#স্নিগ্ধ_অনুভব
#সূচনা_পর্ব
#পিচ্চি_লেখিকা
“ঠাসস ঠাসসস…বের হ আমার রুম থেকে।তোকে আমার রুমে দেখলে এখন ২ টা দিছি তখন ৪ টা দিবো।”
ইসস এত জোড়ে কেউ মারে নাকি?নিষ্ঠুর লোক একটা..একটু মায়া দয়া কিচ্ছু নেই। বাসর রাতেও বুঝি বরের মাইর খেতে হয় এ কেমন নিয়ম রে বাবা আগে জানলে জিবনেও বিয়ে করতাম না।
” এখনো সঙ সেজে দাঁড়িয়ে আছিস কেন? আরো কয়েকটা থাপ্পড় খাবি তুই?”
এ কেমন বর রে বাবা?এই রুম থেকে বের হলেও এখন এত গুলা কথা শুনতে হবে!কি করি এখন?মিনমিন করে অনুভব ভাইয়ার উদ্দেশ্যে বললাম,,
“এখন এই রুম থেকে বের হলে হাজারটা প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হবে..বাইরে না গেলে হয় না?”
উনি তেড়ে এসে বললেন,,
” যে তোকে প্রশ্ন করবে তার গলা চেপে ধরবি কিন্তু তোর এই রুম থেকে বের হতেই হবে নয়তো আমি তোকে খুন করে ফেলবো।”
এই লোকের যা রাগ তাতে যে সত্যি আমাকে খুন করবে না এর কোনো বিশ্বাস নেই। অগত্যা গুটিগুটি পায়ে বের হতে যাচ্ছিলাম তখনই পেছন থেকে অনুভব ভাইয়ার ডাক,,
“এই দাড়া..তোকে বের করে দিলে তো আম্মু আবার শুরু হয়ে যাবে। এই রুমেই থাক।”
এটুকু বলেই আমাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই বড় বড় পা ফেলে বাইরে চলে গেলো। এ কেমন লোক? সব সময় রাগ যেনো নাকের ডগায় এসে থাকে।
আমি আফিয়া খানম স্নিগ্ধা আর যে এতক্ষণ বের করে দিচ্ছিলো উনি আহান আবরার অনুভব আমার মামুনির ছেলে। খালাতো ভাই সম্পর্কে। তবে আজ আমাদের বিয়ে হয়ে যাওয়ায় সম্পর্কও বদলে গেছে। আমার জন্মের সময়ই আমার মা মারা যায়। যখন ৮ বছর বয়স তখন বাবা হার্ট অ্যাটাকে মারা যায়। তখন থেকেই আমি মামুনিদের সাথে থাকি। এই বাড়ির সবাই আমাকে খুব ভালোবাসে শুধু এই খাড়ুশ অনুভব ভাইয়া আর উনার ছোট কাকি আমাকে সহ্য করতে পারে না। ছোট বেলা থেকেই অনুভব ভাইয়ার সাথে আমার দারুন ভাব ছিল কিন্তু ৫ বছর আগে দেশের বাহিরে যান পড়াশোনার জন্য। ৬ মাস আগে দেশে ফিরেছেন কিন্তু আগের থেকেও বেশি রাগী আর জেদি হয়ে। সব সময় খিটমিট করে। রাগ তো নাকের ডগায় থাকে। উনি একজন ডক্টর হলেও উনার মনে মায়া দয়ার ছিটে ফোটাও আছে কি না আমার সন্দেহ। মামুনি আর বাবাইয়ের কথায় অনুভব ভাইয়া আমাকে বিয়ে করতে বাধ্য হয়। তাই তো বিয়ের প্রথম রাতেই টপাটপ থাপ্পড় খেয়ে বসে আছি। উনি আমাকে ২ চোখে সহ্য করতে পারে না আর আমি যতবারই দেখি ক্রাশ নামক বাশ খেয়ে পেট ভড়িয়ে ফেলি পরমুহূর্তেই আবার থাপ্পড় খেতে হয়। এই ৬ মাসেই কত থাপ্পড় খেয়েছি ঠিক নাই। ওত থাপ্পড় গুনতে গেলেই আমার গাল ব্যাথা করবে বাবা। প্রতিদিন আস্তেই মারে আজ এত জোড়ে কেন মারলো কে জানে? ইসস আমার গাল গুলো শেষ একদম।
অনুভব ভাইয়া আসবে কি না জানি না তবে এখন আমার ঘাপটি মেরে শুয়ে পড়াটাই ভালো নয়তো আবারও খেতে হবে টপাটপ। ওরে বাবা আমি নাই। ঘাপটি মেরে শুয়ে পড়লাম। কখন ঘুমিয়ে পড়েছি মনে নাই।
___________________🍁
সূর্যের আলো মুখে পড়তেই চোখ মুখ কুচকে ফেললাম। আজকাল এই সূর্য মামা বড্ড জালায়। ঘুমোতেই দেয় না। অনিচ্ছা শর্তেও আড়মোড়া কাটিয়ে উঠলাম। ওয়াশরুমের জন্য পা বাড়াতেই দেখলাম সোফায় অনুভব ভাইয়া বিড়ালের বাচ্চার মতো জড়োসড়ো হয়ে শুয়ে আছে। এখন উনাকে দেখলে কেউ বলবে না যে উনি কেমন। একদম বাচ্চাদের মতো করে শুয়ে আছে। এক ফালি চুল কপালের উপর সুন্দুর করে পড়ে রয়েছে। চাপ দাড়ি গুলো মুখে ঠেসে রয়েছে আর ঠোটের নিচের তিল টা আয় হায় আমি শেষ। উনার এই ঘুমন্ত চেহারা দেখে নিজেকে না দমিয়ে উনার কাছে গিয়ে বসলাম। বিড়বিড় করে বলে উঠলাম,,
“এই ঘুমন্ত অনুভবের মতোই যদি এতটাই মায়াময় হতো এই অনুভবটা। যদি এই স্নিগ্ধার অনুভব হতো ইসস কতই না ভালো হতো। এই না না আমি এসব ভাবছি জানলে আমার কপালে আরো থাপ্পড় আছে।”
কি মনে করে উনার দিকে ঝুকে কপালের কাছে ওষ্ঠ নিতেই উনি চোখ মেলে তাকালেন আমার তো জান যায় যায় অবস্থা। কোনো রকম উনার থেকে ২ মিটার সরে দাঁড়ালাম।
” কি করছিলি তুই?”
“আব ইয়ে মানে..”
” কি ইয়ে মানে করছিস? কি করছিলি আমার এখানে?(ধমক দিয়ে)”
এবার কি করি? কেন আসতে গেছিলি স্নিগ্ধু তুই?নে এবার বাশ খা থুক্কু থাপ্পড় খা।
“এই🤬কথা বল নয়তো তোকে এখন..”
“আম..আমি তো আপনাকে ডাকতে এসেছিলাম। আপনি ত তো কেমন বি বিড়ালের বা বাচ্চার মতো জড়োসড়ো হয়ে শুয়ে ছিলেন।”
“এই তুই কি বললি?আমি বিড়ালের বাচ্চার মতো জড়োসড়ো হয়ে শুয়ে ছিলাম!”
হায় হায় এক ঝামেলা এড়াতে গিয়ে আরেক ঝামেলায় পড়লাম ভাগ স্নিগ্ধু ভাগ।
কোনো কথা না বলেই এক দৌড়ে ওয়াশরুমে ঢুকে গেলাম। ভয়ে জানের পানি সব শুকিয়ে গেছিলো আল্লাহ বাচায়ছে। ফ্রেশ হয়ে নিলাম তাড়াতাড়ি..তারপর চুপি চুপি বাইরে এসে দেখি অনুভব ভাইয়া রুমে নাই। এই সুযোগে এক দৌড়ে লিভিং রুমে চলে আসলাম। মামুনি,বাবাই,তিশা আপু,কাকা,কাকি,তুবা,তুষার ভাইয়া সবাই আছে লিভিং রুমে। আমাকে দেখে মামুনি কিছু বলতে যাবে তখনই কাকি বলে উঠলো….
“জমিদারের মেয়ের তবে ঘুম ভাঙলো! আমি তো ভেবেছিলাম ১২ টার আগে তোর ঘুমই ভাঙবে না।”
মামুনি কাকিকে ধমক দিয়ে বললো,,
” চুপ কর ছোট। সব সময় ওকে ত্যাড়া ত্যাড়া কথা বলবি না। ও এখন এই বাড়ির বউ। স্নিগ্ধু এদিকে আয় তো।”
“না আম্মু এখন আমি স্নিগ্ধুকে তোমার কাছে যেতে দিচ্ছি না,,আমরা এখন আড্ডা দেবো।” (তিশা)
“তিশু ছাড় ওকে। আগে ব্রেকফাস্ট করুক তার পর যা ইচ্ছা করিস।” (মামুনি)
“কি রে স্নিগ্ধু তোর ক্ষুদা লাগছে?” (তিশা)
“আরে না। আমার ক্ষুদা লাগে নাই চলো ছাদে যায়। ওহ মামুনি পরে খেয়ে নিবো।”
“তোর পেট নাকি অন্য কিছু? ক্ষুদা লাগে না কেন তোর?”
মনে মনে বললাম,,
“তোমার ছেলে সকাল সকাল যে ধমক দিছে পেট তো ফুল হয়ে গেছে গো মামুনি।
ইয়ে আসলে মামুনি পরে খাবো এখন যায়।”
এটুকু বলেই তিশা আপু আমি তুবা আর তুষার ভাইয়া ছাদের দিকে যেতে লাগলাম তখনই কেউ বলে উঠলো,,
“ব্রেকফাস্ট করে যার যেখানে যায়তে ইচ্ছা হয় যাক। এখন চুপচাপ যেন ডাইনিং এ বসা হয়।”
চলবে।
#স্নিগ্ধ_অনুভব
#পার্ট:২
#পিচ্চি_লেখিকা
ছাদে যাওয়ার জন্য পা বাড়াতেই পিছন থেকে কেউ বলে উঠলো,,
“ব্রেকফাস্ট করে যার যেখানে যায়তে ইচ্ছা হয় যাক। এখন যেন চুপচাপ ডাইনিং এ বসা হয়।”
কে এত সুন্দর করে আদেশ বানী ছুড়লো তা দেখার জন্য পিছে তাকাতেই জানের মধ্যে যা পানি ছিলো সব শুকিয়ে গেলো। অনুভব ভাইয়া বলেছে এসব কথা। এখন যদি উনার কথা না শুনে ছাদে যায় তাহলে রুমে গিয়ে আবারো থাপ্পড় খেতে হবে। না বাবা এর থেকে ব্রেকফাস্ট করায় ভালো। তাই তিশা আপুর থেকে দুরত্ব নিয়ে ভেজা বিড়ালের মতো ডাইনিং এ গিয়ে চুপটি করে বসে পড়লাম। চুপচাপ বসে খাচ্ছি সামনে অনুভব ভাইয়া বসেছে আরাম করে সব খাবার খাচ্ছে। তিশা আপুর দিকে তাকিয়ে দেখি মিটমিট করে হাসছে। আমার এই অবস্থায় ওদের হাসি পাছে স্বার্থপর একেকটা। খাওয়া শেষ করে তিশা আপুর সাথে ছাদে গেলাম আর অনুভব ভাইয়া হসপিটালে গেলো। তুষার ভাইয়া আর তিশা আপু আমর বড়। তুবা আমার ছোট। তুষার ভাইয়া আর তুবা ওরা ভাই বোন আর তিশা আপু আর অনুভব ওরা ২ জন ভাইবোন। তুষার ভাইয়া কাকার বিজনেস সামলায়। কবে যেনো বিয়ে করিয়ে দেয়।
“কিরে স্নিগ্ধু তোর ফার্স্ট নাইট কেমন কাটলো?” (তিশা আপু)
“কেমন কাটবে আবার?তোমার যা ভাই তাতে আমার যেমন কাটার তেমনই কাটলো!”
“এটা কেমন হলো বল তো তিশু আমি আর অনুভব তো একই বয়সের তাহলে আমি থাকতে তোর ভাই আগে বিয়ে করে নিলো কেমনে!” (তুষার ভাইয়া)
“হাহ কপাল লাগে কপাল। সেই কপাল তোমার নাই। তা স্নিগ্ধু কাল ও কি থাপ্পড় টাপ্পড় খায়ছিস নাকি?”
আমি একটু ভাব নিয়ে বললাম,,
“তোমার ভাইয়ের এত সাহস আছে নাকি হুহ!এই স্নিগ্ধুকে মারা এত সহজ না। আমাকে মারতে আসলে তো আমিই তোমার ভাইকে ফুটো করে ফেলবো। আর তোমার ভাইয়ের ওতো সাহস নেই যে আমার সাথে পাঙ্গা নেবে!সে তো আমাকে ভয় পায়। ভয়ে হাত পা শুদ্ধ কাপায়😎”
“ওহ আচ্ছা তাই বুঝি?”
আমি তখনও ভাব নিয়েই বললাম,,
“হু এটাই। বাট তুষার ভাইয়া তোমার কন্ঠ হঠাৎ করে ওই এলিয়েন অনুভব ভাইয়ার মতো লাগে কেন?”
“কারন তোর পিছনে শয়ং অনুভব দাঁড়িয়ে। ভাগ স্নিগ্ধু ভাগ।”
এটুকু বলেই তিশা আপুরা দৌড়। ঘটনার এমন আকস্মিকতায় হকচকিয়ে উঠতে যেতেই অনুভব ভাইয়া আমার একদম কাছে এসে দাড়ায়।
“হ্যা কি বলছিলি? অনুভব তোকে ভয় পায়?অনুভব তোকে মারার সাহসই রাখে না!আর শেষে কি বললি অনুভব এলিয়েন?”
আমি উনার কথায় হাসবো না কাদবো বুঝতেই পারছি না। রিয়েকশন করতেই ভুলে গেছি। এখন আমার কি হবে আল্লাহ গো। এই এলিয়েন তো আমাকে খেয়ে ফেলবে। আমি কাঁদো কাঁদো মুখ নিয়ে বাচ্চা ফেসে বললাম,,
“আমি কি এসব বলতে পারি ভাইয়া। আমার ঘাড়ে কয়টা মাথা?যে এস…..
” ঢং করবি না একদম। এতই যদি গল্প শোনাতে মন চায় বলবি যে বাসর ঘরে থাপ্পর খায়ছি। এখন থাপ্পড় খায়তে না চাইলে নিচে গিয়ে রেডি হ ভার্সিটি যাবি।”
“এ্যাাাহ..বিয়ের পরেরদিনই কেউ ভার্সিটি যায়? এ কেমন নিয়ম?”
“এটা আমার নিয়ম। তুই যাবি নাকি আমি….
” যাচ্ছি যাচ্ছি।”
এক দৌড়ে নিজের রুমে এসে আগে দরজা লাগিয়ে দিয়েছি। জীবনে কোনো মেয়েকে দেখিনি বিয়ের পরেরদিনই ভার্সিটি যেতে এ কেমন নিয়ম আমার জামাইয়ের? এলিয়েন একটা। রসকস কিছুই নাই। এখন আবার ভার্সিটি যেতে হবে ধুর ধুর ভালোই লাগে না।
রেডি হয়ে ব্যাগ নিয়ে চলে আসলাম লিভিং রুমে। সেখানে মামুনি বাবাই অনুভব ভাইয়া কাকা কাকি কি নিয়ে যেন গম্ভীর মুখ করে বসে আছে। আমাকে আসতে দেখেই অনুভব ভাইয়া কিছু বলতে না দিয়ে হাত ধরে টানতে টানতে গাড়ির কাছে নিয়ে গেলো।আজব তো! এমন টানাটানির কি আছে? আমি নিজেই তো আসতে পারি। তারপর গাড়িতে উঠিয়ে গাড়ি স্টার্ট দিলো কোনো কথা বলছে না। এই লোকের কাছে কথা বলার আশা করা মানেই থাপ্পড় থাক বাবা আমি বাইরে তাকায় থাকি। পুরো রাস্তায় উনি আমার সাথে একটাও কথা বলেনি। আমিও ভয়ে বলিনি যে রাগ দরকার নাই কথা বলার। ভার্সিটির সামনে গাড়ি থামতেই নামতে লাগলাম তখনই কড়া কন্ঠে বলে উঠলো,,
“বেশি ধ্যায় ধ্যায় করে নাচবি না নয়তো বাড়ি নিয়ে গিয়ে ছাদ থেকে ফেলে দিবো। আর আমি তোকে নিয়ে যাবো যাওয়ার সময় একা একা যাওয়ার কথা চিন্তা করলে কি হবে সেইটা তুইও জানিস এবার যা।”
আমি উনার কথায় কয়েকটা শুকনো ঢোক গিলে মাথা নাড়িয়ে তাড়াতাড়ি ভার্সিটির ভেতরে ঢুকে গেলাম। গিয়ে সপাং করে ২ বান্ধবীর মাঝে বসলাম।
“কিরে স্নিগ্ধু তুই কার গাড়ি থেকে নামলি রে?”(মেঘলা)
” পানি খাবো!
আমার ভ্যাবাচ্যাকা কথায় ২ জনই চমকে উঠে বললো,,
“কি জিজ্ঞেস করলাম আর কি বলিস?এত হাঁপাচ্ছিস কেন?”(তন্নি)
“বলছি আগে পানি খাওয়া।”
মেঘলা ব্যাগ থেকে একটা পানির বোতল এগিয়ে দিতেই ঢকঢক করে সব শেষ করে ফেললাম। পানি খেয়ে ২ জনের দিকে তাকিয়ে দেখি হা করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে আমার দিকে।
“কি? এরকম হা করে সবাই কি দেখছিস?”
“তুই এমন করে পানি খেলি মনে হলো জিবনেও পানি খাসনি!(তন্নি)
” ওই চুপ। জানিস আজ কোন রাক্ষসের হাতে পড়েছি?”
“কার সাথে ভার্সিটি এলি সেটাই বল!”
“অনুভব ভাইয়ার সাথে এসেছি।”
আমার কথা শুনে ২ জনই চোখ বড় বড় করে তাকালো। মেঘলা আমার গাল ধরে একবার এদিক একবার ওদিক করছে।
“থাপ্পড় কয়টা খায়ছিস বইন?”
“আজ এখনো খায়নি যা খাওয়ার কাল খাইছি। ইসস এখনো গাল ২ টা ব্যাথা করছে।”
মেঘলা কিছু বলতে যাবে তখনি মেঘলা কে থামিয়ে তন্নি লাফিয়ে উঠে বললো,,
“আরে আমার ক্রাাশ আইছিলো আর আমি দেখা করতে পারলাম না। হায় গো। ইসসস আজ দেখলে প্রোপোজ টা করেই দিতাম।”
“ওই ছেরি ওই কয়টা লাগে তোর? তোর না বফ আছে৷ আর অনুভব ভাইয়ার দিকে এখন আর নজর দিবি না উনি এখন বিবাহিত।”
আমার কথা শুনে ২ জনেই লাফিয়ে উঠে বললো,,
“২ দিন আগেই না দেখলাম উনি সিঙ্গেল আজই আবার কেমনে মেরিড হয়ে গেলো?”
আমি জিভ দিয়ে ওষ্ঠ ভিজিয়ে নিয়ে বললাম,,
“কালই উনার আর আমার বিয়ে হয়ে গেছে!”
“কিহ😳..স্নিগ্ধু তোর জ্বর টর এসেছে নাকি? কি উলটা পালটা বকছিস? অনুভব ভাইয়া তোকে দেখলেই থাপ্পড় মারে আর সেই তোর সাথেই কি না বিয়ে হয়ে গেছে? মজা করার জায়গা পাস না!”(মেঘলা)
“মজা করছি না মেঘু!সত্যি কাল উনার আর আমার বিয়ে হয়ে গেছে।”
তারপর দুজনকেই সবটা বললাম। মামুনির জোড় করা থেকে ভার্সিটি আসা পর্যন্ত সব। সব কথা শুনে দুজন কিছুক্ষণ থ মেরে বসে থেকে হো হো করে হেসে উঠলো,,
“সিরিয়াসলি স্নিগ্ধু তুই বাসর ঘরেও থাপ্পড় খেয়েছিস। ওহ মাই গড..”
“ওই ছেরি তুই আমার ক্রাশরে বিয়া কইরা ফেললি এহন আমার কি অইবো?”
“কি আবার হবে? নতুন করে ক্রাশ খোজ।”
“ধুর শাকচুন্নি কামডা ঠিল করলি না।”
“ওই সর।”
“আচ্ছা সব মানলাম আমাগো না কইয়া তুই বিয়া কইরা ফেললি?এই তুই বান্ধুপি..?”
“সরি রে..আমি নিজেও জানতাম না আমার বিয়ে।”
“এই দুজন থাম চল তো ক্লাসে চল।”
“হুম চল।”
৩ জন ক্লাসে চলে গেলাম। মন দিয়ে ক্লাস শেষ করে অনুভব ভাইয়া কে ফোন দিলাম,,
“কি হয়েছে?”
“ইয়ে আসলে আমার তো ক্লাস শেষ। একাই বাড়ি যাবো নাকি বান্ধবীদের সাথে আড্ডা দিবো তাই…
” তুই বাইরে আয় আমি আসছি।”
“আচ্ছা।”
ভার্সিটি থেকে বেরিয়ে আসতে যাবো তখনই ফাহিম ভাইয়ার সাথে দেখা। ফাহিম ভাইয়া মেঘলা আপুর বফ ছিলো এখন অবশ্য ফিয়ন্সে। ফাহিম ভাইয়া আমাকে দেখে এগিয়ে এসে বললো,,
“কি গো শালিকা তোমার সাথকার আর ২ টা কই?”
“আরে জিজু ২ টার খোজই নিচ্ছেন নাকি যে কোনো একজনের হুম?”
“ওই আরকি..
” বুঝেছি বুঝেছি যান ওরা ভেতরে আছে।
ফাহিম ভাইয়া মুচকি হেসে বাই দিয়ে চলে গেলেই আমিও হাসি মুখে সামনে তাকাতেই থাপ্পড় পড়লো গালে….
চলবে…
(ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন ❤️)
হ্যাপি রিডিং😊