#Gangstar In Love🖤🥀___A psycho love story””
#Writer; Tamanna Islam
#part__ 39
💜💐..
..
..
..
..
..
আইরাত হুড়মুড়িয়ে নিচে নেমে পরলো। আইরাতকে নিচে নামতে দেখে আব্রাহাম বড়ো একটা হাসি দিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়ালো। আইরাত আব্রাহামের সামনে এসে দাড়িয়ে পরতেই আব্রাহাম দুহাত প্রশারিত করে আইরাতকে সম্পূর্ণ ঘিরে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো। আইরাত পুতুলের মতো করে দাঁড়িয়ে থাকতে লাগলো। কিছু সময় পর আইরাত আব্রাহামের বুকে ঠেলে দূরে সরিয়ে দিলো। রাগি আর কিছুটা চিন্তা নিয়ে আব্রাহামকে বলে উঠলো…
আইরাত;; আচ্ছা আপনি শুরু করেছেন কি কয়েকটা দিন ধরে বলুন তো!
আব্রাহাম;; আমি আবার কি শুরু করলাম
আইরাত;; ওহ আপনি কি শুরু করেছেন আপনি তা জানেন না তাই না! (দুহাত ভাজ করে)
আব্রাহাম;; একদম না (আইরাতের দিকে ঝুকে)
আইরাত;; এই যে আমি যেখানে যেখানে যাবো ঠিক সেখানেই টপকে পরা, আমাকে ফলো করা, নিজের লোকজন কে দিয়ে আমার ওপর নজর রাখা, আমার বাসার সামনে এসে এভাবে রোমিও এর মতো করে দাঁড়িয়ে থাকা আরো কতো কি কি। এগুলো করছেন কেন, কেন এভাবে জ্বালাচ্ছেন আমায়?
আব্রাহাম;; এটার উত্তর আমার থেকে তুমি ভালো জানো বেবি।
আইরাত;; ওহ তাই না। (মেকি হেসে)
আব্রাহাম;; Yeap…
আইরাত;; শুনে রাখুন আপনি যদি ভেবে থাকেন যে আমি আপনার জীবনে আবারও ফিরে যাবো তো For your kind information let me tell you that i am not coming back in your life…
আইরাত প্রথমে মেকি হেসলেও, পরে আঙুল তুলে আব্রাহামের দিকে তেড়ে এসে কথা গুলো বললো। আব্রাহাম বাকা হেসে আইরাতের দিকে এগিয়ে বলে উঠলো…
আব্রাহাম;; ওহ তাই নাকি।
আইরাত;; হ্যাঁ একদম তাই।
আব্রাহাম;; Are you challenging me?!
আইরাত;; ধরে নিন তাই ই।
আব্রাহাম;; আমি কখনো হারতে শিখি নি।
আইরাত;; কিন্তু এখন শিখে নিন।
আব্রাহাম;; আচ্ছা পরের টা পরে দেখা যাবে এখন তুমি আগে আমার কাছে এসো।
আব্রাহাম আইরাতের হাত ধরে নিজের কাছে টেনে নিয়ে কোমড় জড়িয়ে ধরে। আইরাত চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে থাকে। আব্রাহাম আইরাতকে জড়িয়ে ধরে কানের কাছে মুখ নিয়ে যায়। আইরাতের চুলগুলোর মাঝে নিজের মুখ ডুবিয়ে দেয়। ধীর কন্ঠে আইরাতকে বলতে থাকে…
আব্রাহাম;; জানপাখি মনে আছে তোমার, আগে রোজ সকালে ঘুম থেকে উঠে যখন তুমি ফ্রেশ হয়ে ভেজা চুলে আইনার সামনে এসে দাড়াতে তখন আমি তোমাকে এভাবেই পিছন থেকে ধরে তোমার চুলে মুখ গুজে দিতাম।
আইরাত;; __________________
আব্রাহাম;; আমি জানি সবকিছুই তোমার মনে আছে কিন্তু মুখে কিছুই বলো না প্রবলেম নেই খুব তাড়াতাড়ি এই মুখ দিয়েই আমি সবকিছু বের করবো।
আইরাত চোখ বন্ধ করে আব্রাহামের কথা গুলো মন দিয়ে শুনছিলো কিন্তু আব্রাহামের পরের কথা গুলো শুনে আইরাত চেতে গেলো। আব্রাহামকে টেনে নিজের কাছ থেকে সরিয়ে দিলো।
আইরাত;; এই যে হ্যালো মিস্টার. এটা আপনার বেডরুম না ওকে এটা মেইন রোড।
আব্রাহাম;; হ্যাঁ তো কি!
আইরাত;; মানে তো কি মানে কি। আপনার একবিন্দু চিন্তাও নেই তাই না। লজ্জা শরমের মাথা তো সেই কবেই খেয়েই ফেলেছেন। সরুন আমি ওপরে যাবো।
আব্রাহাম;; এতো বেশি তো বকবক করতে বলিনি। মানে আমার কাছ থেকে দূরে থেকে না ইদানীং অনেক বেশি মুখ চলেছে তোমার, আর এই মুখ কিভাবে বন্ধ করতে হয় সেটাও জানি। এখন নিজের বাকওয়াস বন্ধ করো আর এগুলো সুন্দর করে নিয়ে যাও।
আব্রাহাম আর কিছু না বলে আইরাতের হাতে সেই লাভ সেপ বেলুন গুলো ধরিয়ে দিলো আর এত্তো বড়ো এক টেডিবিয়ার আইরাতের ওপর দিয়ে দিলো। টেডিবিয়ার ঠিকঠাক সামলাতে না পেরে আইরাত কয়েক কদম পিছিয়ে গেলো আর বিরক্তি নিয়ে দাঁড়িয়ে রইলো। আব্রাহাম আইরাতের দিকে এগিয়ে এসে টুক করে আইরাতের গালে চুমু বসিয়ে দিলো। তাতে তো আইরাত অবাকের ওপর অবাক। আইরাত চোখ পাকিয়ে আব্রাহামের দিকে তাকিয়ে আছে।
আব্রাহাম;; হেই বেইবি এভাবে তাকিয়ে থেকো না তো I know that i am too much handsome.. (একটু ভাব নিয়ে)
আইরাতের মেজাজ গেলো আরো চটে, আইরাত আর কিছু না বলে এক ঝটকা মেরে পিছন ফিরে ধুম ধাম পা ফেলে চলে গেলো। আইরাতের এভাবে ঝটকা মারাতে আইরাতের চুলগুলোর বারি লাগে আব্রাহামের মুখে। আইরাত যাচ্ছে তাকে দেখে পুরো বাচ্চা মনে হচ্ছে। আব্রাহাম আইরাতের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে হেসে ওঠে। আইরাত ওপরে চলে গেলে আব্রাহামও গাড়িতে ওঠে সেখান থেকে চলে আসে। আইরাত মুখ-মন্ডলে একছাপ বিরক্তি নিয়ে ওপরে নিজের ঘরের সামনে এসে পরলো। কলিংবেল চাপার জন্য হাত বাড়ালে তার আগেই নিপা এসে দরজা খুলে দেয়। সামনে আইরাতকে এতো গুলো বেলুন আর এতো বড়ো টেডিবিয়ার নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে রাত্রি নিপা সবাই অবাক। কিন্তু কেউ কিছু বলছে না। সবার মাঝে এখন সাইলেন্ট মুড বিদ্ধমান। এভাবে কয়েক মিনিট সবাই চুপচাপ থাকার পর রাত্রি বিছানা থেকে সোজা দৌড়ে আইরাতের সামনে এসে তার ওপর থেকে টেডিবিয়ার সরিয়ে তাকে জড়িয়ে ধরে। রাত্রির এমন কান্ডে আইরাত আরো একদফা অবাক।
রাত্রি;; Thank you Thank you Thank you sooo much বেবিজান।
আইরাত;; ________________ (অবাক হয়ে কপাল কুচকে রাত্রির দিকে তাকিয়ে আছে)
রাত্রি;; তোর মনে ছিলো বেবিজান।
আইরাত মনে মনে;; এই কি পাগল হলো নাকি আর এভাবে থ্যাংকস্ দিচ্ছে কেন।
রাত্রি;; এতো গুলো জিনিস এনেছিস তুই ওয়াও বেবি থ্যাংক ইউ।
আইরাত;; না মানে..
রাত্রি;; দেখেছিস আইরুর ঠিকই মনে আছে আমার বার্থডের কথা। আজ যে আমার বার্থডে তা মনে রেখেই এতো গুলো জিনিস আনতে গিয়েছিলো এতো সকাল সকাল। আর তুই দেখ ভুলাক্কার কাহি কি। তোর কিছুই মনে নেই (নিপার দিকে তাকিয়ে)।
নিপা;; হয়েছে হয়েছে।
আইরাত;; হ্যাঁ হ্যাঁ, সেটাই আরকি হ্যাঁ সেটাই। তো তোর বার্থডে আর আ আমি মনে রাখবো না তা কি করে হয় বল। (জোড় পূর্বক হেসে) নে নে এগুলো ধর।
আজ রাত্রির জন্মদিন কিন্তু সত্যি বলতে তা নিপা আইরাতের কারোরই খেয়াল ছিলো না। নিপা & রাত্রি যখন ঘুম থেকে ওঠে তখন আইরাতকে পাশে না দেখে ভাবে যে সে ওয়াসরুমে হয়তো। কিন্তু আইরাত যখন বাইরে থেকে এলো এবং হাতে এতো কিছু তখন রাত্রি ভাবলো যে তার যে জন্মদিন তা আইরাতের মনে ছিলো এবং তার জন্যই এগুলো নিয়ে এসেছে। এখন আইরাতই বা আর কি বলবে। সে সত্যি কথা বলে রাত্রির মন খারাপ করে দিয়ে চায় না। আর আব্রাহামের কথা বললে তার নিজেরই প্রবলেম হবে তাই যে যা ভাবছে তাই নিয়েই থাকুক।
রাত্রি অনেক বেশি খুশি হয়ে সেগুলো হাতে নিয়ে রুমের ভিতরে চলে গেলো। আইরাত রাত্রি কে দেখে হাসছে আর ভাবছে যে “মেয়েটা কতো সিম্পল, আর সহজ-সরল মনের”। আর কথা না বাড়িয়ে সেগুলো কে রেখে দিয়ে তারা তিনজনেই রেডি হয়ে বাইরে চলে গেলো কারণ আজকে তাদের আরো একটা বিয়ের প্লেন করতে হবে। তবে এটা এক নেতার মেয়ের বিয়ে।
।
।
।
।
।
।
আব্রাহাম গাড়ি নিয়ে তার বাসায় চলে এলো। গার্ডকে গাড়ি পার্ক করতে বলে নিজে বাসার ভিতরে চলে এলো। এসেই দেখে অয়ন টিভিতে ফুটবল মেচ দেখছে আর খাচ্ছে। আব্রাহাম অয়নের পিঠে মারে এক চাপড়। তাতে অয়ন চমকে উঠে। আব্রাহাম তাকিয়ে দেখে অয়ন কেক খাচ্ছিলো আর তার এভাবে চাপড় দেওয়াতে কেক মুখের বাইরে লেগে যায়। আব্রাহাম তা দেখে মুখে হাত রেখে হেসে দেয়। অয়ন মগার মতো করে আব্রাহামের দিকে তাকিয়ে থাকে।
অয়ন;; এই তুই এটা কি করলি?!
আব্রাহাম;; কি করেছি।
অয়ন;; না না আব্রাহাম চৌধুরী আপনি কি কিছু করতে পারেন নাকি,
আব্রাহাম হাসতে হাসতে সোফায় বসে পরলো। আর অয়ন টিসু এনে মুখ মুছে ফেললো। আব্রাহাম অনেক কষ্টে হাসি থামিয়ে অয়নকে বলে উঠলো।
আব্রাহাম;; আচ্ছা শোন, একটু পর রেডি হয়ে যাস।
অয়ন;; কেন?
আব্রাহাম; আমরা বিয়েতে যাবো।
অয়ন;; কিন্তু কার?
আব্রাহাম;; নেতা মিজান ইসলামের মেয়ের বিয়ে। আর আমাদের স্পেশাল ভাবে ডেকেছেন উনি।
অয়ন;; আমি না বুঝি না তোর আসলে হয়েছে কি ভাই। মানে তুই তো কখনোই কারো বিয়ের ফাংশন এটেন্ড করিস না তাহলে?
আব্রাহাম;; কিন্তু এখন করবো। আর মিজান ইসলাম নিজে আমার অফিসে এসে ইনভিটেশন দিয়ে গেছেন, আর এতো করে যখন বলেছেন তাহলে না কিভাবে করি বল।
অয়ন;; হুমম তাও ঠিক।
আব্রাহাম;; আচ্ছা শোন তুই জলদি তৈরি হয়ে নিস কেমন। আর বাপি কোথায়?
অয়ন;; বাপি তো আশ্রমে গিয়েছে। বাসায় নাকি ভালো লাগছিলো না তাই বাপি কে আমি রাশেদের সাথে আশ্রমে পাঠিয়ে দিয়েছি।
আব্রাহাম;; যাক ভালো করেছিস। আমি ওপরে গেলাম।
আব্রাহাম & অয়ন বেশ খানিক সময় পর রেডি হয়ে নিচে নেমে পরে। আব্রাহাম আজ পরেছে সাদা পেন্টের সাথে ব্রাউন কালারের শার্ট যা বডিতে দারুন মানিয়েছে, হাতে ব্লেক কালারের ঘড়ি, আর সেই ক্রাশ খাওয়া মুখখানা। আর অয়ন ব্লেক পেন্ট আর খয়েরি কালারের শার্ট। অয়ন আব্রাহামকে দেখে বলে ফেলে..
অয়ন;; বাবাহ, আজ সাদা-কালো রেখে ব্রাউন, বেপার কি?
আব্রাহাম;; তোর মাথা ছাগল চল তাড়াতাড়ি।
অয়ন;; যাচ্ছি তো।
অয়ন & আব্রাহাম গাড়িতে ওঠে পরে। গাড়ি উদ্যম গতিতে যেতে থাকে।
..
..
..
..
আইরাত;; এই এই তোরা তাড়াতাড়ি কর, সময় কিন্তু আর বেশি নেই। সময়ের সাথে সাথে হাত-পা চালা। সবাই চলে এলো বলে।
কাজ প্রায় শেষ এখন শুধু আইরাত সবকিছু ঘুরে ঘুরে দেখছে যে সবকিছু একদম ঠিক আছে কিনা। হ্যাঁ, আইরাত আর অন্য কারো না বরং এই মিজান ইসলামের মেয়ের বিয়ের প্লেনিং করতেই এসেছে আর আব্রাহাম কেউ এখানে চিফ গেস্ট হিসেবে ডাকা হয়েছে। আর আব্রাহাম আগে থেকেই জানে যে আইরাত এই বিয়ের প্লেনার তাই এতো করে এই বিয়েতে যাওয়া নয়তো অয়নের কথাই ঠিক ছিলো যে আব্রাহাম সহজে কারো বিয়েতে যায় না যদি যেটা নিজের কাছের কারো বিয়ে বা দরকারে না হয়। আর আজ যেহেতু আইরাত এই বিয়ের সবকিছুই নিজের হাতে সামলাচ্ছে তাহলে আব্রাহাম কি করে না যেয়ে থাকতে পারে। সব কাজ টাজ শেষ করে আইরাত কিছুটা আরামের নিঃশ্বাস ছাড়ে। কিন্তু নিপা আর রাত্রির আরো কিছু কাজ বাকি থাকায় তারা করেই যাচ্ছে। ধীরে ধীরে মানুষের আনাগোনাও বেড়ে চলেছে। আফটার অল বিয়ে বাড়ি বলে কথা।
এদিকে প্রায় আধা ঘন্টা পর আব্রাহাম অয়ন বিয়ে বাড়ির সামনে এসে গাড়ি থামালো। আব্রাহামকে আসতে দেখেই মিজান ইসলাম তড়িঘড়ি করে আব্রাহামের সামনে এসে পরলেন। তারা সবাই আব্রাহামকে উষ্ণ অভিনন্দন জানালেন, এতো বড়ো বিজনেস আইকন। আব্রাহাম অয়নকে গাড়ি বাইরে পার্ক করে রেখে আসতে বলে তারপর নিজে ভিতরে চলে যায়। আব্রাহাম বেশ ভিতরে গেলে আইরাত তাকে দেখতে পায়। আইরাত মনের আনন্দে ঠান্ডা পানি খাচ্ছিলো কিন্তু আব্রাহামকে দেখে কাশি উঠে পরে। মিজান ইসলাম তার সাথে অনেক হেসে খেলে কথা বলছে আব্রাহামও তাই। দেখে মনে হচ্ছে তাদের মাঝে সম্পর্ক অনেক ভালো। কিন্তু আইরাত খেয়াল করলো যে আশেপাশের সবগুলো মেয়েই কেমন ফাটা চোখে আব্রাহামের দিকে তাকিয়ে আছে। নির্লজ্জ সব কটা মেয়ে। পরপুরুষ দেখলেই কি এভাবে তাকিয়ে থাকতে হয় নাকি। মনে হচ্ছে এখনই আব্রাহামকে গিলে খাবে। আইরাত রাগ করে টেবিলের ওপর অনেক জোড়ে পানির বোতল টা রেখে দেয়।
আইরাত;; এই লেজ ছাড়া বাদর এখানে এলো কি করে। আর এখানেই বা তার কি কাজ। আমি যতদুর জানি উনি বিয়ে শাদিতে তেমন যান না তাহলে এখন এখানে কি করছে। হে আল্লাহ তুমি আমাকে বাচাও। আমি যেখানে যাই এই হতোচ্ছাড়া টারও কি সেখানেই যেতে হয়। এর থেকে সামধানে থাকতে হবে, একবার দেখে ফেললে আমি শেষ।
আইরাত এই কথা বলে সেখানে থেকে উঠে পরে চলে যায়।
রাত্রি পরে আছে এতো গুলো ফুল নিয়ে। আজ সারাদিন তার ফুলের ঝাকা বয়ে বয়েই বেড়াতে হয়েছে। একগাদা ফুল। কখন যে এগুলো বয়ে আনা শেষ হবে। রাত্রি এগুলোই একমনে বিরবির করে যাচ্ছে আর ফুলের ঝাকা নিয়ে যাচ্ছে। ফুলের ঝাকাতে অনেক গুলো ফুল থাকায় আর ঝাকার সাইজ অনেক বড়ো হওয়াতে নিজের সামনে কিছুই দেখতে পারছে না রাত্রি। শুধু কোনরকমে হেলে দুলে এগিয়ে যাচ্ছে।
অয়নও গাড়ি পার্ক করে গাড়ির চাবি হাতের আঙুলে ঘুড়িয়ে ঘুড়িয়ে আর সিটি বাজিয়ে সামনে যাচ্ছে। হঠাৎ করেই তার ফোনে একটা এসএমএস আসে তাই সে তার ফোন দেখতে দেখতে এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু কিছুটা এগিয়ে যেতেই কিছু একটার সাথে বারি খেয়ে সোজা নিচে পরে যায়। সে আর কেউ না রাত্রিই ছিলো। এভাবে আকষ্মিক কান্ডে তারা হুমড়ি খেয়ে একে ওপরের ওপর পরে যায়। ওপর থেকে সবগুলো ফুল এসে সোজা তাদের ওপর পরে। রাত্রি অয়নের দিকে, অয়ন রাত্রির দিকে তাকিয়ে আছে। দুজনই কোন কিছুইর আগামাথা বুঝতে পারছে না কি থেকে কি হয়ে গেলো। দুজনই চুপ করে তাকিয়ে আছে। হঠাৎ করেই অয়নের হুস আসে এবং তাকে এমন একটা অবস্থাতে খুজে পায়। অয়ন দ্রুত করে রাত্রির ওপর থেকে সরে যায়। রাত্রিরও এতোক্ষনে হুস আসে এবং নিজের কোমড়ে বেশ ব্যাথা অনুভব করে। তাই সে চিল্লিয়ে ওঠে। অয়ন সিচুয়েশন বুজতে পেরে ওঠার জন্য রাত্রির দিকে নিজের একহাত বাড়িয়ে দেয়। রাত্রি তার দিকে তাকিয়ে থেকে আবার রাগ নিয়ে নিজে একাই উঠে পরে। একহাত কোমড়ে দিয়ে বলে ওঠে…
রাত্রি;; ও আল্লাহ গো,, ওওও মায়ায়া রেএএ আমার কোমড় টা শেষ। ওইই কানা গরু,,
রাত্রির এমন অদ্ভুত ডাকে অয়ন তার দিকে তাকায়।
রাত্রি;; এভাবে তাকিয়ে লাভ নেই আপনাকেই বলছি। বলি যে চোখ দুটো কোথায় রাখেন হুমম। দেখে শুনে হাটতে পারেন না নাকি।
অয়ন;; এই যে মিস এক্সকিউজ মি. আপনি আমাকে বলছেন কেন। আপনি আপনার চোখ কোথায় রাখেন আপনি নিজেও তো বেখেয়ালি ভাবে হাটছিলেন নাকি।
রাত্রি;; আপনি না আসলেই কানা আপনি দেখেন নি যে আমার সামনে কতো বড়ো একটা ফুলের ঝাকা ছিলো তারপরেও কিভাবে দেখবো।
অয়ন;; তাহলে তো ভুলটা অবশ্যই আপনার।
রাত্রি;; এহহহ, মামার বাড়ির আবদার বললেই হলো নাকি। আপনি একটা কানা।
অয়ন;; হ্যাঁ আপনি কতটুকু ভালো তা দেখলেই বুঝা যায়। স্টুপিড কোথাকার।
রাত্রি;; আপনার সাথে কথা বলে নিজের সময় নষ্ট করার কোন মানেই হয় না।
অয়ন;; তো আপনার সাথে কথা বলতে কে চেয়েছে। যান যান।
রাত্রি;; কিরে বাবা পাগল ছাগল সব কোথা থেকে উঠে আসে।
অয়ন;; কি আব….
অয়নকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই রাত্রি অন্য আরো একটা ফুলের ঝাকা নিয়ে চলে গেলো। আর অয়ন বেকুবের মতো করে তাকিয়ে রইলো।
অন্যদিকে আইরাত শুধু পালিয়ে বেড়াচ্ছে। যে কোন ভাবেই যেন সে আব্রাহামের সামনে না পরে তাহলে আর নিস্তার নেই। হাতে থাকা ব্যাগ দিয়ে নিজের মুখ ঢেকে এগিয়ে যাচ্ছে সে। আর বার বার নিজের পিছন ফিরে তাকাচ্ছে। এভাবে যেতে যেতেই হুট করেই কারো সাথে অনেক জোড়ে একটা বারি খায়। মাথায় হাত দিয়ে নিচ দিকে তাকিয়ে থাকলে, তার হাত শক্ত করে ধরে টেনে অন্ধকার এক রুমে নিয়ে যায়। সেই ব্যাক্তি টি কে তা দেখারও সময় টুকু পায় না সে। তার আগেই রুমে টেনে নিয়ে দেয়ালের সাথে দুহাত জোড়ে করে চেপে ধরে আইরাতের।
।
।
।
।
।
।
।
।
।
।
💙💙চলবে~~~~~
#Gangstar In Love🖤🥀___A psycho love story””
#Writer; Tamanna Islam
#part__ 40
🌿🌿..
..
..
..
..
..
সেই লোকটির মুখ দেখার আগেই আইরাতের হাত ধরে এক অন্ধকার রুমে নিয়ে গিয়ে দেওয়ালের সাথে চেপে ধরে। রুমটা একদম ঘুটঘুটে অন্ধকারে ভরা। আইরাত চিৎকার দিতে ধরলে লোকটি এক হাত দিয়ে তার দুহাত এবং অন্য হাত দিয়ে মুখ চেপে ধরে। আইরাত শুধু বুঝতে পারছে যে তার সামনে ঠিক খাম্বার মতো একটা লম্বাচওড়া লোক দাঁড়িয়ে আছে। মুখ চেপে রাখার ফলে সে শুধু উমম উমম করে যাচ্ছে। এমন অন্ধকার ঘরে অচেনা এক লোক তাকে এভাবে ধরে আছে। আইরাতের ভয়ে ঘাম ছুটে যাচ্ছে। কিন্তু এবার আইরাত নিজের মুখের ওপর গরম নিঃশ্বাস পরার আভাস পেলো। লোকটি যে ক্রমশ তার মুখের দিকে এগিয়ে আসছে তা আইরাত হারে হারে টের পাচ্ছে। লোকটি একদম তার কাছে চলে এসেছে। আইরাতের গালের সাথে নিজের গাল লাগিয়ে দেয়। যার ফলে লোকটির গালে থাকা চাপ দাড়ি আইরাতের গালের সাথে ঘষা খায়। এতে আইরাতের কিছুটা সন্দেহ জাগে। কানের কাছে গিয়ে লোকটি বলে ওঠে….
“” যতই পালাই পালাই করো না কেন, তুমি এই জনমে আর পালাতে পারবে না আমার কাছ থেকে। তুমি ভাবলে কি করে যে আমি যেহেতু এখানে এসেছি তাহলে তোমাকে না ধরেই কি করে ছেড়ে দিবো, আমার কাছ থেকে তোমার নিস্তার নেই বেবিগার্ল “”
আইরাত এবার চোখ বড়ো বড়ো করে তাকায়। কারণ কন্ঠ টা তার খুবই চেনা। আর এইভাবে কথা মাত্র একজনই বলতে পারে সে আব্রাহাম। হ্যাঁ আব্রাহাম। আইরাত এবার রেগে কিছু একটা বলবে তার আগেই আব্রাহাম আইরাতের ঘাড়ে নিজের নাক-মুখ ডুবিয়ে দিলো। আইরাতের শরীরে কেমন যেন একটা অনুভব হলো। গায়ের শিরদাঁড়া গুলো কেমন চমকে উঠলো। পুরো জমে গেছে সে, চেয়েও কিছু করতে পারছে না কারণ সে সম্পূর্ণভাবে আব্রাহামের হাতে বন্ধী। আব্রাহাম নিজের চোখ বন্ধ করে পরম আবেশে আইরাতের গলাতে নাক ঘষে যাচ্ছে, আব্রাহাম এবার আইরাতের মুখ থেকে হাত সরিয়ে নিয়ে তার পেট আর কোমড় জড়িয়ে ধরলো। আইরাত তার হাত মুচড়ামুচড়ি করতে শুরু করলে আব্রাহাম তাকে আরও শক্ত করে চেপে ধরে। এবং আইরাতের গায়ের সুগন্ধ নিতে ব্যাস্ত হয়ে পরে।
আব্রাহাম;; আচ্ছা কি আছে এমন তোমার মাঝে!
আইরাত;;______________
আব্রাহাম;; তোমার এই ঘ্রাণ আমি কতো করে মিস করেছি জানো তুমি। এলকোহল & মাদকদ্রব্য থেকেও বেশি নেশাক্ত তোমার শরীরের এই ঘ্রাণ।
আইরাত;; প্লিপ্লিজ ছাছাড়ুনন, আম আমার দদদম বন্ধ হয়ে আসছে।
আব্রাহাম;; আহা একদম না।
আব্রাহাম নেশাগ্রস্ত ভাবে আইরাতের গলাতে এখনো মুখ ডুবিয়ে দিয়ে আছেই। আইরাতের তো জীবন যায় যায় অবস্থা সহ্য করতে পারছে না আর এইসব। আব্রাহাম তার মুখ খানা আর একটু ঘষা দিলে তার খোচাখোচা দাড়ি গুলো আইরাতের গলাতে বিধে পরে। এবার আইরাত আব্রাহামকে ধাক্কা দিয়ে দূরে সরিয়ে দিয়ে খিলখিল করে হেসে ওঠে। সে তার গলাতে হাত দিয়ে এখনো হেসেই চলেছে। হঠাৎ ঘরের বাতি জ্বলে উঠে। আব্রাহাম চোখ ছোট ছোট করে আইরাতের দিকে তাকিয়ে থাকে।
আইরাত;; আমার অনেক সুড়সুড়ি লাগে তো। (হাসতে হাসতে)
আব্রাহাম;; কবে বড়ো হবে তুমি!
আইরাত;; এই আমি যথেষ্ট বড়ো আছি, কিন্তু আমার প্রচুর সুড়সুড়ি আছে।
আব্রাহাম;; হ্যাঁ তা আমি খুব ভালোভাবেই জানি।
আইরাত;; এই দাঁড়ান, আপনি এতো অসভ্য কেন। এভাবে একটা মেয়েকে টেনে হিচড়ে এমন অন্ধকার একটা রুমে নিয়ে এসে এমন অসভ্যতামি করছেন কেন!
আব্রাহাম;; আচ্ছা জি! এখন নিজের বউয়ের সাথে রোমেন্স করা বুঝি অসভ্যতামি। (আইরাতের দিকে এগিয়ে এগিয়ে)
আইরাত;; এই সেখানেই থামুন একদম আগে এগুবেন না বলছি। তা না হলে….
আব্রাহাম;; তা না হলে কি?
আইরাত;; আব..আমি আমি চিল্লাবো।
আব্রাহাম;; আরে এই বেপার আচ্ছা চিল্লাও, যতো খুশি চিল্লাও। হেল্প লাগলে বলো আমিও তোমার সাথে একটু চিল্লাই বিকজ তোমার যে গলার আওয়াজ কেউই শুনবে না।
আইরাত;; কিইইই!
আব্রাহাম;; জ্বিইইইই,, আর তুমি হয়তো ভুলে যাচ্ছো যে এইটা বিয়ে বাড়ি গানের সাউন্ড শুনেছো, তোমার কি মনে হয় যে আমি বাদে অন্য কেউ তোমার গলার আওয়াজ শুনতে পারবে জান।
আইরাত;; দেখুন খুব খারাপ হয়ে যাচ্ছে কিন্তু আমাকে যেতে দিন।
আব্রাহাম;; আচ্ছা যাও।
আইরাত;; সত্যি!
আব্রাহাম;; হুমম হুমম সত্যি You can go.. (দুহাত ভাজ করে একপাশে দাঁড়িয়ে)
আইরাতের কেমন যেন ঘোলাটে লাগছে কিন্তু তবুও গুটি গুটি পায়ে সে দরজার কাছে যেতে থাকে। দরজার একদম কাছে গিয়ে বাইরে এক পা দিতে গেলেই সাথে সাথে আব্রাহাম আইরাতের হাত ধরে ফেলে। এতে আইরাত কিছুটা চমকে উঠে। আব্রাহাম তাকে জোড়ে টান দিয়ে পিছন থেকে আবার জড়িয়ে ধরে,, আইরাতের কাধে নিজের থুতা রেখে দেয়। পেট জড়িয়ে ধরে আবার বলে উঠে…
আব্রাহাম;; এখন না হয় ছেড়ে দিলাম কিন্তু পরে কিভাবে বাঁঁচবে আমার কাছ থেকে জানপাখি।
আইরাত কিছু না বলে অন্যদিকে তাকিয়ে থাকে কারণ এর উত্তর জানা নেই তার। আইরাত খেয়াল করে যে ধীরে ধীরে আব্রাহামের হাত ঢিলা হয়ে আসছে আইরাত সেই সুযোগ বুঝে আব্রাহামের হাত সরিয়ে এক দৌড়ে সেখান থেকে চলে আসে। আইরাত দৌড়ে চলে গেলে আব্রাহাম এক হাত পকেটে রেখে দেওয়ালের সাথে হেলান দিয়ে সেদিকে তাকিয়ে থাকে। আইরাত জলদি করে হলরুমে চলে আসে। হলরুমে আসতেই দেখে নিপা আর রাত্রি তার জন্য বসে অপেক্ষা করছে। আইরাতকে এভাবে হাপিয়ে হাপিয়ে আসতে দেখে নিপা তার দিকে এগিয়ে যায়।
নিপা;; কিরে তুই এভাবে হাপাচ্ছিস কেন আর কোথায় গিয়েছিলি তুই? আমি আর রাত্রি সেই কখন থেকে খুঁজে চলেছি তোকে।
আইরাত;; হুমম।
নিপা;; কি হুমম, কোথায় ছিলি?
আইরাত;; আরে শ্বাস তো নিতে দে মেরি মা।
রাত্রি;; আচ্ছা শোন মিজান আংকেল তাড়াতাড়ি আমাদের যেতে বললো, চল কাজি এসে পরেছে বিয়ে পড়ানো শুরু করে দিয়েছে তো।
নিপা;; হ্যাঁ আসছি, আইরু চল।
আইরাত;; হুমম।
আইরাত তার আশেপাশে তাকিয়ে তাকিয়ে খুব সাবধানে বিয়ের মন্ডপের কাছে চলে যায়। তার পাশেই রাত্রি দাঁড়িয়ে থাকে। খুব সুন্দর করে সবকিছু এবং বিয়ের পেন্ডেল টা ডেকোরেট করা হয়েছে। একদম চোখ ধাধানো সুন্দর, যে কারোরই নজর কেড়ে নিবে। একপাশে কণে কে বসানো হয়েছে ওপরপাশে বরকে। আর বাকি সবাই তাদের পাশে দাঁড়িয়ে আছে। কাজি ধীরে ধীরে বিয়ে পড়ানো শুরু করলো। আইরাত এই সবকিছুই অনেক খেয়াল করে দেখছে। মূলত এখন তার এবং আব্রাহামের বিয়ের কথা মনে পরছে। ঠিক এভাবেই ধুম ধাম করে তাদের বিয়ে টাও হয়েছিলো কিন্তু তাতে আইরাতের কোন মতামত ছিলো না। কাজি যখন কণে কে কবুল বলতে বললো তখন আইরাতকে জোড় করে কবুল বলানোর দৃশ্যটা তার চোখের দেয়ালে ভেসে ওঠে। চোখজোড়া না চাইলেও অশ্রুতে ভিজে উঠলো। ফেলফেল করে তাকিয়ে থাকে আইরাত। এরই মাঝে আব্রাহাম আইরাতের ঠিক পিছনে এসে দাড়িয়ে পরে। আব্রাহাম দেখে যে আইরাত এক নয়নে বিয়ের আসরের দিয়ে তাকিয়ে আছে, চোখে তার নোনাজল চিকচিক করছে। আব্রাহাম বেশ বুঝতে পারলো যে আইরাতের এখন তার বিয়ের কথাগুলোই মনে ভাসছে। আব্রাহাম আইরাতের হাত চেপে ধরে সেখান থেকে নিয়ে গিয়ে অন্যপাশে দাঁড়িয়ে পরে। আইরাত ছোটার জন্য হাত মুচড়াচ্ছে। আব্রাহাম তখন বলে ওঠে..
আব্রাহাম;; এখানে অন্তত কোনরকম কোন সিন ক্রিয়েট করতে না চাইলে চুপচাপ এভাবেই দাঁড়িয়ে থাকো নয়তো তুমি বেশ ভালো করেই জানো যে আমি কি কি করতে পারি।
আইরাত;; আপনি আসলেই একটা ফালতু, হাত ছাড়ুন আমার।
আব্রাহাম;; Just keep your mouth shut baby!!
আইরাত;; উফফ অসহ্য,, আমি..
আব্রাহাম;; ভালোবাসি তোমায়।
আইরাত;; 😒
আইরাত বাধ্য হয়ে আব্রাহামের সাথে সেখানেই দাড়িয়ে থাকে। কিন্তু ওদিকে রাত্রির এতো টাই বিয়ের দিকে নজর ছিলো যে পাশ থেকে যে আইরাত সরে গেছে তা সে খেয়ালই করেনি। আইরাত চলে গেলে কিছুক্ষণ পর সেখানে অয়ন এসে দাড়িয়ে পরে। রাত্রি তো তার পাশে তাকায় নি পর্যন্ত, সে ভেবেছে যে তার পাশে এখনো আইরাতই আছে। তাই রাত্রি বলে ওঠে..
রাত্রি;; বেবিজান, দেখ দেখ সবকিছু কেমন সুন্দর লাগছে। আর দেখ না বর কেমন চোখে কণের দিকে তাকিয়ে আছে,, ইশশশস কি রোমান্টিক রে বেবি। (অয়নের শার্ট ধরে টেনে)
রাত্রি তো নিজের মতো করে বকবক করেই চলেছে, কিন্তু অয়ন তার পাশে তাকিয়ে দেখে যে একটু আগে যে মেয়ের ওপর পরে গিয়েছিলো এবং ঝগড়া হয়েছিলো এটা আর কেউ না সেই মেয়েটিই, অয়ন রাত্রির দিক থেকে চোখ সরিয়ে তার হাতের দিকে তাকায়। দেখে যে রাত্রি বাচ্চাদের মতো করে অয়নের শার্টের হাতা ধরে টানছে আর বর-কণের দিকে তাকিয়ে এগুলো বলে যাচ্ছে। অয়ন কিছু বলছে না শুধু রাত্রির দিকে তাকিয়ে আছে। ওপরপাশ থেকে কোন সাড়াশব্দ না আসাতে রাত্রি আবারও শার্ট টেনে বলে ওঠে…
রাত্রি;; কিরে কিছু বলছিস না যে, তুই তো নিজেই সবকিছু করেছিস তাহলে কিছু তো বল!
________________
রাত্রি;; বোবা হয়ে গেলি নাকি…..
রাত্রি এবার তার পাশে তাকায়, পাশে তাকাতেই তার তো আক্কেলগুড়ুম অবস্থা। অয়ন তার দিকে চোখ রাঙিয়ে তাকিয়ে আছে। রাত্রি ডেবডেব করে তাকিয়ে আছে হাবলাকান্তের মতো করে, অয়ন তার হাতের দিকে তাকালে রাত্রিও অয়নের চোখ অনুসরণ করে তার হাতের দিকে তাকায় দেখে যে শার্টের হাতা খামছে ধরে আছে। রাত্রি তাড়াতাড়ি করে তার হাত সরিয়ে ফেলে। আসলে সে ভেবেছিলো যে তা হয়তো আইরাতের জামার হাতা কিন্তু তাকিয়ে দেখে তা পুরোই উলটা। রাত্রি শুকনো একটা ঢোক গিলে। অয়ন কিছু বলে না শুধু তাকিয়ে থাকে। তার রাত্রির এই মুখের হাল দেখে ভীষণ হাসি পাচ্ছে কিন্তু এখন হাসা যাবে না। রাত্রি তার হাত দিয়ে মুখ ঢাকার চেষ্টা করছে আর মনে মনে নিজেকেই একশ একটা গালি দিচ্ছে। সেখানেই কিছুক্ষন রাত্রি আর অয়ন দাঁড়িয়ে থাকে কিন্তু আড়চোখে একে ওপরকে দেখেই যাচ্ছে। সুযোগ বুঝে রাত্রি সেখান থেকে কেটে পরে। যেনো সে নিজের প্রাণে বাঁচলো। রাত্রির এভাবে চলে যেতেই অয়ন হেসে ওঠে।
অয়ন;; হাহাহা😅, মেয়েটা পুরো পাগল।
ওদিকে আইরাত খুব কষ্টে নিজের কাছ থেকে আব্রাহামকে ছাড়িয়ে নিয়ে চলে আসে।
বিয়ে-শাদি সবকিছু শেষ হলে নিপা-আইরাত-রাত্রি চলে আসে। তারা তিনজন বাইরে বের হয়ে নিজেদের গাড়িতে ওঠে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। কিন্তু আব্রাহাম তো আর জানে না যে আইরাত বিয়ে বাড়ি থেকে চলে এসেছে পরে সে জানতে পারে যে তারা চলে গেছে। এখন কেমন যেন আব্রাহামের কাছে সবকিছু বিরক্তিকর ঠেকছে। তাই আব্রাহাম কোন রকমে মিজান ইসলামের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে আসে। বাইরে বের হতেই দুটো কালো গাড়ি আব্রাহামের চোখে পরে। আব্রাহাম সেদিকে সন্দেহের দৃষ্টিতে তাকায়। কিছুক্ষন পর গাড়ি গুলোকে চলে যেতে দেখলে আব্রাহামের আর বুঝতে বাকি রইলো না যে সেগুলো আর কেউ না বরং দুলালের চামচারা ছিলো যারা আইরাতকে ফলো করছে। আব্রাহামের মাথায় আগুন ধরে যায়। আব্রাহাম আর এক মূহুর্ত দেরি না করে অয়নকে সাথে নিয়ে গিয়ে সেই গাড়ি গুলোর পিছু করতে থাকে। অনেক সময় গাড়ির পিছু করার পর আব্রাহাম তার গাড়ি থেকে তার রিভলবারটা বের করে। খুব সুক্ষ্মভাবে একটা গাড়ির পিছনের দু চাকাতে শুট করে দেয়। ফলে গাড়ি ব্রেক ফেইল করে একটা বড়োসড় খাম্বার সাথে বারি খায়। সামনের ডিকি থেকে ধোয়া উড়তে থাকে। গাড়ি বেশ ভালোই ডেমেজ হয়ে যায়। কিন্তু তবুও গাড়ি থেকে কেউ নামছে না দেখে আব্রাহাম নিজেই গাড়ি থেকে নেমে পরে তাদের গাড়ির সামনে চলে যায়। গিয়ে দেখে যে যেই লোকটা ড্রাইভ করছিলো তার মাথাতে গাড়ির ফ্রোন্ট গ্লাস ভেংে একদম মাথার ভিতরে ঢুকে গেছে, রক্ত ঝরে পরছে। ঠিক সেই সময়ই কেউ একজন তার হাত ধরে কোন রকমে গাড়ি থেকে নেমে পরে। তার হাতেও কাচ বিধে আছে যা থেকে অনরগল রক্ত ঝরছে। সামনে তাকিয়ে আব্রাহামকে দেখে দৌড়ে চলে যেতে চাইলে পিছন থেকে অয়ন এসে তাকে ধরে ফেলে। ঘাড় ধরে নিয়ে আব্রাহামের সামনে দাড় করিয়ে দেয়। আব্রাহাম শান্ত গলাতেই বলে ওঠে…
আব্রাহাম;; কেন এখানে এসেছিস?
__________________
আব্রাহাম;; দেখ সত্যি সত্যি সবকিছু বলে দে তাহলে প্রাণে বেঁচে যাবি নয়তো তোর জীবন আজ এখানেই ইন্না-লিল্লাহ। ( লোকটির মাথায় রিভলবার তাক করে)
লোকটি;;; না না না আমি বলছি, বলছি। আমি, আমি দুলালের পাঠানো লোক, তার কথাতেই কাজ করি। তিনি আইরাত মেডামের ওপর নজর রাখতে বলেছিলেন তাই তার পিছু করতে করতে এসে পরেছি।
আব্রাহামের রাগে মাথা ফেটে যাচ্ছে। রাগ সামলেতে না পেরে আব্রাহাম লোকটির অন্য আরেক হাতেও শুট করে দিলো। লোকটি চিল্লিয়ে ওঠে। আব্রাহাম লোকটির কাছে গিয়ে তার শার্টের কলার ধরে বলে ওঠে…
আব্রাহাম;; শোন তোকে আধা মরা অবস্থায় ছেড়ে দিলাম। এখন তুই তোর দুলাল বসকে গিয়ে বলিস যে যদি নিজের জীবনের প্রতি তার বিন্দুমাত্র মায়া থেকে থাকে তাহলে যেন আমার আইরাতের দিক থেকে ওর নজর সরিয়ে ফেলে নয়তো দিন দুপুরে তাকে কুকুরের মৃত্যু মরতে হবে। নে এবার চোখের সামনে থেকে দূর হো।
আব্রাহাম লোকটিকে ছেড়ে দিলে লোকটি প্রানপণে দৌড় লাগিয়ে চলে যায়। আব্রাহাম তার রিভলবার পকেটে ঢুকিয়ে গাড়িতে ওঠে পরে।
অয়ন;; দাভাই আমার কিছুই ঠিক লাগছে না, বউমনি কে এতো চোখে চোখে রাখছি আমরা কিন্তু তবুও যদি কিছু গড়বড় হয়ে যায়। আমার মন সায় দিচ্ছে না।
আব্রাহাম;; অয়ন তোর দাভাইয়ের ওপর তোর বিশ্বাস নেই!?
অয়ন;; কিযে বলো না দাভাই আমার নিজের ওপরও ততো টুকু বিশ্বাস নেই যতটা তোমার ওপর আছে।
আব্রাহাম;; তাহলে বেফিকার থাক, কিছুই হবে না। আর দুলাল হাহ্ ও আমার কাছে তুচ্ছ একটা মশার সমান।
অয়ন;; তাহলে দাভাই কেন তুই ওকে একেবারেই শেষ করে দিচ্ছিস না বলতো!?
আব্রাহাম;; That’s the game bro, আসলে কি জানিস সমানে সমানে না মিললে খেলা জমে না, হোক সেটা বন্ধুত্ব বা শত্রুতা। দুলাল ঠিক কার সাথে টক্কর নিতে এসেছে তা সে নিজেও জানে না। তো আমি দেখি ও কতো দূর কি করতে পারে।
অয়ন;; তুই একটা মাস্টার মাইন্ড ভাই, তোর মাথায় কখন কি চলে তা বলা খুবই মুশকিল।
অয়নের কথা আব্রাহাম মুচকি হাসে। ড্রাইভ করে একসময় বাড়ি চলে আসে তারা।
।
।
।
।
।
অন্যদিকে নিপা-আইরাত-রাত্রিও তাদের ফ্লেটে চলে আসে। ফ্রেশ হয়ে তারা খাবার টেবিলে বসে পরে। নিপা তাকিয়ে দেখে রাত্রি আর আইরাত তাদের মতো করে খেয়েই যাচ্ছে। গলা ঝেড়ে হঠাৎ করেই নিপা সংকোচ নিয়ে বলে ওঠে…
নিপা;; আসলে বলছিলাম কি..
আইরাত;; হুমম কি,,
নিপা;; না মানে তোদের সাথে আমার না কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা ছিলো আরকি।
আইরাত;; হুমমম শুনছি তো বলে ফেল।
নিপা;; আসলে আমি না এমন কিছু একটা করতে চাইনি তোদের অনেক দিন আগেই বলে ফেলতে চেয়েছিলাম কিন্তু আমি সেই সুযোগ টাই পায়নি কখনো।
রাত্রি;; সিরিয়াস কিছু একটা মনে হচ্ছে বেপার কিরে?
নিপা;; অনেক বেশি সরি রে তোদের আসলে আমি কিভাবে বলবো কোথা থেকে শুরু করবো কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না।
আইরাত;; নিপু, কি হয়েছে বল তো এবার কিন্তু আমাদের বেশ চিন্তা হচ্ছে। প্লিজ এভাবে ভয় দেখাস না, কি হয়েছে বল।
নিপা;; আগে প্রমিস কর তোরা দুজন যে আমার ওপর রাগ করবি না কোন প্রকার কোন অভিমান করবি না। আর আমাকে মাফ করে দিবি।
রাত্রি;; এগুলো কি বলছিস তুই নিপু বোন হোস তুই আমাদের তুই যত বড়ো ভুলই করে থাকিস না কেন তা আমরা ভুলে যাবো এতে ক্ষমা করার কি আছে প্লিজ সব কিছু খুলে বল আমাদের।
আইরাত;; নিপু প্লিজ বল, ভয় লাগছে এখন কিন্তু।
নিপা;; Actually i am in love with a guy.. (চোখ বন্ধ করে একদমে কথা টা বলে উঠলো)
আইরাত;; হ্যাঁ তো কি হয়েছে….
রাত্রি;; হুমমম।
রাত্রি আর আইরাত দুজনই খাচ্ছিলো আর নিপার কথা শুনছিলো কিন্তু পরমুহূর্তেই তারা খাওয়া থামিয়ে দিলো।এবং মনে পরলো যে নিপা মাত্রই তাদের কি বলেছে। রাত্রি আর আইরাত দুজন একে ওপরে মুখ তাকাতাকি করছে। সাথে সাথেই তারা দুজন চিল্লিয়ে উঠলো।
রাত্রি-আইরাত;; কিইইইইইইইইইইইইইইইইইইইইইইইই!!
নিপা;; হ্যাঁ (মাথা নিচু করে)
আইরাত;; ওও আল্লাহ! মেয়ে বলে কি, নিপু Is it true?!
নিপা;; হুমমম।
রাত্রি;; আল্লাহ গো ক্ষনে ক্ষনে আর কি কি যে শুনতে হবে।
আইরাত;; তো কবে থেকে চলছে এইসব?
নিপা;; বেশি না বেশি না মাত্র ৬ মাস😁।
নিপার কথা শুনে আইরাতের খাওয়া পুরোপুরি থেমেই গেলো মাথায় হাত চলে গেলো তার। আর রাত্রি তো পারছে না এখন তার চেয়ার থেকে উলটে পরে যেতে।
আইরাত;; তুই আমাদের বোন নামে কলংক। ৬-৬ টা মাস যাবত তোর চক্কর চলছে আর আমাদের বলার প্রয়োজনবোধ করিস নি তুই। এমনকি আমরা টের পর্যন্ত পাই নি। তাহলে তুই দেখা করতে যেতিস ফোনে কথা বলতিস তখনও টের পায়নি আমরা। আমরা তো ভাবতাম যে তুই কোন এক ক্লায়িন্টের সাথে কথা বলছিস।
রাত্রি;; আর এই হচ্ছে তার ক্লাইন্টের নমুনা দেখ দেখ দেখে নে।
আইরাত-রাত্রি উঠে এসে নিপার দুপাশে দাঁড়িয়ে পরলো। দুজনই তাদের কোমড়ে হাত দিয়ে রেখেছে। যেন কোন পুলিশ তাদের অপরাধী কে ধরে এনেছে। নিপা পারছে না কেদে দিয়ে।
আইরাত;; নাম কি ওর?
রাত্রি;; কোথায় থাকে?
আইরাত;; কি করে?
রাত্রি;; বাসায় কে কে আছেন?
আইরাত;; ছেলের কোন এক্স টেক্স নেই তো আবার হুমম বল বল?
রাত্রি;; কিরে বল।
আইরাত;; কিছু বলছিস না কেন? বল হারামি!
নিপা;; ওমায়ায়ায়ায়ায়ায়া আমি এই কাদের পাল্লায় পরলাম গো। কাদের কি বলে দিলাম। ছাইড়া দে মা কাইন্দা বাঁচি।
আইরাত;; কোন ছাড়াছাড়ি নেই এখনই সবকিছু বলবি আমাদের বল।
নিপা;; আরে বলার সময়টুকু তো দিবি নাকি। দুই শাকচুন্নির মতো করে দুপাশে দাঁড়িয়ে আছিস। সামনে গিয়ে বোস সবকিছু বলছি।
আইরাত আর রাত্রি আবার তাদের জায়গায় গিয়ে বসে পরে। তবে আইরাত যাওয়ার আগে নিপার পিঠে ঠাসস করে একটা চড় মেরে যায়। নিপা “উফফ” করে ওঠে। তারা সামনে গিয়ে বসলে নিপা এক এক করে সবকিছু খুলে বলতে থাকে।
নিপা;; ছেলের নাম নিরব, পেশাতে একজন ডাক্তার। পুরো দুবছর আমার পিছনে ঘুরঘুর করেছে অবশেষে তাকে মেনে নিলাম।
রাত্রি;; ওহহহ এই তাহলে সেই নিরব যাকে তুই বার বার রিজেক্ট করতি।
আইরাত;; হুমমম বুঝেছি বুঝেছি। এই মেডাম নিরবকে রিজেক্ট করতে করতে কখন যে নিরবেই সেই নিরবের প্রেমে পরে গেছে তা তিনি নিজেও জানেন না। কি তাই তো? (নিপার দিকে তাকিয়ে)
নিপা;; হ্যাঁ (লজ্জা পেয়ে)
আইরাত;; আয় হায়ায়, দেখো দেখো ছুপা রুস্তাম এখন কিভাবে লজ্জা পাচ্ছে।
রাত্রি;; থাক থাক এখন আর লজ্জা পেতে হবে না, যা করার তা তো করেই ফেলেছো পেয়ারি বেহনা।
আইরাত হেসে দিয়ে উঠে গিয়ে নিপার গাল টেনে দেয়।
আইরাত;; আচ্ছা যা হয়েছে হয়েছেই এখন কিন্তু ট্রিট দিতে হবে। আর কোন ছাড়াছাড়ি নেই।
রাত্রি;; তা আর বলতে।
নিপা;; আহা আচ্ছা বাবা আচ্ছা সবই পাবি। কিন্তু এবার আমার কাছেও একটা জিনিস আছে।
রাত্রি;; কি কি?
নিপা উঠে গিয়ে বেশ বড়োসড় একটা বক্স সাবধানে নিয়ে এসে টেবিলের ওপর রেখে দিলো। সাথে একটা মোম আর বেশ কিছু পার্টি স্প্রে। বক্স টা খুলতেই রাত্রির চোখ গোল গোল হয়ে গেলো। কেননা বক্সে ইয়ায়ায়ায়া বড় একটা চকলেট কেক। রাত্রি তা দেখে লাফিয়ে উঠলো।
নিপা;; আমার বোনের বার্থে আমি কি করে সেলিব্রেশন না করি হুমম। মানলাম যে সকালে একদম মনে ছিলো না কিন্তু ভাবলাম যে এখন এটা নিয়ে গিয়ে তোদের সারপ্রাইজ দি।
আইরাত;; কখন কিনলি এটা তুই?
নিপা;; বিয়ের সময় যখন ফুল আনতে গিয়েছিলাম তখনই এনে রেখেছি। তো কেমন লাগলো?
রাত্রি;; অনেককককক বেশি সুন্দর।
নিপা;; নে এবার তাড়াতাড়ি কেক টা কেটে খাইয়ে দে।
রাত্রি আর দেরি না করে চাকু নিয়ে এলো। নিপা মোম গুলো এক এক করে কেকের ওপর সাজিয়ে দিলো, আইরাত মোম জ্বালিয়ে দিলো। রাত্রি এসে ফু দিয়ে সব মোমবাতি নিভিয়ে দিয়ে কেক কেটে দিলো সাথে সাথে নিপা আর আইরাত হেপি বার্থডে বলে চিল্লিয়ে ওঠলো। আইরাত জোড় করে সবার ওপর এবং পুরো ঘরে স্প্রে করে দিলো। রাত্রি প্রথমে আইরাতকে তারপর নিপাকে কেক খাইয়ে দিলো। আইরাত দুষ্টমি করে কিছুটা কেক নিপা আর রাত্রির গালে নাকে মাখিয়ে দিলো। নিপা আর রাত্রিও ছেড়ে দেওয়ার পাত্রি নয় তারাও আইরাতকে একদম কেক দিয়ে শেষ করে দিলো। এভাবেই কেক কেটে সব খুনশুটি শেষ করে তারা ফ্রেশ হয়ে এলো। বারান্দায় বসে তিনজন মিলে আড্ডা দিচ্ছে, তিনজনের হাতে তিন কাপ কফির মগ। খাচ্ছে আর গল্পে মেতে ওঠেছে। তখনই আইরাতের ফোনে call আসে আইরাত ফোনের দিকে তাকিয়ে দেখে আননোন নাম্বার, তাই কিছুটা কপাল কুচকে তাকায় সেদিকে। আইরাত কফির মগটা রেলিং এর ওপর রেখে কিছুটা দূরে এসে ফোন রিসিভ করে কানে ধরে।
আইরাত;; হ্যালো,,
আব্রাহাম;; আমাকে না বলেই কোন সাহসে বিয়ে বাড়ি থেকে একা চলে এসেছো আইরাত?
আব্রাহামের কন্ঠ শুনে আইরাত চমকে ওঠে। কেননা আব্রাহাম বেশ কঠিন স্বরে কথা বলছে। আব্রাহাম সাধারণত এভাবে তার সাথে কথা বলে না কিন্তু যখন কোনকিছু নিয়ে বেশি সিরিয়াস বা রেগে থাকে তখনই এভাবে কথা বলে।
আইরাত;; আপনি আমার ফোন নাম্বার পেলেন কোথা থেকে?
আব্রাহাম;; আমি যা বলছি তার উত্তর দাও, কেনো আমাকে না বলে একা চলে এসেছ?
আইরাত;; আরে আজব তো আমি আপনাকে কেন জবাবদিহি করবো আর একা কোথায় নিপা আর রাত্রি ছিলো তো আমার সাথে।
আব্রাহাম;; তাই বলে তুমি আমাকে একটা বার বলবে না। জানো কতোটা টেনশন হয় আমার। আমাকে তো বুঝবে না শুধু পারো আমাকে টেনশনের মধ্যে ফেলতে।
আইরাত;; আপনাকে বলার কোন প্রয়োজন মনে করিনি আমি। এখন রাখুন।
আব্রাহাম;; প্রয়োজন আছে কি নেই তা হারে হারে টের পায়িয়ে দিবো তোমাকে মিসেস. আইরাত আব্রাহাম আহমেদ চৌধুরী।
আব্রাহাম আইরাতকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই ফোন কেটে দেয়। আইরাত কান থেকে তার ফোন সরিয়ে ডোন্ট কেয়ার একটা ভাব নিয়ে আবার বারান্দায় চলে যায় এবং গল্প করতে শুরু করে। এদিকে আব্রাহাম তার রকিং চেয়ারে বসে আছে হাতে এক আধা খাওয়া Whiskey এর বোতল।
।
।
।
।
।
।
।
।
।
।
🌸🌼চলবে~~~~~