#শুধু তুই ৩
#পর্বঃ৩৪
#Tanisha Sultana
নিধির মা নিধিকে ফোন করে ইউশ করেছে। ফ্রেন্ড টিচার ফেসবুক ফ্রেন্ড সবাই নিধিকে উইশ করছে। নিধি তো ভুলেই গেছিলো আজ নিধির বার্থডে। ওদের কল মেসেজ এ মনে পড়ে গেছে। জিসান নিধিকে ইউশ করলো না৷ আদি যে নিধিকে উইশ করবে সে আশা নিধি করে না৷ কারণ নিধি জানে আদি কখনোই এটা করবে না। হয়ত জানেই না আজ ওর জন্মদিন। দীর্ঘ শ্বাস ফেলে নিধি।
এই বয়সের মেয়েরা বন্ধু বান্ধবীদের সাথে বার্থডে সেলিব্রেশন করবে। ঘুরবে ফিরবে পড়ালেখা করবে। কিন্তু নিধি এইটুকু বয়সে এসে ভালোবাসা বিয়ে এসব নিয়ে পড়ে আছে৷ কিছুটা পরিস্থিতি আর কিছুটা নিজের ইচ্ছেয়।
নিধির ভালো লাগছে না কিছুই। প্রিয় মানুষটির থেকে কোনো গিফট পাওয়া বা উইশ পাওয়াটা যে কতোটা খুশির বেপার সেটা নিধি জানে। কিন্তু উপভোগ করার ভাগ্য নেই।
রাত আটটার দিকে পড়তে পড়তে নিধির চোখদুটো লেগে গেছিলো। আদি রুমে এসে দেখে নিধি ঘুমিয়ে আছে মুখের ওপর বই দিয়ে। আদি নিধির পাশে বসে। ঘুমন্ত মুখ টার দিকে একটু তাকিয়ে থাকে। বইটা অতি সাবধানে সরিয়ে রাখে। তারপর নিধির হাত ধরে ঝাঁকিয়ে ডাকে।
“এই মেয়ে ওঠো
কিছুটা জোরে নিধিকে ডাকে আদি। নিধির ঘুমটা হালকা ছিলো ধরফরিয়ে ওঠে।
” কেকেকে
এদিক সেদিক তাকিয়ে বলে নিধি।
” রিলাক্স আমি
আদি আস্বস্ত নিধির কাঁধে হাত রেখে বলে।
নিধি শান্ত হয়ে বসে।
“ডাকছেন কেন? হাই তুলে বিরক্ত হয়ে বলে নিধি।
আদি হাতে থাকা শপিং ব্যাগ নামিয়ে রাখে খাটের ওপর। নিজে উঠে দাঁড়ায়।
” এটা পড়তে পারবে এখন? যদি তোমার কোনো পবলেম না থাকে।
আদি আমতাআমতা করে বলে।
নিধি ভ্রু কুচকে তাকায় আদির দিকে।
“কেনো পাড়বো না? কিন্তু এখন পড়বো কেনো?
সন্দেহীন দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে নিধি।
” আমি বলছি তাই। পড়বে?
এতোটা অনুনয়ের সুরে আদিকে কখনোই কথা বলতে দেখে নি নিধি। তাই আর কথা না বাড়িয়ে মাথা দোলায়।
আদি ঠোঁট মেলে একটু হাসে।
“থ্যাংক্স
আসলে হয়েছে
আদি থেমে থেমে বলতে যায়। কিন্তু পারছে না। আসলে আদি বুঝতে পারছে না কি বলবে? নিধিকে ও গিফট দিয়েছে সেটাই নিধিকে বুঝতে দিতে চাইছে না বা লজ্জা পাচ্ছে।
” আসলে নকলের বাদ। আমি বুঝে গেছি৷ আপনি আমাকে কিছু গিফট দিলেন। আর আপনাকে সেটা পড়ে দেখাতে বলছে। এটা সরাসরি কেনো বলতে পারেন না? এতো দ্বিধা কেনো আপনার?
নিধি ফুরফুরে মনে বলে।
আদি ভরকে যায়।
“ততুমি যেটা ভাবছো সেটা নয়।
আবারও আমতাআমতা শুরু করে দেয়৷ নিজের ওপর নিজেই বিরক্ত হয়ে উঠেছে আদি। ফোঁস করে একটা শ্বাস নেয়। বাচ্চা মেয়েকে একটা গিফট দিতে এসে ঘাম ছুটে গেছে আদির। সাদা শার্টটা ভিজে গেছে।
হাত দিয়ে কপালের নামটা মুছে নেয়। জিভ দিয়ে ঠোঁট ভেজায়।
” রে..ডি হয়ে নাও
বলে কোনোরকমে হতদম্ভ করে কেটে পড়ে আদি।
বাইরে বের হয়ে বুকে হাত দিয়ে জোরে শ্বাস নেয়। জাস্ট গিফট দিতে গিয়ে এই অবস্থা। প্রপোজ করতে গেলে নির্ঘাত হার্ট এ্যাটাক করবে।
নিধি ফিক করে হেসে ফেলে। লোকটার চোখ মুখ বলছে সে নিধিকে গিফট দিতে এসেছে। অথচ মুখে অস্বীকার করার ফন্দি। গোমড়ামুখো একটা
চট করে শাড়িটা পড়ে ফেলে নিধি। ভীষণ সুন্দর শাড়ি। এই ডিজাইনের শাড়ি নিধি হিন্দি সিনেমায় হিরোইন দের পড়তে দেখেছিলো। খুব ভালো লাগে নিধি। খুব ইচ্ছে ছিলো একদিন কিনবে। আর আজ আদিম কিনে দিলো। নিধির খুশি আর দেখে কে?
শাড়ির সাথে মেচিং কানের দুল আর লকেটটা পড়ে নেয়। ঠোঁটে হালকা করে একটু লিপস্টিক দেয় আর চোখে কাজল। ব্যাচ নিধি রেডি। উঁচু একজোড়া জুতো পড়ে খাটে গিয়ে বসে। কখন আদি আসবে? আদৌ আসবে তো? যেভাবে ভাবে গেছিলো নাও আসতে পারে?
ফোন খুঁজে আদিবকে কল করে নিধি।
আদি ফোন রিসিভ করে না। টেক্সট করে নিধিকে ছাঁদে যেতে বলে।
নিধি আয়নায় নিজেকে আরেকবার দেখে নিয়ে রুম থেকে বের হয়।
সামনে পড়ে তোহার। নিধির পা থেকে মাথা পর্যন্ত একবার স্ক্যান করে তোহা।
“কোথায় যাওয়া হচ্ছে?
বুকে হাত গুঁজে প্রশ্ন করে তোহা।
” বরের কাছে। আজ আমার বার্থডে তো আমাকে সারপ্রাইজ দেবে। তাই ছাঁদে ডাকছে।
এক গাল হেসে বলে নিধি।
তোহা চোয়াল শক্ত করে ফেলে।
“যাই আপু
তোহা কিছু বলে না। নিধি তোহার দিকে তাকিয়ে এক গাল হেসে চলে যায়।
” এই মেয়েটার মধ্যে কি এমন আছে যা আমার মধ্যে নেই?
তোহা নিজেকে নিজে প্রশ্ন করে।
ছাঁদের দরজার কাছে এসে নিধি দেখে পুরো ছাঁদটা ঘুটঘুটে অন্ধকার। নিধি কপালে দুটো ভাজ ফেলে। এতো অন্ধকারের মধ্যে নিধি যাবে কি করে? আর আদিই বা কোথায়? অন্ধকারের মধ্যেই দাঁড়িয়ে আছে?
নিধি খুকখুক করে কেশে নেয়।
“আপনি কোথায়?
নিধি হতদম্ভ করে ডাকে আদিকে।
আদিকে ডাকতেই ছাঁদের লাইট জ্বলে ওঠে। নিধি স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে ভেতরে পা রাখে।
” হ্যাপি বার্থডে নি….ধি
এই প্রথমবার আদি নিধির নামটা বললো। নামটা উচ্চারণ করতে গিয়েও তুতলিয়েছে আদি। নিধি আদির দিকে তাকায়। ছাঁদের রেলিং এর সাথে ঠেসে দাঁড়িয়ে আছে আদি। কেমন নার্ভাস নার্ভাস লাগছে আদির। নিধির দিকে তাকাচ্ছে না পর্যন্ত। নিচের দিকে তাকিয়ে আছে।
নিধির আদির সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। আদির মাথা থেকে পা পর্যন্ত চোখ বুলিয়ে নেয়।
“থ্যাংক ইউ
আপনার মুখে আমার নামটা খুব সুন্দর শোনাই। আজকে থেকে না না এখন থেকেই আপনি আমাকে নিধি বলে ডাকবেন? প্লিজ
নিধি কোথায় তুমি? নিধি আমার শার্ট খুঁজে পাচ্ছি না।
নিধি আমার খাবারটা কখন পাবো?
এই সব শোনার খুব ইচ্ছে আমার।
নিধি বলে।
আদি নিধির দিকে তাকায়। নিষ্পাপ মেয়েটা।
আদি উওর দেয় না।
নিধি আদির হাত ধরে। আঙুলের ভাজে আঙুল রাখে।
” আমার সতেরো বছর এখন। বড় হয়ে গেছি।
আদি নিধির দিকে তাকিয়ে একটু হাসে।
“তোমার জন্য একটা কেক এনেছি। যদি কাটতে?
নিধির হাসি মুখটা কালো হয়ে যায়। এই মানুষটা এমন কেনো? সব কিছুতেই নিধির পারমিশন লাগবে? অধিকার থেকে বলতে পারে না? ইন ফিউচার তো বলে বসবে নিধি তোমাকে কি একটা চুমু খাবো? যতসব
মুখে কিছুই বলে না নিধি। চুপচাপ এগিয়ে যায়।
ছোট টেবিলে একটা চকলেট কেক রাখা। তাতে আমার সুন্দর করে লেখা “Happy Birthday Picchi ❤️
কেক এর চারপারে বেলুন আর কালো গোলাপ রাখা। দুটো চেয়ারও আছে।
নিধি চেয়ারে বসে।
“বসার জন্য কি ইনভাইট করতে হবে না কি?
কিছুটা রেগে বলে নিধি।
আদি চট করে বসে পড়ে।
চলবে।
#শুধু তুই ৩
#পর্বঃ৩৫
#Tanisha Sultana
ছাঁদের রেলিং ঘেসে বসে আছে আছে নিধি। দৃষ্টি আকাশের দিকে। থালার মতো চাঁদ উঠেছে আকাশে। একটি পরিপূর্ণ জোৎসা রাত। চাঁদের আলোটা ছাঁদের আনাচেকানাচে আলোকিত করে রেখেছে। চাঁদের আলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে নিধির চোখে মুখে। খোলা চুল কপালে টিপ চাঁদের আলোতে খুব মোহনীয় লাগছে নিধিকে। নাকে থাকা ছোট সাদা পাথরের নাক ফুলটা ঝলমল করছে। শাড়ির আচল মাটিতে পড়েছে।
ছাঁদের রেলিং এর ওপর বসে আছে আদি। নিধিকে একমনে দেখছে। কতো সুন্দর স্বচ্ছ আর নিষ্পাপ লাগছে নিধিকে। আদির খুব করে ইচ্ছে করছে নিধিকে ছুঁয়ে দিতে। নিধি টিপ দেওয়া কপালে গভীর করে ঠোঁট ছোঁয়াতে। কিন্তু পারছে না। কোথাও একটা বাঁধা দিচ্ছে। খুব করে মনের কোনে জমে থাকা নিধির জন্য সুপ্ত অনুভূতি গুলো নিধির কোলে মাথা রেখে বলতে। কিন্তু পারছে না। আচ্ছা আদি যদি নিধিকে নিজের চিন্তা ভাবনার কথা বলে বা অনুভুতির কথা বলে নিধি কি বুঝবে? না কি ভুল বুঝবে আদি? ছেড়ে যাবে না কি হাতটা শক্ত করে করবে?
এতোগুলা প্রশ্ন এক সাথে জমা হচ্ছে আদির মনে।
একটা জোরে শ্বাস নেয় আদি।
“আমি কিছু বলতে চাই।
আদি সংকোচ দ্বিধা এক পাশে রেখে বলে ফেলে।
নিধি আকাশের দিকেই তাকিয়ে থাকে। চোখ ফেরায় না আদি কি বলবে বা বলতে পারে তা নিধি জানে। দীর্ঘ শ্বাস ফেলে নিধি৷ খুব করে চাইছে দিনটা নষ্ট না করতে। আদির বোরিং কথাগুলো আর নিধি শুনতে চায় না। এই লোকটা এমন কেনো? সব সময় আবোলতাবোল চিন্তা ভাবনা না করলে এর চলে না? চোখ বন্ধ করে নিজেকে শান্ত করে নিধি। নিজের মধ্যে কথা গুলো গুছিয়ে নেয়। আজ সবটা ক্লিয়ার করতে হবে। একটা ভুল ধারনা নিয়ে আর থাকা যাবে না।
” আপনার কথা তো সব সময়ই শুনি আজ আমি আপনাকে কিছু বলবো। আজ আপনি চুপ থেকে আমার কথা শুনবেন৷ যদিও কথা গুলো আপনার ভালো লাগবে না তবুও বলবো। এভাবে আর কতোদিন? একটা ফয়সালা হওয়া তো দরকার। জীবনটা তো অসয্য হয়ে যাচ্ছে। সুখটা ভেসে আসা মেঘের মতো হয়ে গেছে। এই আসছে তো এই চলে যাচ্ছে।
নিধি গম্ভীর কন্ঠের কথা গুলো শুনে আদির বুক কেঁপে ওঠে। কি বলবে নিধি? কিসের ফয়সালা করবে? ছেড়ে চলে যাবে না তো?
ভেবেই হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছে।
নিধি আদির হাতের ওপর হাত রাখে। আদি চমকে তাকায় নিধির দিকে। নিধির শীতল চাহনিতে আদি কিছুটা শান্ত হয়। এই নিষ্পাপ চোখ দুটো দিতে তাকালে নিজেকে হারিয়ে ফেলতে ইচ্ছে করে আদির।
“আমি ছোট আমি বাচ্চা। আমার বয়সী মেয়েরা পড়ালেখা করে খেলাধুলা করে আড্ডা দেয়। আমারও এসব করার কথা। কিন্তু আমি এসবে বদলে ভালোবাসা শিখে নিয়েছি বিয়ে করেছি আপনার কথা ভাবছি। এসব আমার ফিচারের জন্য ঠিক না। কিন্তু এসব যেমন সত্যি তেমন এটাই সত্যি যে এই বয়সেই আমার বিয়ে হয়ে গেছে। মিথ্যে করে হলেও বরের করা রান্না খেলেও আমি ছয় মাস সংসার করেছি। বিয়ে নামক বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছি। আপনি মানেন আর না মানেন। আমি আপনার বিয়ে করা বউ। এখন চাইলেন আমার লাইফটা আর পাঁচটা আমার বয়সী মেয়েদের মতো হবে না। এটা কিছুতেই সম্ভব না। এখন আপনি আমাকে ছেড়ে দিলে সবাই বলবে আমি ডিভোর্সী। এই দাগটা আমার জীবন থেকে যাবে না। তো প্লিজ ছেড়ে দেবেন না আমায়। আর আমার জীবনে আপনি থেকে গেলে আমাদের সুন্দর একটা সংসার হবে। হ্যাপি ফ্যামেলি হবে। আমি তো এভাবেও ফিউচার ব্রাইট করতে পারবো। আপনি সাথে থেকে আমাকে হেল্প করবেন৷ নিজের হাতে গুছিয়ে দিবেন।
এটুকু বলে থামে নিধি।
আদি ড্যাপ ড্যাপ করে নিধির দিকে তাকিয়ে আছে। নিধি এতো গুছিয়ে এতো সুন্দর করে বুঝিয়ে কথা গুলো কি করে বলছে? নিধি তো এভাবে কথা বলতে পারেই না হঠাৎ করে মেয়েটা এতো বড় হয়ে গেলো।
নিধি জোরে শ্বাস নেয়।
” আদি সাহেব আপনার চিন্তা ভাবনা এমন কেনো বলেন তো? নিজের জীবনসঙ্গিনীকে নিজের মতো করে সাজিয়ে নিতে কতোজন পারে বলেন তো? হাজারে একজন। আর সেই একজন আপনি। আপনি কি পারেন না এই পিচ্চি নিধিকে নিজের মতো করে গুছিয়ে নিতে। আমার পাশে থেকে আমাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে। সুন্দর একটা ভবিষ্যত দিতে। আপনি ভাবেন বয়সের সাথে আমার ম্যাচুয়েটি আসবে। তখন আমি ফিল করতে পারবো আপনার সাথে আমার যায় না।
এমনটা কেনো ভাবেন বলেন তো?
এমনটাও তো ভাবতে পারতেন এই পিচ্চি নিধি বড় হওয়ার সাথে সাথে আমাকে আরও বেশি ভালোবাসবে। আমাকে ছাড়া এক সেকেন্ড থাকতে পারবে না।
প্রথম প্রেমের গল্প শুনেছেন কখনো? হয়ত শুনেছেন। হয়ত কেনো প্রথম প্রেমের উদাহরণ তো আপনিই। আপনি তো জুঁই আপুকে ভালোবাসেন। উনিতো আপনার প্রথম ভালোবাসা। আপনি কি আপুকে ভুলতে পেরেছেন?
পরেন নি।
কেনো পারেন নি?
কারণ উনি আপনার প্রথম প্রেম। আপনিও আমার প্রথম প্রেম। আপনাকে আমি কখনোই ভুলতে পারবো না।
কি করে ভুলবো?
প্রথম প্রেম কখনোই ভোলা যায় না। এটা স্মৃতির পাতায় অমর হয়ে যায়। যতদিন প্রাণটা থাকে ততোদিন মনের মধ্যে ঝড় তোলে।
বাই এনি চান্স যদি কখনো আমার মেমোরি লস হয়ে যায় যদি গোটা দুনিয়া ভুলে যাই ইভেন আমাকেও যদি আমি ভুলে যাই তাহলেও আমি আপনাকে ভুলবো না। পাক্কা প্রমিজ
আপনার চেহারা হয়ত মনে থাকবে না কিন্তু নামটা এই খানে (বুকের বা পাশটায় হাত দিয়ে) থেকে ভেসে আসবে৷ আপনি যদি আমার হার্ট এ কান পাতেন তাহলে প্রতিনিয়ত আদি নামটা শুনতে পাবেন।
আদির দুই গালে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে বলে নিধি।
আদি নিধির চোখের দিকে তাকায়। পিচ্চি মেয়েটা চোখে আদি অফুরন্ত ভালোবাসা দেখতে পাচ্ছে।
“তুমি
নিধি আদিকে থামিয়ে আদির ঠোঁট আঙুল দিয়ে ” হিসসসসসসসসসসস” শব্দ বের করে। আদি চুপ হয়ে যায়। নিধি আদির দুই হাত টেনে নিধির কোমরে নেয়। নিধির এক হাত আদির ঠোঁটে আরেক হাত আদির চুলে। আদির কপালে কপাল ঠেকায় নিধি।
“কিচ্ছু বলবেন না আপনি। ভালোবাসেন না বাসেন আমি তো ভালোবাসি। থাকতে চাই আপনার সাথে। ইতিহাস গড়তে চাই। ইন ফিউচার আদি নিধির ভালোবাসাকে আমি উদাহরণ হিসেবে দেখতে চাই। চিন্তা ভাবনা বদলান না আদি সাহেব প্লিজ। নিজের মতো করে গড়ে পিঠে নেন না আমায়। ভালোবাসা দিয়ে ভরিয়ে দিন না। যাতে আমি উজার করে বলতে পারি আমার বুরো বরটাই বেস্ট। লাগবে না আমার সমবয়সী কাউকে। ম্যাচুয়েট কাউকে। আমার সব সময় আমার লাটসাহেবকেই চাই। মরার আগে পর্যন্ত। আপনার বুকে মাথা রেখেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করতে চাই।
ভালোবাসি আপনাকে খুব। আই নিড ইউ। অলওয়েজ নিড ইউ।
আদির বুকে মাথা রাখে নিধি। ধরফর করা বুকটা শীতল হয়ে যায়। আবেগে চোখ বন্ধ করে ফেলে। নিধির উন্মুক্ত পেটে আদি নিজের হাত দুটো শক্ত করে চেপে ধরে। কিছুটা ধুপ করে ওঠে নিধির বুকটা। কেঁপে ওঠে নিধি। আদি সেটা বুঝতে পেরে মুচকি হাসে।
কিছুটা সময় দুজন নিরবতা পালন করে। আদি নিধির বলা কথা গুলো ভাবছে। এই মেয়েটা এতো সুন্দর করে গুছিয়ে কথা গুলো বললো কি করে? আর এতো কথা ওর ছোট মাথায় আসলো কি করে?
কপাল ঠেকে এখনো কপাল সরায় নি। আর ঠোঁট থেকে হাতটাও সরায় নি। ওইভাবেই আছে দুজন।
” নিধি
ছোট করে ডাকে আদি।
“হুমম বলেন?
বুকে মাথা রেখেই বলে নিধি।
” জীবনটা ততোটাও সহজ না যতটা আমরা ভাবি।
“জীবনটা ততোটাই জটিল না যতটা আমার ভাবি। আমাকে নিয়ে খুব অসুবিধা হয় আপনার? অসুবিধা হলে চলে যাবো।
আদি নিধিকে সামনে এনে দাঁড় করায়।
” আমি সেটা বলি নি।
“আমি কিচ্ছু শুনতে চায় না। মুহূর্তটা উপভোগ করুন।
নিধি আবার আদির কপালে কপাল ঠেকায়। আবার হাত দুটো নিয়ে নিজের কোমরে রাখে।
আদি নিধির নাকে চুমু খায়। নিধি চমকে ওঠে। চোখের পাতায় দুই গালে কপালে চুমু খায় আদি। নিধি হঠাৎ করে চুমু কেনো খেলো বুঝতে পারছে না। তবুও কিছু বলে না। উপভোগ করে।
” ফাটিয়ে দিয়েছিস নিধি। একদম ফাটিয়ে দিয়েছিস তুই
আদি আর নিধি চমকে ওঠে। দুজন দুজনকে ছেড়ে সরে দাঁড়ায়।
“আমি যা সন্দেহ করেছিলাম তাই
আদি মাথায় হাত দিয়ে বিরবির করে বলে।
চলবে