#হৃদয়ের বন্ধ
#পর্ব:11
#লেখিকা:Afshana Afrin
“”” অর্নব তোর্সা কে নিয়ে ব্যালকনিতে গিয়ে দাঁড়াই। অর্নব তোর্সার উদ্দেশ্যে বলে মম আর আরিশ চৌধুরি রিলেশন করে বিয়ে হয়েছিলো। দুইজন সেইম ক্লাসে ছিলো। রিলেশনের চার বছরের মাথায় ওরা বিয়ে করে। বিয়ের প্রথম বছর নাকি আমার জন্ম হয়। এরপর থেকে বাবা মায়ের প্রতি আরো যত্নশীল হয়। তখনো বাবার পিএ নীলিমা চৌধুরি ছিলো না। আস্তে আস্তে আমি বুজতে শিখি বাবা মায়ের ভালোবাসা বড়ো হতে তাকি। আমার যখন 18 বছর বয়স তখন বাবা ঠিক করে দাদুর কাছে কানাডা পাঠাবে পড়া শুনা করতে আমি ও রাজি হয়। যাওয়ার আগের দিন রাতে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিয়ে বাসাই এসে শুনতে পাই মমের রুমে আওয়াজ। আমি কুতূহলী হয়ে রুমের বাহিরে দাঁড়িয়ে শুনতে মা কোন মহিলা কে নিয়ে ঝগড়া লেগেছে বাবার সাথে আর বাবা ঠান্ডা মাথায় বুজাচ্ছে। আমি আর ভিতরে না গিয়ে রুমে গিয়ে শুয়ে পরি। সকালে উঠে দেখি সব ঠিক বাবা মা হাঁসি খুশি ভেবেছি হয়তো মায়ের ভুল ভেঙ্গেছে। পরের দিন আমি চলে যাই। ছয় বছর পর দেশে আসি পড়া শুনা শেষ করে এসেই শুনি অরন্য মায়ের গর্ভে। আমি খুশি হয়েছিলাম ভিষন,,,, আমি বাসাই আসার পরের দিন রাতে শুনতে পাই মায়ের কান্না রুমে গিয়ে দেখি একা কাঁদছে। যখন জিজ্ঞাসা করলাম কি হয়ছে বললো না। যখন কসম দেই তখন বলল,,,, আমি কানাডা যাওয়ার আগে মম যানতে পারে বাবার উনার পিএ সাথে সম্পকে আছে সেটা নিয়ে ওদের ঝগড়া হয়। তখনি মম কে আমি বলি সেই ঝগড়া আমি শুনেছি কিন্তু পরের দিন যখন দেখলাম তোমরা হাসি খুশি ভাবলাম সব ঠিক। তখন মম বললো তোর বাবা ওই দিন মিথ্যা বলছে খুব কৌশলে সে নাকি মা কে বুঝিয়েছে তাদের রিলেশন নেই প্রমান ও দিয়েছে। মম তো আরিশ চৌধুরি কে খুব ভালোবাসতো তাই বিশ্বাস করে নেই বুজতে ও পারেনি সব অভিনয়। এরপর ওদের রিলশন চলে গোপনে,,, বাবা মায়ের অনেক কেয়ার করে যাতে মা বুজতে না পারে। এরপর পাঁচ বছর মায়ের সাথে মিথ্যা অভিনয় করে যা আমার মা ধরতে ও পারেনি।
এরপর একদিন মা বাবাকে সারপ্রাইজ দিতে অফিসে যাই গিয়ে শুনে বাবা নাকি উনার পিএ কে নিয়ে ঘুরতে গেছে । মম ঠিকানা নিয়ে যাই গিয়ে দেখে বাবা ওই রেস্টুরেন্টে উনার পিএ হাত ধরে গল্প করছে খাইয়ে দিচ্ছে। মম কিছু না বলে বাসাই চলে আসে। বাবা বাসাই আসার পর মম যানতে চাইলে বলে একটা কাজে গেছিলো। মম তো সবটাই যানতো তবুও কিছু বলেনি। এরপর মম এই বিষয় টা তার বান্ধবী কে বলে তখন উনি বলে একটা বাচ্চা নিতে তাহলে হয়তো মন পাল্টে যাবে। মম ও ভেবেছে আমার জন্মের পর এতো ভালোবেসেছে বাবা নতুন বেবি হলে যদি ঠিক হয় তখনি মা বেবি নেই। বেবি কনসিভ করার পর মায়ের ভাবনা সত্যি হয় বাবা মাকে খুব খেয়াল রাখছে কে যানতো এই সব মিথ্যা ছিলো কারন বাবা যানতে পারে মম সন্দেহ করছে উনাকে। মায়ের যখন বেবি বাম্প বড়ো হয় অনেক লজ্জা পাই তাই আমি বাসা থেকে দাদুর কাছে ছলে যাই তখন মায়ের পাঁচ মাস। আমি যাওয়ার পর একদিন বাবা নীলিমা চৌধুরি কে বাসাই আনে মম কে বলে বিপদে পরেছে। মম জায়গা দেই। তার পর নাকি উনি মম কে খাবারের সাথে ঘুমের ওষুধ দেই যেটা মম দেখে নেই তাই মম নাকি এই খাবার খেয়ে ঘুমের অভিনয় করে। বাবা সেই সুযোগে উনার পিএ রুমে যাই মম ও পিছনে যাই গিয়ে ওদের আপত্তি কর অবস্থায় দেখতে পাই। এরপর মম রাগ সামলাতে না পেরে ভিতরে ডুকে যাই মা কে দেখে ওরা চমকে উঠে। এরপর মা যখন রেগে নীলিমা চৌধুরি কে মারতে যাবে তখনি বাবা মায়ের গায়ে হাত তুলে আর বলে উনি নীলিমা চৌধুরি কে ভালোবাসে মায়ের সাথে এতো বছর অনেক অভিনয় করছে আর না তাই মাকে ডিভোর্স দিবে বলেই বেরি যাই। ওই দিন কাজের লোক আমাকে ফোন করে সব বলে। আমি বাসাই এসে দেখি মম সুইসাইড করার জন্য রশি নিচ্ছে আমি ঠিক সময় আসাতে মম কে হারাতে হয়নি। এরপর সব যানি মমের থেকে আর সেই দিন প্রথম আরিশ চৌধুরির শরীর এ হাত তুলি আর সম্পর্ক শেষ করি। আর এই সব যখন দাদু কে বলি উনি হার্ট এর্টারকে করে। দাদু কে নিয়ে যাই হসপিটালে কিন্তু আরিশ চৌধুরি আসে নি। এরপর দাদু তার সব সম্পত্তি প্লাস বিজনেস আমার নামে করে দেই। এরপর মম ডিভোর্স পেপার রেডি করে অরন্য গর্ভে থাকায় ডিভোর্স হয়নি। এই ভাবে কেটে যাই আরো চার মাস মমের তখন নয় মাস নানু মম কে দেখে রাখে। কিন্তু হঠাৎ একদিন রাতে মম স্লিপ করে পরে যাই শিড়ি দিয়ে যার জন্য প্রচুর ক্ষতি হয় মমের।সাথে সাথে মম কে নিয়ে হসপিটাল যাই সেই দিন অরন্যর জন্ম হয়। ডক্টর ছোট অরন্য কে আমার হাতে তুলে দেই।আমি খুব খুশি হয়। কিন্তু সেটা বেশি কন স্থায়ী হয়নি ডক্টর বলে মম কে বাঁচানো সম্ভব না আমি আর মাএ কিছু কন আছে মমের হাতে। আমি পাথর হয়ে যাই ছোট অরন্য কে নিয়ে মমের কাছে যাই । মম তখন আমার হাত ধরে বলেছিলো আমি অরন্যর মা আমি বাবা আমি ওর ভাই ওকে যেন আগলে রাখি আর আরিশ চৌধুরির কে যেন ছুঁতে না দেই বলেই মম মারা যাই। অর্নব আবার বলে মম এর মৃত্যুতে আমি এক ফোঁটা জল ফেলেনি মম কে দাফন করি কিন্তু ওই দিন ও ওই নরপিশাস আসেনি। মমের মৃত্যুর তিন দিন পর দাদু খবর পাই। মমের মৃত্যুর খবর শুনে স্টোক করে দাদু মারা যাই আমি একা হয়ে যাই। এক দিনে পরিবার হারানো আরেক দিকে ছোট অরন্য। আমি চলে যাই কানাডা বিজনেস দেখার পাশা পাশি একা হাতে বড়ো করি অরন্য কে তবুও কোন নারী লাইফে জায়গা দেই নি যদি অরন্যকে অবহেলা করে। এর কেটে যাই আরো চার বছর আমরা দেশে আসি এরপর তোমার সাথে অরন্যর দেখা তারপর তো সব যানো।
তোর্সা অর্নবের হাত ধরে বলে এখন আর তুমি একা না আমি আছি ছোট অরন্য কে কখনো মায়ের অভাব বুজতে দিবো না বলেই অর্নবের ছোখের জল মুছে দেই।
চলমান……