হারিয়ে যাওয়া পথ,খুজে পাওয়া
part:13
লেখা –সুলতানা ইতি
১১:২২ মিনিটে অনুষঠান শুরু হলো, আনুশা & তার মা,তানভীর সহ সবাই প্রথম সারিতে বসলো, প্রথম সারিতে আনুশার শুভাকাঙ্ক্ষী দের বসতে দিলো,প্রিন্সিপাল স্যার এর ইচ্ছে অনুযায়ী,
তানভীর যখন আনুশার সাফল্য খুশি তা হলে তানভীর ও আনুশার শুভাকাঙ্ক্ষী তাই প্রথম সারিতে বসলো সবাই
অনুষঠান শুরু হলো একে একে সবাই তাদের বক্তব্য রাখলেন স্টুডেন্টদের উদ্দেশ্য করে,সবাই যেন আনুশার মতো এগিয়ে যেতে পারে, এই অনুপেরনা দিয়েছেন,
এইবার পুরস্কার দেয়ার পালা,আনুশাকে স্টেজ এ ডেকে নিলো
জেলা মন্ত্রী সাহেব আনুশার গলায় গোল্ড মেডেল পরিয়ে দিলো সে সাথে তিনি ঘোষণা করলেন আনুশাকে তিনি চীনে পাঠাচ্ছেন উচ্ছ ডিগ্রী অর্জনের জন্য
কথাটা শুনে দর্শকদের মাঝে হই চই পড়ে গেছে কেউ খুশি হলো কেউবা হিংসা করে বল্লো, দেখলি মেয়েটা কদিন হলো আমাদের কলেজ এসেছে এর মধ্যে সবাইকে পিছনে পেলে টেক্কা দিয়ে দিলো,
আনুশার সাথেই পড়তো লিমা, সে বল্লো চুপ চাপ থেকে যে মেয়েটা জল এতো দূর গড়িয়ে নিবে ভাবতেও পারিনি আমি,ক্লাসে তো কোন মেয়ে বা ছেলে। কারো সাথেই কথা বলতো না সব সময় নিজের মুড নিয়ে থাকতো,
আর এখন দেখ সবার চোখের মনি হয়ে গেলো উফফ গা জলে যাচ্ছে আমার এতো আদিক্ষেতা দেখানোর কি আছে এতে বঝি না,
মন্ত্রী সাহেব জানালেন কয়েক দিনের মধ্যেই আনুশার যাওয়ার ব্যাবস্থা করে দিবে
স্টেজ এ আনুশা অভাক হয়ে চেয়ে আছে কি শুনছি, আমি কি ঠিক শুনলাম নাকি আমার মনের ভুল এ, ও ছিলো আমার ভাগ্যে লিখা,খুশিতে কেদেই দিলো আনুশা
প্রিন্সিপাল স্যারর:সবার উদ্দেশ্য আনুশাকে কিছু বলতে বল্লো
আনুশা: মাইক হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি কি বলবো বুঝতে পারছি না কেমন স্টাচু হয়ে গেলাম তবু ও সবাইকে সালাম দিয়ে শুরু করলাম
জীবনে কিছু পেতে হলে সেটাকে লক্ষ্য হিসেবে নিতে হবে,এর মাঝে অনেক বাধা আসবে সব কিছু উপেক্ষা করে সঠিক পথে এগিয়ে যাওয়াটা ই প্রকৃৃত কাজ,
বিপদে ঘাবড়ে গেলে চলবে না বরং শক্ত হাতে হাল ধরতে হবে, যে মানুষ টা বিপদে পড়তে দেখে ঠাট্রা বিদ্রুপ করেছে তাকে বুঝিয়ে দিতে হবে আমি ভেঙে পড়ার মতো মানুষ নই তাকে বুঝিয়ে দিতে হবে মনের শক্তিটা ই আসল,
এই রকম আর ও কিছুক্ষন বলার পর ষ্টেজ থেকে নেমে আসলাম,মা তো আমায় খুশিতেই জড়িয়ে ধরে কেদে দিলো
আমার ক্লাস ফ্রেন্ড রা কখন ই আমার সাথে কথা বলতে আসেনি,আজ ওরা সবাই এগিয়ে আসছে আমার সাথে কথা বলার জন্য
ছেলেদের মধ্যে অনেকই আমার কাছে ফোন নাম্বার চাইছে, বুঝলাম এরা আমার সুদিনের বন্ধু হতে চায়,এদের প্রয়োজন পুরিয়ে গেলে আবার এরা চলে যাবে, সবাকে উপেক্ষা করে যখন বাইরে এলাম তখন কারো Congress anusha, কথাটা শুনে পিছনে তাকালাম তানভীর,
তানভীর আমাকে শুভেচ্ছা জানালো,দেখলাম ওর চোখের দিকে তাকিয়ে পানিতে টল মল করছে চোখ
তানভীর : Congress আনুশা দেশের বাইরে পড়তে যাচ্ছো অনেক উন্নতি করবে তুমি জীবনে আমি জানি, উন্নতি করবে নাই বা কেনো,
আর তোমাকে তানভীর নামের এই বিরক্তিকর ছেলেটা বিরক্ত করবে না,,নিজের মনের মতো করে চলতে পারবে
আনুশা: নির্বাক হয়ে আমি ওর বলা কথা গুলো শুনছি, আমি আজ ও বুঝতে পারছি না আমার সাথে কেনো এই সব হচ্ছে
তানভীর : তুমি বিদেশ এ গেলে জানি আমার কথা তোমার মনে পড়বে না, তবু ও যদি কোন বৃষ্টি মূখর সন্ধ্যায় আমার কথা মনে পড়ে,কিংবা
কোন অমাবস্যার অন্ধকার রাতে আমার কথা একটু ভাবো তা হলে বুঝে নিও মেঘে ডাকা আকাশে,আর অমাবস্যার অন্ধারে আমি তারা হয়ে তোমাকে আলো দেয়ার অপেক্ষায় আছি,শুধু মেঘ কেটে গেলে,আর অন্ধকার কেটে আলো হওয়ার অপেক্ষায় আছি,,
আমি জানি না কেনো তোমার মন এতো পাথর,কেনো তুমি আমাকে মানতে পারছো না তুমি কি বুঝো না আমি তোমাকে কতো ভালোবাসি
আনুশা:( আর শুনতে পারছিলাম না তানভীরের বলা কথা গুলো,)ওকে থামিয়ে দিলাম,ব্যাস অনেক বলেছেন আপনি,এই বার আমি বলি,
আমি তো আপনাকে বলিনি ভালোবাসি,আপনি নিজের থেকে এতো দূর এগিয়েছেন,, এটা আমার নয়, আপনার প্রব্লেম, জীবনের কোন মুহুর্তে ও আপনার কথা আমার মনে পড়বে না, আমি সামনে হাটার সময়,পিছনে তাকাই না
তানভীর : আনুশার কথা শুনে আমি কাদতে ও ভুলে গেছি শুধু ওর দিকে তাকিয়ে আছি
আনুশা: কথা গুলো বলা শেষ করে চলে আসলাম ওর সামনে থেকে কারন ওর চোখ যে অন্য। কথা বলছে, আমি কাউকে আমার এ জীবনের সাথে জড়াতে চাই না, আমি আমার মতো করে থাকতে চাই
মাকে নিয়ে চলে আসলাম বাসায়। মন টা ভালো লাগছে না কেমন যেন লাগছে, দুপুরের খেয়ে,সাথে একটা ঘুমের ওষুধ খেয়ে শুয়ে পড়লাম,জানি মরবো না আর আমি মরে যাওয়ার জন্য খাইনি শুধু একটু ঘুমাতে চাই,আচ্ছা আমার আজকের এই পাওনা টা কি পেপার এ চাপানো হবে,আমি চাই এই খবর টা নিহাল জানুক,আর ও বুঝুক। জীবন কারো জন্য থেমে থাকে না,আর ভাবতে পারছি না চোখ দুটো বন্ধ হয়ে আসছে,বুঝতে পারছি ওষুধ কাজ করা শুরু করছে,
★
তানভীরের আম্মু: কিরে তানভীর তোর কি মন খারাপ
তানভীর : না আম্মু আমি ঠিক আছি,আব্বু আসেনি এখন ও
তানভীরের আম্মু: না এসে পড়বে কিছুক্ষনের মধ্যে
তানভীর : ওও আচ্ছা
তানভীরের আম্মু: আনুশা তো দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে ওকে আটকাবি না তুই
তানভীর : না আম্মু ওকে আটকিয়ে রাখার কোন অধিকার আমার নেই, ও নিজেরর মতো করে থাকুক আর আমি ওর কথা ভাবতে চাই না আমি আমার মতো ঠিক আছি আম্মু
আম্মু: তুই সত্যি ঠিক। আছিস তো
তানভীর : হুম আম্মু তুমি আমাকে নিয়ে চিন্তা করো না তো
আম্মু: চল খাবি,খেয়ে শুয়ে পড় ভালো লাগবে
তানভীর :খেতে ইচ্ছে করছে না আম্মু,আমি ঘুমাবো,ঘুম থেকে উঠে না হয় খাবো
আম্মু: ঠিক আছে, আমি তা হলে যাই আমার আবার একটু কাজ আছে
তানভীর : আম্মুকে চলে যাওয়ার জন্য ঘুমের কথা বলেছি,আমার তো ঘুম আর কখনোই আসবে না, আমার ঘুম যে আনুশার চোখে,থাক আমার ঘুমাতে হবে না ও ঘুমাক,ও ভালো থাকুক আমি না হয় ভালো থাকবো ওর ভালো থাকায়
to bee continue