#গল্পঃ_দুষ্টু_মেয়ের_মিষ্টি_সংসার_
#লেখকঃ_Md_Aslam_Hossain_Shovo_(শুভ)
#পর্বঃ__৫_
√-আমিঃ হা হা, তুমি না যাও যেও না। আমি যাবোই…
রিতুঃ এতো যাওয়ার শখ কেনো তোমার শুনি?
আমিঃ ওখানে তো আমার গার্লফ্রেন্ড আছে।
রিতুঃ মানে কি? তোমার কি আবার গার্লফ্রেন্ডও আছে নাকি?
আমিঃ আছে তো। গেলেই দেখতে পারবে…
~ রিতু আবার রাগতে শুরু করলো ~
রিতুঃ তাহলে বিয়ের আগে আমায় বললে না কেনো তুমি প্রেম করতে?
আমিঃ আমি কি পাগল নাকি যে বিয়ের আগে এগুলো তোমায় বলবো, আর তুমি বিয়ে বন্ধ করে দেও।
রিতুঃ তুমি আমায় ঠকালে?
আমিঃ এখানে ঠকানোর কি হলো আমার দুষ্টু বউ?
রিতুঃ তোর দুষ্টু বউয়ের কিছু কই, আগামী কাল তোর সাথে আমিও যাবো। সাথে তোর গার্লফ্রেন্ডের পা ভেঙ্গে হাত ধরিয়ে দিয়ে আসবো…
আমিঃ তুমি থেকে আবার তুই বলতে শুরু করলে?
রিতুঃ আমার মাথা গরম হয়ে গিয়েছে। যদি আপনি নিজের ভালো চান, তাহলে ঘুমান..(রেগে)
~ বলে খাটের উপর উঠতে লাগলো। আমি পাশ থেকে জামার ওড়না টেনে ধরলাম। রিতু এক টানে ওড়না ছাড়িয়ে নিলো আমার হাত থেকে। রাগি ভাবে আমার দিকে তাকিয়ে বললো ~
“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
রিতুঃ ওই সয়তান, লুচ্চা পোলা, বিরক্ত করিস কেন রে, ঘুমা বলছি…
~ রিতুর কন্ঠে গালি শুনতে মজাই পাচ্ছি। পিচ্চি বউয়ের বকাবকি সাথে শাসন বলে কথা। আমিও লাইট অফ করে ঘুমিয়ে পড়লাম।
সকালে ঘুম ভাঙ্গলো রিতুর ডাকে ~
রিতুঃ ওই তুমি আর কত ঘুমাবে বলো তো, যাবে না তুমি?
আমিঃ কোথায় যাবো আবার?…(ঘুম চোখে)
রিতুঃ কেনো তোমার মামা বাড়ি। আমি তোমার গার্লফ্রেন্ড কে দেখবো…
আমিঃ তা নাহয় দেখাবো। তাই রাগ কমছে নাকি ম্যাডামের?
রিতুঃ একটু কমছে…
আমিঃ তাহলে আসো তো আমার বুকের মধ্যে…
রিতুঃ বুড়ো দাদুর শখ কত। যাও তৈরি হও তাড়াতাড়ি…
~ বলে রিতু রুম থেকে বের হয়ে গেলো। রিতুর মুখে হাসি থাকলেও চোখ দেখে বুঝা যাচ্ছে এখনো অনেক রেগে আছে। অল্প বয়সি পিচ্চি মেয়ে বিয়ে করলে মনে হয় এমনি সব সময় তাদের রাগের বস্তার নিচে পড়ে থাকতে হয় দেখছি। সয়তানি বা দুষ্টুমিও বুঝে না, শুধু রাগ করতে পারে।
আমি বিছানা থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে তৈরি হলাম মামার বাসায় যেতে। সকাল ১০ টার দিকে মামাতো ভাই, ভাবি, রিতু আর আমি রওনা হলাম মামাদের বাসার উদ্দেশ্য। মামা-মামী গতকালই চলে গিয়েছে তাদের বাসায়। ঘন্টা খানেক পর সেখানে পৌঁছে গেলাম।
আমরা যাওয়ার পর মামী নাস্তা দিলেন আমাদের । রিতু তো ঘ্যান ঘ্যান শুরু করলো আমার গার্লফ্রেন্ডকে দেখবে। এখন কিভাবে যে তাকে গার্লফ্রেন্ড দেখাবো বুঝতে পারছি না, আসলে তো আমার কোনো গার্লফ্রেন্ড ছিলোই না। বিষয়টি বুঝতে পেরে লিজাভাবি শুধু হাসছে।
আমি খাটের উপর বসে আছি, আর রিতু আমার পাশে শুয়ে আছে ~
রিতুঃ ওই তোমার গার্লফ্রেন্ড কোথায়?
আমিঃ আরে একটু অপেক্ষা করো।
রিতুঃ আমি আর অপেক্ষা করতে পারছি না। আমায় এখুনি নিয়ে যাও তোমার গার্লফ্রেন্ডের কাছে…
আমিঃ আমার গার্লফ্রেন্ড সব সময় সবার সামনে আসে না বুঝলে।
রিতুঃ কেনো?
আমিঃ তাহলে তো তার নজর লেগে যাবে তাই…
রিতুঃ ওলে ঢং… দেখাও তো আগে..
আমিঃ আচ্ছা দেখাবো, আগে বলো তুমি শাড়ি পড়ে আসলে না কেনো?
রিতুঃ কিভাবে আসবো বলো, আমি শাড়ি পড়লে, কিছুক্ষণ পর শাড়ি একায় খুলে পড়ে যায় শরীর থেকে…
আমিঃ তাহলে তখন আমায় ডাক দিতে পড়িয়ে দিতে…
রিতুঃ তুমি বুঝি শাড়ি পড়িয়ে দিতে..?
আমিঃ আরে না, শাড়ি খুলতে সাহায্য করতাম।
রিতুঃ চুপ সয়তান। তোমার গার্লফ্রেন্ড কোথায় বলো আগে?
আমিঃ আচ্ছা আগে কথা দেও বাসায় গিয়ে শাড়ি পড়ে আমায় দেখাবে, তাহলে আমার গার্লফ্রেন্ডকে দেখার সুযোগ করে দিবো।
রিতুঃ কত সুন্দরী শুনি তোমার গার্লফ্রেন্ড যে এতো শর্ত দিচ্ছো? আচ্ছা যাও আগামী কাল শাড়ি পড়বো…
আমিঃ আর একটু অপেক্ষা করো।
~ কিছুক্ষণ পর রুমে এলো আরফা। আরফা আমার মামাতো বোন। আমার থেকে ২-৩ বছরের ছোট। আমার রিতুর বিয়েতে যায় নাই সে। রুমের মধ্যে ঢুকে রিতুকে এক নজরে দেখতে লাগলো ~
আমিঃ কিরে আরফা, বিয়েতে গেলি না কেনো?
~ আরফা আমার দিকে তাকিয়ে মুখ কালো করে ফেললো। একটু রাগী মুখ করে আমার দিকে তাকিয়ে কয়েকবার তারপর রিতুর দিকে তাকিয়ে কয়েকবার মুখ ভেংচি কেটে বের হয়ে গেলো রুম থেকে। আরফার এতো রাগের কি হলো বুঝতে পারলাম না।
রিতু তো রেগে আগুন হয়ে গেলো, তাকে মুখ ভেংচি কাটায় ~
রিতুঃ ওই তোমার বোন আমায় ভেংচি কাটলো কেনো?
আমিঃ আমি কিভাবে বলবো। আমায়ও তাই করলো।
রিতুঃ সত্যি করে বলো তোমার বোনের সাথে তোমার এতো কি শত্রুতা?
আমিঃ শত্রুতা থাকবে কেনো। ও তো আমার বোনের মত।
~ রিতু মুখ ফুলিয়ে বসে রইলো। এরমধ্যে লিজা ভাবি আর আরফা আবার রুমে এলো। এবার দেখি আরফার চোখ বেয়ে পানিও পড়ছে। ভাবি আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসি দিচ্ছে ~
আমিঃ আরফা তুই কান্না করিস কেনো?
ভাবিঃ কেনো তুমি বুঝি জানো না?
আমিঃ আমি আবার কি জানবো! ওহহ বুঝতে পারছি বিয়েতে যেতে পারে নাই তাই হয়তো।
আরফাঃ এতো দিনের সম্পর্ক এই ভাবে শেষ করে দিলে জানু তুমি?
~ কাম সারছে, এমনি রিতু রেগে আছে, তারপর আরফা দেখি আমায় জানুও বলছে ~
আমিঃ আরফা বুবু আমার, কি বলছো এগুলো তুমি?
আরফাঃ তুমি কিভাবে পারলে আমার সাথে ২ বছর রিলেশন করে শেষে গিয়ে এমন একটা মেয়েকে বিয়ে করতে? (চোখের পানি মুছতে মুছতে)
~ রিতু তো আমার দিকে কপাল কুঁচকে তাকিয়ে আছে। মনে হচ্ছে কিছুক্ষণের মধ্যে আমার অবস্থা খারাপ হতে চলছে ~
আমিঃ এই আরফা কি বলছিস এগুলো তুই? কিসের রিলেশনের কথা বলছিস ২ বছরের…
আরফাঃ তুমি আমায় ভালোবাসতে না?
আমিঃ তুই তো আমার ছোট বোন, ভালো তো বাসবোই।
আরফাঃ আমার সাথে প্রেম করতে না তুমি?
আমিঃ ধুর পাগলী, প্রেম করতে যাবো কেনো?
~ রিতু আমার হাতে জোরে খিমচি দিয়ে ধরলো ~
রিতুঃ ওই এই মেয়েই কি তোমার গার্লফ্রেন্ড?
আমিঃ হাত ছাড়ো সোনা বউ আমার। ও আমার গার্লফ্রেন্ড না, আমার বোন হই বোন। বোন কখনো গার্লফ্রেন্ড হয় নাকি?
রিতুঃ আপন বোন তো আর না, মামাতো বোন। আমি যদি চাসতো বোন হয়ে বউ হতে পারি, তাহলে মামাতো বোন কেনো গার্লফ্রেন্ড হতে পারে না?
আরফাঃ জানু তুমি সব ভুলে গেলে, তুমি না আমায় মেলায় নিয়ে নিজের হাতে ফুচকা খাওয়াইছিলে…
রিতুঃ ওরে হারামজাদা সয়তান বেইমান, গতকাল দেখি আমার নিজের হাতে খেতে হলো, আর তুই তোর গার্লফ্রেন্ডকে নিজের হাতে খাওয়াছিলি তাই না? বউ বড় নাকি গার্লফ্রেন্ড বড় রে..?
আমিঃ রিতু তুমি কিন্তু এই ভাবে তুই তুই করে বলতে পারো না। আমার একটা মানসম্মান আছে এখানে…
রিতুঃ বাসায় চলো, তারপর মানসম্মান দেখাবো কেমন…
~ আরফা চোখ মুছতে মুছতে রুম থেকে বের হয়ে গেলো। ভাবিও হাসতে হাসতে চলে গেলো। রিতু একটু পর পর আমার হাতে জোরে জোরে খিমচি দিতে লাগলো। রিতুর ভাবসাব দেখে মনে হচ্ছে কিছুক্ষণের মধ্যে কামড় বসিয়ে দিবে। তাই আমি সুযোগ বুঝে এক দৌড়ে রুম থেকে বের হয়ে গেলাম।
অন্য রুমে গিয়ে দেখি ভাবি আর আরফা বসে টিভি দেখছে। আমায় দেখে আরফা হেসে দিলো ~
আরফাঃ কি ভাইয়া, ভাবি কিন্তু হেব্বি দেখতে হয়েছে…
আমিঃ ভাবির চিন্তা পরে কর। আগে বল, আমি তোর কবে কার জানু?
আরফাঃ হি হি, লিজা ভাবি বললো তোমার বউকে একটু জ্বালাতে। তাই একটু দুষ্টুমি করলাম।
আমিঃ তাহলে যে চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়লো?
আরফাঃ পড়বেই তো। প্রথমে গিয়ে চোখ দিয়ে অনেক বার পানি বের করার জন্য চেষ্টা করলাম কিন্তু হলো না। তারপর আবার রুমে এসে লিজা ভাবির বুদ্ধি মতে পেঁয়াজের ঝাঁঝ চোখে লাগিয়ে চোখ দিয়ে পানি বের করে তোমাদের ওখানে গিয়ে অভিনয় করলাম, হি হি…
আমিঃ ভাবি তাহলে এই বুদ্ধি তোমার ছিলো?
লিজা ভাবিঃ হা হা,হুম আমার ছিলো। আরে তোমার হলো পিচ্চি বউ, একটু রাগাবে, দুষ্টুমি করবে, এটায় তো মজা…
আমিঃ আপনাদের দুষ্টুমিতে যে আমার অবস্থা খারাপ হয়ে গিয়েছে।
লিজা ভাবিঃ তোমার আবার কি হলো?
~ ভাবির সামনে হাত এগিয়ে ধরলাম। কম হলেও ২০ টা খিমচি দিয়েছে রিতু আমার ডান হাতে। লাল হয়ে দাগ পড়ে গিয়েছে ~
লিজা ভাবিঃ এমন হলো কিভাবে?
আমিঃ কিভাবে আর, আপনারা যখন দুষ্টুমি করছিলেন তখন রিতু আমায় আদর করে এগুলো দিয়েছে..
— আরফাঃ হায় আল্লাহ, কখন দিলো দেখলাম না তো?
আমিঃ তুই যখন ওগুলো জানু টানু বলছিলি, আর ওই দিকে রিতু আমার হাত চেপে ধরে খিমচি দিচ্ছিলো। না পারছিলাম কিছু বলতে, না পারি সইতে…
আরফাঃ তাহলে তো আমি ভালোই করছি। যাও এখন গিয়ে বউকে একটু ধমকিয়ে আসো..
আমিঃ আমি কি ধমক দিবো। সেই তো আরো রেগে ফুলে আছে এখনো..
আরফাঃ তাহলে আর কি করবে, একটু আদর করে আসো…
আমিঃ আর আদর, কাছে গেলেও চিৎকার দেই।
আরফাঃ হি হি, তাই নাকি। এই যদি আমায় বিয়ে করতে তাহলে আমিতো চিৎকার দিতাম না, উল্টো আরো আদর করতাম।
আমিঃ হয়েছে আর এখন বলতে হবে না। এখন বিয়ে হয়ে গিয়েছে তো, এখন কত জন এমন বলবে। কেনো বিয়ের আগে এমন বললে কি হতো শুনি?
আরফাঃ আহারে ভুল হয়ে গিয়েছে। আর কখনো ভুল হবে না প্রমিস..(হাসি দিয়ে)
আমিঃ হয়েছে আর কাটা জায়গায় নুনের ছিটা দিতে হবে না। আমার পিচ্চি বউটাকে তো দিলি রাগিয়ে, এখন কিভাবে শান্ত করবো সেটায় ভাবছি…
লিজা ভাবিঃ তোমার বউ এখন তুমি কিভাবে সামলাবে তুমি জানো। আমরা কি বলবো…
~ বলে হাসতে রইলো। আমি আবার রিতুর কাছে গেলাম। গিয়ে দেখি বালিশের মধ্যে মুখ চেপে ধরে শুয়ে আছে। আমি আসতে আসতে গিয়ে পাশে বসলাম। আস্তে আস্তে হাত নিয়ে হঠাৎ করে কোমরে সুরসুরি দিতে লাগলাম।
রিতু তো আমার দিকে ঘুরে আমার হাত চেপে ধরার জন্য চেষ্টা করতে লাগলো। আমি আরো বেশি বেশি দিতে লাগলাম। রিতু হাসতে হাসতে গলে পড়ে যাচ্ছে, মুখ দিয়ে কোনো কথাও বের করতে পারছে না।
সুরসুরি সহ্য করতে না পেরে রিতু উঠে বসলো। আমি আরো বেশি করে তখন রিতুর পেটেও সুরসুরি দিতে লাগলাম। রিতু কতক্ষণ হাসতে হাসতে মোচড়াতে মোচড়াতে শেষে সরাসরি এসে আমার গলা জরিয়ে ধরলো। একদম আমার বুকের সাথে রিতুর বুক মিশিয়ে দিলো শক্ত করে।
এ যেনো মেঘ না চাইতে বৃষ্টি।
আমি সুরসুরি দেওয়া বন্ধ করে রিতুকে বুকের সাথে মিশিয়ে ধরলাম। রিতু আমার গলা জরিয়ে ধরে হাঁপাচ্ছে। আমিও জরিয়ে ধরে এক হাত দিয়ে মাথার চুলে হাত বুলিয়ে দিয়ে রিতুকে শান্ত করার চেষ্টা করলাম। ৫-৬ মিনিট পর একটু শান্ত হয়ে আসলো রিতু। কথা বলতে গেলেও বার বার কথা আটকিয়ে যাচ্ছে রিতুর ~
রিতুঃ এই তুমি জানো না আমার কোমরে অনেক সুরসুরি আছে, এই ভাবে কেউ কাউকে সুরসুরি দেই…
~ এগুলো বলছে আর তখনো আমার গলা জরিয়ে ধরে হাঁপাচ্ছে ~
আমিঃ একটু দিলে কি হয়?
রিতুঃ তুমি জানো, আমি তো এখন মরেই যেতাম প্রায়…
আমিঃ আচ্ছা তুমি পরে কথা বলো, আগে শান্ত হও তো…
~ রিতু আবার কথা বলা বন্ধ করে আমায় জরিয়ে ধরে রইলো। আমিও সুযোগ পেয়ে একদম বুকের সাথে মিশিয়ে রিতুর চুলের ঘ্রাণ নিতে রইলাম। আরো প্রায় ৫-৬ মিনিট পর রিতু নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করলো ~
আমিঃ কি হলো, থাকো না এই ভাবে…
রিতুঃ আমি এখন স্বাভাবিক হয়ে এসেছি। এখন ছেড়ে দেও…
আমিঃ থাকো না আরেকটু, খুব ভালো লাগছে।
রিতুঃ এই না, কেউ দেখে ফেলবে তো।
আমিঃ দেখলে দেখবে… আমার বউকে আমি ধরছি…
রিতুঃ খুব শখ তাই না..
~ বলে রিতু আমায় আরো জোরে জরিয়ে ধরলো। আমি অবাক হয়ে যাচ্ছি, রিতু এমন কাছে এসেও চিৎকার না করে, আরো এখন নিজেই এতো রোমান্টিক হয়ে উঠেছে। আরো দুই মিনিট ওই ভাবে কেটে গেলো ~
রিতুঃ এবার ছাড়ো প্লিজ..
আমিঃ ছাড়বো কিন্তু একটা শর্তে..
রিতুঃ কি শর্ত বলো?
আমিঃ আগে আমার চোখের দিকে তাকাও..
~ রিতু আমার পিছন থেকে মুখ সামনে এনে আমার চোখের দিকে তাকিয়ে রইলো। আমিও রিতুর চোখের দিকে তাকিয়ে রইছি। এখনো রিতু আমার বুকের সাথে মিশে আছে। কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে রিতুর কপালে চুমু দিলাম। রিতু কোনো বাঁধা দিলো না, উল্টো চোখ বন্ধ করে ফেললো। কিছুক্ষণ পর চোখ খুললো রিতু। আমি রিতুর চোখে চুমু দিতে গেলাম, রিতু চোখ বন্ধ করে নিলো। বুঝতে পারলাম রিতুও রোমান্টিক মোডে আছে, তাই দুই চোখেও চুমু দিলাম।
রিতুর নিশ্বাস ভারি হয়ে এসেছে। চোখ বন্ধ করে আছে। আমি সাহস করে যেই মাত্র ওর ঠোঁটে ঠোঁট মিলাবো, আর রুমের দরজা থেকে লিজা ভাবি বললো, “কি খাচ্ছো তোমরা, মিষ্টি! ”
রিতু চোখ খুলে লিজা ভাবিকে দেখে তাড়াতাড়ি আমার থেকে নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করতে লাগলো। আমিও ছেড়ে দিলাম। রিতু আমার থেকে দূরে গিয়ে বসলো ~
আমিঃ ভাবি আপনি?
ভাবিঃ হ্যা আমি। তোমাদের মিষ্টি খাওয়া শেষ হলো চলো, তোমাদের খাবার দিবো…
আমিঃ আচ্ছা আমরা আসছি।
~ আমি খাট থেকে নেমে গেলাম। রিতুও আমার সাথে সাথে খাট থেকে নেমে গেলো। তারপর দুপুরের খাওয়া দাওয়া করে নিলাম। বিকালে রিতু, মামি আর ভাবি তিন জন মিলে ঢেঁকিতে চাল কুটলো পিঠা বানাতে।
রাতে সেই চালের গুড়ো দিয়ে গরম গরম কয়েক রকম পিঠা বানালো। গরম গরম পিঠা খাওয়ার মজাই আলাদা।
রাতে পিঠা খেয়ে বসে আছি। রিতু আমার হাত ধরে রয়েছে যেনো ভাবি আর আরফার কাছে যেতে না পারি। তারা গল্প করার জন্য ডাকছে একটু পর পর। রিতু তো চোখ গরম করে আমায় ভয় দেখাচ্ছে ~
আমিঃ কি হলো কি, হাত ছাড়ো আমার। ভাবি কি মনে করবে, কখন থেকে ডাকছে…
রিতুঃ আমি তোমায় তাদের কাছে যেতে দিবো না।
আমিঃ গেলে এমন কি হবে?
রিতুঃ তুমি বউ রেখে গার্লফ্রেন্ডের কাছে যাবে সাহস তো কম না তোমার..
আমিঃ আরে পাগলী, আরফা আমার গার্লফ্রেন্ড না, আমার বোন হই।
রিতুঃ আমি সব বুঝতে পারছি তুমি গতকাল এই গার্লফ্রেন্ডের কথা বলছিলে আমায়…
~ এখন বুঝতে পারছি, বউয়ের সাথে একটু মজা করাও মানে বিপদে পড়া ~
আমিঃ আরে পাগলী মেয়ে, ও আমার গার্লফ্রেন্ড হবে কেনো? আমি কখনো রিলেশন করি নাই।
রিতুঃ ধরা খেলে সবাই এমনি বলে।
আমিঃ কিভাবে যে তোমায় এখন বিশ্বাস করায়..
রিতুঃ আচ্ছা তাহলে একটা প্রমাণ দেও…
আমিঃ একটা কেনো, হাজারটা দিবো। বলো কি প্রমাণ চাও.??
রিতুঃ ভয় পাবে না তো, এতো কঠিন প্রমাণ দিতে?
আমিঃ একদম না। তুমি শুধু বলো কি করতে হবে?
রিতুঃ একটা ইট নাও হাতে…
আমিঃ তারপর?
রিতুঃ তারপর নিজের মাথায় একটা বারি দিয়ে মাথা ফাটিয়ে ফেলো..
আমিঃ ওমা গো, এটা কখনো সম্ভব?
রিতুঃ আমি জানতাম তুমি পারবে না, সবাই বউয়ের জন্য কত কিছু করতে রাজি, আর তুমি এই টুকু পারবে না…
আমিঃ কিভাবে যে তোমায় এখন বুঝায়…
~ এর মধ্যে আরফা এসে দরজার সামনে দাড়িয়ে মুচকি হাসি দিয়ে আমায় ডাক দিলো ~
আরফাঃ এই যে আমার জানু কি করছে গো?
~ রিতু তো রেগে আবার আমার হাতে খিমচি দিয়ে ধরলো ~
আমিঃ আরফা বোন আমার, এখান থেকে যা প্লিজ। এই পাগলীকে আর রাগাস না…
রিতুঃ কি বললে তুমি, আমি পাগলী। গার্লফ্রেন্ডের কাছে বউকে পাগলী বলিস লজ্জা লাগে না তোর?
~ বলে এক ধাক্কা দিয়ে খাটের উপর ফেলে দিয়ে সরাসরি আমার বুকের উপর উঠে বসে চুল টেনে ধরলো। আমার তো মনে হচ্ছে চুল গুলো ছেড়েই যাচ্ছে। আরফা রিতুর কান্ড দেখে ভয়ে দিলো এক দৌড়, রুমের সামনে থেকে ~
আমিঃ এই ছাড়ো ছাড়ো, চুল ছিড়ে গেলো…
রিতুঃ ছিঁড়ুক…
আমিঃ এবার কিন্তু সুরসুরি দিবো বলে দিলাম।
রিতুঃ তাহলে চুল একটাও থাকবে না মাথায় বলে দিলাম সয়তান…
আমিঃ মাফ চাই, আর জীবনে চিকনচাকন মেয়ে বিয়ে করবো না। পরের বার মোটা মেয়ে বিয়ে করবো, যেনো বুকের উপর উঠতেও অনেক সময় লাগে…
রিতুঃ তাহলে তোর বুঝি আরো বিয়ে করার শখ আছে তাই না?
~ বলে আরো জোরে চুল টেনে ধরলো ~
আমিঃ আমি কিন্তু এখন কান্না করবো…
রিতুঃ ছাড়তে পারি এক শর্তে..
আমিঃ কি শর্ত তারাতাড়ি বলো..?
রিতুঃ আমায় হানিমুনে নিয়ে যেতে হবে…
আমিঃ আচ্ছা নিবো নিবো, এখন ছাড়ো…
রিতুঃ আগামী কালই নিতে হবে…
আমিঃ আচ্ছা নিবো নিবো, তোমাদের বাড়ি হানিমুনে নিয়ে যাবো কাল..
রিতুঃ পাগল নাকি এই টুকু দূরে কেউ হানিমুনে যায় নাকি…
আমিঃ তাহলে কোথায় যাবে.?
রিতুঃ কক্সবাজার নিয়ে যাবে…
আমিঃ হায় আল্লাহ, এক দিনের মধ্যে আবার কক্সবাজার যাওয়া যায় নাকি? প্রস্তুতি লাগে না…
রিতুঃ আমি জানি না। আমি দূরে হানিমুনে যাবো তো যাবোই…
আমিঃ আচ্ছা নিয়ে যাবো, কিন্তু আমারও তাহলে শর্ত আছে…
রিতুঃ কি শর্ত বলো?
আমিঃ প্রথমে……………. (..#চলবে..)