Angry_Husband
Season_2___Part_12
Written by Avantika Anha
আরাভ- আমাকে আনরোমান্টিক বলো আর নিজে কি?
আমি- আমি তো রোমান্টিক মেলা।
আরাভ- হাহা দেখাই যায়।
আমি- কি বললেন?
আরাভ- বাচ্চা বাচ্চা ব্যবহার সবসময় আর আসছে রোমান্টিক বলে।
আমি- কি কইলেন?
আরাভ- শুনতে পাও না। আজকাল ঠসা হয়েও গেছো নাকি?
আমি- ইনসাল্ট এতো বড় ইনসাল্ট আমি এখানে থাকবোই না। আমি গেলাম।
.
এই বলে আমি ওখান থেকে চলে যাচ্ছিলাম। পিছনে একবার ঘুরে দেখি আরাভ আমার দিকে তাকায় হাসতেছে। ওর এই শয়তানি হাসি দেখলে আমার প্রচুর রাগ পায়। ওয় আমাকে কথা শুনায় হুহ।আমি আসছি নাকি ও আনছে আমাকে, এখন আবার আমাকে কথাও শুনায়। এই জন্য আমাকে আনছে। ঢং সব। আমারে রাগ দেখায় খালি। এখন আবার মজাও নেয়। মজা তো মজা আবার ইনসাল্টও করে আমার। এই মূল্য আমার।
.
এই সব আস্তে আস্তে বলতে বলতে আমি রুমে চলে গেলাম। রুমে ঢুকেই দরজা লাগায় দিলাম। আর নিজেকে বলতে লাগলাম, “হুহ এবার বুঝুক মজা।” এই বলে আমি কানে ইয়ারফোন লাগায় গান শুনতে শুনতে ঘুমায় গেলাম। কিছু সময় পরে আমার ঘুম ভেঙ্গে গেলো কে জানি আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আছে। “কিন্তু আমি তো দরজা লাগায় দিছিলাম ঢুকলো কেমনে?” এই প্রশ্ন আমার মাথার মাঝে ঘুরতেছিলো। আমার আবার মাথায় কোনো প্রশ্ন থাকলে ওটার উত্তর না পাওয়া পর্যন্ত ঘুম আসে না। আরাভকে তাই ডাক দিলাম। ভেবেছিলাম ও ঘুমিয়ে আছে কিন্তু পরে দেখি ও জেগে আছে।
.
আমি- ওই আপনি আমাকে ধরে আছেন কেনো? আর আপনি রুমে ঢুকলেন কেমনে? আর এখানে কেমনে?
আরাভ- বাহ এতো প্রশ্ন।
আমি- ওই হেয়ালি না করে জবাব দেন আপনি এখানে কেমনে?
আরাভ- ম্যাডাম রুমের এক্সট্রা চাবি সবসময় থাকে হোটেল স্টাফদের কাছে। তা মাথায় এতো বুদ্ধি এই ছোট জিনিসটা আসে নি?
আমি- উউউউউউহু আপনি সরেন এখান থেকে। বাজে মানুষ কোথাকার।
আরাভ- কি বললা?
আমি- বাজে মানুষ বলছি আপনাকে হুহ।
আরাভ- আরেকবার বলো।
আমি- আমাকে ঠসা বলছেন না। নিজে কি? কয়বার বলবো বাজে বাজে বাজে।
.
আরাভ আমাকে আরো শক্ত করে চিপে ধরলো।
আমি- আম্মুউউউউউ।
আরাভ- এবার বলো।
আমি- ছাড়েন ভাই। (লাগছিলো)
আরাভ- ও আমি তোমার ভাই?
আমি- একদম না আপনি তো আমার রাক্ষস সরি সরি হাজবেন্ড। জানু, মনু, সনু আপনি আমার।
আরাভ- চালাকি?
আমি- একদম না। আপনি মেলা ভালো। আপনাকে একটা গিফ্টও দিমু নে। চকলেট নাকি আইসক্রিম কি নিবেন কন কন।
আরাভ- ডিলটা ভালো। মিষ্টি জাতীয় অন্য কিছু খাবো।
আমি- মানে?
আরাভ- ইউ উইল কিস মি।
আমি- হাতটা দেন।
আরাভ- কেন?
আমি- আরে দেন তো।
.
আরাভ হাত এগিয়ে দিলো আমি ওর হাতে কিস করলাম।
আরাভ- চালাক আছো কিন্তু আজ আমি ছাড়বো না। হানিমুনে আসছি একটা কিস তো নিবোই।
আমি- দিছি তো ভাই।
আরাভ- আবার ভাই। আগে এমনিতে হলেও মাফ করতাম আজ আর মাফ নাই।
আমি- দিমু না।
আরাভ- যদি না দেও আমি এর চেয়ে বেশি কিছু করবো। লাস্ট নাইট মুড অফ করতে চাচ্ছি না। আনহা ডু হোয়াট আই সে।
আমি- বান্দর আমি কিস করতে পারি না। হইছে?
আরাভ- দূরররর। ও ওকে তুমি পারবা না তো কি? আমি তো পারবো।
আমি- ও নো।
আরাভ- বি রেডি বেবি।
.
এই বলে আরাভের লিপ আমার দিকে এগুতে লাগলো। এদিকে আমার হার্টের ধুকধুকানি বেড়ে যাচ্ছিলো। প্রচুর ভয় লাগছিলো। আমার ভয়ে বারোটা বাজে যাচ্ছিলো। আমি ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেললাম। কিছু সময় পর মনে হলো পরাভ আমাকে ছেড়ে দিলো। তবুও আমি চোখ বন্ধ করেই রাখলাম খুললাম না আর।
আরাভ- ম্যাডাম চোখ খুলুন।
আমি- ও হয়ে গেলো। আমি বুঝলামই না মানুষ ঠিকই তো বলে তাইলে কখন হয় বোঝাই যায় না।
আরাভ- কি বললা?
আমি- কেনো ?
আরাভ- কে বলছে তোমাকে এসব?
আমি- আমি এক মেয়ের কাছে শুনছিলাম। আই মিন পাশে দিয়ে যাচ্ছিলাম তখন শুনেছিলাম।
আরাভ- এসব মেয়ের সাথে মিশো নাকি?
আমি- একদম না। আমি তো ভালো মেয়ে।
আরাভ- কেমন ভালো মেয়ে বুঝি। আর ভয় পেতে হবে না। তোমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে আমি কিছু করবো না।
আমি- ওয়াও আপনি তো তাইলে ভালো পোলা।
আরাভ- হাহা ওকে।
.
এই বলে আরাভ ওখান থেকে উঠে বেলকোনিতে চলে গেলো। ওর মুখ দেখে মনে হলো ও কিছুটা মাইন্ড করছে। কিন্তু কেনো তা বুঝলাম না। আমি উঠে গিয়ে ওর পাশে দাড়ালাম।
আমি- চাঁদটা খুব সুন্দর লাগছে তাই না?
আরাভ- হুমম।
আমি- আজকের রাতটা জেগেই পার করি?
আরাভ- হাহা ওকে।
আমি- মি. আরাভ।
আরাভ- হুম।
আমি- আপনার কাধে মাথা রেখে আপনার হাতটা ধরি?
আরাভ- এর আগেও রেখেছিলে জিজ্ঞেস করছো কখনো?
আমি- না মানে তাও।
আরাভ- আচ্ছা আমি কি তোমাকে সবকিছুতে বাধ্য করি?
আমি- হ্যা মানে না।
আরাভ- ওহ। সরি। আমি রাগে বেশি কিছু করি তাই না?
আমি- না।
আরাভ- এই যে না বলে জড়িয়ে ধরি।
আমি- এভাবে বলছেন কেনো?
আরাভ- না কিছু না।
আমি- শুনুন।
আরাভ- হুম বলো।
আমি- আপনি আমার স্বামী। আপনার পুরো অধিকার আছে আমার উপর। আপনার যা ইচ্ছা করতে পারেন।
আরাভ- তাই?
আমি- জ্বী।
আরাভ- তাই তো বউ এর কাছে একটা কিসও পাই না।
আমি- কেনো পাবেন না। দিবো তো।
আরাভ- তো দাও। কিস করতে গেলে ভয় পাও কেন?
আমি- আচ্ছা আপনি কি নাটক করছেন?
আরাভ- আজকাল চালাক হয়ে গেছো।
আমি- বান্দর, রাক্ষস।
.
এই বলে আরাভের গায়ে কিল ঘুষি মারতে লাগলাম।
আরাভ- আরে আরে মারো কেনো? দশটা না পাঁচটা না একটা মাত্র বর তোমার।
আমি- আপনি আজকাল আমার মতো হয়ে যাচ্ছেন।
আরাভ- পাগলির সাথে থাকলে পাগল তো হতেই হবে।
আমি- তা ঠিক।
আরাভ- দূর ছাঁই কি করতে বিয়া করলাম। বউ এর কাছে কিসও পাই না।
আমি- আরেকটা বিয়া করেন। ওই যে কাজিনটারে কি নাম যেনো?
আরাভ- জান্নাত। হুম ওরেই করতে হবে।
আমি- কি বললেন?
আরাভ- এই যে জান্নাতকে বিয়ে করতে হবে এটা।
আমি- দূররররর হন। আপনি আর আমার সামনে আসবেন না। যান আপনার জান্নাতের কাছে।
.
এই বলে কাঁদতে কাঁদতে ওখান থেকে চলে আসলাম। কেনো যেনো কষ্ট হলো। পিছু পিছু আরাভও এলো।
আরাভ- ওই আমি মজা করছিলাম।
আমি- ওহ।
আরাভ- এমনি সময় তো মজা করো। আজ আবার সিরিয়াস কেমনে?
.
আমি কিছু না বলে ওকে জড়িয়ে ধরলাম। কেনো যেনো ওর উপর নিজেে একটা অধিকার আছে বলে মনে হয়। কেনো অধিকার হবে না? ও তো আমার স্বামী।
আমি- প্লিজ আমাকে ছাড়া অন্য মেয়ের কাছে যাবেন না। আমি আপনাকে ছাড়া বাঁচতে পারবো না।
আরাভ- ওই পাগলি।
আমি- প্লিজ।
আরাভ- যাবো না কখনো।
.
আরাভ আমার কপালে কিস করলো।
আমি- আমি একটা জিনিস ভাবছি।
আরাভ- কি?
আমি- আপনি আমাকে হানিমুনে গিফ্ট দিলেন না যে।
আরাভ- বেবি এতো শপিং কইরা ব্যাগ ভর্তি কার টাকায় করলা?
আমি- খোটা দেন? আর ওটা গিফ্ট নাকি?
আরাভ- উহু।
আমি- তো আমাকে কি দিবেন আর? চলেই তো যাচ্ছি কাল।
আরাভ- চোখ বন্ধ করো।
আমি- কেনো?
আরাভ- আরে করোই তো।
আমি- ওকে।
.
আমি চোখ বন্ধ করেই আছি কিন্তু খুলতে ইচ্ছে করছে। একটু চোখ খুলার চেষ্টা করলাম।
আরাভ- ম্যাডাম চিটিং করছেন কেনো?
আমি- সরি সরি আর হবে না।
আরাভ- চোরের মন পুলিশ পুলিশ আমি আন্দাজ করলাম মাত্র।
আমি- চালাক মানুষ।
আরাভ- চোখ খুলো।
.
আমি চোখ খুলে দেখি আরাভের হাতে একটা লকেট।
আমি- ওয়াও সেই চয়েজ তো।
আরাভ- হাহা দেখতে হবে কার চয়েজ।
আমি- থেংকু। উম্মাহ। (আরাভের গালে কিস করলাম)
আরাভ- জানলে তো আরো কিছু আনতাম যদি লিপে পেতাম এর বদৌলতে।
আমি- যা লুচু।
আরাভ- ওকে ফাইন। নেও লকেট। (আরাভ চলে যেতে লাগলো।)
.
আমি ওর হাত ধরে নিলাম।
আমি- সরি।
আরাভ- ব্যাপার না লুচুদের সরি বলতে নেই।
আমি- কেনো?
আরাভ- এমনি।
আমি- এতো সিরিয়াস কেনো আজ?
আরাভ- না এমনি বললাম তো।
আমি- আপনি লুচু না।
আরাভ- ওহ।
.
আমি আর কিছু না বলে আরাভের লিপে কিস করলাম। সাহস কই থেকে পেলাম জানি না।
আরাভ- এটা কি ছিলো?
আমি- কিছু না। স্মৃতি রাখতে চাইছিলেন না? দিয়ে দিলাম।
আরাভ- এটা করবা আগে জানলে আগেই সিরিয়াস হয়ে যেতাম।
.
এই বলে আমাকে আরাভ কোলে তুলে নিলো।
আমি- এ্যা। আন্নে কি করেন?
আরাভ- একটু ভালোবাসা।
আমি- মি. আরাভ একটু নামান আপনাকে একটা জিনিস দেখাবো।
আরাভ- কি?
আমি- আরে নামান দেখাচ্ছি।
.
আরাভ নামানোর সাথে সাথে আমি দৌড় দিলাম বাথরুমে।
আরাভ- চালাকি করলা?
আমি- হুমম।
আরাভ- একদিন আমারো সময় আসবে।
আমি- আপাতত আমার আসছে।
আরাভ- বের হও কিছু করবো না।
আমি- প্রমিস?
আরাভ- হুম।
.
আমি বের হয়ে এলাম। তারপর দুজনে আবার বেলকনিতে বসে কিছু সময় আড্ডা দিলাম। আড্ডা দিতে দিতেই ঘুমিয়ে গেলাম। তখন আরাভ আমাকে ঘুমের ঘোরে কোলে করে রুমে এনে শুইয়ে দিলো।
.
পরেরদিন আমি আর ও বাড়ির দিকে রওয়ানা হলাম। কিন্তু সকাল থেকে আমি আরাভের সাথে লজ্জায় কথা বলি নি। রাতে বলতে পারলেও সকালে আমার লজ্জা লাগছিলো। কারণ আমি কিভাবে ওটা করলাম আর আমার সাহসই হচ্ছিলো না। ভয় করছিলো। কিন্তু আরাভ ঠিকই মজা নিচ্ছিলো। চোখ মারছিলো আর ইশারা করছিলো।
.
(আমার মনে হচ্ছিলো আমাদের জীবনটা সুখ পূর্ণ হয়ে উঠেছে। কিন্তু সামনে যে কোন বিপদ তা জানা ছিলো না।)
.
চলবে…..