#হৃদয়ের_অন্তরা❤️
#part_13
#sarika_Islam
,
,
হৃদয় তার মার কাছে গিয়ে হাসি মুখে মাকে বলল,,
_মা আমরা আজি যাবো সাজেক,,
হৃদয়ের মা কাজ করছিল ছেলের কথা শুনে পিছে ফিরে তাকালো,,ছেলের হাসি মুখখানা দেখে তার মুখেও হাসির রেখা ফুটে উঠলো,,আর বলল,,
_কিন্তু টিকেট
আর বলতে না দিয়ে হৃদয় বলল,,
_টিকেটের ব্যাবস্থা আমি করবো তুমি চিন্তা করো না,,
বলেই আবার উপরে গেল,,রায়হান এখন বুঝল হৃদয়ের হঠাৎ খুশি হওয়ার কারনটা,,
তাদের হানিমুনে যাওয়ার কথা শুনে মেজাজ বিগরে গেল,,চুপচাপ সোফায় বসে আছে,,
হৃদয় উপরে গিয়ে অন্তরাকে বলল,,
_জান তুমি রেডি থেক আমি আসছি,,
বলেই কপালে চুমু দিয়ে নিচে নেমে বাহিরে চলে গেল,,অন্তরা সব কিছু পেকিং করছে,,পেকিং করা শেষে ড্রেসিংটেবিলের সামনে গিয়ে চুল আচড়াচ্ছে,,হৃদয় বাহিরে গিয়েছে দেখে রায়হান ফটাফট উপরে গেল, অন্তরার রুমের দরজা চাপানো ছিল,সে ঠেলে ভিতরে ঢুকে দরজাটা পুরা চাপিয়ে দিল,,অন্তরার ঠিক পিছে গিয়ে সেই আগের মতো তার শরিরের স্মেল নিচ্ছে,,অন্তরা চুল আচড়াতে আচড়াতে হঠাৎ আয়নার দিকে নজর গেল,,দেখলো তার পিছে রায়হান দাঁড়িয়ে আছে চোখ বন্ধ করে তার স্মেল নিচ্ছে,,অন্তরা তারাতারি ঘুরে দাঁড়ায়,,অন্তরা সরে জাওয়ায় রায়হান চোখ খুলে ফেলে,, মুখে শয়তানি হাসি ঝুলে আছে,,অন্তরা বলল,,
_আপনের লজ্জা করে না বিকেলে না হৃদয় আপনাকে মারলো তারপরও আবার এসেছেন?(ঘৃনআ নিয়ে বলল)
_প্রেমের মধ্যে আবার কিসের লজ্জা,,আমি তোমাকে ভালোবাসি,,
_ছিহ,,
মুখ ছিটকে রায়হানকে কাটিয়ে চলে যেতে নিলে রায়হান হুট করে অন্তরার হাত ধরে ফেলে,,
_দেখ আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি,,ওই হৃদয়ের থেকে বেশি ভালোবাসবো আমি তোমাকে,,বিশ্বাস করো আমি হৃদয়ের থেকে বেশি ভালোবাসি তোমায়,,
_ছারেন হাত আমার,, আমার হাত ছারেন,,
বলেই হাত টানাটানি করতে লাগলো,,রায়হান অন্তরাকে দেয়ালে চেপে ধরলো,,অন্তরা চিল্লাচিল্লি করতে লাগলো,,
_আমাকে ছারুন ছারুন আমাকে,,হৃদয়,,,,
বলে চিল্লাতে লাগলো,,
_আচ্ছা তুমি এসো না আমার কাছে শুধু এক রাতের জন্য থাকো আমার সাথে just for one night,,
বলেই অন্তরার ঠোটের দিকে মাথা এগুতে লাগলো,,অন্তরা মাথা নাড়াতে লাগলো ক্রমাগত,,এপাশ ওপাশ করতে লাগলো,,
_just for one night,,
বলেই এগুচ্ছে,,
_কুত্তার*****
বলেই রায়হানের চুল পিছন দিয়ে ধরে বিছানায় ছিটকে ফেলে দিল,,অন্তরা ভয়ে কাপাকাপি করছে আর কান্না করছে,,হৃদয় রায়হানের কাছে গিয়ে তাকে এলোপাতাড়ি মারতে লাগলো,,
_তোর এত্ত বড় সাহস তোকে আমি বিকেলে ওয়ার্নিং দিয়েছিলাম আমার অন্তরার আশেপাশেও ঘেষবি না কিন্তু তুই আবার আসলি আমার রুমে,,,
চিল্লাতে লাগলো আর ইচ্ছে মতো মারতে লাগলো,,হৃদয়ের চিল্লাচিল্লিতে হেনা চৌধুরি আর হাসান চৌধুরি তারাতারি উপরে চলে আসে হৃদয়ের রুমে,,এসে দেখে রায়হানকে ইচ্ছেমতো মারছে আর চিল্লাচ্ছে,,হেনা চৌধুরি খেয়াল করলো অন্তরা এক কোনায় দারিয়ে কান্না করছে আর কাপছে,,সে তারাতারি অন্তরা পাশে গিয়ে তাকে জরিয়ে ধরল,,অন্তরা হেনা চৌধুরিকে ধরে কান্না করতে লাগলো,,হাসান চৌধুরি হৃদয়কে বলল,,
_কি হচ্ছে কি হৃদয় ওকে এভাবে মারছ কেন?
হৃদয় হাসান চৌধুরির দিকে তাকিয়ে রায়হানের কলার ধরে হাসান চৌধুরির পায়ের কাছে ফেলে দিল,,আর বলল,,
_ওকে এক্ষুনি এই বাড়ি থেকে বের হতে বলো,,right now,,,আমার চোখের সামনে থেকে তোমার ভাইয়ের ছেলেকে যেতে বলো,,
_কি করেছে ও হৃদয়?
_ওর সাহস কি করে হয় আমার ঘরে ঢুকে আমার বউকে ধরার,,ওকে এক্ষুনি যেতে বলো,,(বলেই লাথি মারলো)
হাসান চৌধুরি রায়হানের কলার ধরে উপরে তুলে বলল,,
_এক্ষুনি বেরিয়ে যা আমার বাড়ি থেকে হৃদয় তোকে ছেরে দিয়েছে কিন্তু আমি তোকে ছারবো না বেরিয়ে যা,,
বলেই ধাক্কা মারলো,,রায়হান ও চলে গেল,,
অন্তরা কান্না করতে করতে হেচকি তুলে ফেলেছে,,হাসান চৌধুরি অন্তরার কাছে গিয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে বলতে লাগলো,,
_কিছু করেছে ও মা?
অন্তরা কিছু বলছে না শুধু কান্না করেই চলছে,,হৃদয়ের রাগে শরির কাপছে,,হৃদয় অন্তরাকে ডাক দিল,,
_অন্তরা,,
অন্তরা হেনা চৌধুরির বুক থেকে মাথা তুলে হৃদয়ের দিকে তাকিয়ে দৌড়ে হৃদয়ের কাছে গিয়ে তার বুকে পড়ে কান্না করতে লাগলো,,অন্তরার কান্না দেখে হৃদয়ের খুব খারাপ লাগছে,আবার রাগও হচ্ছে,,তার তো ইচ্ছে করছে রায়হানকে মেরে যেন্ত পুতে ফেলতে,,আরও ইচ্ছেমতো মারলে হয়ত রাগ কিছুটা কমতো,,
_হয়েছে আর কান্না করে না,, আমি আছি না তোমার হৃদয় থাকতে তোমার কেউ ক্ষতি করতে পারবে না,,
বলেই মাথায় হাত বুলাতে লাগলো,,অন্তরার কান্নার বেগ কিছুটা কমেছে,,এখন হেচকি তুলছে,,হৃদয় অন্তরাকে বুকে জড়িয়েই বলল,,
_আমরা আজি সাজেক যাবো,,আমি টিকেট কেটে ফেলেছি,,প্লেন দিয়ে যাবো,,
হাসান চৌধুরি বলল,,
_সাজেক কেন সিংগাপুর যা আমি টিকেট কেটে দেইজ
_নাহ,,অন্তরা সাজেক যেতে চেয়েছে আমি ওকে নিয়ে প্রথমে সেখানেই যাবো পরে না হয় অন্য কোথাও,,
_আচ্ছা ঠিক আছে,,
বলেই হেনা চৌধুরি আর হাসান চৌধুরি চলে গেল, হৃদয় অন্তরার মাথা নিজের বুক থেকে তুলে চোখ মুছে দিয়ে বলল,,
_সব পেকিং করেছ?
অন্তরা মাথা নাড়ালো,,যার অর্থ হ্যা,,হৃদয় অন্তরার দুই চোখে চুমু দিয়ে বলল,,
_এই চোখের পানি খুবি দামি কখনো অজথা একে ঝরতে দিবে না,,
বলেই অন্তরাকে টাইট হাগ দিল,,অন্তরাও হৃদয়কে জরিয়ে ধরলো,,এ যেন এক অন্য শান্তি বিরাজ করছে অন্তরার মনে,,সব দুঃখ কষ্ট নিমিষেই শেষ হয়ে যায়,,
রাতের ডিনার করে সবার থেকে বিদায় নিয়ে বেড়িয়ে পরল অন্তরা আর হৃদয় সাজেকের উদ্দেশ্যে,,সারারাত প্লেনে কাটিয়ে দিল,,সকালে এনাউন্সমেন্টের শব্দে হৃদয়ের ঘুম ভাংগে,,পরম আবেশের সাথে অন্তরার হৃদয়ের বুকের সাথে লেপ্টে আছে,,যা দেখ্ব হৃদয়ের মনে শীতল হাওয়া বইতে লাগলো,মুচকি হাসি দিয়ে অন্তরা মাথায় চুমু দিল,,হঠাৎ অন্তরা নড়েচড়ে উঠলো,,অন্তরাকে নড়েচড়ে উঠতে দেখে হৃদয় নিজের চোখ বন্ধ করে নিল,,অন্তরা দেখলো সে হৃদয়ের বুকে শুয়ে আছে বুক থেকে মাথা তুলে হৃদয়ের মুখের দিকে তাকালো,,কি সুন্দর করে শুয়ে আছে একদম নিষ্পাপ শিশুর মতো লাগছে,,কেউ বলবে এই নিষ্পাপ ডাক্তারের পিছে আস্ত বড় এক সাইকো আছে,,এইসব ভেবেই নিজের অজান্তেই হেসে দিল,,হৃদয়ের গালের কাছে এগুতে নিলে হৃদয় চোখ বন্ধ অবস্থায় বলে,,
_চুপিচুপি আদর না করলেও পারো,,বর টাতো তোমারি,,
বলেই চোখ মেরে চোখ টিপ মারলো,,অন্তরার চোখ বড়বড় হয়ে গেল,,সে ভেবেছিল হৃদয় ঘুম,,
_আ,আ,আপনি ঘুমের ভান করছিলেন?(তোতলিয়ে)
_ঘুমের ভান না করলে কিভাবে জানতাম আমার বউ আমাকে এত্ত ভালোবাসে?
_আ,আমি তো মশা তারাচ্ছিলাম,,(বলেই জিব কাটলো)
_প্লেনে মশা like seriously? (বলেই হেসে দিল)আদর করছ তা বললেই হয় হুহহহহ(বলেই মুখ ভেংচি দিল)
অন্তরার এখন নিজেকে নিজের মারতে ইচ্ছে করছে কি বলদের মতো কথা বলল,,প্লেনে কি আবার মশা থাকে নাকি আজববব,,অন্তরা নিজেকে হাজারটা গালি দিয়ে বলল,,
_আচ্ছা নামা যাক এখন?
বলেই উঠে দারালো,হৃদয় বলল,,
_আচ্ছা চলো,,
বলেই অন্তরার হাত ধরে নামতে লাগলো,,গাড়িতে উঠে হোটেলে পৌছালো,নিজের রুমের চাবি নিয়ে রুমে গেল,,রুমে গিয়ে হৃদয় বলল,,
_অন্তরা যাও ফ্রেশ হয়ে আসো,,
অন্তরা মাথা নেড়ে ফ্রেশ হতে চলে গেল,,অন্তরা ফ্রেশ হয়ে বাহির হওয়ায় হৃদয় ঢুকলো,,হৃদয় বাহির হয়ে এসে দেখে অন্তরা শুয়ে আছে,,হৃদয় তাওয়াল দিয়ে চুল মুছতে মুছতে অন্তরার পাশে গিয়ে তার মাথায় হাত রেখে বলল,,
_অন্তরা,কিছু খাবে না?
_নাহ খুব টায়ার্ড লাগছে ঘুমাবো,,উঠে খাবো,,
_আচ্ছা,,
বলেই হৃদয় বেল্কানিতে গেল তাওয়াল শুকাতে,,রুমে এসে সেও অন্তরার পাশে শুয়ে পরলো অন্তরাকে নিজের খালি বুকের সাথে চেপে ধরলো,,এভাবে বুকের সাথে চেপে ধরেছে দম বন্ধ হওয়ার উপক্রম তাও খালি বুক,,উফফফ অন্তরার কাছে কেমন কেমন অসস্থি ফিল হচ্ছে,,তাও কিছু বলছে না,,আস্তে আস্তে অন্তরা ঘুমিয়ে গেল,,
চলবে🖤
(ভুলত্রুটিগুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন🥰)