স্বপ্নীল ৫৬,57

0
1264

স্বপ্নীল
৫৬,57
-” তুমি না সুর ওয়ালাকে ভালোবাসো।তাহলে এখন বলছো কেন আমাকে ভালোবাসো?”
নীল বুঝতে পাচ্ছে স্বপ্ন এখন নাটক করছে।সে এখন স্বপ্নের সাথে তাল মিলিয়ে নাটক করে বলল,
-” আমি দুজনকেই ভালোবাসি।”
-“এ্যাঁ!
-” হ্যাঁ!”
-” হবে না।দুজন থেকে যেকোনো একজনকেই ভালোবাসতেই হবে।”
-” না! আমি দুজন কেই ভালোবাসব।”
-“আমাকে ভালোবাসতে হলে সুর ওয়ালাকে ছাড়তে হবে।”
-” কাউকে ছাড়ব না।দুজন কেই ভালোবাসব।দুজনকেই বিয়ে করব।”
-” তাহলে তুমি তোমার পথ দেখো। আমি চলি।”
স্বপ্ন চলে যেতে নিলেই।স্বপ্নের পিছনে শার্টের কলার চেপে ধরে বলল,
-” অভিনয় ভালো করতে পারেন।আমার সুর ওয়ালা যে আপনি।সেটা আমি জানি।”
মুখ ফসকে বলে ফেলে।যখন বুঝতে পারে জিহ্বা কামড় দিয়ে চোখ বন্ধ করে বলল,
-” না না।”
-” আমি তোমার নানা নই।”
নীল চোখ খুলে ফেলে।স্বপ্ন বলল,
-” প্রাচ্য নাকি রোদ! কে বলছে তোমাকে?”
নীল ছোট করে বলল,
-” প্রাচ্য আপু।”
-” এই জন্য মেয়ে মানুষকে কিছু বলতে নেই।পেটে কথা থাকে না।”
-” বেশ করেছে। বলবে না তো কি করবে।তারা আপনার মত পাষান নয়।”
-” আমি বুঝি পাষাণ! ”
নীল অভিমান করে বলল,
-” তাই!”
হাত টেনে কাছে এনে বলল,
-” এবার বলো কাকে ভালোবাসো তুমি!”
-” সুর ওয়ালার সুরে মোহ পড়েছি। সে মনো মুগ্ধকর মোহ।যেটা ছিল ভালোলাগা।সেই ভালোলাগাকেই ভালোবাসা বলে লাফিয়েছি আমি।পাঁচদিন আপনার সাথে থেকে চলে আসার পর।প্রতিটা মিনিট প্রতিটা সেকেন্ড বাদ নাই।যে আপনার কথা ভাবি নাই।এভাবে কখনো সুর ওয়ালার কথা ভাবি নি।আপনি যখন আমার ফোন ইগনোর করতেন।তখনই বুকের ভিতরে অসহ্য যন্ত্রনা হত।সেই যন্ত্রণা চোখের পানি হয়ে বেরিয়ে আসত।”
লাস্ট কথা গুলো বলতে বলতে নীল কেঁদে দেয়।নীলের গাল বেয়ে যাওয়া লোনা জল গুলো স্বপ্ন ঠোঁট দিয়ে চুষে খেয়ে বলল,
-” কখনো চোখের জল আসতে দিবো না।প্রমিজ।”
নীল হেসে দেয়।স্বপ্ন জড়িয়ে ধরে। নীল বলল,
-” সুর ওয়ালা।একবার বাজাবেন কি আপনার সে মনোমুগ্ধকর সুর।”
-” আজ্ঞে মহারাণী। ”
হেসে দেয় নীল।মাউথ অর্গান পকেট বের করে।বাজাতে থাকে।নীল স্বপ্নের কাঁধে মাথা রেখে স্বপ্নের জাল বুনতে থাকে।এভাবে রাত থেকে সকাল গড়ায়।
এভাবে নীল আর স্বপ্নের ভালোবাসার নতুন অধ্যায় শুরু হয়।

সোহা এবাড়িতে আসার পর থেকে তামিম ছাড়া কেউ কথা বলছে না।সারাদিন ঘর বন্ধ করে থাকে।তার মাও কথা বলে না।কিভাবে আমেনা কথা বলবে।তার মেয়ে কারণে তাকে কত খারাপ কথা শুনতে হয়েছে।এবাড়ি সবাই তাকে কত ভালোবাসত।এখন সবাই তাকে ভাবে মেয়েকে লেলিয়ে দিয়েছে তামিমে পিছনে।
সোহা থেকে সবাই মুখ ফিরে নিলে তার এত কষ্ট হয়নি।যত কষ্ট হচ্ছে তার মা আর নীল কথা বলছে না দেখে।সে আর পাচ্ছে না।নিজের রুম থেকে বেরিয়ে মায়ের রুমে যায়। আমেনা বিছানা গুচ্ছাছিল।সোহা পিছনে দাঁড়িয়ে বলল,
” মা!”
আমেনা কথাটা শুনে না শোনার ভান করে কাজ করতে থাকে।সোহা এবার আমেনা সামনে যেয়ে দাঁড়ায়।সোহাকে দেখে আমেনা চলে যেতে নেয়।সোহা বাধা দেয়।মায়ের হাত ধরে বলল,
-” তুমি আমায় মারো, কাটো।আমি কিচ্ছু বলব না।তবুও তুমি আমার সাথে কথা বলো!”
আমেনা চুপ।সোহা এবার কেঁদে দেয়।মায়ের নিরবতা কিছুতেই মেনে নিতে পাচ্ছিল না।সে করতে চায়নি এভাবে বিয়ে।তামিম জোর করে তাকে বিয়ে করেছে।এখন এই কথা বলে মায়ের কাছে তামিমকে ছোট করতে চায় না।যতই জোর করে বিয়ে করুক। এখন তামিম তার স্বামী।

আমেনার পা জড়িয়ে ধরে সোহা কেঁদে দেয়।কান্না করতে করতে বলল,
-” আমায় মাফ করে দাও মা।”
আমেনা কষ্ট হচ্ছিল।খুব কষ্ট হচ্ছিল।এই মেয়েটা মুখের দিকে তাকিয়ে বেঁচে ছিল এতদিন।না হলে কবেই মরে যেত।আমেন ঠোঁট কামড়িয়ে কান্না আটকাচ্ছে। রুমের বাইরে তামিম দাঁড়িয়ে ছিল।এবার সে সামনে এসে বলল,
-” মা! সোহা কোনো দোষ নেই।সোহা কে জোর করে আমি বিয়ে করিছি।”
মা ডাক শুনে আমেনার বুকের ভিতরে ছেৎ করে উঠে।চোখ মেলে তাকায়।আমেনা বলল,
-” একটু আগে তুমি আমায় কি বললে ডাকলে।”
সোহা তামিমের কথা শুনে উঠে দাঁড়ায়।তামিম বলল,
-” মা! ”
আমেনার চোখের পানি ছলছল করতে থাকে।
আমেনা মনে মনে আওড়াতে থাকে, ” মা! “।
তামিম আমেনা জড়িয়ে ধরে বলল,
-” আগে তোমাকে খালা বলে ডাকতাম।তখনই তোমার মেয়ের জামাই ছিলাম না।এখন তোমার একটামাত্র মেয়ের স্বামী আমি।তাই এখন খালা থেকে শ্বাশুড়ি আম্মা। শাশুড়ি কেটে মা।ভালো হয়েছে, না।”
তামিমের কথা শুনে আমেনা হেসে দেয়।তামিম বলল,
-” এবার তো সোহাকে ক্ষমা করে দাও।তুমি কথা বলছে না বলে।সারাদিন,সারা রাত শুধু কাঁদে।ওর ফ্যাঁনফ্যাঁনানি আর ভালো লাগে না।তাড়াতাড়ি ক্ষমা করে দাও।তাহলে যদি ওর কান্না একটু কমে।”
আমেনা সোহার দিকে তাকায়।মাথা নিচু করে আছে সোহা।সোহার মাথায় হাত দিতেই মাথা তুলে তাকায় আমেনার দিকে।’ মা’ বলে কান্না করে জড়িয়ে ধরে।মা – মেয়ের কষ্ট কান্না দেখে তামিমের চোখে কার্নিশে এক ফোঁটা নোনা জল আসে।আঙুলের ডগা দিয়ে ঝেড়ে ফেলে দেয়।এত দিন পর সোহার মুখে হাসি ফুটেছে। সোহার ঘোমড়া মুখটা দেখতে ভালো লাগছিল না, তামিমের।বারান্দা দাঁড়িয়ে নিত্যদিনের মত আজও সমুদ্র সিগারেট ফুঁকছে।রোদ যে এ পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে।সমুদ্র স্বাভাবিক। তার কোনো পরিবর্তন না দেখে ছেড়ে দিয়ে বলল,
-” আনরোমান্টিক!”
চলে আসতে চাইলে।সমুদ্র হাত ধরে ফেলে।রোদ সেই জায়গা স্থির হয়ে যায়।সে তো এটাই চাইছিল।সমুদ্র হাত ধরে টেনে দাঁড়া করায় সামনে।রোদের পিঠ ঠেকে সমুদ্র বুকে।বুকের ভিতরে শতবার হার্টবিট করছে।সমুদ্র এক হাতে সিগারেট আরেক হাত দিয়ে রোদকে জড়িয়ে ধরেছে।রোদ বলল,
-” প্লিজ সিগারেট ফেলেন। বমি আসছে আমার।”
সমুদ্র সিগারেট ফেলে দিই।দুইহাত জড়িয়ে ধরে। রোদের চুলে নাক ডুবায়।দুজন চুপ নিরবতা পালন করছে।
সেদিন যখন সমুদ্র বাড়ি ফিরেছে।তখনই রোদ সে কি কান্না করেছে সমুদ্রকে জড়িয়ে ধরে।সেদিন সমুদ্র রোদের কান্না থামাতে বিরক্ত হয়ে পড়েছে।এখন আর রোদ সমুদ্র কাজে বিপরীত কোনো কাজ করে না।ভালোবাসে তো সমুদ্রকে সে।সমুদ্র তাকে কষ্ট দিয়েছে।কিন্তু সে সমুদ্র কষ্ট দিতে গেলে।বুক কাঁপে তার।সমুদ্র কষ্টে দ্বিগুন কষ্ট সে পায়।আচ্ছা সমুদ্র এখন কেন তাকে কষ্ট দেয় না।সব সময় সমুদ্র হাসিখুশি রাখতে চায় তাকে।তার মানে কি সমুদ্র এখন তাকে ভালোবাসে।এখন তাকে কষ্ট দিতে গেলে।তার মত সমুদ্র ও বুক কাঁপে।এই জন্য বোধহয় এখন ওরকম ব্যবহার করে না।মাঝে মাঝে রোদ সমুদ্র ওই রকম ত্যাঁড়া কথা গুলো মিস করে।সোজা প্রশ্ন করলে সে উল্টা উত্তর দিতো।
-” রোদ-বৃষ্টি!”
সমুদ্র ডাকে রোদের হুস ফিরে।কিসব আজগুবি চিন্তাভাবনা করছে।হেসে দেয় সে।সমুদ্র বলল,
-” হাসছিস কেন? ”
রোদ হেসে বলল,
-” কিছু না।”
রোদকে তার দিকে ঘুরিয়ে। সমুদ্র বলল,
-” সত্যি কিছু না।”
রোদ মাথা নাঁড়িয়ে ‘ না ‘ জানায়।রোদের চুলের মধ্যে হাত দিয়ে রোদকে আরও কাছে আনে।রোদের গালের সাথে গাল ঘষে দেয়।খোঁচা খোঁচা দাঁড়ির খোঁচা খেয়ে রোদ ‘ আহ ‘ করে একটা শব্দ করে।সমুদ্র চোখ মেলে তাকিয়ে বলল,
-” ব্যথা পেয়েছিস না’ কি।”
শিহরণ জাগিয়ে দিয়েছে রোদকে।রোদ বলল,
-” এই ব্যথা কিছু নয়।বাসর রাতে চেয়ে এই ব্যথা অতি সামান্য।”
সমুদ্র রোদকে ছেড়ে দেয়। রাগ উঠে যায় তার।মনে পড়ে যায় রোদ তার সম্মান হানী কিভাবে করেছে।তার চরিত্র আজ পর্যন্ত কেউ আঙুল তুলতে পারেনি।রোদ বিনা দোষে।তাকে লুচ্চা,লম্পটের দলে ফেলে দিয়েছে।
এভাবে সরিয়ে দেওয়াতে রোদ চোখ তুলে তাকায় সমুদ্র দিকে।চোয়াল শক্ত করে আছে।কপালের রগ গুলো ফুলে উঠেছে। এটা সমুদ্র রাগের লক্ষণ। রোদ তা জানে।সে রেগে যাওয়ার মত কি বলেছে।মুহুর্ত মনে পড়ে যায়। একটু আগের কথা।সমুদ্র হয়তো তার বলা কথায় মিথ্যে অপবাদের কথা মনে পড়েছে।তার ও খারাপ লাগছে।মুখ খুলে কিছু বলার জন্য।তার আগেই সমুদ্র রুম থেকে বেরিয়ে আসে।রাতে আর বাসায় ফিরে নি সমুদ্র।বার বার ফোন করেছে।মেসেজে ‘ স্যারি ‘ বলেছে।

কাউছার স্বর্ণা।
গঠন মূলক মন্তব্য করবেন।তাহলে লেখতে ভালো লাগে।গল্প লেখি আপনাদের জন্য।আপনার যদি না পড়েন।তাহলে লিখে কি করব।

স্বপ্নীল
৫৭
ধূসর মোবাইলের স্ক্রীনের দিকে তাকিয়েই আছে।সেখানে তার মায়াবতীর ছবি।কি মিষ্টি হাসি তার মায়াবতীর।এই হাসিটা তার হৃদয় কেঁড়েছে।তার হৃদয়ে ঝড় তুলেছে ।এই ছবিটা প্রাচ্য’র গায়ে হলুদের রাতে তুলেছে।স্বপ্ন বলেছে তামিম না কি, তার মায়াবতী কে সেদিনই বিয়ে করেছে।এইজন্য সেদিনের পর থেকেই মায়াবতী তার সাথে বেশি কথা বলত না।যা বলত, শুধু হু, হা করত।
তার মায়াবতীর ভালোবাসা তামিম ছিল।তামিম তার মায়াবতীর জীবনে আগে এসেছিল।মায়াবতীর ভালোবাসা পাওয়া হয়নি তার।ধূসর সব সময় চায় তার মায়াবতী সুখে থাকুক,ভালো থাকুক।ভালো বাসলে পেতেই হবে এমন কোনো কথা নেই।দূর থেকে ভালোবাসা যায়।ধূসর সেটাই করবে।দূর থেকেই ভালো বাসবে।

সারাদিন স্বপ্ন নীলকে ফোন করে নিই।এখন রাত ১০টায় বাজে।ফোন করা কোনো আশাই দেখছে না।চাতক পাখির মত চেয়ে আছে ফোনের দিকে, নীল।নীল আজকে পণ করেছে যতক্ষণ স্বপ্ন ফোন করবে না, ততক্ষণ সে নিজেও আগ বাড়িয়ে ফোন দিবে না।তখনই স্বপ্ন ফোন আসে।নীল খুশিতে বাকবাকুম হয়ে পড়ে।নীল ফোন কানে তুলে ঠিকই, কথা বলে না।স্বপ্ন বলল,
-” কথা বলবে না বলে কী পণ করেছ না কি।”
নীল রাগ দেখিয়ে বলল,
-” সারাদিন কি করেছিলেন।একবার কী আমার কথা মনে পড়েনি।”
-” শতবার মনে পড়েছে আমার কদমফুলের কথা।”
স্বপ্নের মুখে কদম ফুল নাম শুনলে খারাপ লাগে না। নীলের ভালো লাগে।অন্য কেউ তাকে এই নামে ডাকলে রাগ হতো।কিন্তু স্বপ্নের এই কদমফুল ডাকে যেন।ভালোবাসার মিশ্রিত। স্বপ্ন তাকে কদম ফুল ডাকলে নীলের ঘোর লেগে যায়।কী নেশাতুর কণ্ঠে স্বপ্ন ডাকে।কদম ফুল! হাসে নীল।সে বলল,
-” শতবার মনে পড়ার নমুনা তো দেখলাম।এই জন্য বোধহয় একবার ফোন করেন নিই।”
-” আমি ব্যস্ত ছিলাম। ফোন করতে পারিনি।তুমি করোনি কেন? ”
-” আমি পণ করেছি।”
-” হা হা হা।কথায় কথায় এত পণ কী করে করো তুমি।”
-” কথা ঘুরাবেন।ব্যস্ত ছিলেন নাকি।নতুন কাউকে মেয়ে আমায় ভুলে গেলেন।”
স্বপ্ন ধমকের সুরে বলল,
-” নীল।”
এই নীল নামে স্বপ্ন তাকে ডাকেনা। যখনই ডাকে।তখন রাগের বশে।স্বপ্নের ধমকে নীল কেঁপে উঠে।ভয় পেয়ে যায়।স্বপ্ন বলল,
-” তোমার ভাগ্য ভালো বলে তুমি এখন আমার সামনে নিই। ”
-” স্যরি।আমি না…! মুখ ফঁসকে বলে ফেলেছি।”
-” খবরদার! আর কোনোদিন যেন তোমার মুখে এই কথা না শুনি।তুমি ছাড়া আমার লাইফে আর কেউ আসতে পারে না।তোমাকে ভালোবেসেছি কী ভুলে যাওয়ার জন্য।”
নীল বাধ্য মেয়ের মত বলল,
-” আচ্ছা।”
স্বপ্ন হেসে বলল,
-” গুড। এবার ঝটপট অন্যলাইনে আসো।তোমাকে দেখব।”
নীল কিছু বলার আগেই স্বপ্ন ফোন কেটে দেয়।ডাটা অন করে।তখনই স্বপ্ন ভিডিও কল করে।গায়ে জামা কাপড় ঠিক করে স্বপ্নর ফোন ধরে।
-” এত সময় লাগে ফোন ধরতে।”
নীল কোনো কথা বলল না।শুধু লাজুক হাসি দিই। স্বপ্ন বুকের বা পাশে হাত দিয়ে বলল,
-” কদম ফুল তোমার হাসিটা আমার এখানে এসে লেগেছে। কবে যে তোমাকে বউ করে ঘরে তুলতে পারব।”
শেষটা কথাটা স্বপ্ন আফসোস করে বলল।নীল লজ্জায় টমেটোর মত লাল হয়ে গেল।স্বপ্ন নীলকে আরেকটু লজ্জা দেওয়ার জন্য বলল,
-” তোমাকে খেয়ে ফেলতে ইচ্ছা করছে।”
নীল ফট করে ফোন কেটে দেয়।ইদানীং স্বপ্ন সাথে কথা বললেই।স্বপ্ন তাকে এমন এমন কথা বলে লজ্জা পড়তে হয়।আগে তো এমন হতো না।এখন কেন স্বপ্ন সব কথায় লজ্জা পায়।বোধহয় এখন তাদের সম্পর্ক বদলে গেছে বলেই।
নীল ডাটা বন্ধ করে অফলাইন চলে আসে।তখনই স্বপ্নর ফোন আসে।স্বপ্ন বলল,
-” তুমি এমন কেন? সব সময় এমন করো কেন আমার সাথে।একটু রোমান্টিক কথাবার্তা বললেই আমাকে মাঝপথে রেখে ফোন কেটে দাও।আগে মত চঞ্চলতা কোথায় তোমার।চঞ্চলতা কেটে গিয়ে লজ্জা পরিনিত হয়েছে না কি।”
-” তুমি সব সময় এমন কথা বলো কেন? আমার ভীষণ লজ্জা লাগে।”
-” তাহলে আর ও বেশি বেশি করে লজ্জা দিতে হবে।”
-” তাহলে ফোনই ধরব না আর।”
-” মাইর চিনো।মাইর দিবো।”
-” নারী নির্যাতন মামলা করব কিন্তু।”
-” ওকে।সমস্যা নেই।”
-” হুম!”
-” খেয়েছো তুমি।”
-” হুম।তুমি খেয়েছো।”
-” মাত্র অফিস থেকে ফিরলাম।”
-” ফ্রেশ হওনি।”
-” খাটে আধোশোয়া হয়ে শুয়ে তোমার সাথে কথা বলছি।”
-” ইয়াক! তুমি সারাদিন কাজ করেছো এখন ফ্রেশ হয়নি।দ্রুত ফ্রেশ হয়ে ডিনার করো।এখনকার জন্য বায়।”
-” আরেকটু কথা বলো।পরে ফ্রেশ হতে যাবো।”
-” নো! আগে ফ্রেশ হও।তারপর খাও।পরে কথা বলব।”
লাইন কেটে দেয় নীল।স্বপ্ন উঠে যায় ফ্রেশ হওয়ার জন্য
★★★
কিছুদিন ধরে সোহা নীলের সাথে কথা বলতে আসলেই নীল এটা ওটা বাহানা দিয়ে এড়িয়ে যায়।আজকে ঠিক একই কাজ করেছে নীল।সোহাকে দেখে রুম থেকে চলে যেতে নিলেই সোহা হাত ধরে ফেলে।সোহা মুখটা মলিন করে বলল,
-” তুই আমার সাথে কথা না বললে আমার ভালোলাগে না।দিনটাই কেমন করে যেন কাটে। তারপর কেন এভাবে আমাকে এড়িয়ে যাস তুই।”
নীল মুখ ভার করে বলল,
-” তুই এখন যা।আমার একটু কাজ আছে।”
সোহা নীলের সামনে এসে বলে,
-” আমার ভালো লাগছে না আর।প্লিজ তুই আমার সাথে কথা বল।”
নীল অভিমান করে বলল,
-” আমার সাথে কথা বলতে আসছিস কেন? আমি তোর কে হই।”
-” তুই আমার বেষ্টু।”
-” ওহ! তাহলে তোর মনে আছে আমি তোর বেষ্টু হই।বন্ধুত্বের মানে জানিস তো।বন্ধুরা যেমন সুখে পাশে থাকে তেমনি দুঃখে।তুই কোনটায় আমায় পাশে রেখেছিস।”
সোহা কোনো কথা বলল না।নীল বলল,
-” তোর সুখে আমায় না পাশে রেখেছি, না দুঃখে।”
সোহা পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলি দিয়ে ফ্লোর খুঁটতে থাকে। মুখ ছোট করে বলল,
-” স্যরি।”
-” আমি তোকে আমার সব কথা শেয়ার করি।তাহলে তুই কেন বলিস নি। বিয়ের কথাটা।সেদিন যদি আমি তোদের বিয়ের কথা জানতাম।তাহলে এরকম পরিস্থিতি হত না।”
সোহা কোনো কথা বলল না।নীল সোহার বাহু ধরে বলল,
-” তাকা আমার দিকে।”
সোহা মুখ তুলে তাকায়। নীল বলল,
-” বিয়ের কথা বলিস নি ভালো কথাটা।এভাবে সেদিন ছেড়ে চলে গেছিস কেন? তুই জানিস না তোকে ছাড়া কতগুলো মানুষ বেঁচে থাকা অসম্পূর্ণ। ভাগ্য ভালো বলেই তো।ধূসর ভাইয়া তোকে পেয়েছে।যদি তুই অন্য কোথায় হারিয়ে যেত-ই। তাহলে তোকে কী খুঁজে পেতাম আমরা।”
-” হারিয়ে গেলে কী হয়েছে।যার নীলের মত বেষ্ট ফ্রেন্ড থাকে।তামিমের মত ভালোবাসার মানুষ থাকে।তারা ঠিকই একদিন না একদিন আমার খুঁজে বের করত।”
-” এত বিশ্বাস।”
-” হুম।”
দু বান্ধবী জড়িয়ে ধরে কিছুক্ষণ কান্না করে।তারপর নীল আর সোহা খোশগল্প মেতেই উঠে।নীল স্বপ্নের ব্যাপারে সব বলে।

#কাউছার স্বর্ণা।

জানি না কেমন হচ্ছে গল্পটা।খারাপ হলে বলবেন প্লিজ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে