স্বপ্নীল
২৯
-” কালকে স্বপ্নকে এভাবে মারলি কেন?
প্রাচ্য কথায় নীল তার দিকে তাকিয়ে ফিরে বলল,
– ” তোমার ওই বজ্জাত বল্টুকে যখন এটা বলেছে তাকে আমি মেরেছি, তাহলে নিশ্চয় বলেছে তাকে কেন মেরেছি আমি ”
রোদ বলল,
– ” স্বপ্ন বলেছে,আর স্বপ্ন তোমাকে কিস করেছে তার কারণ তুমি জানো!তুমি তাকে গোবরে স্তুপ না ফেললে সে এই কাজ টা করতো না।”
– ” মানছি আমি এটা করেছি তার মানে এটা না যে হুট করে অপরিচিত একটা মেয়েকে কিস করে বসবে।শালা একটা লুচ্চা ব্যাটা! আল্লাহইই জানে তোমাদের এই লুচ্চা ফ্রেন্ড না জানি কত মেয়েকে এই ভাবে কিস করেছে! ”
-” ব্যাস!”
প্রাচ্য হাত উঠিয়ে রাগি সুরে বলল।বোনকে রাগতে দেখে নীল চুপ হয়ে যায়।রোদের ইচ্ছা করছে নীলকে আচঁড়ে বক্তা বানিয়ে ফেলতে।কত সাহস হলে মেয়েটা আমাদের সামনে আমাদের স্বপ্নকে লুচ্চা বলে।চরিত্রের দাগ লাগায়।আজ সমুদ্রের বোন বলে সব কিছু সে হজম করে নিল।প্রাচ্য এবার খুব শান্ত সুরে বলল,
– ” স্বপ্ন খুব ভালো ছেলে। সে সবার থেকে আলাদা। তুই তাকে চিনতে ভুল করছিস।”
নীল তার ঠোঁট দেখিয়ে বলল,
-” এই দেখো তোমার ভালো ফ্রেন্ড স্বপ্নের কাণ্ড।কামড় দিয়ে ঠোঁট কেটে ফেলেছে।
-“ওই সব বাদ দে!এবার বল তুই কাকে ভালোবাসি? কে সেই ব্যক্তি?
নীল এবার কোলের উপর থেকে বালিশ সরিয়ে উঠে দাঁড়ায়।জানালার খুলে দিয়ে বাহিরে দিকে তাকিয়ে বলল,
– ” তাকে আমি চিনি না।এবার ও দেখা হয়নি।সে দেখতে কেমন তাও আমি জানি না।শুধু জানি তাকে ভালোবাসি আমি।”
প্রাচ্য বসা থেকে উঠে এসে নীলের কাঁধে হাত দিয়ে তার দিকে ঘুরিয়ে বলল,
– “সে জানে তুই তাকে ভালোবাসি! ”
– ” তার নাগাল ফেলে তো জানবে।”
– ” আমি না কিছু বুঝতে পাচ্ছি না।কিছই জানে না তাহলে এটা কেমন ভালোবাসা। আর তোর সাথে পরিচয় কি ভাবে হয়েছে।”
নীল সব খুলে বলল।প্রাচ্য শুনে হতভম্ব।সে বলল,
-“কার জন্য অপেক্ষা করবি তুই।তুই তাকে চিনিস না! সে ও তোকে চিনে না। আর দেখা হবে কি না আল্লাহই জানে?”
নীল একটা দ্বীঘশ্বাস ফেলে।তার প্রাচ্য আপু তো ভুল কিছুই বলে নি।সত্যি কি তার সাথে দেখা হবে না। একবার কি বলতে পারব না ভালোবাসি তাকে।নিজের অজান্তে মন দিয়ে ফেলেছে।তার সুর যে হৃদয়ের গেঁথে গেছে।
রোদ বলল,
-” নীল তুমি এই যুগের মেয়ে হয়ে একটা সুরে প্রেমে পড়ে একজন অচেনা লোককে ভালোবেসে ফেলেছো।আর সেই সুর ওয়ালা তো বিবাহিত কোনো পুরুষ হতে পারে! আবার সে কোনো মেয়ে হতে পারে! ”
নীল এবার রোদের দিকে তাকায়।কি বলবে সে এদের কে? উত্তর দেওয়ার মত কিছু নেই! প্রাচ্য বলল,
– ” ধর, তুই তাকে খুজে পেয়েছিস সে যদি কোনো টাকলা, ভুঁড়িওয়ালা হয়। তখন কি তাকে ভালোবেসে বিয়ে করতি যাবি।”
নীল ভ্রু কুঁচকে তাকায় প্রাচ্য’র দিকে।সে বলল,
– “এমন ও হতে পারে সে কোনো হ্যান্ডসাম যুবক।”
-” হতে পারে সে তুই কত পার্সেন শিওর দিয়ে বলতে পারবি।”
-“আমি এত কিছু জানি না।আমি তাকেই ভালোবাসি।আমার মন বলছে তার সাথে আমার দেখা হবে।তখনই দেখে নেবো সে দেখতে কেমন?দয়া করে এ নিয়ে তোমরা এখন কোনো কথা বলবে না।এখন তোমরা আসতে পারো! ”
প্রাচ্য খুব ভালো করে জানে তার বোনকে বুঝিয়ে লাভ নেই।তার মাথা কিছু ঢুকলে বের করা সম্ভব নয়।জোঁকের মত মাথা ঝেকে বসে থাকে।তারা দুজন নীলের রুম থেকে বেরিয়ে এসে স্বপ্ন রুমে আসে।রোকেয়া বেগম নিজের হাতে স্বপ্নকে স্যুপ খাওয়াচ্ছে জোর করে।তার পাশে তার ছোট মাও আছে।প্রাচ্য তাদের দেখলে প্রান জুড়ে যায়।তিন জা’র কি মিল।সবার ছেলে মেয়েকে সমান তালে ভালোবাসে।সবাই মিলেমিশে একান্নবর্তী পরিবারে বাস করে।এখন একান্নবর্তী পরিবার দেখাই যায় না।সবাই অনু বা একক পরিবার গড়ে।প্রাচ্য কে রুমে ঢুকতে নিলে রোকেয়া বেগম বলে,
-” দেখো ত প্রাচ্য মা! তোর এই বন্ধু টা কিছুতে খেতে যাচ্ছে না।”
-” হ্যাঁ রে স্বপ্ন! কেন খেতে যাচ্ছিস না।আমার বড় মা তোকে কত ভালো বেসে খাওয়াচ্ছে।তাড়াতাড়ি খেয়ে নেয়।”
– “আর কত খাবো।সেই তখন থেকে খেয়ে যাচ্ছি।”
স্বপ্নকে খাইয়ে দিয়ে তারা চলে যায়।তখনই ধূসর আর তৃণ সেখানে আসে।স্বপ্ন বলল,
– “কিছু জেনে ছিস নীলের কাজ থেকে। ছেলেটা কে? ”
প্রাচ্য স্বপ্নকে পাশে বসে মন খারাপ করে বলল,
-” হুম!”
সবাইকে সব টা খুলে বলে সে।তারপর বলল,
-” স্বপ্ন তুই নীলকে ভুলে যায়।আমি জানি নীল তোর ভালোবাসা কিছুতে গ্রহণ করবে না।তোর আগে সে অন্য কাউকে ভালোবেসে ফেলেছে।”
এটা বলে সে স্বপ্ন’র দিকে তাকায়! হ্যাঁ সে সত্যি দেখতে পাচ্ছে স্বপ্ন মুখে হাসি।কিন্তু সে ত হাসি কিছু বলে নি।যে টা বলেছে সেটা শুনে স্বপ্ন’র মন খারাপ হওয়া উচিত। কিন্ত……তখনই সে রোদের দিকে তাকায়।রোদ ইশারা বুঝায় সে কিছু বুঝতে পাচ্ছে না এদের হাসির কারণ কি? রোদের ইশারা সে তৃণ আর ধূসর দিকে তাকায় তারা ও হাসছে।তার মানে কি?
– ” বুঝতে পাচ্ছি না হাসছিস কেন তোরা? ”
ধূসর প্রাচ্য’র মাথায় গাট্টা মেরে বলল,
– ” তোরা দুই গাধা জীবনে কিছু বুঝতে পেরেছিস! যে আজকে বুঝতে পারবি।”
প্রাচ্য চোখ গরম করে তাকায়। রোদ বলল,
– ” আমরা গাধা হলে,তোরা হলি গাধী। ”
এটা বলে রোদ প্রাচ্যকে টেনে নিয়ে যেতে যেতে বলল,
-” আমাদের এত বুঝার দরকার নাই।তোরা দুজন বসে বসে বুঝপাতা খা!”
-“সাজেকের সেই মাউথ অর্গানের সুরওয়ালা আমি।”
স্বপ্ন বলল।তারা দুজন দরজার সামনে ছিল।স্বপ্ন’র কথা থমকে দাঁড়ায়।সঙ্গে সঙ্গে তাদের দিকে ঘুরে দুজনে এক সঙ্গে উত্তেজিত হয়ে বলল,
– ” কি?
দুজন এবার তাদের সামনে এসে বলল,
-” মানে? ”
তৃণ বলল,
-“মানে খুব সিম্পল।নীলের সেই সুর ওয়ালা আর কেউ নয়।সে হলো স্বপ্ন।”
দুজনে অবাক হয়ে জোরে চিল্লিয়ে বলল,
– ” কি?
তার পর প্রাচ্য বলল,
– ” কি করে এটা সম্ভব।”
ধূসর বলল,
– ” অসম্ভবের কি আছে?”
রোদ বলল,
-” স্বপ্ন মাউথ অর্গান বাজায় আর সেটা আমরা জানি না! সেটা কি করে হয়।”
– ” সব কিছুতে তোদের মেয়েদের কে বলতে হবে না কি! ”
প্রাচ্য বলল,
– ” তাহলে ত এই খবর নীলকে দেওয়া লাগে! ”
স্বপ্ন বলল,
– ” প্লিজ এখন কিছু বলিস না।”
– ” কেন?
স্বপ্ন কিছু বলল না।শুধু রহস্যময়ী একটা হাসি দিল।তাতে সব বন্ধু বুঝে গেলো স্বপ্ন কিছু একটা করতে চাইছে।
★★★
– “১৫ হাত শাড়ি প্যাঁচিয়ে সারাবাড়ি এরকম ঘুরঘুর করিস যেন এটা তোর শ্বশুর বাড়ি।সদ্য বিয়ে করে এসেছিস।”
সমুদ্রের প্রথম কথা রোদের কপাল কিছুটা কুঁচকে গেলো পরে ঠিক হয়ে যায়।রোদ কিছুতে বুঝতে না এই ব্যাটার সমস্যা টা কোথায়? যখন জিন্স টপস পড়ত তখন কথা শুনাতো আর এখন শাড়ি পড়েছি তাতে শুনাচ্ছে।আরে ব্যাটা তুই কি জানিস? এই রোদ সেদিন তোর কাছ থেকে যাওয়ার পর থেকে বিউটি পার্লার থেকে লোক এনে ৫ দিন ধরে শাঁড়ি পড়া শিখেছি।কোথায় তুই একটু মিষ্টি হেসে বলবি,বাহ! তোকে যে শাড়িতে খুব ভালো মানায়। পুরো বঊ বউ লাগে।তা না করে বলিস শাড়ি প্যাঁচিয়ে হাঁটি।আরে শালা হৃদয়ের চোখ মেলে একটা বার তাকাতে পারিস না। আন্টি যে কেন জানি তোর জন্মের সময় নিমপাতা রস খাইয়েছে।মিষ্টি কিছু খাওয়াইলে তো আজ মিষ্টি মিষ্টি কথা বের হতো।এত তেতো কথা বলতে পারতি না।
সমুদ্র তুড়ি বাজিয়ে রোদের হুস ফিরায়।
-” কার ধ্যানে মগ্ন ছিলি?
-“আপনার ধ্যানে!”
মিনমিন করে সে বলল।সমুদ্র বলল,
-” কি বললে তুই! ”
-” না কিছু না! ”
– ” আমার সাথে চল!”
– ” কোথায়? ”
– ” জাহান্নামে!”
-” জাহান্নামে যাওয়ার কোনো ইচ্ছা নেই আমার।জান্নাতে হলে যেতে পারতাম।”
সমুদ্র কিছু না বলে রোদকে নিয়ে যায় তা রুমে।তার জামা কাপড় কত গুলো আলমারি থেকে নিয়ে তাকে দিয়ে বলল,
-” এ গুলো ধুয়ে নিয়ে আস!”
” কি?
-“যা বলসি শুনতে পেয়েছিস।তাই দ্বিতীয় বার রিপিট করতে চাই না।”
– ” আপনার কি আমাকে কাজে বেটি জরিনায় মনে হয়।”
– ” কাজের ব্যটি জরিনা না, রহিমা মনে হয়। আমাদের বাড়িতে খেতে হলে কাজ করে খেতে হবে। ফ্রীতে কাউকে খাবার দি না।”
-” আপনি আমায় খাওয়ার খোঁটা দিচ্ছেন? ”
– ” এই জন্য লোকের ভালো করতে নেই।সমুদ্র তুই যে কেন রোদের ভালো করতে গেলি! ”
রোদ বুঝতে পাচ্ছে না সমুদ্র তার কি এমন ভালোর কথা বলছে। তাই অবাক হয়ে তাকিয়ে তাকে।সমুদ্র বলল,
– ” রোদ তুই কি জানিস! তোর পেটের মেদ বেড়ে যাচ্ছে।তোর শরীরের ফিটনেস রাখার জন্য কাজ করতে বলছি।তাতে তোর পেট এরকম ভুড়ি দেখা যাবে না।”
রাগে দুঃখে তার কান্না আসছে। তার এই সুন্দর ফিগার।আর তার পেটে কোনো মেদ নেই, স্লিম! আর সমুদ্র কি বলছে।তার পেট থেকে শাড়ি সরিয়ে সমুদ্রকে বলল,
-” সমুদ্র ভাই এবার ভালো করে আমার পেট দেখে বলেন! সত্যি কি আমার পেটে মেদ জমেছে!”
সমুদ্র কত ক্ষণ বিচক্ষণদের মত তাকিয়ে বলল,
– ” বেশি বেশি করে কাজ করবি।তাহলে তোর ফিটনেস ঠিক থাকবে।”
এটা বলে জামা কাপড় গুলো ধরিয়ে দিয়ে বলল,
– ফলো মি!”
এতগুলো কাপড় নিয়ে সে একা কি ভাবে নিয়ে যাবে।নতুন নতুন শাড়ি পড়েছে সে। শাড়ি পড়ে এত কাপড় চপড় নিয়ে হাঁটা মুশকিল।সে বলল,
-” সমুদ্র ভাই! আপনি যদি কিছু কাপড় চপড় নিতে তাহলে একটু ভালো হত।এত গুলো কাপড় নিয়ে হাঁটতে পারি না।”
সমুদ্র রাগী চোখে তাকায়।তা দেখে সে বলল,
– ” আমি নিজে নিতে পারবো।”
এটা বলে সে সমুদ্রের পিছন পিছন সিঁড়ি বেয়ে নামে।সোহাগী বলল,
– ” এ কি তুমি কাপড় চোপর নিয়ে কোথায় যাচ্ছো।”
রোদ ফানসে গলায় বলল,
– ” ধুতে! ”
– “ধুবে ভালো কথায়। তাই বলে তুমি যাচ্ছো কেন? ”
সমুদ্র এগিয়ে এসে বলল,
-” ছোট মা! তুমি জানো রোদ কত সুন্দর করে কাপড় চোপড় ধুতে পারে। আর সব চেয়ে বড় কথা রোদ এই কাজ টা করতে ভালো বাসে। রোদ আমার রুমে যেয়ে কি বলে জানো ছোট মা! ”
– ” কি বলে!”
– ” বলে সমুদ্র ভাইয়া। আমি জামা কাপড় ধুতে যাচ্ছি।তোমার কাপড় চোপড় গুলো দাও আমি ধুয়ে নিয়ে আসব।আমি কত বার মানা করলাম তারপর জোর করে কাপড় চোপড় নিয়ে আসল।আমার কোনো কথাই শুনলো না সে।”
রোদ দাঁড়িয়ে তার প্রান প্রিয় ভালোবাসার মানুষের বানোয়াট , মিথ্যে কথা শুনছে।
সমুদ্র আবার বলল,
-” ছোট তোমার কোনো কাপড় ধোয়া লাগবে।”
– ” হ্যাঁ, লাগবে। কেন?
-” সে গুলো নিয়ে আসো।রোদ খুব সুন্দর করে ধুয়ে দিবে।”
রোদ বলল,
– এ্যা
-” দেখলে ছোট মা! রোদ হ্যাঁ বলছে।কি রোদ ধুয়ে দিবে তো।”
সমুদ্রের চোখে ইশারা করে! জেনে সে ‘হ্যাঁ ‘ বলে।রোদ পড়ছে বিপাকে! কি বলবে সে।এখন যদি সত্যি বলে তাহলে এই বদ টা তাকে কাঁচা চিবিয়ে খাবে।তাই সে বলল,
– ” জ্বী আন্টি দিন।আমি আপনার মেয়ের মতই।মেয়ে হয়ে কি মায়ের কাজ করতে পারি না।”
সোহাগী আর কি বলবে।সমুদ্র তাকে অনেক কিছু বুঝ দে।তার সমুদ্রে নিজে গিয়ে সব কাপড় এনে রোদের কাছে দেয়।তখনই নীল আসে বলল,
– ” রোদ আপু সবার জামা কাপড় যখন ধুয়ে দিচ্ছো।তাহলে আমি কেন বাদ যাবো।এই নাও এগুলো ধুয়ে দিবে ভালো করে।”
এটা বলে নীল একক গাধা কাপড় রোদের কাছে দিয়ে উপরে চলে যায়।রোদ মনে মনে বলল,যেমন ভাই তেমনই মন।সব বদের হাড্ডি।
ভালোবেসে লাস্ট পর্যন্ত তাকে ধোপা গিরি করতে হচ্ছে।সমুদ্রকে পাওয়ার জন্য তা করতে সে রাজি।
শাড়ির আঁচল কোমরে গুঁজে পুকুরের শান বাঁধানোর ঘাটে রোদ জামা কাপড় ধুচ্ছিল।এটা নিয়ে সবাই হাসাহাসি করছিল।ধূসর পট পট করে কয়েকটা ছবি তুলে নেয়।তখন রোদের কানের কাছে এসে বলল,
-” সমুদ্র তোকে ধোপা বানিয়ে ছাড়ল। হায়রে এই তুই কাকে ভালো বাসলি।”
এটা বলে সে সরে আসে।রোদ তার দিকে রাগী রাগী চোখে তাকায়।আবার কাজে মন দেয়। তার পর সমুদ্রের দিকে তাকায়,স্বপ্ন আর সমুদ্রে কি নিয়ে কথা বলছে।সমুদ্র হাত নাঁড়িয়ে নাঁড়িয়ে কথা বলছে।ইস! কি সুন্দর লাগছে।।এই মানুষটার জন্য সে সব কিছু করতে পারবে।
– ” রোদ তোর পেটের এত সুন্দর একটা তিল আছে। না দেখলে বুঝতে পারতাম না।হেব্বি লাগছে কিন্তু তিলটা।”
ধূসর বলল। রোদ একবার ধূসরে দিকে তাকালো একবার পেটের দিকে তাকালো।হাতের কাপড়টা ঘাটে রেখে ধূসরে দিকে তেরে আসে।আর ধূসর দৌড়াতে দৌড়াতে বলল,
-” আরে ভাই দৌড়াছ কেন? সুন্দরের প্রশংসা দেখি করা যাবে না!”
সবাই তাদের দৌড়ানি দেখে হাসতে থাকে।শুধু একজনের মুখ খু গম্ভীর হয়ে যায়।রোদ বলল,
– ” বজ্জাত! তোকে কে বলছে আমার পেটের তিলে প্রশংসা করতে?এটা করবে আমার স্বামী।রুপের প্রশংসা করতে পারলি না।ওই দিকে চোখ দিলি কেন? ”
– ” আমি কই চোখ দিলাম।তুই দেখিয়ে রাখলে তো চোখ যাবে।”
রোদের দৌড়ানি খেয়ে সে আবার ঘাটে চলে আসে। উপরে দিকে থেকে রোদ নিচে পানি তাই দাঁড়িয়ে যায় ধূসর।রোদ এসে মারতে থাকে তাকে।হাতাহাতির মধ্যে দুজনে পানিতে পড়ে যায়।সবাই দৌড়ে আসে ঘাটে।তাদের দুজনকে তোলার জন্য! তৃণ আর প্রাচ্য হাঁত বাঁড়ায়। তখনই দুজন দুজনার ছোঁয়া পায়।কিছুক্ষণ তাকিয়ে দেখে চোখ নামিয়ে ফেলে।তার দুজনকে টেনে তুলে।
ধূসর বলল,
– ” বজ্জাত মাইয়া একে বারে পানিতে ফেলে দিলি।”
ভিজে গেছে তাই শাড়ি রোদের শরীরে লেপ্টে গেছে। শাড়ি টেনে দেয় গায়ে।তখনই তার চোখ যায় সমুদ্রের দিকে। লাল লাল চোখে তাকিয়ে আছে। চোখে দিয়ে আগুন বের হচ্ছে।এক্ষুনি যেন তাকে ভস্ম করে দিবে।পৃথিবী ধংস করে দিবে।রোদ ভয় পেয়ে চোখ নামিয়ে ফেলে।
সমুদ্র সবাইকে অবাক করে দিয়ে রোদকে কোলে তুলে নেয়। সমুদ্র কোনো দিকে ভ্রুক্ষেপ নেই।তার বন্দুরা অবাক পানে তাকিয়ে আছে সমুদ্রে কাজে।তাদের মনে হচ্ছে না এটা তাদের বন্ধু সমুদ্র।
রোদ সমুদ্রের গলা জড়িয়ে ধরে।আজকে তার মনে হচ্ছে পৃথিবীর সে সবচেয়ে বেশি সুখী মানূষ।কোনোদিন ভাবে নি সে এটা।ভাবনার বাহিরে অনাঙ্কিত কিছু ঘটে গেলে। সবার কাছে থেকে ভালো লাগে।আর সে অনাঙখিত জিনিস যদি ভালোবাসার মানুষটার কাছ থেকে পায়। তাহলে সেটা ভাষায় বলে প্রকাশ করা যাবে না।
https://www.facebook.com/groups/golpopoka/permalink/921248394972547/