?ভোর? পর্বঃ ৩০।

0
1518

?ভোর? পর্বঃ ৩০।
লেখিকাঃ আয়sha?
|
|
রাত ২টা ছুঁই ছুঁই… হঠাৎ আলোকে কেউ ঝাপটে ধরলো শক্ত করে। আলোর ঘুম ভেঙ্গে গেলো। আলো নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করলো কিন্তু পারলো না। আলো চিৎকার দিবে ঠিক তখনি আলোর মুখ চেপে ধরলো…………
|
একটুপর আলোর মুখটা হাল্কাভাবে খুলে দিলো। আলো কিছু বলছে না। নিঃশ্বাস নিচ্ছে। অনেক সময় পর আলো পিছনে না তাঁকিয়ে….
|
আলোঃঃ আ–আপনি যাননি? (চোখ টলমল)
|
ভোরঃঃ না… তুমি আমাকে না দেখে বুঝলে কিভাবে আমি? (আলোর গলা জড়িয়ে ধরে)
|
আলোঃঃ সব দেখে অনুভব করতে হবে? স্পর্শেও বুঝা যায়। আপনি আমাকে ছাড়লে খুশি হবো। আমার কষ্টো হচ্ছে আপনার জড়িয়ে ধরায়। (কন্ঠে কঠিনত্ব)
|
ভোরঃঃ ওহ। আচ্ছা তুমি আমাকে বললে না.. কেন যাই নি? আর এতোরাতে এখানে কেন? (আলোকে ছেড়ে সোঁজা হয়ে)
|
আলোঃঃ সবকিছুতে আগ্রহ দেখাতে হয় না এতদিনে বুঝেছি। বুঝেছি না.. আমাকে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে আগ্রহ মূলক জিনিসে গ্রাহ্য পাওয়া যায় না।
|
ভোরঃঃ অভিমান নাকি রাগ.. আমার প্রতি?
|
আলোঃঃ অভিমান বা রাগ যেটাই বলুন.. ওসব আমাকে কি মানাবে? আর আপনার প্রতি তো প্রশ্নই আসে না। অভিমান… রাগ তার প্রতি আসে যাকে আমরা ভালোবাসি। (দীর্ঘশ্বাস)
|
ভোরঃঃ তুমি কি আমাকে ভালোবাসো না?
|
আলোঃঃ এই প্রশ্নট আরও চার ঘন্টা আগে জিজ্ঞেস করলে উত্তরটা হতো.. হ্যাঁ খুব ভালোবাসি। কিন্তু এখন উত্তরটা.. না। (টুপ করে একফোঁটা পানি পড়ে গেলো)
|
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি মাসে জিতে নিন নগদ টাকা এবং বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।

গল্পপোকার এবারের আয়োজন
ধারাবাহিক গল্প প্রতিযোগিতা

◆লেখক ৬ জন পাবে ৫০০ টাকা করে মোট ৩০০০ টাকা
◆পাঠক ২ জন পাবে ৫০০ টাকা করে ১০০০ টাকা।

আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/?ref=share

ভোরঃঃ তোমার এমন বিহেভিয়ার হওয়াটা স্বাভাবিক। কিন্তু আমার প্রতি তোমার বিশ্বাস এভাবে হারিয়ে গেলো?
|
আলোঃঃ না। নিজের প্রতি বিশ্বাস হারিয়ে গিয়েছে।
|
ভোরঃঃ তোমার সবটা জানা উচিত কেব আমি এমন করেছি?
|
আলোঃঃ আমি চরিত্রহীনা আর চরিত্রহীনাদের কোনো কিছু এক্সপ্লেইন করা সাঁজে না।
|
ভোর সাথে সাথে আলোকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে আলোর মুখ চেপে ধরে…..
|
ভোরঃঃ লিমিট ক্রস করবে না বলছি… (রাগীলুকে)
|
আলো ভোরের হাত মুখ থেকে সরিয়ে….
আলোঃঃ আ—আমার কথা না এটা.. আপনার কথা ছিলো এটা। বিয়ের আগে জানলে আপনি আমার মতো মেয়েকে বিয়েই করতেন না। (ছলছল নয়নে)
|
বলেই আলো উঠে বেলকনিতে গিয়ে বেলকনির গ্রীল ধরে কান্না করতে লাগলো। কিছুক্ষণপর ভোরও গেলো। আলোর পাশে দাঁড়িয়ে…..
|
ভোরঃঃ শুনবে না কেন করলাম এমন?
|
আলোঃঃ না। প্রয়োজন বোধ করছি না।
|
ভোরঃঃ এভাবে ভরসা উঠিয়ে নিলে?
|
আলোঃঃ পরিবারের পর রিহামের প্রতি ভরসা করেছিলাম কিন্তু আমি ভুল ছিলাম সেখানে। তারপর আপনার প্রতি চোখ বন্ধ করে ভরসা করেছিলাম কিন্তু আমি আবারও ভুলে প্রমাণিত হলাম। (বাহিরে তাঁকিয়ে)
|
ভোরঃঃ কথাগুলো কি তোমার শোনা উচিত না?
|
আলোঃঃ উচিত… অনুচিত.. বিবেচনা করা থেকে বিরত থাকতে শিখেছি। শিখানো হয়েছে আমাকে। আর সেটা আপনিই শিখিয়েছেন। (টুপ করে কয়েক ফোঁটা পানি)
|
ভোরঃঃ এতো অভিমান করা কি ঠিক হচ্ছে? আমার তো কষ্ট হচ্ছে।
|
আলোঃঃ বললাম তো অভিমান তার প্রতি সাঁজে যাকে আমরা ভালোবাসি আর আপনার কষ্টোও হয়? কষ্টো কাকে বলে সে জিনিসের সাথে আপনার পরিচিত আছে?
|
ভোরঃঃ এত কঠোর রূপ ধারন করলে কেন? এতটা কঠোর হওয়া কি ঠিক?
|
আলোঃঃ কঠোর রূপ? ওটাও আপনার কাছে শিখেছি।
|
ভোরঃঃ শুধু আমার ভালোবাসাটাই শিখলে না। (দীর্ঘশ্বাস)
|
আলোঃঃ আপনি আমাকে ভালোবাসেন? (বাহিরের দিকে তাঁকিয়ে কান্না করতে করতে)
|
ভোরঃঃ নিজের থেকে বেশি। (আলোর দিকে তাঁকিয়ে)
|
আলো ভোরের হাত ধরে রুমের ভিতর নিয়ে গেলো টানতে টানতে। তারপর আয়নার সামনে দাঁড় করালো ভোরকে।
|
আলোঃঃ সামনে তাঁকিয়ে আপনি নিজের বুকে হাত দিয়ে বলেন তো.. আপনি আমাকে ভালোবাসেন?
|
ভোর নিজের বুকে হাত দিয়ে আয়নার দিকে তাঁকিয়ে….
|
ভোরঃঃ আমি তোমাকে ভাভা…. (আলোর দিকে তাঁকিয়ে) ভালোবাসি। অনেক ভালোবাসি।
|
আলোঃঃ আমি আয়নার দিকে তাঁকিয়ে বলতে বলেছি।
|
ভোরঃঃ আমি তো তোমাকে ভালোবাসি। আমাকে না। (চোখ ছলছল)
|
আলোঃঃ আপনি আয়নাতে তাঁকিয়ে বলুন…
|
ভোরঃঃ আমি তোমাকে ভাভাভা… (আলোর দিকে তাঁকিয়ে) ভালোবাসি। আমি পারব না আয়নায় তাঁকিয়ে বলতে।
|
আলোঃঃ কারন আপনি আমাকে ভালোবাসেন না। মানুষ আর যাইহোজ নিজের দিকে তাঁকিয়ে কখনো মিথ্যে বলতে পারে না।
|
ভোরঃঃ আমি তোমাকে ভালোবাসি আলো। খুব ভালোবাসি। (আয়নায় তাঁকিয়ে)…… এবার বিশ্বাস হলো?
|
আলোঃঃ কেউ কাউকে ভালোবাসলে কষ্টো কিভাবে দেয়? বাজে কথা কিভাবে বলে? কিভাবে?
|
ভোরঃঃ সিচুয়েশনটা এমন ছিলো আলো…
|
আলোঃঃ ভালোবাসার মানুষকে সিচুয়েশন মেইনটেইন করতে গিয়ে কষ্টো দিতে হয়? বাজে কথা বলতে হয়? তার শ—শরীরে হাত তুলতে হয়? এটার নাম ভালোবাসা? আপনি এটাকে ভালোবাসা বলেন? (কান্না করতে করতে)
|
ভোরঃঃ আমি জানি আমি অন্যায় করেছি তোমার সাথে। খুব অন্যায় করেছি। তুমি এর জন্য যে শাস্তি দিবে আমি মাথা পেতে নিবো। কিন্তু তোমাকে আমার সব কথা শুনতে হবে।
|
আলোঃঃ যে শাস্তি দিবো তাই মেনে নিবেন?
|
ভোরঃঃ হ্যাঁ… বলো….
|
আলোঃঃ আমি ডিভোর্স চাই। (কঠোর মুখ করে)
|
আলোর কথা শুনে ভোর ধুপ করে ফ্লোরে বসে পড়ে। ভোরের ওভাবে বসে পড়ায় আলোর বুকে গিয়ে লাগে। কিছু সময় পর ভোর মাথা উঁচু করে একটা শুকনো হাসি দিয়ে……
|
ভোরঃঃ আমি কতটা কষ্টো তোমাকে দিয়ে ফেলেছি। আমি বুঝিনি তুমি এত কষ্টো পাবে যার জন্য আমার কাছ থেকে মুক্তি চাচ্ছো। আচ্ছা মুক্তি চাচ্ছো মানে তো আমি যেন তোমার জীবনে না থাকি? ডিভোর্সেই তো মুক্তি না। তাই না? আমিই যদি চলে যাই তবেও তো তুমি মুক্ত। আসলেই তোমার জীবনে থাকার তো কোনো অধিকার নেই আমার কারন আমার কাছে তুমি মুক্তি চেয়েছো। মুক্তি। আচ্ছা আলো চলে যাওয়ার আগে জানা খুব দরকার তুমি আমাকে ক্ষমা করেছো তো? বলো…
|
আলোঃঃ কো—কোথায় যাবেন? (ভোরের সামনে হাঁটুগেরে বসে)
|
ভোরঃঃ ভোরের শেষ রাতের অন্ধকারে। অন্ধকারে চলে যাবো। তুমি মুক্তি পাবে… হা হা হা… মুক্তি পাবে(আস্তে করে)
|
আলো কিছু না বলে ভোরকে জড়িয়ে ধরে খুব শক্ত করে কিন্তু ভোর ধরলো না। আলো ভোরকে জড়িয়ে ধরে কান্না করেই যাচ্ছে। এমন ভাবে ধরছে যেন ভোরকে নিজের বুকের ভিতর ঢুকিয়ে নিতে পারলো শান্তি পেতো। কিছুক্ষণ পর আলো ফিল করলো ভোর কথা বলছে না। আর নড়াচড়াও করছে না। আলো ভোরকে ছেড়ে ভোরের সামনে আসতেই ভোর ঢুলে পড়ে যাচ্ছিলো। আলো ধরে…..
|
আলোঃঃ ভোর ভোর ভোর??? কথা বলুন? (মাথা ধরে)
|
ভোরঃঃ নিশ্চুপ——
|
আলোঃঃ কি হয়েছে আপনার কথা বলছেন না কেন? এই ভোর ভোর? ভোরওওওওও…. (চিৎকার দিয়ে)
|
ভোর নিচে ফ্লোরে ঢুলে পড়ে গেলো।
|
আলোঃঃ চোখ খুলুন… ভোর চোখ খোলো না। দেখো আমাকে। ভোর দেখো আমাকে… দেখো না। আমার খুব কষ্টো হচ্ছে প্লিজ চোখ খোলো। প্লিজজজজ (কান্না করতে করতে)
|
ভোরঃঃ————-
|
আলোঃঃ চোখ খোলো… এই দেখো আমাকে.. দেখো.. দেখো না.. আচ্ছা আমি আমি আর কখনো বলবো না.. কখনো তোমাকে ছেড়ে যাবার কথা বলবো না। ডি—-ডিভোর্সের নামও নিবো না কোনদিন।প্র—প্রমিস প্লিজজজ চোখ খুলো এবার। চোখ খুলো। কথা বলো। কথা বলো না। কথা বলো না। আমার খুব কষ্ট হচ্ছে। খুব। খুব। সত্যি আর কখনো ছেড়ে যাবার কথা বলবো না। বলবো না। বলবো না বলবো না। বলোবোওওওওও না…না… না….. (কান্না করতে করতে ভোরের বুকে মাথা রেখে)
|
|
|
চলবে…………….
((ভুল-ত্রুটি ক্ষমার চোখে দেখবেন। ধন্যবাদ?))

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে