স্পর্শ পর্ব-০৬

0
973

#স্পর্শ
#part_6
#sarika_islam

আরমানের বাড়ি খুব সুন্দর করে সাজিয়েছে কারন রাতের পার্টিটা এখানেই হবে।
এক এক করে সবাই এসে পরেছে আরমানের বাড়িতে।তার বাড়িটা বেশ বড় না বেশ ছোটও না একা মানুষ থাকার জন্য যতটুকু যথেষ্ট এই আরকি।বাড়ির আঙ্গিনা বাগান খুব সুন্দর ভাবে সাজিয়েছে আরমান।বাড়ির মাঝে একটা সুইমিং পুলও আছে পুলের চারপাশে বাগান। পুরো বাড়ি লাইটিং করানো বাগান সাইডে ছোট বড় সব গাছের উপর মরিচ বাতি দিয়ে সাজানো পুল সাইডেও ধিমিধিমি আলোয় আলোকিত করানো সেখানেই উপস্থিত হয়েছে সবাই।আরমান সবার সাথে জুসের গ্লাস হাতে নিয়ে কথা বলছে কিন্তু তার চোখ বারংবার একজনকেই খুজে চলছে।পুল সাইডে দেখলো দিয়া আসছে দিয়াকে দেখে আরমানের চোখ কিছুক্ষনের জন্য থমকে গেল এ যেন সদ্য আকাশ থেকে নামা কোন এক অপ্সরিকে দেখছে সে।কালো শাড়ি পরেছে সামনের কাটা চুলগুলো ছেরে দিয়ে পিছনের চুলগুলো খোপা করা খুব বেশি সাজা হয়নি চোখে হাল্কাভাবে কালোসেড দেওয়া আর ঠোঁটে নুড লিপ্সটিক,কালো হাই হিল।আরমানের হাত আপনাআপনিই বুকে চলে গেল দিয়ার এই ঘায়েল করা রুপ দেখে।আর মুখ থেকে বেরিয়ে এলো’হায়য়য়য়য়’।।।
দিয়া দূর থেকে আরমানকে দেখে আরমানের দিকে এগুচ্ছে। আরমানও আজ কালো শার্ট আর কোর্ট পরেছে এতেই যেন আরমানের সৌন্দর্য উপচে পরছে।দিয়া আরমানের সামনে এসে দারালো কোল্ড ড্রিংক হাতে দিয়ে।আরমান এক টুকরো হাসি নিয়ে দিয়ার দিকে তাকালো।
-আজ একটু বেশিই সুন্দর লাগছে,

দিয়া নিজের প্রশংসা শুনে অন্যদিনের মতো এত লাজুক হলো না বরং হাল্কা ভাবে এক গাল হাসলো।গানের হাল্কা ভলিউমে সবাই কাপল ডান্স করছে লাইট ধিমিধিমি আলোতে জ্বলছে।আরমান দিয়ার দিকে হাত বারিয়ে বলল,
-শেল উই?

দিয়া আরমানের দিকে তাকিয়ে হাতের উপর হাত রাখলো।আরমান আর দিয়া ডান্স করছে গানের তালে তালে পা ফেলুচ্ছে।আরমান ঘুরিয়ে দিয়াকে একদম নিজের কাছে নিয়ে আসলো দিয়ার নিশ্বাস খুব দ্রুতগতিতে উঠানামা করা শুরু হয়ে গেল হৃদপিন্ড খুব জোরে জোরে ধুকপুক ধুকপুক করছে আরমানের এতটা কাছে নিজেকে পেয়ে।আরমান দিয়ার হৃদপিন্ডের এই ধুকপকানি ঠিক অনুভব করতে পাচ্ছে।আরমান দিয়ার কোমড় জরিয়ে আরো কিছুটা কাছে টানলো।দুজন দুজনের উপর নিশ্বাস আচড়ে পরছে এতটা কাছে তারা।দিয়ার নিশ্বাস এইবার বন্ধ হওয়ার উপক্রম এই স্পর্শকে আর সহ্য করতে পারছে না তাই ডান্স স্টপ করে চলে গেল।দূরে এক কোনে গিয়ে নিজেকে রিলেক্স করার চেষ্টায় আছে।আরমান দূর থেকে দারিয়ে দিয়ার কান্ড দেখতে লাগলো৷
পার্টির একদম শেষ মুহুর্তে এক এক করে সবাই চলে যেতে শুরু করলো।দিয়া যেতে নিলে আরমান আটকে দেয় ‘আর কিছুক্ষন থাকো’বলে। দিয়াও আর বারন করতে পারে না।ধীরেধীরে সবাই চলে গিয়েছে আরমান আর দিয়াই রয়ে গেল।আরমান আর দিয়া পুল সাইডে দারিয়ে কথা বলছে এক সময় দিয়া বলে উঠলো,,
-তাহলে এখন আসি,
-ওয়েট,লাস্ট একটা ড্রিংক একসাথে,

বলে আরমান ড্রিংক আনতে গেল দিয়াকে অরেঞ্জ জুস আর নিজে স্টবেরি জুস নিল।দিয়া জুসের গ্লাসটা হাতে নিল আরমান তার গ্লাসের এক সিপ নিল,
-কি হলো খাও,আরে কিছুই মেশাই নেই ডোন্ট ওয়ারি,

দিয়া হাল্কা হাসার চেষ্টা করে বলল,
-আসলে আমি অরেঞ্জ জুস তেমন খাই না স্টবেরিটা খাই,

বলে আরমানের গ্লাসের দিকে তাকালো আরমান দিয়ার গ্লাসটা নিয়ে নিজের গ্লাসটা দিয়ার দিকে এগিয়ে দিল,
-মাত্র এক সিপ নিয়েছি খাবে?নাকি এক্সচেঞ্জ করে আনবো?

আরমান নিয়ে যেতে নিলে দিয়া ধরে ফেলে,
-ইটস ওকেহ সমস্যা নেই,

দিয়া খেতে লাগলো খেতে খেতে তারা কিছু কথা বলল। খাওয়া শেষ করে আরমানের থেকে বিদায় নিয়ে যাওয়ার জন্য ঘুরলো।যেইনা এক পা ফেলতে যাবে অমনি পা মচকে নিজেকে সামলাতে না পেরে পুরো পুলের উপর গিয়ে পরলো।হঠাৎ এভাবে তৎক্ষণাৎ দিয়া পুলে পরায় বেশ ঘাবরে যায় উপরে উঠার চেষ্টা চালায় আর বারববারে ডুবে যেতে লাগে।আরমান কোন কিছু না ভেবেই পুলে নেমে পরে দিয়াকে বাচাতে।দিয়াকে তুলে আনে দিয়া অনবরত কাপতে শুর করলো আরমান দিয়ার এমন কাপাকাপি দেখে তারাতারি করে দিয়াকে বাড়ির ভিতর নিল।নিজের রুমে নিয়ে বসালো টাওয়াল দিয়ে আস্তে আস্তে করে চুল মুছতে লাগলো।হুট করে দিয়া হাচি দিয়ে বসলো আরমান টাওয়াল সরিয়ে বলল,
-লাগিয়ে ফেললে তো নিজের ঠান্ডা,

দিয়া আরমানের কথা শুনে ভোলাভালা চেহারা করে বলল,
-আমি কোথায় লাগিয়েছি?
-যেটা পরতে পারে না সেটা যে কেন পরে মানুষ বুঝি না,

দিয়া চুপচাপ মানা নামিয়ে নাক টানতে লাগলো আরমান নিজের কাবার্ড থেকে একটা টি-শার্ট আর টাউজার এনে দিয়ার সামনে ধরলো।দিয়া টিসু দিয়ে নাক মুছে আরমানের দিকে জিজ্ঞেসা দৃষ্টিতে তাকালো,
-পরে নাও নাকি আমিই পরিয়ে দিব?

দিয়া তারাতারি আরমানের হাত থেকে সেগুলো নিয়ে ওয়াশ্রুমে চলে গেল। আরমানের দেওয়া টিশার্ট আর টাউজার পরে দিয়া বের হলো।টিশার্টটা শরিরের এপাশ ওপাশ করতে করতে বলল,
-এত্ত ঢিলেঢালা আরো কেউ আসতে পারবে এর মধ্যে,
-তাহলে আমি আসি?

চুল মুছতে মুছতে ঘরের ভিতরে ঢুকে বলল আরমান।দিয়া আরমানকে দেখে তারাতারি করে চোখে হাত দিল,
-এই আপনি এমন খালি গায়ে এসেছেন কেন?

আরমান কাবার্ডের কাছে গিয়ে জামা নিতে নিতে বলল,
-এইখান থেকে জামা নিব বলে,

দিয়া আংগুলের ফাক দিয়ে হাল্কা করে আরমানকে দেখে আরমান গেঞ্জি পরতে পরতে বলল,
-এইভাবে চুপিচুপি দেখার কি দরকার?বলো সামনা-সামনিই দেখাই,

দিয়া অন্যদিকে ফিরে হাল্কা কাশ দিয়ে বলল,
-কে,,কে বলল আমি আপনাকে দেখছিলাম?আমি মোটেও আপনাকে দেখছিলাম না,
-সে তোমার ব্যর্থতা,,

দিয়া বিছানার সামনে যেতে নিলে বেডের সাইড পায়ে লেগে যায় খুব করে দিয়া ব্যাথায় আর্তনাদ করে উঠে পা ধরে বসে পরে বিছানার কোন ঘেষে।আরমান জলদি করে এগিয়ে আসে দিয়ার দিকে দিয়া খিচে পা ধরে বসে আছে আরমান সাথে সাথে অয়েন্টমেন্ট লাগিয়ে দিয়ে ফু দিতে থাকে।দিয়া আরমানের দিকে নেশাঘোরে তাকিয়ে আছে আরমানের হাতটা শক্ত করে ধরলো আরমান পায়ের থেকে মুখ তুলে দিয়ার দিকে তাকালো দিয়া ধীরেধীরে আরমানের দিকে এগুতে লাগলো একদম আরমানের কাছ ঘেঁষে বসলো।দিয়া আরমানের এক গালে হাত রেখে ধীরেধীরে এগুতে লাগলো।আস্তে আস্তে করে ঠো* ঠো* মিশিয়ে দিল ঘভিরভাবে চুমু খেয়ে দিয়া আরমান ঘভির ভাবে শ্বাস নিতে লাগলো।
-দিয়া,,,,

আরমান কিছু বলতে নিলে দিয়া আরমানের ঠোঁটে আংগুল দেয়,,আরমানের ঠোঁটের খুব কাছে নিজের ঠোঁট নিয়ে বলে,
-কালকের চিন্তা বাদ দিয়ে আজকের উপর ফোকাস করো,,

বলে আরমানের ঠোঁ* ঠোঁ* ডুবিয়ে দিল।ধীরেধীরে অধর প্রেমের তলে তলিয়ে গেল তারা।

চলবে,,

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে