হারিয়ে যাওয়া অনুভূতি পাঠ-২২

0
2099

হারিয়ে যাওয়া অনুভূতি পাঠ-২২
#আরিশা অনু

-রাত ৯:১৫ এখনো অনন্যা বাসায় ফেরেনি। কখনো তো এত দেরি করেনা একা একা বসে কথাগুলো ভেবে চলেছেন অনন্যার আম্মু তখন ই রুহি এসে পাশে বসলো…..

-নানু নানু আম্মু বাসায় আসেনা কেনো তুমি ফোন দাওনা আম্মু কে….

-সোনা অনেক বার ফোন দিয়েছি তোমার আম্মু কে ফোন তুলছে না তোমার আম্মু….

-আম্মু কোথায় গেলো আমায় রেখে কথাটা বলেই রুহি কান্না শুরু করলো….

-সোনা নানু আমার কান্না করেনা আম্মু চলে আসবে বাসায় কথাটা বলে বুকে চেপে ধরলাম রুহিকে।আমার ও যে এবার ভয় লাগছে এত দেরি তো কখনো করেনা অনন্যা।ঠিক আছে তো আমার মেয়েটা? এসব কি ভাবছি আমি অবশ্যই ঠিক আছে আমার অনন্যা তবুও মায়ের মন তো অস্থির হবেই।কথাগুলো ভাবতে ভাবতে ফোন বেজে উঠলো….!!!

-অনন্যার ফোন থেকে ফোন এসছে। দ্রুত ফোন রিসিভ করার সাথে সাথে ওপাশ থেকে কেউ সালাম দিল…..

-আসসালামু আলাইকুম।আমি রোহান বলছি….

-রোহান এত রাতে অনন্যার ফোন দিয়ে কথা বলছে ঠিক আছে তো আমার মেয়েটা অজানা এক শঙ্কায় বুকটা কেঁপে উঠলো আমার। তারপর নিজেকে সামলে নিয়ে উওর দিলাম,,,

-ওয়ালাইকুম আসসালাম।হ্যাঁ বল বাবা তুমি হঠাৎ ফোন দিলে? আর অনন্যা কোথায় ও ঠিক আছে তো বাবা কথাগুলো একটানা বলে থামলেন অনন্যার মা….

-জ্বী ঠিক আছে সব শুধু অনন্যার ছোট্ট একটা এক্সিডেন্ট হয়েছে তবে তেমন সিরিয়াস কিছু না।আমি গাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছি আপনি চলে আসুন কথাটা বলে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে ফোন রেখে দিল রোহান….

-অনন্যার এক্সিডেন্ট হয়েছে কথাটা শুনেই মাথা ঘুরে উঠলো আমার। ঠিক নেই আমার মেয়েটা। আজ যদি খারাপ কিছু করে থাকে রোহান আমার মেয়েটার সাথে কিছুতেই ছেড়ে কথা বলবো না আমি।কথাগুলো ভাবতে ভাবতে রুহির ডাকে হুস ফিরলো আমার….

-নানু আমার আম্মু কোথায় কে ফোন করেছিল আম্মু আসবেনা নানু কথাগুলো কাঁদতে কাঁদতে বলল রুহি….

-রুহি সোনা কাঁদেনা আমরা আম্মুর কাছে যাব এখন চলো চলো খেয়ে রেডি হয়ে নি তাড়াতাড়ি…

-না আমি আম্মুর কাছে যেয়ে খাব…..

-জেদ করেনা সোনা একটু খেয়ে নাও তারপর আমরা রেডি হয়ে আম্মুর কাছে যাব…..

-না না না আমি আম্মুর কাছে যাব বলে হাত পা ছুড়ে কাঁদতে শুরু করল রুহি….

-বাধ্য হয়ে রুহিকে তৈরি করে দিলাম আর আমাদের তিনজনের কিছু ড্রেস প্যাকিং করে নিলাম….

-একটু পর একটা গাড়ি আসলো মনে হাজারো ভয়, সংশয় নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম আল্লার নাম করে……
.
.
.
.
.
-তৃধা ফোন আনার পর অনন্যার আম্মুকে ফোন দিয়ে এখানে আসতে বললাম।গাড়ি অনেক আগেই পাঠিয়ে দিয়েছিলাম আমি।যতদিন অনন্যা পুরোপুরি সুস্থ না হয় এখানেই থাকবে।এখনো মেয়েটার জ্ঞান ফেরেনি আঙ্কেল বলেছিল ওকে ঘুমের ইনজেকশন দেওয়া হয়েছে আজ রাতে আর জ্ঞান ফিরবেনা ওর।থাক শান্তিতে ঘুমাক একটু মেয়েটা। অনন্যার পাশে বসে ওর হাতটা ধরে রেখে কথাগুলো ভাবছিল রোহান হঠাৎ কলিংবেল এর আওয়াজ এ ঘোর ভাঙল ওর….

-অনন্যাকে রেখে নিচে গেলাম ততক্ষণে তৃধা দরজা খুলে দিয়েছে….

-কাকে চাই? এটা ভদ্র লোকের বাসা হুট হাট বলা নেই কওয়া নেই গুষ্টিশুদ্ধু এসে হাজির।এটা কি অনাথ আশ্রম নাকি বৃদ্ধাআশ্রাম যে ইচ্ছা হল আর চলে আসলেন? যতসব ছোট লোকের দল একটু সুযোগ পেলেই দলবল নিয়ে হাজির হয়ে যায়।বেরিয়ে যান এখনি বের হন বলছি তৃধা কথাগুলো এক নাগাড়ে অনন্যার মাকে বলল…..

-তৃধার চিৎকার শুনে রোহান ততখনে দরজার সামনে চলে এসেছে…..

-কার পারমিশনে তুমি ওদেরকে বের করে দিচ্ছ তৃধা? ভুলে যেওনা বাসাটা আমার ধমক দিয়ে কথা গুলো তৃধাকে বলল রোহান….

-তারপর অনন্যার মাকে উদ্দেশ্য করে বলল আপনি ভেতরে আসুন….

-রোহান তুমি আমার সাথে এমন করতে পারোনা রাগে গজ গজ করতে করতে তৃধা বলল….

-আমি সব পারি তৃধা যাও উপরো যাও এখন।
রাগে গজ গজ করতে করতে তৃধা উপরে চলে গেল….

-হঠাৎ রোহানের চোখ গেল ভয়ে কুঁকড়ে থাকা রুহির দিকে।তৃধার ধমক শুনে মেয়েটা বেশ ভয় পেয়েছে তাই সে এখন নানুর গলা জাপটে ধরে নানুর বুকে আশ্রয় নিয়েছে।এতটাই ভয় পেয়েছে মেয়েটা পারলে নানুর বুকের ভেতর ঢুকে যেত…

-রুহিকে দেখে হালকা হেসে দুহাত বাড়িয়ে দিল রোহান কোলে নেওয়ার উদ্দেশ্যে এতে যেন মেয়েটা আরো ভয় পেয়ে নানুর বুকে মুখ লুকালো….

-হাজার অপমান সহ্য করে আবারো মেয়েটার মুখের দিকে তাকিয়ে চুপ করে থাকলেন মিসেস শাহেলা জামান(অনন্যার মা)।চাইলে কঠিন ভাষায় কিছু কথা শুনিয়ে দিতে পারতেন তৃধাকে তারপর ও নিজেকে শান্ত রাখলেন এইভেবে যে কুকুরের কাজ কুকুর করেছে তাই বলে তার সাথে তাল মেলানো নেহাত বোকামি ছাড়া আর কিছুনা। সেজন্য চুপচাপ শুনে গেলেন মিসেস শাহেলা জামার।আর এমনিতে ও মেয়ের চিন্তায় অস্থির হয়ে আছে তিনি এসময় ঝগড়া করে সময় নষ্ট করার কোনো মানে হয়না। তাই রোহান কে শান্ত ভাবে জিজ্ঞেস করলেন অনু কোথায়….?
.
.
.
.
Continue…..

ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন)

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে