#শুধু তুই #
#Part_03
Writer _ Raidah Islam Nova
বাসার ভেতরে ঢুকেই আমাদের চোখ দুটো গোল গোল হয়ে গেলো। এটা আমরা কি দেখছি!!! আমাদের সামনে দাঁড়িয়ে আছে ইশা আপু।ও তার ৩ বছরের ছেলে তোরাব।আমরা দুজন পুরো শকড।আপুকে জিজ্ঞেস করছিলাম আজ আসবে কি না।আপু সাফ সাফ বলে দিছে সে আসবে না।সেখানে আমাদের সামনে জলজ্যান্ত আপুকে দেখে আমরা হা করে তাকিয়ে আছি।আপুর শ্বশুর বাড়ি সিলেটে।আপুর হাজবেন্ড সোহরাব ভাই একটা প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করে।
আমিঃ আপুনি তুমি এখানে??
এশাঃ আপুনি তুমি কখন এলে? তুমি না বললে এর মধ্য আসবে না।
ইশাঃ সারপ্রাইজড।কেমন লাগলো আমার ধামাকাটা।
আমরা দুজন গিয়ে আপুনিকে জড়িয়ে ধরলাম।আমি আপুকে ছেড়ে দিয়ে তোরাব কে কোলে তুলে নিলাম।
আমি ও এশা দুজন ইশা আপুকে আপুনি বলে ডাকি।
আমিঃ কার সাথে এসেছো আপুনি? নিশ্চয় সোহরাব ভাইয়া তোমাকে একা ছারেনি।
ইশাঃ তা তোর ভাই কোন জন্মে আমাকে একা ছারলো।
আমিঃ একেই বলে ভালবাসা।সবার কপালে এরকম ভালবাসা জোটে না।তোমাকে দেখে আমার হিংসা হয়।বড্ড বেশি ভালবাসে ভাইয়া তোমাকে।
আমার কথা শুনে আপুনি মুচকি হাসলো।
এশাঃ বল না আপুনি কার সাথে এসেছো?
ইশাঃ কার সাথে আবার আসবো?? মেহরাব নিয়ে এলো।
এশাঃ মেহরাব ভাইয়া এসেছে। ( অবাক হয়ে)
ইশাঃ হুম।
আমিঃ কি ব্যাপার তুই এরকম অবাক হলি কেন?
এশাঃ সচারচর উনি এখানে আসে না তাই।
আমিঃ ও ও ও।
মেহরাব ভাইয়া ইশা আপুর ছোট দেবর।তিনি কিছু দিন আগে পড়াশোনা শেষ করেছেন।বতর্মানে বাংলাদেশের বিখ্যাত শাহ্ সিমেন্ট গ্রুপের এজেন্ট হিসেবে কাজ করছেন।দেখতে শুনতে সব দিক দিয়ে মাশাল্লাহ। আচার-আচরণ খুব ভালো।
আমি তোরাবকে কোলে তুলে ওর সাথে কথা বলছি। ওর বয়স তিন বছর হলেও এখনো আধো- আধো ভাষায় অনেক কথা বলে।
আমিঃ তোরাব বাবা,কেমন আছো তুমি?
তোরাবঃ আমি তো বালো আতি মণি।তুমি তেমন আতো?
(আমি তো ভালো আছি মণি। তুমি কেমন আছো।)
আমিঃ আমিও ভালো আছি। তুমি ভাত খেয়েছো?
তোরাবঃ আমি তাই ( খাই) নাই।
আমিঃ কেনো?
তোরাবঃ মা-মুণি আমাতে( আমাকে) ভাত দেয় নি।
আমিঃ কি??? এতো বড় সাহস তোমার মা-মণির।আমার তোরাব সোনাকে না খাইয়ে রেখেছে।
আমাদের কথা শুনে আপুনি চোখ দুটো বড় বড় করে ফেললো।সামনে এসে তোরাবের কান টান দিলো।
ইশাঃ আমি তোকে ভাত দেয় নি।পাঁজি কোথাকার? আমার নামে মিথ্যা কথা বলা হচ্ছে।
তোরাবঃ আ আ মা-মুণি তারো( ছারো)। আমার নাগছে( লাগছে)তো।
আপুনি তোরাবের কান ছেড়ে দিলো। আমি ও এশা দুজন ওনাদের মা- ছেলের কান্ড দেখে মিট মিট করে হাসছি।তোরাব ছোট হলেও খুব ফাজিল ও দুষ্টু।
আমরা তিনজন ড্রয়িংরুমে গেলাম।সোফায় মেহরাব ভাইয়া বসে আছে। আমরা সামনে গিয়ে সালাম দিলাম।
আমিঃ আসালামু আলাইকুম ভাইয়া। কেমন আছেন?
মেহরাবঃ আলাইকুম আস সালাম।ভালো আছি। তুমি ভালো আাছো?
আমিঃ আলহামদুলিল্লাহ আমি ভালো আছি। কখন এলেন?
মেহরাবঃ এইতো কিছুক্ষন আগে।
এশাও মেহেরাব ভাইয়ার সাথে কুশল বিনিময় করলো।তখন আমি খেয়াল করলাম এশা কি রকম ছটফট করছে।আমি কিছুই বুঝলাম না।তোরাবকে কোলের থেকে নামিয়ে দিয়ে মেহরাব ভাইয়াকে উদ্দেশ্য করে বললাম।
আমিঃ আচ্ছা ভাইয়া পরে কথা হবে।আমাকে নামাজ পরতে হবে।এভাবেই অনেক দেরী হয়ে গেছে।এখন না পরলে ওয়াক্ত চলে যাবে।
মেহরাবঃ তুমি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পরো??
আমিঃ জ্বি হ্যাঁ।সবার আগে আমার নামাজ তারপর অন্যকিছু।আপনি নামাজ পরেন না।
মেহরাবঃ বাহ্ তুমি তো গুড গার্ল।আসলে আমারতো সময়ের অভাবে নামাজ পরা হয় না।
আমিঃ এটা একটা ডাহা মিথ্যা কথা। আপনি যদি সময় করে নেন তাহলে অবশ্যই নামাজের সময় হবে।নিয়মিত নামাজ পরে দেখবেন মন কতটা ফ্রেশ থাকে।মন ফ্রেশ থাকলে শরীর ও ভালো থাকবে।
আমার কথা মনোযোগ সহকারে মেহরাব ভাইয়া শুনলো।তারপর একটা মিষ্টি হাসি দিলো।
মেহরাবঃ তোমার কথাগুলো খুব ভালো লাগলো।
আমিঃ ভালো লাগলে হবে না নামাজ পরতে হবে।নামাজ কিন্তু বেহেশতের চাবি।যত ভালো কাজ করেন এটা ছারা বেহেশতে যেতে পারবেন না।
মেহরাবঃ আমি চেষ্টা করবো নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পরার।
আমিঃ চেষ্টা নয় পরতেই হবে।নামাজ নিয়ে কোনো অজুহাত নয়।আচ্ছা আসি।
(এশার দিকে তাকিয়ে)এশা চল।তুই ফজরের নামাজ পরিসনি। এখন না পরলে তোকে আমি আস্ত রাখবো না।জলদি রুমের দিকে পা বাড়া।
আমরা দুজন আমাদের রুমে চলে এলাম।রুমে এসে এশা হাঁফ ছারলো।আমি ওর কান্ড দেখে কিছুটা অবাক হলাম।
আমিঃ কি রে কি হয়েছে তোর??
এশাঃ কিছু না।
আমিঃ কিছু তো হয়েছে। তুই মেহরাব ভাইয়ার সামনে ওমন ছটফট করছিলি কেন?
এশাঃ না এমনেই।
আমিঃ না কিছু তো একটা ঘাপলা আছেই।তুই ভালোভাবে বলবি নাকি চড় খাওয়ার পর বলবি।
এশাঃ আসলে হয়েছে কি—
আমিঃ আসলে কি হয়েছে বল।তুই যদি এখন না বলিস তাহলে সত্যি আমি তোর গালে একটা বসিয়ে দিবো।
এশাঃ মেহরাব ভাইয়া আমাকে পছন্দ করে।কিন্তু আমি তাকে নিজের ভাইয়ের চোখে দেখি।সে এটা মানতে রাজি নয়।তাই আমি তখন এমন করছিলাম।বলতো আমি এখন কি করি??
আমিঃ চাচা- চাচী জানে??
এশাঃ না।
আমিঃ তাহলে আপাতত প্যারা নিস না।পরেরটা পরে দেখা যাবে।মনে রাখবি আল্লাহ যা করে ভালোর জন্যই করে।জলদী করে ওজু করে আয়। নামাজ পরতে হবে তো।
এশা দেখতে অনেক সুন্দরী।ওর চোখের পাপরিগুলো অনেক বড় বড়।পলক ফেললে খুব সুন্দর লাগে দেখতে।ওর প্রেমে অনেক ছেলে হাবুডুবু খায়।কিন্তু এশা এসবে নেই। ওর একা থাকতে ভালো লাগে। ছোট বেলায় একবার ছ্যাকা খেয়ে ব্যাকা হয়ে গেছে।তাই এসবে আর যায় না।
বিকালে…..
এশা ঘুমোচ্ছে আমার কিছুতেই ঘুম আসছে না।ড্রয়িং রুমে গিয়ে দেখলাম মেহরাব ভাইয়া টিভিতে খেলা দেখছে।আমাদের বাড়িতে কোনে টিভি নেই। বাবা এসব পছন্দ করে না। চাচ্চু আবার বাবার মতো এতটা ধর্ম নিয়ে সচেতন নয়।পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ঠিকমতই পড়ে। মেহরাব ভাইয়া আমাকে দেখে ডাকলো। তিনি টিভি দেখছে আর চানাচুর খাচ্ছে।
মেহরাবঃ নাও চানাচুর খাও।
আমিঃ না ভাইয়া। আমি খাবে না আপনি খান।
মেহরাবঃ আরে নাও লজ্জা কিসের? আমিতো তোমার ভাইয়াই হই।
তার জোরাজুরিতে আমাকে চানাচুরের পিরিচটা ধরতে হলো।আমি কয়েক সেকেন্ডে চানাচুরে থাকা সকল বাদামগুলো খেয়ে শেষ করে ফেললাম।চানাচুরে একটা বাদামও অবশিষ্ট নেই। আমার বাদাম খুব প্রিয়।বাদাম দেখলে আমার হুশ থাকে না।খাওয়া শেষ হতেই মেহরাব ভাইয়ার হাতে পিরিচটা ধরিয়ে গুন গুন করে গান গাইতে গাইতে রোমে চলে এলাম।
আমার এরকম ব্যবহার দেখে ভাইয়া হা করে তাকিয়ে রইলো।
মেহরাবঃ মনে হচ্ছিলো বাদামের জন্য তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ লেগে গিয়েছিল। যেভাবে বাদামের ওপর হামলা করলো, আমি বোধহয় ওর কাছ থেকে কেড়ে সব খেয়ে ফেলতাম।পাগলী একটা।
সবার মনে প্রশ্ন থাকতে পারে এত বড় বড় নামাজ নিয়ে ডায়লগ দিয়ে আবার গান গাইলাম কেন? আমিতো আমার ভালো বাবার মিচকে শয়তান মেয়ে? তাই এরকম করি।নামাজ,রোজা,ধর্ম নিয়ে সচেতন হলেও আমি গান শুনতে পছন্দ করি।সাউথ ইন্ডিয়ান মুভি আমার খুব প্রিয়।কি করবো বলুন জেনারেশন বলতেও একটা শব্দ আছে?।আজকালের জেনারেশনেন মেয়েতো তাই। প্লিজ কেউ আমাকে বকা দিবেন না?।হি হি হি আমার বাবাও এসব জানে।প্রায় সময় আমাকে বকতো।আর আমি এক কান দিয়ে ঢুকাতাম আরেক কান দিয়ে বের করে দিতাম।
অন্যদিকে…..
ফারিশ একটা এতিমখানার বাচ্চাদের সাথে খেলছে।জন কিছুটা দূরে মোবাইল টিপছে। ফারিশের মন খারাপ হলেই এখানে সময় কাটাতে আসে।ওর জীবনের সাথে তো এই এতিম বাচ্চাগুলোর অনেকটা মিল আছে।শুধু পার্থক্য একটাই ওদের না হয় বাবা- মা একেবারেই নেই আর ওর বাবা- মা থেকেও নেই। দশ বছর ধরে এদেশে আছে।একটিবারের জন্যও ওর খোঁজে নেওয়ার প্রয়োজন মনে করে নি।বেঁচে আছে নাকি মরে গেছে সেই খবরটা নেওয়াও তাদের দরকার নেই। পৃথিবীতে এসে এতটাই ভুল করেছে সে।
সেদিক থেকে ওর কাছে নিজের দেশ থেকে বাংলাদেশের মানুষকে খুব ভালো লাগে।সবাই কি রকম মিশুক স্বভাবের।বড় করে একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল। পেছন থেকে কেউ ওর কাঁধে হাত রাখলো।ঘারটা সামান্য ঘুরাতেই ফাদারকে দেখতে পেলো।আজ তার জন্যই ফারিশ বেঁচে আছে।নইলে কবেই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করতো।দুনিয়াতে কেউ যদি ওকে বুঝে সেই ব্যাক্তিটা এই ফাদার আর জন। তিনি চার্চের পাশাপাশি এই মিশনারিও দেখা শুনা করেন।জন ছারা ওর কোনো বন্ধু নেই। জনকে ফারিশ নিজের ভাই মনে করে।দশ বছর ধরে একসাথে আছে।
ফাদারঃ কি হয়েছে মাই সান?
ফারিশঃ আমি অনেক টেনশনে আছি ফাদার।
ফাদারঃ কেনো?
ফারিশঃ আপনাকে দুই মাস আগে বলেছিলাম আমার এক মুসলিম মেয়েকে ভালো লেগেছে।আমি সেই মুসলিম মেয়েকে ভালবেসে ফেলেছি।কিন্তু এখন ভেবে দেখছি আমি বড় ভুল করে ফেলেছি।আমাদের ভালবাসা কখনও পূর্ণতা পাবে না।ওর বাবা ধর্ম নিয়ে অনেক সচেতন।কখনও তিনি তার মেয়েকে আমার হাতে তুলে দিবে না।তাছারা আমার টাকা- পয়সাও নেই। আমি ওকে কি করে সুখে রাখবো।ও হয়তো আমাকে কখনো ভালবাসবেই না।আমার মতো ভাব লেশ হীন, এতিম, খ্রিস্টান ছেলেকে ওর জীবন সংগী হিসেবে কেনোই বা বেছে নিবে।এতবছর পর কাউকে ভালবাসার চার্চে বসালাম।আমার মন বলছে তাকে আমি কখনোই পাবো না।( মন খারাপ করে)
ফাদারঃ সান, ভালবাসা ঈশ্বরের দান।তুমি চাইলেই তা যাকে তাকে দিতে পারবে না।যার সাথে ঈশ্বর তোমার মিল রেখেছে তাকে তুমি হাজার বাঁধা পেরিয়ে ঠিক জয় করে নিবে।ভালবাসা কখনও জাত,ধর্ম,বিভেদ দেখে আসে না।এটা যিশুর পক্ষ থেকে উপহার।ঈশ্বরের ওপর ভরসা রাখো।তিনি সব ঠিক করে দিবে।চার্চে গিয়ে ওর জন্য প্রে করো দেখবে যীশু ঠিক তোমার ভালবাসাকে তোমার করে দিবে।আর সুখ কখনো টাকা দিয়ে কেনা যায় না। যদি সুখ কেনা যেতো তাহলে পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে সুখী মানুষ ধনীরা হতো।কিন্তু ওরাই আজ টাকার কারণে অসুখী।সবসময় চিন্তা নামক বস্তুটা ওদের ঘিরে রাখে।চিন্তা সকল রোগের মুল।
ফাদারকে দেখে জন তাদের পেছনে এসে দাঁড়িয়ে ছিলো। এতক্ষন ধরে নিরবে সব কিছু শুনছিলো।
জনঃ ও যাবে চার্চে।মানুষ খুঁজে পান না ফাদার।গত দশ- বারো বছরে একবারো চার্চে গিয়েছে কি না সন্দেহ।ও তো এসব বিশ্বাস করে না।ওর বাবা- মা সেপারেট হওয়ার পর থেকে ওর তো ঈশ্বরের ওপর থেকে বিশ্বাস উঠে গেছে।
ফাদারঃ সেটাতো আমি জানি জন।আমরা দুজন ছারা কেউ কি ওকে সেভাবে বুঝতে পেরেছে।তারপরও ফারিশ মাই সান আমি তোমাকে বলবো তুমি যীশুর প্রতি আস্থা রাখো।সব ঠিক হয়ে যাবে।
ফারিশঃ যে ঈশ্বর আমার কাছ থেকে আমার
বাবা- মাকে আলাদা করে দিছে,যে যীশু আমাকে পরিবার থাকতেও অনাথ হিসেবে রেখেছে যে বাইবেল আমাকে নিজের দেশে আটকে রাখতে পারে নি তাদের প্রতি বিশ্বাস রাখবো আমি।কিছুতেই না।আই হেট যীশু, আই হেট ঈশ্বর, আই হেট বাইবেল।কাউকে প্রয়োজন নেই আমার। আমি একা পথ চলতে পারি।কাউকে লাগবে না আমার। (রেগে)
( বি.দ্রঃ এখানে কোনো ধর্মকে আমি ছোট করে দেখছি না।কোনো ধর্মকে অপমানও করছি না।কিংবা কটাক্ষ করে কথাও বলছি না।একজন মানুষ হিসেবে আমি সকল ধর্মকেই শ্রদ্ধা করি। একজন অনাথ ছেলে যার কিনা বাবা মা দুজনি আছে কিন্তু আলাদা বসবাস করে। তারা কেউ সন্তানকে চায় না।তাদের কাছে তাদের সন্তান কোনো গুরুত্ত নেই। সেই ছেলের মনের অভিব্যক্তগুলো,মনের গহীনে থাকা চাপা কষ্টগুলো তুলে ধরেছি।এছারা বেশি কিছু নয়।আমি মুসলিম হিসেবে অন্য ধর্মের মানুষকে যথেষ্ট সম্মান করি।কেউ উপরের ফারিশের বলা কথাগুলোকে নেগেটিভ মাইন্ডে নিবেন না।ওর মতো করে ভাববেন।প্লিজ, প্লিজ আমাকে ভুল বুঝবেন না।)
ফারিশ চোখের পানি মুছত মুছতে সেখান থেকে বের হয়ে গেলো।জন ও ফাদার এক দৃষ্টিতে ওর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো।
জনঃ ফারিশ কি কখনো হাসবে না? ওকে এভাবে দেখতে আমার আর ভালো লাগে না।কবে সব ঠিক হবে? আর কবে আমি ওকে হাসি- খুশি দেখবো।
ফাদারঃ ঈশ্বরের ওপর ভরসা রাখো সান।সব ঠিক নিশ্চয় হবে।
জনঃ তাই যেনো হয় ফাদার।
ফাদারঃ যাও গিয়ে দেখ ফারিশ কোথায় গেলো?? ওকে একা থাকতে দিবে না।একাকিত্ব মানুষ কে কুঁরে কুঁরে খায়।তখন নিজের ওপর আস্থাটাই হারিয়ে যায়।যা ফারিশের ক্ষেত্রে হয়েছে।
জন ফারিশ কে খুজতে চলে গেল।ফাদার আকাশের দিকে তাকিয়ে বড় করে একটা শ্বাস ছারলো।আর মনে মনে বললো।
ফাদারঃ এমন জীবন কাউকে দিয়ো না ঈশ্বর। ছেলেটার অনেক ধৈর্য্য তাই এখনো বেঁচে আছে। অন্য কেউ হলে নিজেকে শেষ করে দিতো।তুমি ওর ভালবাসাকে ওর কাছে ফিরিয়ে দিও।অনেক কষ্ট দিয়েছো যীশু ওকে। এবার একটু সুখের মুখ দেখাও।
ফাদার মুখ নামিয়ে চার্চের দিকে হাটঁতে লাগলো।আজ ফারিশের চিন্তায় অন্য কোনো কাজেই মন দিতে পারবে না।নিজের ছেলের মতোই মনে করেন তিনি জন ও ফারিশকে।শুধু মাত্র তার ভরসায় তো ফারিশ ও জন এখানে এসেছে।দশ বছর ধরে তার ভরসায় বেঁচে আছে।
পরের দিন……….
এই ভার্সিটিতে ভর্তি হয়ে বোধহয় জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল করেছি।আজ এই মারামারি,কাল ঐ ঝগরা নয়তো পরশু এই ভেজাল,সেই ঝামেলা।আমি পুরোই বিরক্ত।আগে জানতাম এসব নিজেদের মধ্যে হাংগামা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে বেশি হয়।আমার ধারণা ভুল প্রমাণিত হলো এই ভার্সিটিতে এসে।
প্রাইভেট ভার্সিটিগুলোও যে এসব ঝামেলায় কম না সেটা আমার জানা ছিলো না।ইচ্ছে করছে অন্য কোথাও টি.সি নিয়ে চলে যাই।কিন্তু তাও সম্ভব না।তাহলে আরো অনেক ঝামেলা করতে হবে।আমার ঝামেলায় জরাতে ভালো লাগে না।আবার এই জায়গায়ও থাকতে ইচ্ছে করছে না।এখুনি এতো ঝামেলা, আরো দিনতো পরেই আছে।
আজকে ভার্সিটিতে এসে পরলাম আরেক ভেজালে।মনে হচ্ছ নিজের কপাল নিজেই থাপরাইয়া ফাটায় ফালায়। ধূর এতো ভেজাল ভালো লাগে না।কালকে এক ঝামেলায় পরেছিলাম।আজ আবার নতুন করে ঝামেলায় পরলাম।
( চলবে)
#