শুধু তুই ৩ পর্ব-৩৬+৩৭

0
1277

#শুধু তুই ৩
#পর্বঃ৩৬
#Tanisha Sultana

নিধি অগ্নি দৃষ্টিতে তাকায় জিসানের দিকে। এতো সুন্দর মুডটাই নষ্ট করে দিলো। চোখে মুখে সব জায়গায় শেষ এবার নিশ্চয় ঠোঁটে চুমু দিতো। কতো রোমান্টিক একটা মোমেন্ট। নিরামিষের ভাই তো নিরামিষই হবে।
গাল ফুলিয়ে বুকে হাত গুঁজে অন্য দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে থাকে নিধি। আদি ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে জিসানের দিকে। জিসান মিটমিটিয়ে হাসছে।

“কথা গুলো তুই শিখিয়ে দিয়েছিলি ওকে? না কি ওর ওই তিথি? আমি জানতাম ও কখনোই এতো সুন্দর করে গুছিয়ে কথা বলতে পারবে না। প্রথম থেকেই ডাউট হচ্ছিলো আমার তবুও মনোযোগ দিয়ে কথা গুলো শুনেছি। শুনে শুনে এসব বলার কি দরকার? ইমপ্রেস করার চেষ্টা চলছিলো? ইডিয়েট একটা।
কিছুটা রেগে বলে আদি।
জিসান হা করে তাকিয়ে আছে। নিধি চোখ বড়বড় করে তাকায়।
” যাচ্ছি আমি। কাজ আছে আমার। এসব ফালতু কথা শোনার টাইম নেই
আদি যেতে নেয়।
“তাহলে তুই চাইছিলি এই কথা গুলো নিধি মন থেকে বলুক?
জিসানের প্রশ্নে থমকে যায়। মুখটা থমথমে হয়ে যায়। কি করে বলবে সত্যিই আদি চায়,নিধি নিজের মন থেকে কথা গুলো বলুক?
আদির এরকম চেহারাটা দেখে জিসান এক দরফা হেসে নেয়। নিধি সরু চোখে তাকিয়ে আছে আদির দিকে।
” ককি বলছিস? আমি চাই ও যা করুক যা বলুন নিজ থেকে। আই থিংক তুই বুঝতে পেরেছিস।
জিসান ওর মন মতো উওর না পেয়ে মুখটা কালো করে ফেলে। কতো ভেবেছিলো আদি বলবে “হ্যাঁ আমি চাই ও মন থেকে বলুক” তা না ঘুড়িয়ে পেঁচিয়ে বলে দিলো।

আদি নিধির দিকে আরেক দরফা তাকায়। তরতর করে রাগ বাড়ছে।
“আমি এতো কষ্ট করে দীর্ঘ পাঁচঘন্টা যাবৎ কথা সাজিয়ে আমাকে বললাম আর আপনি বলছেন আমাকে জিসান বা তিথি শিখিয়েছে? ইটস নট ফেয়ার আদি সাহেব। আমি কি এতোই বোকা?
আদির পথ আটকে দাঁড়িয়ে বলে নিধি।

আদি বুকের ভেতর ঠান্ডা অনুভব করে। পা আপনাআপনি থেমে যায়। রাগে ভাজ পড়া কপালটা প্রসারিত হয়ে যায়। গম্ভীর করে থাকা মুখটা স্বাভাবিক হয়ে যায়। আপনাআপনি হাতটা বুকে চলে যায়। বা পাশটায় হাত রাখে আদি। কোনো রকমে ভনিতা না করে সরাসরি নিধির চোখের দিকে তাকায়
নিধি নিজে থেকে বলেছে কথা গুলো। এর থেকে আনন্দের আর কি কিছু আছে?

জিসান ওদের সামনে এসে দাঁড়ায়।
” জিসান তুই যা
জিসান কিছু বলার জন্য হা করে ছিলো। তার আগেই আদি বলে ওঠে কথাটা।
জিসান চলে যায়।
নিধি জিসানের যাওয়ার দিকে তাকায়
“ওকে যেতে বললেন কেনো? একটু আড্ডা দিতাম তিনজন মিলে।
আদি বিরক্তি নিয়ে আবার রেলিং এর ওপরে গিয়ে বসে। নিধিও আবার সেই আগের জায়গায় বসে।

আদির খুব ভালো লাগছে। অনেকদিন পরে নিজেকে সুখী মনে হচ্ছে। কিন্তু সত্যিই কি এটাকে সুখ বলে?
নিধি হাই তুলছে। অনেক রাত হয়ে গেছে। এতো রাত ওবদি কখনোই নিধি জেগে থাকে নি।
” নিধি
আদি নরম সুরে বলে।
“হুমমম
নিধি আদির পায়ের ওপর মাথা দিয়ে কোমর জড়িয়ে ধরে।
” হুমম বলুন
ঘুম ঘুম চোখে বলে নিধি।
আদি নিধির মাথায় হাত বুলায়।
“জানেন তিথি প্রেগন্যান্ট। আমার থেকে এক মাসের ছোট ও।
আদি চোখ বড় বড় করে তাকায়। এখনই বেবির কথা ভাবছে?
” তোমার না ঘুম পাচ্ছে ঘুমাও।
একটা ঢোক গিলে বলে আদি।
নিধি মাথা উঁচু করে এক পলক তাকায় আদির মুখের দিকে।
“আই নীড ইউ
” আমি তো আছিই। তোমার সাথে তোমার কাছে।
ঠোঁট মেলে বলে
“ধ্যাত
আদির পায়ে একটা থাপ্পড় দিয়ে দিবে বিরক্তি নিয়ে বলে বলে নিধি।
আদি একটু শব্দ করে হাসে।

নিধির এক্সামের আর বেশি দেরি নেই। পনেরো দিন আছে। আর চিটাগং যাওয়া হবে না। আজ ইভার গায়ে হলুদ। ইভার বিয়েটা মিটে গেলে মন দিয়ে পড়ালেখা করতে হবে নিধিকে।
ফজরের আজানের সময় ঘুম থেকে উঠে ওজু করে আদিকে ডাকে নিধি।
” উঠুন না
নামাজ পড়বেন না?
নিধির মৃদু সুরে উঠুন না শব্দটিতে আদির ঘুম পালিয়ে যায়। চোখ মেলে এক সিগ্ধ নিধিকে আবিষ্কার করে। মাথায় ঘোমটা দেওয়া। মুখে বিন্দু বিন্দু পানি জমে আছে। খুব পবিত্র লাগছে নিধিকে।
“উঠুন নামাজ পড়ে নিন
আদিকে চোখ খুলতে দেখে বলে নিধি।
আদি উঠে বসে।
অনেকদিন ফজরের নামাজ পড়া হয় না। অনেকদিন বলতে হাতে গোনা কয়েকদিন ফজরের নামাজ পড়েছে আদি। কাজের পেশারে অনেক রাতে ঘুমায় ফলে আর উঠতে মন চায় না। আর জাগনাও পায় না।
” কি হলো?
হালকা ধাক্কা দিয়ে বলে নিধি।
“হুমম যাচ্ছি
মিষ্টি করে একটু হেসে বলে আদি।
নিধিও জায়নামাজ বিছিয়ে নেয়।
আদি ওজু করে বের হয়।
মাথার টুপি ঠিক করতে করতে নিধির দিকে এক পলক তাকায়।
” আসছি
বলে চলে যায় আদি। মসজিদ থেকে নামাজ পড়বে।

নামাজ শেষ করে নিধি বেলকনিতে বসে পড়তে থাকে। গায়ে ভালো করে চাদর জড়িয়ে নিয়েছে। ডিসেম্বর মাস। ভালোই শীত পড়েছে। কুয়াশায় চার পাশ ঢেকে গেছে।
হাত পা ঠান্ডা হয়ে গেছে নিধির। তবুও নিধি এখানে আসেই পড়বে। এখান পড়তে ভালো লাগছে।

আদি রুমে এসে নিধিকে বেলকনিতে বসে পড়তে দেখে কিছুটা রেগে যায়।
“এখানে কেনো তুমি? কম্বলের মধ্যে বসে পড়লে কি হয় তোমার?
কপাট রাগ দেখিয়ে বলে আদি।
নিধি লাফ দিয়ে উঠে দাঁড়ায়। এখন যদি আদি রেগে যায় তাহলে ওর আর ইভার গায়ে হলুদে যাওয়া হবে না।
” সরি সরি এখনই কম্বলের মধ্যে যাচ্ছি
এক দৌড়ে চলে যায় বিছানায়। গায়ে ভালো করে কম্বল জড়িয়ে বসে।
আদি ভ্রু কুচকে তাকায়। এতো শান্ত শিষ্ট ভদ্র মেয়ে তো নিধি না। তাহলে এখন এতো বাধ্য হলো কিকরে?

প্রশ্নটা মনের মধ্যে থাকলেও নিধিকে জিজ্ঞেস করে না। রুম থেকে বেরিয়ে যায়। নিধির মুখটা কাঁদো কাঁদো হয়ে যায়। এমা রেগে গেলো কেনো? এখন যদি আমাকে ইভা আপুদের বাড়িতে না নিয়ে যায়?

চলবে

#শুধু তুই ৩
#পর্বঃ৩৭
#Tanisha Sultana

হাতে দুটো কফির মগ নিয়ে রুমে আসে আদি। নিধির পাশে কম্বলের মধ্যে পা ঢুকিয়ে বসে। আদির পায়ের সাথে নিধির পায়ের ছোঁয়া লাগতেই কারেন্টের শক খায় নিধি। প্রচন্ড ঠান্ডা আদির পা। নিধি তারাহুরো করে নিজের পা সরিয়ে নেয়।
“আপনার পা মারাক্তক ঠান্ডা।
নিধি কাঁদো কাঁদো ফেস করে বলে।
আদি আবার নিজের পা নিধির পায়ের সাথে লাগিয়ে দেয়।
” তোমার পা যদি ঠান্ডা হতো তাহলে আমি নিজ দায়িত্বে তোমার পা গরম করার ব্যবস্থা করতাম তো তুমি কেনো সরিয়ে নিচ্ছো? ভালো না বাসো। এতোটুকুও ঠান্ডা তো সয্য করতেই পারো।
ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বলে আদি।
নিধির সামনে কফির মগটা ধরে।
“খাও ভালো লাগবে।
নিধি কফির মগটা হাতে নেয়। ভীষণ ঠান্ডা লাগছে। মনে হচ্ছে পায়ে বরফ দেওয়া।
” আমাকে ভালোবাসা বোঝানো হচ্ছে তো? আমিও বুঝাবো। বরফ দিয়ে গোছল করে জড়িয়ে ধরবো। তারপর দেখবে ভালোবাসা কি? লাটসাহেব একটা
নিধি ভেংচি কেটে বলে।

“ভেংচি দিলা কেনো?
আদি ভ্রু কুচকে বলে।
পায়ে পা লাগিয়েছি বলে?
” নাহ নাহ এখনো ভালোবাসলেন না বলে। হেসে বলে নিধি।
“আচ্ছা?
” হুমমম। কবে যে ভালোবাসবেন আল্লাহ জানে
আফসোসের সুরে বলে নিধি।
“কেনো তুমি জানো না? বাঁকা হেসে বলে আদি।
” আমি কি করে জানবো? আপনি তো একটা নিরামিষ। নিরামিষদের মনের খবর জানা বড় দায়।
“তাই?
” হুমম তাই তো
একটু নিধির দিকে এগিয়ে যায় আদি।
“আমি নিরামিষ?
আরও একটু এগিয়ে বলে আদি।
“কেনো কোনো ডাউট আছে?
নিধি ভাব দেখিয়ে বলে।
আদি আরও এগিয়ে যায় নিধির দিকে। নিধি এবার ভরকে যায়। আদি নিধির হাত থেকে কফির মগটা নিয়ে টেবিলে রাখে। কোলের ওপর থেকে বই নিয়ে পাশে নামিয়ে রাখে। নিধি চোখ বড়বড় করে তাকিয়ে আছে।
আদি এবার আরও একটু এগিয়ে যায়। নিধি ঢোক গিলে পেছতে থাকে।
” কককি করছেন?
কিছুটা ভরকে গিয়ে বলে নিধি।
আদি এক ধাক্কায় নিধিকে ফেলে দেয়। বালিশে গিয়ে মাথা ঠেকে নিধির। আদি আর নিধির মধ্যে দুরুত্ব খুব কম।
“ইসসসসসসস আমি যে নিরামিষ না সেটাই প্রুফ করছি।
ফিসফিসিয়ে বলে আদি।
নিধির কান গরম হয়ে যায়। হার্টবিট বাড়তে থাকে। অদ্ভুত অনুভূতি হচ্ছে। এমনটা আগে কখনো হয় নি। এ কেমন অনুভূতি? এই অনুভূতির সাথে নিধি পরিচিত নয়।
” এএভা
নিধি থেমে থেমে কিছু বলতে যায়। আদি নিধির নাকে চুমু খায়। নিধির কথা থেকে যায়। গলা দিয়ে কোনো শব্দ বের হচ্ছে না। চোখের পাতা কাঁপছে। চোখ বন্ধ করে আছে। চোখ খোলার সাহস নেই নিধির। চেনা আদি কেই কেমন অন্য রকম লাগছে। যে আদির সামনে থাকতে ভীষণ ভালো লাগে। সেই আদির সামনে থেকেই পালাতে ইচ্ছে করছে।
“তুমি চাও আমি তোমার সাথে থাকি। খুব কাছাকাছি পাশাপাশি
ফিসফিসিয়ে বলা আদির কথা গুলো নিধির হার্ট বিট বাড়িয়ে দিচ্ছে। লজ্জায় মাটিতে মিশে যেতে ইচ্ছে করছে। বিছানার চাদর খামছে ধরে আছে।

আপনি প্লিজ একটু দুরে যান কথাটা খুব করে বলতে ইচ্ছে করছে কিন্তু পারছে না। গলা দিয়ে শব্দ বের হচ্ছে না। মনে হচ্ছে কেউ একজন গলার স্বর ধরে রেখেছে। ঠোঁট দুটো শুকিয়ে গেছে। জীভ দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে নেয় নিধি।
” চাও না?
আবার পাল্টা প্রশ্ন করে আদি। কেঁপে ওঠে নিধি। হুম চায় মাএ দুইটা শব্দ উচ্চারণ করতে পারছে না নিধি। অস্বস্তি হচ্ছে।
“আমি আগে চায় তাম না কিন্তু এখন
বলতে বলতে থেমে যায় আদি। একটু মৃদু হাসে।
নিধি জানতে ইচ্ছে করছে এখন কি? থেমে গেলেন কেনো? কিন্তু নিধি তো মুখে কুলুপ দিয়েছে। কথা বলতে পারবে না৷ তাই আর প্রশ্নটা করা হয় না। আর জানাও হয় না।
আদি নিজের ঠান্ডা হাত দুটো নিধির নিধির গালে আর পেটে দেয়। নিধি ছিটকে ওঠে। তারাহুরো করে চোখ খুলে ফেলে। আদি আগে থেকেই নিধির চোখের দিকে তাকিয়ে ছিলো তাই নিধি চোখ খুলতেই দুজন চোখাচোখি হয়ে যায়। সাথে সাথে নিধি চোখ নামিয়ে নেয়। পূনরায় চোখ জোড়া বন্ধ করে ফেলে।
ঠোঁটে ঠোঁট চিপে থাকে।
আগে কতো নিজে ইচ্ছেয় আদির কাছে গিয়েছে। আদিও তো ছুঁয়েছে কিন্তু এমন অনুভূতি তো আগে হয় নি। কেনো? তবে কি এটা ভালোবাসার ছোঁয়া তাই?

” তুমি হয়ত বা জানো না তুমি একটা জাদুকর। নিজের মায়া জালে যে কাউকে বেশ করতে পারবে।
আদি নিধির কপালে কপাল ঠেকিয়ে বলে।
আদি নিশ্বাস নিধির চোখে মুখে আচঁড়ে পড়ছে।
আদি মুখ তুলে নিধির মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে। নিধি গোলাপি রাঙা কাঁপা কাঁপা ঠোঁট দুটো খুব করে টানছে আদিকে।
আজ আর কোনো দোটানা আদিকে বা আদির অনুভূতিকে বাঁধা দিতে পারছে না। চোখ বন্ধ করলে নিধির মুখ টা ছাড়া আর কিছুই দেখতে পারছে না।
সব চিন্তা ভাবনা দোটানা ঝেড়ে ফেলে নিধির ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে দেয় আদি। নিধি থমকে যায়। এমনটা কখনোই ভাবে নিধি।

“আদি আদি কোথায় তুমি
জোরে জোরে ডাকতে ডাকতে রুমে ঢুকে তোহা।
আদি ছিটকে দুরে যায় নিধির থেকে। কম্বল সরিয়ে বসে পড়ে। রীতিমতো ঘামছে। ভীষণ নার্ভাস হয়ে গেছে। এখন বলবে কি? নিধি তো লজ্জায় লাল টমেটো হয়ে গেছে। আদির প্রথম স্পর্শ। চোখ বন্ধ করে জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে।
তোহা রুমে ঢুকে বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে আছে ওদের দিকে লজ্জা শরম ভুলে। এটা দেখবে স্বপ্নেও ভাবে নি। তোহা ভাবতো আদি নিধিকে পছন্দি করে না। কিন্তু এখন ওদের মিল তো বলে দিচ্ছে এরা আর পাঁচটা কাপলদের মতো ভালোবাসা নিয়ে সুখে আছে।

আদি তারাহুরো করে ঠোঁট মুছে নেয়। অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে। মাথা চুলকে নেয়।
” ততুমি কিছু বলবে?
আদির কথা শুনে নিধি ফট করে চোখ খুলে। তোহার ডাক নিধির কানে পৌছায় নি। নিধি উঠে বসে তোহাকে দেখে কম্বল দিয়ে নিজেকে ঢেকে ফেলে।
তোহার চোখ দুটো টলমল করছে।
“ফুপি ডাকছিলো
বলে আদির দিকে এক পলক তাকিয়ে যেতে নেয়।
” তোহা শুনো
আদি বলে। তোহা দাঁড়িয়ে যায়। আদি উঠে তোহার পিছে গিয়ে দাঁড়ায়।
“বিবাহিত কাপলদের রুমে ঢুকতে গেলে প্রথমে নক করতে হয়। জানতে না নিশ্চয়? এখন বলে দিলাম মনে রেখো কেমন?
মিষ্টি করে হেসে বলে আদি।
তোহার টলমল করা চোখ থেকে টুপ করে দুফোঁটা পানি গড়িয়ে পড়ে।
” সরি
বলেই হনহনিয়ে চলে যায়।
তোহা যেতেই আদি দীর্ঘ শ্বাস ফেলে।

“সেই দিন তো দশ সেকেন্ডও হয়েছিলো না তাই আজ পুরো এক মিনিট। তুমি চাইলে আরও
নিধি বালিশ ছুঁড়ে মারে। আদি কেচ্ছা ধরে। নিধি কম্বলের মধ্যে থেকেই লজ্জায় চোখ বন্ধ করে ফেলে।
আদি ফিক করে হেসে ফেলে।
” কফি তো খাওয়া হলো না। চলো ব্রেকফাস্ট করবো। দেন ইভাদের বাসায় যাবো।
নিধির কোনো সারাশব্দ নেই। আদি বুঝে গেছে ও এখান থেকে না সরা পর্যন্ত নিধি আর কম্বল থেকে মুখ তুলবে না। মেয়েটা যে এতো লজ্জাবতী না আদি আজ বুঝতে পারলো। অবশ্য আজকেই প্রথম মেয়েটাকে মন থেকে চুমু খেয়েছে ও।
“দশ মিনিট দিলাম।
বলে আদি বেড়িয়ে যায়।
আদি বেরিয়ে গেলেই নিধি লাফ দিয়ে খাট থেকে নামে। আয়নার সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। ঠোঁটটা লাল হয়ে গেছে। নিধি মুচকি হেসে দুই হাত দিয়ে মুখ ঢেকে ফেলে।
” এবার আর বেবি আসতে বেশি দেরি নেই। মনে মনে বলে নিধি।

নিধি আজকে জিসানের সাথে পেছনের ছিটে বসেছে। আদির সামনে যেতেই ওই ঘটনার কথা মনে পড়ে যাচ্ছে আর ও লজ্জায় নুয়িয়ে যাচ্ছে। তাই জিসানের সাথে পেছনের ছিটে বসেছে। আদি ডাইভ করছে। ভীষণ রেগে আছে নিধির ওপর। আদির পাশের ছিটে বসেছে তোহা। তোহার মনটা ভালো নেই। জানালা দিয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে।
নিধি আজকে হলুদ শাড়ি পড়েছে চারপোয়া করে। সাথে কাঁচা ফুলের গহনা। সকাল সকাল জিসানের সাথে গিয়ে পার্লার থেকে সেজে এসেছে। এটা জানতো না আদি। গাড়িতে এসেই দেখলো নিধিকে।

আদি লুকিন গ্লাসে বারবার নিধিকে দেখছে। চোখ ফেরানো দায় হয়ে পড়েছে মেয়েটার থেকে। কিন্তু এই মেয়েটা খালি পালাই পালাই করছে আজ। এরকম করবে জানলে চুমুই দিতো না। বিরক্ত লাগছে। একবার সামনে পাই ঠাটিয়ে একটা চর মারবো। বড্ড সাহস বেরে গেছে।

চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে