শূন্যলতা পর্ব-১১

0
76

#শূন্যলতা
#গুঞ্জন_চৈতি
পর্ব-১১

ঠিকই মুহুর্তের মধ্যে লোকগুলো অব্দি খবর পৌঁছে গেল যে— মানিক বাসায় নেই। ফিরে আসতে বলা হলো তাঁদের। কিন্তু ততক্ষণে তারা দরজা ভেঙে ফেলেছে। দলের লিডার রিফাত তখন এরমধ্যেই সোফায় গিয়ে বসে পড়েছে। ফেরত যেতে বলেছে তো কি হয়েছে? এতো কাঠখড় পুড়িয়ে ঢুকেছে, এমনি এমনি চলে যাবে? মোটেও না। এই ড্রয়িংরুমে দাঁড়িয়ে সেদিন তাকে চড় মেরেছিল সরণ। জিহাদ কিচ্ছু বলেনি। তাই আজ জিহাদের মর্জিতে এলেও ফিরে যাবে নিজের মর্জিতে। রিফাত হটাৎ ঘূর্ণিঝড় হয়ে যেন আছড়ে পড়লো পুরো কক্ষ জুড়ে। পুরো কক্ষ লণ্ডভণ্ড করে সোফা জুড়ে বসালো কয়েক ঘা রাম দা এর কো প। দেয়ালে দেয়ালেও কোপ পড়লো অজস্র। মুহুর্তের মধ্যেই এক টুকরো নরকে পরিণত হলো ড্রয়িংরুম। সবাইকে হুকুম দিলো প্রতিটা কক্ষকে নরক সাজাতে। কিন্তু হটাৎ লোডশেডিংয়ে থামতে হলো সবাইকে। রিফাত ফোনের ফ্ল্যাশ লাইট জ্বালালো। বাকিরা কেউ ফোন নিয়ে আসেনি। সবাই যার যার ফোন গাড়িতে রেখে এসেছে। তারা এমন পরিবেশে এমন ঘটনায় অংশ নেয় সবসময় ফোন রেখে এসেই।

রিফাত ফ্ল্যাশ চালু করতেই কি যেন হলো। সবাই মিলে একযোগে চিৎকার করে উঠলো। আচমকা সবার চিৎকারে রিফাত খানিক কেঁপে উঠলেও, প্রকাশ করলো বিরক্তি। বলল,
“এই চুপ! চিল্লাচ্ছিস কেন?”
সবাই মিলে একসাথে একই কথা বলে উঠলো,
“পিছনে ভূত ভাই, পিছনে ভূত!”
রিফাত রাগে অকথ্য ভাষায় গালি দিলো। অন্ধকারে যেখানে পারে সেখানেই ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর হুকুম দিয়ে পা বাড়ালো সরণের কক্ষের দিকে। ওই ঘরটা নষ্ট করবে সে নিজ হাতে। বহুবার অপমান করেছে তাকে সরণ। গায়ে হাত তোলাও বাদ রাখেনি। সরণকে তো হাতের নাগালে পাবে না, ওর শখের বাড়িটা আজ শেষ করে দিয়ে যাবে।

কয়েক পা আগাতেই পিচ্ছিল কোন তরলে পা দিয়ে পিছলে পড়ে গেল রিফাত। হাত ফসকে মোবাইল গিয়ে কোথায় পড়লো তৎক্ষনাৎ ঠাওর করে উঠতে পারলো না। সমস্ত শরীর যেন জ্বলে উঠলো চিনচিনে ব্যথায়। গা হাত-পা ডলতে ডলতে ব্যাথায় ককিয়ে উঠে ডাকলো বাকিদের। দু’জন এগিয়ে এলে দু’জনের অবস্থা রিফাতের মতোই হলো। এরমধ্যেই সবাই টের পেল শুধু পিচ্ছিল নয়, ধারালো কিছু ছড়িয়ে আছে চারিদিকে।
কয়েকজন ভয়ে দরজার দিকে দৌড়ালে সবাই একে একে আছড়ে পড়লো একে অপরের উপর। তৎক্ষনাৎ একটা বিশাল গোল বেঁধে গেল। প্রত্যেকের মনে চাপা ভয়। রিফাত বাদে বাকিরা পাচ্ছে ভূতের ভয়, রিফাত পাচ্ছে সরণের ভয়। তার মনে ভয় ঢুকে গেল সরণ চলে এলো নাতো? কিন্তু সে আসবে কোথা থেকে? এতক্ষণে আদোও বেঁচে আছে কিনা তারই তো ঠিক নেই। হয়তো পরকালে চলেও গেছে বেচারা। আর এলেও তো এভাবে লুকিয়ে চুরিয়ে কিছু ঘটানোর মতো ছেলে সরণ নয়। তাহলে কে? সরণ কিংবা মানিক না হলে আর কে হতে পারে? আর তো কেউ নেই ওদের! হটাৎ নুপুরের শব্দে মুখরিত হয়ে উঠলো চারিদিক। ঘোর ভাঙলো রিফাতের। মৃদু চিৎকারে ককিয়ে উঠলো কয়েকজন। আচমকা শুরু হওয়া নুপুরের ঝমঝম শব্দ সেই আচমকাই থেমে গেল। শুরু হলো কান্নার শব্দ। আত্মা কাঁপানো ভয়ংকর সে কান্না। এরপর একযোগে শুরু হলো ভয়ংকর কান্না আর বিকট হাসি। কিছুক্ষণের মধ্যে তাতে যোগ হলো বিকট চিৎকারের আওয়াজ। গা ছমছমে ভয়ংকর পরিবেশ। সবার সঙ্গে এবার রিফাতের অবস্থাও করুন। ভয়ংকর এই পরিবেশ থেকে বাঁচতে দু-তিন জন সাহস করে দরজার দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলেও খুঁজে পেল না দরজার টিকিটিও। এমনিতেই ঘুটঘুটে অন্ধকার।তারওপর ভয়ের তাড়নায় দিক হারিয়ে বসেছে সকলে। একেকজন একেকদিকে ছোটাছুটি করে রক্তারক্তি ঘটালো নিজেরাই। প্রত্যেকেই ক্ষতবিক্ষত হলো মেঝেতে পরে। মেঝেতে পা রাখাই যাচ্ছে না। এরমধ্যেই হটাৎ দু’জনের নিথর শরীর আছড়ে পড়লো রিফাত ও বাকিদের উপর। একেকজন বিলাপ করতে লাগল ভয়ে। ভয়ের মাত্রা এবার আকাশ ছুঁলো সকলের। সকলে যেন বুঝে গেল, দু’জন মরেছে বাকিরাও মরবেই। কারও রেহাই নেই। কারও না। ভূতের ভয়ে এবার শতভাগ মরমর হলো সকলে। এতোক্ষণ যাও সন্দেহ ছিল এখন আর কেউ সন্দেহের অবকাশ পেল না।
আকস্মিক সমস্ত চিৎকার আর হাসি-কান্নার বিকট আওয়াজ থেমে গেল। শোনা গেল দু’তিন পা নুপুরের আওয়াজ। অতঃপর শোনা গেল একটি নারী কন্ঠ। বজ্রের ন্যায় কম্পন তুলে থেমে থেমে ভাঙা গলায় কে যেন বলল,
“আমার ছেলে কোথায়? আমার সরণ কোথায়?কোথায় আমার ছেলে?”
ক্রন্দনরত হতবিহ্বল অবস্থায় সকলে। তবুও কারও বুঝতে অসুবিধা হলো না তাদের এই অবস্থার পিছনে সরণের মৃত মা। হু হু করে বাড়তে লাগল চিৎকার করে ভীতু কান্নার আওয়াজ। পুনরায় একই কথার বজ্রাঘাত যেন আছড়ে পড়লো চারিদিকে।
“আমার ছেলে কোথায়? আমার সরণ কোথায়?”

সবার মধ্যে থেকে একজন ছেলে কম্পনরত কন্ঠে বলে উঠলো,
“সরণ জিহাদের বাড়িতে আছে। বাগান বাড়িতে। কিন্তু বেঁচে আছে কিনা জানি না। আজকে ওরে খু ন কইরা ঢাকার বাইরে ফালাইয়া আসার কথা।”
আরেকজন বলল,
“তবে এইসবে আমরা কেউ জড়িত না। এইসব জিহাদের কাজ। আমরা খালি মানিকরে নিতে আসছিলাম। আর কিছু জানি না। আমাদের যাইতে দেন। দোহাই লাগে আমাদের ছাইড়া দেন।”
“কেন? কেন আমার ছেলেকে মারতে চায়? কি করেছে ও?”
এই বিষয়টা রিফাত ছাড়া বাকিরা জানে না। তাই রিফাত বলে উঠলো,
“জিহাদের চাচা ফখরুল ইসলাম একজন সংসদ সদস্য। এলাকার এমপি। জিহাদকে রাজনীতিতে পাকাপোক্তভাবে দাঁড় করাতে চায় নিজের পেছনে। কিন্তু সরণ তাতে নানাভাবে বাঁধা দিচ্ছে। জিহাদের নানান কর্মকান্ড ফাঁস করার চেষ্টায় আছে সরণ অনেকদিন থেকে। আর নিজেও পাকাপোক্ত ভাবে দাঁড়িয়ে যাচ্ছে রাজনীতিতে। তাই সবাই মিলে ওকে সরানোর প্ল্যান করেই ফেলেছিল এরমধ্যেই সরণ নিজে আসে ফখরুল ইসলামের কাছে। বলে, ও খুনের দায়ে খুব শীগ্রই জেলে যেতে চলেছে, ওকে যেন রাজনৈতিক ক্ষমতা প্রয়োগ করে যেভাবেই হোক বাঁচিয়ে নেয় ফখরুল ইসলাম। তাহলে রাজনীতি থেকে নিজেই সরে যাবে। আসবে না জিহাদ আর ফখরুল ইসলামের মাঝে। আর যদি বাঁচাতে না পারে তাহলে জিহাদের বিরুদ্ধে যা যা দুর্নীতির ও মেয়ে ঘটিত কাণ্ডের তথ্য প্রমাণ আছে তা ফাঁস করে দেবে। এই ডিলে ফখরুল ইসলাম রাজি হয় আর কেসটাকে ঘুরিয়ে সরণকে বাঁচিয়েও নেয়। কিন্তু জিহাদ পুরোনো ঝামেলার জের ধরে ঝামেলা করে আর ঠিক করে মেরে ফেলবে সরণকে। আজ ফখরুল ইসলামের সঙ্গেই শেষ সাক্ষাৎ ছিল, সামনে মাসের মধ্যে দেশ ছাড়ার কথাও ছিল সরণের। কিন্তু সরণকে শেষমেষ ধোকা দিয়ে কিডন্যাপ করে নেয় জিহাদ। আর আমাদের পাঠায় মানিককে ধরে নিতে। ও বেঁচে থাকলে জিহাদের বিপদ। তাই মানিকের খোঁজে আমাদের আসা। আমি এটুকুই জানি, আর কিছু জানি না।”

সবাই মৃদুস্বরে কাঁদতে কাঁদতে জীবন ভিক্ষা চাইতে লাগল। কিছুক্ষণ পার হলো একই গতিতে। হটাৎ পরিবেশ শান্ত হয়ে গেল। হাট করে দরজা খোলার আওয়াজে সচকিত হলো সকলে। সাহস করে কয়েকজন অন্ধকারেই এগোনোর চেষ্টা করলো কিন্তু ক্ষতবিক্ষত পায়ে আরও দ্বিগুণ আঘাত লাগায় খুব একটা এগোতে পারলো না কেউ। আকস্মিক আলো জ্বলে উঠলো। ঘরময় আলো জ্বলে উঠতেই মেঝেতে ফ্যানাভর্তি সাবান জলে নিজেদের আবিষ্কার করলো সকলে। চারিদিকে অজস্র ছোট বড় পেরেকের যেন মেলা বসেছে। অগণিত পেরেক আর সাবান জলে পুরো মেঝে ডুবে আছে। খুব বেশি ভাবার সময় পেল না কেউ। উপস্থিত হলো পুলিশ। একে একে উদ্ধার করে থানায় নেওয়া হলো সকলকে। পরে জানা গেল যে দু’জনকে সবাই মৃত ভেবেছিল তারা আদতেও মৃত্যুকে ছুঁতে পারেনি। ভয়ে জ্ঞান হারিয়েছিল শুধু। কিন্তু কি থেকে কি হলো তা নিয়ে সবাই উলটপালট হয়ে আছে। কেউ ভুলতে পারছে না সেই মুহুর্ত।

জিহাদের বাগান বাড়ি সুনসান নীরবতায় ঘেরা। কোন পাহারাদার নেই, নেই কোন গার্ড। শুধু গেটে একজন দারোয়ান বসে বসে ঝিমোচ্ছে। তা দেখে বেশ অবাক হলো মানিক। গুটিও আশা করেছিল অনেক অনেক গার্ড থাকবে।

মানিক তখন জিহাদকে আসতে বলেই রওয়ানা হয়েছিল বাসার উদ্দেশ্যে। এরমধ্যে গুটি বলেছিল বিল্ডিংয়ে লোডশেডিং করাতে। বাকিটা নাকি সে সামলে নেবে। মাথায় আকাশ সমান চিন্তা আর হাতে জান নিয়ে ফিরছিল। মাঝপথে পুলিশও নিয়েছিল সাথে। বাসায় ঢুকে গুটির থেকে সব শুনে এক মুহুর্তও আর দেরি না করে সাথে পুলিশ আর গুটিকে নিয়ে এসেছে জিহাদের বাগান বাড়িতে।

গুটি আশপাশে ঘুরে দেখে মানিককে বলল,
“ওই কৃষ্ণচূড়া গাছ বেয়ে ভেতরে যাওয়া যাবে। আমি যাবো ভেতরে।”
পুলিশ তার অনুমতি দিল না। একে একে কয়েকজন অফিসার গাছ বেয়ে দেওয়ালের ওপাশে চলে গেল। গুটি এভাবে হাত-পা গুটিয়ে টিকতে পারলো না। মানিকের নজর এড়িয়ে দেয়ালের অপর পাশে আরেকটা গাছ বেয়ে সাবধানে ঢুকে পড়লো ভেতরে। বুঝতে পারলো বাড়ির পেছন দিকে আছে সে। বাগান পেরিয়ে ভেতরে ঢুকতেই চমকে উঠলো চাপা স্বরের হুমকিতে।

“একদম নড়বি না। ওপাশ দিয়ে পুলিশ ঢুকেছে বাড়িতে। এপাশ দিয়ে আমার সঙ্গে চুপচাপ দেয়াল টপকাবি। নয়তো তুই আমার কীর্তি ফাঁস করার আগে তোর বউ আর জিগর কা দোস্ত মানিককে আমি শেষ করে দেবো। আমার লোক কিন্তু তোর বাড়ির ভেতরে। ভুলিস না এটা। তোর বউও আমার কব্জায়, মানিকও আমার কব্জায়। চুপচাপ হাট।”

জিহাদ নিজেই ভয়ে সিটিয়ে আছে। সিসিটিভিতে পুলিশের আগমন টের পেয়েই চলে এসেছে উল্টোদিকে। আর সরণকে ঝিমিয়ে রেখেছে মিথ্যা হুমকি দিয়ে। কিছুক্ষণ আগ পর্যন্তও সরণের বিয়ের বিষয়ে কিছু জানতো না। জানতে পারলো অল্প কিছু সময় আগে। তাও সরণের ফোন ঘেটে।

গুটি আড়াল থেকে আধো অন্ধকারে অস্পষ্ট দেখতে পেল দু’জন পুরুষ অবয়ব। তারমধ্যে একজন সরণ। হাত বাঁধা সরণের। মাথাও কালো কাপড় দিয়ে গলা অব্দি বাঁধা। তবুও চিনতে ভুল হলো না গুটির। জিহাদ সরনকে টানতে টানতে তার দিকেই আসতে লাগল। গাছের আড়ালে লুকিয়ে পড়লো গুটি। জিহাদ যখন তার পাশ দিয়ে যেতে লাগল পা বাড়িয়ে জিহাদকে ফেলে দিল মাটিতে। সরণের হাত ধরে থাকায় সরণও পড়লো তবে মাটিতে পড়তেই হাত ছাড়িয়ে নিল জিহাদের থেকে। এরমধ্যেই গুটি পাশ থেকে ইট তুলে নিয়ে অন্ধকারেই এক নাগাড়ে মারতে লাগল জিহাদের মাথায়। জিহাদের চিৎকারে বগানের প্রতিটা কোনা যেন জেগে উঠলো। এরমধ্যেই শোনা গেল দু’টো গুলির আওয়াজ। ভারি কিছু মাটিতে আছড়ে পড়ার আওয়াজও শোনা গেল। সরণ কিছু দেখতে পাচ্ছে না, হাতও খুলতে পারছে না। তৃতীয় ব্যাক্তি কে তাও জানে না। গুটির উপস্থিতিও টের পায়নি। তবুও অন্ধকার হাতরে গাছের আড়ালে দাঁড়ালো যাতে তার গায়ে না লাগে গুলি। এরমধ্যেই মানিক আর পুলিশও ছুটে এলো এপাশে। সাথে এলো দারোয়ানও। মানিক টর্চ হাতে গুটি বলে চিৎকার করে ছুটে আসলে টনক নড়লো সরণের। সরণকে সুস্থ অবস্থায় পেয়ে ভিজলো যেন মানিকের শুঁকিয়ে যাওয়া আত্মা। কিন্তু গুটি তো ঠিক নেই। গুলি লেগেছে গুটির। মাটিতে পড়ে আছে, রক্তে ভেসে যাচ্ছে চারিদিক। সরণ ততক্ষণে গুটির নাম ধরে ডাকতে ডাকতে অস্থির হয়ে উঠেছে। মানিক আগে সরণের হাতের বাঁধন খুলে মাথার কাপড় সরালো। সঙ্গে সঙ্গে মানিককে ঠেলে সরিয়ে গুটির কাছে ছুটে গেল সরণ। জ্ঞান নেই গুটির। সরণের বুকে মাথা রেখে হৃৎস্পন্দনের অস্বাভাবিক গতি অনুভব করতে পারার আগেই যেন হারিয়ে গেল অতল গহ্বরে। সরণ এক মুহুর্তও দেরি না করে কোলে তুলে নিল। নিজের গায়ে অজস্র মারের দাগ আর যন্ত্রণা ভুলে গুটিকে নিয়ে ছুটলো হসপিটালে। গুটির বন্ধ চোখ সহ্য হচ্ছে না সরণের। রক্তাক্ত গুটিকে তো সে চায়নি। চায়নি তো!

(চলবে)

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে