স্বপ্নীল ২৮

0
1267

স্বপ্নীল
২৮
নিজের ঠোঁট দিয়ে স্বপ্ন’র ঠোঁট আকঁড়ে ধরে।তখনই স্বপ্ন নীলের ঠোঁট কামড়ে ধরে তাতে নীলের চোখ গুলো ছানাবড়া হয়ে যায়।চোখ খুলে তাকায় স্বপ্নের দিকে। তার চোখে মুখে দুষ্টুমির আভা।নীলের বুঝতে আর বাকি রইল না।এতক্ষণ স্বপ্ন ভং ধরেছে! যাতে সে কিস করেছে।নীলের খুব কান্না পাচ্ছে।নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করে।স্বপ্ন তাকে দুহাত দিকে ঝাপটে ধরে রেখেছে!নিজের হাত দিয়ে স্বপ্ন’র বুকে,পেটে আঘাত করতে থাকে। তারপর স্বপ্ন ছেড়ে দেয়।স্বপ্ন বলল,
– “এটা হলো আমাকে গোবর খাওয়ানোর শাস্তি! ”
নীল কান্না করতে দেখে স্বপ্ন বুঝতে পারে এটা ঠিক হয়নি করা।নীল বলল,
-” কেন আমার এত বড় সর্বনাশ করলেন?
নীলের এই কথা স্বপ্ন’র হৃদপিন্ড ছেদ করে উঠে।নীল কে হারানোর ভয় বুকের ভিতরে চেপে ধরে।
– “মেয়েদের কে স্পর্শ করা একমাত্র অধিকার থাকে তার স্বামীর! আর আপনি,,,,,
এটা বলে নীল কেঁদে দেয়।স্বপ্ন নীলের হাত ধরতে নিলেই ঝামটা মেরে ফেলে দেয়।
– ” আমি তোমায় সেই অধিকার দেবো?
নীল চোখ তুলে তাকায় স্বপ্নের দিকে।চোখে পানি মুছে বলল,
– ” মানে?
– ” যেদিন তোমার লালশাড়িতে বধুবেশে দেখেছি সেদিনে আমার হৃদস্পন্দন আমায় জানিয়ে দিয়েছে তুমি আমার।তোমার জন্মই হয়েছে আমার জন্য!ভালো বেসে ফেলেছি খুব বেশি তোমায়।ভালোবেসে সেই অধিকার দিতে চাই তোমায়।ভালো বেসেছি বলে এত বড় স্পর্ধা দেখাতে পেরেছি তোমার সাথে! না হলে এমন কিছু কোনো দিন এই স্বপ্ন করতেই না।তোমার সাথে এরকম করার কারণ হলো তুমি আমার হৃদয়ের রানি।আমার বউ যদি কেউ একমাত্র হয় সেটা শুধু তুমি। ”
নীল নিঃশব্দে কেঁদে যাচ্ছে। আজ এই ছেলেরা জন্য তার সব শেষ হয়ে গেলো।তার সুরওয়াল এসব জানলে কি তাকে কখন গ্রহণ করবে। এই ছেলের জন্য তার চরিত্রহীন তকমা লেগেছে।কিছুতে ছাড় বে না এই ছেলেকে।এর শাস্তি এক্ষুনি দিয়ে ছাড়বে।চোখে পানি মুছে স্বপ্ন শার্টের কলার টেনে ধরে বলল,
-” কি করে তুই ভাবলি আমি তোকে ভালোবাসব!তোকে আজ আমি মেরেই ফেলবো! কেন তুই আমায় ছুয়েছিস!”
এটা বলে নীল হাতের নখ দিয়ে স্বপ্ন’র গাল দুটো আঁচড়ে দেয় খুব জোরে।স্বপ্ন ব্যথা ফেলে কিছু বলে না।নিজেকে খুব শক্ত করে রেখেছে। নীল বদ্ধ পাগল, উন্মাদের মত আচরণ করে। খুব জোরে জোরে স্বপ্ন’র বুকে মারতে থাকে। স্বপ্ন চুল ধরে জোরে জোরে টানতে থাকে তাতে সে ক্ষেমৎ হয় না।দিঘির পাড়ে উঠে এসে মোটা একটা লাঠি নিয়ে আসে।লাঠি দিয়ে খুব জোরে জোরে আঘাত করে স্বপ্নকে।স্বপ্ন তার দুটো হাত মুষ্টিবদ্ধ করে দাঁতে দাঁত চেপে আঘাতের ব্যথা গুলো সহ্য করছে। একটা বার বাঁধা দেইনি সে নীলকে।নীল নিজের সব রাগ লাঠি দিয়ে মেরে ঝাড়তে থাকে।এক সময় সে হয়রান হয়ে যায়! লাঠি ফেলে দিয়ে স্বপ্নর চুল টেনে বলল,
– আমার মারে কথা মনের থাকলে আর কোনো মেয়েকে ছোঁয়ার স্পর্ধা করবি না।আর রইল তোর ভালোবাসার আন্সার।কান খুলে শুনে রাখ আমি অন্য একজন কে ভালোবাসি।তোকে ভালোবাসার কথা প্রশ্নেই উঠে না।”
এটা বলে চলে যায় নীল।স্বপ্ন কানে নীলের একটা কথা বাজছে ‘ আমি অন্য একজনকে ভালোবাসি ‘ লাঠির আঘাতে চেয়ে নীলের বলে যাওয়া এই কথার আঘাত সে বেশি পেয়েছে। তার হৃদয় যেন কেউ ছুরি দিয়ে ছিন্নভিন্ন করে দিলো ।জীবনে প্রথমবার কারো প্রেমে পড়েছে সে।আর সেই ভালোবাসা কথা বলার জন্য এভাবে পিটুনিয়ে খেয়ে রিফিউজি পেয়েছে।

– ” বিয়ে করবি আমায়? ”
প্রাচ্য কথায় তৃণ তার দিকে ভ্রু কুঁচকে থাকায়।কিন্তু প্রত্যুত্তর কিছু বললো না।প্রাচ্য আবার বলল,
-” বিয়ে করবি আমায়? ”
– “আর ইউ ম্যাড!
এটা বলে চলে যেতে নিলে প্রাচ্য তার হাত ধরে আঁটকিয়ে বলল,
– ” তখনকার ঘটনার জন্য আমি সরি।”
– ” তৃণ এত ছোট তুচ্ছ বিষয় মনে রাখে না! হাত ছাড় যাবো আমি! ”
-” আমার কথা উত্তর ফেলাম না আমি! ”
– ” উত্তর পাওয়ার মত কোনো কথা বলিসনি ”
– ” কেন এত হেয়ালি করছিস! বিয়ে করবি আমায়?
– ” তোর বর কি ভেগে গেছে নাকি?
এরকম একটা সিরিয়াস কথায় প্রাচ্য তৃণ থেকে এরকম কথাই আশাই করে নি।
– ” আমি তোকে ছাড়া কাউকে বিয়ে করবো না?
– ” বিয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে এটা ভেবে নেওয়া উচিত ছিল।কিন্তু এখন ত আমি তোকে বিয়ে করব না। ”
প্রাচ্য বুক ফেটে যাচ্ছে তৃণ এরকম কথায়।আজ তার জন্য তৃণ অভিমান করে এসব বলছে।
– ” জানি ভুল করিছি আমি! এখন ও সময় আছে শুধরে নেওয়ার। ”
– ” আমি তো শুধরাবো না।আর এসব বলছিস কেন তুই? তোর মুখে এসব মানায় না! একটা দুশ্চরিত্র ছেলে কে বিয়ে করতি চাস কেন?
– ” ভালোবাসি বলে! ”
এটা বলে তৃণকে জড়িয়ে ধরে।তৃণ ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় তাকে। তাচ্ছিল্য হেসে তৃণ বলল,
– ” ভালোবাসা মাই ফুট!তোর জন্য জমে থাকা সব ভালোবাসা কালকে বৃষ্টির পানিতে ধুয়ে মুচে সাফ করে এসেছি। এই হৃদয়ে ভালোবাসার ফুল ঝরে গেছে! ”
– ” আমি ফুটাবো তোর হৃদয়ে ভালোবাসার ফুল! ”
– ” আমি চাইনা আমার হৃদয়ে ঝরে যাওয়া কোনো ফুল ফুটুক।বাই দ্য ওয়ে তোকে এসব বলে আমার লাভ নেই।তোকে লাস্ট বারের জন্য বলছি আমার সামনে এসে এসব ন্যাঁকা ভালোবাসা কথা বলতে আসবি না।”
– ” কেন অভিমান করে দূরে সরিয়ে দিচ্ছিস?”
– ” যেখানে ভালোবাসা থাকে সেখানে অভিমান সাজে! তোর আর আমার মধ্যে কোনো ভালোবাসা নেই তাহলে অভিমান আসবে কোথায় থেকে? ”
প্রাচ্য তৃণ দুইহাত নিজের হাতে মুঠোয় নিয়ে তার গালে লাগিয়ে বলল,
– ” আমি তোকে থাপ্পড় মেরেছি তুই তার বদলে হাজারটা থাপ্পড় মার!আমি কিছু মনে করবো না।তারপর তুই আমায় ফিরিয়ে দিস না।আমি তোকে ছাড়া থাকতে পারবো না ”
তৃণ নিজের হাত ছাড়িয়ে নিয়ে রুম থেকে চলে যায়। আমাকে ফিরিয়ে দিয়ে যে কষ্ট আমায় দিয়েছিস! আজ থেকে সেই কষ্ট তুই উপভোগ করবি।আমি চাই তোর বিয়ে অন্য কারো সাথে হোক।আমাকে না পাওয়ার আগুন জ্বলে তুই ছাই হয়ে যাস এটাই চাই আমি।
প্রাচ্য সেখানে বসে হাউমাউ করে কান্না করতে থাকে।ভুল করে ডিসিশন নিলে তাহলে পস্তাতে হয়।কোনো কিছু করার আগে অন্তত দশবার ভাবা উচিত।এই কাজে ভবিষ্যৎ তার উপরে কি ফল আসবে। ভেবে চিনতে সব কাজ করতে হয়! হুট করে কোনো ডিসিশন নেওয়ার জীবনের জন্য ঝুঁকি পূর্ণ।যেমনটা প্রাচ্য’র ক্ষেতে ঘটছে।তৃণ ছাড়া কাউকে তার লাইফে কল্পনা করতে পারবে না বলেই তারপর রাগের বসে ঝুঁকিপূর্ণ সিধান্ত নেয়।তার ফল সে পাচ্ছে।

স্বপ্নকে এভাবে পাগলাটে অবস্থ রুমে ভিতরে ঢুকতে দেখে সমুদ্র বলল,
-” মনে হচ্ছে বাসর ঘরে বিড়াল মারতে গিয়ে স্বপ্ন’র এই অবস্থা হয়েছে! ”
এটা শুনে তৃণ আর ধূসর হেসে দেয়।স্বপ্ন চোখ তুলে তাদের দিকে তাকায়।সমুদ্র বলল,
– ” বেচারা স্বপ্ন’র খুব কষ্ট হয়েছে তোর তাই না! মুখের কি হাল করেছে।”
ধূসর সমুদ্র পিঠে চাপল মেরে বলল,
– ” হ্যাঁ রে স্বপ্ন! দিনে কি বাসর ঘর সেরে ফেলনি নাকি!রাতে জন্য কিছু বাকি রাখতি
স্বপ্ন চোখ বড় বড় করে তাকায় তাদের দিকে তখনই তৃণ বলল,
– “সেই সৌভাগ্য বতী মেয়েটা কে?কার সাথে মধুচন্দ্রিমা করে তোর এই হাল হয়েছে।”
স্বপ্ন ড্রেসিং টেবিলের আয়নার সামনে দাঁড়ায়।নিজের মুখে আঁচড় গুলো দেখে।গলায়, ঘাড়ে, গালে সব নখের আঁচড় গুলো দেখলে যে কেউ বলবে সে বাসর করেছে। আর বন্ধুরা হলে তো কথাই নেই।তার গালে এক বিভৎস অবস্থা।সমুদ্র তার কাঁধে হাত দিয়ে বলল,
-” বললি না মেয়েটা কে?
-” মেয়েটা তোর বোন!
এটা বলে আয়নার নিজেকে দেখতে ব্যস্ত হয়ে যায়।সমুদ্র সিরিয়াস হয়ে যায়।তৃণ আর ধূসর দিকে তাকায়।তারা চুপ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।স্বপ্ন দিকে তৃণ তাকায়?
-” আমার বোন মানে?
-” তোর বোন আমার এই হাল করেছে।
– ” কে?
– ” কে? আবার! যার দ্বারা এই কাজ সম্ভব সেই।”
সমুদ্র খুব ভালো করেই জানে এই কাজ প্রাচ্য জীবনে করবে না।স্বপ্ন আর প্রাচ্য মধ্যে বোঝা পড়াটা ভালো।এই কাজ একজনে দ্বারায় সম্ভব। আর সে হলো নীল।তারেই কাজ হবে।
– ” নীল করেছে?
এটা বলে হাসতে থাকে।স্বপ্ন বলল,
– ” হাস ভালো করে! আমার তো মুখের বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে?
– ” আমি যতটুকু জানি নীলের পিছন কেউ না লাগলে সে এ রকম করবে না। তুই কি করিস ওর সাথে?
– ” কিছু করিনি! সুধু বলেছি ভালোবাসি! ”
– ” কি?
সমুদ্র খুব জোরে চিৎকার করে বলল!সবাই চুপসে যায়।সবার এই ফানসে মুখ দেখে সমুদ্র অট্রহাসিতে ফেটে পড়ে।তার হাসি দেখে সবাই ভ্যাবাচ্যাকা খায়।সমুদ্র স্বপ্ন’র বাহুতে চাপল মেরে বলল,
– ” আরে আমি বাংলা সিনেমার নায়িকাদের ভিলেন ভাই না যে বোনের প্রেমে বাধা হয়ে দাঁড়াবো।”
★★★
শরীরের ব্যথায় স্বপ্ন রাতে হাঁড় কাঁপানো জ্বর আসে।সবাই স্বপ্নের রুমে উপস্থিত। রোকেয়া বেগম স্বপ্ন’র মাথা জলপটি দিতে থাকে।স্বপ্ন বলল,
– ” আন্টি আমার গায়ে সামান্য জ্বর! সেরে যাবে রাতেই এটা নিয়ে ব্যস্ত হওয়ার দরকার নেই।”
রোকেয়া ধমকিয়ে বলল,
– ” চুপ করো! গা পুড়ে যাচ্ছে তোমার! আর বলছো সামান্য। ”
শায়লা বলল,
-” বেড়াতে এসে গায়ে জ্বর বাঁধিয়ে ফেলেছো!”
-” আন্টি আমি ঠিক আছি?তোমরা সবাই গিয়ে শুয়ে পড়ো! সমুদ্র আছে তো!”
নীল এক কোণে দাঁড়িয়ে ছিল।এখন স্বপ্ন উপর থেকে রাগ কমেনি।ইচ্ছা করছে এখন কামড়িয়ে দিতে।জ্বর এসেছে ভালো হয়েছে।এই বজ্জাত মরলে সে বেশি খুশি হবে।কত বড় সাহস আমার ঠোঁট কাঁমড়িয়ে ধরে। মির্জা ফ্যামিলি সবাই চলে যায়।সমুদ্র তার রুমে যায় স্বপ্ন’র জন্য মুভ আনার জন্য।প্রাচ্য যেয়ে স্বপ্ন পাশে বসে। বলল,
-” বিকালে তো ঠিক দেখলাম, হঠাৎ করে জ্বর এলো কেন? ”
এটা বলে স্বপ্ন বাহু ধরে।স্বপ্ন আহ্ করে আর্তচিৎকার দেয়।সবাই বুঝতে পারল না স্বপ্ন হঠাৎ করে কেন চিৎকার করলো? প্রাচ্য হতভাগ যে এত জোরে ধরেনি স্বপ্ন ব্যথা পাবে।
– ” কি হয়েছে তোর! চিৎকার করলি কেন?”
স্বপ্ন বলল,
– ” ও কিছু না! ”
-“ও কিছু না হলে বুঝি তুই এত জোরে চিৎকার করলি ও।শার্ট খোল! বাহুতে কি হয়েছে আমি দেখবো।”
স্বপ্ন খুলতে দেয় না।সে খুব ভালো করে জানে শার্ট খুললে মাইরে দাগ গুলো স্পর্শ দেখা যাবে। মাইরে দাগ দেখলে জিজ্ঞেস করবে ? কিভাবে হয়েছে? আর সে কিছুতেই নীলকে ছোট করতে দিবে না।।অসুস্থ বলে কিছু বলতে পারেনি। কিন্তু প্রাচ্য আর রোদ জোর করে শার্ট খুলে ফেলে।শার্ট খুলে সবাই হা করে তাকিয়ে আছে। মাইরে দাগ গুলো কালো হয়ে নীলচে হয়ে গেছে।প্রাচ্য স্বপ্নকে ঘুরিয়ে দেখে পিঠে ও সেইম অবস্থা।স্বপ্ন অবস্থা দেখে সবার মুখে অমাবস্যা নেমে আসে।তাদের প্রান প্রিয় বন্ধুর এই অবস্থা কে করেছে?
-“তোকে কে এইভাবে আঘাত করেছে।”
প্রাচ্য বলল।কিন্তু স্বপ্ন কিছু বললো না।তৃণ বললো,
– ” চুপ করে থাকিস না কে করেছে বল একবার! তার পর তাকে মজা দেখাবো।”
রোদ বলল,
-” স্বপ্ন তুই শুধু নামটা বল!
ধূসর বলো,
-” আমি বুঝতে পাচ্ছি কে করেছে? ”
সবাই এক সঙ্গে বলে উঠে,
-” কে করেছে? ”
– ” স্বপ্ন গালের অবস্থা যখন নীল করেছে তার মানে এই আঘাত গুলো নীলই করেছে! ”
প্রাচ্য আতঁকে উঠে বলল,
-” নীল কেন এসব করতে যাবে?
ধূসর বলল,
-” সেটা আমার চেয়ে ভালো স্বপ্ন বলতে পারে?”
সবার এবার দৃষ্টি স্বপ্নর দিকে।জোঁকের মত স্বপ্নকে ঘিরে ধরে।বাধ্য হয়ে একপ্রকার জোর করে সবাই স্বপ্ন’র থেকে কথা বের করে। স্বপ্ন সবাইকে সব ঘটনা খুলে বলে।তখনই ধূসর বলল,
– “শালা তোরা কি? দুজনই তোরা মেয়েদের হাতে মাইর খাইলি।কেউ মাইর খায় প্রাচ্য হাতে আর কেউ মাইর খায় নীলের হাতে।আর প্রাচ্য তোরা দুইবোন কি মাইর ছাড়া কিছু জানি না। তুই থাপ্পড় দিয়ে দিয়ে তৃণ গালের বেহাল করেছিস। আর নীল সেতো লাঠি দিয়ে পিটাইছে।”
ধূসরের কথা প্রাচ্য ‘র চাঁদমাখা মুখ খানা অমাবস্যা নেমে আসে।প্রাচ্য তৃন দিকে তাকায়।এখন হাতের আঙ্গুলের চাপ দেখা যাচ্ছে। চোখে পানি টলমল করতে থাকে।তৃণ বলল,
-” তার মানে আমাদের স্বপ্ন ফার্স্ট কিস সেরে ফেলেছে।”
ধূসর বলল,
-” কেমন ফিল করলি স্বপ্ন! বল না প্লিজ!”
– ” ফিল আসবে কি করে? যে মাইরটা না দিলো আমায়! মাইরের চোটে ফিল পালাইছে।”
রোদ বললো,
-” আমার মাথা আসছে না স্বপ্ন ‘র মত ছেলেকে নীল রিফিউজ করেছে। ভাবতে অভাব লাগছে।”
– ” আমার মাথায় আসছে না! ”
ধূসর বলল!তখনই স্বপ্ন বলল,
– -” সে নাকি অন্য কাউকে ভালোবাসে!”
প্রাচ্য আতঁকে উঠে বলল,
– ” কি বলছিস তুই? ”
-” নীল নিজের মুখে বলেছে! ”
– ” নীল অন্য কাউকে ভালোবাসলে অন্তত আমায় বলতো!”
তৃণ বলল,
-” নীল ত মিথ্যে বলতে পারে! ”
ধূসর বলল,
-” হতে ও পারে।কারণ স্বপ্ন তাকে জোর করে কিস করেছে বলে মিথ্যে বলতে পারে।”
প্রাচ্য বলল,
-“আমি কালকে সকালে জেনে নিব।নীল মিথ্যে বলছে কি না সত্যি বলছে!”
তখনই সমুদ্র রুমে ঢুকে।স্বপ্ন এই অবস্থা দেখে বিস্মিত হয় সে।তাঁরা সবাই তাকে সব কিছু খুলে বলে।প্রাচ্য ওয়েন্টমেন্ট এনে আঘাতের জায়গা গুলো লাগিয়ে দেয়। তার সবাই চলে যায়।

নীল ঘুমাতে পাচ্ছে না বার বার আজকে ঘটনা চোখের সামনে ভাসছে।চোখ বন্ধ করলেই ভেসে উঠছে।কিন্তু সে চায় না এই বাজে ঘটনা মনে রাখতে।তাই ভুলার জন্য ঘুমাতে চায়।কিন্তু আজকে তার চোখ থেকে ঘুম পালিয়ে যায়।খাট থেকে নেমে ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়ায়।ডান হাতটা ঠোঁটের উপরে রাখে।এইখানে আজ ওই বজ্জাত ব্যাটার কাঁমড়ে দিয়েছে।ভাবতে তার গা গিনগিন করে উঠে।টেবিলে রাখা টিস্যু বক্স থেকে টিস্যু নিয়ে ঠোঁট মুচতে থাকে।কয়েক হাজার বার যে তার ঠোঁট টিস্যু দিয়ে মুচেছে। রাগে দুঃখে তার চোখে পানি বের হয়ে আসে।নীলের বার বার মনে হচ্ছে স্বপ্ন’র শাস্তি খুব কম হয়ে গেছে তার আর বাকি শাস্তি দেওয়া উচিত।হ্যাঁ,নীল তাকে আর ও শাস্তি আর দিবে।এই নীলকে ছুয়েছে তার মাশুল একবার না হাজার বার দিতে হবে। টেবিলের রাখা ফুলদানি ফ্লোরে ছুড়ে ফেলে দেয়।

#চলবে
#স্বর্ণা

https://www.facebook.com/groups/golpopoka/permalink/920600391704014/

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে