শ্রাবণের মেঘ পর্ব_১৩

0
1390

#শ্রাবণের_মেঘ?
#পর্ব_১৩
#Tabassum_Kotha

” তুই এই অবেলায় এখানে কিভাবে এলি?”

খান বাড়ি পৌঁছে খুব সাবধানে সবার নজর এড়িয়ে নিতুর ঘরে ঢুকে পরলাম। এমন অবেলায়ায় নিতুর ঘরে আমাকে দেখে নিতু ভুত দেখার মতো চমকে উঠে কথাটা বললো।

— তোর এতো প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সময় আমার নেই। নীল স্যার কোথায়? খুব প্রয়োজন তাকে একটু ডেকে দে।

— হয়েছে টা কি বলবি তো!

— পরে সব সময় করে বলবো এখন ডেকে দে না!

— তুই বস আর পানি খা আমি ডাকছি নীল ভাইয়া কে।

নিতু নীল কে ডাকার জন্য ঘরের বাহির হতেই সামনে রাখা কাঁচের জগ থেকে একগ্লাস পানি ঢেলে ঢকঢক করে পুরোটা খেয়ে নিলাম। তবুও শান্তি পাচ্ছি না। শুনেছিলাম বিয়ের কথা শুনে বাঙালী মেয়েরা নাকি লজ্জা পায়। আর আমার তো টেনশনে কলিজার পানি শুকিয়ে যাচ্ছে। কি থেকে কি হবে কে জানে। সব দোষ আমার আমিই জেদ ধরে বসেছিলাম ডেট এ যাওয়ার। লাইফের ফার্স্ট ডেট এ গিয়েই ধরা খেয়ে গেলাম। তাও আবার আব্বুর সামনে! ডেট এ যাওয়া শখ আমার জনমকার মতো ঘুচে গেছে।

নীল কে কিভাবে বলবো বিয়ের কথা! আর আদনান ভাইয়াই বা কতো বড় ছ্যাঁচড়া, লুচি পরোটা, পেত্নি! কালকেই মাত্র বেড়াতে এলো আমাদের বাড়ি আর আজ কি না আমাকে বিয়ে করতে চায়! ওই লুচির যদি আমি দম আলু বের না করেছি তো আমার নাম ও কথা না। না থুরি আমিও নীল এর বউ না!! দেখে নেবো আদনানের বাচ্চা তোকে! তুই আমাকে এখনও চিনিস না। তোকে কুচি কুচি করে কেটে সেই কাটা জায়গায় মন্টু মামার ফুচকার টক পানি যদি না ঢুকিয়েছি তবে দেখে নিস!

“একা একা কি বকবক করছিস?”– নীল এর ডাকে কথার ভাবনার সুঁতো কাটে।

— দেখে তো মনে হচ্ছে কারো চৌদ্দ গোষ্ঠী উদ্ধার করছিস। কিন্তু কারণ টা তো বল!

— তুমি তো কথাই বলো না। তোমার শ্বশুড় তোমার বউ এর বিয়ে দিয়ে দিচ্ছে।

— মানে! কি বলছিস তুই?

— আব্বু আমার বিয়ের কথা চালাচ্ছেন।

— হোয়াট! কিন্তু কেনো? আর কার সাথে?

নীল কে বাসায় যা যা হয়েছে সব খুলে বললাম। আমার কথা শুনে নীল ধপ করে সোফায় বসে পরলেন। আমি ভেবেছিলাম নীল রাগে আগ্নেয়গিরির লাভার মতো ফেঁটে পরবেন। কিন্তু আমি তো তেমন কিছুই দেখতে পাচ্ছি না তার মধ্যে। সে তো খুব ঠান্ডাভাবে বসে আছে!
আমি ভ্রুঁ কুচকে তাকিয়ে আছি নীল এর দিকে আর বোঝার চেষ্টা করছি সে কি চিন্তা করছে। কিন্তু বুঝে উঠতে পারছি না। সে আগের ভঙ্গিতেই বসে আছে।


“নীল তোমার কফি।” — নীল কে কিছু বলার আগেই পিছন থেকে একটা মেয়েলি কন্ঠ কথা টা বলে উঠলো।

ভীষণ মিষ্টি একটা কন্ঠের আভাস পেয়ে পিছনে তাকাতেই আমার চোখ ছানাবড়া।

কমোলিকার মতো দেখতে একটা মেয়ে খুবই স্টাইল মেরে দুই মগ কফি হাতে দাড়িয়ে আছে নিতুর ঘরের সামনে। মেয়েটাকে প্রথম দেখাতেই আমার কসোটি জিন্দেগি কি এর কমোলিকার কথা মনে এলো কেনো? আমার আর নীল এর জীবনের কমোলিকা নয়তো কোনো দিক দিয়ে মেয়েটা! অবশ্য ঢং ঢাং ভ্যাম্পের মতোই। মেয়েটাকে আমি চিনি না জীবনে দেখি নি তবুও হিংসে হচ্ছে। কারণ মেয়েটা অনেক সুন্দরী! ফিগার তো পুরোই ভারতীয় নায়িকাদের মতো। আর আমি! এলোকেশী কন্যা সাথে জন্মগত গোলটুশী!

নিজের থেকে বেশি সুন্দর কাউকে আবার আমি সহ্য করতে পারি না। একটু জেলেসু টাইপ তো তাই আর কি!

— তোমার জন্য কফি এনেছি নীল। (মুনতাহা)

— তুমি কষ্ট করতে গেলে কেনো? রুপা দিয়ে যেতো।

— রুপা কেনো করবে! তোমার সব কাজ এখন থেকে আমিই করবো!

— তুমি আমাদের গেষ্ট মুনতাহা। তোমাকে দিয়ে কাজ করানো ভালো দেখায় না।

— গেষ্ট বলে অপমান করছো নীল। আমি তো তোমার আপনজন।

নীল আর কমোলিকা পেত্নির আদিক্ষেতা দেখে গা জ্বলে যাচ্ছে আমার। এই মুনতাহা না মঞ্জোলিকা কে আমার সুবিধার মনে হচ্ছে না। পেত্নিটার পাতলা শিফনের শাড়ি দেখেই বুঝতে পারছি আমার নীল এর উপর কালা যাদু করার ফন্দি আটছে। মিষ্টি মিষ্টি কথা বলে নীল কে বশ করার টোপ ফেলছে আর নীল মনের আনন্দে সেই টোপ গিলছে। ন্যাকা!

কথা গলা ঝাঁড়া দিয়ে মুনতাহা আর নীল এর আলাপের মাঝে বিঘ্ন ঘটালো। নীল মুনতাহা আর কথা কে পরিচয় করিয়ে দিলো নিতুর বান্ধবী হিসেবে।

— কথা তুমি আর নিতু আড্ডা দাও আমি আর নীল চলে যাচ্ছি। (মুনতাহা)

— সে কি কথা কোথায় যাবেন আপনারা?

— আমাদের মাঝে তোমরা ছোটরা বোর হয়ে যাবে। তাই আমি আর নীল একা সময় কাটাই। কি বলো নীল?

— মুনতাহা তুমি বরং মা বড় মার সাথে সময় কাটাও। কথা আর নিতুর ফাইনাল পরীক্ষা কিছুদিন বাদে আমি ওদের পড়াই।

— তুমি পড়াবে?

— হ্যাঁ নীল স্যার ই তো আমাদের পড়ায়। আর সে জন্যই তো এসেছি এখানে। তাই না নীল স্যার! (কথা)

— হ্যাঁ। তুমি যাও মুনতাহা।

?

মুনতাহা ঘর থেকে বেরিয়ে গেলে কথা নীলকে ঝাঁপটে ধরে নীল এর বুকের সাথে মিশে যায়। নীলও কথাকে পরম আবেশে জরিয়ে ধরে। নীল আস্তে আস্তে কথার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে থাকে। এভাবে কিছুক্ষণ থাকার পর নীল তার বুকের দিকে ভেজা ভেজা অনুভব করে। এতোক্ষণ নীলের চোখে মুখে প্রশান্তি থাকলেও নীল এর বুকের ভিতরটা হঠাত করেই মুচড়ে উঠে।

কথাকে সোজা করে কথার মুখ নীল তার দুই হাতের আঁজলে নিতেই নীল এর বুকটা ছ্যাঁত করে উঠে। কথা এতোক্ষণ কান্না করছিল। দুচোখের পানিতে গাল ভিজে গেছে কথার। নীল একটা ম্লান হাসি দিয়ে কথার চোখের আর গালের পানি মুছে দিয়ে কপালে একটা চুমু এঁকে দেয়।

— তুমি আমাকে ছেড়ে দেবে না তো?

— এসব কি বলছিস? ছেড়ে দেওয়ার তো প্রশ্নই আসে না।

— আমার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে। আব্বু ভীষণ রাগী মানুষ। সে একবার যেটা ঠিক করেছেন সেটাই করবেন। আর কারো কথা শুনবেন না।

— তুই চিন্তা করিস না একদম। আমি আজকেই বাবার সাথে কথা বলে তোর বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব পাঠাচ্ছি।

— আব্বু রাজী হবেন না!

— কেনো? আমি কি ছেলে হিসেবে খারাপ নাকি?

— না কিন্তু তোমার বাবা দুই বিয়ে করেছেন এটা আব্বু ভালো চোখে দেখেন না।

— হুম জানতাম এটাই কারণ হবে। বড় মা বাবাকে ছেলে দিতে পারেন নি বলেই আমার মা কে বিয়ে করেছিল বাবা। তারপর অবশ্য বড় মাও ছেলের মা হয়েছে। কিন্তু সেটা নিয়ে আমাদের নিজেদের মধ্যে কোনো দ্বন্দ হয় না।

— জানি আমি সবই কিন্তু আব্বু মানবেন না! তুমি কিছু একটা করো।

— আচ্ছা দেখছি। কিন্তু তুই এখন বাসায় যা। কিছুক্ষণ পরেই সন্ধ্যা নেমে আসবে।

— হ্যাঁ আমাকে তাড়াতে পারলেই তো তোমার লাভ! ওই কমোলিকার সাথে তোমার চিপকা চিপকি করতে সুবিধা হবে। আমার সামনে তো আর ইটিশ পিটিশ করতে পারবে না!

— কমোলিকা টা আবার কে? আর কার সাথে ইটিশ পিটিশ করলাম!

— হু হু আমি সব জানি।

— কি জানিস?

— ওই মুনতাহার সাথে তুমি একদম কথা বলবা না। একদম ওর সাথে মিশবা না।

— কেনো কেনো? কোথাও কি কিছু পুড়ছে নাকি?

— আমি একদম জেলাস না। কিন্তু ওই মুনতাহা কে আমার সুবিধার মনে হচ্ছে না।

— মুনতাহা আমার খালাতো বোন কথা। (কথার হাত দুটো নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে নিলো নীল)

— তবুও। আমার ভয় হচ্ছে। সব দিক দিয়েই কেমন সবাই উঠে পরে লেগেছে তোমার থেকে আমাকে আলাদা করতে। এখন যদি এই মুনতাহা ওর রূপ দেখিয়ে তোমায় বশ করে ফেলে! দেখেছো কতো ঢং করে!

— পাগলি একটা! মুনতাহা কেনো, স্বর্গের কোনো পরীও আমার মনে তোর জায়গা নিতে পারবে না।

নীল আবারও কথাকে বুকের সাথে মিশিয়ে নিলো। কথা নীল এর শার্ট পিছন থেকে আঁকড়ে ধরে রেখেছে। নিতুর ঘরের দরজা খোলাই ছিল। দরজার আড়ালে দাড়িয়ে মুনতাহা এতোক্ষণ সবটা দেখছিল। নীল আর কথার সম্পর্কের কথা জেনে বেশ ব্যথিত হয়েছে সে। ব্যথিত হওয়া অসঙ্গায়িত কিছু নয়। সেই ছোট থেকে স্বপ্ন দেখে আসছে সে নীল এর বউ হবে। নীল কে স্বামী হিসেবে কল্পনা করেই তো তার দিন রাত এক হয়েছে। সেই নীল তার চোখের সামনে অন্য মেয়েকে বুকে জরিয়ে ধরে রেখেছে এটা মেনে নেওয়া কি এতোটা সহজ হবে মুনতাহার পক্ষে! চোখের পানি আঁড়াল করে সেখান থেকে চলে গেলো মুনতাহা।

?

?

গোধূলী লগ্নের শেষ প্রহর চলছে, সূর্য দিগন্তের দিকে হেলে পরেছে অনেকক্ষণ আগেই। নীল এর থেকে বিদায় নিয়ে খান বাড়ি থেকে বেরিয়ে পরেছে কথা। গন্তব্য তার নিজের বাড়ি। যদিও আজ এই পথ তার কাছে ভীষণ অচেনা লাগছে। যতোই বাড়ির কাছাকাছি যাচ্ছে ততোই নীল এর ভালোবাসা হারানোর ভয় উঁকি দিচ্ছে মনের মধ্যে। বিষন্নতা ছেয়ে আছে কথার মনে। এতোদিন নীল এর ভালোবাসা তার জীবনে ছিলো না আর কোনো প্যারাও ছিল না। আজ যখন তারা দুজন দুজনকে ভালোবাসে, তখনই রাজ্যের সমস্যা তাদের জাঁকড়ে ধরেছে। ভালোবাসায় এতো সমস্যা কেনো?

নীল এর বাবা দুই বিয়ে করাতে আব্বু তাদের পছন্দ করে না। আরেহ ভাই বিয়ে সে করতেই পারে এটা তার নিজস্ব ব্যাপার!

“কথা দাড়াও।”

একা একা বকবক করছিলাম। হঠাত পিছন থেকে কারো ডাক শুনে ঘুরে তাকালাম। নীরব ভাইয়া ছুঁটে আসছে আমার দিকে। দেবর জি এর কি কাজ পরলো হঠাত।

নীরব ভাইয়া আমার সামনে এসে একদন্ড নিশ্বাস নিয়ে বলতে শুরু করলেন,
— কথা তুমি আমার প্রশ্নের আর কোনো উত্তর দিলে না!

— কোন প্রশ্ন?

— ঐ যে আমাকে বিয়ে করবে কি না?

— দেখেন নীরব ভাইয়া আমি আপনাকে সবসময় ভাইয়ের চোখে দেখেছি। সো প্লিজ ভাই বোনের সম্পর্কে এসব আনবেন না। আর এই ব্যাপারে আপনার সাথে আর কোনো কথা আমি বলতে চাই না।

নীরব ভাইয়াকে আর কোনো কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে আমি বাড়ির দিকে ছুঁটে গেলাম। এমনিতেই ঝামেলার অভাব নেই, আবার তার উপর নতুন উটকো ঝামেলা!

বাড়িতে পৌঁছে ব্যালকোনির পাইপ বেয়ে খুব সাবধানে ঘরে ঢুকে খেলাম। ঘরে ঢুকতেই আরেক দ্বন্ড অবাক হওয়া যে আমার বাকি ছিল সেটা বুঝতেই পারি নি। আম্মু কিভাবে যেনো আগে থেকেই আমার ঘরে বসে আছে। আর তার চেহারা দেখে মনে হচ্ছে আমাকে রান্না করা ছাড়াই খেয়ে ফেলবেন।

— কোথায় গিয়েছিলি?

— আসলে.. তুমি ভিতরে কিভাবে এলে!

— ব্যালকোনি টপকে যেভাবে পালিয়েছিলি সেভাবেই এসেছি। কোথায় গিয়েছিলি?

— নিতুদের বাড়িতে।

— নীল আর তোর কিসের সম্পর্ক?

— ……

— চুপ করে আছিস কেনো? উত্তর দে! নীল আর তোর কিসের সম্পর্ক?

— আমা নীল কে ভালোবাসি। নীলও আমাকে ভালোবাসে।

— তোর আব্বু তোর বিয়ে আদনানের সাথে ঠিক করছে জানিস এটা? তারপরেও কেনো নীল এর সাথে দেখা করতে গিয়েছিলি?

— আম্মু আমি নীলকে ভালোবাসি আর বিয়েও ওকেই করবো। অন্যকাউকে বিয়ে করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়।

কথাটা বলতে দেরি হলেও কথার গালে ঠাসস্ করে একটা চড় পরতে সময় লাগলো না। কলি বেগম এভাবে কথাকে থাপ্পড় মারবেন এটা কথার ধারণার বাইরে ছিল। নিজেকে সামলে প্রশ্নসূচক দৃষ্টিতে মায়ের দিকে তাকিয়ে আছে কথা। হয়তো এই প্রথম কথার গায়ে হাত তুলেছে কলি বেগম।

— তোর বাবা নীল কে পছন্দ করে না এটা জানার পরেও তুই নীল এর সাথে সম্পর্ক রাখছিস! ভুলে যাস না কথা এই বাড়িতে সেটাই হয় যেটা তোর বাবা চায়। আর তোর বাবা তোর ফুপি আম্মুকে কথা দিয়ে ফেলেছে। আজ যে তুই নীল এর সাথে দেখা করার জন্য পালিয়ে গিয়েছিলি সেটা তোর বাবা জানতে পারলে কি অবস্থা হবে তুই বুঝতে পারছিস!

— মা আমি নীল কে ভালোবাসি। আর তোমার আর বাবার বোঝা উচিত সারাজীবন আমি সংসার আমি করবো! যার সাথে আমি সারা টা জীবন কাটাবো সেই মানুষ টা আমার পছন্দের হলে খুব বেশি কি ক্ষতি হবে! মানছি নীল এর বাবা দুই বিয়ে করেছেন এজন্য বাবা তাকে পছন্দ করেন না। কিন্তু আমি তো নীল কে ভালোবাসি। আমার জন্য কি আব্বু নীল কে মেনে নিতে পারবে না!

— এতো কথা আমাকে শুনিয়ে লাভ নেই কথা। আমি আমার দিক দিয়ে চেষ্টা করে দেখেছি। তোর আব্বু কিছুতেই রাজী না। তাই তুই নীল কে ভুলে যা। তোর আব্বু তোর আর আদনান এর আকদ্ সামনে সপ্তাহেই করে ফেলবেন। নিজেকে মানসিক ভাবে প্রস্তুত কর।

মা আমাকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে সেখান থেকে চলে গেলেন। সময় খারাপ যাচ্ছে নাকি আমি খারাপ বুঝতে পারছি না। মাথাটা হ্যাং হয়ে আছে। বুকের বা পাশে অসহ্য যন্ত্রণা হচ্ছে, আমার কান্না করা দরকার। কিন্তু কান্না আসছে না। কেনো কান্না করতে পারছি না। চোখের পানি গুলোও আজ আমার সাথে বেইমানি করছে। কান্না করলে হয়তো আমার কষ্ট টা কমতো।।

☘️

☘️

খান বাড়ির ছাদের কার্নিশ ঘেসে দাড়িয়ে স্মোক করছে নীল। সিগারেট যে শুধু কষ্টেই খায় এই ধারণটা নীল কে দেখলে অনেকের পাল্টে যাবে। আজ নীল এর মনে খুশি আর দুশ্চিন্তা দুটোই বিরাজ করছে। কথার ভালোবাসা পেয়ে আজ সে অনেক খুশী। তার জীবনের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি হয়তো কথা। কথার এলোমেলো চুলের দুই বেণী বারবার নীল কে তার প্রেমে ফেলে দেয়। কথার বাচ্চামোগুলোর প্রতি নীল আসক্ত। কিন্তু হঠাত করেই তার জীবনে এসব কি হচ্ছে। কথার বিয়ে তাও আবার অন্য কারো সাথে এটা তো নীল কল্পনাও করতে চায় না। কিভাবে কি করবে, কিভাবে কথার বিয়ে আটকাবে, বাড়ির সবাই কথা আর তার সম্পর্ক কিভাবে নিবে সবকিছু নীল কে খুব করে ভাবেচ্ছে। নিজেকে স্থির রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে নীল কিন্তু কিছুতেই পেরে উঠছে না।

সিগারেটে শেষ ফুঁ দিয়ে ধোঁয়া গুলো খোলা আকাশে উড়িয়ে দিয়ে সিগারেটের শেষাংশ পা দিয়ে পিষে ফেললো নীল।

” ভাইয়া মা তোর আর মুনতাহা আপুর বিয়ে পাকা করে দিয়েছে।” — হুড়মুড়িয়ে ছাদে উঠে হাপাতে হাপাতে কথাটা বললো নিতু।

মাথায় বাজ পরার চমকে উঠে পিছন দিকে তাকালো নীল।

— আমার তো আগেই সন্দেহ হয়েছিল হঠাত করে মুনতাহা আপু কে বাসায় আনার পিছনে কোনো কারণ আছে। কিন্তু সেটা যে তোদের বিয়ে সেটা বুঝতে পারি নি।

— কি বলছিস তুই মাথা ঠিক আছে তোর?

— হ্যাঁ ভাইয়া বিশ্বাস কর আমি এইমাত্র মা আর বড় মার কথা আড়ি পেতে শুনে এলাম। মুনতাহা আপু আর তোর আকদ্ করানোর প্ল্যানিং চলছে। তাও আবার এই সপ্তাহেই।

চলবে…

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে