স্বপ্নীল ৩৭

0
1182

স্বপ্নীল
৩৭

রোদ আর সমুদ্র বিয়ে অনেক্ষন আগে হয়ে গেছে।কিন্তু শিহাবের মা-বাবা চলে এসেছে শিহাব এখন আসেনি।তাই প্রাচ্য আর শিহাবের বিয়ে এখন হয়নি।এভাবে আরো দুইঘন্টা কেটে যায়।শিহাবের বাবার মোবাইলে তখনই একটা মেসেজ আসে।মেসেজে লেখা ছিল ‘ বাবা আমি এই বিয়ে করতে যাবো না।তোমার ফিরে এসো।’
এই মেসেজ দেখে শিহানের বাবা কিংকর্তব্যবিমূঢ় । তিনি বুঝাতে পাচ্ছে না শিহাবের এই মেসেজে কারণ।তারা বাড়িতে দেখে শিহাব এই বিয়ে করার জন্য কত পাগল।আর এখন সে ছেলে বলছে বিয়ে করবে না।হিসেব গড়মিল লাগছে।শিহাবের বাবা ছেলের মোবাইল ফোন দে।বন্ধ বলছে।মাথা কাজ করছে না।মির্জা বাড়ির লোক আর অপেক্ষা করতে পারল না।গ্রামের লোক কানা ঘোষা শুরু করে দিয়েছে।নীলের বাবা বলল,
-” শিহাবের আসতে আর কতক্ষণ লাগবে।মেহমান সবাই বিরক্তি বোধ করছে।ফোন করে জিজ্ঞেস করেন? কত দূর এসেছে।”
শিহাবের বাবা কি বলবে বুঝতে পাচ্ছে না।কি জবাব দেবে সে মির্জা ফ্যামিলির কাছে।নীলের বাবা বলল,
-” কি হলো!”
তিনি ফোন বাড়িয়ে দেয়।নীলের বাবা মেসেজে পড়ে একবার তার দিকে তাকায়।আরেকবার নিজের ফ্যামিলিরর দিলে।ভাইকে এভাবে তাকাতে দেখে তামিম বাবা এগিয়ে এসে মোবাইল টা নিয়ে মেসেজ দেখে।তিনি রাগান্বিত হয়ে বলল,
-” এসব মানে কি? ”
-…..”
-” আপনাদের ছেলে বিয়ে করবে না আগে বললেই হতো এত তামাশা করে আমাদের ফ্যামিলি মান সম্মান ডুবানোর অধিকার কে দিয়েছে? ”
এভাবে মির্জা ফ্যামিলি সবাই তাদের কে অপমান করে।তিনি মুখ বুঝে সহ্য করে নেয়।আজ নিজের ছেলের জন্য অপমানিত হওয়া লেগেছে।সোলোমান মির্জা কাছে ছেলে হয়ে ক্ষমা চেয়ে বিদায় নেয় তারা।মেয়ে বিয়ে ভেঙ্গে গেছে শুনে শায়লা জ্ঞান হারায়।তার ছেলে সাথেই বা এমন কেন হলো? প্রথমে ছেলে তারপর মেয়ে।এসব না মানতে ফেরে অসুস্থ হয়ে যায়।সবাই শায়লা রুমে নিয়ে যায়।সোলামান মির্জা বুকের ব্যাথা উঠে যায়।ডাক্তার এসে তাকে দেখে যায়। টেনশন করতে মানা করে। বিশ্রাম নিতে বলে।

শায়লা জ্ঞান ফিরলে স্বপ্ন তার সাথে দেখা করতে যায়।স্বপ্নকে তিনি নিজের ছেলের মতই দেখে।শুধু স্বপ্ন সবাইকে। শায়লা স্বপ্নকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে।স্বপ্ন তার মাথা হাত বুলিয়ে দেয়।সুযোগ বুঝে স্বপ্ন শায়লা তৃণ আর প্রাচ্য কথা বলল।তিনি বিস্মিত হয়ে বলল,
-” কি বলছো তুমি।প্রাচ্য যদি আগে থেকে তৃণকে পছন্দ করে থাকে তাহলে সে মিথ্যে কেন বলেছে আমায়? সে কাউকে ভালোবাসে না।”
-” আসলে আন্টি তখনই ওরা কেউ কাউকে ভালোবাসার কথা বলেনি।প্রাচ্য তখনই তৃণ বলেনি কথাটা আর তৃণ বলেনি।তাই প্রাচ্য সেদিন বলেছে তার পছন্দ কেউ নেই। তারপর তৃণ যখন শুনে প্রাচ্য বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে তখনই প্রাচ্যকে বলে।কিন্তু প্রাচ্য তখন মানা করে দেয় আপনাদের সম্মান কথা ভেবে।”
স্বপ্ন মিথ্যে বলে।কারণ যদি শায়লা বেগম শুনে তাদের মধ্যে জামেলা অন্য কিছু নিয়ে।তাহলে বিয়েতে কিছুতে রাজি হবে না।তিনি কেন অন্য কোনো মায়ে রাজি হবে না।বলবে যাদের মধ্যে এখনই এত জামেলা বিয়ের পর না জানি কি হয়।এই জন্য স্বপ্ন মিথ্যে বলল।
দুজন দুজনকে যখন ভালোবাসে তখন বিয়ে হয়ে গেলে জামেলা মিটে যাবে।
শায়লা প্রাচ্য ঢেকে পাঠায়।স্বপ্ন যেটা বলছে সেটা সত্যি কি না জানার জন্য।প্রাচ্য তাই বলল।তৃণ প্রথমে বিয়ে রাজি ছিল না। কিন্তু স্বপ্ন তাকে তখন বলল,
“তুই যদি এই বিয়ে না করিস তাহলে তোর সাথে আমাদের কারো সম্পর্ক থাকবে না।”
এই কথা শুনে বন্ধুত্ব রক্ষার্থে রাজি হয়।তার কাছে স্বপ্ন শুধু তার বন্ধু না।তার ভাই।এরকম একটা বিয়ে কেন? হাজার বিয়ে করতে পারবে? যদি স্বপ্ন তাকে বলে।

তার শায়লা বেগম শ্বশুর কে সব বলল।সবাই মত দেয়।যেখানে প্রাচ্য রাজি সেখানে তারা অমত করে কি লাভ? মির্জা সোলোমান কখনো নাতনী মনের বিরুদ্ধ কিছু করে না।

মির্জা বাড়িতে তিন তিনটা বিয়ে হয়।একটা সবার অজানা। দুটো বাসর ঘর সাজানো হচ্ছিল।ফুলে ফুলে মৌ মৌ করছে বাসর ঘর।ফুলের বিছানায় বঊ সেজে বসে আছে প্রাচ্য।অপেক্ষা করছে তার ভালোবাসার মানুষটির জন্য।অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে তৃণ রুমে প্রবেশ করল। প্রাচ্য’র দিকে একবার তাকিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে ফ্রেশ হওয়ার জন্য।ফ্রেশ হয়ে বাইর হলে প্রাচ্য’র তার কাছে আসে।কথা বলতে তার জড়তা কাজ করছে,আগে বন্ধু ছিল যা নয় তা বলা যেত এখন স্বামী। স্বামী বলতে তার পুরো শরীর শিহরিত হয়।
তৃণ’র পা ছুয়ে সালাম করার জন্য নিচু হয়ে হাত বাড়ালে তৃণ দূরে সরে যায়।প্রাচ্য উঠে দাঁড়িয়ে বলল,
-” পা সরিয়ে নিলি কেন? ”
-” এসব করার দরকার নেই।”
-” এটা নিয়ম বাসর ঘরে স্বামীকে সালাম করার।”
তৃণ তার কোনো কথার উত্তর না দিয়ে দরজা খুলতে হাত বাড়ায় বাহিরে যাওয়ার জন্য।তখনই প্রাচ্য বলল,
-” তুই এখন কোথায় যাচ্ছিস?
-” বাইরে! ”
-” মাত্র বাইরে থেকে এলি।এখন আবার বাইরে যাবি কেন? ”
-” তোকে বলতে হবে আমি কেন বাইরে যাবো! ”
প্রাচ্য এই কথা প্রতিত্তুর কিছু বলল না।কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলল,
-” আজকে আমাদের বাসর রাত! ”
তৃণ বলল,
-” তো! ”
তৃণ এই কথায় অপমানবোধ করে সে। কথাটা এভাবে বলাতে তার গায়ে লাগে।তৃণ তিরিক্ষ মেজাজে বলল,
-” বাসর রাত মাই ফুট। এই বিয়ে না আসলে ভালো হত।অন্তত এই জঞ্জালটা মধ্যে পড়তাম না।”
-” আমাকে বিয়ে করা তোর জঞ্জলার মনে হচ্ছে।”
-” তাহলে কি হবে? তোকে বিয়ে করার কোনো ইচ্ছা ছিল না আমার? শুধু বন্ধুত্ব বাঁচাতে স্বপ্ন কথা রাখতে বিয়ে করেছি তোকে?
-” তার মানে দয়া করে আমায় বিয়ে করে আমায় বিয়ে করেছিস।
-” তো কি ভালোবেসে বিয়ে করতে যাবো তোকে? আর তুই কেন আমায় বিয়ে করতে রাজি হয়েছিস? আমি লুচ্চা,চরিত্র খারাপ,লম্পট, আর জানি কি কি বলেছিস।তাহলে বিয়ে এত খারাপ ছেলে কে বিয়ে করলি কেন?”
প্রাচ্য কান্না করতে করতে বলল,
-” আমি ভুল বলেছি! প্লিজ মাফ করে দেয়।”
তৃণ অট্রহাসি দিয়ে বলল,
-” হা হা হা। ভুল বলছ নয় তুই।তুই ঠিক ছিলি।আমি নিজে ও জানি কত মেয়ে সাথে আমার রিলেশন।আর শুয়েছি তো কতে মেয়ে সাথে,,,
প্রাচ্য দুইহাত দিয়ে কান চেপে ধরে বলল,
-” প্লিজ চুপ কর! ”
তৃণ প্রাচ্য’র কান থেকে হাত সরিয়ে বলল,
-” আরে শোন।এখন আরো বলার বাকি আছে? সেগুলো শোন।
প্রাচ্য কান্না করতে করতে বলল,
-” আমি শুনতে চাই না কিছু। ”
তৃণ আর কিছু বলল না।সে দরজা খুলে বেরিয়ে যায়।প্রাচ্য তার যাওয়াএ দিকে তাকিয়ে থেকে হাউমাউ করে কান্না করতে থাকে।তৃণ কাছে সে জঞ্জলা, স্বপ্নের জন্য তাকে তৃণ বিয়ে করেছে। এসব মানতেই পাচ্ছে না সে।তৃণ ছাদের যেয়ে দোলনা ধপ করে বসে পড়ে। সিগারেট খেতে থাকে।প্রাচ্য তার এমন না করলে আজকের রাতটা অন্য রকম হতো।প্রাচ্য করা অপমান, চড় সব মুখ বুঝে সহ্য করেছিল।তারপর প্রাচ্য সহ্য সীমা ফেরিয়ে গেছে।যখনই প্রাচ্যকে মন থেকে সরিয়ে দিয়েছে।ভাববে না তার কথা তখনই প্রাচ্য’র ভুল ভাঙ্গল।ভিডিও গুলো দেখে প্রাচ্য’র ভুল ভেঙ্গেছে।কিন্তু তার কথা নয়।তার মানে প্রাচ্যকে বিশ্বাস করে না।যেখানে বিশ্বাস নেই সেখানে ভালোবাসা নেই।তার জীবনে প্রাচ্য কোনো জায়গা নেই।

কাউছার স্বর্ণা

গল্পেটা দুপুরে পোষ্ট করেছিলাম।আমি মনে করেছি পোস্ট হয়েছে গেছে।তাই মেমোর থেকে ডিলেট করে দিয়েছি।এখন দেখি নাই।আমার মাথা আকাশ ভেঙ্গে পড়েছে।কিছুতে মাথা আসছে ৩৭ পর্ব কিভাবে লিখব।অনেক আগে লিখে রেখেছি তার এই পর্ব কি লেখেছি আমার মনে নেই।কিছুতে মনে করতে পাচ্ছি না।৩৭ পর্ব অন্যান্য পর্ব গুলো থেকে দ্বিগুন বড় করে লিখেছি।আর সেটার এই অবস্থা হয়েছে।খুব খারাপ লাগছিল।এখন এইটুকু কি লেখছি না লেখছি মাথা আসে না।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে