Angry_Husband
Season_2_Part_26
Written by Avantika Anha
সকাল হতেই আরাভ দ্রুত তৈরি হয়ে নিলো। আরাভকে বের হতে দেখেই ওর মা,
মা- আরাভ।
আরাভ- জ্বী আম্মু।
মা- তুমি কাল রাতে কই গেছিলা? আর তোমার মামা কেনো জানি ফোন ধরছে না। একটু দেখে আসিও।
আরাভ- আচ্ছা পরে যাবোনে।
মা- আচ্ছা।
.
আরাভ তাড়াতাড়ি আনহাকে ফোন দিলো বের হয়েই,
আরাভ- হ্যা তোমার অফিসে আসা লাগবে না। আমিই তোমার বাড়ির সামনে আসছি।
আমি- না আমিই নিয়ে নিবো।
আরাভ- তোমার এতো বের হতে হবে না। তুমি তোমার আনভীরের খেয়াল রাখো। (আরাভও ইনডিরেক্ট বললো)
আমি- হুম। আচ্ছা বাড়ির সামনের কফি শপে আসুন।
.
এটুকু বলে ফোন কেটে দিলাম। কেনো জানি আরাভের কথা শুনে আজব লাগছিলো। কেমন একটা রহস্যের মতো। রেডি হয়ে বাইরে বের হয়ে দেখি প্রেয়সির শশুড়বাড়ির লোকজন বসে আছে।
আমি- আসসালামুয়ালাইকুম।
বড়রা সালাম নিলো।
.
প্রেয়সির চাচি শাশুড়ি- এইতো মেয়েই এখানে ওর সামনেই কথা হোক।
আমি- মানে কি কথা?
আম্মু- আনহা এদিকে আয়। (আম্মু আমাকে এক কোণায় নিয়ে গিয়ে যা বললো তা শুনে আমি থ।)
.
কারণ তারা আমার বিয়ের প্রস্তাব এনেছে।
আমি- আম্মু আমি বিয়ে করবো না।
আম্মু- কেনো করবি না? সারাজীবন কি এভাবে থাকবি নাকি? তাছাড়া তুই তো একা না। আনভীরও আছে।
আমি- আমি তো তোমাদের উপর বোঝা হয়ে নেই। তাহলে? আমি বিয়ে করবো না এটাই ফাইনাল। আর আমি এমনিও ২ দিনের মধ্যে UsA করতাম। আমি এখানে থাকবো না আর সাথে আমার ছেলেকেও নিয়ে যাচ্ছি। থাকো তোমরা।
.
আমি সেখানে গিয়ে,
আমি- আমাকে আপনারা ক্ষমা করবেন। কিন্তু আমি বিয়ে করতে পারবো না। আমি আমার ছেলেকে নিয়েই আমার বাকী জীবনটা কাটাতে চাই। দয়া করে আপনারা বুঝার চেষ্টা করুন।
.
আমি আমার সব জিনিস নিয়ে লুকিয়ে বাড়ির বাইরে চলে এলাম। সবাই গল্প করছিলো যখন ঠিক সেই সময়ে।
কারণ আমি জানি আমাকে ইমোশনাল করবেই আম্মু। কিন্তু আমি বিয়ে করতে চাই না। আমার জীবনের এক মাত্র পুরুষ হিসেবে শুধু আরাভই। ওর পরে আমি আর কাউকে আপন করতে পারবো না। তাই বাধ্য হয়ে সব জিনিস আর সাথে আনভীরকে কোলে নিয়েই অগত্যা বের হতে হলো। সব কিছু মিমিকে বলতেই ও ওর বাড়িতে যেতে বললো। কিন্তু আমি জানি আমার মা ও পরিবারের বাকীরা প্রথম খোঁজ ওখানেই নিবে। তাই অগত্যা হোটেলের উদ্দেশ্যে বের হলাম।
.
আমি এতো কিছুর চক্করে ভুলেই গেছিলাম আরাভকে ডেকেছিলাম। তবুও অগত্যা হাটতে লাগলাম। হঠাৎ সামনে দিয়ে একটা গাড়ি আসলো। আমার নজর আনভীরের দিকে ছিলো আর হাতে লাগেজ তাই সরে যেতে দেরী হয়ে গেলো। ভাবলাম হয়তো এক্সিডেন্ট হবে। কিন্তু গাড়িটা থামিয়ে দিলো। গাড়ি থেকে আরাভ বের হলো।
.
এমন অবস্থায় আমার প্রথম দিনের কথা মনে পড়লো। আরাভের সাথে আমার পাঙ্গা। কিন্তু পরক্ষণে আমার মাথায় এলো আরাভ আনভীরকে দেখে ফেলেছে।
আমাকে এখান থেকে দ্রুত যেতে হবে।
আমি- ব্যাগটা দেন।
আরাভ- আনহা এটা কার বাচ্চা?
আমি- এটা মিমির বাচ্চা। (কথা ঘুরাতে)
আরাভ- তাই?
আমি- জ্বী। আপনি ব্যাগ দেন।
আরাভ- (ব্যাগটা এগিয়ে দিলো) তা মিমির বাচ্চাকে নিয়ে তুমি কই যাচ্ছো? তাও লাগেজ হাতে?
আমি- মিমি এক জায়গায় গেছে তাই আমাকে একটু দিয়েছে। আর আমি USA ব্যাক করছি। আচ্ছা আসি। আপনার কাজ পুরো হয়ে যাবে।
আরাভ- তাই?
আমি- জ্বী।
.
তাড়াতাড়ি ঘুরে গেলাম।
আরাভ- আর কতো লুকাবে আমার ছেলের কথা।
আমি- ম.. মানে?
আরাভ- তুমি জানো আনহা এটা আমারো ছেলে।
আমি- আনভীর শুধু আমার। আর আমরা চলে যাচ্ছি।
আরাভ- আনহা এবার কিন্তু আমার রাগ উঠছে।
আমি- যাই হোক।
আরাভ- বাড়ি ফিরে চলো আর দেখি আনভীরকে আমার কোলে দেও।
আমি- না আমি আমার বাচ্চা কাউকে দিবো না।
আরাভ- আনহা বেশি হচ্ছে।
.
আমি কোনো জবাব না দিয়ে হাটতে শুরু করলাম। আরাভ আমার হাত ধরে টেনে আমার গালে চড় বসিয়ে দিলো।
চড়ের শব্দে আনভীর কেঁদে উঠলো।
আমি ওকে চুপ করাতে লাগলাম।
আরাভ- দেও আমাকে দেও।
আমি- না আমি আমার ছেলেকে কাউকে দিবো না।
আরাভ- এটা আমারো ছেলে আনহা।
আমি- আপনি থাকেন না আপনার সংসার নিয়ে। আমার বাঁচার সম্বল কেনো কেড়ে নিতে আসছেন? আমি কখনো কি আপনার জীবনে কিছু বলেছি?
আরাভ- আমার সংসারই নাই ইয়ার। আমি বিয়েই করি নি আর।
আমি- হাহাহা তাই নাকি? ওই মেয়েটাকেও ছেড়ে দিছেন।
আরাভ- আনহা তুমি আমাকে ভুল বুঝছো।
আমি- আমি কোনো ভুল বুঝছি না। যা জানার বা বুঝার জানি।
আরাভ- আনহা জান্নাত অনেক বড় চাল চেলেছিলো। তুমি জানো না।
আমি- ওহ। আর কিছু। (অভিমানে)
আরাভ- আনহা বুঝার চেষ্টা করো।
আমি- আমার কিছু বুঝার নাই।
.
হঠাৎ আরাভের ফোনে কল আসলো, “ও জানতে পারলো ওর মামা হার্ট এ্যাটাকে মারা গিয়েছে আর এটা শুনে তার মা অজ্ঞান।” এসব শুনে আরাভ আর কিছু না ভেবেই সেখানে চলে গেলো।
.
আমি বুঝলামও না জানলামও না কি হয়েছে? আমি সেখান থেকে গিয়ে একটি হোটেলে উঠলাম।
.
এদিকে সবাই কান্নাকাটি করছে। সবচেয়ে বেশি জান্নাত। আরাভকে দেখতেই,
জান্নাত- আমাকে ক্ষমা করে দে। আমি জেদের বশেই এসব করেছি এই জন্যই আব্বু আমাকে ছেড়ে চলে গেলো। প্লিজ ক্ষমা করে দে।
.
আরাভ জান্নাতকে দেখতেই তার আনহার কথা মনে পড়লো।ও টেনশনে পড়ে গেলো যে, ও আনহাকে এখন কই খুঁজে পাবে? কিন্তু ওকে খুঁজতেই হবে। জানাযা কবর দেওয়া সব শেষে, আরাভ আর ওর পরিবারের বাকীরা বাড়ি ফিরে এলো। আরাভ ভাবছে এখনি বলা উচিত ওর সবাইকে সব কিছু।
আরাভ- মা।
মা- বল বাবা।
আরাভ- মা আনহা কারো সাথে পালায় নি।
মা- মানে? কি বলছিস?
আরাভ- মা জান্নাত,,,,,,,,,,, (সব কিছু বললো)
মা- তার মানে আমার বিশ্বাস ভুল ছিলো না?
আরাভ- না মা।
আভা- ভাবিকে তাহলে আমরা ভুল বুঝলাম।
আরাভ- হুম।
মা- বাবা কই আমার নাতি?
আরাভ- জানি না মা। কিন্তু এই শহরেই হয়তো আছে। অথবা এই দেশের কোথাও।
মা- আমাকে আমার নাতিকে এনে দে।
আরাভ- হুমম মা আনবো।
.
এদিকে আমার খুব ভয় হচ্ছে। আরাভ আনভীরকে কেড়ে না নেয়। কিন্তু আমি এখনো জানি না আরাভ কেনো এমন করেছে। জেদের বশে শুনিই নি। আর ওদিকে আরাভ আমাকে খুঁজা শুরু করেছে। প্রথমে ওরা সবাই আমার বাড়ি গেলো। সব শুনেও আমার পরিবারের মানুষ আরাভকে পুরোপুরি ক্ষমা না করলেও কিছুটা মাফ করেছে।
.
.
চলবে…….