#হৃদয়ে_তুমি
#লেখিকাঃতানিমা_আক্তার_মিরা
#পার্টঃ১১
তরী চমকে উঠলো সামনের মানুষটাকে দেখে।
ছেলেগুলো- ওই ওকে আমাদের দিয়ে যা।
– নিয়ে যা।
তরী করুন চোখে তাকালো। ছেলেগুলো বিশ্রী হেঁসে তরী নিয়ে যাবার জন্য এগিয়ে আসতে থাকে তরী ভয়ে ব্যক্তিটির শার্ট খামচে ধরল।ব্যক্তিটি তরীর দিকে একনজর দেখলো।
ছেলেগুলো মধ্যে একজন তরীর হাত ধরতে যায়।ব্যক্তিটি ছেলেটার হাত ধরে।
– কি হলো হাত ধরলি কেন।
– মেয়েটাকে নিয়ে তোদের কি কাজ।
– সেটা তোকে বলবো না, মেয়েটাকে আমার চাই সামনে থেকে সরে যা নাহলে বেঁচে ফিরতে পারবি না।
– হা হা হা
– হাসছিস কেন
– তবে কী করবো।
– মানে।
ব্যক্তিটি ছেলেটার মুখে এক ঘুষি মেরে দিলো।একটার পর একটা ছেলেকে মারতে থাকে। তরী একধ্যানে মানুষটার দিকে তাকিয়ে আছে। ছেলেগুলো মার খেয়ে চলে যায়।ব্যক্তিটি তরীর সামনে আসে তরী দৌড়ে গিয়ে তাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলো।
ব্যক্তিটি এমন কাজে হকচকিয়ে গেল।এটা ভাবলো যে তরী হয়তো ভয় পেয়ে ওকে জড়িয়ে ধরেছে।
লোকটা- এই যে মিস, আপনার আর কোনো ভয় নেয় ওরা চলে গেছে।
তরী লোকটাকে ছেড়ে দেয়।
লোকটা- হাই আমি নিরব।
তরী- নিরব( চমকে উঠে)
নিরব- হুম,আর আপনি।
তরী- তরী।
নিরব- নাইস নেম।বাট আপনি একা এখানে কীভাবে।
তরী- আসলে আমার একটা মিটিং ছিল।আর ফেরার পথে কোনো গাড়ি না পেয়ে।
নিরব- ওহ বুঝলাম।আপনার বাড়ি কোথায়
তরী- ….., আপনার।
নিরব- ..
তরী- আপনি কী করেন।
নিরব- একটা কোম্পানিতে চাকরি করি।
তরী- কোন কোম্পানি।
নিরব-…..। বাট আপনি আমায় এতো প্রশ্ন কেন করছেন আপনি কি আমাকে আগে থেকে চেনেন।
তরী- না তো( আমতা আমতা করে)
নিরব- ওহ। চলুন আপনাকে আমি বাড়ি পৌঁছে দিয়ে আসি।
তরী- আপনাকে আর কস্ট করতে হবে না।
নিরব- আপনি এখন গাড়ি পাবেন না আর সন্ধ্যা ওহ হয়ে গেছে এখানকার রাস্তাঘাট ভালো নয়।আমাকে বিশ্বাস করতে পারেন।
তরী- ওকে।
নিরব- আপনি ওয়েট করুন আমি বাইকটা নিয়ে আসি।
নিরব বাইক নিয়ে আসে, এবং তরী কে উঠতে বললো।তরী বাইকে বসে।
নিরব- মিস ভালো করে ধরে বসুন নাহলে পড়ে যাবেন।
তরী- হুম।
তরী নিরবের কাঁধে হাত রাখে, নিরব একটা মুচকি হাসি দিয়ে বাইক চালাতে শুরু করে।তরী গভীর চিন্তায় মগ্ন হয়ে যায়, আর নিরব লুকিং গ্লাসে তরীর মুখটা দেখতে থাকে তরীর মুখটা স্পস্ট বোঝা যাচ্ছেনা হালকা আলোই তরীকে অপরুপ সুন্দর লাগছে ।তরীর ভাবনায় ছেদ পড়ল নিরবের কথায়।
নিরব- ম্যাম কোন দিকে যাবো।
তরী- সামনে গিয়ে ডান দিকে।
নিরব তরীর কথা মতো বাইক চালাতে শুরু করে।তরী আবার নিজের ধ্যানে মগ্ন হয়ে যায়।
ওদিকে….
ছেলেগুলো- স্যার আমরা মেয়েটাকে আনতে পারিনি।
মি.রায়- কী??
ছেলে- স্যার একটা ছেলে মেয়েটিকে বাঁচিয়ে নেয়।
মি.রায়-একটা ছেলে তোদের থেকে নিয়ে চলে গেলো আর তোরা পালিয়ে এলি ভয়ে।( চিৎকার করে)
ছেলে- সরি বস।
মি. রায়- তরীতা জাহান কে আমার চাই যেভাবে হোক।
ছেলে- ওকে বস।
মি. রায়- যা এখন তোরা।
ছেলেগুলো চলে যায় আর মি. রায় বিশ্রী হাসলো।
নিরব তরী কে নিয়ে তরীর বাড়ির সামনে আসে।
নিরব- চলে এসেছি।
তরী- থ্যাঙ্ক।
নিরব- ওয়েলকাম।
তরী- বাড়িতে আসুন না।
নিরব- না অন্য দিন আসবো আজ আসি।
তরী- ওকে।
তরী চলে যেতে গেলে নিরব ডাক দিলো
নিরব- এই যে মিস।
তরী- হুম বলুন।
নিরব- আপনার নম্বরটা দেওয়া যাবে।
তরী নিরবের দিকে তাকিয়ে বলল- ……………..
তরী নম্বরটা দিয়ে সোজা বাড়িতে চলে যায়,নিরব মুচকি হেসে চলে যায়।
নিরব নিজের বাড়িতে ফিরতেই ওর পথ আটকে দাঁড়ালে একটা যুবতি মেয়ে।
নিরব বিরক্ত স্বরে বলল- চাঁদনী পথ আটকে দাঁড়ালে কেন।
চাঁদনী- কারন টা জানো না।
নিরব- না জানি না আর জানতেও চাইনা সরে যাও সামনে থেকে আমি ক্লান্ত।
চাঁদনী- এতক্ষণ কোথায় ছিলে।
নিরব- আমি তোমাকে বলতে বাধ্য নয়।
চাঁদনী- নিরব।
নিরব চাঁদনীকে পাশ কাটিয়ে চলে যায়। চাঁদনী কাঁদতে লাগলো ওর মামা ওর মাথায় হাত রাখলো।
চাঁদনী- মামা নিরব কি কখনো বুঝবেনা আমি ওকে ভালোবাসি।
মামা- মারে তোর ভালোবাসা সত্যি হলে ঠিক নিরব একদিন বুঝবে তুই কস্ট পাসনা।যা তো দ্যাখ তোর মামি একা কি করছে।
চাঁদনী- হুম।
নিরবের ফুফাতো বোন চাঁদনী। চাঁদনী নিরবকে ভালোবাসে কিন্তু নিরব চাঁদনীকে নিজের বোনের চোখে দেখে।
নিরব- দূর মেজাজ খারাপ করে দিলো,এই চাঁদনীটাও না পাগল করে ছেড়ে দিচ্ছে।আমি তো ওকে ভালোবাসি না কেন ওহ ওটা বুঝতে চাইনা কে জানে।
চাঁদনীর মামা মানে নিরবের বাবা ভাবে- মারে তোকে কীভাবে যে সত্যিটা বলি।
ওদিকে…..
তরী বাড়িতে আসতেই তরীর মা বলে – কীরে এতো দেরি হলো কেন।
তরী- মা একটু কাজ ছিলো তাই।
তরীর মা-যা ফ্রেশ হয়ে নে।আমি খাবার গরম করছি।
তরী- ওকে।
তরী ফ্রেশ হয়ে আসে।
মা- তরী মা আজ তোকে আমি নিজের হাতে খাইয়ে দেবো।
তরী- ওকে।
তরী কে ওর মা নিজের হাতে খাইয়ে দিতে থাকে। আজ অনেক দিন পর তরীকে একটা খুশি লাগছে।
মা- কিরে কি ব্যাপার,হ্যাপি লাগছে।
তরী- মাগো কিছু নয়,আজকে কাজটা খুব ভালো হয়েছে।
মা- ওহ তাই।
তরী- হুম।
তরী খাওয়া শেষ করে নিজের রুমের বারান্দায় দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে বলল- এ তুমি কোন পরিক্ষায় ফেললে আমায় আমি কোনটা সত্যি বলে বিশ্বাস করব।
তরী এসব ভাবতে ঘুমিয়ে পড়ে , বারান্দায়।
_________________________
তরীর ঘুম ভেঙ্গে যায় কোনো কিছুর শব্দে। শোয়া থেকে উঠে বসে দেখে ওর আরুশ ওর সামনে তরী নিজে কে সামলাতে পারে না দৌড়ে গিয়ে তাকে জড়িয়ে ধরে।
আরুশ- তরী
তরী- আরুশ তুমি এসেছো।
আরুশ- আমি কী আমার পাগলিটাকে ছেড়ে থাকতে পারি।( কপালে চুমু দিয়ে)
তরী- তাহলে এতো দিন কস্ট দিলে কেন।
আরুশ- দ্যাখো দূরে থাকলে ভালোবাসা বাড়ে,আমরা এতোদিন দূরে ছিলাম কিন্তু আমাদের মধ্যে কী ভালোবাসা কমে গেছে।
তরী- না।
আরুশ- তাহলে বলো দূরত্ব ভালো না।
তরী- জানিনা, কিন্তু তোমার অভাব আমাকে প্রতি মুহূর্তে কস্ট দিয়েছে।আমার এমন দূরত্ব চাই না আমি তোমাকে সবসময় নিজের কাছে রাখতে চাই।
আরুশ- থাকবো না তোমার কাছে কিন্তু
তরী- কিন্তু কী।
আরুশ- আমি যে একটা ষড়যন্ত্রের শিকার ,আমাকে যে তোমার কাছ থেকে আলাদা করে হয়েছে জোড় করে।
তরী- মানে।
আরুশ- আমার চলে যাওয়াটা স্বাভাবিক নয়।
তরী- প্লিজ আমাকে সবটা বলো।
আরুশ- সবটা বলতে পারবো না তোমাকেই সবটা খুঁজতে হবে,তোমাকেই করতে হবে।
আসতে আসতে আরুশ কালো অন্ধকারে ঢেকে গেল।তরী চিৎকার করে উঠলো আরুশ বলে। কিন্তু আরুশ ফিরে এলো না।
___________________
তরী আরুশ বলে চেঁচিয়ে উঠলো, তরী রীতিমতো কাঁপছে,ওর কথা বলার ক্ষমতা নেয়। ওহ এটা কি দেখলো কাকে দেখলো।তরী অনেক কস্টে নিজেকে সামলে নেয়।
তরী- আরুশের সাথে আসলে ঠিক কি হয়েছিলো সেটা আমাকে জানতে হবেই।আরুশ তুমি চিন্তা করো না তোমার কথা আমি রাখবো আমি সবটা খুঁজে বের করবোই।
পরেরদিন…..
তরী অফিস যাবে বলে রেডি হয়ে নিচে নামতেই ওর বাবা বলে- তরী আজকে তুমি কোথাও যাবে না।
তরী- কেন।
বাবা- আমার আদেশ।
তরী অনেকটা অবাক হয় ওর বাবার কথা শুনে ওর বাবা ওর সাথে সাধারণত এমন করে কথা বলেনা।
তরী মন খারাপ করে নিজের রুমে চলে যায়। কিছুক্ষণ পর ওর মা ওর রুমে এসে বলে- তরী মা এই শাড়িটি পড়ে নীচে আসবি একটু পর।
তরী- কেন।
মা- তোকে দেখতে আসবে আজ।
তরী- মা!
মা- আমার কিছু করার নেই মা তোর বাপি কারোর কথা শুনছে না।
তরী- মা আমি বিয়ে করতে পারবো না।
মা- মারে দেখতে আসছে মানেই বিয়ে হয়ে যাচ্ছে না।
তরী- মা আমি যাবো না প্লিজ তুমি কিছু করো।
মা- আচ্ছা আমি দেখবো কিন্তু এখন তুই রেডি হয়ে নিচে আয়।
তরী- ওকে।
ওর মা চলে যায় তরী ওর হাতের শাড়িটাকে মেঝেতে ছুড়ে ফেলে দেয়।
তরী- আমি আরুশ ছাড়া কারোর জন্য সাজাবো না,কারোর জন্য নয়।
তরী একটা সালোয়ার কামিজ পড়ে নীচে আসে। কিন্তু পাত্র আর পাত্রের বাড়ির লোককে দেখে তরীর মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়লো…..
#চলবে….
#হৃদয়ে_তুমি
#লেখিকাঃতানিমা_আক্তার_মিরা
#পার্টঃ১২
তরী পাত্র আর পাত্রের বাড়ির লোককে দেখে অবাক হয়।
তরী- তোমরা।
তরীর বাবা- হুম ওনারা।
তরী- বাপি তুমি কী করতে চাইছো।
তরীর বাবা- তোমার সাথে আমরা আর্দ্রের বিয়ে দিতে চাই।
তরী চমকে উঠলো এমন কথা শুনে ওহ ভাবতে পারছেনা,আরুশকে ছেড়ে ওহ অন্য কাউকে বিয়ে করবো তাও আবার আর্দ্রকে।
তরী- বাপি প্লিজ এরকম করো
তরীর বাবা- আমার আদেশ এটা।
তরী কাঁদতে কাঁদতে নিজের রুমে চলে যায়। আর্দ্র ওহ ওর পেছনে যায়।
আর্দ্র- তরী
তরী- কেন এসেছো
আর্দ্র- প্লিজ আমাকে ভুল বুঝিস না আমি ওহ রাজি নয় এই বিয়েতে সবার জেদের কাছে আমাকে হার মেনে আমাকে আজ এখানে আসতে হয়েছে।।
তরী- কী করবো আমি আমার ভালো লাগছে না।
আর্দ্র- আমি একটা কথা বলি প্লিজ খারাপ ভাবে নিস না।
তরী- কী।
আর্দ্র- দ্যাখ সবাই যেহেতু আমাদের ব্যাপারটা নিয়ে হ্যাপি প্লিজ সবাইকে আর কস্ট দিস না।আমি জানি এই বিয়েটা না তুই আর না আমি মানতে পারবো কিন্তু তবুও ফ্যামিলির কথা শুনে এটা আমাদের করতে হবে।আরুশ চলে যাবার পর আমাদের কেউ ভালোভাবে কথা বলেনি আর আজ আমাদের বিয়েকে ঘিরে সবাই একটু হাসতে পারবে এতে কী তুই হ্যাপি নয়।
তরী আর্দ্রের দিকে করুন চোখে তাকালো আর্দ্রের প্রতিটি কথা ঠিক।
আর্দ্র- প্লিজ তরী আমি তোর কাছে হাত জোড় করছি আমার ফ্যামিলির কাছ থেকে এই হাসিটা কেড়ে নিস না( করুন কন্ঠে)
তরী আর্দ্রের দিকে তাকিয়ে একটা গভীর দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো- ওকে আমি ভেবে তোমাকে বলছি এখন আমাকে প্লিজ একটু একা থাকতে দাও।
আর্দ্র- ওকে।
আর্দ্র গভীর নিঃশ্বাস ফেলে ওখান থেকে চলে যায় , আর্দ্র নিচে গেলে সবাই ওকে প্রশ্ন করে।
তরীর বাবা- তরী কী বললো।
আর্দ্র- আঙ্কেল আপনি চিন্তা করবেন না আমি তরীর সাথে কথা বলেছি ওহ আমাকে ওর কথা জানাবে বলেছে।
তরীর বাবা- কিন্তু
আর্দ্র- কোনো কিন্তু নয় তরীর মত থাকলে তবেই এই বিয়ে হবে নাহলে নয়।
আর্দ্র এটা বলে ওখান থেকে চলে যায়।
আর্দ্রের বাবা- এটার কি খুব দরকার ছিলো।
আরুশের বাবা- হুম দরকার ছিলো আর্দ্র আর তরী আমাদের কাছে এক আমরা তরীকে অন্য কোনো জায়গায় বিয়ে দিতে পারবো না।তাই এই সিদ্ধান্ত।
আর্দ্রের বাবা আর কিছু না বলে চলে যায়।তরীর বাবা চিন্তিত হয়ে পড়েন তরীকে নিয়ে।
তরীর মন এমনিতেই ভালো নয় কাল থেকে, মন খারাপ টা কাটানোর জন্য তরী রিতা কে ফোন করে
তরী- হ্যালো।
রিতা- আরে তরী বল কি খবর।
তরী- ভালো নয় রে… বাপি আমার বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছে।
রিতা- ওহ।কী করবি।
তরী- ভালো লাগছে না আজকে দেখতে এসেছিলো।
রিতা- ওহ জানিস আমি তোকে একটা কথা বলবো ভাবছিলাম।
তরী- কী বল।
রিতা- আসলে আমি না…………..
তরী কথাটা শুনে অবাক, খুশি হলো।
তরী- সত্যি।
রিতা- হুম।
তরী- আচ্ছা আমি তোর সাথে পড়ে কথা বলছি।
রিতা- ওকে।
তরী ফোনটা কেটে দিয়ে,ভাবতে লাগলো নিরবের কথা।
তরী- আমি জানি তুমি আমাকে ফোন,ম্যাসেজ করবেই মিস্টার নিরব, এবং আমি এটার জন্যই অপেক্ষা করছি। আমাকে সমস্তটা জানতে হবে তুমি কে ,কি তোমার পরিচয় সবটা। আর তারজন্য তোমার সাথে কথা বলা আমার খুব দরকার।( সিরিয়াস কন্ঠে)
রাত্রি বেলা….
নিরব- আচ্ছা তরী কে কি ফোন করবো।না যদি কিছু মনে করে, না কি মনে করবে।না থাক বাবা। কিন্তু আমি তরীর প্রতি দুর্বল হয়ে পড়েছি কেন।আমি তো ওকে শুধুমাত্র একবার দেখেছি কিন্তু আমার মনে হচ্ছে তরী আমার অনেক চেনা ওর সাথে আমার অনেক গভীর সম্পর্ক।ওর চোখগুলো যেনো আমাকে অনেক কিছু বলতে চাই।একবার ফোন করেই দেখি …
নিরব তরীকে ফোন করে…. প্রথম বার রিং হয়ে কেটে যায় তরী ফোন তোলে না নিরব আবার ফোন করে ….
তরী- হ্যালো কে??
নিরব- আমি নিরব চিনতে পারছো।
তরী- কোন নিরব( শয়তানি করে)
নিরব- কালকে দেখে হলো আমি তোমাকে বাড়ি পৌঁছে দিলাম।
তরী- ঠিক মনে পড়ছে না তো।
নিরব- এই তুমি কী আমার সাথে মজা করছো
তরী- না মজা করবো কেন সত্যি মনে পড়ছে না
নিরব- তুমি এতটা তাড়াতাড়ি কিছু ভোলার মতো মেয়ে নয়।
তরী- আপনি কীভাবে জানলেন।
তরীর এমন প্রশ্নে নিরব হকচকিয়ে গেল।ওহ কথাটা কেন বললো ওহ নিজেই জানে না।
তরী- বলুন
নিরব- এমনি বললাম।
তরী- ওহ।
নিরব- এখন চিনতে পারছো।
তরী- হুম।আমার আপনার সাথে কিছু কথা ছিলো।
নিরব- বলো।
তরী- আপনি আমার সাথে দেখা করতে পারবেন কালকে।
নিরব- ওকে। কোথায় করবো বলো।
তরী- ………
নিরব- ওকে।
তরী- এখন রাখছি বাই।
তরী নিরবের ফোনটা কেটে দিয়ে আর্দ্রকে ফোন করে- হ্যালো।
আর্দ্র- হুম তরী বল।
তরী- বলছি আমি বিয়েতে রাজি।যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিয়ের ব্যবস্থা করো তবে শুধু বিয়ে এনগেজমেন্ট এসব হবে না।
আর্দ্র-ওকে তোর ইচ্ছা।
তরী ফোনটা কেটে দিয়ে গভীর চিন্তায় মগ্ন হয়ে যায়। তরী ভাবতে লাগলো একটা মানুষের সাথে একটা মানুষের এতো মিল কীভাবে থাকতে পারে।
আর্দ্র তরীর কথা গুলো সবাইকে জানাই সবাই খুশি হয় শুধুমাত্র আরুশী ছাড়া।আরুশী রেগে তরী কে ফোন করে….
আরু- তরী কী বলছিস এসব তুই , তুই দাভাইকে বিয়ে করবি।
তরী- আরু কালকে তুই …. এখানে আসবি তোর সাথে আমার কথা আছে।
আরু- কি কথা।
তরী- তখন জানতে পারবি তবে এসব কথা কেউ না জানে।
আরু- ওকে।
পরেরদিন…..
তরী অফিস শেষ করে আরুশীর সাথে দেখা করতে যায়।
আরু- কি হলো তরী এখানে আসতে বললি তারপর আবার দাভাইয়ের সাথে বিয়েতে রাজি হয়ে ছিস।
তরী- আরু আমি আজ তোকে একজনের সাথে দেখা করাবো তবে তোকে কথা দিতে হবে তুই ইমোশনাল হয়ে পড়বি না।
আরু- কার সাথে।
তরী- জানতে পারবি তবে মনে থাকে যেন একদম ইমোশনাল হবিনা।তাহলে আমার সব প্ল্যান ভেসে যাবে।
আরু- ওকে।
তরী- একটু ওয়েট কর।
আরু ফোন টিপতে লাগল। হঠাৎ একজন তরী বলে ডাক দিলো ।
আরু সামনে তাকিয়ে দেখে শক খেল,তরীর দিকে তাকালো তরী আরুশিকে ইশারা করলো।আরু নিজেকে সামলে নিলো তরীর কথা মতো।
তরী- হাই।
নিরব- কেমন আছো।
তরী- ভালো আপনি।
নিরব- ভালো,বাট ওনাকে তো ঠিক চিনলাম না।
তরী- ওহ হলো আরুশী আমার ফ্রেন্ড।
নিরব- হাই আরুশী আমি নিরব।
আরু- হ্যালো।
তরী- বসুন না।
নিরব- কি খাবে বলো।
তরী- কফি।
নিরব- আর আপনি।
আরু- কফি।
নিরব- ওকে।
নিরব ৩ টে কফি অর্ডার দিলো।
নিরব- তরী কি বলবে বলছিলে।
তরী- আসলে আপনার সাথে তেমন করে কোনো পরিচয় হয়নি তাই ভাবলাম একদিন দেখা করে পরিচিত হয়ে নেয়।
নিরব- ওহ তাই।
তরী- হুম।
নিরব- আমি নিরব জানো,মা- বাবা আর মামাতো বোন কে নিয়ে আমার ফ্যামিলি।বাবা একজন চাকুরীজীবি মা হাউস ওয়াইফ আর আমি একটা ছোটোখাটো চাকরি করি।
তরী- ওহ আপনাদের বাড়ি কোথায়।
নিরব- ……….
তরী- ওহ।
ওদের কথা বলার মাঝে নিরবের একটা ফোন আসে আর নিরব কথা বলার জন্য উঠে যায়।
আরু- তরী এটা নিরব হতে পারেনা এটা আমার দাদাভাই আরুশ।
তরী- আমি ও বুঝতে পারছি না ব্যাপারটা কি, আরুশের সাথে এতো মিল কীভাবে।আর ওহ যদি আরুশ হয় তাহলে আমাদের চিনতে পারছে না কেন?
আরু- কি করবি এখন।
তরী- সবটা আগে জানতে হবে ভাল করে।
আরু- হুম, কিন্তু তোর তো সামনের শুক্রবার।
তরী বাঁকা হাসলো…..
আরু- তোর মাথায় কি ঘুরছে বলতো।
তরী- পড়ে জানতে পারবি।
নিরব ওদের কথা মাঝে চলে আসে।
নিরব- আমার একটা কাজ আছে আমাকে এখন যেতে হবে।
তরী- ওকে।
নিরব- বাই পড়ে একদিন আড্ডা দেবো।
তরী- হুম।
নিরব ওদের বিদায় জানিয়ে চলে যায়।তরী আর আরু কফিশপ থেকে বেরিয়ে ফুটপাত ধরে হাঁটতে চালু করলো।
আরু- তরীরে আমার সবটা এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে। দাদাভাই এর মতো দেখতে একটা মানুষ কিন্তু দাদাভাই নয়।
তরী- আরু আমরা একটা গোলক ধাঁধার মধ্যে আছি আর সেটা থেকে আমাদের বেরোতেই হবে।
আরু- কিভাবে।
তরী আরুর উওর না দিয়ে একজনকে ফোন করে- হ্যালো।
-…..
-যেটা বলছিলাম সেটা ঠিক মতো করো নিরবের প্রতি মুহূর্তে এর খবর আমার চাই।
-…
-ওকে রাখো।
আরু- তরী তুই কি চাইছিস বলতো।
তরী- আমার মনে হচ্ছে আরুশের দুর্ঘটনাটা কেউ ইচ্ছা করে করিয়েছে। কিন্তু কে সেটা।আচ্ছা আরু তুই এমন কাউকে জানিস যার সাথে আরুশের শত্রুতা ছিলো।
আরু- না।
তরী- ভালো করে মনে করে বল।
আরু- মনে পড়েছে একটা ঘটনা.
তরী- কি?
আরু-…..
#চলবে…