? Crush when cousin ?
#Part:: 7️⃣ (Last part)
Writer #Mohammed_Ayman_Ulah_Emon
.
দুই দিন কেটে গেল সোনম এর মাঝে মোটামুটি সুস্থ হয়ে উঠেছে আজ আমার রেজাল্ট দিবে। আমি সকাল থেকেই রেডি হয়ে আছি। অর্পি একটু পর পর ফোন দিচ্ছে।
আমি মাকে বলে বের হলাম বাসা থেকে অর্পিকে সাথে নিয়ে ভার্সিটিতে পৌছে গেলাম। রেজাল্ট বের
হলো দুজনেই খুব ভাল ভাবে পাশ করেছি।
আমি অর্পিকে বললাম: “তোমাকে আমার কিছু কথা বলার আছে” অর্পিও বলে উঠলো “আমারও তোমাকে কিছু কথা বলার আছে।” বলে একে অপরের দিকে চেয়ে আছি।
অর্পি বললো, “তুমিই আগে বলো,”
আমি, “না তুমিই আগে বলো।”
অর্পি, “না তুমিই আগে বলছো সো তুমিই বলো।”
আমি, “অর্পি আমি প্রেমে পরে গেছিরে, তোমাকে বলবো বলবো বলেও বলতে পারিনি কিন্তু আজ তোমাকে বলতেই হবে বলে বলে দিলাম।”
অর্পি খুশি হয়ে, “সত্যি বলছিস?”
আমি, “হুম সত্যি বলছি আমি সোনমকে ভালবেসে ফেলেছি, আর তুমি আমার বেষ্ট ফ্রেন্ড তোমাকে না বলে আমি থাকতে পারছিলাম না।”
অর্পির দুচোখ বেয়ে পানি পড়ছে, আমি বললাম, “কি হলো, তুমি কান্না করছো কেন?”
অর্পি, চোখের পানি মুছতে মুছতে “আরে এটা খুশির
কান্না, তুমি আমাকে এতো বড় একটা নিজউ দিছো খুশিতে চোখে পানি চলে এসেছে। যে ছেলের কানের সামনে ভালবাসার কথা বললেই রেগে আগুন হয়ে যেতো সেই ছেলে প্রেমে পড়েছে এতে আমার কি যে খুশি লাগছে তা বলে বুঝাতে পারবো না।”
আমি, “আচ্ছা এবার বলো তুমি কি বলতে চেয়েছিলে?”
অর্পি, “আজ না অন্য কোন দিন আজ তোমার সারপ্রাইজটা হজম করে নেই তারপর। এখন চলো ট্রিট দিবো তোমাকে” বলেই অর্পি আমার হাত ধরে নিয়ে বের হয়ে গেল।
অর্পি আর আমি সামনা সামনি বসে আছি কারো মুখে কোন কথা নেই।
নিরবতা ভেঙে অর্পি বলে উঠলো: “তুমি কি জব করবে? আমি কি বাবার সাথে কথা বলবো?”
আমি, “না আগেই কিছু বলো না, আসলে ফুপু চাচ্ছে আমি তাদের ব্যবসাটা দেখা শোনা করি আমি কালকেই ঢাকা যাবো। যদি ব্যবসা ভাল না লাগে তবে তোমাকে কল দিয়ে জানিয়ে দিবো তখন তুমি আংকেলকে বলো।”
অর্পি, কান্না করে দিয়ে “ঢাকায় যেয়ে আমাকে ভুলে যাবানাতো?”?
আমি, “আরে কি বলো! তুমি আমার বেষ্ট ফ্রেন্ড, তোমাকে কি করে ভুলে যাবো? এটা কি কোন ভাবে সম্ভব?”?
অর্পি, “হয়তো তবে সময় মানুষকে বদলে দেয় বুঝলা। ঢাকা যাবে বড় ব্যবসা সামলাবে ভালবাসার মানুষটা পাশে থাকবে তখন হয়তো কথা বলতে তোমার সমস্যা হতেও পারে। সে যাই হোক যদি কখনো এমন পরিস্থিতি হয় আমাকে সরাসরি বলে দিবা বুঝলা। কারণ আমি চাইনা আমার বেষ্ট ফ্রেন্ডের কোন সমস্যা হোক আমার জন্য।”
আমি, “থ্যাংক্স, তোমাকে আমাকে নিয়ে এতো ভাবার জন্য।”
অর্পি, “কি যে বলো! এই না হলে বেষ্ট ফ্রেন্ড।”
দুজনে মিলে খেয়ে রেষ্টুরেন্ট থেকে বের হয়ে একটা রিক্সা নিয়ে অর্পিকে ওর বাসার সামনে নামিয়ে দিলাম।
আমিও ওর সাথে নামলাম, অর্পি আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিয়ে বলতে শুরু করলো “আমাকে ভুলে যাইও না, আমি কোন দিনও তোমাকে ভুলতে পারবো না।”?
আমি ওকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে “আমার জীবনের সব চেয়ে সুন্দর মুহুর্ত গুলো তোমার সাথে কেটেছে কি করে তোমাকে ভুলে যাবো আমি।”
কথা শেষ হতেই অর্পি দৌড়ে বাড়ির ভিতর চলে গেল। আমি রিক্সা নিয়ে বাসায় চলে আসলাম।
সোনমকে আর মাকে জানালাম রেজাল্টের কথা দুজনেই বেশ খুশি হলো। মা বললো “তাহলে কি সিদ্ধান্ত নিলি?”
আমি, “কিসের সিদ্ধান্ত?”
“জব করবি নাকি ওদের ব্যবসা দেখবি?”
“আগে কাল ওকে নিয়ে যাই যদি দেখি ব্যবসা করতে পারবো তাহলে করবো নয়তো কোন জব দেখে নিবো।”
সোনম, “হুম তাও ভাল আমিতো ভাবছিলাম।”
“এই তোর ভাবা গুলোই বেশী বেশী বুঝছোর।”
সোনম, “হুম বুঝলাম এখন বলো কি ট্রিট দিবা?”
“আমি ট্রিট দিবো কেন? তুই আমাকে ট্রিট দিবি কষ্ট করে পাশ করলাম আমি আর ট্রিট দিবো ওকে।”
সোনম, “তো কি হয়েছে সবাই কষ্ট করে পড়াশোনা করেই পাশ করে, তার জন্য কি তারা ট্রিট দেয় না?”
“কি জানি তারা দিতে পারে কিন্তু আমি দেইনা আমি নেই।”
সোনম, “ওকে তাহলে আমার ঘরে আসো ট্রিট দিবো।” বলেই সোনম হেঁটে সোজা ঘরে ঢুকে গেল।
আমিও হেঁটে ওর রুমে চলে আসলাম। “নে আসলাম এবার আমার ট্রিট দে” বলতেই সোনম যেয়ে দরজাটা লাগিয়ে দিলো।
আমি, “এই দরজা লাগালি কেন?
সোনম কোন কথা না বলে সোজা আমার ঠোটে ওর ঠোটটা ????লাগিয়ে দিয়ে বললো এই যে তোমার ট্রিট আই লাভ ইউ আইমান।???
আমি আজ আর নিজেকে থামিয়ে রাখতে পাড়লাম না। সোনমকে জড়িয়ে ধরে বললাম “আমিও যে তোকে ভালবেসে ফেলেছি। কিন্তু আমাদের দুই পরিবার কি এ সম্পর্ক মেনে নিবে?”
সোনম, “তোমাকে এগুলা নিয়ে ভাবতে হবে না সব কিছু আমার উপর ছেড়ে দাও।”
“ছেড়ে দিবো মানে তুই কি করবি?”
সোনম, “আমি সব কিছু সামলে নিবো, কি করে মেনে নেয় তা তুমি শুধু দেখে যাও” বলেই ওর সেই ভুবণ ভুলানো হাসিটা দিলো, আমি অপলক চেয়ে রইলাম ওর সে হাসির দিকে।
সোনম, “কি দেখছো এমন করে?”
“কিছু না” বলে রুম থেকে বের হয়ে এলাম। পরদিন সকালেই দুজনে রওনা হয়ে সন্ধ্যায় ঢাকা চলে আসলাম। পুরোটা পথ সোনম আমার ঘাড়ে মাথা রেখে ঘুমাতে ঘুমাতে আসছে।??
বাসায় আসতেই ফুপা ফুপু আমাকে দেখে অনেক খুশি হলেন। ফুপাতো বলেই বসলেন “আমার এখন অবসরের সময় হয়ে গেছে সোনমের মা তোমার ছেলে চলে এসেছে এবার তাকে সব বুঝিয়ে দিয়ে আমি রেস্টে যাবো।”
বিশাল বড় বাড়ি ফুপুদের, রাতে ছাদ এ বসে আছি সোনম দুই মগ কফি নিয়ে এসে বললো গান শোনবে আজ খুব গান শোনতে ইচ্ছে করছে তোমার কন্ঠে। তুমি গান গাইবে আর আমি তোমার কাঁধে মাথা রেখে তা শোনবো।
“হুম তুই আমার কাঁধে মাথা রেখে গান শোন আর ফুপা ফুপু এসে দেখুক।”
সোনম, “কিছু হবে না দেখলে আর আমি তুই তুই করে বলবা না। ভালবাসার মানুষকে কি কেউ তুই করে বলে?”
“আমি তোকে তুমি করে বলতে পারবো না, আমার কেমন কেমন জানি লাগে।”
“কেন পারবা না? অর্পিকেতো তুমি করে ঠিকই বলো বন্ধু হবার পরেও।”
“এই যা ভাল কথা মনে করিয়ে দিয়েছিস অর্পিকেতো ফোন দেয়া হলো না। একটু অপেক্ষা কর আমি একটা কল দিয়ে তারপর তোকে গান শোনাচ্ছি” বলেই ফোনটা হাতে নিয়ে অর্পিকে কল দিলাম।
অর্পি, “কেমন আছো ঠিকমতত পৌছাইছো?”
“হুম ঠিক মতই এসেছি তুমি কেমন আছো খেয়েছো?”
অর্পি, “না খাইনি খাবো, নিজের খেয়াল রেখ আর যখনি মনে পরবে কল দিও” বলেই হাউমাউ করে কেঁদে দিলো অর্পি।?
“এই কাঁদছিস কেন?”
অর্পি, “কিছুনা এমনি তোমাকে খুব মনে পরবে আচ্ছা রাখি” বলে অর্পি ফোন কেটে দিল। খুব খারাপ লাগলো সত্যিই খুব মিস করবো ওকে।
আমি সোনমের হাত ধরে বললাম “কি গান শুনবি?”
সোনম, “তোমার সব চেয়ে প্রিয় যে গান সেটাই শুনবো আজ,”
আমি গান শুরু করলাম।।
????????????
” নীলাঞ্জনা
ঐ নীল নীল চোখে চেয়ে দেখ না
তোমার ঐ দুটি চোখে আমি হারিয়ে গেছি
আমি বোঝাতে তো কিছু পারি না
নীলাঞ্জনা ……
বিরহ ব্যথাতে এই মন ভেঙ্গে যায়
না পাওয়ার আঁধারে খুঁজেছি তোমায়
কতগুলো ফাগুন গিয়েছে ফিরে
আশাগুলো কেঁদেছে তোমার দ্বারে
আজ সব ব্যথা ভুলে যাব চেয়ে দেখ না
তোমার ঐ দুটি চোখে আমি হারিয়ে গেছি
আমি বোঝাতে তো কিছু পারি না
নীলাঞ্জনা ……
বহুদিন পরে এসেছে মধুমাস
তোমার যত সুখ সে তো আমার সন্ন্যাস
মেঘের ডানায় রূপের সোনালী ছায়া
প্রেমে ভরা চোখে সুখের নেই সীমানা
সেই সুখ চোখে নিয়ে আমায় সুখি কর না
তোমার ঐ দুটি চোখে আমি হারিয়ে গেছি
আমি বোঝাতে তো কিছু পারি না
নীলাঞ্জনা”
????????????
গান শেষ হতেই পেছন থেকে ফুপু তালি দিতে দিতে বললো: “আরে বাহ আমাদের ইমনতো খুব ভাল গানও গাইতে পারিস,”
সোনম তাড়াতারি আমার ঘাড় থেকে মাথা সরিয়ে নিলো। আমি কিছুটা লজ্জা পেয়ে মাথা নিচু করে আছি
সোনম বললো “হুম অনেক সুন্দর করে গান করে,” অনেকটা সময় আড্ডা দিয়ে নিচে নেমে আসলাম।
দেখতে দেখতে এক সপ্তাহ পার হয়ে গেল, ঘুরাঘুরি করেই, রাতে খেতে বসছি ফুপা বললো “কাল থেকে ইমন আমার সাথে যাবে অফিসের কাজ বুঝে নিবে। কি বলো! ইমন,, কোন সমস্যা আছে?”
“জ্বি না আমার কোন সমস্যা নেই,”
এই কয়েকদিনে আমি বুঝে গেছি ফুপা ফুপু আমাকে যথেষ্ট্য ভালবাসে আর আমিও সোনমকে ভালবাসি আর তাই ওকে পেতে হলে আমাকে তাদের মনের মত করেই নিজেকে তৈরি করতে হবে।
পরদিন থেকে ব্যবসায় ফুপাকে সাহায্য করতে শুরু করলাম। দেখতে দেখতে তিনমাস কেটে গেল, আমি প্রায় সব কাজ বুঝো নিয়েছি। অর্পির সাথেও যোগাযোগ কমে গিয়েছে। এখন আমার ব্যস্ততা অফিস আর সোনমকে নিয়ে।
অফিস শেষ করে বাসায় ফিরতেই ফুপুর ঘরের সামনে আসতেই শোনতে পাই ফুপু আম্মুর সাথে কথা বলছে। আম্মুকে বলছে তাড়াতাড়ি আসতে বাবাকে সাথে করে নিয়ে। ফুপা আর অফিস করতে চাচ্ছে না যতদ্রুত সম্ভব আমাকে সব বুঝিয়ে দিবে সেই সাথে সোনম আর আমার বিয়েটাও করিয়ে দিবে।
আমার কি পরিমাণ খুশি লাগছিল বলে বুঝাতে পারবো না। আমি ঘরে ঢুকে ফ্রেশ হয়ে অর্পিকে ফোন দিলাম অনেক দিন ওর সাথে কথা হয়না, তাই সবার আগে খুশির কথাটা ওকেই জানানোর জন্য ফোন দিলাম।
অর্পি আমার কথা শোনে খুব খুশি হলো সেই সাথে জানালো যে ওর ও বিয়ে ঠিক হয়েছে শুনে আমার খুব ভাল লাগলো, আমি ওকে বলে রাখলাম যে যারই বিয়ে আগে ঠিক হোক না কেন ঠিকই চলে আসবো একজন আরেক জনের বিয়েতে। তারপর আরও কিছু সময় কথা বলে ফোন রেখে দিলাম।
রাতে খেতে বসতেই ফুপু বললেন মা, বাবা আসছেন দুই একদিনের ভিতরেই। ফুপা বললেন “কালকেই আমার শেষ অফিস” সোনম পাশে বসেই হাসছে। আমি সব বুঝেও না বুঝার মত বসে আছি ফুপাকে বললাম “কাল শেষ অফিস কেন?”
ফুপা, “কাল থেকে অফিসে নতুন এম, ডি হিসেবে আয়মান জয়েন করছে তাই।”
“আমি এতো বড় অফিস কি করে সামলাবো?”
ফুপা, “যেমন করে আমি এতোটা বছর চালিয়েছি” বলেই ফুপা হেসে দিলেন। খাওয়া শেষ করে রুমে ঢুতকেই সোনম এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে বলতে শুরু করলো “আমি আজ অনেক খুশি আমার সব স্বপ্ন পূর্ণ হতে চলেছে।”
আমি বললাম, “কি স্বপ্ন?”
সোনম, “তুমি বাবার ব্যবসা বুঝে নিচ্ছো আর কয়েক দিনের ভিতরে তোমার আমার বিয়েটাও হয়ে যাচ্ছে।”?
“আর তোর পড়াশোনা?”?
সোনম, “কেন বিয়ের পরে কি পড়াশোনা হয় না?”?
আমি “বিয়ের পর কি করে পড়াশোনা করবি তখনতো এক ডজন ছেলে মেয়ে তোকে পালতে হবে”?? বলেই হেসে দিলাম।??
সোনম আমার বুকে চড় ঘুসি মারতে মারতে বিছানায় ফেলে দিলো। আমি ওকে জড়িয়ে ধরে কপালে আলতো করে একটা চুমু দিয়ে বললাম সত্যিইরে কি করে যেন সব সপ্ন গুলো সত্যি হয়ে গেল। সারা জীবন যেন এভাবেই আমরা ভালবেসে এক সাথে সব সপ্ন গুলো সত্যি করতে পারি।।।
❤️❤️❤️❤️❤️❤️❤️❤️❤️❤️❤️❤️❤️
****************** সমাপ্ত **************