স্পর্শের_ভাষা part – 1+2
writer – তানিশা
— তিন্নির জ্ঞান ফিরতেই চোখদুটি মিটমিট করে খোলে দেখে সে আরাফের পাশে গাড়িতে বসে আছে। উঠে নড়েচড়ে আরাফকে কিছু বলতে যাবে তখনি টের পেলো তার হাত, পা রশি দিয়ে বাধাঁ। কিছু বলতে ও পারছেনা আরাফ তার মুখে একটা ওড়না দিয়ে বেধেঁ রেখেছে।
মুহূর্তে তিন্নির চোখদুটি রাগের চোটে লাল হয়ে গেছে। রাগে, ঘৃণায় একাকার হয়ে আরাফের দিকে আগুনের দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। আরাফ তিন্নির হাত, পা বেধেঁ জোর করে তাকে নিজের সাথে নিয়ে চলে যাচ্ছে।
আরাফ সামনে তাকিয়ে গাড়ি ড্রাইভ করছে, আর মাঝেমাঝে তিন্নির দিকে তাকিয়ে একটা মুচকি হাসি দিচ্ছে। আরাফের এই হাসিটা তিন্নির কাছে মোটেও সহ্য হচ্ছে না। আরাফের থেকে চোখ সরিয়ে তিন্নি বাহিরে তাকিয়ে আছে।
হঠাৎ কিছু একটা ভাবতেই তিন্নি ছটফট করতে শুরু করলো। তার হাত পায়ে বাধাঁ রশি গুলো খোলার চেষ্টা করছে কিন্তু পারছেনা। তা দেখে আরাফ বলল,,,
আরাফ : ছটফট করতে হবে না, আমরা চলে এসেছি। আর sorry… এভাবে বেধেঁ রাখার জন্য, এর থেকে ভালো কোনো উপায় আমার কাছে ছিলনা।
— কথাটা বলে আরাফ তার বাসার সামনে গাড়িটা ব্রেক করে, মোবাইলটা হাতে নিয়ে ছোট বোন আনহাকে কল করে। সাথে সাথে আনহা কল রিসিভ করে বলল,,,
আনহা : ভাবিকে নিয়ে এসেছো??
আরাফ : হ্যা, নিয়ে এসেছি। উপরে সব ready তো??
আনহা : সবকিছু ready তুমি শুধু ভাবিকে নিয়ে ভিতরে চলে আসো।
আরাফ : ok…
— আরাফ গাড়ি থেকে নেমে তিন্নিকে কোলে তুলে নিলো। তিন্নি তীক্ষ্ণদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তার দিকে। একটা সময় ছিল যখন তিন্নি নিজের সবটা উজাড় করে আরাফকে ভালবেসে ছিল। আজ এই মানুষটাই তার কাছে পৃথিবীর সব চাইতে ঘৃণিত মানুষ। যাকে চাইলেও সে দ্বিতীয়বার কখনো ভালবাসতে পারবেনা।
আরাফ তিন্নিকে কোলে নিয়ে বাসার মেইন ডোরে ঢোকতেই, তার বাবা আশরাফুল এহসান তিন্নিকে দেখে বলল,,,
বাবা : আরাফ মেয়েটার সাথে কাজটা তুই ঠিক করিসনি।
আরাফ : বাবা আজ প্রথম আমি একটা কাজ ঠিক করতে যাচ্ছি। আমি জানি তুমিও এটাই চাও।
— আশরাফুল এহসান কিছু না বলে ভিতরে চলে গেলেন। তিনি সবসময় চাইতেন তিন্নি এই বাড়ির বৌ হয়ে আসুক। ছোটবেলা থেকেই তিনি তিন্নিকে অনেক পছন্দ করতেন। কারণ তিন্নি একমাত্র মেয়ে যে, ছোটবেলা থেকে আরাফকে নিঃস্বার্থ ভালবেসে গেছে। যার ভালবাসায় ছিলনা কোনো খাদ, কোনো চাহিদা, কোনোকিছু পাওয়ার আশা। ছিল ১৫ বছরের অপেক্ষা আর এক বুক ভালবাসা।
আরাফ তিন্নিকে নিয়ে সিরি বেয়ে উপরে উঠে গেলো। নিজের রুমে গিয়ে তিন্নিকে কোল থেকে নামিয়ে বিছানায় বসিয়ে দিলো। ফ্লোরে হাটুগেঁরে বসে বিছানায় দুই হাতের কনুইতে ভর দিয়ে আরাফ তিন্নির দিকে অপলক তাকিয়ে আছে। খয়েরি বেনারসি শাড়ি, টানা টানা কাজল কালো চোখ, নাকে নলক, গা ভর্তি গহনা, মেহেদি রাঙ্গা হাতে দুহাত মুঠো চুড়ি, মায়াবী মুখটায় বধূ সাজে যেন কোনো অপ্সরীকে হার মানাবে। আরাফ মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে আছে তার মায়াবতীর দিকে। মেয়েটা কি সত্যি এতো সুন্দর? নাকি আরাফের কাছেই এমনটা মনে হচ্ছে? মনে হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে অপরূপা মেয়েটা তার সামনে বসে আছে। আর সে বেঘোরে মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে আছে তার দিকে।
আরাফের এই মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে থাকা তিন্নির কাছে মোটেও সহ্য হচ্ছেনা। তিন্নি নিজের মুখটা আরাফের থেকে অন্যদিকে ঘুরিয়ে নিয়েছে। এই মুহূর্তে ইচ্ছে করছে আরাফের চোখদুটি তোলে ফেলতে। কিন্তু তার হাত, পা দুটোই বাধাঁ তাই এই মুহূর্তে কিছু করা সম্ভব না।
আনহা এসে দরজায় নক করতেই আরাফ চমকে উঠলো। তিন্নির দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে ভুলেই গেছে এখন তাকে কি করতে হবে। আরাফ বসা থেকে উঠে কিছু বলতে যাবে তখনি আনহা বলল,,,
আনহা : ভাইয়া হয়েছে হয়েছে,, কিছু বলতে হবেনা। এখন কি কাঁজি আঙ্কেলকে আসতে বলবো?
আরাফ : আজ আমার বিয়ে!! আমার পরনের টিশার্ট দেখেছিস?? কেমন দেখাচ্ছে?? দাড়া একটা নতুন শেরওয়ানি পরে আসি। তারপর,,
— কথাটা বলার সাথে সাথে তিন্নি চোখদুটি বড় বড় করে আরাফের দিকে তাকিয়ে আছে। তিন্নির এমন তাকানো দেখে আরাফ বলল,,,
আরাফ : কি? অবাক হবার মতো কিছু বলিনি। আজ প্রথম তো আর আমাদের বিয়ের কথা হচ্ছে না। সেই ১৫ বছর আগে থেকেই তো তুমি এই দিনের অপেক্ষায় ছিলে। আজ তোমার সব অপেক্ষা আমি শেষ করে দিবো।
— কথাটা বলে আরাফ শেরওয়ানিটা হাতে নিয়ে চেঞ্জ করতে চলে গেলো। আনহা এসে তিন্নির পাশে বসতেই তিন্নি ছলছল চোখে তার দিকে তাকিয়ে আছে। হয়তো কিছু বলার চেষ্টা করছে। তিন্নির মুখে বাধাঁ ওড়নাটা আনহা খোলে দিলে তিন্নি বলল,,,
তিন্নি : আনহা প্লিজ আমার হাতের বাধঁনটা খোলে দাও। আমাকে যেতে হবে, আজ আমার বিয়ে। বাড়িতে সবাই আমার অপেক্ষায় আছে।
আনহা : ভাবি ভাইয়া তোমাকে অনেক ভালবাসে।
তিন্নি : তারচেয়ে অধিক পরিমাণ আমি নিজের আত্মসম্মানকে ভালবাসি। সেটা তুমি এবং তোমার ভাইয়া খুব ভালো করে জানো।
আনহা : ভাইয়া নিজের ভুল বুঝতে পেরেছে। ভাবি প্লিজ ভাইয়াকে ক্ষমা করে দাও। ( করুণ গলায় )
তিন্নি : সেটা আমার পক্ষে অসম্ভব। আর আমি তোমার ভাবি না।
— আরাফ বাথরুম থেকে বেরিয়ে শেরওয়ানির হাতাটা ঠিক করতে করতে বলল,,,
আরাফ : ভাবি না তো কি হয়েছে? কিছুক্ষণের মধ্যেই হয়ে যাবে। এতো তাড়া কিসের?
তিন্নি : “মিঃ রায়মান এহসান আরাফ” আপনি যদি দয়া করে আমার হাত, পায়ের বাধঁনটা খোলে দেন, আমি বাসায় যেতাম। আপনার বোনের ভাবি হবার তাড়া না থাকলেও অন্যকারো ভাবি হবার তাড়া আমার ঠিকি আছে। কারণ আমার হবু বর ফারহান এখনো আমার অপেক্ষায় আছে।
— আরাফ তিন্নির দিকে তাকিয়ে তার কথার কোনো তোয়াক্কা না করে আনহাকে বলল,,,
আরাফ : আনহা কাঁজি আঙ্কেলকে নিয়ে আয়। আমি বিয়ের জন্য সম্পূর্ণ তৈরি।
তিন্নি : কিন্তু আমি তৈরি না।
আরাফ : আমি তো ঠিকমতো বর সাজিনি। তুমিতো বেনারসি শাড়ি পরে নতুন বৌ সেজে বসে আছো। তোমাকে দেখে কে বলবে, তুমি বিয়ের জন্য তৈরি না।
— বলেই আরাফ হো হো করে হেসে দিলো। আরাফের হাসি দেখে তিন্নির রাগে গা জ্বলে যাচ্ছে। আনহা রুম থেকে বেরিয়ে গেলে, আরাফ তিন্নির কাছে গিয়ে তার হাত পায়ের রশি গুলো খুলে দেয়। তিন্নি মুক্ত হতেই বিছানা ছেড়ে উঠে রুম থেকে বেরিয়ে যেতে লাগলে, আরাফ তার হাত ধরে বলে,,,
আরাফ : কোথায় যাচ্ছো?
— কথাটা বলার সাথে সাথে তিন্নি আরাফের দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে বলল,,,
তিন্নি : আমার হাত ছাড়েন।
চলবে,,,
( ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন )
#স্পর্শের_ভাষা
writer – তানিশা
part – 2
আরাফ : ছাড়ার জন্য এই হাত ধরিনি। জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত একসাথে পথ চলার জন্য এই হাত ধরেছি।
তিন্নি : আপনার সাথে পথ চলার স্বপ্ন আমার সেদিন শেষ হয়ে গেছে, যেদিন আমি শর্তে হেরে গেছি।
আরাফ : তিন্নি তুমি তো বলেছিলে ভালবাসা কোনো শর্তে আবদ্ধ হয়না। আমি জানি তুমি এখনো আমাকে ভালবাসো।
তিন্নি : মিঃ “রায়মান এহসান আরাফ” আপনি হয়তো ভুলে যাচ্ছেন আমি “মালিহা মুন তিন্নি” নিজের আত্মসম্মানের থেকে বেশি কখনো কাউকে ভালবাসি না। যদি এমনটা ভেবে থাকেন এটা একান্ত আপনার ভুল ধারণা। অবশ্য আপনার সাথে আমার পথ চলার স্বপ্নটা সেদিন শেষ হয়নি যখন আমি শর্তে হেরে ছিলাম। স্বপ্নটা তখন ভেঙ্গে ছিল যখন আপনি আমার আত্মসম্মানে আঘাত করেছিলেন।
আরাফ : বললাম তো sorry… আর কতবার বলবো?? ভুল তো যে কেউ করতে পারে, তেমন আমারও হয়ে গেছে। আমি সত্যি অনুতপ্ত। আমি কি একটা second chance পাবার যোগ্য না??
— আরাফ অনেক বিনয়ী হয়ে কথা গুলো বলছিল। তখনি কাঁজি সাহেব আর আনহা তাদের রুমে চলে আসলো। আরাফ এখনো তিন্নির হাত ধরে আছে। আজ যদি তিন্নি তাকে ছেড়ে চলে যায়, আরাফ কখনোই তাকে আর ফিরে পাবেনা। কাঁজি সাহেব বিয়ের সব কাজ সম্পাদন করে তিন্নির দিকে রেজিস্ট্রি পেপার এগিয়ে দিলো সাইন করার জন্য। তিন্নি সাইন না করে চুপ করে বসে আছে। আরাফ তিন্নির দিকে একটা কলম এগিয়ে দিয়ে বলল,,,
আরাফ : সাইন করো।
তিন্নি : করবো না।
আরাফ : আমি বলছি সাইন করো।
তিন্নি : বললাম তো করবো না।
আরাফ : তোমাকে বলছি সাইন করতে।
তিন্নি : আমি সাইন করবো না। কি করবেন আপনি? ( উচু গলায় )
কাঁজি : সাইন না করলে বিয়ে হবে কিভাবে? আপনি কি এই বিয়ে নিজের ইচ্ছায় করছেন না?? ( তিন্নিকে )
তিন্নি : না।
আরাফ : কাঁজি আঙ্কেল এই মেয়েকে দেখে কি আপনার মনে হচ্ছে এই মেয়েকে আমি জোর করে বিয়ে করতে চাইছি?? আপনিই বলেন কাউকে জোর করে এতো সুন্দর বৌ সাজানো যায়?? আমাকে দেখে কি আপনার মনে হয়না এই মেয়ে আমাকে জোর করে বিয়ে করতে চাইছে। মাথায় পাগড়ী নেই, ভালো একটা শেরওয়ানি পরিনি। আমার তো কপালটাই খারাপ। কোথায় ভেবেছিলাম অনেক বড় অনুষ্ঠান করে, ধুমধাম করে বিয়ে করবো। পুরো এলাকার মানুষকে আমার বিয়েতে ইনভাইট করবো। তা আর হলো না। এই মেয়ে এতো তাড়া দিচ্ছে যে বিয়েটা আজকেই করতে হচ্ছে।
— কথাটা বলে আরাফ তিন্নির দিকে তাকাতেই দেখে সে আরাফের দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে,,,
আরাফ : এভাবে তাকিয়ে আছো কেন? মনে হচ্ছে চোখ দিয়েই গিলে খেয়ে ফেলবে।
তিন্নি : সময় থাকতে চুপ হয়ে যান,,
আরাফ : কেন কিছু ভুল বললাম নাকি? এতক্ষণ তো বিয়ের জন্য লাফাচ্ছিলে এখন এমন করছো কেন?
তিন্নি : আমি বিয়ের জন্য লাফাচ্ছিলাম? নাকি আপনি আমাকে আমার বিয়ের আসর থেকে জোর করে তুলে নিয়ে এসেছেন?
আরাফ : তোমাকে বিয়ের আসর থেকে কই জোর করে তুলে নিয়ে আসলাম? তুমি পার্লার থেকে বাসায় ফিরছিলে সেখান থেকে নিয়ে এসেছি। একবার ও তো বলোনি আমার সাথে আসবেনা।
তিন্নি : বলবো কিভাবে? আমাকে বেহুশ করে দিয়েছেন। ( রাগে গজগজ করে )
আরাফ : আচ্ছা বাদ দাও,, আজ তোমার বিয়ে। বিয়ে যার সাথেই হোক তাতে কি? আমাকে বিয়ে করো আর যাকেই করো, তোমার বিয়ে করা দরকার তুমি বিয়ে করো। রেজিস্ট্রি পেপারে সাইন করে কবুল বললেই হয়ে গেলো আমাদের বিয়ে। ব্যস আর কি চাই?
তিন্নি : আপনি কি বুঝতে পারছেন না? যার নাম নিতে আমার রুচিতে বাধেঁ, যাকে কল্পনা করতেও আমার ঘৃণা হয়। তাকে বিয়ে আমার জীবন সাজাবো, এটা আমার পক্ষে সম্ভব না।
— আরাফ ভাবেনি তিন্নি তাকে এতটা ঘৃণা করে। হয়তো এটা তার প্রাপ্য ছিল। এটা ভেবেই নিজেকে সামলে নিয়ে ছোট্ট একটা হাসি দিয়ে বলল,,,
আরাফ : চাইলে সবকিছু সম্ভব।
তিন্নি : আমি আপনাকে ঘৃণা করি। ঘৃণার মানে বুঝেন না??
— এমন পরিস্থিতি দেখে কাঁজি সাহেব কিছুটা বিরক্তি নিয়ে বললেন,,,
কাঁজি : আপনারা কি সত্যি বিয়ে করবেন? নাকি করবেন না??
আরাফ : কাঁজি আঙ্কেল আপনি আমাকে ৫ মিনিট সময় দিন। আমি ওর সাথে একটু আলাদা কথা বলতে চাই।
কাঁজি : ঠিক আছে আমি বাহিরে অপেক্ষা করছি। আপনাদের কথা শেষ করে আমাকে মতামত জানান।
আরাফ : হুম
— কাঁজি সাহেব আর আনহা বাহিরে চলে গেলে আরাফ দরজাটা বন্ধ করে এসে তিন্নিকে বলল,,,
আরাফ : তুমি কি রেজিস্ট্রি পেপারে সাইন করবে নাকি? ( চোখ রাঙ্গিয়ে )
তিন্নি : নাকি? কি করবেন শুনি? ( ভ্রু কুচকে )
আরাফ : কি করবো সেটাতো সময় হলে দেখতেই পাবে।
তিন্নি : জোর করে বিয়ে করবেন??
আরাফ : প্রয়োজনে তাই করবো।
তিন্নি : আমি বিয়ে করবো না। সারাজীবন চিরকুমারী হয়ে থাকবো তবুও আপনাকে বিয়ে করবো না।
আরাফ : নিজের আত্মসম্মানকে খুব ভালবাসো তাইনা?? ( তীক্ষ্ণদৃষ্টিতে )
তিন্নি : কোনো? সন্দেহ আছে??
আরাফ : নিজের আত্মসম্মান, সতীত্ব বাচিয়ে যেতে পারবে আমার হাত থেকে??
তিন্নি : কি বলতে চাইছেন?
আরাফ : আমি কি বলতে চাইছি তুমি বুঝতে পারছো না??
— আরাফ কি বলতে চাইছে তিন্নি খুব ভালভাবে বুঝতে পারছে। তাই আরাফের থেকে পিছুপা হতে লাগলে, আরাফ তার হাত ছেড়ে কোমড় জড়িয়ে ধরে একটানে নিজের কাছে নিয়ে বলল,,,
আরাফ : কোথায় যাচ্ছো?? আমি না চাইলে তুমি এই বাড়ি থেকে তো দূরের কথা, এই রুম থেকে কোথাও যেতে পারবে না। তুমি বিয়ে করো আর না করো তোমাকে আমার সাথেই থাকতে হবে। যদি বৈধ ভাবে থাকতে চাও তো রেজিস্ট্রি পেপারে সাইন করে দাও। আর অবৈধ ভাবে নিজের সতীত্ব, আত্মসম্মান বিলিয়ে থাকতে চাইলে আমার কিছু যায় আসেনা। আমি শুধু তোমাকে চাই। হোক বৈধ বা অবৈধ।
— আরাফ খুব ভালভাবে জানে এই কথা গুলো বলার পর তিন্নি তাকে আরো বেশি ঘৃণা করবে। কিন্তু তিন্নিকে সে এতটা ভালবাসে যে,, এখন আর তিন্নিকে ছাড়া থাকা তার পক্ষে সম্ভব না।
তিন্নি বিষময় নিয়ে আরাফের দিকে তাকিয়ে আছে। সত্যি কি একটা সময় এই মানুষটাকে নিজের সবটা উজাড় করে ভালবেসে ছিল তিন্নি? যার কাছে তার আত্মসম্মানের কোনো মূল্য নেই। আজ তার নিজের প্রতি ঘৃণা হচ্ছে। কেন সে এই মানুষটাকে ভালবেসে ছিল?? মানুষ চিনতে তো কখনো ভুল করতো না তিন্নি। তাহলে আরাফকে চিনতে এতবড় ভুল কিভাবে করলো?? তিন্নি আরাফের চোখে চোখ রেখে বলল,,,
তিন্নি : সরাসরি বললেই পারেন আমার দেহটা চাই আপনার।
আরাফ : তুমি আবারও ভুল ভাবছো, তোমার সবটা চাই আমার।
তিন্নি : অবৈধ ভাবে নিজের আত্মসম্মান বিলিয়ে থাকবো এটা তো আমার পক্ষে সম্ভব না। বিয়েটা আমি অবশ্যই করবো। তবে একটা বিষয় খুব ভালভাবে ভেবে দেখেন বিয়ের পর আবার আপনাকে যেন অনুতপ্ত না হতে হয়।
আরাফ : এই ১ সপ্তাহ অনেক ভেবেছি আর ভাবতে চাই না।
— আরাফ আর তিন্নির বিয়েটা হয়ে গেলো। তিন্নি একপ্রকার আরাফের সাথে জেদ করেই বিয়েটা করেছে। আরাফকে ভালবেসে যে প্রতিদান সে পেয়েছে, বিয়ের পর যেন সেগুলো একটা একটা করে আরাফকে ফেরত দিতে পারে সে জন্য।
চলবে,,,
( ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন )