Gangstar In Love Part-32+33

0
3060

#Gangstar In Love🖤🥀___A psycho love story””

#Writer; Tamanna Islam

#part__ 32

🌿🌿🍃..
..
..
..
..
..

রাত্রির চিল্লা চিল্লিতে আইরাত জলদি বেরিয়ে Ash কালার একটা গোল জামা পরে রেডি হয়ে নিলো। আইরাত, রাত্রি & নিপা সবাই রেডি হয়ে গাড়িতে ওঠে বাইরে বেড়িয়ে পড়লো।

রাত্রি;; এই দেখ তো সবকিছু ঠিকঠাক ভাবে নিয়েছিস কিনা?

আইরাত;; ________________

রাত্রি;; কিরে

আইরাত;; ________________

রাত্রি;; এই বয়রা,, কোথায় হারিয়ে গেলি এই যে ডাকছি। আচ্ছা তোর কি হয়েছে বলতো?

আইরাত;; আরে ক ককই ননা তো কিকিছুই হয় নি। আর হ্যাঁ কি যেন বলছিলি, ওহ হুমম সব ঠিকঠাকই আছে।

রাত্রি;; কিছুতো একটা হয়েছে।

আইরাত;; তোর মুন্ডু হয়েছে গাধি (মাথায় বারি দিয়ে)

নিপা;; আচ্ছা শোন সেখানে গিয়ে কিন্তু এক মিনিটও দেরি করা যাবে না ঠিকআছে। সাথে সাথে কাজে লেগে যাবি। প্রচুর কাজ বাকি.. (ড্রাইভ করতে করতে)

আইরাত-রাত্রি;; যো হুকুম মহারানি..

নিপা;; চুপ থাক ফাজিলের দল।

এভাবেই সারা রাস্তা খুনশুটি করতে করতে তারা চলে গেলো। এক সময় বিয়ে বাড়ির সামনে পৌঁছে গেলো। আইরাত-রাত্রি তড়িঘড়ি করে সকল জিনিসপত্র এক এক করে গাড়ি থেকে নামাতে লাগলো। গাড়ি থেকে নামতেই কনের বাবা হুমড়ি খেয়ে তাদের সামনে গেলো।

রফিকুল রহমান;; আরে এসে গেছো তোমরা, কিন্তু আজ এতো দেরি হলো যে!

রফিকুল রহমানের কথায় রাত্রি অগ্নি চোখে আইরাতের দিকে তাকালো। আইরাত বেপার টা বুঝতে পেরে চুপচাপ অন্য পাশে তাকিয়ে নখ খেতে লাগলো। এমন একটা ভাব নিল যেন সে কিছুই জানে না। অথচ দেরি হয়েছে তার জন্যই।

নিপা;; আরে চাচ্চু আর বলবেন না,, রাস্তায় এতো ঝনজাট যে কি বলবো। তাই একটু দেরি হয়ে গেলো আর কি। কিন্তু এখন এসে পরেছি তো চট জলদি সবকিছু গুছিয়ে ফেলবো।

রফিকুল রহমান;; হ্যাঁ হ্যাঁ তা তো জানিই,, তোমাদের ওপর আমার পুরো বিশ্বাস আছে। নাও নাও এবার জলদি ভিতরে এসো দেখি।

রফিকুল রহমান তাদের কাজের লোককে ডেকে এনে গাড়ি থেকে বাকি জিনিস গুলো ভিতরে নিয়ে যেতে বললেন। ভিতরে যেতেই তারা কাজে লেগে গেলো। বিয়ে বাড়ির কাজ বলে কথা শ্বাস নেওয়ার সময় টুকু নেই। আইরাত চলে গেলো পেন্ডেল সাজাতো এবং কোথায় কি ফুল বসবে তা দেখতে। রাত্রি সেই ফুল গুলো আনতেই আবার বাইরে চলে গেলো। আর নিপা বাগানের পাশে বসার সিট গুলো ডেকোরেট করতে চলে যায়। তাদের সাথে অন্যান্য কিছু স্টাফ রাও এসেছে কাজ করে দিতে কেননা এতো বড়ো বাড়ির কাজ তো আর তিনজনের পক্ষে করা সম্ভব নয়। তবে তারা কিছুটা ঘাবড়ে আছে আইরাতকে দেখে। কাজের ক্ষেত্রে আইরাত একটু রাগি আর বদমেজাজি নামেই পরিচিত সবার কাছে। কোন কিছু হেরফের হওয়া চলবে না,, সবকিছুই পারফেক্ট হওয়া চাই তার।

আইরাত পেন্ডেলের কাছে চলে গেলো। গিয়েই তার মাথা ৪৪০° গরম। পেন্ডেলে লাগাতে বলেছিলো সাদা আর গোলাপি কালারের কাপড় আর এরা লাগিয়েছে সোনালী কালারের। আইরাত তো রাগে শেষ।

আইরাত;; আব্বে ওওও আকাল কে দুশমান। এই কি করেছ কি তোমরা হ্যাঁ।

রনি(একজন স্টাফ);; কেন আপু কোন সমস্যা হয়েছে?

আইরাত;; কিইইইই সমস্যা হয়েছে মানে। পুরো পেন্ডেলের থিম পালটে দিয়ে এখন বলছ যে কোন সমস্যা হয়েছে কিনা!!

রনি;; আসলে আপু….

আইরাত;; কি আসলে আসলে করছ। আমি তোমাদের বলেছিলাম যে পেন্ডেল White & Pink কালারের কম্বিনেশনের হবে আর তোমরা কি করেছ পুরো টা সোনালী কালারের করে রেখে দিয়েছ। (অনেক রেগে)

রনি;; সরি আপু,, আচ্ছা আমরা আবার ঠিক মতো করে দিচ্ছি

আইরাত;; নাহ থাক, অনেক করেছো তোমরা যার নমুনা আমার দেখা হয়ে গেছে। এখন সরো দেখি আমাকে করতে দাও এমনিতেই হাতে সময় খুব অল্প।

আইরাত অনেক বকাঝকা করে তাদের সরিয়ে দিলো। তারপর নিজে ওপরে ওঠে সব কাজ করতে লাগলো। এরই মধ্যে রাত্রি সব ফুল নিয়ে এসে পড়লো। রাত্রি ফুলের বড়ো ঝুড়ি গুলো আনতে হিমশিম খাচ্ছে। রাত্রির একা করতে সমস্যা হচ্ছে বলে নিপা তাড়াতাড়ি করে এগিয়ে এলো।

নিপা;; আরে দে দেখি আমিও করছি।

রাত্রি;; না না থাক আমি একা করে নিতে পারবো তুই ভিতরে আইরাতকে দেখ পেন্ডেলের কাজ হচ্ছে কিনা!

নিপা;; আরে ওকে দেখতে হবে না। তুই জানিস না ও তিন চারজনের কাজ একাই করে নিতে পারে। কিন্তু কালার চয়েজে কিছু প্রবলেম হয়েছিলো বলে অনেক রাগারাগি করেছে।

রাত্রি;; হাহাহা,, তা আর নতুন কি। উলটা-পাল্টা কিছু একটা দেখলেই ওর মাথা নষ্ট।

নিপা;; 😅,, এবার তাড়াতাড়ি এগুলো নিয়ে এসে পড়।

রাত্রি-নিপা ভিতরে আসলে অর্ধেক ফুলগুলো দিয়ে দেয় গাড়ি সাজাতে এবং অন্য কাজে আর বাকি গুলো পেন্ডেলের কোণায় থোকা থোকা করে সাজানোর জন্য।
এভাবেই সবাই কাজ করতে থাকলো। সারাদিন অনেক তোড়ঝাপ করে কাজ শেষ হলো তাদের। সকাল গড়িয়ে বিকেল হয়ে গেলো। কাজ শেষ করতেই এক স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়লো তিনজনেই। বাড়ির সবাই তাদের কাজ দেখে মহাখুশি। যেই দেখছে সেই খুশিতে ডগমগ। নিপা-রাত্রি-আইরাতের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। সবথেকে বেশি সুন্দর হয়েছে বিয়ের পেন্ডেল। যেই দেখছে সেই বাহ বাহ করছে। তাদের কাজের বেশ সুনাম করলো সবাই। কাজ শেষে টেবিলে বসে আছে তারা।

রাত্রি;; উফফফফফ আমি শেষ। এই গরমে এভাবে দৌড়াদৌড়ি করে কাজ করা যায় নাকি। ঘেমে নেয়ে একাকার। এই পানির বোতল এদিকে দে।

আইরাত;; নে ধর। যাই বলিস আমার থেকে বেশি কাজ করিস নি

রাত্রি;; কিইইই তুই, তুই এই কথা বলতে পারলি আইরু।

আইরাত;; অবশ্যই পারলাম।

রাত্রি;; তুই তো শুধু পেন্ডেলের কাজ করেছিস আর আমি তো এই কড়া রোদে বাইরে ঘুড়েছি।

নিপা;; এই তোরা দুইজন থামবি।

আইরাত;; আমি অনেক টায়ার্ড রে।

নিপা;; দাঁড়া তোর টায়ার্ড দূর করছি,চল।

আইরাত;; কোথায়?

নিপা;; ফুচকা খেতে।

আইরাত;; কিইইইইইইই ফুচকা😍

রাত্রি;; না চিল্লিয়ে চল।

নিপা;; তোরা একটু দাঁড়া আমি রফিকুল চাচ্চুর সাথে কথা বলে আসছি। তাকে বলে না গেলে আবার মন খারাপ করবেন।

আইরাত;; হুমম যা।

নিপা রফিকুল রহমানের সাথে কথা বলে সব কিছু বুঝিয়ে চলে আসে। তারপর তারা গাড়িতে উঠে চলে যায়।












অন্যদিকে,, আব্রাহাম তার প্রেস মিটিং শেষ করে বেড়িয়ে পরে। গন্তব্যহীন ভাবে ড্রাইভ করে লাগে সে। ড্রাইভ করতে করতে এক নদীর ধারে এসে পরে। রাস্তার পাশে গাড়ি থামিয়ে বাইরে তাকিয়ে রইলো সে। সবুজ মাঠ, আশে পাশে অনেক গাছ-গাছালি, তারই মাঝখানে
বয়ে চলেছে এক ছোট নদী। নদীতে সাদা পালকের হাসেঁরা সাতার কেটে বেড়াচ্ছে। আবার অনেক ছোট ছোট বাচ্চারা খেলছে। আবহাওয়া অনেক মোনমুগ্ধ। আব্রাহাম গাড়ি থেকে নেমে পড়লো। নেমে গাড়ির পাশেই হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকলো। তার ওপরের কোর্ট টা খুলে কাধেই ডান হাতের দু আঙুল দিয়ে ধরে রইলো। এখান থেকে কিছুটা দূরে একটা কফি শপ আছে। ঠিক এখানেই এক বৃষ্টি ভেজা দিনে আব্রাহাম আইরাতকে দেখেছিলো ভিজতে। কে জানতো যে সেদিনের সেই দেখাটাই আব্রাহামের বাঁচা মুশকিল করে দিবে। আব্রাহাম আনমনেই কথা গুলো ভাবছে। এই স্মৃতি গুলোই দিনকে দিন আব্রাহামকে যেমন বাঁচিয়ে রেখেছে তেমনই ভিতর থেকে শেষ করে দিচ্ছে।
আব্রাহাম সেখানেই হাত ভাজ করে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতে লাগলো।







আইরাত;; আয়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়া,,, এই থাম থাম এখানেই গাড়ি থামা বলছি।

নিপা;; আরে আরে হয়েছে কি, চিল্লাচ্ছিস কেন?

আইরাত;; আরে ফুচকায়ায়ায়ায়ায়া।

রাত্রি;; একে কে পাগলা গারদ থেকে ছাড়লো!

আইরাত;; চুপ থাক পেত্নি।

আইরাত গাড়ির জানালা দিয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে ছিলো ফুচকার দোকান চোখে পরতেই এভাবে চিল্লিয়ে ওঠে। আইরাত আর কাউকে কিছু না বলে গাড়ি থেকে বের হয়ে পরে এবং দৌড়ে ফুচকার দোকানে চলে যায়।

নিপা;; রাত্রি তুই ও নেমে পর দেখি।

রাত্রি;; __________________

নিপা;; রাত্রি, এই রাত্রি।

পিছন থেকে কোন সাড়াশব্দ না পেয়ে নিপা পিছনে তাকায়। তাকিয়ে দেখে রাত্রি নেই, নিপা আবার বাইরে তাকায় দেখে যে রাত্রিও অলরেডি নেমে চলে গেছে। নিপা অসহায় ভাবে তাকিয়ে থাকে দুজনের দিকে।

নিপা;; এই দুটো কে নিয়ে আমি কি যে করি।

নিপা ও গাড়ি সাইডে করে নেমে পরে।

আইরাত;; মামা, জলদি জলদি চার প্লেট ফুচকা বানাও। ঝাল অনেক অনেক বেশি দিবে।

রাত্রি;; ওয়েট, আমরা তো তিনজন তাহলে ফুচকা প্লেট চারটা কেন?

আইরাত;; তোদের জন্য দুটো আর আমার একার জন্য দুটো।

রাত্রি;; 😑

আইরাত;; মামা তাড়াতাড়ি।

আইরাত-রাত্রি-নিপা তিনজনেই একসাথে ফুচকা খেতে লাগলো। আইরাতের তো অন্য কোন দিকে হুশ ই নেই সে তার নিজের মন মতো খেয়েই যাচ্ছে খেয়েই যাচ্ছে।

নিপা;; বইন একটু আস্তে খা প্লিজ।

আইরাত;;______(খেয়েই যাচ্ছে)______

রাত্রি;; ওকে কিছু বলে লাভ নেই,, শুনবে না। তুই খাওয়া শুরু কর।

নিপা মগার মতো তাকিয়ে থাকে। ডান পাশে তাকিয়ে দেখে আইরাত নাক ডুবিয়ে খাচ্ছে বাম পাশে রাত্রিরও একই অবস্থা। নিপা হাসবে না কাদঁবে খুজে পায় না। সেও খেতে শুরু করলো।

খাওয়া শেষে এক একজন নাকের জলে চোখের জলে হয়ে গেছে। ঝালে এক একটার নাজেহাল দশা। ধীরে ধীরে পানি খেয়ে তারপর ঠিক হলো। তারা সবাই দাঁড়িয়ে আছে তেমন সময় হঠাৎ আকাশ মেঘলা হয়ে এলো।

রাত্রি;; কিরে আকাশ এমন হয়ে এলো কেন। বৃষ্টি হবে নাকি আবার!

নিপা;; একটু আগেই না দেখলাম সবকিছু ভালো এখন আবার কি হলো।

রাত্রি-নিপা কথা বলার মাঝেই ঝুমঝুম করে বৃষ্টি শুরু হলো। একদম মুশুলধারে বৃষ্টি। নিপা আর রাত্রি দৌড়ে এক ছাউনির নিচে চলে গেলেও আইরাত যায় না। সেই বৃষ্টির মাঝে ঠাই দাঁড়িয়ে থাকে।

নিপা;; আরে আইরু তাড়াতাড়ি এদিকে এসে পড়। ওখানে দাঁড়িয়ে আছিস কেন, আরে ঠান্ডা লেগে যাবে তো৷ শরীর খারাপ করবে তাড়াতাড়ি আয়।

রাত্রি;; বেবিজান প্লিজ দাঁড়িয়ে থাকিস না বৃষ্টিতে ওভাবে। এখানে আয়।

আইরাত;; আরে থাকি না এখানে। দেখ বৃষ্টিতে ভিজতে কত্তো ভালো লাগে। বৃষ্টির প্রতি টা ফোটা যেন মন ছুয়ে যায়। মন খোলে অনুভব করতে শিখ। এ যেন নতুন তালে জীবনকে বাচঁতে শেখায়। তোরাও আয় না দূরে দাঁড়িয়ে আছিস কেন তোরাও ভিজ।

নিপা;; না বাপু তুই ই ভিজ,, শখ নেই জ্বর-ঠান্ডা লাগানোর।

আইরাত;; তোরা যে রুচিবোধ ছাড়া মানুষ তা আমি আগে থেকেই জানতাম। না ভিজলি আমি তো ভিজবো।

আইরাতের এটা অনেক পুরনো স্বভাব। বৃষ্টি দেখলে আর কোন দিকে কোন হুশ জ্ঞান থাকে না তার। দুনিয়া উলটে গেলেও তাকে ভিজতেই হবে। নিপা আর রাত্রি কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে আইরাতের এই সব পাগলামি দেখতে থাকলো। আর আইরাত তো আইরাত ই। সে কোন দিক না ভেবে নিজের মনের সুখে ভিজেই যাচ্ছে। একবার রাস্তার এপাশ তো আবার রাস্তার ওপাশ। আইরাতের এসব বাচ্চামি দেখে নিপা আর রাত্রি গালে হাত দিয়ে বসে থাকে।





প্রচন্ড পরিমানে বৃষ্টি শুরু হলে নদীর আশেপাশের লোকজন সবাই জলদি উঠে চলে যায়। কিন্তু আব্রাহাম স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে একই জায়গাতে দাঁড়িয়ে থাকে। নিজের ওপর বৃষ্টির ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ফোটা পড়াতে আব্রাহামের খেয়াল হয় যে অনেক জোড়ে সোড়েই বৃষ্টি নেমেছে। কিন্তু তাতেও যেন কোনরকম হেলদুল নেই তার। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভিজতে থাকে আব্রাহাম। আকাশ পানে তাকিয়ে বৃষ্টির পানিকে উপভোগ করতে লাগে। এই অনাকাঙ্ক্ষিত বৃষ্টি যেন আইরাতের কথায় মনে করিয়ে দিচ্ছে তাকে। আব্রাহাম এবার গাড়ি থেকে কিছুটা দূর সরে আসে। জনমানব হীন রাস্তায় একা একা বৃষ্টিতে হাটতে লাগে। আব্রাহামের মাথার চুলগুলো ভিজে টপ টপ করে পানি ঝড়ছে। পানিতে গায়ের সাদা শার্ট টা শরীরের সাথে আষ্টেপৃষ্ঠে লেগে ধরেছে। এভাবেই হেটে এগিয়ে যেতে লাগলো আব্রাহাম। বেশকিছুটা এগিয়ে গিয়ে আব্রাহাম তার দুহাত মেলে দিয়ে মাঝ রাস্তায় দাঁড়িয়ে পড়লো। মুখখানা ওপরের দিকে তুলে দুহাত দুদিকে মেলে দিয়েছে সে। ঠিক আইরাতকে যেভাবে প্রথম দিন দেখেছিলো আজও আব্রাহাম ঠিক সেভাবেই দাঁড়িয়ে রয়েছে। আব্রাহামের জীবন থেকে আইরাতের চলে যাওয়ার পর, প্রত্যেক টা সময় যখনই বৃষ্টি হয় আব্রাহাম এভাবেই ভিজে। কোন এক মূহুর্ত মিস দেয় না। এটাও একটা পথ নিজের হারানো আইরাতকে অনুভব করার এবং নিজের চোখের জল বৃষ্টির ফোটায় বিসর্জন দেওয়ার।

ওদিকে আইরাত ও খুব করে ভিজছে। এবার নিপা সত্যি অনেক রেগে গেলো। রেগে চিল্লাতে থাকলো আইরাতের ওপর।

নিপা;; আইরাত দেখ এবার কিন্তু খুব বেশি বারাবারি হয়ে যাচ্ছে। তুই যে এভাবে ভিজেই যাচ্ছিস জ্বর আসলে তোর খবর আছে। এবার কি তুই বৃষ্টি থেকে ওঠে আসবি নাকি মার খাবি কোনটা?!

আইরাত;; এইরে ক্ষেপেছে,, এখন আর না যেয়ে উপায় নেই কি আর করার চলে যাই আর অনেকক্ষনই তো ভিজলাম। বাই-বাই বৃষ্টি (মনে মনে)

আইরাত;; আরে হ্যাঁ হ্যাঁ আসছি।

আইরাত এসে পরবে কিন্তু তার আগে একবার পিছন ফিরে তাকায়। দেখে যে একটা বেশ লম্বাচওড়া লোক মাঝ রাস্তায় বৃষ্টিতে দুহাত মেলে দাঁড়িয়ে আছে। বৃষ্টির অনেক জোড় থাকার ফলে তা স্পষ্ট ভাবে দেখা মুশকিল। আইরাত আবছা ভাবে দেখছে লোকটাকে। আইরাত লোকটির দিকে কিছুটা কপাল কুচকে তাকিয়ে থাকলো। আইরাতের খুব ইচ্ছে করছে লোকটাকে দেখার কিন্তু বৃষ্টির তেজে তা দেখা প্রায় অসম্ভব।

নিপা;; আইরাত দেখ বৃষ্টি আরো জোড়ে নামছে প্লিজ তাড়াতাড়ি উঠে আয় নয়তো পরে বাড়ি যেতে পারবো না।

আইরাত লোকটির দিকে তাকিয়ে ছিলো কিন্তু তখন ওপর পাশ থেকে নিপার কড়া গলা ভেসে এলে আইরাত সেখান থেকে নিজের চোখ সরিয়ে দ্রুত চলে আসে। এ যেন দুজনের দেখা হয়েও দেখা হলো না। আইরাত দৌড়ে রাত্রি আর নিপার কাছে চলে আসে। আইরাতকে দেখে নিপার মাথায় হাত। ভিজে একাকার হয়ে গেছে। আইরাত দাঁড়িয়ে নিজের কাপড় ঝাড়তে ব্যাস্ত হয়ে গেলো।

রাত্রি;; দেখো কান্ড,, এভাবে কেউ ভিজে। যদি তোর রাতে জ্বর এসেছে তো দেখিস কি করি।

আইরাত;; 🤪😝 কিছুই করতে পারবি না।

নিপা;; চল তো এক একটা জলদি গাড়িতে ওঠ।

রাত্রি-আইরাত আর কোন কথা না বলে সোজা গাড়ি তে উঠে বসলো। বাড়ির উদ্দেশ্যে যেতে লাগলো তারা। কিছুক্ষন পরই আইরাত শীতে থরথর করে কাপতে লাগলো। রাত্রি তার বেগ থেকে একটা বড় টাওয়াল বের করে আইরাতের মাথা মুছে দিতে লাগলো। বাড়ির দিকে গাড়ি এগিয়ে চলেছে।







In চৌধুরী ভবন…….

আবির আহমেদ;; নাহ, আমি বুঝতে পারছি না যে এই তীব্র বৃষ্টির মধ্যে ছেলেটা গেলো কোথায়?! (আব্রাহামের চিন্তায় চিন্তিত হয়ে)

অয়ন;; বাপি তুমি চিন্তা করো না হয়তো ভাই রাস্তায় আটকা পরেছে। বৃষ্টির বেগ কিছুটা কমে আসলেই ভাই এসে পরবে।

আবির আহমেদ;; আচ্ছা মানলাম রাস্তায় আটকা পরেছে কিন্তু ফোন, ফোন কি দোস করেছে। ও ফোন তুলছে না কেন?! (হাতে ফোন নিয়ে বারবার আব্রাহামের নাম্বারে call করে)

অয়ন;; বাপি তুমি আগে শান্ত হও প্লিজ।

অয়নের কথার মাঝেই গাড়ির হর্নের আওয়াজ আসে। বাড়ির সিকিউরিটি মেইন গেট খুলে দিলে গাড়ি বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করে। গাড়ির শব্দ পেয়ে অয়ন বলে ওঠে….

অয়ন;; এই দেখো দাভাই বলতে বলতেই এসে গেছে। তুমিও না বাপি শুধু শুধু এতো চিন্তা করো, এতে উল্টো তোমারই শরীর খারাপ করে। এবার চল দেখি।

আবির আহমেদ;; হ্যাঁ হ্যাঁ চল।

অয়ন, আবির আহমেদ উঠে আব্রাহামের কাছে যেতে ধরবে তার আগেই আব্রাহাম ঘরের ভিতরে আসে পুরো ভিজা অবস্থায়। আব্রাহামকে এইভাবে দেখে আবির আহমেদ ও অয়ন বেশ অবাক হয়।

আবির আহমেদ;; আব্রাহাম, তোর এই অবস্থা কেন। এভাবে ভিজলি কি করে, যদি জ্বর আসে তখন?!

আব্রাহাম;; __________________

অয়ন;; দাভাই তুই এভাবে কিন্তু কেন। তুই তো কখনোই বৃষ্টিতে ভিজিস না তাহলে আজ!

আব্রাহাম;; মন চাইলো তাই ভিজেছি।

অয়ন খেয়াল করলো যে আব্রাহামের চোখ ভীষণ ভাবে লাল হয়ে আছে এবং ফুলে আছে। অয়নের বুঝতে আর বাকি রইলো না যে আব্রাহাম নিজের ভিতরে লুকিয়ে থাকা হাজারো অশ্রুবিন্দু লুকানোর জন্যই মূলত বৃষ্টিতে ভিজেছে।

আব্রাহাম;; বাপি আসলে আমি আমার রুমে যাই। আমি ফ্রেশ হবো আর আমার ভালো ঠেকছে না,, I need rest…

আবির আহমেদ;; আচ্ছা ফ্রেশ হয়ে খেতে আসিস।

আব্রাহাম;; না বাপি আমি কিছু খাবো না।

আবির আহমেদ;; তাহলে আমি স্টাফকে দিয়ে তোর রুমে খাবার পাঠিয়ে দিচ্ছি।

আব্রাহাম;; বাপি আমি খাবো না ক্ষিদে নেই। একা থাকতে দাও আমায় প্লিজ।

এই বলে আব্রাহাম দ্রুত গতিতে সিড়ি বেয়ে ওপরে নিজের রুমে চলে যায়। রুমে গিয়ে জোড়ে দরজা লাগিয়ে দেয়। আব্রাহাম চলে গেলে আবির আহমেদ ক্ষিন দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। অয়ন তার বাপির দিকে এগিয়ে গিয়ে বলে…

অয়ন;; বাপি সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে। অন্ধকারের পর যেমন আলো আসে ঠিক তেমনই খারাপ সময়ের পর ভালো সময়ও আসে। আল্লাহর ওপর ভরসা রাখো।
আবির আহমেদ;; হুমমম। আমিও সেই ভালো সময়ের অপেক্ষায় আছি।
..
..
..
..
..

এদিকে আইরাত চুল মুছতে মুছতে ওয়াসরুম থেকে বেরিয়ে এলো। হাঁচি করতে করতে তার দম বন্ধ হওয়ার উপক্রম। রাত্রি বসে বসে খাতা কলম নিয়ে কি যেন একটা করছে। তখন আইরাত ওর পাশে এসে বসে পড়লো। আইরাত একমনে হাঁচি করেই যাচ্ছে। নাকের ডগা একদম টমেটোর মতো লাল করে ফেলেছে। চোখ অনেকটাই ফুলে গেছে।

আইরাত;; হাহায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়ায়াচ্ছিইইইইইই…..

রাত্রি;; আহায়ায়া, আস্তে বইন আস্তে। হাজার বার বারণ করেছি বৃষ্টির পানিতে ভিজিস না ভিজিস না,, কিন্তু না কে শুনে কার কথা। ইচ্ছে মতো ভিজলি এখন ঠেলা সামলা।

আইরাত;; এই এই তুই তুতুতুই হায়ায়ায়ায়াচ্ছি,, তুই চুচুপ করবি নাকি লাথি খাবি হায়ায়ায়ায়াচ্ছি। একদম রাগাবি ননানা আম হায়ায়ায়ায়ায়াচ্ছি।

রাত্রি;; হিহিহিহিহিহি,, আগের তো নিজেকে সামলা ধলা বিলাই।

আইরাত;; রাত্রিইইই,, হায়ায়ায়ায়াচ্ছি। ও আল্লাহ আমি শেষ গো।

নিপা;; যেমন কর্ম তেমন ফল। কথা তো একটুও শুনিস নি এবার বুঝ। (হাতে গরম স্যুপের বাটি নিয়ে ঘরে প্রবেশ করে) নে এবার তাড়াতাড়ি করে এটা খেয়ে নে। ভালো লাগবে।

আইরাত;;কিহ আরে না না আম আম হায়ায়ায়াচ্ছি, আমি এটা খেতে পারবো হায়ায়ায়ায়াচ্ছি না। অন অনেক বাজে খেতে হায়ায়ায়ায়াচ্ছি প্লিজ না।

নিপা;; আচ্ছা হয়েছে এবার চুপ কর আর কথা বলতে হবে না। চুপচাপ এটা খেয়ে নে। ঠান্ডার জন্য এটা খুবই ভালো।

আইরাত আর কোন কথা না বলে খেয়ে নিলো। তার পর রাতে তিনজন বসে গল্প করতে লাগলো। আগামী দুদিন তাদের কোন কাজ নেই,,তারা দুদিনের ছুটি পেয়েছে,, তো এই দুদিন কোথায় কোথায় ঘুড়তে যাবে, কি কি শপিং করবে তাই প্লেনিং চলছে তিনজনের মাঝে। এভাবেই গল্প করতে করতে বেশ রাত হয়ে গেলো। নিপা-রাত্রি বেঘড়ে ঘুম। কিন্তু আইরাতের চোখে ঘুমের ছিটে ফোটাও নেই। আইরাত তার পাশে তাকিয়ে দেখে নিপা-রাত্রি ঘুম। আইরাত আস্তে করে উঠে করিডরে গিয়ে দাঁড়ালো। করিডরে বাইরের ল্যাম্প পোস্টের আলো এসে পরেছে,, হালকা হাওয়া বয়ে চলেছে। এতে করে আইরাতের এলোমেলো চুল গুলো উড়ে চলেছে। আইরাতের এখন না চাইতেও আব্রাহামের কথা ভাবছে। খুব বেশি মনে পরছে আব্রাহামের কথা। যাকে এতোদিন মৃত ভেবে আসছিলো,, আজকে তাকে একদম ঠিকঠাক ভাবে দেখেছে। হ্যাঁ নিজের চোখের সামনে না, দূর থেকেই কিন্তু দেখেছে তো। এটাই যেন মনের এক বড় শান্তি।

আইরাত;; কেন করলেন আপনি এমনটা। আমি আগের সবকিছু ভুলে আপনাকে ভালোবেসে ফেলেছিলাম। একান্তই নিজের করে নিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আপনি তা হতে দেননি। যাকে আমি ভালোবাসি সেই কিনা আমার বাবা-মার খুনি হয়ে দাঁড়ালো। এরপরেও কি করে আপন করে নেই আপনাকে। কখন যে আপনাকে ঘৃণা করতে করতে আপনাকেই সবথেকে বেশি ভালোবেশে ফেলেছি তা জানা নেই আমার। এক সময় বাধ্য হয়েছি আপনাকে শুট করতে। ভালোবাশি আব্রাহাম অনেক বেশিই ভালোবাসি আপনাকে। কিন্তু এই কথাটা আর আপনাকে বলে ওঠা হবে না আমার।

আইরাত এই কথাগুলো নিজের মনেই বলে বেড়াচ্ছে আর চোখের পানি ঝড়াচ্ছে।

ওদিকে আব্রাহাম অন্ধকার ঘরে নিজের সামনে আইরাতের এক বড় ছবি রেখে নিজেকে ধোঁয়ায় উড়িয়ে দিচ্ছে। চোখের কার্নিশ বেয়ে পরছে নোনাজল। এ আব্রাহামের রোজকার কাজ।

এভাবেই দুদিকে দুজনের অগোছালো রাত কেটে যাচ্ছে একে ওপরের শূন্যতায়……..।।





(আমাকে অনেকে বলেছেন যে এক্সট্রা পার্ট দিতে কিন্তু আমি দিতে পারি না কারণ আমি একটু ব্যাস্ত থাকি,, অনেক গুলা সরি তার জন্য 🙏। তাই আজকের পার্টটা অনেক বড় করে দিয়েছি❤️)






💚🌿চলবে~~~~~
.

#Gangstar In Love🖤🥀___A psycho love story””

#Writer; Tamanna Islam

#part__ 33

🤎🦋..
..
..
..
..
..

পরেরদিন সকালে🌥️।।

সকাল হতেই রাত্রির ঘুম ভেঙে গেলো। আড়মোড়া ভেঙে উঠে বসে পরে সে। ঘুম ঘুম চোখে পাশে হাত দিতেই দেখলো যে সেখানে ফাকা। রাত্রি কিছুটা ভ্রু কুচকালো। ততক্ষণে নিপারও ঘুম ভেঙে গেছে। আইরাতকে না পেয়ে রাত্রি বলে ওঠলো…

রাত্রি;; কিরে আইরু কোথায় গেলো?

নিপা;; কোথায় আর যাবে এখানেই আছে দেখ।

রাত্রি;; কিন্তু ও তো এতো জলদি কখনো ঘুম থেকে ওঠে না তাহলে আজ কোথায় গেলো!?

রাত্রির কথার মাঝেই আইরাত তার হাতে করে তিন মগ কফি নিয়ে রুমে ঢুকলো।

আইরাত;; Good morning Girls (একটু জোড়েই বলে ওঠলো)

রাত্রি;; বলছি যে সূর্য আজ কোন দিক দিয়ে উঠেছে? (অবাক হয়ে)

আইরাত;; যেদিক দিয়ে রোজ ওঠে সেই দিক দিয়েই ওঠেছে। নে এবার কফি টা খা।

নিপা;; কিন্তু কখন উঠলি তুই টেরও পেলাম না।

আইরাত;; গরুর মতো করে ঘুমোলে কিভাবে টের পাবি। নে এবার খা।

নিপা;; হুমমম।

আইরাত তাদের দিকে কফির মগ এগিয়ে দিলো। তবে ঘুমোনোর কথা টা আইরাত এক প্রকার এড়িয়েই গেলো। কেননা কাল সারারাত সে তার চোখের পাতা এক করেনি। সারারাত জেগেই কাটিয়ে দিয়েছে আব্রাহামের কথা ভেবে ভেবে। আইরাত একমনে কফির মগে চুমুক দিয়ে চলেছে। তখন রাত্রি বলে ওঠলো…

রাত্রি;; আচ্ছা, আজকে আমরা কোথায় কোথায় ঘুরতে যাবো?

আইরাত;; যেখানে ইচ্ছে..

নিপা;; নাহ, আইরু তুই বল কোথায় যাবি!

আইরাত;; প্রথমে জমিয়ে শপিং, তারপর ঘুরাঘুরি- খাওয়া-দাওয়া এইতো।

রাত্রি;; I am so excited,, প্লিজ তোরা তাড়াতাড়ি চল।

নিপা;; আরে হ্যাঁ, সকালে হাল্কা কিছু ব্রেকফাস্ট করেই বের হবো।

রাত্রি;; ওকে।

এই বলে নিপা&রাত্রি ফ্রেশ হতে চলে গেলো। আইরাত চলে গেলো রান্নাঘরে কিছু একটা বানাতে। তারপর তারা খেয়ে দেয়ে রেডি হয়ে বের হয়ে পরে। প্রথমেই তারা সোজা শপিংমলে ঢুকে পড়লো। অনেক কিছু কিনছে তারা। বিশেষ করে রাত্রি সে পারছে না সম্পূর্ণ দোকান কিনে নিতে। নিপা আর আইরাত ঝুমকা দেখতে লাগলো। সামনে আয়না রাখা,, আইরাত এক একটা ঝুমকা পরে পরে ট্রাই করে যাচ্ছে। নিপা ও একই কাজ করছে। ঝুমকা পরতে পরতেই হঠাৎ করে আইরাতের চোখ যায় একটা কাপলের ওপর। ছেলেটি পরম যত্নের সাথে মেয়েটির মাথায় ঘোমটা দিয়ে দিচ্ছে। মেয়েটা লাজুক হেসে মাথা নিচু করে ফেলে। তাদের দেখে মনে হচ্ছে কোন মধ্যবিত্ত পরিবারের। কিন্তু তাদের মাঝে ভালোবাসা আছে গগনচুম্বী। আর তা তাদের দেখলেই বোঝা যায়। আইরাত তাদের দিকে একাধারে তাকিয়ে আছে। কেন জানি না আইরাতের তাদের দেখতে খুবই ভালো লাগছে। আব্রাহামের কথা আবারও হুট করেই মনে পরে যায় তার। আব্রাহাম ও ঠিক এভাবেই আইরাত কে ঘোমটা পরিয়ে দিত আর বলতো তাকে নাকি পুরো বউ বউ লাগছে। কখনো কখনো আইরাতের রাগ হলেও ভিতরে ভিতরে একটা ভালোলাগা কাজ করতো যা সে প্রকাশ করতো না। আইরাত তাদের দেখে মুচকি হাসে।

রাত্রি;; বেবিজান, কোথায় হারিয়ে গেলি। দেখ না এই দিকে।

আইরাত;; হে.. হ্যাঁ ওহ হুমম বল।

রাত্রি;; আমার ওপর কোনটা ভালো লাগছে বল না। তোর তো চয়েজ অনেক ভালো চুজ করে দে না প্লিজ। (একজোড়া কানের দুল নিজের কানের কাছে নিয়ে)

আইরাত;; হাহাহা,, তোকে সবকিছুতেই মানায়। যেটা খুশি নিয়ে নে।

রাত্রি;; আচ্ছা।

এভাবেই তারা তিনজন অনেক ঘুরাঘুরি করে শপিং করতে লাগলো।





অন্যদিকে…..

আব্রাহাম কে বাইরে থেকে অনেক ডাকাডাকি করা হয়েছে কিন্তু ভিতরে থেকে কোন সাড়াশব্দ নেই। সব স্টাফরা দরজাতে অনেকবার নক করেছে কিন্তু দরজা খোলার নামই নেই। তখন দ্রুত অয়ন আসে। এসেই দেখে দরজার সামনে বেশ কয়েকজন স্টাফ দাঁড়িয়ে আছে। অয়ন তাদের তাড়াতাড়ি করে সেখান থেকে সরে যেতে বলে। তারা সবাই সরে গেলে অয়ন দরজার সামনে গিয়ে ডুপ্লিকেট চাবি দিয়ে আব্রাহামের রুমের দরজা খোলে দেয়। দরজা খোলার সাথে সাথে এক বিশ্রী গন্ধ নাকে ভেসে আসে। অয়ন তাকিয়ে দেখে রুমের ভিতরে আলোর রেশ টুকু নেই শুধুই অন্ধকার। অয়ন সকল স্টাফদের সেখান থেকে চলে যেতে বললে তারা চলে যায়। অয়ন এবার আব্রাহামের রুমের ভিতরে গেলো। ভিতরে যাওয়ার সাথে সাথেই অন্ধকারে কিছু একটার সাথে ধাক্কা খেলো। অয়ন “আহ্” শব্দ করে ওঠলো। হাতিয়ে হাতিয়ে সুইচ খুজে লাইট অন করে দিলো। পুরো ঘরে আলো জ্বলে উঠলে অয়ন দেখে যে আব্রাহাম গুটিসুটি মেরে সুয়ে আছে। সারা ফ্লোরে সিগারেটের পোড়া অংশবিশেষ পরে আছে। এক দমকা ধোঁয়া সারা রুম জুড়ে। অয়ন হাফ ছেড়ে আব্রাহামের দিকে এগিয়ে যায়। আব্রাহামের পাশে বিছানার ওপর বসে পরে। অয়ন একটু কাত হয়ে দেখে যে আব্রাহাম দুহাত দিয়ে আইরাতের ছবি তার বুকের মাঝে জড়িয়ে ধরে আছে। অয়নের খুব মায়া হতে লাগে। নিজের চোখের সামনে এইসব কিছু মেনে নিতে খুব কষ্ট হয় তার। অয়ন ধীরে ধীরে আব্রাহাম কে ডাক দিতে লাগলো।

অয়ন;; দাভাই…

আব্রাহাম;; হুমম (ঘুমের ঘোড়ে)

অয়ন;; দাভাই, এভাবে আর কতোদিন বলতো। নিজের কি হাল করে রেখেছিস একবার খেয়াল করেছিস। নিজের চোখের সামনে নিজের ভাইয়ের এই অবস্থা কোন ক্রমেই মেনে নিতে পারি না আমি।

আব্রাহাম;; আমি ঠিক আছি অয়ন, একদম ঠিক আছি। ভালো আছি আমি (মুচকি হেসে)

আব্রাহাম আইরাতের ছবি পাশে রেখে বিছানা থেকে উঠে পরে।

অয়ন;; দাভাই…

আব্রাহাম;; অয়ন, “মায়া” নামক শব্দ টা কোন মাদকদ্রব্য বা নেশার থেকেও বেশি খারাপ। যে একবার এই মায়াতে নিজেকে জড়িয়ে ফেলে সেই বুঝে এটা কি জিনিস। একটা জলজ্যান্ত মানুষকে ভিতরে থেকে ধ্বংস করে দেওয়ার ক্ষমতা থাকে এই “মায়া” নামক শব্দে।

অয়ন;; ভাই তুই কেন…..

আব্রাহাম;; অয়ন, আজ ইন্ডিয়া থেকে কিছু ইম্পর্ট্যান্ট ক্লাইন্ট আসবে। তাদের সাথে অনেক বড় একটা ডিল সাইন করতে হবে। তাই আমি কোনভাবেই দেরি করে চাই না। তাড়াতাড়ি গিয়ে রেডি হয়ে সব ফাইল গুছিয়ে নে।

অয়ন;; আচ্ছা ভাই।

অয়ন আর কিছু না বলে চলে আসে কারণ সে জানে যে এখন আব্রাহামের সাথে কথা বলে কোন লাভই নেই। এখন চুপ থাকাটাই শ্রেয়। অয়ন চলে গেলো তার রুমে। রুমে গিয়ে সবকিছু গোছগাছ করতে লাগলো। আব্রাহাম টাওয়াল নিয়ে ওয়াসরুমে চলে গেলো।সারারাত সিগারেটের ধোঁয়ায় নির্ঘুম ভাবে কাটিয়েছে সে। তাই সকালের দিক দিয়ে চোখ লেগে এসেছিল।স্ট্রাফকে রুম পরিষ্কার করতে দিয়ে আব্রাহাম চলে যায় ফ্রেশ হতে।
ফ্রেশ হয়ে বেড়িয়ে পরে সে। ব্লেক পেন্ট, হুয়াইট কালার শার্ট, আর এশ কালারের সুট পরে রেডি হয়ে নিলো সে। আইনার সামনে দাঁড়িয়ে হাতে ঘড়ি পরছে সে। চোখে-মুখে কোঠোর একটা ভাব। এখনের এই আব্রাহাম কে দেখলে কেউ বুঝবেই না যে সে ভিতরে থেকে এতোটা ভাংা। আব্রাহাম রেডি হয়ে নিচে হলরুমে চলে আসে। অয়নও সাথে সাথেই এসে পরে। আবির আহমেদ আজ তার বাড়িতে নেই। সে অনাথআশ্রমে আব্দুল কাদির এবং বাচ্চাদের সাথে দেখা করতে গিয়েছে। তাই সকল স্টাফকে সবকিছু সঠিক ভাবে দেখতে বলে আব্রাহাম-অয়ন চলে গেলো। আর এছাড়াও বাড়িতে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো রয়েছে, যাতে করে কোন সমস্যা হবে না। আব্রাহাম-অয়ন গাড়ির ড্রাইভার কে বলে গাড়ি বের করতে বললো। গাড়ি পাকিং থেকে বের করলে তারা উঠে পরে। গাড়িতে বসে আব্রাহাম ল্যাপটপে মুখ গুজে দিয়ে বসে আছে। আর অয়ন, ও নিজের মতো করে বকবক করেই যাচ্ছে। আব্রাহাম শুধু তার কথার প্রতিউত্তরে হু হা করছে। এক সময় অয়ন বিরক্ত হয়ে বলে ওঠে…

অয়ন;; ভাই,

আব্রাহাম;; হুম

অয়ন;; ভাই প্লিজ দেখ এখন তো একটু রাখ। সারাদিন তো কাজের মধ্যেই ডুবে থাকিস এখনোও যাচ্ছিস মিটিং এ। বাট এই সময় টুকু তো একটু রাখ।

অয়নের কথা শুনে আব্রাহাম হাল্কাভাবে হেসে ওঠে। হাত থেকে ল্যাপটপ টা রেখে দেয় এবং অয়নের সাথে টুকটাক কথা বলতে থাকে। আব্রাহাম গাড়ির উইন্ডো খুলে দেয়। বাইরে থেকে আসা হাওয়াতে তার সামনে পরে থাকা চুল গুলো উড়ছে। শান্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আব্রাহাম আর গাড়ি চলছে উদ্যম গতিতে। কিন্তু কিছুটা যেতেই গাড়ি থেমে যায় ট্রাফিক পুলিশের সিগ্নালে। সামনে অনেক গাড়ি জ্যামে আটকা পরে গেছে। তাই তাদের গাড়িকেও থামতে হয়েছে। আব্রাহাম বিরক্ত হয়ে আবার বাইরের দিকে তাকায়।

অয়ন;; অসহ্যকর, এই জ্যাম কখন শেষ হবে!







নিপা-আইরাত-রাত্রি খুব শপিং করার পর মল থেকে বেড়িয়ে পরে।

নিপা;; তো এখন কোথায়?

আইরাত;; রেস্টুরেন্টে…!

রাত্রি;; হুমম চল যাওয়া যাক।

আইরাত;; কিন্তু আমাদের তো রাস্তা পার হতে হবে।

রাস্তার একপাশে দাঁড়িয়ে আছে তারা,, রাস্তা পার হতে হবে। রাস্তায় প্রচুর পরিমানে জ্যাম থাকার ফলে তারা হাত ধরে আস্তে আস্তে রাস্তা পার হতে লাগে। সামনে এগোতে যাবে তখনই আইরাতের জুতোর ফিতা খুলে যায়। আইরাত তাদের হাত ছেড়ে দিয়ে খানিক ঝুকে জুতোর ফিতা লাগাতে থাকে। কিন্তু তার আগেই নিপা & রাত্রি রাস্তার ওপরপাশে এসে পরে।

নিপা;; কিরে আইরু কোথায়?

রাত্রি;; আরে,, ওই দেখ ও ওর জুতোর ফিতা লাগাচ্ছে।

নিপা;; তুই ওকে রেখে চলে আসলি কেন?

রাত্রি;; আরে ওই আমার হাত ছেড়ে দিয়েছিলো। বেবিজান জলদি এপাশে এসে পর। (একটু জোড়ে ডাক দিয়ে)

রাত্রির ডাকে আইরাত মাথা তুলে তাকায়। হাতের ইশারাতে তাদের থামতে বলে। জুতোর ফিতা লাগিয়ে উঠে পরে। ডানে-বামে ভালোভাবে তাকিয়ে সামনের দিকে হাটা ধরে আইরাত।

___________________

আব্রাহাম বাইরের দিকে তাকিয়ে ছিলো তখন দেখলো এক সাদা রঙের ওরনা উড়ছে। আব্রাহামের ধ্যান সেদিকে চলে গেলো। এক ঝাপটা বাতাস এসে ওরনা কারো মুখের ওপর পড়লো। আব্রাহাম চোখ ছোট ছোট করে সেদিকেই তাকিয়ে থাকলো। মুখের ওপর ওরনা পরার কারণে মুখখানা স্পষ্ট দেখা না গেলেও,, তার অবয়ব দেখা যাচ্ছে। মেয়েটা ধীরে ধীরে তার হাত দিয়ে মুখের ওপর থেকে ওরনা টা সরিয়ে নিলো। পরমূহুর্তেই আব্রাহামের চোখ বড়ো বড়ো হয়ে গেলো। নিজের চোখকেই যেন বিশ্বাস হচ্ছে না তার। আকাশ বিস্ময়ী নয়নে আব্রাহাম তাকিয়ে আছে। কেননা মেয়েটি আর কেউ না আইরাত। আইরাতকে দেখেছে আব্রাহাম। হাত-পা কেমন যেন কাপতে শুরু করলো তার। চোখ যেমন সাথে সাথেই রক্তিম বর্ন ধারণ করেছে তেমনই চোখের কোণে পানিও জমেছে। আইরাত হেটে ওপরপাশে চলে গেলো। আব্রাহাম কিছু বলতে যাবে তার আগেই ট্রাফিক পুলিশের ইশারাতে সব গাড়ি এক এক করে যেতে শুরু করলো। আব্রাহামের গাড়ি ও সামনে চলে যেতে ধরলো। আব্রাহাম অস্থির হয়ে শুধু বাইরে তাকিতুকি করছে। গাড়ি জোড়ে স্টার্ট দিলে আব্রাহাম চিল্লিয়ে ওঠে…

আব্রাহাম;; Stop the car.. (চিল্লিয়ে)

আব্রাহামের কথায় গাড়ির ড্রাইভার সাথে সাথে গাড়ি থামিয়ে দেয়। অয়ন নিজেও কিছুটা ভেবাচেকা খেয়ে যায় আব্রাহামের এহেন কান্ডে।

অয়ন;; ভাই, কি হয়েছে হঠাৎ করে গাড়ি থামাতে বললি কেন?

আব্রাহাম;; (কিছু বলছে না শুধু অস্থির হয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে)

অয়ন;; ভাই, হয়েছে কি তোর?

আব্রাহাম;; অঅয় অয়ন, আআয়ামি আমি..

অয়ন;; হলো কি! (বেশ চিন্তিত হয়ে)

আব্রাহাম;; অয়ন আমি, আমি আই আআইরা আইরাতকে দেখেছি।

অয়ন;; কিহ বউমনি, ভাই কি সব বলছিস তুই!

আব্রাহাম;; অয়ন, অয়ন অন্তত তুই তো আমায় বিশ্বাস কর। আমি সত্যি বলছি আমি আমার আইরাতকে দেখেছি।

অয়ন;; কোথায়?

আব্রাহাম;; এখানেই, একটু আগে রাস্তা পার হতে। অয়ন আমি দেখেছি আইরাত কে।

অয়ন;; ভাই, ওটা তোর মনের ভুল।

আব্রাহাম;; না অয়ন, আর যাই হোক আমি আমার আইরাতকে নিয়ে কখনোই কিছু ভুল দেখবো না।

অয়ন;; ভাই আমি বুঝতে পারছি কিন্তু…

অয়ন কিছু বলতে যাবে তার আগেই আব্রাহাম দ্রুতবেগে গাড়ি থেকে নেমে পরে। অয়ন আব্রাহামকে ডাকতে লাগে কিন্তু আব্রাহামের সে দিকে কোন হুশ নেই। সে রাস্তার মাঝখানে এসে চারিপাশে পাগলের মতো আইরাতকে খুজতে লাগে। অয়ন আর দেরি না ছুটে আব্রাহামের কাছে এসে পরে।

অয়ন;; দাভাই দেখ তুই ভুল কিছু একটা দেখেছিস।

আব্রাহাম;; এটা কখনোই সম্ভব না অয়ন। আমার চোখ আমার আইরাতকে চিনতে কখনোই কোন ভুল করতেই পারে না, এটা এককথায় অসম্ভব। আমার আইরাত আছে আর আমি নিজ চোখে দেখেছি।

অয়ন;; আচ্ছা ঠিকআছে মানলাম তুই আইরাত বউমনি কে দেখেছিস। এবার চল পরে সবকিছু দেখছি। দাভাই প্লিজ চল এখান থেকে।

আব্রাহাম আসতে না চাইলে অয়ন এক প্রকার জোড় করেই তাকে টেনে এনে গাড়িতে উঠিয়ে দেয়। আব্রাহাম গাড়ি তে বসে দুহাত দিয়ে তার মাথা চেপে ধরে।

আব্রাহাম;; অয়ন ভাই বিশ্বাস কর, আমি আইরাতকে দেখেছি, নিজ চোখে দেখেছি। আর আমি ওকে ভুল দেখতেই পারি না।

অয়ন;; আচ্ছা মানলাম। এবার চল

আব্রাহাম গাড়ির সিটে হেলান দিয়ে মাথা আলতো করে সিটের সাথে রেখে দেয়। চোখজোড়া বন্ধ করে হাতের দু আঙুল দিয়ে কপালে স্লাইভ করতে থাকে। আইরাতের মুখখানা ভাসছে তার সামনে। আজ আইরাতকে এতোদিন পর দেখতে পেয়ে পুরো পাগল হয়ে গেছে আব্রাহাম।

___________________

আইরাত;; এসেছি, এসেছি। আমি এসে গেছি।

রাত্রি;; হাত ছেড়েছিস কেন আমার?

আইরাত;; আরে আমার জুতোর ফিতা খুলে গিয়েছিলো তো। না লাগালে পায়ে হোচট খেয়ে পরে যেতাম তো।

নিপা;; আচ্ছা এখন হয়েছে তো। এবার ভিতরে চল।

তারা তিনজনেই রেস্টুরেন্টের ভিতরে চলে গেলো। খেয়ে দেয়ে, আরো ঘুড়াঘুড়ি করে বেশ রাত করেই বাড়ি ফিরলো তারা।



আব্রাহাম-অয়ন অফিসে গেলো। নিজেকে যথাসাধ্য সামলে নিয়ে সব কাজ করে যাচ্ছে আব্রাহাম। কিন্তু মনে-মস্তিষ্কে কোথাও শান্তি নেই, খুব অস্থিরতা কাজ করছে তার মাঝে। মিটিং শেষে নিজের কেবিনে গিয়ে মাথা নিচু করে বসে থাকে আব্রাহাম। আইরাতের কথা কোন ভাবেই মাথা থেকে সরছে না তার। সবাই যদিও বলেছিলো যে আইরাত মৃত। হাজার খোঁজাখোজির পরও কেউ তাকে খুজে পায় নি। পুলিশের কথা কে তোয়াক্কা না করে আব্রাহাম নিজে আইরাতকে তন্নতন্ন করে খুজেছে কিন্তু তবুও পায় নি। যদি আইরাত মারাই না যায় তাহলে এতোদিন কোথায় ছিলো সে আর কেনই বা তার কাছ থেকে দূরে ছিলো। তবে কি আইরাতের বাবা-মাকে খুন করার ভুল বুঝাবুঝি আইরাত এখনও তার মনে বয়ে বেড়াচ্ছে। যে করেই হোক আইরাতকে তার খোঁজে বের করতেই হবে। অনেক দূরে দূরে থেকেছে আইরাতের কাছ থেকে সে। তিলে তিলে শেষ হয়ে যাচ্ছে আব্রাহাম কিন্তু এখন আর না। যেকরেই হোক আইরাতের খোজ তার পেতেই হবে। আব্রাহাম এই সবকিছু নিজে নিজেই ভাবছে। তখন তার ফোন বেজে ওঠে…

আব্রাহাম;; হ্যালো, রাশেদ

রাশেদ;; জ্বি স্যার

আব্রাহাম;; রাশেদ, পুরো শহর আবার খোঁজ করো। আমি মানি না যে আমার আইরাত নেই আর আজকের পর থেকে তো আরো মানি না। তন্নতন্ন করে খোঁজ করো সব জায়গাতে। এতে যে যাই বলুক I really Don’t care about that….

রাশেদ;; জ্বি স্যার,, আমি প্রতি সেকেন্ডের খবর আপনাকে দিতে থাকবো।

রাশেদের সাথে কথা বলে আব্রাহাম ফোন কেটে দিলো। মনের মধ্যে তার এক প্রকার ঝড় বয়ে যাচ্ছে। এই ঝড় থামার না, একমাত্র আইরাতই পারে আব্রাহামের এই অশান্ত মনকে শান্ত করতে।










💟🌷চলবে~~~~~

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে