভিশন পাংচুয়াল,,বুঝেছো,বিশেষ করে কাজের ক্ষেত্রে কোন ভুল উনি একদম মেনে নেয় না, সো বি কেয়ারফুল
আনুশা: কেবিন থেকে সব দেখতে পাচ্ছি, হায়রে অন্নি,স্টাফ দের এগুলা কি বলছিস, কেবিন থেকে বের হলাম,সবাইকে উদ্দেশ্য করে বললাম, এই টা অফিস, কোন ক্যান্টিন নয় যে সবাই আড্ডা দিবেন, সো যে যার কাজে যান
অন্নি: ম্যাম আন্টি আপনার সাথে কথা বলতে চায়
আনুশা: মা কে বলেন আমরা আসছি
অন্নি: খুশি হয়ে যাক এতোক্ষনে সদ্বুদ্ধি হলো উনার,
অন্নি আর আনুশা বাসায় যাওয়ার জন্য, গাড়িতে উঠলো,এই মানে ম্যাম এখন কি আপনাকে নাম ধরে ডাকতে পারি,এই টা এখন অফিস নয়,আর আমরা কাজে ও যাচ্ছি না,,তো যদি একটু বলতেন
আনুশা: তোকে সব কথা বলে দিতে হবে কেনো কাজের জায়গাতে আমি তোর বস,এখন বন্ধু আন্ডারস্ট্যান্ড,
অন্নি: ওকে,আচ্ছা দোস্ত তুই যে সারাদিন এমন করে মুখটার পেছার মতো করে রাখিস তোর হাসতে ইচ্ছে হয় না
আনুশা: বাজে বক বকানি বন্ধ কর, তোর আম্মু আব্বুকে আমাদের বাসায় আসতে বলেছিস
অন্নি: বলেছিলাম, উনারা আজ আসতে পারবে না অন্য কোন এক দিন আসবে বলেছে
আনুশা : অন্য কোন দিন মানে,
অন্নি: আমি কি জানি,কি কাজ আছে তাই আসতে পারবে না
আনুশা: তার মানে তুই উনাদের আগে থেকে বলিসনি,আজই বলেছিস
অন্নি: ভয়ে ভয়ে কি করবো বল,তুই ছিলি না অফিস এর সব কিছু আমাকে দেখতে হতো কাজের মাঝে ভুলে গেছি বলতে
আনুশা: ইটস ওকে এতো ভয় পাবার কিচ্ছু হয়নি
অন্নি,উফ বাছা গেলো
বাসায় পৌছে আনুশা মাকে সালাম করে জড়িয়ে ধরলো, মায়ের যে কতো অভিযোগ, এতো দিন কেনো আসেনি,আর ও কতো কি আনুশা সব বাধ্য মেয়ের মতো শুনছে,
আনুশা: মা বাড়ি টা কেমন খালি খালি লাগছে, তুমি বড় আপুকে আসতে বলোনি,ওর বাচ্ছারা মিলে আসলে তো বাড়িটা পুরো ঘম ঘম করতো
আনুশার আম্মু: পরে বলবো তোকে সব আসছিস আগে একটু ঠান্ডা হও তার পর বলছি
সুমি: হা আনু মা ঠিকই বলেছে,চল খাবি আজ তোর পছন্দের সব খাবার মা নিজের হাতে রান্না করেছে
অন্নি: ওয়াও আন্টি রান্না করেছে তা হলে আমি আগে যাই খাওয়া শুরু করি
আনুশা: মনে মনে কি এমন হলো বড় আপুর,নিশ্চয় দুলা ভাই কিছু একটা করেছে,নাহ আর না আমার বোনেরা অনেক সহ্য করেছে এই বার একটা বিহিত করা দরকার
আনুশার আম্মু: আনু, কি ভাবছিস চল খাবি,
খাওয়ার টেবিলে বসে আনুশা অন্নি কে বল্লো, অন্নি অফিসের যাবতীয় হিসেব দেখা শুনার জন্য একজন ম্যানেজার এপয়েন্ট করতে বলেছিলাম,,করিস নি তাই না
অন্নি: খাওয়া বন্ধ হয়ে গেলো আনুশার কথা শুনে,, আনু খেতে বসছি খেতে দে,অফিসের কাজ নিয়ে পরে কথা বলিস
আনুশাঃএর তো দেখছি ভিশন পাখা গজিয়েছে,নতুন পিএ এপয়েন্ট করতে হবে যে আমার কথা মতো চলবে
সুমি: অন্নি তো ঠিকই বলেছে আনু,খাওয়ার সময় খেতে হয় কাজের কথা পরে হবে,
খাওয়া শেষ আনুশা সবাইকে নিয়ে ড্রইং রুমে বসলো
আনুশা: মা এই বার বলো বড় আপু কেনো আসেনি
আনুশার আম্মু: শিলার জামাই বলছে কিসের ব্যাবসা করবে, এই জন্য ওকে ৫ লক্ষ টাকা দিতে,কিন্তু শিলা আমাদের কাছে চাইতে নারাজ,তাই শিলাকে অনেক মার ধর করে, এই জন্য শিলা আসতে পারেনি
আনুশা: মা বিয়ের সময় তো ওকে দুই লক্ষ টাকা যৌতুক দিয়েছিলো মামা,তাই না
আনুশার আম্মু: হুম তবু ও ওর দাবির শেষ ছিলো না আজ ও শেষ হয়নি
আনুশা: ঠিক আছে মা তুমি চিন্তা করো না সব ঠিক হয়ে যাবে, অন্নি বিকেল এ তুই অফিসের দিকটা দেখিস,আমি গ্রামে বড় আপুর কাছে যাবো,আর হা ম্যানেজার ছেয়ে একটা বিজ্ঞাপন দিয়ে দিস ওকে
অন্নি: আনু অনেক দিন গ্রামে যাই না তুই যখন যাচ্ছিস আমি তোর সাথে যাবো,মহনাকে সব বুঝিয়ে বললে ও করতে পারবে
আনুশা: মহনা কে?
অন্নি: অফিস স্টাফ খুব ভালো মেয়ে,
আনুশা: তুই সিয়ুর ও সব পারবে
অন্নি : হুম পাক্কা,
আনুশা : ওকে তুই ওকে ফোন করে সব বুঝিয়ে বল, আমরা একটু পরেই বেরুবো
অন্নি: ওকে
to be continue