#Gangster In Love🖤🥀___A psycho love story””
#Writer; Tamanna Islam
#Part__16
🦋🦋…
..
..
..
..
..
..
আব্রাহাম-আইরাত-আবির আহমেদ-অয়ন সবাই প্রায় ৫-৬ ঘন্টা শপিং করল। এবার বাসায় ফেরার পালা। আব্রাহাম রাশেদ কে ফোন দিয়ে জলদি গাড়ি পারকিং থেকে বের করতে বলল। সবাই গাড়িতে উঠে বসে পড়লো। আব্রাহাম ড্রাইভ করতে লাগলো। মাঝে মাঝে সে আইরাতের দিকে তাকাচ্ছে। আইরাতের এখনো মন খারাপ। সে গাড়ির জানালা দিয়ে বাইরে আনমনে তাকিয়ে আছে। আব্রাহাম আইরাত কে দেখে মুচকি হাসি দিয়ে ড্রাইভ করতে লাগলো। কিছুক্ষণ ড্রাইভ করার পর আব্রাহাম গাড়ির সাইড গ্লাসে খেয়াল করলো যে একটা সাদা রঙের গাড়ি ঠিক তাদের পিছু পিছু আসছে। তা দেখে আব্রাহাম কিছু টা কপাল ভাজ করলো। আব্রাহাম আবার ড্রাইভিং করাতে মনযোগ দিলো। কিন্তু না আব্রহামরা যেইদিকে যাচ্ছে সেই গাড়িটি ও ঠিক সেই দিকেই যাচ্ছে। আব্রাহাম এইবার একদম কনফার্ম হয়ে গেলো যে গাড়িটা তাদের কেই ফলো করছে। আব্রাহাম আর কিছু দূরে গিয়ে U-turn নিয়ে নিলো। কিছুটা আকাবাকা পথে ড্রাইভ করতে লাগলো এবং দ্রুত যেতে লাগলো। বেশকিছুক্ষন পর তারা বাড়িতে এসে পড়লো। সবাই গাড়ি থেকে নেমে বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করলো।
অয়ন;; যাক বাবা অবশেষে আমরা বাসায় ফিরলাম। আমি তো ভেবেছিলাম যে আজকে আর বাসায় ই আসা হবে না।
আব্রাহাম;; তো বাসায় আসলি কেন আগে বলতি তোকে বাইরেই রেখে আসতাম
অয়ন;; ভাবিইইইই,, তুমি তোমার জামাই কে কিছু বলো সবসময় আমার পিছে লেগে থাকে।
আবির আহমেদ;; আহহহহ, মাত্রই বাসায় আসলি আর এসেই তোদের শুরু হয়ে গেছে। থাম তোরা (ধমক দিয়ে) রুমে গিয়ে রেস্ট নে।
আইরাতের এতোক্ষন মন খারাপ থাকলেও অয়ন-আব্রাহাম কে তাদের বাপির বকা দেয়াতে আইরাত হেসে দিলো। তা দেখে আবির আহমেদ ও হালকাভাবে হেসে দিলেন।
আব্রাহাম;; আব… বাপি আমার বাইরে কিছু দরকারি কাজ ছিলো তো আমি যাই
আবির আহমেদ;; আরে মাত্রই না বাসায় এলি। পরে যা
আব্রাহাম;; না বাপি খুব জরুরি কাজ আমি কিছুক্ষনের মধ্যেই এসে পরব।
এই বলে আব্রাহাম দ্রুত পায়ে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে গেলো। আব্রাহামের কানে ব্লুটুথ ছিলো তাই সে রাশেদের সাথে কথা বলতে লাগলো
আব্রাহাম;; রাশেদ Catch them
রাশেদ;; Yes sir
আব্রাহাম কথা বলতে বলতে বেরিয়ে গেলো। আব্রাহামের আর বুঝতে বাকি নেই যে,, যেই গাড়িটা তাদের ফলো করছিল তারা আইরাতের পিছু করতে করতে এসেছিল। আইরাতের বাবা আশরাফুল আহমেদ চৌধুরী রাজনীতির কাজে জড়িত। চাইলে আর না চাইলেও চারিদিকে তার অনেক শত্রু রয়েছে। এবং অনেক সময় শত্রুপক্ষ রা বড়দের রাগ-প্রতিশোধ ছোটদের ওপর তুলে। ঠিক তেমন ই হয়েছে আইরাতের সাথে। আইরাতের ওপর অনেক লোক হামলা করতে চেয়েছিলো। কিন্তু আইরাত সবসময় তার বাপির সুরক্ষা তে থাকতো যার ফলে কেউ তাকে কখন কোন ক্ষতি করতে পারতো না। আর আশরাফুল আহমেদের অনেক ক্ষমতা থাকার ফলে কারো সাহস ও হতো না আইরাত কে আঘাত দেয়ার। কিন্তু যখন থেকে সবাই শুনেছে যে আইরাত নিজের বাসা থেকে দূরে রয়েছে তখন থেকে আশরাফুল আহমেদের শত্রুরা চারিদিকে আরো ছড়িয়ে পড়েছে। আজ যখন আইরাত আব্রাহামদের সাথে শপিং এ যায় তখন শপিংমলে আশরাফুল আহমেদের শত্রুপক্ষের একজন আইরাত কে দেখে ফেলে এবং তাদের বস কে ফোন দেই। তারা তাদের চেলাপেলা দের নিয়ে আইরাত কে পদে পদে নজর রাখতে শুরু করে।। আইরাত যখন আব্রাহামের গাড়িতে উঠে তখন তারাও আইরাতের পিছু ছুটতে শুরু করে। এবং আব্রাহাম তা ভালোভাবে বুঝে যায় যে এরা আইরাতের ক্ষতি করার জন্য এসেছে,, আব্রাহামের মাথায় রক্ত উঠে যায়। সবাই কে জানে মেরে ফেলার জন্য ভেবে নেই আব্রাহাম। কিন্তু গাড়িতে নিজেকে যথাসাধ্য সামলে নিয়েছিল আব্রাহাম। কিন্তু এখন তো আর সম্ভব না রাগ কন্ট্রোলের বাইরে চলে গেছে তার।
আবির আহমেদ;; আরে, আব্রাহাম তো ওর ফোন এখানেই রেখে গেছে (টেবিলের ওপর থেকে আব্রাহামের ফোন নিয়ে) আইরাত মা
আইরাত;; জি বাপি
আবির আহমেদ;; মা আব্রাহাম তাড়াতাড়িতে ওর ফোন এখানেই রেখে গেছে। আর ও তো কোথাও ওর ফোন ছাড়া বাইরে যায়ই না। তুই একটু জলদি বাইরে গিয়ে ওকে ফোন টা দিয়ে আয় না
আইরাত;; (সালা উগান্ডা একটা বাইরে যাবি যা না সব দরকারি জিনিস তো নিজে যাবি কিন্তু না রেখে গেছে ফোন, এখন আমি তো বাপি কে না ও বলতে পারছি না ধুর বাবা ভালো লাগে না,, মনে মনে) জ জি বাপি দিন আমি দিয়ে আসছি।
আবির আহমেদ;; এই নে
আইরাত মুচকি হেসে তার বাপির কাছ থেকে আব্রাহামের ফোন টা নিয়ে বাইরে যেতে লাগলো এবং আব্রাহাম কে বকতে লাগলো। বাইরে আসতেই আইরাত ভাবলো যে ফোনটা একবার অন করে দেখুক। যেই ভাবা সেই কাজ আইরাত ফোনটা অন করলো। অন করতেই দেখলো আব্রাহামের ফোনের ওয়ালপেপারে আইরাতের ছবি দেওয়া। আইরাতের একটা হাস্যজ্জল ছবি ফোনের স্কিনে ভাসছে। এই ছবি গুলো আব্রাহাম যে কখন তুলেছে আইরাত তা নিজেও জানে না। আইরাত বকতে বকতে একদম বাড়ির প্রায় বাইরেই চলে এসেছে কিন্তু ভিতর থেকে দেখা যাচ্ছে যে বাইরে বেশ কিছু মানুষ দাঁড়িয়ে আছে। আইরাত হাটছে এবং উকি দিচ্ছে।
আইরাত;; কেন মনে হচ্ছে যে বাইরে অনেক মানুষ দাঁড়িয়ে আছে। বেপার কি যাই দেখি তো।
আইরাত হাটতে হাটতে যেই বাইরে এক কদম রাখবে, ঠিক তার সাথে সাথেই আইরাতের চোখের সামনে একটা লোকের মাথায় গুলি লাগলো। লোকটি তার চোখ উল্টিয়ে দিলো এবং পরক্ষনেই মাটিতে লুটিয়ে পড়লো। লোকটি সোজা গিয়ে আইরাতের পায়ের কাছে পড়েছে। আইরাত বাকরুদ্ধ হয়ে লোকটির দিকে তাকিয়ে আছে। আইরাত যেন বিশ্বাস ই করতে পারছে যে সবে মাত্রই কি হয়ে গেলো। আইরাতের হাত পা সব থর থর করে কাপছে। চোখে পানি টলমল করছে। আইরাত কাপতে কাপতে মাথা তুলে ওপরে তাকাতেই দেখলো আব্রাহাম গুলি হাতে হিংস্র চোখে তাকিয়ে আছে। আব্রাহামের হাতে থাকা গুলি থেকে ধুয়া বের হচ্ছে,, দেখেই বোঝা যাচ্ছে যে আব্রাহাম ই গুলি করেছে। আব্রাহাম কে এই অবস্থায় দেখে আইরাতের হাত থেকে ফোন নিচে পরে গেলো। আইরাত কান্নারত চোখে আব্রাহামের দিকে তাকিয়ে আছে। তার যেন দম আটকে আসছে। আইরাত আশে-পাশে চোখ বুলিয়ে দেখলো যে আরো অনেক লোক প্রায় ১০-১২ জনের মতো মানুষ আধামরা হয়ে পরে আছে। তাদের পাশে দাঁড়িয়ে আছে আব্রাহামের বডিগার্ড রা। যারা নিচে পরে কাতরাচ্ছে তারা প্রায় মরেই গেছে। মনে হয় না পুনরায় কোনদিন নিজের পায়ের দাঁড়াতে পারবে।
আব্রহাম যেই লোকটিকে গুলি করেছে তার শার্টের কলার ধরে উচিয়ে চিৎকার করতে বলতে লাগলো
আব্রাহাম;; জানোয়ার সাহস কি করে হয়,, বল সাহস কি করে হয় তোদের আমার জানপাখির দিকে নজর দেয়ার। তোদের সাহস অনেক বেশি হয়ে গেছে তাই না,, তোদের সাহস আজ আমি বের করে দিব। তোরা, তোরা আমার আইরাত আমার কলিজার দিকে হাত বাড়িয়েছিস। আজ তোদের কলিজা টুকরো টুকরো করে কেটে আমি রাস্তার কুকুর দের খাওয়াব। তোরা আমার আইরাতের ক্ষতি করতে এসেছিলি তাই না আমার আইরাতের। এখন দেখি তোদের কে বাচায়।
এই কথা বলে আব্রাহাম তার হাতে থাকা Gun এর বাকি সব গুলি গুলো সেই লোকটির বুকে shoot করে দিলো। নদীর পানির মতো রক্ত বইতে শুরু করলো। আইরাত চকমে চিল্লিয়ে উঠলো। আইরাত খিচে চোখ বন্ধ করে দুহাত দিয়ে নিজের কান চেপে ধরলো। আইরাত আর নিতে পারছে না এইসব। প্রচুর ভয়ে আইরাত তার হাত দুটো মুঠিবদ্দ করে বেশ কয়েক কদম পিছিয়ে গেলো। আইরাতের ভয়ে গলা দিয়ে কোন কথা বের হচ্ছে না। আইরাত পিছাতে পিছাতে বাড়ির ভিতরে এসে পড়লো। এক সময় সে দৌড়ে একদম বাড়ির ভিতরে চলে গেলো। আব্রাহামের এতোক্ষনে হুস ফিরলো যে আইরাত তো সব কিছু দেখে ফেলেছে। এখন কি হবে।
আব্রাহাম;; Ohh Noo,, আইরাত। আইরাত কেন এখানে এসেছিল। ও তো সব দেখে ফেললো এবার, এবার আমি কি করব। না না যে করেই হোক আইরাত কে সামলাতে হবে, বোঝাতে হবে আমার।
রাশেদ…
রাশেস;; জি স্যার
আব্রাহাম;; মূহুর্তের মধ্যেই যেন এইখান টা একদম আগের মতো হয়ে যায়। কেউ যাতে ভুল করেও টের না পায় যে এখানে আদৌ কিছু হয়েছিল কিনা ওকে,,,
রাশেদ;; জি জি স্যার।
আব্রাহাম তার Gun রাশেদের কাছে দিয়ে গেলো। এবং দৌড়ে বাড়ির ভিতরে চলে গেলো। তার মাথায় এখন শুধু আইরাতের কথা ঘুরপাক খাচ্ছে। তার মনে ভয় আবার বাসা বেধেছে। আইরাত কে হারানোর ভয়। আইরাত যদি আবার আব্রাহাম কে ভুল বুঝে দূরে সরে যেতে চায় তাহলে আব্রাহাম তো মরেই যাবে। সম্ভব না একদমই সম্ভব না আইরাত কে ছাড়া আব্রাহামের থাকা।
আব্রাহাম এসব ভাবছে এবং বাড়িতে যাচ্ছে।
আইরাত একদৌড়ে বাড়ির ভিতরে এসে পরে। কাউকে কিছু না বলেই একেবারে নিজের রুমে চলে যায়। নিজের রুমে গিয়ে দরজা লাগিয়ে আইরাত ফ্লোরে বসে পরে৷ আইরাতের মাঝে ভয় কান্না দুটোই একসাথে কাজ করছে। মুখে হাতচাপা দিয়ে আইরাত কান্না করতে লাগলো। চোখের সামনে বার বার লাশ গুলো ভেসে আসছে
আইরাত;; আ আব্রাহাম আআআপনি একজন খুনি। খুনি আপনি। আপনি মানুষ মারেন। আআমি নিনিনিজের চোখে আআপনাকে গুগুগুলি করতে দেদেদেখেছি। আপনি খুখুখুনি।
আইরাত এইসব বলছে আর কান্না করেই চলেছে। আব্রাহাম দৌড়ে আইরাতের রুমের সামনে এলো।
আব্রাহাম;; আইরাত আইরাত জানপাখি। জান আমার প্লিজ তুমি আমাকে ভুল বুঝো না প্লিজ দরজা খুলো প্লিজ।
আইরাত আব্রাহামের সব কথা শুনছে কিন্তু দরজা খোলার সাহস আইরাতের নেই। সে কান্না করছে তো করছেই।
আব্রাহাম;; Baby girl,, plz open the door..
Open it just once. জানপাখি মরেই যাবো তোমায় ছাড়া প্লিজ দরজা খোল।
আইরাত;; আপনি যান প্লিজ এখন এখান থেকে। আমি কারো সাথে এখন কথা বলতে চাচ্ছি না, plz leave me alone..
আব্রাহাম;; আইরাত, প্লিজ আমাকে explain করতে দাও। তুমি যা ভাবছো তা নয়। আইরা…
আইরাত;; আপনি শুনেন নি আমি একবার কি বলেছি। যান প্লিজ এখান থেকে।
আব্রাহাম বুঝলো যে এখন আইরাত কে একা থাকতে দেওয়াই ভালো হবে। আর এখন সে কারো কথাই শুনবে না। অবশেষে আব্রাহাম আইরাতের কাছ থেকে এসে পড়লো।
আব্রাহাম নিচে নেমে পড়লো। আবির আহমেদ দেখলো যে আব্রাহামের মন খারাপ তা দেখে আবির আহমেদ জিজ্ঞেস করলো।
আবির আহমেদ;; আব্রাহাম বাবা
আব্রাহাম;; হুম,, হুম বাপি
আবির আহমেদ;; কি কিছু কি হয়েছে
আব্রাহাম;; ক কয় না না তো বাপি
আবির আহমেদ;; তাহলে তোর মুখ ওমন কেন,
আব্রাহাম;; না বাপি কিছু হয় নি সব ঠিক আছে
আবির আহমেদ;; আচ্ছা,, আইরাত মামনি কোথায়
আব্রাহাম;; আছে ও ওর রুমে।
আবির আহমেদ;; আরে রুমে কি করছে যা যা ডেকে নিয়ে আয় সবাই একসাথে খাবো।
আব্রাহাম;; না মানে বাবা আসলে আইরাতের শরীর একটু খারাপ। অনেক ধকল গিয়েছে তো তাই আর কি। ও মনে হয় ঘুমোচ্ছে।
আবির আহমেদ;; ওহহ আচ্ছা আচ্ছা থাক তাহলে ডাকার দরকার নেই। তুই আয় খেয়ে নিবি আমি অয়ন কে ডেকে আসি
আব্রাহাম;; হ্যাঁ বাপি ঠিক আছে।
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
অন্য দিকে আইরাত,,,
আইরাত;; আব্রাহাম একজন খুনি। ও ও যে কাউকে খুন করতে পারে। যেখানে ও নিরিহ মানুষদের মারতে পারে সেখানে ও যে কাউকেই মেরে ফেলতে পারে। আমি করবো না করবো না আমি বিয়ে কখনই না। আর যাই হোক একজন খুনি কে আমি বিয়ে করতে পারব না।
আইরাত এই সব কথা ভাবছে এবং একসময় কান্না করতে করতে ঘুমিয়ে পড়লো।
………………রাতে………………..
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
আইরাতের ঘুম ভেংে গেলো। মাথা টা খুব ভার ভার লাগছে তার। কান্না করার ফলে এমনটা হয়েছে। ঘুম থেকে উঠে আবারও আইরাতের সেই মানুষ মারার দৃশ্য গুলো চোখে ভাসতে লাগলো। আইরাত তার দুহাত দিয়ে মাথা চেপে ধরলো। মাথায় ভীষণ যন্ত্রণা হচ্ছে তার। আইরাত ধীরে ধীরে উঠে গিয়ে ফেশ হয়ে আসলো। ফ্রেশ হয়ে আসতেই দরজায় কারো নক করার শব্দ পেলো। আইরাত গিয়ে দরজা খুলে দিলো দেখলো যে তার বাপি দাঁড়িয়ে আছে হাতে খাবার নিয়ে। আইরাত তার বাপি কে দেখে তাড়াতাড়ি করে ভিতরে আসতে বলল।
আইরাত;; আরে বাপি ভিতরে আসুন। আর আপনি কষ্ট করে খাবার নিয়ে আসতে গেলেন কেন
আবির আহমেদ;; আরে না মামনি এতে কষ্ট কিসের। আসলে তুই তো তখন কিছু খাস নি ঘুমিয়ে ছিলি তাই আর ডাকতে চাই নি। মনে পড়লো তুই তো কিছু খাস নি তাই খাবার নিয়ে আসলাম।
আইরাত;; বাপি আমাকে নিচে ডাকলেই পারতেন।
আবির আহমেদ;; না থাক এখন আর যেতে হবে না,, এবার বোস আমার কাছে হা কর আমি খাইয়ে দিচ্ছি।
আর শোন কেউ কি কারো বাবা কে আপনি বলে ডাকে বল। তুমি করে ডাকবি আমাকে। আমি কি তোর বাবা নই। জানিস আমার না খুব ইচ্ছে ছিলো যে আমার একটা মেয়ে হবে ঠিক তোর মতো এখন মনে হয় যে আল্লাহ আমার দোয়া কবুল করেছে।
আইরাত আর কিছু না বলে তার বাপির পাশে বসে পড়লো। আর তার বাপি তাকে খাইয়ে দিতে লাগলো। আইরাতের খুব খারাপ লাগছে। কেন যানি আইরাতের খুব কান্না আসতে লাগলো। টুপ করে আইরাতের চোখ থেকে একফোটা পানি গড়িয়ে পরলো।
আবির আহমেদ;; আরে মামনি তুমি কাদছো কেন। কি হয়েছে মা
আইরাত;; বাপি, জানো তুমি না খুব ভালো বাপি।
আবির আহমেদ;; আরে মা (এই বলেই আইরাত আবির আহমেদ কে জড়িয়ে ধরলেন)
এর মধ্যেই অয়ন এলো। এবং দেখলো আইরাত তার বাপি কে ধরে কানছে এবং তার বাপি তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন।
অয়ন;; উহুম উহুম (দরজায় দাঁড়িয়ে গলা খাকারি দিয়ে)
আইরাত মাথা তুলে দরজায় তাকালো দেখলো অয়ন। আবির আহমেদ অয়ন কে দেখে বলে উঠলো।
আবির আহমেদ;; অয়ন যে দাঁড়িয়ে আছিস কেন ভিতরে আয়
অয়ন;; বাবা মেয়ের আদর দেখে এখন আমি নিজেই একটু এমোশনাল হয়ে গেলাম। তো আদর কি একা শুধু নিজের মেয়ে কেই দিবে নাকি আমার জন্যও কিছু থাকবে।
আইরাত অয়নের কথা শুনে হেসে দিলো সাথে আবির আহমেদ ও।
আবির আহমেদ;; আরে আয় আয় তোরা সবাই আমার কাছে একই।
তিন জন মিলে একটু আকটু আড্ডা দিয়ে যে যার রুমে এসে পড়লো। আইরাত তার রুমের জানালার কাছে বসে পড়লো। এই রুমে এখন আইরাতের দম বন্ধ হয়ে আসে। একা এই এক ঘরে আর কতোক্ষন থাকা যায়। অনেক বোর লাগে এই ঘরে থাকতে থাকতে আর ভালো লাগে না। তবে আইরাতের এই বিয়ে টা করতে বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই। কিন্তু আব্রাহাম এই সব মানুষ গুলো কে মিথ্যে বলে রেখেছে যে আমার ও এই বিয়ে তে মত আছে। এই বাড়ির মানুষ গুলো অনেক ভালো আর আইরাত কোন ভাবেই এই মানুষ গুলো কে কষ্ট দিতে চাচ্ছে না নয়তো অনেক আগেই এখান থেকে আবার সে পালানোর চেষ্টা করতো। কিন্তু এখন যদি আইরাত এইখান থেকে পালায় তাহলে এই মানুষ গুলোও কষ্ট পাবে এবং তার সাথে নিজের পরিবারের লোক গুলোর ওপর ও বিপদ আসবে। আইরাত নদীর মাঝ খানে এসে থেমেছে। না যেতে পারছে ডান দিকে আর না ই যেতে পারছে বা দিকে। কি করলে এখান থেকে মুক্তি পাবে সে। আর কোন পথ ই যে আইরাত তার চোখের সামনে খুজে পাচ্ছে না। আইরাত এই সব কিছু ভাবছিলো কিন্তু আইরাতের ভাবনাতে ছেদ ঘটিয়ে অয়ন এলো আইরাতের রুমে
অয়ন;; ভাবি
আইরাত;; আরে অয়ন, এসো ভিতরে এসো
অয়ন;; ভাবি আসলে, আমি তোমাকে কিছু দিতে এসেছিলাম
আইরাত;; কি
অয়ন;; ভাবি এগুলো বাপির ঔষধ। প্রতিদিন তো ভাইয়া নইতো আমি দিয়ে আসি। আজ তুমি দিয়ে আসো। বাপির অনেক ভালো লাগবে। আর এর অভ্যাস করে নাও এখন থেকে কিন্তু রোজ তোমাকেই দিতে হবে।
আইরাত;; হুমমম দাও (হেসে অয়নের কাছ থেকে ঔষধ নিয়ে)
অয়ব;; ভাবি আমি তাহলে আসি
আইরাত;; আচ্ছা
এই বলে অয়ন বেরিয়ে গেলো। আইরাতও তার রুম থেকে বের হয়ে পড়লো তার বাপির রুমে যাওয়ার জন্য। আইরাত তার বাপির কাছে গেলো।
আইরাত;; বাপি আসবো
আবির আহমেদ;; আয় মা আয়। এতে বলার কি আছে আয়।
আইরাত গিয়ে দেখলো আবির আহমেদ বই পড়ছে। আইরাত গিয়ে তার বাপির পাশে বসে পড়লো।
আবির আহমেদ;; কিরে মা কিছু বলবি?
আইরাত;; তুমি এতো ভুলো মন কেন বলতো, তুমি তোমার ঔষধ যে খাও নি তার খেয়াল আছে
আবির আহমেদ;; কেন বাড়িতে দু দুটো ছেলে আর মেয়ে থাকতে আমি খাবো কেন।
আইরাত তার বাপির কথা শুনে হেসে দিল।
আইরাত;; হ্যাঁ হ্যাঁ হয়েছে। এই নাও ধরো এবার ঔষধগুলো খাও।
আবির আহমেদ ঔঔষধ খেয়ে নিলেন।
আবির আহমেদ;; মামিনি অনেক রাত হয়েছে যা এবার ঘুমিয়ে পড় কেমন (মাথায় হাত বুলিয়ে)
আইরাত;; আচ্ছা বাপি, Good night
আবির আহমেদ;; Good night মামনি।
আইরাত তার বাপির ঘর থেকে বের হয়ে পড়লো।
আইরাত;; এখন গিয়ে আবার সেই রুমে বসে থাকো। ধুর ভালো লাগে না। আচ্ছা এই বাড়ি টা তো অনেক বড়ো। অবশ্যই বাড়িতে কোন ছাদ রয়েছে। কিন্তু এই ছাদ টা কোথায়।
আইরাত ভাবতে ভাবতে হাটতে লাগলো। যেতে যেতে আইরাত দেখতে পেলো একটা সিড়ি। সিড়ি টা ঠিক নিচ থেকে উপরের দিকে গিয়েছে। উপরের অংশ থেকে সিড়ির ওপর জোছনার আলোর মতো কিছুটা পড়েছে। এতে সিড়ি টা ভারি সুন্দর লাগছে। আইরাতের তা দেখে বেশ কৌতুহল লাগলো। কিন্তু আইরাত ভাবছে যে এতো রাতে ওখানে যাওয়া টা কি ঠিক হবে। আইরাত দোটানায় পরে গেলো যে যাবে কি যাবে না। একসময় ভাবতে ভাবতে আইরাত কৌতুহল বশত উপরে চলেই গেলো। এবং আইরাত উপরে গিয়ে যা দেখলো তাতে আইরাতের চোখ কপালে উঠে গেল। আইরাত ভাবতেও পারে নি যে এখানে এসে এমন কিছু একটা সে দেখবে ………………..
.
.
.
.
.
.
.
.
🌺🌺চলবে~~~~~
.
.
.
#Gangstar In Love🖤🥀___A psycho love story””
#Writer; Tamanna Islam
#part__ 17
🦋🦋
..
..
..
..
..
উপরে এসে আইরাত যা দেখলো তাতে তার চোখ কপালে উঠে গেলো। আইরাত ভাবতেও পারে নি যে এখানে এসে সে এমন কিছু একটা দেখবে…..
উপরে ছাদ রয়েছে, কিন্তু এটাকে ছাদ বললে ভুল হবে। ছাদটা অসম্ভব সুন্দর। ছাদ ও যে এতো সুন্দর হয় তা আইরাতের জানা ছিলো না,, সব দিক দিয়ে ফুলের গাছ, চাঁদের আলো তে ঝলমল করছে চারিদিক। জোৎসার আলোতে হাসছে সবকিছু। সবকিছু গন্ধরাজ এবং বেলীফুলের সুগন্ধে মৌ মৌ করছে। গাছের ফুলগুলো যেন কথা বলছ। পাশেই বসার জন্য দু একটা সিট রিয়েছে। একটা দোলনা ও রয়েছে। পাশের রাস্তার দুপাশে সারি সারি লাম্প পোস্ট রয়েছে,, তাদের আলোও কিছুটা ছাদে এসে পড়েছে। হালকা হাওয়া বয়ে চলেছে। সব কিছু মিলিয়ে যেন এক মনোমুগ্ধকর দৃশ্য। আইরাত অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। এক দমকা হাওয়া এসে আইরাতের চুলগুলো কে উড়িয়ে নিয়ে গেলো। আইরাত ধীরে ধীরে এগিয়ে গেলো। কিছুটা দূরে গিয়ে বুক ভরে একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস নিলো। বহুদিন পর কোন পাখিকে খাচায় আটকে রেখে যখন মুক্ত আকাশে ছেড়ে দেওয়া হয় এবং সে তার ইচ্ছেডানা গুলো মেলে সেই অসীম আকাশে উড়ে যায় এই সময় ঠিক তেমন অনূভুতি হচ্ছে আইরাতের। মুখের কোণে হাসি ফুটে উঠলো তার।
..
..
..
..
..
..
অন্যদিকে আব্রাহাম সেই দুপুর থেকে ঘরের বাইরে বের হয়নি,, আইরাতের ছেড়ে যাওয়ার ভয় তাকে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে। দেখাও করতে পারছে না সে আইরাতের সাথে কেননা আইরাত চায় না। সিগারেট খেতে খেতে আব্রাহাম এই কথা গুলো আনমনে ভাবছে। অবশেষে আর থাকতে না পেরে আব্রাহাম তার ঘর থেকে বেড়িয়ে পড়লো আইরাতের কাছে যাওয়ার জন্য।
আব্রাহাম;; আমি জানি না কিভাবে কিন্তু তোমাকে ছাড়তে পারবো না আমি জানপাখি। তুমিই আমার অস্তিত্ব,, আমার মন মস্তিষ্কের সাথে মিশে আছো তুমি। তোমাকে ছাড়া এক কথায় অসম্ভব আমার বেচে থাকা। তোমাকে আমার চাই এবং তোমাকে আমার হতেই হবে তা তুমি চাইলেও আর না চাইলেও।
আব্রাহাম এই কথা গুলো একা একাই বলছে এবং আইরাতের রুমের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আব্রাহাম গিয়ে দেখলো আইরাতের রুমের দরজা খোলা। তা দেখে আব্রাহামের মাথায় বাজ পড়লো। আব্রাহাম কিছুটা ভয় পেয়ে গেলো। আব্রাহাম যা ভাবছিলো তা সত্যি হলো না তো। আব্রাহাম তার হাত শক্ত করে মুঠি করে নিলো। আইরাতকে না দেখলে তার মাথায় রক্ত উঠে যায়। রেগে বোম হয়ে গেছে আব্রাহাম। না জানি এখন আইরাত কে সামনে পেলে কি করবে সে। আইরাত না বলেই এতো রাতে রুমের বাইরে কোথায় গিয়েছে তাই ভাবছে আব্রাহাম। সে ভাবছে আইরাত আবার কোন উপায়ে এখান থেকে পালিয়ে টালিয়ে গেলো না তো। আব্রাহাম ভাবছে যে করেই হোক আইরাত কে খুজে আনতে হবে। আব্রাহাম রেগে সেখান থেকে চলে আসতে ধরলে উপর থেকে ছোট বাচ্চার মতো খিলখিল করে হাসির শব্দ তার কানে যায়। আব্রাহাম উপরে তাকিয়ে কপাল হালকা ভাজ করে নেয়।
আব্রাহাম;; ছাদে আবার এতো রাতে কে, আর হাসির শব্দ কোথা থেকে?! যাই গিয়ে দেখতে হবে
আব্রাহাম উপরের দিকে এগোতে থাকল। সিড়ি বেয়ে ওপরে উঠে আব্রাহাম যা দেখলো তাতে আব্রাহামের রাগ এক নিমিষেই পানি হয়ে গেলো। আইরাত ছোট বাচ্চার মতো করে ছাদের এক কিনারা থেকে আর এক কিনারায় দৌড়াচ্ছে। মুখে তার বিশ্বজয়ের হাসি। আব্রাহাম এতো গুলো দিনের মধ্যে কখনোই আইরাত কে এভাবে হাসতে দেখে নি। খোলা হাওয়াতে আইরাতের লাগামহীন চুলগুলো উড়ছে। আইরাত গাছের ফুলগুলো কে ছুয়ে ছুয়ে দেখছে এবং তাদের থেকে সুবাস নিচ্ছে। আব্রাহাম যেন আইরাতে হারিয়ে গেছে। কোনদিকে কোন রকম হুশ নেই তার। চোখের পলক ফেলতেও ভুলে গেছে সে। আব্রাহাম শুধু আইরাত এবং আইরাতের মাঝেই মুগ্ধ। আব্রাহাম দুহাত ভাজ করে দেয়ালের সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে তার আইরাত কে দেখছে। অনেকক্ষন এভাবে ঘুরাঘুরির পর আইরাত ছাদের এক কোণাতে গিয়ে দাঁড়িয়ে পড়লো। অনেকদিক পর আইরাত স্বাধীনভাবে নিজেকে উপভোগ করলো। কিন্তু আইরাতের কেন যেন মনে হতে লাগলো যে কেউ তাকে খুব পর্যবেক্ষন করে দেখছে। আইরাত তার আশে-পাশে তাকাতাকি করছে। কিন্তু ঠিক তখনই আইরাত তার কোমড়ে কারো ঠান্ডা হাতের স্পর্শ পেলো। আইরাতের পুরো শরীর কেপে উঠলো। পিছনে তাকাতে চেয়েও তাকাতে পারলো না আইরাত। আব্রাহাম আইরাত কে পিছন থেকে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরলো। আইরাত অবাকের চরম পর্যায়। আব্রাহাম আইরাতের ঘাড়ে মুখ গুজে দিলো। আইরাত চেয়েও কিছু বলতে পারছে না। মুখ দিয়ে কোন কিছু বের হচ্ছে না তার,, সে বাকরুদ্ধ।।
আব্রাহাম;; জানপাখি তুমি এভাবে না বলেই এতো রাতে ঘরের বাইরে চলে এসেছ কেন বলত। আমি গিয়েছিলাম তোমার রুমে গিয়ে দেখি তুমি নেই। জানো কতটা ঘাবড়ে গিয়েছিলাম অনেক রাগ ও লেগেছিল আমার। তোমাকে সামনে না পেলে ঠিক থাকতে পারি না আমি। কিন্তু এখন তোমাকে এখানে দেখে আমার প্রাণে প্রাণ চলে এসেছে। ভালোবাসি জানপাখি ভালোবাসি অনেক। প্লিজ কখনো ছেড়ে যাওয়ার কথা মাথায়ও এনো না প্লিজ। তুমি ছাড়া আমি নিঃস্ব। আমি আমার অস্তিত্ব খুজে পাই না তুমিহীন। তোমাকে পেয়ে আমি আমার বেচে থাকার আশা খুজে পেয়েছি। I Love you baby girl love you more then anything…..
এই বলে আব্রাহাম আইরাতের ঘাড়ে কিস করে দিতে লাগলো। আইরাত এক রাশ বিরক্তি নিয়ে আব্রাহামের কাছে দাঁড়িয়ে আছে। ছাড়া পাওয়ার চেষ্টা করছে কিন্তু লাভ নেই আব্রাহাম নাছোরবান্দা। আব্রাহাম আইরাতকে এমন ভাবে জড়িয়ে ধড়েছে যেন ছেড়ে দিলেই আইরাত হারিয়ে যাবে, চলে যাবে। আইরাতের কানে এখন শুধু একটাই কথা বাজছে তা হলো “” I love you baby girl love you more then anything””…. কিন্তু তখনই আইরাতের সামনে আব্রাহামের সেই হিংস্র চোখ, বাঘের মতো গর্জে উঠা সব কিছুই কেমন ভাসতে লাগলো। মানুষ মারা, Heartless এর মতো গুলি করা,, সব কিছু আইরাতের চোখে ভাসছে । আইরাতের কেমন একটা ভয় ভয় হতে লাগলো। অন্যদিকে আব্রাহাম আইরাতের কোমড় জড়িয়ে ধরে একাধারে কিস দিয়েই যাচ্ছে। আইরাত এক সময় বিরক্তি এবং রাগের বসে নিজের সমস্ত শক্তি দিয়ে আব্রাহাম কে ধাক্কা দিলো। আচকমা এমন হওয়াতে আব্রাহাম কিছুটা ভরকে গেলো এবং কয়েক কদম পিছিয়ে এলো। আব্রাহাম আইরাতের দিকে আহত দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো। আইরাতের চোখ দিয়ে অনবরত পানি পরছে। আইরাত কান্না করছে এবং ঘন ঘন নিঃশ্বাস ছাড়ছে।
আইরাত;; ভালোবাসা,, আপনি একে ভালোবাসা বলেন। ভুল আপনি। আপনি কখনোই কাউকে ভালোবাসতে পারবেন না কখনোই না। কেননা একজন খুনি আর যাই হোক কখনোই কাউকে ভালোবাসতে পারে না। জোর করে কোন কিছুই হয় না। আপনি আমাকে জোড় করে এখানে তুলে এনেছেন এবং নিজের বন্দি করে রেখেছেন। এবং আমার উপর নিজের জোড় খাটিয়ে বলছেন যে আপনি আমাকে ভালোবাসেন। একে আর যাই হোক ভালোবাসা বলে না এটাকে জোড় জাবরদস্তি বলে। আপনি জোড় করে আমাকে পেতে পারেন কিন্তু আমার ভালোবাসা আপনি কখনোই পাবেন না। আমি বিয়ে করবো না আপনাকে সম্ভব না আমার পক্ষে, সম্ভব না। যে ভালোবাসে সে অন্যের ইচ্ছার মূল্য দিতে জানে আপনার মতো না যে সবসময় তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে করে। I hate you i just hate you আব্রাহাম আহমেদ চৌধুরী।
আইরাত এই কথা গুলো বলেই দৌড়ে সিড়ি দিয়ে নিচে নেমে তার রুমে চলে যায়। এবং ফুপিয়ে কান্না করতে থাকে।
আইরাত;; পাপা-মামনি প্লিজ কোথায় তোমরা আমাকে এখান থেকে এসে নিয়ে যাও প্লিজ। আমার দম আটকে আসছে এখানে আর ইচ্ছে করে না এখানে থাকার। মিস করি খুব মিস করি তোমাদের।
ছাদে আব্রাহাম সেই একই ভাবে দাঁড়িয়ে আছে। আইরাতের কথা গুলো ভাবছে সে। আইরাত কখনোই তাকে ভালোবাসবে না,, ভালোবাসতে পারবে না। কিন্তু আইরাত কে ছাড়া তো সে জীবন্ত লাশ হয়ে যাবে। আইরাত কে তার যে কোন মূল্যেই হতে হবে। আব্রাহাম আর কিছু না বলে ছাদের উপর থেকে নেমে সোজা নিজের ঘরে ঢুকে পড়লো।
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
পরের দিন সকালে🌅🌄“““““
জানালার পর্দার ফাক দিয়ে সূর্যের আলো আইরাতের চোখে এসে পড়লো। আইরাত ধীরে ধীরে উঠে বসলো। ঠিক সেই সময় তার দরজাতে টোকা পড়লো। আইরাত চোখ ডলতে ডলতে ভিতরে আসতে বললো। তৎক্ষনাত হুড়মুড়িয়ে রুমে কয়েকজন মেয়ে ঢুকলো। আইরাত থ মেরে বসে আছে। অবশেষে আব্রাহাম মেয়েদের মাঝ খান থেকে এসে সামনে দাড়ালো। পরনে তার Ash colour কোর্ট, Black colour পেন্ট+শার্ট, মুখে চাপদাড়ি এবং সেই সাথে কাতিলানা হাসি তো আছেই। আইরাত এই সবকিছু হা হয়ে দেখছে। কি হচ্ছে সে কিছুই বুঝতে পারছে না। কিন্তু আইরাতের ভাবনাতে ছেদ ঘটিয়ে আব্রাহাম বলে উঠলো…..
.
.
.
.
আব্রাহাম;; Very good morning baby girl..
আইরাত;;……………..
আব্রাহাম;; যাক অবশেষে ঘুম তো ভাংলো আমার ঘুমপাখির…
আইরাত;; আপনি এতো সকালে এখানে কেন আর এরা কারা (মেয়ের দের উদ্দেশ্যে)
আব্রাহাম;; ওহ এরা,, এরা হচ্ছে Parlor girls
আইরাত;; মানে এরা এখানে কেন? (হাল্কা ভ্রু কুচকে)
আব্রাহাম;; এরা সবাই আমাকে Date করতে এসেছে তাই
আইরাত;; হ্যাঁ তো যান না বাইরে গিয়ে করুন আপনার এইসব ডেট টেট, এখানে কি করছেন বের হন।আব্রাহাম;; কিন্তু আমার তো তোমাকে শুধুই তোমাকে প্রয়োজন। আইরাতকে চাই আমি…
আইরাত;; মানে কি, আপনি কি আমার সাথে ফাজলামি করছেন😤
আব্রাহাম;; উহু একদম না,, আমি ফাজলামি করার মুড এ নেই এখন।
আইরাত;; তাহলে এরা এখানে কি করছে
আব্রাহাম;; Baby girl ভুলে গেলে এতো তাড়াতাড়ি কিভাবে,, আজ না আমাদের বিয়ে তুমি কিভাবে ভুলতে পারো বলো।
আইরাত;; কিইইইইইইইইইইইইইইইইই, 😳
আব্রাহাম;; Yes my Queen, এতে এতো অবাক হওয়ার কিছুই নেই। আজই আমাদের বিয়ে আর আমি আজই করবো।
আইরাত;; অসম্ভব।
আব্রাহাম;; কিছুই অসম্ভব না। আব্রাহাম আহমেদ চৌধুরী পারে না এমন কিছুই নেই
আইরাত;; দেখুন আমি আপনাকে এর আগেও বলেছি আর এখনও বলছি আমি আপনাকে ভালোবাসি না আর না ই আপনাকে আমি বিয়ে করতে পারবো। কেন বুঝতে চাচ্ছেন না আপনি
আব্রাহাম;; কিছু কি বললে জানপাখি,, (কিছু যেন হয়নি এমন একটা ভাব নিয়ে)
আইরাত;; you r just impossible,😤
আব্রাহাম;; I know baby এর জন্যই তো বলি যে আমার সাথে লাগতে এসো না। আর শুনো তুমি চাও বা না চাও আর ভালোবাসো বা না বাসো তাতে আমার কোন কিছুই যায় আসে না ওকে। বিয়ে তো তুমি আমাকে করবেই আর তাও আজকেই। আর বেবি আমি তোমাকে এতোটাই ভালোবাসি যে তোমার ভালোবাসার কোন দরকারই নেই। আমার একার ভালোবাসাই আমাদের দুইজনের জন্য যথেষ্ট 😘
আইরাত;; অসহ্যকর
আব্রাহাম;; সহ্য করে নাও।
.
.
.
আব্রাহাম;; আইরাত baby girl,, আরে যাও বসে আছো কেন ফ্রেশ হয়ে আসো জলদি। আর এই যে মেয়েরা তোমরা তাড়াতাড়ি সুন্দর করে আমার জানপাখি কে রেডি করে দাও। কোন কিছুর কমতি যেন না থাকে Get that?!
মেয়েরা;; Yes sir…..
এই বলে আব্রাহাম ঘর থেকে বেরিয়ে পড়লো। আইরাত তব্দা খেয়ে সেই একই জায়গাতে বসে রয়েছে। আব্রাহাম তাকে তোয়াক্কা না করেই হনহনিয়ে চলে গেলো। রাগে আইরাতের মাথা ফেটে যাচ্ছে। মেয়েদের মধ্যে একজন এগিয়ে এসে আইরাত কে বলল…
মেয়ে;; ম্যাম, আপনি প্লিজ ফ্রেশ হয়ে আসুন। আপনাকে রেডি করাতে হবে
আইরাত অগ্নি চোখে মেয়েটির দিকে তাকালো। এবং চিৎকার দিয়ে বলে উঠলো
আইরাত;; হবো না আমি রেডি যে তোমাদের কে ডেকেছে তাকেই গিয়ে রেডি করাও,, যত্তসব
এই কথা বলে আইরাত রেগে বিছানা থেকে নেমে ওয়াসরুমে গিয়ে ধিরিম করে দরজা লাগিয়ে দিলো। মেয়েরা সবাই চমকে উঠলো।
মেয়ে;; বাবা রে বাবা দুই জামাই-বউ এর ই আকাশ ছোয়া রাগ। রাগ যেন নাকের ডগায় বসবাস করে।..
..
..
..
..
..
..
..
বেশকিছুক্ষন পরে আইরাত ওয়াসরুম থেকে বেরিয়ে এলো। দেখলো যে মেয়েরা সব কিছু তৈরি করে রাখছে। আইরাতের তা দেখে মাথা খারাপ হয়ে গেলো।
আইরাত;; তোমরা কি একটা কথা বললে শুনো না,, আমি কোন রেডি টেডি হবো না। করবো না আমি এই বিয়ে।
আইরাত এই সব কিছু বলে রাগে টেবিলের উপর থাকা কাচের একটি শো পিস নিচে ফ্লোরে আছাড় দিলো। সাথে সাথে টুকরো টুকরো হয়ে গেলো। এভাবেই রাগে ঘরের জিনিসপত্র ভাংচুর করছে আইরাত। সব গুলো মেয়েই ভয়ে হীম হয়ে গেলো। তাদের মধ্যে একটি মেয়ে বলে উঠলো
মেয়ে;; ম্যাম ম্যাম প্লিজ ম্যাম আপনি আপনার মাথা ঠান্ডা করুন। এভাবে ভাংচুর করবেন না প্লিজ স্যার দেখলে অনেক রেগে যাবেন। ম্যাম প্লিজ শান্ত হন।
কে শুনে কার কথা। আইরাতের মাথায় এখন রক্ত চড়ে বসেছে। রাগের বসে সব কিছু ভেংে গুড়ো গুড়ো করে দিচ্ছে আইরাত।
আব্রাহাম নিচ থেকে ভাংচুর এর আওয়াজ পায়। দৌড়ে উপরে চলে যায় সে। দরজা খুলে দেখে আইরাত পুরো পাগল হয়ে গেছে। রাগে সব কিছু তছনছ করে ফেলছে সে। আইরাত ইয়ায়া বড় একটা টব তুলেছে ভাংার জন্য কিন্তু তখনই আব্রাহাম এসে আইরাতের কাছে যায়। আইরাত হাত ধরে ফেলে সে। আইরাতের হাত থেকে টব নিয়ে দূরে ছুড়ে ফেলে দেয়। আব্রাহাম আইরাতের দুইবাহু ধরে ঝাকিয়ে বলে….
আব্রাহাম;; আইরাত পাগল হয়ে গিয়েছো তুমি, কি করছ কি এইসব
আইরাত;; হ্যাঁ হ্যাঁ আমি পাগল, আমি পাগল হয়ে গিয়েছে একমাত্র আপনার জন্য। আপনি আমার জীবন টা শেষ করে দিয়েছেন। আমি বিয়ে করবো না পারবো না আপনার সাথে নিজের সারাজীবন কাটাতে। কেন বুঝেন না আপনি কেন (কান্না করতে করতে)
আব্রাহাম হুট করেই এবার আইরাত কে জড়িয়ে ধরে। অনেক শক্ত করে জড়িয়ে ধরে। আইরাত কান্না করেই যাচ্ছে।
আব্রাহাম;; দেখো বেবি তোমার যতো ইচ্ছা তুমি ভাংচুর কর। যতো খুশি জিনিসপত্র ভাংতে থাকো। তুমি একটা ভাংবে আমি তোমাকে দশটা এনে দিবো। কিন্তু দেখো যদি তুমি ব্যাথা পেয়ে যাও তখন কষ্ট তো আমার ই হবে তাই না। প্লিজ এবার বন্ধ করো জান।।
আইরাত;; (এক ঝটকাতে আব্রাহামের কাছ থেকে সরে এসে) আপনি আসলেই একটা ঘাড়ত্যাড়া লোক, খুব খারাপ আপনি। আমি কি বলছি আর আপনি কি বলছেন। আমি করবো না করবো না বিয়ে আপনাকে। আমি ভালোবাসি ন ন….
আইরাত আর কিছু বলতে পারলো না। তার আগেই আব্রাহাম আইরাতের চুলের মুঠি ধরে সবার সামনে আইরাতকে কিস করতে লাগলো। আব্রাহাম অনেক জোরে আইরাতকে ধরে রেখেছে। আইরাত প্রানপণে ছাড়া পাওয়ার চেষ্টা করছে কিন্তু পারছে না। রুমে থাকা সব মেয়েরা লজ্জায় নিজেদের চোখ তাদের হাত দিয়ে ঢেকে ফেললো। প্রায় ৫-১০ মি. পর আব্রাহাম আইরাত কে ছেড়ে দিল। আইরাত হাপাতে হাপাতে বেশ কিছুটা দূরে চলে গেলো। আব্রাহাম মুচকি হেসে আইরাতের দিকে তাকিয়ে তার ঠোঁটের কোণা বা হাতের তালু দিয়ে মুছে ফেললো।
আইরাত;; লুচু কথাকার, অসভ্য, বেশরম, ইতর, লোফার। লজ্জা শরমের মাথা খেয়েছেন ঘরে যে আরো কতো মেয়ে রয়েছে তা কি ভুলে গেছেন।
আব্রাহাম;; What, আমি কেন দেখব যে আমার আশে পাশে কে আছে আমার জানপাখি আমার বউ যখন যা ইচ্ছা করবো আমার কোন problem নেই। যার problem সে চোখ ঢাকুক। I totally don”t care baby…
আব্রাহাম ধীরে পায়ে আইরাতের দিকে এগিয়ে গেলো। আইরাতকে একদম দেয়ালের সাথে ঠেকিয়ে ধরে দাড়ালো। আইরাত এবার মাথা নিচু করে ফেলল। আব্রাহাম দু পাশে তার দুহাত রেখে আইরাতের দিকে একদম ঝুকে কানের কাছে গিয়ে বলল…..
আব্রাহাম;; Baby girl, এতো ঘাবড়াচ্ছো কেন বলত। চিন্তা কর না আমি এখন তোমার সাথে কিছুই করব না যা করার তা বাসর ঘরেই করবো। (আইরাতের দিকে তাকিয়ে লুচু মার্কা হাসি হেসে)
আইরাত চোখ রাংিয়ে আব্রাহামের দিকে তাকালো। তার চোখে রাগ স্পষ্ট।
আব্রাহাম;; হায় কয়ি তো রোকলো। জান এভাবে প্লিজ তাকিয়ো না,, ঘায়েল তো হয়েই গেছি এখন মরেই যাবো।
দেখো বেবি ভয় পেয় না এখন তোমাকে কিছুই করবো না। So take it easy ok… বাট বাট বাট কিছু না করেই একদম ছেড়ে দিয়েই তো আমি আর পাচ্ছি না। তো এখন কি করি কি করি।। ওহহ বেবি তুমি তো আমাকে বিয়ে করবে না রাইট,, ওকে করো না।
তাহলে এর পর তোমার পরিবারের সাথে যা হবে তা দেখার জন্য তুমি প্রস্তুত থাকো কেমন (ডেভিল স্মাইল)
আইরাত;; মা মা মানে,, কি বলছেন আপনি?
আব্রাহাম;; listen i am very stright forward… আমি ঘুড়িয়ে পেচিয়ে কথা না নিজে বলি আর না ই পছন্দ করি। সো আমি সোজা সোজি বলছি,, আইরাত তুমি যদি right now আমাকে বিয়ে না করো তাহলে আমি তোমার পিরিবারের ক্ষতি করতে বাধ্য হবো।
আইরাত এবার একদম থমকে গেলো। আইরাত এবার মাথা তুলে আব্রাহামের দিকে অশ্রুসিক্ত চোখে তাকালো।
আব্রাহাম;; দেখো এভাবে তাকিয়ে লাভ নেই আমি আব্রাহাম যা বলি তাই করি। আর যদি তুমি চাও যে এমন কিছু একটা না হোক তবে আমাকে বিয়ে করার জন্য ভালোভাবে রাজি হয়ে যাও।
আইরাত আর কিছুই শুনতে পারছে না। তার কানে শুধু আব্রাহামের বলা কথা বাজছে। আব্রাহাম তার পরিবারের ক্ষতি করে দিবে। আর আইরাত মরে গেলেও তা সহ্য করতে পারবে না। তাহলে কি নিজ হাতে নিজের জীবন এই মানুষ রুপি পশুর নিকট সপে দিবে,, যে কিনা তাকে ভালোবাসি দাবি করে। নিজের পরিবারের ক্ষতি হওয়া থেকে ভালো সে নিজে শেষ হয়ে যাক। আইরাত এইসব ভাবছে এবং মূর্তির মতো দাঁড়িয়ে আছে।
আব্রাহাম;; জানপাখি কিছু বলছো না কেন। নিঃশ্চুপ হয়ে আছো কেন। আইরাত Baby girl চুপ থাকা সম্মতির লক্ষণ। তাহলে কি আমি ধরে নিবো যে তুমি বিয়েতে রাজি। And anyway তোমার রাজি না হয়েও কোন উপায় নেই।
আব্রাহাম আইরাতের কপালে চুমু দিয়ে ঘুড়ে দাঁড়ালো। এবং মেয়েদের উদ্দেশ্যে বলল…….
আব্রাহাম;; Dear Girls!!!
মেয়েরা;; জি স্যার….
আব্রাহাম;; আমার জানপাখি কে রেডি করো। And she must be look special ok….
মেয়েরা;; Of course sir…
আব্রাহাম আবার পিছন ঘুরে আইরাতের দিকে তাকালো। আইরাত ও তার দিকে তাকালো। আব্রাহাম সাথে সাথে আইরাত কে চোখ মেরে দিল। আব্রাহাম দ্রুত হেটে রুম থেকে বেরিয়ে পড়লো।
.
.
.
.
.
.
.
.
আইরাত এখনো থ মেরে সেখানেই দাঁড়িয়ে আছে। মেয়েরা আইরাতকে নিয়ে বসিয়ে দিলো। সবাই ব্যস্ত হয়ে পরল আইরাতকে বধূরুপে সাজানোর জন্য।
আইরাতের সামনে শুধু তার পরিবারের কথা ঘুরপাক খাচ্ছে। শেষে আইরাত তার চোখ দুটো বন্ধ করে ফেলল এবং তার চোখ বেয়ে দু ফোটা অশ্রুবিন্দু গড়িয়ে পড়লো
.
.
.
.
.
.
🖤🦋চলবে~~~~~