#হৃদয়_গহীনে_তুমি_আছো।🦋
#লেখনীতে_ফাতিমা_তুয_যোহরা।
#পর্বঃ১৩
—আমাকে ছাড়ো নয়তো আই সয়ার কালকে সকালের মধ্যে তোমাকে পা’গ’লা গা’র’তে রেখে আসব। আর তুমিতো জানোই, শাহনেওয়াজ সাফিন কখনো কথার খেলাপ করে না।
সাফিনের কথা শুনে যেন তেলে বেগুনে জ্ব’লে উঠলো সিরাত। রাগে ফুঁ’সতে-ফুঁ’সতে বললো।
—শাহনেওয়াজ সাফিন না কাউ’য়া। হেহ আসছেন! আমি ওসব ভয় টয় পাইনা বুঝলেন মিস্টার শাহনেওয়াজ সাফিন। ওসব কথা আমাকে বলে লাভ নাই৷
সাফিন ভ্রু জাগিয়ে ফেলল রাগে। পিছন থেকে সিরাতের হাতটা শক্ত হাতে নিজের আয়ত্তে নিয়ে গিয়ে সিরাতকে উল্টো করে ঘুড়িয়ে নিজের সামনে এনে সিরাতের দুইহাত পিছন থেকে চে’পে ধরে সিরাতের ঘাড়ে নাক ডুবিয়ে দিতে কেঁ’পে উঠলো সিরাত৷ সাফিন রাগে দাঁতে দাঁত চে’পে গম্ভীর কণ্ঠে বললো।
— বেশি বার বেড়ো না ঝড়ে পরে যাবে। একটা প্রবাত আছে জানোতো সিরাত? তোমার দ’শা এখন ঠিক তেমনটা। একটা কথা সবসময় তোমার এই মোটা মাথায় ঢু’কিয়ে রাখবে কেমন। আমি ভালোতে ভালো, আর খা’রাপে খা’রাপের চর’ম পর্যায়। যেটা তোমার কল্পনারও বাহিরের জগৎ হবে। আমার খা’রা’প রুপটা দেখলে তখন খুশি হবে তো বেব্বি?
ভয়ে চোখ খিঁ’চে রাখলো সিরাত৷ কয়েকটা ঢোক গি’লে কাঁ’পা-কাঁ’পা কন্ঠে বললো।
— আপনার দেওয়া এগ্রিমেন্ট পেপারে যেমন সিরাত সাইন করে দিয়েছে। ঠিক তেমনি আমার ডিমান্ডও আপনাকে মানতে হবে। আমাকে হুটহাট এভাবে ছোঁয়া চলবে না আপনার৷ আমার থেকে দুই হাত দূরেই থাকুন আপনি।
হাসলো সাফিন। সিরাতকে নিজের দিকে ঘুড়িয়ে দেয়ালের সাথে চে’পে ধরে সিরাতের কোমরে হাত ছুঁয়িয়ে সিরাতের অনেকটা কাছে গিয়ে ধীর কন্ঠে বললো ।
— এখানে শুধু শাহনেওয়াজ সাফিনের রাজত্ব চলে বুঝলে সিরাত। তোমার কোনো ডিমান্ডই আপাদত শুনছি না। বা শুনতে বাধ্যও নই আমি।
কথাটা বলে সাফিন লাইটটা অফ করে দিতে লাইটারের মৃদু আলোয় সিরাতের কপালে চুমু খেয়ে সিরাতের চুলে নাক ডুবিয়ে দিলে সিরাতের দুচোখ বেয়ে পানি গড়িয়ে পরলে সাফিনের হাতে স্পর্শ করে গেলে থ’মকে গেল সাফিন৷ আপনা-আপনি হাতের বাঁ’ধন আলগা করে দিলে অবাক হলো সিরাত৷ সাফিন পিছু ঘুরে নিজের মাথাটা নিজে চে’পে ধরে গম্ভীর কণ্ঠে বললো।
—সবকিছু মানতে পারি বুঝলে সিরাত। কিন্তু কোনো মেয়ের চোখের পানি স’য্য করতে পারি না বা পারবও না কোনোদিন। আর বিশেষ করে সেটা যদি তুমি হও।
সিরাত কাঁ’পা-কাঁ’পা কন্ঠে বললো।
— তো এখন আবার ট’র্চার করবেন বন্দু’ক নিয়ে তাইতো?
সিরাতের অস্পষ্ট স্বর শুনে সাফিন সিরাতের দিকে ঘুড়ে শীতল হাতে সিরাতের দুইগাল স্পর্শ করে ধীর কন্ঠে বললো।
—এখন কিছু বলছি না বা বলার ইচ্ছেও পাচ্ছি না। যে অবুঝ তাঁকে হাজার বোঝালেও যে কোনো কাজ হবে না সেটা আমি জানি। যাও ঘুমাও। রাত হয়েছে অনেক৷ বৃষ্টি পরছে এমনিতেই। টায়ার্ড দেখাচ্ছে তোমাকে।
সিরাত বিষ্ম’য় নিয়ে সাফিনের দিকে তাকালে সাফিন হেসে পকেট থেকে সিগারেটের প্যাকেট বের করে ম্যাচ দিয়ে জ্বা’লিয়ে মুখে দিয়ে ধোঁয়া ওড়াতে-ওড়াতে গিটার হাতে বাড়ান্দায় চলে গেলে শীতল দৃষ্টিতে সেদিকে তাকিয়ে থাকলো শুধু সিরাত। সাফিনের ভাড়ি কথার বহার যেন কখনোই তাঁর কাছে স্পষ্ট হয়ে উঠে না। নিরাশ হলো সে।
বৃষ্টির ঝমঝম আওয়াজের সঙ্গে গিটারের টুংটাং আওয়াজটা খুব একটা ম’ন্দ লাগছিল না সিরাতের। ধীর পায়ে এসে বিছানায় গাঁ এলিয়ে দিলে একরাশ অনিশ্চয়তা যেন ঝেঁ’কে বসেছে তাঁকে। ঘুম আসতে চাইছে না আর। সেও চাতক পাখির ন্যায় হাওয়া হয়ে গেছে যেন।
— আপনাকে বোঝার সাধ্য হয়তোবা কোনো কালেই হয়ে উঠবে না আমার৷ তবে হ্যা, আপনি হয়তোবা রাগি হবেন, একটু অন্য ধাঁচের। কিন্তু মানুষটা খারা’প না সাফিন।
(মনে-মনে কথাগুলো ভাবতে-ভাবতে অনেক্ষণ চোখ করে রাখাতে একটা সময় সেও ঘুমের অতল সমুদ্রে পারি জমাল।)
.
নীল দিগন্তের কোল ঘেঁ’ষে আজ কালো রাঙা মেঘের ঘনঘটা৷ এলোমেলো মেঘদ্বয় হতে গু’ড়ুম-গু’ড়ুম আওজটাও যেন প্রগর গতিতে ধরনীতে এসে বা’রি খেয়ে যাচ্ছে ক্রমশ। মুশলধারা বরষায় অন্ধকার রুমটাতে ডাইনিং টেবিলের উপরে মাথা গুঁ’জে বসে আছে সিরাত। মাথাটা কেমন ভার হয়ে আছে তাঁর। সমস্ত শরীরে যেন বিষন্নতা ঝেঁ’কে বসে আছে সিরাতের৷সময়ের তালে তাল মিলিয়ে প্রহরে প্রহর ঠেকিয়ে চোখের সামনে দিয়ে এক সপ্তাহ কেঁ’টে গেল তাঁর বিবাহীত জীবনের৷
কালকে তোহাকে হাসপাতাল থেকে সিট কাঁ’টিয়ে বাড়িতে নেওয়া হবে। তোহাকে নিয়ে ভাবতে ভাবতেই প্রচন্ড মাথা ব্যা’থায় আর ক্লান্তিতে ডাইনিং টেবিলেই ঘুমিয়ে গেল সিরাত৷
“আষাঢ়ে বৃষ্টি মাথায় নিয়ে র’ক্তে ভেজা শরীরে শাহনেওয়াজ ভিলার সামনে সাফিন গাড়ি থামিয়ে দিতে সিকিউরিটি গার্ডরা গেট খুলে দিতে ব্যাস্ত হয়ে পরলে সাফিন বৃষ্টি ভেজা চুলে ঝাড়ি দিয়ে বাড়ির দিকে তাকিয়ে বেশ অবাকই হলো আজ৷” গেটের কাছে কোনোমতে হলুদ রাঙা লাইটারের নিভু-নিভু আলো ছাড়া সমস্ত বাড়িটা জুড়ে যেন অন্ধকারের সমারোহ।
ভ্রু জাগিয়ে ফেলল সাফিন। কানে থাকা ব্লুটুথটা অন করার সাথে-সাথে জুবায়ের কন্ঠ শোনা গেল।
—স্যার লা’শটাকে বস্তা বেঁধে দিয়েছে হেলাল। এবার কি করব সেটাতো বলে গেলেন না?
—নদীতে ভাসিয়ে দেও। আর শোনো?
—জ্বী স্যার?
—ক্যামেরাটা প্যাক করে বাড়িতে নিয়ে এসো।
জুবায়ের সামনে থাকা হেলালের দিকে তাকিয়ে ধীর কন্ঠে বললো।
—ক্যামেরাটা দাওতো হেলাল।
হেলাল হেসে নিজের সাদারাঙা গেঞ্জিটাতে হাতে থাকা র’ক্ত মুছে টেবিলের উপর থেকে ক্যামেরাটা জুবায়েরের দিকে এগিয়ে দিতে জুবায়ের হেসে সাফিনের উদ্দেশ্যে বললো।
—জ্বী স্যার। সকালে পেয়ে যাবেন। তবে পালের গো’দাটাকে মা’রতে পারলে হত।
সাফিন বাঁকা হাসি হাসলো। গম্ভীর কণ্ঠে বললো।
— চে’লা যখন মা’রা পরেছে তো মা’থাটাকেও ধরতে টাইম লাগবে না জুবায়ের। তুমি শুধু খেয়াল রাখো আর কে? কে? যায় ওই রাজবাড়ীর আশে-পাশে। যাকেই দেখবে তাকেই আজকের মতো করে উপরের ঠিকানা দেখিয়ে দিবে। যে বা যাঁরা আমাকে বারবার এ্যা’টাক করতে চাইছে, শাহনেওয়াজ সাফিনের গাড়ির ব্রেকফেল করেছে। তাঁরা হয়তো এতদিন ঘুঘু দেখেছে,ঘুঘুর ফাঁ’দটা এখনও দেখেনি। আমিও এর শেষ দেখে ছারব।
জুবায়ের হাসলো। হাতে থাকা ক্যামেরাটার দিকে তাকিয়ে ধীর কন্ঠে বললো।
—স্যার ক্যামেরার লোকটা যে খু’ন হয়েছে এটা তো কালকে নিউজ হবেই হবে। আমাদের জে’ম্মায় আনতে না পারলেও ক্যামেরাটা যে পেয়েছি এটাই অনেক। আমার কেন জানিনা মনে হচ্ছে আজকের রাজবাড়ীর পিছন দিক থেকে যে লোকটাকে আপনি গু’লি করেছেন, যাকে কিছুক্ষণ বাদে নদীতে ভাসানো হবে, সেই হলো ক্যামেরার লোকটার খু’নি।
মৃদু হাসলো সাফিন। বললো।
—সে যেই হোক। রাজবাড়ীর আশেপাশেও কাউকে দেখলে ওখানেই খ’তম।
হাসলো জুবায়ের।
” প্রগর দৃষ্টিতে শাহনেওয়াজ ভিলার দিকে তাকিয়ে অনেকক্ষণ যাবৎ বৃষ্টির উ’ষ্ণতা শরীরে ছুঁয়িয়ে ভেজা শরীরে পকেট থেকে ফোনটা বের করে টর্চ জ্বা’লিয়ে ধীর পায়ে বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করলে হিমেল হাওয়ায় সাফিনের সমস্ত শরীরে ছুঁয়িয়ে গেল যেন। আশেপাশে তাকাতে- তাকাতে ভিতরে আসলে ডাইনিং টেবিলে চোখ যেতে থ’মকে গেল সাফিন। সিরাতের ঘুমাতুর গোলাপি রাঙা মুখশ্রীর দিকে টর্চ ধরাতে সঙ্গে- সঙ্গে কপালে ভাঁ’জ পরে গেল যেন সিরাতের৷ প্রচন্ড পরিমানে কাঁ’পছে সিরাত। ঠান্ডা আবহাওয়ার পরিবর্তিত মৌসুমটা বড্ড খা’রাপ। এই সময় অসু’খ-বিসু’খেরও পায়ে হাত দিয়ে সালাম করতে হয় যেন। একবার অ’সুখ বাঁ’ধলে আর ছাড়াবার নাম নেয়না। মা’য়া হলো সাফিনের৷ আবার বিরক্তও হলো সিরাতের প্রতি। ঘড়ির কাঁটায়-কাঁটায় ১ টার ঘন্টা বেজে উঠতে লাইটারের মৃদু আলোয় ঘড়িটার দিকে ধীর চাহনিতে তাকাল সাফিন। ডাইনিং টেবিলের উপরে ধোঁয়া ওঠা ভাতের কুকারটা দেখে শীতল চাহনিতে সিরাতের দিকে তাকাল সাফিন। ধীর পায়ে সিরাতের কাছে গিয়ে মাথায় হাত ছোঁয়াতে চ’মকে উঠলো যেন সে৷ প্রচন্ড জ্বরে রীতিমতো কাঁ’পছে সিরাত। রাগ উঠে গেল সাফিনের। ইচ্ছে করছে ঠাটি’য়ে একটা চ’র মেরে মেয়েটাকে জিজ্ঞেস করতে যে,
—এই মেয়ে এত রাত অব্দি আমার জন্য ভাত নিয়ে বসে থাকতে কে বলেছে তোমাকে হুম?( কিন্তু কথাটা আর মুখ থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছে না সাফিনের)। কে জানে মেয়েটা নিজে খেয়েছে কিনা?
চেয়ার থেকে দ্রুত সিরাতকে উঠিয়ে পাঁ’জাকোলা করে নিলে কারো শীতল হাতের স্পর্শ পেয়ে সিরাতও ঘুমের ঘোড়ে সাফিনের শার্টের কলার টেনে ধরতে সাফিন খানিকটা ঝুঁ’কে সিরাতের দিকে তাকাল।
সিরাতের নিশ্বাশের উ’ষ্ণতা সাফিনের চোখে মুখে এসে ছেঁ’য়ে পরতে থাকলে বাঁকা হাসি হাসলো সাফিন। সিরাতের ঠোঁটে প্রগরভাবে চুমু খেয়ে ধীর কন্ঠে বলতে থাকলো।
—না চাইতেও তুমি আমার মা’য়ায় জড়িয়ে গেলে তো শেষমেশ সিরাত? এর পরিনাম ঠিক কি হবে আমার জানা নেই। হয়তো তুমিই সবথেকে বেশি ক’ষ্ট পাবে। আমার জীবনেরতো কোনো ঠিকঠিকানাই নেই। সাফিনের চোখ জ্ব’লে উঠলো যেন। কয়েকটা ঢোক গি’লে সিঁড়ির দিকে পা বাড়াল সে৷
.
রুমে এসে সিরাতকে বিছানায় শুয়িয়ে দিয়ে কাঁথাটা জড়িয়ে দিয়ে সাফিন সরে যেতে চাইলে ঘুম-ঘুম চোখে জ্বরের ঘোরে সিরাত সাফিনের হাত জড়িয়ে নিয়ে নিজের কাছে টেনে নিলে সাফিন হাসলো। সিরাতের কপালে চুমু একে দিয়ে হাতটা ছাড়িয়ে নিতে-নিতে বললো।
—এক্ষুনি আসছি জান। জাস্ট অন মিনিট ওয়েট সোনা। আমি যাব আর আসব।
কথাটা বলে গায়ে থাকা র’ক্তে ভেজা শার্টটা খুলে ফ্রেশ হতে চলে গেল সাফিন।
“ঝর্নাটা ছেড়ে দিয়ে তাঁর নিচে দাঁড়াতে চোখ বন্ধ হয়ে আসলো সাফিনের। আগের থেকে কেমন পাল্টে যাচ্ছে সে। আগের মতো স্বাধীনতাটা থাকা সর্তেও স্বাধীনতাটা ঠিক আসতে চাইছে না নিজের ভিতরে। বার-বার সিরাত না চাইতেও বাঁ’ধা হয়ে পরেছে তাঁর মাঝে৷ কোনো খু’ন খা’রা’পি করতে গেলেই সিরাতের মা’য়াময় মুখশ্রী যেন মাথাচাড়া দিয়ে যায় তাঁর হৃদয়ের গহীনে। ভয় হয় এখন তাঁর। যে, সিরাত যদি জেনে যায় তাঁর এইসব কর্মকান্ডের কথা৷ যদিওবা ও কখনো কারন ছাড়া কাউকে খু’ন করেনি। আজকেও যথেষ্ট কারন থাকার কারনেই একজনকে খু’ন করেছে৷ হাতটা কেঁ’পেছে প্রচুর। আগে এমন হয়নি কখনো তাঁর সাথে। এই রাজনীতির পথে এসব খু’ন খারা’পি যে থাকবেই থাকবে, এসব আগেই আমেনা বেগম বলেছিল তাঁকে। কিন্তু তাঁর যে র’ক্তেই মিশে আছে রাজনীতি। দীর্ঘশ্বাস ছারল সাফিন।
মিররে নিজের লাল রাঙা তিরিক্ষি চোখদ্বয় পরখ করে টাওয়াল নিয়ে বেড়িয়ে পরলো সাফিন।
রুমে এসে শীতে সিরাতের গু’টিশু’টি হয়ে শুয়ে থাকার দিকে পিটপিট করে তাকিয়ে আলমারি খুলে কম্বল বের করে সিরাতের গাঁয়ে জড়িয়ে দিতে আরামে আরও ঘুমের গহীনে তলিয়ে গেল যেন সিরাত৷ মৃদু হাসলো সাফিন। কালো রাঙা টিশার্ট আর নীল রাঙা ট্রাউজার পরে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামলো সে।
—আরে ধুর, বাড়ির সবাই কই গেল আজ৷ আমার বউটা অসু’স্থ আর কারো কোনো পাত্তাই পাওয়া যাচ্ছে না৷ না আছে ওয়াসম্যান না আছে কেউ!বাড়িতে এতগুলো মেড থাকা সর্তেও এখন একটু পানি গরম করার লোকও পাচ্ছি না আজকে!
নিজে-নিজেই কথাগুলো বলতে-বলতে রান্না ঘরের দিকে ছুটলো সাফিন। কোনোমতে গ্যাস অন করে পানি গরম করে নরম টাওয়াল নিয়ে উপড়ে ছুটতে নিতে ডাইনিং এ চোখ গেল সাফিনের৷ ধীর পায়ে সেদিকে এগিয়ে গিয়ে সবগুলো খাবারের দিকে চোখ বুলি’য়ে দীর্ঘশ্বাস ছারল একটা৷
—পা’গ’লি বউ আমার। এ নিশ্চই আম্মা বলেছে আমার জন্য বসে থাকতে৷ ইশ, মেয়েটা নিজেই অসু’স্থ। আম্মার খেয়াল রাখা উচিত ছিল।
(মনে-মনে কথাটা ভাবতে-ভাবতে খাবারের প্লেটটা একহাতে নিয়ে উপরে ছুটলো সে।)
.
তীব্র জ্বরে শরীর পু’রে যাচ্ছে যেন সিরাতের৷ ক্ষনে- ক্ষনে গগনের গর্জ’নপাতে যেন মিয়িয়ে যাচ্ছে সিরাত। বুকটা যেন জ্ব’লছে সাফিনের। দীর্ঘক্ষণ সিরাতের মাথায় জলপট্টি দিতে থাকলো সে। প্রায় ঘন্টা ঘানেক পর আবারও সিরাতের মাথায় হাত রেখে জ্বর খানিকটা কমে গেছে দেখে মৃদু হাসলো সাফিন। সিরাতকে ডাকতে মা’য়া হচ্ছে তাঁর। কিন্তু কিছু করার নেই৷ মেয়েটা কিছু না খেলে ঔষধ খাওয়ানো মুশকিল হয়ে যাবে সাফিনের৷ শীতল হাতে সিরাতের হাতটা নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে সিরাতের দিকে খানিকটা ঝুঁ’কে ধীর কন্ঠে ডাকলো তাঁকে।
—সিরাত? এই সোনা, উঠো প্লিজ৷ জান উঠো একটু খেয়ে নাও। সিরাত?
বৃষ্টির ঝমঝম শব্দের সঙ্গে সাফিনের কোমল কন্ঠের রেশ সিরাতের কানের কাছে এসে ধ্বনিত হতে থাকলে মৃদু নড়ে উঠলো সিরাত৷ ঘুমের ঘোরে সাফিনের দিকে পিটপিট করে তাকিয়ে হুট করেই সাফিনের হাতটা টেনে ধরে নিজের কাছে নিয়ে আসতে সাফিন তাল সামলাতে না পেরে সিরাতের গাঁয়ের উপর পরে গিয়েও দুইহাত সিরাতের মাথার দুইপাশে রেখে তাল সামলে সিরাতের দিকে তাকাল সাফিন। বেশ বুঝতে পারছে সিরাত নিজের মধ্যে নেই এখন। নয়তো নিজেই কুরুক্ষে’ত্র করে বাড়ি মাথায় তুলতো এমন কান্ডে। বাঁকা হাসি হাসলো সাফিন। সিরাত সাফিনের টিশার্ট টেনে ধরে সাফিনের মুখটা নিজের খুব কাছে টেনে এনে সাফিনের গালে গাল ঠেকিয়ে অস্পষ্ট স্বরে বলতে থাকলো।
— মিস্টার শাহনেওয়াজ সাফিন। আপনি নিজেকে খুব বড় করে ভাবেন তাইনা। ভাবেন সিরাত খুবই স’স্তা। আপনার টাকার কাছে বিক্রি হয়ে গেছে, তাইতো? আসলে কি জানেন? একটা সম্পর্কে জড়িয়ে যাওয়া অনেক ক’ঠিন কাজ। কিন্তু আপনি খুব সহজেই টাকার কারনে সম্পর্কের মরীচি’কাও বেঁ’ধে ফেললেন। তাই আপনার কাছে ভেঙে ফেলা খুব সহজ হবে। একদিন আপনিও আপনার কাজ শেষে আমাকে ছুঁ’ড়ে ফেলে দিবেন। সেই দিনটার অপেক্ষায় আমি। অপেক্ষায় আ….
” পুরো কথাটা শেষ হওয়ার আগেই সিরাত পুনরায় ঘুমের অতল সমুদ্রে তলিয়ে গেলে সাফিন শীতল চাহনিতে সিরাতের দিকে তাকিয়ে তাঁর উপর সিরাতের দেওয়া অভি’যোগগুলো খুব মনোযোগ সহকারে শুনলো শুধু৷” মেয়েটার চোখের কোন বেয়ে পানি গড়িয়ে পরছে।সাফিন সিরাতের দিকে তাকালে সিরাতের নিশ্বাসের প্রত্যেকটা শব্দ সাফিনের কানের কাছে এসে যেন সা’জরে আ’ঘাত হেনে যাচ্ছে আজ। দুজনের হার্টবিটের ধুকপুক শব্দ মিলেমিশে একাকার হয়ে গেলে সাফিন কয়েকটা ঢোক গি’লে নিজের টিশার্ট থেকে সিরাতের হাতটা সরিয়ে দিয়ে উঠে সোজা বারান্দায় চলে গেল সে। শহর জুড়ে আজ হিমেল হাওয়ায় পরিপূর্ণ থাকলেও এই হিমশীতল আমেজেটা যেন সাফিনকে আজ ঘা’য়েল করতে পারছে না। প্রচন্ড পরিমানে ঘামছে সাফিন। গ’লা শুঁ’কিয়ে কা’ঠ হতে চাইছে যেন আজ৷ সিরাতের প্রত্যেকটা কথা যেন না চাইতেও বারংবার রেডিওর সমেত কানের কাছে এসে করা’ঘাত করে চলেছে তাঁর। আজ বড্ড উতলা মনে হচ্ছে নিজেকে সাফিনের। অন্ধকারে বৃষ্টির ঝমঝম আওয়াজও যেন বিষা’দে পরিপূর্ণ হতে চাইছে। পকেট হাতরে সিগারেট বের করে ধোঁয়া উড়াতে থাকলেও শান্তি হচ্ছে না যেন। বাড়ির সবাইই বা গেল কোথায়? আশ্চর্য! ভাবনায় করাঘা’ত করে ফোনটা বের করে মোস্তফা সাহেবকে ফোন লাগালে বন্ধ বলাতে বিরক্তির চরম পর্যায় গিয়ে এক-এক করে সবাইকে ফোন করার পরও বন্ধ শোনালে শেষমেশ জুবায়েরকে ফোন করলে ওপাশ থেকে জুবায়ের ঘুম-ঘুম কন্ঠে বললো।
— স্যার হেলাল পাহাড়া দিচ্ছে রাজবাড়ী, টেনশন করিয়েন না আপনি৷
— আরে রাখো তোমার রাজবাড়ী। বাড়ীর সবাই কোথায় কিছু জানো তুমি?
— জ্বী স্যার। সবাই গ্রামের বাড়ী গেছেন। নানুর নাকি বাড়িতে ভালো লাগছে না তাঁরজন্য গেছে। বড় সাহেব বাহিরে গেছেন কদিনের জন্য। এখন আপনিও ঘুমান স্যার। গুড নাইট স্যার।
— আরে ধুর, জুবায়ের? বাড়িতে এতগুলো গার্ড, তাঁরাও কি বেড়াতে গেছে নাকি?
জুবায়ের ঘুমিয়ে-ঘুমিয়ে মৃদুস্বরে বলতে লাগল।
—জানিনা স্যার, আমি ঘুমাই আপনিও ঘুমিয়ে পরুন এখন অনেক রাত হয়ে গেছে।
— ধ্যাত, সবগুলো অক’র্মার ঢেঁকি।
বিরক্ত হলো সাফিন। হাতে থাকা সিগারেটটা পায়ের তলায় পি’শে বারান্দার দরজা ভিতর থেকে আঁ’টকে দিয়ে ভিতরে আসতে সিরাতের দিকে তাকিয়ে রইলো অনেক্ষণ। সিরাত খানিক মোড় দিয়ে শুতে নিতে কম্বল সরে গেলে শাড়ির আঁচল ভেদ করে সিরাতের উম্মুক্ত গোলাপিরাঙা নাভিদ্বয় দেখে চোখ সঙ্গে- সঙ্গে চোখ বন্ধ করে ফেলল সাফিন হার্টবিট যেন দ্রুত থেকে দ্রুততম হয়ে দাঁড়িয়েছে তাঁর। আবারও খানিকটা চোখ খুলে তাকিয়ে ধীর পায়ে সিরাতের দিকে এগিয়ে গিয়ে খানিকটা ঝুঁ’কে সিরাতের অনেকটা কাছে যেতে গিয়ে সিরাতের ঠোঁটে গাঢ় করে চুমু খেয়ে মৃদুস্বরে বললো।
— তুমি জানতেও পারলে না জান, তোমার অজান্তেই তোমার মূল্যবান সম্পদ দেখে নিয়েছি। আমার চোখ অন্ধ হয়ে গেল না কেন আল্লাহ মালুম। তবে আজ যে রাতে আর দুচোখের পাতা এক করতে পারবনা,সে বিষয়ে আমি নিশ্চিত। কি জানেতো সিরাত, আমি হয়তো বা পাষা’ন। হৃদয়হীন, তুমি যেটা ভাবো আমাকে। কিন্তু ব্যাবহার করে ছুঁ’ড়ে ফেলে দেব, এতটাও অমানু’ষ আমাকে আমার আম্মা তৈরি করেননি।
( কথাগুলো বলে সযত্নে সিরাতের শাড়ির আঁচলটা ঠিক করে দিয়ে পাশ ফিরে শুয়ে সিরাতের ঘুমন্ত মুখশ্রী দেখতে-দেখতে চোখ বন্ধ করলো সাফিন।)
.
সকালের শুভ্ররাঙা আলো এসে চোখেমুখে ছেঁ’য়ে যেতে ঘুম ভেঙে গেল সাফিনের। হুট করেই প্রথমেই পাশ ফিরে তাকিয়ে সিরাতকে না দেখতে পেলে ঘুম উড়ে গেল যেন তাঁর। দ্রুত বিছানা ছেড়ে ওয়াশরুম চেক করেও লাভ না হলে চটজলদি নিচে চলে এলো সাফিন।
চারদিকে চোখ বো’লালে রান্নাঘরে নাস্তা করতে দেখে হাঁ’প ছেড়ে বাঁচল যেন সে। ধীর পায়ে সিরাতের দিকে এগিয়ে গিয়ে কপালে হাত ছুঁয়িয়ে দিতে অবাক হলো সিরাত৷ ভ্রু কুঁ’চকে ফেলল যেন। বললো।
—কি দেখছেন এভাবে হুম?
—আমার মা’থা আর তোমার মু’ন্ডু। বাড়িতে এতগুলো মেড থাকতে তোমার রান্না ঘরে কি কাজ হুম? নেক্সট টাইম যেন না দেখি। আমার যখন তোমার হাতের রান্না খেতে মন চাইবে আমি বলব তখন করো। সারারাততো জ্বরে কেঁ’পেছো৷ আমি একবারও বলেছি তোমাকে আমার জন্য এত রাত অব্দি না খেয়ে বসে থাকতে? গোটা একটা রাত না খেয়ে থেকেছো! ফারদার যদি এসব ন্যা’কামো চোখে পরে না সিরাত, তো হাত পা বেঁধে টানা এক সপ্তাহ স্টোর রুমে আঁ’টকে রাখব বলে রাখলাম আমি৷
সাফিনের কথা শুনে রাগে ফুঁ’সতে থাকলো সিরাত। মাথাটা এখনও কেমন ঝিমঝিম করছে তাঁর। তবুও চোখ গরম করে সাফিনের দিকে তাকিয়ে রাগান্বিত কন্ঠে বললো।
—নেহাত আম্মা বলেছে আপনার জন্য বসে থাকতে নয়তো এই সিরাত ম’রে গেলেও আপনার জন্য বসে থাকত না বুঝলেন মিস্টার শাহনেওয়াজ সাফিন। আর হ্যা, আপনাকে কে বললো আমি খাইনি!
—খেয়েছো?
সাফিন ভ্রু জাগিয়ে ফেললে সিরাত খানিকটা স্বরটা ডাউনে এনে ধীর কন্ঠে বললো।
—হ্যা,হ্যাতো,খাবনা কেন! অবশ্যই খেয়েছি৷
— আমার চোখে চোখ রেখে বলোতো?
সিরাত চুপ হয়ে গেলে সাফিন দাঁতে দাঁত চে’পে ধরে কট’ম’ট করে বললো।
— আর একটা মি’থ্যা কথা বললে আমার এই চোখ আর তোমার ওই ঠোঁট কথা বলবে শুধু। লাস্ট ওয়ার্নিং ফর ইউ জান৷ উম্মাহ।
—শা’লা শয়’তান, এক নাম্বার ব’জ্জা’ত। সবসময় রাজনীতি গিরি দেখাতে আসে৷ ইচ্ছে করে গ’লাটা টি’পে দেই। (মনে-মনে কথাটা বলে নিশ্বাস ছাড়তে সাফিন গম্ভীর কণ্ঠে বলে উঠলো।
—সব ইচ্ছের দাম দিতে নাই সোনা। তাই তোমার ইচ্ছে পূরন নাও হতে পারে।
সাফিনের কথায় সিরাত অবাক হয়ে গেল রীতিমতো।
—কিহ?
—যেটা ভাবছো তুমি। যাইহোক রেডি হও তোমার বান্ধবীকে হাসপাতাল থেকে নিয়ে আসব আজকে৷
কথাটা বলেই সাফিন চলে যেতে রাগে ফুঁ’সতে থাকলো সিরাত।
—শয়’তা’ন বে’ডা জানি কোথাকার।
.
নীল রাঙা সালোয়ার কামিজ পরে সিএনজি থেকে নেমে ডিরেক্ট ব্রাক অফিসের সামনে গাড়ি থামিয়ে নেমে পরলো তোহা। রাতে বৃষ্টি হওয়ার কারনে রাস্তার আশেপাশে কাদামাখা পানি জমে গেছে প্রায়। সকাল-সকাল রুবাইতের থেকে টাকা এনে ব্রাক অফিসের সামনে হাজির সে। রুবাইতের দ্বারা ব্যাংক থেকে বিশ হাজার টাকা উঠিয়েছিল তোহা। হাসপাতালে কাউকে কিছু না জানিয়েই চলে আসছে এখানে। নয়তো বাড়িছাড়া হতে হবে হয়তো তাঁকে। ব্রাক অফিসের ভিতরে ঢুকে ম্যানেজারের সামনে টাকার ব্যাগটা বাড়িয়ে দিতে ম্যানেজার হেসে বললেন।
—আপনার সব মানি ওকে হয়ে গেছে মিস তোহা৷
কথাটা কান পর্যন্ত পৌঁছাতে অবাকের চরম পর্যায় পৌঁছাল তোহা। দ্রুত জিজ্ঞেস করলো।
—কে করেছে এটা? আমিতো কোনো টাকা দেইনি!
—আপনার বোন, মানে মিসেস শাহনেওয়াজ সব পেমেন্ট করে দিয়েছেন। আপনি নিশ্চন্তে থাকতে পারেন। আল্লাহ হাফেজ।
মাথা ঘুরে যাচ্ছে যেন তোহার।
—মিসেস শাহনেওয়াজ? মানেহ,সিরাত? ও কোথায় এত টাকা পেল? আর হুট করে ওর বিয়েটাও কেমন অবাক লাগছে আমার। সিরাত কেনো ভু’ল করে ফেলেনি তো আমার জন্য?
দ্রুত সিরাতকে ফোন লাগাতে হাসপাতালে তোহাকে খুঁজতে ব্যা’কুল হয়ে পরেছে যেন সিরাত। সাফিন ওর পিছু-পিছু হেঁটে রাগ দেখাচ্ছে তাঁকে।
তোহার ফোন পেয়ে চটজলদি ফোনটা লুফে নিয়ে ভয়ের কন্ঠে বললো।
—জান কই তুই? হাসপাতাল থেকে বের হয়েছিস কোন সাহসে তুই? তুই জানিস তুই অসুস্থ, এই অবস্থায়ও নিজের প্রতি যত্ন নিবি না নাকি!সামনে আশ শুধু আজকে তুই, একটা মা’রব তোকে আমি। কথাগুলো বলেই কেঁদে উঠলো সিরাত। তোহা থ’মকে গেল। মৃদু হেসে কান্নারত কন্ঠে বললো।
— আমার জন্য বিয়ে করেছিস সিরাত? কেন করলি এমন তুই? আমি বেঁচে আছিতো জান নাকি? ঠিক একটা ব্যাবস্থা হয়ে যেত আমার৷ তুই কেন তোর সারাটা জীবন এভাবে শেষ করে দিলি?
থ’মকে গেল সিরাত। পা দুটো থেমে গেলে হিমেল হাওয়ায় কানের পাশে গুঁ’জে থাকা এলোমেলো চুলগুলো উড়তে থাকলো তাঁর। সাফিন ভ্রু জাগিয়ে জিজ্ঞেসের সহিত তাঁর দিকে তাকাতে
সিরাত নিচের দিকে দৃষ্টি স্থির রেখে শুঁকনো ঠোঁটদ্বয় ভিজিয়ে ধীর কন্ঠে বললো।
— তুই যেসব ভাবছিস ওসব কিছুই নয় জান। টাকার প্রয়োজন ছিল আমার। তোর জন্য করেছি ভেবে ভু’ল করিস না। বাড়িতে আশ দেখা হবে।
তেহা চুপ হয়ে গেল। ওপাশ থেকে সিরাতের দীর্ঘশ্বাসের মৃদু শিরহন শোনা গেলে চোখ বেয়ে পানি গড়িয়ে পরলো তোহার।
সিরাত পিছুঘুরে তাকাতে সাফিনের বুকে ধা’ক্কা খেয়ে গেলে সাফিন মৃদু হাসলো। ধীর কন্ঠে বললো।
—মিথ্যা কেন বললে সিরাত?
হাসলো সিরাত। ভেজা চোখে সাফিনের চোখের দিকে চোখ রেখে মৃদুস্বরে বললো।
— কখনো-কখনো একটা মিথ্যেও যদি মানুষের জন্য সুখকর হয়না, সেটা বলা দো’ষের কিছু নয়৷ ওসব আপনি বুঝবেন না। কথাটা বলেই সিরাত হাসপাতালের গেট খুলে বেড়িয়ে যেতে সাফিন ঠায় দাঁড়িয়ে রইলো সেখানে।
— দুনিয়ায় এত মানুষের ভিড়ে তোমাকেই আমার বেঁছে নিতে হলো সিরাত? আজ আফসোস হচ্ছে কেন যেন, দ্বিধাগ্রস্তে বারংবার করা নেড়ে বলে যাচ্ছে যেন, আমি তোমার জন্য ঠিক মানুষ নই…..
চলবে…….