# EX গার্লফ্রেন্ড যখন পুলিশ অফিসার ?
# লেখকঃ Sahid Hasan Sahi
# পর্বঃ ১৬শ
সামিয়া আর আমি ছাদে আসলাম। ছাদে আসার পরে আমি দোলনায় বসতেই সামিয়া আমার কোলের উপর মাথা রেখে পা দুটি ছড়িয়ে দিয়ে শুয়ে পড়লো। আমি সামিয়ার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলাম। আজ জানি কথা বলতেও ভালো লাগতেছে না।
আকাশের দিকে তাকিয়ে তারাদের মিটিমিটি রুপ দেখতেছি। মাঝে মাঝে মেঘের সাথে লুকোচুরি খেলতেছে। চাঁদের উপরেও আজকে কেমন যেন মেঘের প্রলেপ পড়েছে।
সামিয়া হাত দিয়ে আমার মুখটা তার দিকে ঘুরিয়ে নিয়ে চোখে চোখ রেখে বললোঃ কি হয়েছে তোমার তুমি এমন করতেছো কেন?
বিকেলের বিষয়টা নিয়ে এতো ভাবতেছো। আমি ভুল করেছি আমাকে মারো বকা দেও, তবুও তুমি এমনভাবে থেকো না।
সামিয়ার কপালে একটা চুমু দিয়ে বললামঃ না রে পাগলি। এমনিতেই শরীরটা একটু খারাপ করতেছে।
সামিয়া আমার কথা শুনে আমার কোল থেকে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে যায়ে বললোঃ নিচে চলো এখানে আর থাকতে হবে না। তোমাকে কফি বানিয়ে দিচ্ছি ।খাবে চলো।
নিচে আসলাম। আমি সোফায় বসে থেকে টিভি দেখতেছি আর সামিয়া আমার জন্য কফি বানাতে গেল।
সামিয়া কে সত্য টা বললাম না। কারণ আমি চাইনা আমাদের সম্পর্কে সন্দেহের বীজ রোপণ হোক। আমি যদি বিষয়টা তাকে কড়া ভাবে বলি বা বারবার জিজ্ঞাসা করি তাহলে তার কাছে বিষয়টি অন্যরকম মনে হবে।
একটু পর সামিয়া কফি নিয়ে এলো। দুজনে কফি খাওয়ার পর ডিনার করে রুমে এসে শুয়ে পড়লাম। সকালে ঘুম থেকে উঠে নাস্তা করে আমি অফিসে আসলাম আর সামিয়া থানায় গেল। অফিস করে বাসায় এসে দেখি সামিয়া এখনো আসেনি।
সামিয়া আসার পরে আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলামঃ দেরি হলো কেন?
সামিয়া আমার কথার কোনো উত্তর না দিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে গেল। আমি কিছু টা অবাক হলাম। একটু পরেই মনে হলো সে হয়তোবা কোনো প্রেসারে আছে এইজন্য কথা বলতেছে না।
পরেরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি সামিয়া পাশে নেই মানে থানায় চলে গেছে। আমিও আমার অফিসে চলে আসলাম।
এইভাবে কেটে গেল বেশ কয়েকদিন। মাঝে মাঝেই সামিয়া আর সিহাব বসে থেকে কফি খাইতো গল্প করতো। কিন্তু আমি সামিয়া কে এই বিষয়ে বললে সে আমাকে বলে, সেতো তার সাথে গল্প করতেছে আর তো কিছু না। আমিও আর কিছু বলি না। আজকে অফিসের একটি মিটিং আছে যেটা একটা রেস্টুরেন্টে হওয়ার কথা।
আমি লাঞ্চ টাইমে গাড়ি নিয়ে বের হলাম সেই রেস্টুরেন্টে। মাঝ রাস্তায় যায়ে একটা রিকশায় নজর পড়লো। রিকশায় ছিলো সামিয়া আর সিহাব। এটা দেখার পর সামিয়ার প্রতি আমার প্রচুর পরিমাণে রাগ উঠলো। নিষেধ করা সত্ত্বেও সে কেন সিহাবের সঙ্গে ঘোরাফেরা করবে।
আমিও তাদের পিছু নিলাম। দূরত্ব বজায় রেখেই আমি তাদের পিছে পিছে যাচ্ছি। কেননা, সামিয়া আমার গাড়ি দেখলেই চিনতে পারবে। কিছুদূর যাওয়ার পরে দেখি তারা দুজনে রিকশা থেকে নেমে একটা পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকা বাসায় ঢুকতেছে। সামিয়া আর সিহাব কে দেখে দুজন লোক মুচকি হেসে সামিয়া আর সিহাবের সঙ্গে হাত মিলালো। তবে সামিয়া এখন সাধারণ ড্রেস পরে আছে। মানে একটা শাড়ি পড়ে আছে।
সামিয়া আর সিহাব ভিতরে ঢুকার পর লোকগুলো দরজা লাগিয়ে দিয়ে ভিতরে ঢুকে গেল। এসব দেখে আমার মাথায় রক্ত উঠে গেল। রাগে হাতের শিরা গুলো ফুলতে শুরু করলো। আমি সেখান থেকে বাসায় চলে আসলাম।
আর ম্যানেজার কে ফোন দিয়ে মিটিং ক্যান্সেল করে দিতে বললাম। বাসায় এসে বেডে শুইয়ে পড়লাম। বিকেল বেলা সামিয়া বাসায় আসলো।আমি সামিয়া কে জিজ্ঞাসা করলামঃ আজকে লাঞ্চ টাইমে কোথায় গিয়েছিলে?
সামিয়া আমার কথাই চমকে উঠলো। মনে হচ্ছে আমার জানার কথা না। সামিয়া নিচের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বললোঃ সেটা নাহয় অজানাই থাক। বলতে পারো এটা তোমার জন্য একটা সারপ্রাইজ। তবে আর কয়েকদিন পরে আরো একটা সারপ্রাইজ পাবে যেটা তুমি কখনো কল্পনাও করতে পারবে না।
আমি কিছু না বলে রুম থেকে বেরিয়ে আসলাম। সামিয়া আসলে কি বুঝাতে চাচ্ছে? সেকি আমার কাছে কোনো কিছু লুকাচ্ছে?
সকালে অফিসে চলে গেলাম। সামিয়া আজকেও আমার আগেই চলে গেছে। আর যাওয়ার সময় বললো যে, আজকে নাকি তার আসতে দেরি হবে।কি যেন একটা কাজ আছে।
অফিসে এসে কাজ করতেছি লাঞ্চ টাইমের কয়েক মিনিট আগে ই-মেল এ কয়েকটা একটা ভিডিও আর কয়েকটা ফটো আসলো। ভিডিও টা কয়েক মিনিট প্লে হওয়ার সাথে সাথে মোবাইলটা হাত থেকে পড়ে গেল।
আর মনে হচ্ছে আমার দুনিয়াটা অন্ধকার হয়ে গেল। কি দেখলাম এটা? আমি সামিয়া আমাকে এভাবে ঠকাবে তা কখনো ভাবতেই পারিনি। এটাই ছিলো সামিয়ার দেওয়া সারপ্রাইজ। মোবাইল টা হাতে নিয়ে বাসায় চলে আসলাম। ভিডিও টা ছিলো সামিয়া আর সিহাবের কিছু ঘনিষ্ঠ সময়ের। যেখানে সামিয়া সিহাবের সঙ্গে যৌনকর্ম লিপ্ত হয়েছে।
বাসায় এসে আম্মু আব্বু আর সামিয়ার মা বাবা কে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমার বাসায় আসতে বললাম। তারা কিছু জানতে চাইলে বললাম, এখানে আসলেই বুঝতে পারবে।
বিকেলে আব্বু আম্মু আর সামিয়ার মা বাবা আসলো। তাদেরকে ভিডিও আর ফটো গুলো দেখালাম। দেখার সাথে সামিয়ার আম্মু সোফায় বসে পড়লো। আর আমার বাবা মা বাকরুদ্ধ হয়ে গেল। তারাও হয়তো কখনো ভাবতে সামিয়া এমন করবে।
সন্ধ্যার দিকে সামিয়া বাসায় আসলো। আমরা সকলে সোফায় বসে আছি। সামিয়া তার মা-বাবাকে দেখে বেশ অবাক হলো। কারণ, তার মা বাবা আসবে সেটা সে জানে না। সামিয়া তার আম্মুর কাছে যায়ে বললোঃ আম্মু তুমি কখন আসলে?
সামিয়ার আম্মু সামিয়া ঠাসস ঠাসস করে দুইটা চড় মারলো। চড় টা খুব জোরে মারাই সামিয়া তাল সামলাতে না পেরে মেঝেতে পড়ে গেল।
সামিয়া হতভম্ব হয়ে গেল। উঠে তার মাকে জিজ্ঞাসা করলোঃ আম্মু তুমি আমাকে মারলে কেন? আমি কি করেছি?
সামিয়ার আম্মু সোফার উপর থাকা ফটো গুলো সামিয়ার মুখের উপর ছুড়ে মেরে বললোঃ দেখ তুই কি করেছিস? ছিঃ আমার ভাবতেই খারাপ লাগতেছে তুই আমাদের মেয়ে!
সামিয়া ফটো গুলো হাতে নিয়ে দেখে দুই কদম পিছনে এগিয়ে যায়ে তার মায়ের দিকে তাকিয়ে বললোঃ বিশ্বাস করো আম্মু আমি এসব কিছুই করিনি।
সামিয়ার আম্মুঃ খবরদার তুই আমাকে আম্মু বলে ডাকবি না।
সামিয়া কান্না করতে করতে তার আব্বু কে বললোঃ আব্বু বিশ্বাস করো আমি এসব করিনি।
সামিয়ার আব্বুঃ ছিঃ সামিয়া এটাই ছিলো তোমার মনে? যেই ছেলেটা তোমাকে পাগলের মতো ভালোবাসে আর তাকেই তুমি ঠকালে? আমরা মনে করতাম তুমি আমাদের গর্ব কিন্তু তুমি আজ বাইরে এসে এসব করে বেড়াচ্ছো। আমি আর কোনো দিন তোমার ঐ পাপী মুখটা দেখতে চাই না। আর হ্যাঁ তোমার আম্মু ঠিকই বলেছে আজ থেকে আমাদের কোনো মেয়ে নেই। যেটা ছিল সেটা আমাদের কাছে মৃত।
সামিয়া দৌড়ে আমার কাছে এসে আমার হাত ধরে বললোঃ প্লিজ সাহিদ তুমি তো বিশ্বাস করবে আমায়। আমি জানি আম্মু আব্বু মিথ্যা বলতেছে প্লিজ তুমি তাদের কে বুঝানো না।
সামিয়া কে কিছু না বলে,,
( চলবে)
? গল্প টা শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ রইল ?