প্রতারক part 5
#Roja_islam
— খুব ভালো লাগে তোমার ছেলেদের শরীল দেখাতে???
.
তীক্ষ্ণ দৃষ্টি আর গম্ভীর কণ্ঠের এই কথায় আমার শরীল কাঁপতে লাগলো ভয়ে। আমি ফুঁপিয়ে কেঁদে দিলাম ছেলেটার দিকে তাকিয়ে। ছেলেটা একদৃষ্টিতে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। আমি কেঁদে যাচ্ছি। লিফট খুলতেই তার যেমন ঘোর কাটে। এবার সে অগ্নিমূর্তি হয়ে তাকায় আমার দিকে। আমি ভয়ে লিফট থেকে বেরুতে নিলেই সে আমায় টেনে ছাদে নিয়ে যায় আর দেয়ালের সাথে চেপে ধরে।
.
— এই মেয়ে প্রবলেম কি?? হ্যাঁহ কি প্রবলেম তোমার কোথায় কোথায় কাঁদো কেনো ড্যাম ইট!
.
কথা গুলি বলেই দেয়ালে সজোরে ঘুষি মারে। আমি অবাক হয়ে কান্না থামিয়ে চোখ বড়বড় করে ছেলেটার দিকে তাকিয়ে থাকি।
এবার সে আমার বাহু ধরে ঝাঁকিয়ে বলে উঠে।
— শুধু আমি বেড বয় সেটাই বুঝো আর কিছুনা?? একটা মেয়ের কিভাবে রুম থেকে বা বাড়ী থেকে বেরুতে হয় সেটাই জানো না বুঝো না?? এতো টা ইরিস্পন্সিবল কিভাবে হলে??
.
এই অসভ্যের কথার আগামাথা না বুঝে নিজের দিকে তাকাতেই আমি বেহুশ। ছিঃ আল্লাহ তুমি মাটিফাকা হয়ে যাক আমি ঢুকে পড়ি। আমি প্লাজু আর গেঞ্জি পড়ে আছি। আমি এভাবেই নিচেও গিয়েছিলাম ভাবতেই আমি লজ্জায় কেঁদে দিলাম আবার!! কাঁদতে কাঁদতেই বললাম।
.
— আমি সত্যি বলছি আমি বুঝি নি মানে খেয়াল করিনি ভুল হয়ে গেছে!
— তোমার ভুলের জন্য। আমার মাথা খারাপ হয়ে গেছে!!
.
আমার কান্না থেমে গেলো। অবাক হয়ে বললাম।
— মানে???
— মানে তোমাকে অনেক হট লাগছে!!
— ছিঃ!! আমিও কাকে এক্সপ্রেইন করছি।
.
কথাটা বলতেই সে আমার দুই দিকে হাত রাখলো। আমি ভয়ে কাচুমাচু করছি।
— ছেলেটা কে ছিলো??
.
আমি অবাক হলাম এই প্রশ্নে কিছুটা অসস্তিও।
— ন না নান ওফ ইউর বিজনেস!!
— তুমি দেখছি। ভিতুডিম সাথে তুললাও!!
.
বলেই হাসতে লাগলো নিজের চুপ ঠিক করতে করতে। কি সুন্দর হাসি আমি অবাক চোখে দেখছি যেমন এতো সুন্দর হাসি আগে কখনো দেখিনাই!! হঠাৎ সে চুটকি বাজালো আমার সামনে আমি অসস্তি তে পড়ে গেলাম। আমি চেঁচিয়ে বললাম।
— শুনুন আমার থেকে দূরে থাকুন। একদম আমার কিছুতে ইন্টাফের করবেন না। আমি যা খুশী তা করি আপনার কি??
.
সে বাঁকা হেসে আমার উত্তর না দিয়ে চলে গেলো। আমি সস্তির নিশ্বাস নিলাম। তারপরপরই চিঠিটার কথা মনে হলো। তাড়াতাড়ি সেটা খুলে পড়ি শুরুকরলাম।
চিঠিতে লেখা।
.
—– তোর ফোন কেনো অফ সারাদিন তো কল দিয়ে জ্বালাস এখন কি হইছে?? আমাকে বিপদে ফেলে ফোন অফ করে রেখেছিস তাইনা? লনি কই কি করছিস ওরে?? ওর বড় ভাই আমাকে পুড়া একদিন আটকা রাখছে। তাড়াতাড়ি ফোন দিয়ে বল লনি কোথায় না হয় ভালো হবে না হীর!!—–
.
আমার মাথা ঘুরাচ্ছে এই টাইপ চিরকুট পড়ে। হা হা হা আমিও ভাবছিলাম কি শিহাবের আমার জন্য কষ্ট হচ্ছে আর শিহাব। এটা আসলেই শিহাব তো?? নাকি অন্য কেউ?? এই শিহাব কেই আমি পাঁচ বছর ধরে ভালোবাসি? কাঁদতে কাঁদতে নিজের রুমে চলে গেলাম। মা নামাজ পড়ছে। আমার ও মন চাইলো পড়তে। কাঁদতে কাঁদতে নামাজ পড়লাম অজু করে। হাল্কা লাগছে। তারপর হঠাৎ মাথায় এলো। লনি কই?? কি করেছে ছেলেটা?? মেরে ফেলেনি তো?? আল্লাহ আমি কি করবো তাহলে। নিশ্চয় লনির ভাই শিহাব কেই মেরে ফেলবে!! উফফ কি করি আমি??
.
লনি সব সময় আমায় ডিস্টার্ব করলে শিহাব ই আমায় বাঁচিয়েছে। সেই সুবাদে অনেক বার দুজনের মধ্যে মারামারি ও হয়েছে কলেজের সবাই এসব জানে। নিশ্চয় লনি কে পায়না বলে সবাই ভাবছে শিহাবি কিছু করেছে। আমি আর কিছু না ভেবে। ছেলেটার উদ্দেশ্য বের হলাম ফ্লাট থেকে। তারপর ছাদের কথা মনে পড়তেই চেঞ্জ করে নিচে গেলাম। দোকানের সামনে নেই। উনাদের ফ্লাটেও তো ঢুকতে পারবোনা!! আমার কান্না পাচ্ছে।
.
নিজেদের ফ্লাটে চলে এলাম। মার কাছে গেলাম।
— মা আমার ফোন দিয়েছে ছেলেটা??
— কোন ছেলে??
— ঐ আমাকে হসপিটাল নিয়ে গেলো যে!!
— আরে ওর নাম রাহুল।
— রাহুল!! আচ্ছা যাই হোক আমার ফোন দেয় নাই?? কাউর কাছে?
— তোর ভাইয়া যানে এসব!!
আমাকে তো ফোন দেয় নাই।
— উফফ ভাইয়া কই এখন??
— বাইরে আর কই সারাদিন বাসায় থাকে?? তুই ও রুমে পড়ে থাকিস। মাটা একা পড়ে থাকে খবর নিস না।
.
মার অভিমানী কথা শুনে বুকটা ফেটে যাচ্ছে। সত্যি বাবা চলে যাওয়ার পড় আমি ভাইয়া নিজেদের মতো বিজি থাকি পড়াশোনা নিয়ে নিজেদের কষ্ট নিয়ে বুঝিনা মা কত একা। মার ও কষ্ট আছে। ভাবতেই চোখে পানি চলে এলো। মাকে জরিয়ে ধরলাম!!
— সরি মা ক্ষমা করে দাও। এক্টু সময় দাও আমায় আমি আবার আগের মতো হয়ে যাবো সত্যি।
— আমি জানি!! হীর আমি জানি না তোর কি হইছে কিন্তু সব ভুলে যা পুড়ানো সব নতুন করে শুরু কর। তোর বাবা বলতো না অতীত মনে রাখতে নেই।
— মা এতো সহজ না অতীত ভুলা। যার সাথে বর্তমান ও জরিয়ে আছে।
— তুই কত বড় হয়ে গেছিস হীর।
–….
— একটা কথা বলবো হীর??
— হুম।
— তুই এখন সবি বুঝিস তাই আমি আর তোকে নতুন করে কিছু বলবো না। তুই যেভাবে ভালো মনে করিস কর। আমার মেয়ের উপর আমার বিশ্বাস আছে।
.
আমি মাকে ধরে ইচ্ছে মত কাঁদছি। আর ভাবছি সব ভুলতেই হবে প্রতারক দের ভেবে জীবন নষ্ট করার মানেই হয় না। কিন্তু আমি যে আশা ছাড়তে পারিনা স্ট্রং হয়েও হতে পাড়ি না মা পাড়ি না। সেদিন খুব বড় মন দিয়ে শিহাবের বিয়ে দেখতে গেলেও শেষ এ আমি পারিনি মা। কি করে পারবো। যার সাথে কলিজা টা ভাগ করেছি সেই নিতু কি করে ……! আর ভাবতে পারছি না আল্লাহ আমায় শক্তি দেও প্লিজ শক্তি দাও আর পারছিনা এই প্রতারক দের দেওয়া পাইন নিতে।
.“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
.
রাহুল নিজের ফ্লাটে বসে আছে যেখানে হীর কে এনেছিলো। একটা ছেলেকে নিজের ফোন থেকে একটা পিক দেখালো।
— এই মেয়েটার সব কিছু জানতে চাই। তোমাদের ভার্সিটি তেই পড়ে এক্টু খোজ নাও। বুঝতে পারছো তো মানে পাস্ট সম্পর্কে খোজ নাও!!
— ভাইয়া বুঝেছি আমি পাড়বো যেহেতু একি ভার্সিটি তে আছি।
— সেই জন্যই তোমাকে কাজ টা দেওয়া প্লিজ আমার হোপ ডাউন করোনো।
— আইল ট্রায় মায় বেস্ট! ব্রো!!
— গুড লাক ব্রো। ইউ ক্যান গোঁ নাউ!!
— শিয়র!!
.
ছেলেটা চলে গেলে রাহুল ফোনের দিকে তাকিয়ে থাকে রক্তচক্ষু নিয়ে।কেনো এতো রাগ তার এই মেয়ের উপর তা সে জানে না শুধু জানে শেষ করে দিতে হবে। সব শেষ করে দিতে হবে।
— রিভেঞ্জ তো অবশ্যই নিতে হয়। নাহলে পাপ বেড়ে যায়। আমি তা হতে দিবো না।
.
বলেই বাঁকা হাসে রাহুল।
.
রাতে ভাইয়া এলে ভাইয়ার থেকে ফোন পাই। পেয়ে ফোন অন করতেই নিতুর কল। রিসিভ করবো কি করবো না ভাবতে ভাবতে দুই বার ফোন কেটে গেলো। মনের সাথে যুদ্ধ করে রিসিভ করতেই।
— এই তুই আমার হ্যাসবেন্ড….!
.
এটুকু শুনেই কল কেটেদি!! আর শোনার সাহস হলো না। আমি ভার্সিটি যাবো কি করে?? নিশ্চয় নিতু তার দল বল নিয়ে ধরবে আমায়। আর শিহাব ও তো কিছুই করবেনা। কেনো দুজন এমন করলো আমার সাথে কি দোষ আমার তা আজ ও অজানা। এর মধ্যে একটা অপরিচিত নাম্বার থেকে কল আসে। প্রায় আসতেই থাকে। ঠিক মতো কাঁদতেই দিচ্ছে না। না পেরে ধরেই বসলাম কাঁপা কাঁপা হাতে।
— হ্যাঁলো??
–…
— হ্যাঁলো কে বলছেন??
— শুভাকাঙ্ক্ষী!!
— মানে…
.
.
চলবে?
[ নিতু শিহাব দুই টারে কি শাস্তি দেওয়া যায় এক্টু হেল্প করেন ?!]