গল্প:- বাল্য কালের বউ সিজন ২ পর্ব:-(৭)

0
1698

গল্প:- বাল্য কালের বউ সিজন ২ পর্ব:-(৭)
লিখা:- সোহরাব আল ইসলাম

এই মেয়ে তোমার কথার আগে হাত চলে
কেন? তোমার সাহোস দেখি বাচিনা! তুমি আমার
ছেলেকে থাপ্পড় দিতে যাচ্ছো কেন?(আব্বু)
লিজা:- আঙ্কেল আমার মনে হয় মেয়েটা
সোহরাব ভাইয়াকে ফাসাতে চাচ্ছে! কিন্তু ভাইয়া
মনে হয় ওকে তেমন চাঞ্চ দিচ্ছেনা তাই এমন
করছে।
আব্বু:- এই মেয়ে ঐ দিন তুমি বাড়ী গিয়ে আমার
ছেলেকে অপমান করে এসেছো। মিথ্যা কথা
বলে আমাদের সবাইকে বোকা বানিয়ে
এসেছো। তুমি না বলছো তোমার বর আছে
তাহলে আমার ছেলের পিছু নিয়েছো কেন?
তখনি প্রিয়া পেছন থেকে এগিয়ে এসে,,
প্রিয়া:- আব্বাজান দু এক থাপ্পড় লাগিয়ে দিব নাকী।
তখনি চেয়ে দেখি নিশি কেমন চেহারাটা কালো
করে নিয়েছি। আর আমাদের বাড়ীর সবাই
নিশিকে যা খুশি তাই বলে যাচ্ছে।
আমি:- আরে আপনারা কে বলেন তো? সেই
কখন থেকে উল্টা পাল্টা কথা বাত্রা বলে যাচ্ছেন?
আব্বু:- মানে কি বলছিস সোহরাব আমাকে চিনতে
পারছিস না? আমি তোর জন্মদাতা পিতা।
আমি:- সরি আপনাদের কোথাও ভূল হচ্ছে।
আসলে আমার নাম আল আর আমি ওনাদের বাসায়
ভাড়া থাকি।
আব্বু:- সোহরাব এর পরিনাম কিন্তু ভালো হবে না।
আমি নিশ্চিত বুঝতে পারছি, আমাদের চিনেও না
চেনার বান করছিস।
আমি:- আরে বলছি তো আমি আপনাদের চিনিনা।
আর আপনি কি বলছেন দু একটা থাপ্পড় লাগাবেন। হাত
উপরে তুলে দেখুন হাত ভেংগে দিব। আরে
মেম আপনি মন খারাপ করছেন কেন?
নিশি:- আল আমার মনে হচ্ছে ওনারা আপনাকে
ওনাদের ছেলে সোহরাব মনে করতেছে।
আমি:- হ্যা তাই তো! একটু দ্বারান আমি সব সমস্যার
সমাধান করে দিচ্ছি। আপনার ছেলে মনে হয়
আমার মত দেখতে আমি একটা কম্পানীতে জব
করি এই দেখুন সেই কম্পানীর আইডি কার্ড।
আব্বু:- হ্যা তাই তো, মা লিজা সোহরাবকে একটা
ফোন করত তাহলে বুঝতে পারবো।
প্রিয়া:- হ্যা আব্বু আমি করতেছি।
আমি:- ঠিক আছে আপনারা ফোন করেন আমি
গেলাম, এই নিশি মেম চলেন আমাদের দেরি
হয়ে যাচ্ছে।
নিশি:- একটু দ্বারান আমাকে যে অপমান করেছে
তার প্রতিশুধ নিয়ে নেয়। ওনাদের ছেলেকে
আসতে দেন। আমাকে অপমান করার মজা হারে
হারে টের পাবে।
আব্বু:- কি আমাকে মজা দেখাবে? আসতে দাও
আমার ছেলেকে মজা আমিও দেখাবো। (কাম
সারছে এমনিতে আমিই সোহরাব আর আমিই আল
ভাগ্য ভালো ফোনটা গাড়ীতে ভূলে রেখে
চলে এসেছি।)
প্রিয়া:- রিং হচ্ছে কিন্তু রিসিব করছে না।
আম্মু:- আরে দেরি হয়ে যাচ্ছে তো ঐ দিকে
রিতার গায়ের হলুদ শেষ হয়ে যাবে। চলেন এখন
সোহরাব মনে হয় জেমে আটকা পড়ে আছে।
(আমি যদি জানতাম রিতার গায়ের হলুদ তাহলে
জীবনেও আসতাম না।)
প্রিয়া:- শ্বাশুমা মনে হচ্ছে এই ছেলেটা
সোহরাব। আপনি ওনাকে বলেন ওনার মোবাইলটা
দেখাতে।
আম্মু:- তুমি আমার থেকে বেশি চিনো আমার
ছেলেকে? দেখি সবাই চলেন আর এই মেয়ে
তোমাকে বলি এতটা রাগ ভালোনা তোমার বরটা
তো দেখতে আমার ছেলের মত। তাই
আমাদের একটু ভূল হয়েছে। তাই আমি সবার পক্ষ
থেকে তোমার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি তখনি নিশি
আম্মুর হাত ধরে বলে,,
নিশি:- আন্টি ক্ষমা চাইতে হবে না। আসলে ঠিক
বলছেন আল ভাইয়ার মত দেখতে আপনার
ছেলেটা। তখন আম্মু নিশির মাথায় হাত রেখে
আমার দিকে তাকিয়ে চলে গেছে।
আমি:- নিশি ওনি কি বলে গেছে?
নিশি:- বলেছে আপনার মাথা খারাপ আছে, চলেন
বলে আমার হাত ধরে টেনে ভীতরে নিয়ে
গেছে। আমি নিশির সাথে ভীতরে গেছি এক
সাথে ওর বান্ধবীরা দুলাভাই বলে চিৎকার দিয়ে
উঠেছে।
আমি:- জ্বি শালীরা আমি কিন্তু আপরাদের দুলাভাই
নই। আমি হলাম আল ইসলাম। তখনি চেয়ে দেখি
রিতা বসা থেকে উঠে আমার দিকে এগিয়ে
এসেছে।
রিতা:- ও আপনার নাম আল যাক ভালো তা নিশি তুই
ওনাকে কোথায় পেলি?
নিশি:- এই তোর না গায়ের হলুদ এই সবাই ওর গায়ে
হলুদ দিয়ে দে। সবাই মিলে রিতাকে গায়ে হলুদ
দেওয়ার জন্য নিয়ে যেতেছে।
আমি:- নিশি একটু এদিকে আসবে?
নিশি:- এখন আসতে পারবো না। আমি মন খারাপ
করে অন্য দিকে চলে গেছি। একা দাঁড়িয়ে আছি
এমন সময় কেও এসে আমার পেছন থেকে
চোখ টিপে ধরেছে।
আমি:- আরে কে চোখ টিপে ধরছেন ছারেন
বলছি? কোন শব্দ হচ্ছে না জোর করে ছারিয়ে
দেখি প্রিয়া। আরে আপনি আমার চোখ টিপে
ধরছেন কেন?
প্রিয়া:- আমি তোমাকে চিনতে পারবো না তা
কিরে হয়? ডাবল রোল ছবিতে হয় বাস্তবে নই।
আমাকে বোকা বানানো এত সহজ হবে তা কি
করে হয়?
আমি:- কিসের ডাবল রোল? দেখি ছারেন আমার
হাত আর আমি আবারও বলছি আমি সোহরাব নই আমি
আল ইসলাম।
প্রিয়া:- তুমি নিজেকে যতই ডাবল করো আমার
থেকে তোমার মুক্তি নেই। আজ নয়ত কাল
আমার সাথেই তোমার সংসার করতে হবে।
আমি:- ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখা ভালো তবে জেগে
দেখা কিন্তু বিপদ।
প্রিয়া:- সেইটা সময় বলে দিবে এখন তো কাজটা
করে নেই বলে প্রিয়া আমাকে টান মেরে ওর
বুকের মাঝে নিয়েছে।
আমি:- আরে কি করছো ছারো বলছি বলে
কোন মতে প্রিয়াকে ছারিয়ে পেছনে ঘুরে
দেখি নিশি দাড়িয়ে আছে হাতে হলুদ নিয়ে।
প্রিয়া:- এই মেয়ে আমি আবারো বলতেছি আমার
স্বামির কাছ থেকে দূরে থাকবি।
নিশি:- ঠিক আছে দূরে থাকবো বলে নিশি চলে
যেতেছে, আমি তারা তারি করে গিয়ে নিশির হাত
ধরে ফেলি।
আমি:- কি হলো আন্টি আমাকে হলুদ না লাগিয়ে
চলে যাচ্ছেন কেন?
নিশি:- তবেরে বলে আমার সারা কাপড় হলুদ দিয়ে
নষ্ট করে দিয়েছে।
আমি:- নিশি মেম আপনাকে রাগাতে কেন জানি খুব
ভালো লাগে। তখনি একটা মেয়ে এসে
আমাদেরকে বলে,,
এই যে আপনারা তারা তারি আসেন রিতা আপু
আপনাদের ডাকছে।
নিশি:- চলেন ভাইয়া! আমি নিশি গেলাম গিয়ে দেখি
সবাই বসে আড্ডা মারতেছে। নিশি সবার মাঝে
বসে গেছে আমি ঠিক পেছনে বসে আছি।
রিতা:- নিশি তোর বাল্য কালের বর আসেনি কেন?
নিশি:- ওর একটু কাজ পড়ে গেছে তো তাই।
আমি:- আমি হলেনা সব কাজ রেখে আমার
বউয়ের সাথে আসতাম। কোন অজুহাত বা বাহানা
দেখাতাম না।
রিতা:- তাহলে তো আপনার বউ অনেক লাকী
হবে।
নিশি:- ঘুড়ার ডিম হবে, দেখিস বউ ওর কপালে শনির
দশা লাগাবে।
আমি:- জ্বি না আমার বউ আমাকে অনেক আদর
করবে, আর মহাব্বত করবে। নিশির সাথে কতক্ষন
তর্ক বিতর্ক করে নিলাম। আচ্ছা মেম অনেক রাত
হয়ছে চলেন বাড়ীতে যাই।
নিশি:- আরে হ্যা আগামী কাল তো আবার আমার
বাথডে। আচ্ছা রিতা যাই আর মনে করে কিন্তু তুই
চলে আসিস। সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে
আসতেছি হঠাত এক ধাক্কা খেয়েছি।
আমি:- সরি আন্টি দেখতে পায়নি?
বাহা আমাকেও পর করে দিলি? নিজের মাকে আন্টি
বলছিস? আরে আমার সাথে তুই ডাবল হওয়ার এক্টিন
কেন করছিস? (আম্মু)
আমি:- সরি আন্টি আমি আপনার ছেলে নয়। এই নিশি
চলো? নিশিকে সাথে নিয়ে চলে এসেছি।
গাড়ীতে বসে আগে মোবাইলটা পকেটে
নিয়ে নিলাম। গাড়ীতে কোন কথা হয়নি রাস্তায়।
আমি ড্রাইব করেছি নিশি পাশে বসে আছে। হঠাত
করে নিশির মাথাটা আমার কাদের উপর রেখেছে।
মনে হয় নিশি ঘুমিয়ে গেছে, আমি গাড়ীটা
বাড়ীর সামনে রেখে নিশিকে ডাক না দিয়ে
ওকে কোলে তুলে নিলাম। কলিং বেল বাজাতে
আন্টি এসে দরজা খুলে দিয়েছে।
আন্টি:- বাবি নিশির কি হয়ছে?
আমি:- কিছুনা ক্লান্ত হয়ে গেছে একটু ঘুমিয়ে
পড়ছে। আমি নিশিকে ওর রুমে দিয়ে আসি।
আন্টিও আমার পিছু পিছু এসেছে। নিশিকে শুয়ে
দিয়ে আমি চলে এসেছি। রুমে এসে ফ্রেস
হয়ে শুয়ে পড়েছি আর কখন ঘুমিয়ে গেছি ঠিক
মনে নেই। সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেস
হয়ে বের হয়েছি।
নিহা:- ভাইয়া এই নেন টাকা আর লিষ্ট।
আমি:- কিসের টাকা আর লিষ্ট?
নিহা:- আমি কি করে বলবো আগে হাতে নিয়ে
দেখেন?
আমি:- হ্যা দাও, হাতে নিয়ে তো পুরাই অবাক আরে
এত বড় লিষ্ট এই সব গুলা আমাকে করতে হবে?
নিহা:- আপু তো বলছে সব আপনি নিজেই
করবেন। আরেকটা কথা আপুর বিয়ের বাকী কিন্তু
আর মাত্র দশ দিন যা করার তারা তারি করবেন।
আমি:- বুঝতে পারছি মহা রানী ঠিক আছে আমি সব
কিছু রেডি করতেছি। সারা দিনে আমি নিশিদের
বাড়ীটা সুন্দর করে সাজিয়ে দিয়েছি। লিষ্টের সব
কিছু কিনে আন্টির কাছে হিসাব দিয়ে দিলাম। সব কিছু
করতে করতে সন্ধা ৭টা বেজে গেছে। আমি
রুমে গিয়ে ফ্রেস হয়ে জুয়েলকে ফোন
করে সব কিছু ঠিক করে নিলাম। রুম থেকে বের
হবো তখনি দেখি নিহা আর নিশি দুজনে আমার
রুমে এসেছে,,,
নিহা:- ভাইয়া আপুকে শাড়ীটা পড়িয়ে দেন পার্লার
থেকে লোক আসার কথা এখন আসতে পারবে
না। আর সব গেস্ট আসা শুরু করেছে।
আমি:- ঠিক আছে পড়িয়ে দিতেছি, নিশি আমার দিকে
তাকিয়ে আছে। আমি নিশির শাড়ী পড়িয়ে দিতেছি।
আমি ইচ্ছে করে নিশির তিলটা ছুয়ে দিলাম। নেন
মেম কচিটা নিজে পড়ে নেন।
নিশি:- আপনি যেহেতু সব পড়িয়ে দিয়েছেন এই
কচিটা পড়িয়ে দেন।
আমি:- আজ সূর্য্য কোন দিকে উঠেছে।
নিশি:- এত কথা না বলে পড়িয়ে দেন। আমি নিশিকে
কচিটা পড়িয়ে দিয়েছি। দেখা শেষ হলে বলিয়েন
আমি যাবো।
আমি:- কি দেখছি আমি? আমার বয়ে গেছে
আপনার তিল দেখার।
নিশি:- ঠিক আছে ভাইয়া আপনার যেহেতু বয়ে
গেছে সেহেতু আমি গেলাম।
আমি:- আরে এই নিলি কি করছো দরজা লাগালে
কেন? আমি বের হবো কি করে?
নিশি:- আমিও আজকে প্রমান করে দিব আপনি
সোহরাব আপনি আল। এখন ভীতরে বসে
বসে মুড়ি খান আমি আর দরজা খুলছি না।
আমি:- আরে তুমি আমার কথাটা তো শুনো কে
শুনে কার কথা নিশি দৌরে চলে গেছে। হায় হায়
এখন কি করবো যদি আমি রুমে বন্ধি থাকি তাহলে
তো সব খেলা শেষ।

চলবে,,

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে