শ্বাশুড়ি
সৌরভে_সুবাসিনী(moon)
পর্বঃ২
.
.
যখন চুমুটা কপালে দেওয়া হয় তখন অনুভূতি ভিন্ন হয়।
প্রেয়সীর নাক,মুখ তখন থাকে গলার কাছে। শ্বাস প্রশ্বাস বুঝা যায়। ঠিক তখন প্রেয়সীর দুহাত দিয়ে আকড়ে ধরলে মুহূর্ত টা থেমে যায়।
তাই তো ভালোবাসার বিশুদ্ধ প্রকাশ কপালের চুমুতেই।
.
.
.
.
অয়নের ম্যাসেজ ঘুম ঘুম চোখে পড়ে মুচকি হাসলো আলো।
ছেলেটা পারেও। অয়নের প্রতি আলোর কোন অভিযোগ নেই। অভিযোগ নিজের প্রতি। মা,বাবা, বোন কে ছেড়ে এসেছিলো কেনো? কিন্তু সেদিন না আসলে তো অয়ন হারিয়ে যেতো। এমন অতশত চিন্তা ভর করে আলোর মনে।
নাহ্! শুয়ে থাকলে চলবে না৷ দ্রুত কাজ করতে হবে। অয়ন আসছে। সাথে অয়নের বোন আর দুলাভাই ও।
আজকে বাড়ি জমজমাট হয়ে যাবে৷
রান্নাঘরে গিয়ে কাজ করছিলো আর ভাবছিলো এ বাড়িতে আসার দিনের কথা।
.
মোটামুটি মেনে নিলেও বেশ রেগে যায় রাহেলা বেগম৷ কিন্তু অয়ন কে সে খুব ভালোবাসে তাই তো মেনে নিয়েছিলো।
রাতে যখন ঘুমাতে ওরা রুমে যায় তখন হঠাৎ রাহেলা বেগম অজ্ঞান হয়ে যায়।
সে কি কাহিনী সারা রাত। সবাই জেগে ছিলো। ক্লান্ত আলো গিয়ে রুমে ঘুমিয়ে পড়ে আর অয়ন মায়ের কাছে৷
এর পর অয়ন দুই রাত অয়ন ছিলো কিন্তু মায়ের সাথেই।
.
আলো খুব অনুতপ্ত। শ্বাশুড়ি মা ওর জন্য অসুস্থ কিন্তু অয়ন বাড়ি থেকে বেরুতেই সে সুস্থ।
এরপর থেকে অয়ন তিন মাসে যতবার বাড়ি এসেছে উনি অসুস্থ হয়ে পড়েছে।
হয় আলো না হয় অয়ন দুজনের একজন কে তার সাথে থাকতে হয়েছে।
.
.
আলোর এসব কথা মনে হয়ে হাসি পায় কারণ প্রথমে সে না বুঝলেও এখন ঠিক বুঝে।
বাড়িতে আমিন ও আছে আলোর দেবর কিন্তু মা অসুস্থ হলে ওকে ডাকে না। লেখাপড়ার ক্ষতি হয় তো।
.ইফতারের আর বেশি সময় নেই। সব কাজ দ্রুত করছে আলো । কি অসহ্য গরম পড়েছে, ঘেমে-নেয়ে একাকার হয়ে আছে।
হঠাৎ কোমরে কারো স্পর্শ অনুভব করতেই পিছনে ফিরেও ফিরতে পারলো না।
কাধের উপর থুতনি রেখে জড়িয়ে ধরে আছে অয়ন। হালকা করে করা হাত খোপার চুল ঘাড়ে লেগে আছে সেখানে নাক ডুবানোর চেষ্টা করছে অয়ন।।
.
– উফ! কি করো? গরম ছাড়ো
-কেমন আছেন আপনি ম্যাম?
-হু! ভালো। এখন ছাড়ো।
-এখন ছাড়লাম! রাতে?
– বিছানায় কোলবালিশ রাখা আছে।
-হু?তুমি কই থাকবা?
– মায়ের কাছে।
– কেনো?
– বয়স্ক মানুষ! কখন অসুস্থ হয় কে জানে?
.
আলোকে ছেড়ে দিয়ে অয়ন ভ্রু কুঁচকে তাকায়। তারপর বলে
– সে দেখা যাবে। হেল্প করবো?
-কেনো? তুমি কাজের লোক? বাসের হেল্পার?
– না তো?
– তাহলে হেল্প করবা কেনো?
– চুপ! এত কথা বলতে হবে না। দাও আমিও করছি। রোজা তুমিও আছো। তাড়াতাড়ি হোক।
.
.
অয়ন কে আলোর সাথে দেখেই রাহেলা বেগম মনে মনে দুরদশরীফ পড়ে ছেলের মাথায় ফু দিলো। আসতে না আসতেই এই ডাইনীর যাদু কাম করতেছে।
ইফতারের টেবিলে আলিশা (অয়নের বোন), রহমান(আলিশার স্বামী), আমিন, রাহেলা বেগম, অয়ন বসেছে। আলো সবাই কে খাবার দিতে দিতেই আজান দিয়ে দিলো। কোন মতে রোজা খুলেই সে দৌড়ে রান্না ঘরে ছুটলো। এখনো ভাত চুলোয়। কোন মতে পানি মুখে দিয়ে সে ভাতের মাড় গেলে এসে বসতেই ফরমায়েশ শুরু। এটা দাও, ওটা দাও। অয়ন দেখেও কিছু বললো না।
ইফতারের পর সব কাজ শেষে অনু রাতের জন্য খাবার রেডি করে এসে লম্বা শাওয়ার নিলো।
গোসলখানা থেকে বাহিরে বেরুতেই আলোর মনে হলো কেউ একজন সরে গেলো। রাতের বেলা এত পাত্তা দিলো না। এসে সবাই কে রাতের খাবার দেওয়ার পর সবাই একটু আড্ডা দিলো।
.
রাহেলা বেগম ঘেমে যাচ্ছে বারবার। অসুস্থ হচ্ছে সে ধীরেধীরে ।
অয়ন গিয়ে মা কে বিছানায় বসিয়ে মেডিসিন দিয়ে বললো খেয়ে ঘুমিয়ে যেতে। চোখ বন্ধ করে আল্লাহ্ এর নাম নিতে। কিন্তু সে আলোকে ডাকছে তার কাছে থাকতে।
আলো জানতো এমন টা হবে। অয়ন কে বিছানা করে দিয়ে এসে বললো
অয়ন কে ঘুমাতে, সে থাকবে মায়ের সাথে।
.
অয়ন কিছু না বলে আমিন কে ডেকে নিয়ে এসে বললো
– আমিন তুই থাক মায়ের কাছে। কিছু লাগলে ডাকবি কেমন?
বলেই আলোকে নিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।
.
.
চলবে।