Angry_Husband
Season_2_Part_17
Written by Avantika Anha
ফোনটা রেখে পাশে তাকিয়ে দেখি আরাভের ঘুম ভেঙ্গে গেছে।
আরাভ- কে ফোন করছিলো?
আমি- মানুষ।
আরাভ- নাম কি?
আমি- মানুষের নাম তো মানুষ। এটাই তো তাদের পরিচয় তাই না?
আরাভ- জান্নাত ফোন করছে?
আমি- আরে সকাল কয়টা বাজে গেছে দেখছো। এতো দেরি হলো।
আরাভ- এই মেয়ে কথা ঘুরাবি না বলতে বলছি বল কে ফোন করছে?
আমি- জান্নাত। (ভয়ে ভয়ে বলে ফেললাম)
আরাভ- ওই মেয়ের প্রবলেমটা কি হা? আজ ওকে আমি দেখে নিবো। দাড়াও।
.
আরাভ উঠে যেতে ধরলো আমি তখন ওর হাতটা ধরে ফেললাম।
আরাভ- আনহা ছাড়ো।
ওকে কিছুটা জড়িয়ে ধরলাম।
আমি- আমি আর আপনি একসাথে আছি তো? আমাদের আলাদা করতে পারবে না ও।
আরাভ- কিন্তু?
আমি- কোনো কিন্তু না। ভালোবাসা থাকলে বিশ্বাসও থাকে আর ও আমার বিশ্বাস কখনো ভাঙতে পারবে না। বুঝলেন রাগী মি.।
আরাভ- ওকে আজ আটকে নিলা। তুমি পাশে থাকলে রাগ কমাতে পারবো নাহয় কিন্তু তুমি না থাকলে আমিও কন্ট্রোলে থাকতে পারবো না হয়তো।
আমি- আমি পাশে আছি আপনার। যদি মরেও যাই তাহলেও আপনার মাঝে বাঁচবো।
আরাভ- তুই মরার কথা তুললি কেন? বেশি ঢং?
আমি- খাইছে আবার রাগ?
আরাভ- এই বিষয় আসলো কেনো?
আমি- ইয়ে মানে ডায়লগ মারলাম ইট্টু।
আরাভ- ডায়লগ এর গুষ্টি কিলাই।
আমি- ওয়াও আপনি আমার মতো গালি দেন এখন?
আরাভ- পাগলির সাথে থাকে থাকে পাগল না হলে সম্ভব নাকি?
আমি- হিহি।
আরাভ- তা সকালের শুরুটা একটু মিষ্টি দিয়ে করাও। (রোমান্টিক মুডে)
আমি- এক মিনিট দাড়ান।
.
তাড়াতাড়ি দৌড়ে গিয়ে আমি একটা বাটিতে মিষ্টি নিয়ে আসলাম। আমাকে দেখেই আরাভের মুখে হাসি ফুটে উঠলো। আমার ভাষায় শয়তানি হাসি।
আরাভ- কাছে আসো।
আমি- আগে এটা খান।
আরাভ- মিষ্টি?
আমি- হুমমম। আপনিই তো মিষ্টি চাইলেন।
আরাভ- দূরররররর লাগবে না আমার কিছু।
আমি- আপনিই তো মিষ্টি চাইলেন।
আরাভ- ওই মিষ্টি না গাধী আমি কিস চাইছি।
আমি- ও কিস?
আরাভ- হুমম।
আমি- কিইইইই কিস?
আরাভ- হুমমম তাই।
আমি- চোখ বন্ধ করেন।
আরাভ- কেনো কিস দিবা?
আমি- করেন ১০ সেকেন্ড এর জন্য।
আরাভ- না এক মিনিট।
আমি- আচ্ছা।
.
আরাভ চোখ বন্ধ করলো। “কই তুমি” আরাভ ডাক দিলো। আমার জবাব পেলো না। আারো কয়েকবার ডাক দিলো কিন্তু কোনো জবাবই পেলো না আরাভ। চোখ খুলে দেখে আমি নাই। কারণ ওই সময়েই আমি পালাইছি। আরাভের রাগ উঠলেও কিছু না বলে ফ্রেশ হয়ে বাইরে বের হলো। বাইরে আমি আভার রুমে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করতে বসেছিলাম। কারণ নাস্তা আগেই তৈরি করে নিছেন কাজের বুয়া আর আমাদের উঠতে দেরী হয়ে গেছিলো। আমি নাস্তা খাচ্ছি আর ওর দিকে তাকায় ভিলেনমার্কা হাসি দিচ্ছি। আরাভ রাগী মুখে আমার দিকে তাকাচ্ছে।
আভা- কি রে এতো ঘুম আজকাল দেখি।
আরাভ- তোর কি?
আভা- হাহা বুঝি। আয় নাস্তা কর।
আরাভ- বেশি বুঝিস বিয়ে দিবো তোর ওই যে R..
আভা- তোকে কে বললো?
আরাভ- বাবু আমি তোমার ভাই।
আভা- ভাবি তুমি বলছো?
আমি- গাধী মাইয়া ওয় জানতোই না আন্দাজি কইছে তোমার খাতায় দেখছিলো। আর তুমি স্বীকার কইরা নিলা।
আভা- হায় ভাবি আগে কইবা না?
আমি- জিগাইছো আমাকে মনু?
.
এমন সময় মা আসলো। তাই আমরা আর কথা আগাইলাম না…
মা- আরাভ নাস্তা খেতে বস।
আরাভ- হুমম মা। মা শুনো তোমার মেয়ের বিয়ে দিবা কবে?
মা- ভাবছি তো রে বাবা পাত্র পাই ভালো। তারপর দিয়ে দিবো।
আরাভ- আমার পছন্দ আছে একটা ছেলে। কথা চালাই?
মা- চালা তোর যা ভালো মনে হয়।
.
এসব কথা শুনে আভার মুখের অবস্থা বারোটা হয়ে গেছে। আমি ভালো করেই বুঝতেছিলাম। খাওয়া শেষে মা চলে যাওয়ার পর..
আভা- ভাইয়া তুই আমার সাথে এমন করিস না।
আরাভ- শুন বড়দের উপর কথা বলবি না। এটা সারা জীবনের ব্যাপার।
আভা- কিন্তু ভাইয়া।
আরাভ- নো কিন্তু। যা হবে আমার ইচ্ছায়।
.
আরাভও খাওয়া করে উঠে গেলো। আমার খাওয়া আগেই শেষ তবুও আমি বসে আছি আভার জন্য।
আভা- ভাবি এখন কি হবে?
আমি- গাধী আমি আছি না? আর তোমার ভাইয়া প্রেমের শত্রু না বুঝলে?
আভা- সিওর ?
আমি- হুমমম।
খাওয়া শেষ করে আমি রুমে গেলাম। আরাভ অফিসের জন্য রেডি হচ্ছিলো। আমি গিয়ে ওকে জড়িয়ে ধরলাম। ইহা কাজ করানোর ধান্দা।
আরাভ- বাহ এতো কাছে। কি কাজ বলো?
আমি- ইয়ে মানে..
আরাভ- মানে মানে না কইরা জ্বলদি বলো।
আমি- আপনি তো খুব ভালো মানুষ তাই না?
আরাভ- না আমি তো রাক্ষস, বান্দর তুমিই বলো।
আমি- না না আপনি অনেক ভালো।
আরাভ- তাই?
আমি- হুম।
আরাভ- আভার জন্য আসছো?
আমি- হুম। ইয়ে না না আমি তো এমনি আসছি। আমি আমার বরের কাছে কি আসতে পারি না?
আরাভ- ম্যাডাম আমি ভাই হলেও বোনের খারাপ চাইবো না। আভাকে বলিও ছেলেটা যেন আমার সাথে দেখা করে। ও ভালো হলে আমি নিজে বিয়ে দিবো। (আমাকে সোজা করে ঘুরিয়ে দিলো)
আমি- এমনি বলি আমার রাক্ষসটা বেস্ট।
আরাভ- আবার রাক্ষস?
আমি- হিহি। সারাজীবন শুনবেন।
আরাভ- আচ্ছা রাজি।
আমি- এই খুশিতে বলেন দুপুরে কি খাবেন?
আরাভ- যা আপনার ইচ্ছা।
আমি- আপনার তো চিকেন পছন্দ তাহলে কি কাবাব বানাবো?
আরাভ- ওকে।
আমি- আপনার অফিসে আসমু আজ। আবার যদি কোনো শাকচুন্নিকে দেখি খবর আছে।
আরাভ- ওকে পাবা না।
.
এরপর আরাভ অফিসে চলে যায়। আমি শখ করে ওর জন্য রান্না করি। দুপুরের দিকে আমি আরাভের অফিসে যাই। সেখানে গিয়ে দেখি আরাভের ক্যাবিন থেকে ঝগড়ার আওয়াজ পেলাম কিছুটা। যতোটা শুনতেছি মনে হচ্ছে একটা মেয়ে আরাভের সাথে ঝগড়া করতেছে। এগিয়ে গেলাম শুনতে,
জান্নাত- আমি সত্যি তোমাকে অনেক ভালোবাসি।
আরাভ- ও হ্যালো সাইকো আমি যাস্ট আনহাকে ভালোবাসি। আমাদের লাইফে ঝগড়া বাঁধানোর চেষ্টা করছো কেনো?
জান্নাত- আমি তোমাকে ছাড়া বাঁচবো না।
আরাভ- আমি আনহাকে ছাড়া বাঁচবো না।
জান্নাত- তাহলে আনহাকে আমি বাঁচতে দিবো না।
আরাভ- আমি তোমাকে মারে ফেলবো আনহার কিছু হলে।
জান্নাত- তোমাদের একসাথে থাকতে দিবো না।
আমি ভিতরে ঢুকে বললাম- আমাদের আলাদা করতেও পারবেন না।
জান্নাত- ওহো বউও এখানে?
(আমি জান্নাতকে দেখে কিছুটা শক কারণ ও সেই মেয়েটা যে উল্টা পাল্টা প্লান করছিলো। তাহলে কি আরাভই ওই মুখ ঢাকা ছেলেটা?)
আমি- হুমম আপু। আপনার প্রবলেম কি?
জান্নাত- ওকে ছেড়ে দে নইলে ফল খারাপ হবে।
আমি- আগেও বলছি। আমি ছাড়বো না।
জান্নাত- মেরে ফেলবো কিন্তু।
আমি- মারতে পারেন তাও ছাড়বো না।
আরাভ- দাড়াও আমি বের করাচ্ছি।
.
আরাভ এগিয়ে আসতে গিয়েও আমি ওকে থামতে বললাম।
আমি- আপু আপনি কি পাগল? আমাদের মাঝে আসেন কেন?
জান্নাত- আমি তোমাদের না তুমি আমাদের মাঝে আসছো।
আরাভ- ওয়েট কি বলো? আমি সবসময়ই তোমাকে না বলছি।
আমি- ওই আপনি যাবেন নাকি ঝাটা দিয়া পিটামু শাকচুন্নি কোনেকার আমার বরের উপর নজর দিস।
জান্নাত- এই মেয়ে মুখ সামলাও।
আমি- ওইটা পরে আপু গুড নিউজ আছে।
জান্নাত- মানে?
আমি- আমাদের বাবু হতে চলেছে। গুড নিউজ না?
জান্নাত- কিহ?
আমি- হুমমম। আপনাদের বাড়িতে মিষ্টি পাঠাবো নে । এখন যান। ওই তোমার অফিসে সিকিউরিটি নাই।
আরাভ- ওকে ডাকছি।
জান্নাত- তোমাদের একসাথে থাকতে দিবো না আরাভ শুধু আমার।
.
জান্নাতকে বের করে দেওয়া হলো।
আরাভ- সত্যি নাকি?
আমি- কি?
আরাভ- বাবুর কথা।
আমি- না মিছা কথা কইছি।
আরাভ- আনহা ভাবতেছি।
আমি- কি?
আরাভ- পরিবার বড় করা উচিত।
আমি- ইয়ে মানে টপিক বদলান লজ্জা লাগে।
আরাভ- তাই নাকি?
আমি- হুমম। চলেন খাবেন।
আরাভ- হুমম
.
চলবে…