স্বপ্নীল
২১
তৃণ, স্বপ্ন, সমুদ্র বসে আছে কেফেতে।সমুদ্র কফিতে চুমুক দিয়ে বলল,
-“হঠাৎ এত জরুরী তোলব?
স্বপ্ন স্বাভাবিক ভঙ্গিতে বসে বলল,
-“আমরা তোর এত পর হয়ে গেছি সমুদ্র,প্রাচ্য বিয়ে ঠিক করেছি অথচ আমাদের একটু জানানোর প্রয়োজনবোধ করিস নি।
সমুদ্র কিছু বলতে গেলেই তার আগে স্বপ্ন বলে উঠে,
-“ওহ, ভুলে গেলাম আমি! তোদের ফ্যামিলি ব্যাপার তাই আমাদের কেন জানাবি?
স্বপ্ন’রর কথায় কিছুটা রাগ ছিল কিছু অভিমান ছিল।সমুদ্রকে বলল,
-“কি সব বলছিস এসব!তোদের কে জানাবো না’তা কাকে জানোবো!”
– – -“দেখতে পাচ্ছি জানানোর নমুনা!”
– – -“প্লিজ রাগ করিস না ভাই!আগে আমার কথা শুন!তারপর না হয় রাগ করিস!
সমুদ্র খেয়াল করল তৃণ এসেছে পর্যন্ত একটা কথা বলিনি চুপচাপ হয়ে বসে আছে! কফিমগ হাতে নিয়ে নাড়াচাড়া করছে, খাচ্ছে না।তা দেখে সমুদ্র বলল,
-“আর ইউ ওকে তৃণ!”
চোখ তুলে তাকিয়ে সে বলল,
– – – আই আম ওকে!”
– – -“কিন্তু তোকে দেখে মনে হচ্ছে না ঠিক আছিস!কি হয়েছে বল আমায়!”
– – -” নাথিং! কিছু হয়নি আমার!
স্বপ্ন বলল,
– – – ” আরে ওর কিছু হয়নি!আগে বল হুট করে প্রাচ্য বিয়ে ঠিক করে ফেললি, প্রাচ্য’র পছন্দ অপছন্দের একটা ব্যপার সেপার থাকতে পারে।ওর মত নিবি না। ”
সমুদ্র আরেক চুমুক দেয় কফিতে।সে বলল,
– – – “তোরা ট্যুরে থাকতে এসেছিল সম্মন্ধটা! তারপর প্রাচ্য’র মতামত নিয়ে বিয়ের কথা এগিয়েছি।ভাইয়ারা বিদেশ সব কিছু আমাকে দেখা শুনা করতে হয়,সব আত্নীয়স্বজনকে কার্ড দেওয়া, এসব নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম বলে জানাতেই পারিনি।”
– – -“প্রাচ্য’র মতামত নিয়েছি মানে? প্রাচ্য কি এই বিয়েতে মত দিয়েছে না’ কি!” তৃণ বলল।
– – – “আম্মা তো প্রাচ্য’র মত নিয়ে বিয়ের কথা পাকাপাকি করেছে।প্রাচ্যকে আম্মায় বলেছে তার কোনো পছন্দ থাকলে বলত,তাহলে বিয়ে ভেঙে দিবে।কিন্তু প্রাচ্য বলছে, তার কোনো পছন্দ নেই।আর সে আমাদের পছন্দ করা ছেলেকে বিয়ে করতে রাজি।”
তৃণ চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ায়।আর একুমুহুর্ত্ব দেরী না করে কেফের বাইরে চলে আসে!তৃন এহেম আচারণ সমুদ্র অবাক হলে ও স্বপ্ন হয়নি।সে পিছন পিছন যায়।
– – – ” চলে যাচ্ছিস কেন? সমুদ্রকে যেটা বলতে আসলি সেটা বলে যায়! ”
– – – “সমুদ্র কি বলল দেখলি না,প্রাচ্য’র মতামত নিয়ে বিয়ে ঠিক করা হয়েছে এবং তাকে বলেছে তার কোনো পছন্দ আছে কি ‘না।তারপর সে কি করলো, বিয়ের জন্য রাজি হয়ে গেলো।এটা ছিল তার ভালোবাসা।এই টুকু বিশ্বাস ছিলো না তার ভালোবাসার মানুষের উপরে।এখন আমার প্রাচ্য’র ভালোবাসার নিয়ে সন্দেহ হচ্ছে, সত্যি কি আমায় ভালোবেসেছিল! তাই হোক বাদ দে এসব।ও যদি আমায় ছাড়া ভালো থাকতে পারে, আমি ও দিব্যি ভালো থাকতে পারবো।সমুদ্রকে কিছু বলা প্রয়োজন নেই।”
– – -” প্রাচ্য রাগ করে এমন করেছে! আর এখন তুই জেদ করে সমুদ্রকে কিছু জানাতে বারণ করছিস! অন্তত আমাকে জানাতে দে,
– – – “তোর আমার বন্ধুত্বের কসম রইল! তুই কিচ্ছু জানাবি না সমুদ্রকে।এক প্রাচ্য চলে গেলে কত প্রাচ্য আসবে লাইফে।কারো জন্য জীবন থেমে থাকে না।জীবন নিজের গতিতে চলতে থাকে।প্রাচ্য’র জন্য আমার জীবন আটকে থাকবে না,অনায়াসে চলে যাবে!আর আমরা সবাই মিলে প্রাচ্য’র বিয়েতে যাবো।খুব খুব মজা করবো।বন্ধুরর বিয়ে বলে কথা!”
এটা বলে চলে যায়।আর একমুহুর্তে স্বপ্নের সামনে থাকলে ধরা পড়ে যেত তার চোখে জল। ভুলে যাবে প্রাচ্যকে!আগের মত বিন্দাস লাইফ যাপন করবে সে।
সমুদ্র বিল প্রে করে এসে বলল,
-“তৃণ কি হলো এভাবে হঠাৎ চলে এলো।
-“আরে বলিস না! মাথাব্যথা করছে তাই চলে গেছে।
-“ওকে দেখে আজকে অন্যরকম লাগছিল।অন্য সময় হলে অনেক হাসিখুশি দেখা যেত।”
★★★
রোদ দরজার বাহিরে দাঁড়িয়ে কলিংবেল বাজিয়ে যাচ্ছে! থামার নাম নেই।এতক্ষণ ধরে কে কলিংবেল বাজাছে!কলিংবেলের সুইচটা হয়ত বিরতি দেওয়া হচ্ছে না। বাজিয়ে চলছে। কে এভাবে কলিংবেল বাজাচ্ছে আজ তার খবর বের করিয়ে ছাড়বে।জন্মের মত কলিংবেল বাজানোর শিক্ষা দিব! মনে মনে এসব বির বির করছে আর সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামছে সমুদ্র!দরজা খুলে দেখে রোদ দাঁড়িয়ে আছে হাতে একটা হটপট নিয়ে।এখন ইচ্ছা করছে রোদকে ঠাটিয়ে চড় মারতে।এত সাত সকাল বেলা এভাবে এসে ঘুমের বারোটা বাজিয়ে ছেড়েছে!তার শাস্তি রোদকে পেতেই হবে।দরজার সামনে ফাঁক করে দরজা হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে সমুদ্র বলল,
-“আল্লাহওয়াস্তে মাফ করিবেন!এই মুহুর্তে আপনাকে ভিখা দেওয়ার মত টাকা আমার কাছে নাই! ”
সমুদ্রের মুখে এমন কথা শুনে কেঁদে দিতে ইচ্ছা করছে রোদের ।সকাল সকাল মায়ের হাতে নাস্তা বানিয়ে সমুদ্রের জন্য এনেছে।ভেবেছে হয়তো সমুদ্র তাকে দেখে খুশি হবে। কিন্তু তাকে দেখে এত খুশি হয়েছে সমুদ্র তাই ভিক্ষুক উপাধি দিয়েছে তাকে।সত্যি কি তাকে দেখতে ভিক্ষুকের মত লাগে।না’ কি সমুদ্রকে তাকে অপমান করার জন্য এসব বলে।তারপর বেহায়া হয়ে কথা বলতে গেলে তার আগে সমুদ্র বলে উঠে,
-“বোধহয় সকাল ধরে কিছু খাওয়া হয়নি আপনার!খাওয়ার জন্য দাঁড়িয়ে আছেন? আসলে টাকা না থাকলে কি হয়েছে আমাদের ফ্রিজে খাওয়ার আছে। সেগুলো খেয়ে যাবেন?আসুন ভিতরে!”
এটা বলে দরজা থেকে সরে দাঁড়ায়।আর রোদ ঘরে প্রবেশ করে।রোদ ভালো করে বুঝতে পেরেছে খাওয়ার এনেছে বলেই তাকে সমুদ্রকে একথা বলে বুঝাতে চেয়েছে তাদের ঘরে ও খাবার আছে!রোদ কেন যে তুই দরদ দেখিয়ে খাবার আনতে গেলি?এবার বুঝ ঠেলা,আল্লহাই জানে আজ তোকে কত অপমান সহ্য করতে হয়।সমুদ্র পিছন ফিরে তাকিয়ে বলল,
-“কি হলো দাঁড়িয়ে আছেন কেন?বসে পড়ুন নিচে! আমি খাবার আনছি।”
না আর সহ্য করতে পাচ্ছে না রোদ। তাকে এর প্রতিবাদ করতেই হবে।কিছু বলি নাই বলে সমুদ্রকে তাকে আজ রাস্তা ফকিরে উপাধি দিয়েছে।সাহস সঞ্চয় করে রোদ বলল,
-” কি মনে হয় ভাইয়া আপনার আমাকে! আমি খাবারের জন্য এসেছি!ফকির মনে হচ্ছে আমাকে! ”
সমুদ্র মুখে উপরে রোদ কথা বলেছে তার একদম পছন্দ হয়নি।রোদের হাত থেকে হটপট ফেলে দেয় ফ্লোরে।রোদের বাহু ধরে বলল সে,
-“জানিস রোদ!ইদানীং তুই খুব বড্ড বেয়াদব হয়ে গেছিস।মুখে মুখে তর্ক করছিস!খুব পাখনা গজিয়েছ তোর!ঝাঁটাই করে দিব তোর পাখনা।”
-“আপনি আমায় বার বার অপমান করছেন? তাই বাধ্য হয়ে মুখ খুলতে হয়েছে?
সমুদ্রর ধমকিয়ে বলল,
-“একদম চুপ!
রোদ ভয় পেয়ে যায় সমুদ্রের ধমকানে।রোদের চুল গুলো পনিটেল স্টাইলে বাঁধা ছিল।সমুদ্র রোদের চুল গুলো টেনে-টুনে ক্লিপ খুলে ফ্লোরে ছুড়ে ফেলে।ব্যথার চোখে পানি চলে আসে তার।সমুদ্র তাকে আমার ধমকিয়ে বলল,
-“আমায় কি তোর ফকির মনে হয়?তাই তোর বাসা থেকে খাবার আনবি আমার জন্য।আমার বাসা কি খাবারে অভাব পড়েছে!”
রোদ এবার বুঝতে পাচ্ছে সমুদ্রের রাগ কেন উঠেছে।তার বাসার থেকে খাবার এনেছে তাই বুঝি এমন বিহেভ করবে।প্রাচ্য যখন বলছে তারা গ্রামের বাড়ি চলে যাচ্ছে,সমুদ্রকে বিয়ের কয়েকদিন আগে আসবেই।তাই আজ সকাল বেলা খাবারে এনেছে তার বাহানা দিয়ে একটু দেখে যাবে! তাই কত ভালোবেসে খাবার গুলো এনেছে।আর সেই খাবার গুলো ফেলে দিয়েছে! খাবার গুলো ফ্লোরে পড়ে গড়াগড়ি খাচ্ছে তা দেখে রোদের চোখে পানি উপচে পড়ছে।রোদ বসে হটপট হাতে নিয়ে চলে যেতে নিলে সমুদ্রের পিছু ডাকে,
-“দাঁড়া!কইছে যাচ্ছিস তুই! আমার ঘুমের ব্যঘাত ঘটিয়েছিস তুই,তার জন্য তোকে শাস্তি পেতে হবে।”
চোখে পানি মুচে চোখ দ দুটো ছোট ছোট করে রোদ বলল,
-“শাস্তি!
-“হুম শাস্তি! আগে এই ফ্লোরটা মুছবি, যেখানে যেখানে তোর হটপটে খাবার পড়ে নষ্ট হয়েছে সেখানে ভালো করে মুচবি।নোংরা আমি একদম সহ্য করি না।”
-“কিছুক্ষণ আগে ফকির বলে উপাধি দিয়েছেন! আর এখন কাজেল লোক বলে উপাধি দেওয়ার জন্য আমার হাতে এই কাজ করাতে চাচ্ছেন।আমি কিছুতে করবো না এই কাজ।”
-“কেন করবি না? তুই কি প্রধানমন্ত্রী কন্যা, যে তুই এই কাজ করলে তোর জাত যাবে?নে, তাঁড়াতাড়ি কর।এসব করা হলে আমার নাস্তা বানাবি তুই নিজের হাতে?
এটা বলে চলে যায় সমুদ্রে।রোদ আর কি করবে। সে খুব অসহায়, ভালো যখন বেসেছে তখন এইসব করতেই হবে।এসব করেই যদি তাকে একটু পঠানো যায়।তাহলে তাই করতে রাজি সে।ভালো করে মুচে রোদ কিচেনে যায়।কোনোদিন কিচেনে ঢুকেছে কি ‘ না সন্দেহ আছে।গ্যাস স্টোভ চালায় কি করে সেটা জানে না।কোথায় কি আছে? খুজতে খুজতে সে হয়রান হয়ে যায়।উপরে তাক থেকে একটা বয়াম নামিয়ে হাত দিয়ে দেখে, এটা আটার বয়াম।সেটা উপরে রেখে আরেকটা নেয় হাতে, চিনি না কি লবণ টা দেখার জন্য এক চিমটি মুখে দিয়ে থু করে ফেলে দেয়,সেটা চিনি ছিল না লবণ ছিল।এটা রাখতে গেলে হাতের ধাক্কা খেয়ে আটার বয়ামের মুখ না লাগিয়ে তখন রেখেছে দিয়েছে বোদ তাই বয়ামের সব গুলো আটা তার মাথা।সমুদ্র উপরে যেয়ে মনে পড়ে রোদকে বলেনি কি খাবে সে।তাই নিচে এসে রোদের এই অবস্থা দেখে হাসতে থাকে।সোফা পড়ে হেসে লুটেপুটে খাচ্ছে।প্রথমে পলকহীন তাকিয়ে হাসি দেখতস থাকে রোদ।তারপর মেজাজ বিগড়ে তার!সমুদ্রের জন্য তার এই আটায় মাখামাখি অবস্থায় পড়েছে।আর সে হাসছে!তাই আটার বয়াম থেকে একমুঠো আটা নিয়ে সমুদ্রের মাথা ছড়িয়ে দেয়। তা দেখে সমুদ্রে বলল,
-“হোয়াট দ্যা হেল আর ইউ!
এটা বলে চুলে উপড়ে ছড়িয়ে থাকা আটা গুলো ঝাঁড়তে থাকে।রোদ এবার তার মুখে মাখিয়ে দেয়।সমুদ্রে কড়া চোখে তাকায়, তা দেখে রোদ বলল,
-“আমাকে এভাবে দেখে খুব হাসি পাচ্ছিল, তাই আপনাকে আটা মেখে ভুত বানিয়ে দিলাম।এবার হাসেন বেশি বেশি করে।!
সমুদ্র এবার রোদের কাঁধে হাত দিয়ে টপসে ছিঁড়ে ফেলে।রোদ এমন কিছু’র জন্য মোটে ও প্রস্তুত ছিলো না।সঙ্গে সঙ্গে পিছন ঘুরে যায়।
★★★
অনেক রাতে শায়লা আর প্রাচ্য মির্জা বাড়িতে পৌঁছায়।তাই রাতে রোকেয়া, সোহান, আর সোহাগী সাথে তাদের দেখায়।খাবার টেবিলে প্রাচ্য দাদুকে দেখে অভিমান করে বলল,
-” কদমফুল পেয়ে একবারে এই শিউলিফুলকে ভুলে গেলে।এবার ঢাকা যাওয়ার প্রয়োজনবোধ করো নাই।”
-“কে বললো,আমি আমার বড় বঊ শিউলিফুলকে ভুলে গেলাম।আগে বড় বউ এই বংশে এসে খুশির জোড়ারে ভাসিয়ে দিয়েছে।তাকে কি ভুলা যায়।তাকে তো বেশি বেশি ভালোবাসা যায়। ”
নীল বলল,
-“দেখলে সবাই, বুড়া কিভাবে বড় বউ পেয়ে!গোল পাল্টে দিলো। এত দিন কদম কদম করতো! আর এখন আমার কোনো প্রয়োজন নেই!
-“এই হিংসুটে!আমার আর দাদুর ভালোবাসায় উপরে নজর দিবি না।দাদু এতদিন তোকে ভালোবেসেছে কিচ্ছু বলিনি।এখন দাদু শুধু তার শিউলিফুল কে ভালোবাসবে।আমাদের মাঝে তুই নট এলাউ!”
নীল ভেঙেচি কেটে খেতে বসে যায়।সবাই মিলে অনেক কথা বার্তা বলে।রোকেয়া প্রাচ্যকে নিজের হাতে খাইয়ে দে।তা দেখে নীল বলল,
-“প্রাচ্য আপুকে দেখে কেউ আমার উপরে নজরই দিচ্ছে না। ওহ! আমি ভুলেই গেলাম, আমি যে পুরাতন হয়ে গেলাম!
রোকেয়া বলল,
-” হিংসে করে লাভ নেই,নিজের হাতে খেয়ে নাও ! কতদিন পর আমার প্রাচ্য মা টা এ বাড়িতে এসেছে!কতদিন তাকে খাইয়ে দিয় না।তোকে রোজ খাইয়ে দি।এখন যতদিন প্রাচ্য এইবাড়ি থাকবে ততদিন আমি নিজের খাইয়ে দিব প্রাচ্য মাকে।”
নীল কাঁদো কাঁদো হয়ে বলল,
-“আমি পর হয়ে গেছি। এ্যা.. এ্যা.. এ্যা
মজা করে কান্না করতে থাকে!শায়লা বেগম খাবার প্লেট নিয়ে উঠে যায়।
-“আমার মেয়েকে আমি খাইয়ে দেবো!হা কর নীল মা!”
নীল নিজের মুখে খাবার তুলে নিয়ে শায়লা বেগম জড়িয়ে ধরে বলল,
-“প্রাচ্য আপু তোমাকে আমার মা খাইয়ে দিবে!আর তোমার মা আমাকে খাইয়ে দিবে!কি মজা!”
সোহাগী টেবিলের একোনে দাঁড়িয়ে তাদেরকে দেখছে।আজ তার মেয়ে নাই বলে এভাবে খাইয়ে দিতে পাচ্ছে না সে! না হলে আজকে তার মেয়েকে সবাই প্রাচ্য আর নীলের মত আদর করত।এভাবে সে ও খাইয়ে দিতো।রোকেয়া বেগম তাকায় সোহাগী দিকে।তিনি সোহাগীর মলিন মুখ দেখে বুঝে গেছে কেন মন খারাপ?তিনি সোহাগী বেগমের কাছে যেয়ে বলল,
-“নীল, আর প্রাচ্য কি আমাদের মেয়ে নাকি, ওরা হলো এই বাড়ির মেয়ে।ওদের মা আমরা তিন জা।”
রোকেয়ার কথা শেষ হওয়ার আগেই প্রাচ্য আর নীল সোহাগীকে জড়িয়ে ধরে ‘ছোট মা’ বলে।সোহাগী খুশিতে চোখে পানি চলে আসে।দুজনে বলে উঠল,
-“ছোট মা তোমার দুইটা মেয়ে থাকতে তোমার মন খারাপ কেন? আর কখনো কাঁদবে না বলে দিলাম।”
দুজনের পিঠে হাত বুলিয়ে বলল,
-“আর কাঁদবো না!
নীল খাবার প্লেট এনে বলল,
-“তাড়াতাড়ি আমাদের দুজনকে খাইয়ে দাও।”
চোখের পানি মুছে তাদের খাইয়ে দেয়।তামিম সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে বলল,
-“বাহ!মেয়েদের সবাই খাইয়ে দিচ্ছি।তাহলে আমি বাদ যাচ্ছি কেন?আমাকে খাইয়ে দিতে হবে।”
প্রাচ্য আর নীল বলে উঠল,
-“এখানে ছেলেদের কে এলাউ করা হয় না।এখন মায়েরা তাদের মেয়েদের খাইয়ে দিচ্ছি।!
তামিম আর কি করবে! সে শায়লা সাথে কুশলবিনিময় করে খেতে বসে।সোলোমান মির্জা আজ অনেক খুশি। আজ তার পরিবারে সবাই একত্র হয়েছে।বাড়িতে যেন প্রান এসেছে।সবাই মিলে মিশে থাকে পরিবারে সুখ সমৃদ্ধ উপচে পড়ে!সবাইকে খুশি দেখে তার চোখে পানি চলে আসে।
চলবে…