হারিয়ে যাওয়া পথ খুজে পাওয়া part:12

0
3666
হারিয়ে যাওয়া,পথ খুজে পাওয়া part:12 writer : সুলাতানা ইতি

হারিয়ে যাওয়া,পথ খুজে পাওয়া

part:12

লেখা –সুলতানা ইতি

পরদিন সকালে আনুশা খুব তাড়া হুড়া করছে কলেজ এ যাওয়ার জন্য,,কই মা হলো তোমার এতো কিসের কাজ করো বলো তো

আনুশার আম্মু: এই তো হলো, আর একটু অপেক্ষা কর

আনুশা: তুমি জানো এর মাঝে প্রিন্সিপাল স্যার। কতো বার কল দিয়েছে

আনুশার আম্মু: হুম চল এবার


এদিকে তানভীরের ঘুম থেকে উঠতে আজ দেরি হয়ে গেছে রাতে আম্মুর সাথে কথা বলতে বলতে ওর মাথা থেকে বেরিয়ে গেছে আজকে যে আনুশাকে বাসা থেকে নিয়ে আসার দায়িত্ব স্যার। তাকে দিয়েছিলো

তানভীর : আম্মুউউউউউউ

তানভীরের আম্মু: কিরে সকাল সকাল এই রকম ছিৎকার করছিস কেনো

তানভীর : করবো না, তুমি জানো কাল স্যার আমাকে আনুশাকে বাসা থেকে নিয়ে আসতে বলেছে, এখন কতো লেইট হয়েছে তুমি জানো

তানভীরের আম্মু: তুই ঘুমাচ্ছিস দেখে ডাকিনি,আর আনুশা কে নিয়ে আসতে হবে কেনো,ও কি কলেজ চিনে না নাকি,

তানভীর : ওহ আম্মু তোমার সাথে কথা বলে টাইম নস্ট করতে চাই না, আমি গেলাম

তানভীরের আম্মু: কিরে ফ্রেশ তো হবি,নাস্তা খাবি, তার পর তো যাবি

তানভীর : ও তো কিছু করার সময় নেই

তানভীরের আম্মু: আজ কলেজ এ আমি ও যাবো তোর সাথে

তানভীর : তুমি যাবে মানে?
তানভীর আম্মু: কেনো আজ তো কোন ক্লাস হবে না অনুষঠানে কি আমার যেতে মানা( আমার ছেলে সারা দিন আনুশা আনুশা করে মরছে এই আনুশাকে না দেখে তো আমি শান্তি পাবো না)

তানভীর : ঠিক আছে আম্মু তুমি আসো,আমাকে আগে যেতে হবে কাজ আছে বললাম না
এই বলে তানভীর বেরিয়ে পড়লো

★আনুশা ওর মাকে নিয়ে গলির মড়ে আসতেই তানভীরকে দেখে চমকে উঠলো

তানভীর : আনুশার অবস্থা বুঝতে পেরে,, বল্লো আসলে স্যার আমাকে পাঠিয়েছে তোমাকে নিয়ে যেতে

আনুশা: মনে মনে স্যার কি আর লোক পায়নি,ওকেই পাঠাতে হলো,আর কাউকে পাঠানোর কি দরকার ছিলো আমরা নিজেরাই চলে যেতে পারতাম
তানভীর : আনুশা কে চুপ করে থাকতে দেখে বল্লো কি হলো গাড়িতে উঠো

আনুশার আম্মু: কিরে এতো কি ভাবছিস, ছেলেটা কখন থেকে দাঁড়িয়ে আছে
আনুশা: কিছু না বলে চুপ চাপ গাড়িতে গিয়ে বসলো
প্রায় ঘন্টা খানেক পর ওরা পৌছে গেলো

প্রিন্সিপাল স্যার: ছেলে টাকে আনুশাকে নিয়ে আসার দায়িত্ব দিয়েছিলাম ছেলেটা এখন ও নিয়ে আসলো না কেনো,এ দিকে সবাই ওর সাথে কথা বলার জন্য পাগল করে দিচ্ছে আমাকে

আনুশা: তার মাকে নিয়ে প্রথমে অফিস রুমে গেলো প্রিন্সিপাল স্যার এর সাথে দেখা করতে

প্রিন্সিপাল স্যারর: কিরে তোর আসতে এতো দেরি হলো কেনো আজকের দিনে তো তোর সবার আগে আসার কথা

আনুশা: সরি স্যারর
প্রিন্সিপাল স্যার:ঠিক আছে ঠিক আছে,আর দুঃখ প্রকাশ করতে হবে না,সবাই আপনার জন্য ওয়েট করছে আপনি ওদের সাথে দেখা করে আমাকে উদ্ধার করুন

আনুশা: হেসে উঠে ঠিক আছে স্যারর এখনি যাচ্ছি

স্যারর:দাড়া আমি ও যাবো সবাইকে বলতে হবে না তা ছাড়া অনেক গন্য মান্য লোক আছে সেখানে,জানিস আমি তোর কথা জেলা মন্ত্রী সাহেব এর কাছে বলেছি, উনি তো তোর সাথে কথা বলার জন্য খুব আগ্রহ নিয়ে বসে আছে
আনুশা: ঠিক আছে স্যারর চলুন,সবার সাথে দেখা করে কথা বলে আনুশার খুব ভালো লাগলো,কিন্তু স্যারর আমার কাছে থেকে দূরে গিয়ে জেলা মন্ত্রীর সাথে কি বলছে সেটাই তো বুঝতে পারছি না দূর যা ইচ্ছে তাই বলুক আমার কি,আমি গিয়ে দেখে আসি মা কি করছে

প্রিন্সিপাল স্যারর: আনুশার সব কথা মন্ত্রী সাহেব কে খুলে বল্লো

মন্ত্রী সাহেব: শুনে কিছুক্ষন দুঃখ প্রকাশ করলেন,তার পর একটু ভেবে বল্লো আমি আপনার স্টুডেন্ট, মানে আমার জেলার এতো ভালো একটা স্টুডেন্ট এর জন্য কিছু করতে চাই

প্রিন্সিপাল স্যারর: খুশি খুশি মনে মন্ত্রি সাহেব দিকে তাকালো

মন্ত্রী:আমি আনুশা কে দেশের বাইরে পড়তে পাঠাবো সম্পূর্ণ ফ্রি তে ওর কোন খরচ দিতে হবে না সব দায়িত্ব আমার
প্রিন্সিপাল স্যার:খুশি হয়ে বলল তা হলে আমি গিয়ে আনুশা কে খবর টা দিয়ে আসি,
মন্ত্রী সাহেব: না,না,আপনি এখন ওকে কিছু বলবেন্না অনুষঠান শুরু হওয়ার পর অফার টা আমি ওকে দিবো


তানভীর : ওহ নো আনুশা এতো ব্যাস্ত যে ওর সাথে একটু কথা বলার সুযোগ পাচ্ছি না কি যে করি,ঠিক আছে ওর সাথে পরে কথা বলবো আগে
দেখে আসি তো আম্মু কি করছে, নিষেধ করলাম আম্মু তুমি এসো না,কে শুনে কার কথা উনি আসবেই

তানভীরের আম্মু: এতক্ষন বসে বসে আনুশার মায়ের সাথে কথা বলছিলো,
আপনার মেয়ে তো খুব ভালো পড়াশুনায় তাই না,নিশ্চয় আপনি ওকে এই অনুপেরনা দিয়েছেন

আনুশার আম্মু:আসলে ঠিক তা নয়,আমি কখন ও ওকে পড়া শুনা করতে হবে বা করিস না এই সব কিছু বলিনি,ও সম্পূর্ণ নিজের ইচ্ছে তে চলা ফেরা করেছে আমি কখনই ওকে কিছুতে বাধা দিতাম না,আর পরিস্থিতি এমন ভাবে তৈরী হলো যে চাইলে ও পিছু হাটতে পারেনি,ওকে এগিয়ে যেতেই হয়েছে

তানভীরের আম্মু: কি এমন হয়েছে জানতে পারি আমি

আনুশার আম্মু: ওসব কথা থাক সেগুলা এখন না বলি

এমন সময় তানভীর এলো, আরে আম্মু তুমি এখানে আমি তোমায় কখন থেকে খুজছি,যাই হোক অনেক হয়েছে এবার তুমি বাসায় যাও আর এখানে থাকতে হবে না

তানভীরের আম্মু: সে কিরে যাকে নিয়ে এতো আয়োজন আমি তো এখন ও তাকেই দেখিনি, আর আমি তোর এই আন্টির সাথে কথা বলছি তুই যা তো

তানভীর : তুমি কি ভুলে গেছো আজকে আব্বুর দেশে আসার কথা, আর তাকে আনতে এয়ারপোর্ট তুমি যাচ্ছো

তানভীরের আম্মু: আমি তোর আব্বু কে ফোনে বলে দিয়েছি উনি নিজেই চলে আসবে
তুই বরং আনুশা কে একটু ডেকে দে আমি ওর সাথে একটু কথা বলবো

তানভীর আনুশার মায়ের দিকে তাকিয়ে আছে হয়তো উনি কিছু বলবেন এই আশায়
আনুশার আম্মু: যাও বাবা আনুশা কে ডেকে দাও তোমার মা ওর সাথে দেখা করতে চায়

তানভীর : মায়ের কথা মতো আনুশাকে খুজতে বের হলাম কই পাই ওকে,উনি তো এখন একজন সেলিব্রেটি হয়ে গেছে উনাকে পাওয়া কি এতো সহজ

অবশেষ এ আনুশা কে খুজে পেলাম,স্যার এর সাথে কথা বলতেছে,এই মেয়েটার পিছনে সারা দিন স্যার লেগে থাকে কেনো সেটাই বুঝি না,আমি ওদের সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম

স্যার : তানভীর তুমি কি কিছু বলবে,

তানভীর : স্যার আনুশাকে ওর মা ডাকছে(মিথ্যা করে বললাম,আমার মায়ের কথা শুনলে হয়তো আনুশা না যেতে পারে)

আনুশা: ও মা আমায় ডাকছে, নিশ্চয় মায়ের শরির খারাফ লাগছে আমি গিয়ে দেখে আসি মাকে,

স্যার: হুম যা, তানভীর তুমি আমার সাথে এসো কিছু কাজ আছে

আনুশা: মা আমায় ডেকেছো কেনো তোমার শরির ঠিক আছে তো

আনুশার আম্মু: আমি ঠিক আছি,তোর এই আন্টি টা তোকে দেখতে চাইলো তাই ডাকলাম

তানভীরের আম্মু: ( আনুশা কে দেখে মনে মনে বলছে স্বাদে কি আমার ছেলে আনুশার জন্য পাগল হয়েছে,এই রকম একটা মিষ্টি মেয়ের প্রেম এ যে কেউ পড়ে যাবে)

আনুশা: আন্টি মানে, মা তুমি কি উনাকে ছিনো

আনুশার আম্মু: উনি হচ্ছে যে ছেলেটা আজ বাসা থেকে আমাদের নিয়ে এসেছে তানভীর, ওর আম্মুন

আনুশা:(ওও তা হলে আজ পুরো গুষ্টি সহ কলেজ এ এসেছে মতলব টা কি এদের)মুখে সালাম। করলো,মনের কথা গুলো মনেই রেখে

তানভীরের আম্মু: বাহ কি লক্ষি মেয়ে তুমি বস মা বস, আমার পাশে এসে বস,তোমাকে ভালো করে দেখি,

আনুশা: মনে মনে উফফ আদিক্ষেতা দেখে আর বাচি না

তানভীর এর আম্মু: জানো মা আমার না সব সময় একটা মেয়ের সখ ছিলো, আজ তোমাকে দেখে আমার সে ইচ্ছে টা পুরোন হবে মনে হচ্ছে

আনুশা: কিছু বললাম না শুধু মুচকি একটা হাসি দিলাম, আন্টি আমি তা হলে আসি এখন আপনি মায়ের সাথে কথা বলুন

উফফফ বাছলাম, মা ছেলে দুজনেই একরকম,একটু বেশি কথা বলে,।

তানভীর : যাক আনুশাকে এখন একটু একা পেলাম একটু কথা বলে আসি,এই আনুশা

আনুশা: মায়ের থেকে উদ্ধার হলাম, এখন ছেলে শুরু করছে,না দাঁড়িয়ে কোন উপায় নেই

তানভীর : আনুশা তোমাকে না আজকে,,,,,,,,,,,,,,

আনুশা: আমাকে আজকে কি?

তানভীর : না মানে তোমাকে আজকে খুব সুন্দর লাগছে

আনুশা:?????????

তানভীর : এই প্লিজ প্লিজ তুমি রেগে যেওনা কি করবো বলো সত্যি কথা
মুখ পসকে বেরিয়ে গেছে আচ্ছা ঠিক আছে আর বলবো না এই কান ধরেছি

আনুশা: তানভীরের অবস্থা দেখে না হেসে পারলাম না,একটা হাসি দিয়ে
ওখান থেকে চলে আসলাম

তানভীর : তুমি নিজে ও জানো না হাসলে তোমাকে কতো সুন্দর লাগে,এই প্রথম তোমাকে হাসতে দেখলাম আর আমি যে তোমার প্রেম এ আবার পড়ে গেলাম।

আনুশা: ওখান থেকে চলে আসাতে ভালো হয়েছে,আমি কারো উপর দূর্বল হতে চাই না, ছেলেরা ভালোবাসার ফাদে পেলে,পরে ভালোবাসার সম্মান। রাখতে জানে না এরা ভালোবাসার যোগ্য নয়

continue

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে