স্বপ্নীল ৪৩

0
1306

স্বপ্নীল
৪৩
প্রাচ্য জামা পড়ে দেখে সে জন্য খাদিজা বেগম অনেল বকাঝকা করে।খাদিজা প্রাচ্যকে বলে দিয়েছে।যদি এই বাড়িতে বউ হিসেবে থাকতে চায় তাহলে শাড়ি পড়তে হবে।শাড়ি ছাড়া অন্য কোনো জামাকাপড় যেন না পড়ে।প্রাচ্য মাথা নিচু করে খাদিজা কথা শ্রবন করেছিল।কারণ সে শাড়ি ক্যারি করে চলতে পারে না।সবচেয়ে বড় কথা সে শাড়ি পড়তে পারে না।সব জায়গা সে লেহেঙ্গা পড়ে যেত।শুধু গায়ে হলুদের রাতে শাড়ি পড়েছে।তাও তিনজনে মিলে শাড়ি পড়িয়েছে।এখন এবাড়িতে তাকে কে শাড়ি পড়িয়ে দিবে।শ্বাশুড়ি যদি বলে সে শাড়ি পড়তে জানে না।তাহলে একগাদা বকা শুনতে হবে।তাই ড্রেসিং টেবিলের আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে শাড়ি পড়তে থাকে।অনেক রকম ভাবে টাই করে।কিছুতে পাচ্ছে না।এক সময় সে হয়রান হয়ে যায়।বসে পড়ে টুলে।

তৃণ গোসল করে ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে এসে দেখে প্রাচ্য এলোমেলো হয়ে বসে আছে।বুকে শাড়ি নেই,পেট, পিঠ স্পর্শ দেখা যাচ্ছে।প্রাচ্য’র পিঠে সেই কালো তিলটা চুম্বক মত টানছে।নিজেকে সামলিয়ে খাটের উপরে বসে পড়ে তৃণ।তোয়ালে দিয়ে চুল মুছতে থাকে।আয়নার ভিতরে তৃণ দেখে প্রাচ্য উঠে আসে।এলোমেলো শাড়ি হাতে নিয়ে তৃণ সামনে এসে দাঁড়ায়।তৃণ ভ্রু কুঁচকে তাকায়।প্রাচ্য বিরক্ত নিয়ে বলল,
-” শাড়ি পড়তে পাচ্ছি না।একটু পড়িয়ে দেয় প্লিজ।”

হাতের থেকে তোয়ালে রেখে তৃণ বলল,
-” আমি শাড়ি পড়াতে পারি না।”
-” তুই শাড়ি পড়াতে পারিস বলেই তোর কাছে এসেছি।”
-” কে বলছে আমি শাড়ি পড়াতে পারি!”
-” তুই নিজেই একবার বলেছিস।এখন এত কথা না বলেই শাড়ি পড়িয়ে দেয়।”
প্রাচ্য’র পেটে দিকে গভীর চোখে একবার তাকিয়ে চোখ সরিয়ে নেয় তৃণ ।এখন যদি সে প্রাচ্য কে শাড়ি পড়িয়ে দেয়।তাহলে নিশ্চয়ই এখন কোনো অঘটন ঘটিয়ে ফেলবে।সে প্রাচ্যকে কাটকাট জবাব দেয়,
-” বলছি তো আমি পারি না।”
প্রাচ্য মন খারাপ করে চলে যায়।আয়না দাঁড়িয়ে আবার টাই করতে থাকে শাড়ি পড়ার জন্য।তৃণ কতক্ষণ ধরে দেখে এসব,বিরক্ত নিয়ে এগিয়ে আসে। প্রাচ্য হাত থেকে শাড়ি কুচি গুলো নিয়ে নেয়।প্রাচ্য মুচকি হাসে।প্রাচ্য’র সামনে হাটু গেঁথে বসে কুচি করতে থাকে।কুচি করার শেষে কুচি গুলো প্রাচ্য’র হাত দিয়ে বলল,
-” গেঁথে নে।”
প্রাচ্য ভেবেছে হয়তো তৃণই গেঁথে দিবে।কিন্তু তা না করে তার হাতে তুলে দেয়।মনে মনে বিড়বিড় করে সে বলল,
-” আমায় স্পর্শ করলে কি জাত যাবে না’কি তোর।”
তৃণ ভ্রু কুঁচকে তাকায়।প্রাচ্য হেসে বলল,
-” না তাকিয়ে কাজ কর।”
তৃণ খুব সুন্দর করে প্রাচ্যকে শাড়ি পড়িয়ে দেয়।প্রাচ্য আয়না দাঁড়িয়ে চোখে কাজল দেয়।ঠোঁটে গাঢ় লাল লিপস্টিক দেয়।লিপস্টিক দিতে আঁড়চোখে তৃণ দিকে তাকায়।না তৃণ তার দিকে তাকাচ্ছে না।তাকালে কি হবে? বউ তারেই।একটু আদর করলে কি হয়? যখন বউ ছিলাম না তখন তো ঠিকই সাজেকে কিস করেছিস আর এখন বউ হয়ে কাছে একবার ও আসি না।তুই কাছে আসলে কি বারণ করবে নাকি? আমি এক জন মেয়ে মানুষ! আমি নিজে তোর কাছে যেতে পারি নাকি।
প্রাচ্য যেয়ে তৃণ সামনে দাঁড়ায়।তৃণ ভ্রু কুঁচকে তাকায়।প্রাচ্য বলল,
-” কেমন লাগছে আমায়!”
-” বাঁদুরে মত!”
প্রাচ্য তৃণ চুল টেনে ধরে বলল,
-” আল্লাহ কি তোকে মানা করছে সুন্দর ভাবে প্রশংসা না করার।”
তৃণ চুল ছাড়াতে ছাড়াতে বলল,
-” সুন্দর লাগলে অবশই বলতাম।তোকে যেমন লাগছে তেমনি বলছি।”
প্রাচ্য আবার চুল খামচে ধরে।তৃণ এবার প্রাচ্য পেট খামচে ধরে।ব্যথা পেয়ে প্রাচ্য তৃণ’র চুল ছেড়ে দেয়।চেহারা কাঁদো কাঁদো করে বলল,
-” কুত্তা!আমার মাংসে নিয়ে ফেলছিস।”
-” কামড় দি নই তার জন্য শোকর কর। দ্বিতীয় বার চুল ধরলে তোর পেটে অবস্থা বেহাল করে ফেলব।”
-” তোর চুল একটা আজ রাখব না।সব ছিঁড়ে ফেলে টাক করব।”
এটা বলে এগিয়ে যায় প্রাচ্য।তৃণ নিজেকে বাঁচাতে খাটের উপরে উঠে যায়।প্রাচ্য শাড়ি তুলে খাটের উপরে উঠে আসে।হাতাহাতির মধ্যে তৃণ বুকের উপরে প্রাচ্য পড়ে যায়।প্রাচ্য’র ঠোঁট যেয়ে লাগে তৃণ’র গালে।এমন ঘটনায় প্রাচ্য লজ্জা পায়।চোখ তুলে তৃণ দিকে তাকায়।তৃণ চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে।লজ্জা মাথা নুয়ে ফে লে তৃণ’র বুকে।দুহাত দিয়ে তৃণ শার্ট খামচে ধরে।তৃণ একহাত চলে যায় প্রাচ্য’র কোমরে।প্রাচ্য সারা শরীর কাঁপুনি দিয়ে উঠে।শিরা উপশিরা শিহরণ জাগায়।
প্রাচ্য কে নিচে ফেলে তৃণ নিজের ভর ছেড়ে দেয় প্রাচ্য’র উপরে।কপালে উপর থেকে ভেজা চুল গুলো আঙ্গুল দিয়ে সরিয়ে ফেলে।কপালে চুমু খায়।প্রাচ্য তৃণ’র পিছনের শার্ট খামচে ধরে।তৃণ প্রাচ্য’র ঘাড়ে চুমু খায়।বুকের উপর থেকে শাড়ি সরিয়ে যেখানে চুমু খায়।পেটের উপরে থেকে শাড়ি সরিয়ে ফেলে।খামচে দেওয়া জায়গা লাল হয়ে গেছে।রক্ত জমাট ধরেছে।সেখানে চুমু খায়।প্রাচ্য’র নাভিতে মুখ ডুবায় তৃণ।প্রাচ্যদুহাত দিয়ে তৃণ’রর চুল খামচে ধরছে।ঘন ঘন নিশ্বাস ফেলছে প্রাচ্য।সে ভাবতেই পারেনি তৃণ তার এত কাছে আসবে।তৃণ প্রতিটা ছোঁয়া শিহরণ জাগাচ্ছে।তৃণ কামড় বসায় প্রাচ্য’র পেটে।ব্যথায় ‘আহ ‘ করে উঠে।তৃণ প্রাচ্য দিকে ঘোর লাগা চোখে তাকায়। তৃণ যেন হুস জ্ঞান বলতে কিছু নেই।ঘোর লেগেছে প্রাচ্যকে এভাবে দেখে।চোখ যায় প্রাচ্য’র ঠোঁটের দিকে। ঠোঁট দুটো খুব কাঁপছে। আর তৃণকে খুব করে টানছে।এগিয়ে যায় প্রাচ্যর ঠোঁট দুটো আঁকড়ে ধরার জন্য।প্রাচ্য’র চোখ যায় দরজা দিকে।দরজা খোলা।এভাবে তারা এত কাছে। হুট করে যদি কেউ চলে আসে।ব্যপার খারাপ লাগছে।তৃণ প্রাচ্য’র ঠোঁট গুলো এমন সময় নিজের দখলে নিবে তখন প্রাচ্য বলল,
-” কি করছিস তৃণ! প্লিজ ছাড়,,,,!”
প্রাচ্য এই কথাটে তৃণ হুস ফেরে!ঘোর কেটে যায়।নিজের দিকে তাকায়।সে প্রাচ্য বুকের উপরে।প্রাচ্যর নিশ্বাস তার মুখে আঁচড়ে পড়ছে।দ্রুত উঠে পড়ে।অন্য দিকে তাকিয়ে বলল,
-” আ’ম স্যরি।প্লীজ আমায় ভুল বুঝিস না।ক্ষমা করে দিস।দ্বিতীয় বার আবার একই ভুল করেছি।প্লিজ ক্ষমা করে দিস।”
এটা বলে তৃণ বেরিয়ে যায়।প্রাচ্য কান্না করে দেয় তৃণ কথা শুনে।প্রাচ্য খুব ভালো করেই বুঝেছে তার এই কথাতেই তৃণ খুব খারাপ লেগেছে।তৃণ হয়তো ভেবেছে প্রাচ্য আগের মত রিয়েক্ট করবে।প্রাচ্য কে যে তৃণ বাকি কথা শেষ করতে দেয়নি।তার আগেই… সে তো তৃণকে বলছে চেয়েছে ‘দরজা খোলা আছে কেউ চলে আসবে।’ পুরো কথা শেষ করার আগেই তৃণ… সে নারাজ ছিল না এসবের জন্য।সে নিজেই চেয়েছে তৃণ তার কাছে আসুক,ভালোবাসুক।তাহলে তার সাথে কেন এমন হয় সবসময়।

চোখে পানি মুচে, ঠোঁটের লিপস্টিক মুচে নিচে নামে।সবাই খেতে বসেছে।তৃণ পাশে তিন্নি বসে আছে।তাই সে তনয়ার সাথে বসে।খাবার খাচ্ছে আর আড়চোখে তৃণকে দেখছে। তৃণ তার দিকে তাকাচ্ছেই না।তার খুব খারাপ লাগে। সে কয়েক লোকমা খেয়ে উঠে চলে যায়।তৃণ প্রাচ্য’র যাওয়ার দিকে একবার তাকিয়ে আবার খাওয়ায় মনে যোগ দেয়।

সবাই মিলে লুডু খেলছে।।প্রাচ্য দুপুরের পর থেকে রুম থেকে আর বের হয়নি।ড্রয়িং হাসি আওয়াজ পেয়ে সে বের হয়।তৃণ আর তিন্নি দুজন দুজনে গা ঘেঁষে বসে কথা বলছে আর লুডু লেখছে।প্রাচ্য খুব খারাপ লাগছে।চোখের পাতা বন্ধ করে দুফোটা অশ্রু ফেলে। সে ভেবেছে তৃণ হয়তো খেয়ে রুমে আসবে।কিন্তু আসে নি।প্রাচ্যকে দেখে তনয়া বলল,
-” ভাবি দাঁড়িয়ে আছো কেন? বসো আমাদের সাথে!”
তিন্নি বলল,
-” ওর এখানে কোনো কাজ নেই।তুমি যেয়ে খালামণিকে রান্না কাজে সাহায্য করো।”
প্রাচ্য যায়নি। সে দাঁড়িয়ে থাকে।প্রাচ্য ভেবেছে হয়তো তৃণ তাকে ডাকবে।কিন্তু তৃণ মন দিয়ে খেলছে।প্রাচ্য যে এখানে আছে তৃণের চোখেই পড়ছে না।কিচেনে খাদিজার কাছে যায়।খাদিজা প্রাচ্যকে চা বসাতে বলেই রুমে চলে যায়।প্রাচ্য ওদের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে কাজ করছে।শাড়ির আঁচলটা গ্যাসের চুলায় লেগে আগুন ধরে যায়।তৃণ খেলার মাঝে মাঝে প্রাচ্য দিকে তাকায় প্রাচ্যর অলক্ষ্য। প্রাচ্য শাড়ি আগুন লেগেছে দেখে সে দৌড়িয়ে যায়।হাত দিয়ে আগুন নিভাতে থাকে।প্রাচ্য ভয় পেয়ে কেঁদে দেয়।তৃণ ধমকের সুরে বলল,
-” কাজ করতে যখন পারিস না তখন কিচেনে ঢুকিস কেন? ”
খাদিজা চেঁচামেচি আওয়াজ শুনে বেরিয়ে আসে।আগুনের কথা শুনে প্রাচ্যকে কয়েকদফা বকতে থাকে।তৃণ মেজাজ গরম করে বলল,
-“মা তোমার এই বকাবকি ছাড়া কি কোনো কাজ নেই।কিছু একটা ফেলেই শুধু বকে যাও।প্রাচ্য’র শুধু দোষ গুলোই ধরতেই থাকো।ওর গুণ গুলো কি তোমার চোখে পড়ে না।তোমার মন রাখার জন্য শাড়ি পড়ে।তোমার মন রাখার জন্য ভোর পাঁচটা ঘুম থেকে উঠে।তারপর কেন এমন করছো প্রাচ্য’র সাথে।”
ছেলেকে রেগে যেতে দেখে খাদিজা আর কোনো কথাই বলল না।চুপচাপ সেখান থেকে বেরিয়ে আসে।সবাই বেড়িয়ে যায় তারাদুজন ছাড়া।তৃণকে এভাবে রেগে যেতে দেখে প্রাচ্য খুব ভয় পেয়ে যায়।নিচের দিকে তাকিয়ে নিরব কান্না করতে থাকে।
-” কোথাও লাগেনি তো, তোর? ”
তৃণ’র এই শীতল কন্ঠে শুনে প্রাচ্য চোখ তুলে তাকায়।প্রাচ্য মাথা নাঁড়িয়ে ‘ না ‘ জানায়।তৃণ এগিয়ে এসে প্রাচ্য’র চোখের জল মুছে দিয়ে বলল,
-” শাড়ি পড়ার প্রয়োজন নেই। ”
-” মা বকবে।”
-” বকুক।আমি যা বলছি তাই করবি। একটু জন্য কতবড় বিপদ থেকে বাঁচলি।”
প্রাচ্য’র চোখ যায় তৃণ হাতের দিকে।হাত পুড়ে গেছে।প্রাচ্য তৃণ হাত ধরে দেখে অনেক খানি পূড়ে গেছে।প্রাচ্য ফ্রিজ থেকে বরফ এনে লাগিয়ে দেয়। কান্না করতে করতে বলল,
-” আমার জন্য তোর হাত পুড়ে গেছে।”
-” আরে পাগলী কান্না থামা।সামান্যই পুড়ে গেছে। কিছু হবে না আমার।”
নীলের কেন জানি বার বার স্বপ্নের কথা মনে পড়ছে।সে তো স্বপ্নকে ভালোবাসে না।তাহলে কেন এত স্বপ্নকে তার মনে পড়ছে। সে তো সুরওয়ালা কে ভালোবাসে। আর কারো কথা ভাবলেই কি ভালোবাসা হয় না’ কি।কি সব ভাবছে?
তার এসব ভাবনার ব্যাঘাত ঘটায় মোবাইলের রিংটোন আওয়াজে।সেই অচেনা নাম্বার থেকে ফোন আসছে।এই ফোন সব সময় ভুল সময়ে আসে।বিরক্তি নিয়ে ফোন ধরে।ওপাশ থেকে বলল,
-” আমায় নিয়ে এতক্ষণ ভাবছিলে তাই তো।”
নীল ভ্রু দুটো সাথে কপালে সুক্ষ্ম ভাঁজ পড়ে।রুক্ষ কন্ঠে বলল,
-” আজিব।কে আপনি? যে আমি আপনাকে নিয়ে ভাববো। ”
-” আমি তোমার সব।আজকেই আসার সময়ই বলছি।”
নীল চুপ হয়ে যায়।এই কথাটা স্বপ্ন তাকে বলছে।তাহলে এই ছেলে কি করেই জানে।তারমানে কি,,,,,
-” আপনি।”
-” চিনেছো তাহলে!”
-” এত দিন আপনি আমায় ফোন করে বিরক্তি করেছেন? এটা যদি আরো দুদিন আগেই জানতাম তাহলে আপনার বারোটা বাজাতাম।”
স্বপ্ন হেসে বলল,
-” আবার কি জামের গোঁটার শরবত খাইয়ে বারোটা বাজাতে।”
-” দরকার হলে তাই করতাম।”
-” এভাবে অচেনা সেজে আমার সাথে কথা বলার মানে কি? ”
-” ভালোবাসি তাই।”
-“আমি বলছি না, আমি অন্য কাউকে ভালোবাসি।”
-” তাতে কি? আমি তোমাকেই ভালোবাসি।”
নীলের মেজাজ গরম হয়ে যায়।সে বলল,
-” কুত্তা ফোন কাট।না হলে ঢাকা যেয়ে তোর বেহাল করে আসবো।”
-” দাওয়াত রইল তোমার।এসো কিন্তু ঢাকাতে।অপেক্ষায় থাকব।”
নীল ফোন কেটে দেয়।রাগে গজ গজ করতে থাকে।স্বপ্ন আবার ফোন করে।আবার কেটে দেয়।এভাবে অনেকবার ফোন করে স্বপ্ন।বার বার নীল কেটে দেয়।শেষের বার নীল ফোন তুলে অনেক বাজে ভাবে গালি দিতে থাকে।গালি দিতে দিতে নীল হয়রান হয়ে যায়।স্বপ্ন বলল,
-“হয়েছে অনেক গালি দিয়েছো।আর দেওয়া লাগবে না।”
নীল এখন রাগে ফুঁসতে থাকে।স্বপ্ন বলল,
-” যে কথা বলার জন্য ফোন দিয়েছি সেই কথা শোন।”
নীল চিৎকার দিয়ে বলল,” কি?”
স্বপ্ন’র যেন কান ফেটে গেলো।তারপর সেই বিষয় কিছু না বলে স্বপ্ন বলল,
-” তোমার সুরওয়ালা কে জানো? ”
সুরওয়াল কথা শুনে নীলের রাগ গলে বরফ হয়ে যায়।সে উত্তেজিত হয়ে বলল,” কে আমার সুরওয়ালা।বলেন? ”
-” আরে! বলার জন্যই তো বলছি তোমাকে।”
-” কে আমার সুর ওয়ালা।বলেন প্লিজ।”নীলের কন্ঠে আকুলতা থাকে।
-” ঢাকাই আসলে বলল!”
-” না প্লিজ এখন বলেন? ”
-” এখন বলব না!
-” আচ্ছা এটা বলুন। সুরওয়ালা দেখতে কেমন? ”
-” বেশ হ্যান্ডসাম।তোমার সাথে ভালোমানাবে।”
-” ওহ!”
নীল এবার সন্দেহ চোখে বলল,
-” আপনি আমার সুরওয়ালাকে কিভাবে চিনেন।”
-” তোমার সুর ওয়ালা আমার বন্ধু। ”
-” মিথ্যে কথা বলছেন কেন? আমি আপনার সব বন্ধুদের কে চিনি।”
-” আরে তাকে তুমি দেখো নাই।”
-” বিশ্বাস করি না আপনার কথা।”
-” আচ্ছা তুমি আমার একটা কথা উত্তর দাও তো?”
-” হুম।”
-” সুর ওয়ালার সুর তুমি প্রথম কোথায় শুনেছো?”
-” সাজেকে?”
-” রাইট সাজেকে।সাজেকে পর তুমি আর কোথায় সুরওয়ালার সুর শুনেছো।”
-” প্রাচ্য আপুর বিয়ের রাতে।”
-” এবার তুমি বলো।সুরওয়ালা সুর শুনেছো সাজেকে। সে তো তোমাকে দেখেনি।তুমি তাকে দেখো নাই।তার মানে সেই সুর ওয়ালা জানে না তার সুর শুনে কেউ তার প্রেমে পড়েছে। সুর ওয়ালার কাছে এগুলো অজানা।তাহলে সে কিভাবে তোমাদের বাড়িতে এসেছে? আর সুর বাজিয়েছে।”
নীল ভাবতেছে স্বপ্ন তো একটা মিথ্যে কথা বলেনি।সত্যি তো সুর ওয়ালা কিভাবে তাদের বাড়ি চিনেছে। সত্যি কি প্রাচ্য আপুর বিয়ে রাতে সেই সুর ওয়ালা এসেছে।
সুর ওয়ালাকে সে যেমন দেখিনি সুর ওয়ালা তেমন ভাবে তাকে ও দেখিনি।তাহলে কি স্বপ্ন সত্যি বলছে।
নীল চুপ থাকতে দেখে স্বপ্ন বলল,
-” নীল আছো! ”
-” হুম!সুর ওয়ালা সত্যি কি এসেছে।
-” হুম।তোমার মুখে সেই সুরে বর্ণনা শুনে তাকে আমি তোমাদের বাড়িতে এনেছি। ”
-” তাহলে আমার সাথে দেখা করে নি কেন? ”
-” আমি মানা করেছি তাই?”
নীল উত্তেজিত হয়ে বলল,
-” কেন আপনি মানা করেছেন?”
-” আমি এত কষ্ট করে তোমার সুর ওয়ালা খুজে বের করেছি।তাকে কি এমনি এমনি তোমার হাতে তুলে দেব নাকি।”
-” কি চান আপনি?”
-” ঢাকায় আসলে বলব।এখন বায়।”
নীল কেন জানি স্বপ্ন কথা বিশ্বাস হচ্ছে না।তাই নীল প্রাচ্যকে ফোন করে জিজ্ঞেস করে সুরওয়ালাকে স্বপ্ন সত্যি সত্যি চিনে কি না। প্রাচ্য বলেছে, স্বপ্ন যা বলেছে সব সত্যি।নীলের সুর ওয়ালা স্বপ্নের বন্ধু।
# চলবে
# কাউছার স্বর্ণা।
পাষাণ হৃদয় যখন লিখছিলাম তখন ৪০০ উপরে সাড়া পেয়েছিলাম।আর এখন ২০০ উপরে উঠতে কষ্ট হয়।আপনার কি জানেন আপনা সাড়া দিলে লেখার উৎসাহ বাড়ে। ভুল হলে ধরিয়ে দিবেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে