হারিয়ে যাওয়া, পথ খুঁজে পাওয়া part: 11

0
4495
হারিয়ে যাওয়া, পথ খুঁজে পাওয়া

হারিয়ে যাওয়া, পথ খুঁজে পাওয়া

part: 11

লেখা –সুলতানা ইতি

অন্নি: তা তো রাখবি,তবুও,, মানে তোর জীবনে কিছু হওয়ার ইচ্ছে নেই,এই ধর ডাক্তার,ইঞ্জিনিয়ার, পাইলট, ইটস ইটস,আর কি

আনুশা: উফফ অন্নি এই সব ফালতু কথা বলা বন্ধ করবি

অন্নি: ফালতু হতে যাবে কেনো রে, কথা গুলো মোটেও ফালতু নয়

আনুশা: তুই মনে হয় জানিস না অন্নি, স্বপ্ন দেখা আমি কবেই ছেড়ে দিয়েছি,স্বপ্ন শুধু মানুষকে নিস্বঃ শব্দ ভাবে আঘাত করতে জানে, কখনো পূরন হয় না

অন্নি: সত্যি আনু তুই অনেক চেঞ্জ হয়ে গেছিস,আমার তো এখন ডাউট হচ্ছে তুই আনুশা তো, নাকি অন্য কেউ,তুই তো আমাকে বলতি অনু স্বপ্ন তো মধ্যভিত্ত ফ্যামেলির মানুষেরা দেখে যা তাদেরকে বাচতে শিখায়

আনুশা: পুরনো সব কিছু মনে করতে চাই না আসলে তখন বুঝতাম না, জীবন কি?,স্বপ্ন কি?এখন বুঝি জীবন মানে যুদ্ধ করা,আর স্বপ্ন দেখা হচ্ছে জীবনের সব ছেয়ে বড় ভুল

অন্নি:(আজকের দিনে তো আমি আনুশার মনটা আর ও খারাফ করে দিলাম,ইসস অতিত নিয়ে কথা বলা একদম উচিত হয়নি আমার) ওকে আনু এগুলা বাদ দে তো তোকে একটা খবর দেয়ার ছিলো

আনুশা:কি বল
অন্নি: আমরা ঢাকাতে শিপ্ট হচ্ছি

আনুশা: ও তাই, কবে আসছিস,

অন্নি: তুই খুশি হসনি,আমি তো ভাবলাম শুনে তুই খুশিতে লাফিয়ে উঠবি

আনুশা: এখন আর কোন কিছুতেই খুশি হইনা,জীবনকে জীবনের মতো করে চলতে দিই।

অন্নি: তোকে তো আমি এই প্রথম দেখছি না সেই ছোট বেলা থেকেই আমরা এক সাথে পড়ছি,শুধু তাই নয় আমরা বেস্ট ফ্রেন্ড সেই ক্লাস ওয়ান থেকে,তোর মনে আছে, স্যার রা আমাদের কতো বকা দিতো, আমরা কেনো এক সাথে বসি,আর কথা বলি সারা ক্লাস,এ

আনুশা: সে গুলো ভুলার মতো নয়,আবার যে মনে রাখতে হবে তেমন ও কোন কথা নেই,আচ্ছা অনেক কথা বললি আজ এইবার রাখিরে আমার এখন ভালো লাগছে না,

অন্নি: ইসস মেয়েটার মন খারাফ করে দিলাম এখন তো আর কল ও রিসিভ করবে না নিশ্চয় খুব কাঁদবে এখন

আনুশা:(মনে মনে) অন্নি কেনো তুই আমার পিছনের স্মৃতি মনে করিয়ে দিলি,
আমি তো এই সব কিছু ভুলে থাকতে চাই,কেনো মনে করিয়ে দিলি,খুব সিম্পল একটা স্বপ্ন ছিলো সংসার করবো,নিজের বরকে খুব ভালোবাসবো,আর বিনিময়ে তার থেকে অনেক ভালোবাসা আদায় করে নিবো,আমাদের ছোট্ট একটা সুখের সংসার থাকবে,আর একটা লিটল প্রিন্সেস, যে সারা ঘরময় আলোকিত করে গুরে বেড়াবে,এই এতো সব নাম কামানো তো আমার স্বপ্ন ছিলো না, নিহাল, নিহাল কেনো তুমি আমার সাথে এমন করলে, একটা সুযোগ দিয়েই দেখতে তোমাকে কতোটা নিস্বঃ সার্থ ভাবে ভালোবাসতাম,ভালোবাসায় তোমাকে কানায় কানায় ভরিয়ে দিতাম,
না না না তোমরা পুরুষজাতি কখন ও কারো ভালোবাসার যোগ্য ই না , তোমরা কারো জীবন সুন্দর করে ঘড়তে পারো না,বরং জীবনের সব গুলো রঙিন রঙ গুলো কে সরিয়ে, সাদা কালো করে দিতে পারো, জীবন সাগরের,মাঝখানে পেলে চলে যেতে পারো একবার ও পিছনে তাকিয়ে দেখনা , যাকে সাগরে পেলে এসেছ সে মরে গেছে নাকি, ডুবে ডুবে ভেসে আছে,,আনুশা ভিড় ভিড় করে এগুলা বলছে আর কাঁদছে,হঠাৎ কারো স্পর্সে আনুশা কান্না থামিয়ে দিলো,বুঝতে পারলো মা ছাড়া কেউ নয়,মায়ের সামনে ভেঙে পড়লে চলবে না,আনুশা আস্তে করে চোখের পানি মুছে নিলো

আনুশার আম্মু:কিরে মা কাঁদছিস কেনো খুব মন খারাফ তাই না, আসলে এমন টা তো হওয়ার ই কথা, তোর বাবা যে আমার সাথে তোদের সাথে বেঈমানি করেছে,মানুষ টা কি করে পারলো তার মেয়েদের পেলে চলে যেতে,তুই জানিস তুই তখন ছোট ছিলি,বাবা ছাড়া কিছু বুঝতিই না তুই,সারাদিন বাবার কাছে যাবো বলে পাগল করে দিতি,আর তোর বাবার একটু সময় ছিলো না তোর জন্য,শিলা সুমি তখন বুঝতে শিখেছে,ওরা তোর বাবার এই আচরণ কে খুব। ভয় করতো একদিন তোর বাবা ঘুমাচ্ছিলো,তুই যেয়ে ঘুম থেকে জাগালি আর বললি তুই আইসক্রিম খাবি,উনি সেদিন তোকে ও মেরেছে আর আমাকে ও,যখন আমাকে মারছিলো, তোর বাবা,। তখন শিলা সুমি এক কোনায় বসে কান্না করে,আর তুই তোর বাবার কাছে কান্না কর‍তে করতে বলছিস বাবা তুমি মাকে মেরো না,আমি কোন দিন তোমার কাছে কিচ্ছু চাইবো,না

আনুশা:আচ্ছা মা বাবারা তো অনেক ভালো হয় আমার বাবা এমন ছিলো কেনো
আনুশার আম্মু: তোর বাবা এমন ছিলো না যখনই পর মহিলার নেশা মনে ডুকে যায় তখন থেলে পালটে যায় তোর বাবা

আনুশা: থামো মা আর বলতে হবে না শুনতে চাই না এই সব কথা,,ভুলে থাকতে চাই সব কিছু,ভুলে থাকতে চাই অতিত কে, মা মেয়ে গলা জড়িয়ে ধরে কাঁদছে, (কাঁদুক কাদতে দিন ওদের কাঁদলে কষ্ট টা কিছু হলে হালকা মনে হয়)

তানভীর : যাক বাবা স্যার। যে ভাবে যে ভাবে বলেছে,সব ঠিক ঠাক মতো করতে পেরেছি এই অনেক,আনুশার এমন একটা দিনে কোন কিছুর ঘাপলা থাক এই টা আমি চাই না,এখন বাসায় ফেরা যাক

তানভীরের আম্মু: অনেক রাত হলো ছেলেটা এখন ও ফিরছে না কেনো,একটু চিন্তা মুক্ত হলাম তানভীরের আব্বু সব কিছু মেনে নিয়েছে বরং এই সময় ছেলের পাশে বন্ধুর মতো থাকতে বলেছে বার বার করে বলেছে কোন মেণ্টাল প্রেশার যেন না দিই,উনি যখন মেনে নিয়েছে তখন আমি আর কি বলবো, আর ঐ মেয়েটার ভুত ওর মাথা থেকে নামাবো কি করে, দরজায় টোকা পড়েছে মনে হয় তানভীর এসেছে যাই দরজা টা খুলে দিই
তানভীর :তুমি ঘুমাওনি আম্মু,

তানভীরের আম্মু: তুই দুপুর থেকে না খেয়ে আছিস আমি ঘুমাই কি করে বল
তানভীর :ওহ আম্মু তুমি আমাকে নিয়ে এতো ভেবো না ত আমি এমনিতেই ঠিক আছি

তানভীরের আম্মু: কতো টা ঠিক আছিস সে তো দেখতেই পাচ্ছি,চল খাবি,, আজ নিজের হাতে তোকে খাইয়ে দিবো

তানভীর : আম্মু আমি তোমাদের স্বপ্ন টা পূরন করতে পারিনি,প্লিজ তোমরা আমার উপর রেগে থেকো না

তানভীরের আম্মু:দূর পাগল ছেলে,, এই বার পারিসনি তো কি হইছে,পরের বার পারবি,আমরা সব সময় তোর পাশে আছি

তানভীর : আম্মু তুমি আব্বুকে কথা টা বুঝিয়ে বলো,উনি যেন রাগ না করে

তানভীরের আম্মু,,উনাকে আমি বলেছি উনি সব স্বাভাবিক ভাবেই মেনে নিয়েছে তুই এখন এগুলা নিয়ে ভাবিস না,,খাওয়া শেষ তানভীর ঘুমাতে গেলো,তানভীরের আম্মু তানভীরের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে

to be continue

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে