স্বপ্নীল
। ৩৩
ঘড়ির কাটা জানান দিচ্ছে রাত বারোটা বেঝে গেছে।নীল ঘড়ির দিকে তাকিয়ে সময় দেখে নেয়।সেই আগের মত পলিথিন হাতে বেঁধে নেয়।বিছুটি পাতা হাতে নিয়ে রওনা দেয় স্বপ্ন রুমে দিকে।রুমের দরজার সামনে এসে দেখে দরজা আটকানো। তাহলে সে কি ভাবে রুমে ঢুকবে।রুমে ঢুকতে না পারলে তার সব প্ল্যান ভেস্তে যাবে।না না কিছুতে প্ল্যান ভেস্তে দেওয়া যাবে না।এই স্বপ্নের আজ একটা বিহিত করেই ছাড়ব।আমায় ঝাল সিঙ্গারা খাওয়ানো।নীলাদ্রী নীলের সাথে পাঙ্গা নেওয়ার মজা দেখামু শালা তোকে।আমার সাথে লাগতে এসেছিস। না নীল এসব ভাবার সময় পাবি অনেক।এখন আগে রুমে ঢুকার ব্যবস্থা কর।রুমের দরজা দুইহাত দিয়ে ঠেলতে যাবে তার আগে দরজা খুলে যায়।তা দেখে নীলের মনে খুশির ঝিলিক দেখা দেয়। বাহ! মেঘ না চাইতে বৃষ্টি।সে আমার জন্য দরজা খুলে রেখেছে।আমাকে আর অযথা কষ্ট করতে হবে না।আমার শক্তি ও অপচয় করতে হবে না।রুমে ঢুকে পা টিপে টিপে, যাতে স্বপ্ন টের না পায়। ল্যাম্পের আলোয় স্বপ্ন মুখটা দেখতে পায়।স্বপ্ন পাশে গিয়ে বসে।কিছুক্ষণ স্বপ্ন মুখের দিকে চেয়ে থাকে।এই মুখটা যেন মায়ায় ভরপুর। কি সুন্দর করে বালিশ জড়িয়ে ধরে ঘুমাচ্ছে।যেন বালিশটা তার বঊ।বঊ কে বুকের ভিতরে আবেশে জড়িয়ে ধরে সুখে ঘুম যাচ্ছে। কিন্তু এই নীল থাকতে তোকে কি ভাবে সুখে ঘুম যেতে দিয়।তোর এই ঘুমের তেরোটা বাজাবো আমি।আস্তে করে স্বপ্ন হাত থেকে বালিশ সরিয়ে ফেলে।তাতে স্বপ্ন একটু নড়ে উঠে। নীল খানিক ভয় পেয়ে যায়।নিজের কাঁপা হাতটা স্বপ্ন’র বুকের উপরে রাখে।স্বপ্ন’র শার্টের বোতাম খুলতে থাকে।আবার স্বপ্ন কিছু নড়াচড়া করে তা দেখে নীল হাত সরিয়ে ফেলে।নাড়াচাড়া বন্ধ হলে আবার হাত দেয় শার্টের বোতাম খোলার জন্য। একসময় সে সব গুলো বোতাম খুলে ফেলে। ল্যাম্প আলোয় স্বপ্ন’র লোমশ বুকটা ভেসে উঠে। চোখ ধাঁধানো সৌন্দর্য। নীল এই প্রথম এরকম লোমশ বুক কারো দেখে।এত সুন্দর কি করে হয়? কেন বা এই ছেলে হতে গেলো।অন্য কারো হলে এতক্ষণ হাত ছুয়ে দিত।কিন্ত এই ছেলে তার শত্রু। শত্রু সব কিছুই শত্রু। এই ছেলে এসব দিকে তাকাবে না সে।
না চাইতে স্বপ্ন লোমশ বুকের দিকে নীলের চোখ যায়। কতক্ষণ তাকিয়ে ছিল সে জানে না।স্বপ্ন নাড়াচাড়া করতে তার ধ্যান ভাঙে।নিজের চোখের নজর স্বপ্ন দিকে যায় কেন? তাই জন্য চোখের নজর কে মনে মনে সাংঘাতিক একটা গালি দেয়।টেবিল উপর থেকে পাতা গুলো এনে স্বপ্ন খালি গায়ে লাগিয়ে দেয়।তখনই স্বপ্ন চোখ খুলে তাকায়।নীল তাড়াহুড়া করে উঠতে গেলে স্বপ্ন তার হাত ধরিয়ে ফেলে ডান হাতে।আর বাম হাত দিয়ে গা ছুলকাতে লাগে।স্বপ্ন বলল,
-” কি লাগালে আমার গায়ে তুমি।শরীর যে চুলকাচ্ছে।
নীম তোতলাতে তোতলাতে বলল,
– ” কিছু না!
স্বপ্ন নীলের হাত ধরে টান মেরে তার উপরে ফেলে।তারপর সুযোগ বুঝে বিছানার সাথে চেপে ধরে।দুজনার মধ্যে হাতড়াহাতড়ি চলতে থাকে।এই হাতড়াহাতড়ি মধ্যে বিছুটি পাতা গুলো নীলের গালে, গলায়, লেগে যায়।সেখানে চুলকাতে থাকে কিন্তু নিজের হাত দুটো স্বপ্ন চেপে ধরেছে।স্বপ্ন দেখতে পায় নীলের হাত পলিথিন বাঁধা।তা দেখে ভ্রু কচকে তাকায় সে নীলের দিকে।
-” কি করতে চাইছো তুমি!”
এটা বলে ডান হাত দিয়ে নীলের হাতের পলিথিন খুলে ফেলে।হাতের পাশে দেখে কিছু পাতা।তাই সে নীলের হাত ছেড়ে দিয়ে পাতা গুলো ধরতে নিলে নীল তার আগে হাত বাড়িয়ে ধরে নেয়।খালি হাতে ধরেছে বলে হাত চুলকাতে লাগে।স্বপ্ন বাম হাত দিয়ে নিজের শরীর চুলকাতে লাগে।তার চেয়ে বেশি নীলের করুন অবস্থা।গায়ের ওড়না ফেলে সে দুইহাত দিয়ে ঘাড় গলা,গাল হাত চুলকাতে লাগে। নীলকে এমন করতে দেখে স্বপ্ন বলল,
-” তুমি ঠিক আছো নীল।”
নীল কোনো জবাব দিল না সে চুলকাতে ব্যস্ত।স্বপ্ন যেয়ে লাইট অন করে।সে নিজের শরীর চুলকাতে চুলকাতে বলল,
-” হঠাৎ সারা শরীর চুলকাচ্ছে কেন বুঝতে পাচ্ছি না,,,, ”
তার চোখ যায় ফ্লোরে বিছুটি পাতার দিকে। সে আৎকে উঠে বলল,
-” বিছুটি পাতা,,,,
এটা বলে সে নীলের দিকে তাকায়।নীল পাতার গুলোর দিলে তাকিয়ে একশো একটা গালি দেয়।বদ ব্যাটাকে শায়েস্ত করতে এসে নিজের শায়েস্ত হয়ে গেছে।তার কান্না পাচ্ছে। চোখ দিয়ে পানি বের হয়ে গেছে।এই চুলকানো জ্বালায় মরে যাচ্ছে।
-” তুমি বিছুটি পাতা এনেছো আমার শরীরে লাগানোর জন্য,,,,”
এটা বলে স্বপ্ন থেমে যায় নীলের অবস্থা দেখে।গাল গুলো লাল হয়ে গেছে।হাতের অবস্থা করুণ।তার সামান্য চুলকাচ্ছে।কিন্তু নীলের বেশি।সে আর একমুহুর্ত দেরী না করে নীলকে টেনে নিয়ে যায় বাথরুমে। শাওয়ার ছেড়ে দেয়।★★★
নীলের সারা গায়ে রেস বেড়িয়ে গেছে।তার এই অবস্থা দেখে দাদু ডাক্তার আনে সঙ্গে সঙ্গে।ডাক্তার এসে কিছু মেডিসিন দিয়ে যায়।।রোকেয়া আর নীলের বড় ভাই এসে তাকে বকাঝকা করে আর সবাই জিজ্ঞেস করেছে কিভাবে এরকম হয়েছে।বিছুটি পাতার কথা শুনে সবাই জিজ্ঞেস করে কিভাবে গায়ে লেগেছে।সে কিছু না বলে চুপচাপ ছিল।কিন্তু সোহার বুঝতে একটু বাকি রইল না কিভাবে নীলের এই অবস্থা হয়েছে।স্বপ্ন তেমন কিছু হয়নি।নীলের অবস্থা দেখে তার নিজের কথা ভুলে গেছে।সে যদি জানত নীলের হাতে বিচুটি পাতা ছিল কিছুতে নীলের গায়ে লাগত দিত না।তার খুবই খারাপ লাগছে।নিজের প্রিয় মানুষটার এই অবস্থা দেখে বুক ফেটে তার কান্না আসছে।বুকের ভিতরে অসহনীয় ব্যথা হচ্ছে!বার বার কালকে রাতে নীলের কান্না মাখা ফেইসটা ভেসে উঠছে।
নীল বালিশ জড়িয়ে বসে আছে আর ভাবছে কালকে রাতে যার ক্ষতি সে করতে গেছে।সে তার এই অবস্থা দেখে পাগলের মত হয়ে গেছে।সবাইকে মাঝরাতে ঢেকে আনে।ডক্টর কল করে। তার এই বিবস্ত্র চেহারা এখন চোখের সামনে ভাসছে।
সোহা দেখছে নীল নিজে নিজে হেসে যাচ্ছে।নীলের পাশে বসে সে বলল,
-” এত হাসির কারণ কি? ”
নীল চোখ তুলে তাকায় সোহার দিকে।
-” কিছু না!
সোহা পানির গ্লাস আর ওষুধ নীলের দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বলল,
-” কিছু না বললেই হলো! ”
নীল ওষুধ মুখে দিয়ে তারপর পানি মুখে দিয়ে ওষুধ খায়।তার গ্লাস সোহার দিকে এগিয়ে দিয়ে বলল,
-” সত্যি কিছু না! ”
সোহা গ্লাস টা টেবিলে রেখে আবার নীলের পাশে বসে সে বলল,
-” আমি জানি তো!কালকে স্বপ্ন ভাইয়ার ক্ষতি করতে যেয়ে নিজের ক্ষতি করে এসেছিস।একবার দেখেছিস আয়নার মধ্যে নিজেকে।হাতে, গালে, গলায় রেস বেড়ে গেছে।রাতে প্রাচ্য আপু গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান আর তোর এই অবস্থা।বার বার মানা করার সত্ত্ব শুনলি না।”
নীল সোহার গাল টেনে ধরে বলল,
-” ডোন্ট ওয়ারি সোহা বেবি।এই সামান্য কিছু জন্য কি আপুর বিয়ের অনুষ্ঠানে আনন্দ মাটি হবে। হবে না।তুই জানিস নীলের এত সহজে কিছু হয় না।”
#চলবে
ভুল হলে ধরিয়ে দিবেন।শুধরে নিব।
একটা জিনিস আমি খেয়াল করলাম।সেদিন একটু রোমান্টিক কথা থাকে পর্ব সেদিন লাইক কমেন্ট বেশি পড়ে।কিন্তু এখন আবার প্রশ্ন এটা। সেদিন কোনো রোমান্টিক কথাবার্তা থাকে না পর্বে তারা কি সেই পর্ব পড়ে না? আর যদি বা না পড়ে তাহলে পরবর্তী পর্ব পড়ে মজা পায়নি?ধরে নিলাম সেই প্রতি পর্বে পড়ে।কিন্তু দেখা যায় রোমান্টিক পর্ব লাইক বেশি হয়।আর সে গুলো এমনি পর্ব সে গুলো ত কম পড়ে।এখন কি ধরে নিব আমি পাঠকরা রোমান্টিক পর্ব হলে লাইক দেয়।আর রোমান্টিক না হলে লাইক দেয় না।কিন্তু কেন? আমাদের স্বপ্নীল এই গত দুটা পর্ব লাইক দেখে ব্যবধান বুজেছি।গল্প যখন পড়েন।তখনই যদি কমেন্ট করতে কষ্ট লাগে অন্তত একটা লাইক তো দেওয়া যায়।নাকি সেটা ও কষ্ট লাগে আপনাদের