হেমন্ত ধারার অশ্রু পর্ব-৭

0
1005

#পর্ব-৭
#হেমন্ত ধারার অশ্রু
#মারুফ হাসান সজীব

বর্ষার কথায় ধারার রাগ উঠে যায়।আর বলল রাকিব এখানে কেন এসেছিল?
বর্ষা তুমি কি নিজের বিপদ নিজে ডেকে আনতে চাও।
এরকম একটা কঠিন তম কাজ তুমি কি করে করলে‌।
আমি তোমাকে শিক্ষিত মনে করে বুঝেছি তোমাকে
তেমন কিছু বুঝাতে হবে না। তুমি নিজেই ঠিক বুঝে
নেবে। কারন তোমাকে বুদ্ধিমতী ভেবেছি।

‘আর তুমি কিনা এরকম একটা কাজ করেছো’

বর্ষা ভীত হয়ে নরম কন্ঠে বলল আচ্ছা ভাবী আর কখনো এরকম করবো না। আমি আর রাকিব কে
আসতে বলব না। আসল কথা রাকিব আমাকে তার
থেকেও বেশি ভালোবাসে তাই কোনো কিছু যদি
নতুন কিছু থাকে তাহলে আমার জন্য নিয়ে আসে।
আবার কোনো ভালো খাবার রানলে আমার জন্য কষ্ট
করে নিয়ে আসে। আমিও ওকে অনেক ভালোবাসি।

ধারা বলল আমি বুঝতে পারছি কিন্তু এখানে টা বলল।

-বর্ষা বলল ঠিক আছে সেখানে যাব।

ধারা ও বর্ষা কারো আসার আওয়াজ শুনতে পেল।
ধারা বলল তুমি তোমার ঘরে চলে যাও‌। আমি এখন
চলে যাব।কে যেন এদিকে এগিয়ে আসছে। আবার
এখানে দেখে ফেললে বিপদ হবে। আমি যাই।

বর্ষা বলল ঠিক আছে আমিও গেলাম।

বর্ষা ও ধারা দুজন দুদিকে চলে গেল।ধারা নিজের ঘরে গিয়ে দেখল রাফি ঘুমিয়ে পড়েছে।এতে কিছুটা
অবাক হলো ধারা।কারন এখন বাজে সাড়ে নয়টা রাত।
এতো আগে রাফি কখনো ঘুমায় না। হয়তো আজ শরীর ক্লান্ত তাই এতো আগে ঘুমিয়ে পড়েছে।ধারা ভাবলো
নদী কি করে একটু দেখে আসা উচিত?

যেই ভাবা সেই কাজ!ধারা নদীর ঘরের দিকে এগিয়ে গেল। দেখবে নদী কি করে?

ধারা নদীর ঘরের দিকে অগ্ৰসর হচ্ছে ধীরে ধীরে।
ধারা বাইরে থেকে খেয়াল করলো ঘরে তে আলো
জ্বলছে মিট মিট করে। কারন এই ঘরের ছোট লাইট
কেউ থাকে না বলে লাইট লাগানো হয়নি ভালো।

আর নদী যেহেতু থাকবে তাই কিনে এনে দেবে। ধারা
ঘরের দরজা দেখল হালকা ফাকা রয়েছে। তারমানে
ঘরের দরজা লাগাইনি।ধারা একটু চোখ বুলিয়ে দেখল
নদীকে কোথাও দেখা যাচ্ছে না।

ধারা ভালো করে দেখার জন্য একটু ভেতরে গিয়ে দেখল
নদী কোথাও নেই।
তাই একটু বেলকনিতে দেখতে গেল। কিন্তু নেই।

ধারা এদিকে সেদিকে খুঁজতে লাগলো।

হঠাৎ পেছন থেকে কেউ বলল ভাবী কিছু খুজছো।
ধারা চমকে পেছনে তাকিয়ে দেখল নদী দাঁড়িয়ে রয়েছে।
ধারা বলল তোমাকেই দেখার জন্য এসেছিলাম।

নদী বলল ও আমি তো আবার একটু ছাদে গিয়েছিলাম।

ধারা বলল ঠিক আছে চলো আমি আর তুমি একটু হেঁটে আসি। ছাদে অনেক দিন ধরেই যাওয়া হয় না।
ধারার এমন প্রস্তাবে নদী রাজি হয়ে গেল ‌‌।

নদী আর ধারা দুজন ছাদে চলে গেল।

ছাদে গিয়ে দুজনেই গল্প শুরু করে দিল।ধারা নদীকে
প্রশ্ন করল তুমি ঘুমাও কখন?
নদী বলল ঘুম বেশি হয় না। আমার দুচোখ থেকে
অনেক আগেই ঘুম সরে গেছে। এখন আর ঘুমাতে
চাইলেই ঘুমানো যায় না।
ধারা বলল কেন ঘুম আসে না? তোমার কি কোনো সমস্যা আছে ডাক্তার দেখিয়েছ।

নদী বলল আসলে ভাবী অন্য কারনে।

ধারা বলল কি কারনে?

নদী একটু এগিয়ে গিয়ে বলা শুরু করলো আজ একটা
সত্যি কথা বলি। সকালে তোমাকে বলেছিলাম
আমার বিয়ে হয়নি কিন্তু সেটা সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা
আমার বিয়ে হয়েছিল এক গরীব ছেলের সাথে। কিন্তু
সে যে আমাকে এমন ভাবে ঠকাবে আমি কখনো
ভাবিনি। আমাদের সংসার ভেঙে দিয়েছে। আমার মন
ভেঙ্গে দিয়েছে।

ধারা বলল কার সাথে বিয়ে হয়েছিল?
নদী দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে বলল পরে অন্য সময় বলব।ধারা বলল ঠিক আছে।

নদী বলে এখন বিছানায় শুইয়ে ঘুম আসেনা সেই
পুরনো দিন গুলো মনে পড়ে। শুধু শুলেই না।যেকোন
সময় পুরনো স্মৃতি গুলো মনে পড়ে। তখন মনে হয়
আমার থেকে দুঃখি মনে হয় এ জনমে একটাও নেই।

ধারা আগ্ৰহ নিয়ে বলল তোমার জীবনের ঘটনা শোনার জন্য অপেক্ষা করব কি এমন হয়েছিল?

নদী বলল ঠিক আছে!!

দুজন এ গল্প করতে করতে অনেক সময় পার করে দিল। কখন মধ্যে রাত হয়েছে তাদের কোনো খেয়াল নেই
দুজন এ গল্প করে দেখল আকাশ এ মেঘ জমেছে।
নদী বলল এইরকম বৃষ্টির রাতেই তার সাথে আমার শেষ দেখা। এরপর থেকেই আমি অসহায়। সেদিন রাতে সে
আমার ১০ মাসের সন্তান কে হত্যা করেছিল।

ধারা আবেগপ্রবণ হয়ে বলল তোমার মনে হয় অনেক দুঃখ কোনো একদিন আমার সাথে ভাগ করবে।

তোমার বাচ্চা খুন হয়েছে শুনে আমার মতো কষ্ট আর কেউ পাচ্ছে না।
দুজনে আরো কিছুক্ষণ কথা বলে চলে গেল।

সেদিন রাতে ধারা সারারাত ঘুমায়নি। কারন নদীর কাছে ঘটনা শোনার জন্য।
ধারা যতদিন নদীকে দেখেছিল এরকম ঘটনা ঘটে নি।
কিন্তু হঠাৎ একদিন নদী হারিয়ে গেল।
এরপর হঠাৎ করে আজ রাফির সাথে এই বাড়িতে আসলো আর আমি রাস্তায় দেখেছিলাম।

তিন বছর এর মধ্যে নদীর জীবন এ অনেক কিছু ঘটে গেছে।
এসব ভাবতে ভাবতে ধারা ঘুমিয়ে গেল।

সকাল বেলা উঠে নামাজ পড়ে বসেছিল নাদিয়া বেগম।
বর্ষা তার কাছে গিয়ে বলল মা হেমন্ত নামে একটা ছেলে
দেখা করতে এসেছে।

নাদিয়া বেগম বলল হেমন্ত,,

________________

চলবে,

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে