শুকনো ঘাস ফুল part: 7

0
1413

#শুকনো_ঘাস_ফুল?
#natasa_islam_muntaha
#part::7

??
?

আহিবা সবটা দেখে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে রান্না ঘরে চলে যায় সকালের নাস্তা বানাতে …

আহাদ এর ইচ্ছা না থাকার সত্যেও সবার সাথে গল্প করে রুমে গিয়ে রেডী হয়ে নেয় অফিসে যাওয়ার জন্য .

আহাদ:আজ মনে এতো কু ডাকছে কেন মনে হচ্ছে খারাপ কিছু হবে …নাহ এগুলো কি ভাবছি এমন কিছুই হবে না এগুলো.আমার মনের ভুল.ধারনা ছারা আর কিছুই না

বলে রেডী হয়ে নিচে আসে দেখে ওর কাকা কাকি আর দাদী সাথে রাফিও নিচে রেডী হয়ে বসে আছে

আহাদ:আরে কোথাও যাচ্ছো
কাকা:হুম নতুন বউ দেখলাম অথচ তাকে কিছু দেওয়া হলো না তাই সবাই মিলে একটু মার্কেটে যাচ্চি আম্মাকেও নিয়ে যাই ..
আহাদ:এর কি দরকার ছিল
দাদী:তুই চুপ থাক …বেশী বুঝিস না …চল আমরা বার হই
কাকা:হুম ,,

তারা বাসা থেকে বের হতেই আাহাদ যেন হাফ ছেরে বাচে তারপর নিজেও গাড়ি নিয়ে বেড়িয়ে পরে অফিসের উদ্দেশ্য

রাফি:ওহ সিট বাবা আমি তো আমার একটা কার্ড বাড়িয়েই ফেলে এসেছি
দাদী:কি যে করিস না …এখন বাসায় যাবি
রাফি:কি করবো বলো ,,,,বাবা তুমি গাড়ি নিয়ে মার্কেটে চলে যাও আমি বাসায় যাচ্ছি
দাদী:যা তবে তারাতারি আসিস

?
রাফি গাড়ি থেকে বের হয়েই একটা সয়তানি হাসি দিয়ে একটা টেক্সি ভারা করে বাসায় চলে যায় ..আহিবা আর সুমি ঘর ঘুছাচ্ছিল হঠাৎ কলিং বেল বেজে ওঠে

আহিবা :সুমি একটু দরজাটা খুলে দেখ না কে এসেছে
সুমি: আইচ্ছা

দরজা খুলতেই রাফি হুরমুর করে বাসায় ডোকে আহিবা রাফিকে এভাবে আসতে দেখে অনেকটাই ভয় পেয়ে যায় তবুও নিজেকে সামলে নেয় …

আহিবা:ভাইয়া আপনি একা আসলেন দাদী কাকা কাকি তারা কোথায়
রাফি আহিবার দিকে আগাতে আগাত:তারা আসেনি মার্কেটে গিয়েছে
আহিবা:একি আপনি এদিকে এভাবে আগাচ্ছেন কেন
রাফি:একটু পরেই বুঝবে

?
রাফি আহিবাকে ধরার জন্য হাত বারায় আহিবা দৌড়ে নিজের রুমে চলে যায় কিন্তু দরজা আটকাতে নিবে তার আগেঔ রাফি গিয়ে দরজা ধাক্কা দিয়ে রুমের ভিতরে গিয়ে দরজা লাগিয়ে দেয় সুমি গিয়ে দরজা টাকাটাকি শুরু করে কিন্তু লাভ হয়না …সুমি দৌড়ে ফোনের কাছে চলে যায় আর আহাদ এর নাম্বার ডায়াল করে

আহিবা : রাফি ভাইয়া প্লিজ ছেরে দিন
রাফি :আহা কি করে ছারি বলো তো চলো তোমায় আজ আহাদ এর থেকে ও বেশী ভালোবাসবো
আহিবা:প্লিজ ছেরে দেন ভাইয়া প্লিজ ……..

আহিবা হাত জোর করছে আর কাদছে রাফি গিয়ে আহিবার শাড়িতে টান দেয় ..আহিবাও টানা টানি শুরু করে আহিবার ব্লাউজের হাতা ছিরে যায় রাফি এক সময় দস্তা দস্তি করতে করতে খাটে ফেলে দেয় আহিবাকে আহিবা বার বার হাত জোর করছে আর কান্না করছে …রাফি যেন এতে পৈচাশিক আনন্দ পাচ্ছে রাফি ঝাপিয়ে পরে আহিবার উপর আহিবা রাফির সাথে পেরে উঠতে পারে না আহিবা হাতের কাছে কাচের গ্লাস পায় ঐটা দিয়েই রাফির মাথায় বারি মারে …এর মধ্যে দরজায় কারো ধাক্কানোর আওয়াজ শুনে আহিবা দৌড়ে উঠে গবিয়ে দরজা খোলে …..দরজার ওপাশের মানুষটা আর কেউ নয় সয়ং আহাদ …সুমি ফোন দেওয়ার সাথে সাথে আহাদ অফিসে না গিয়ে মাঝ পথেই গাড়ি ঘুড়িয়ে নিয়ে বাসায় চলে আসে আর এসেই দেখে এই অবস্থা …আহিবা সোজা গিয়ে আহাদের বুকে ঝাপিয়ে পরে কেদে দেয় খুব জোরে আহাদ ও আহিবাকে জড়িয়ে ধরে নিজের অজান্তেই ..আহাদ এর চোখ রাগে লাল হয়ে আছে কপালের রগ গুলোও ফুলে গেছে

রাফি নিজের কপালে হাত দিয়ে আহাদকে দেখে ভরকে যায় ….

রাফি:ব্রো দেখো তোমার বউ কি করছিল ….আমি বাসায় এসেছি কার্ড নিতে অথচ সে কিনা আমার …..

আর কিছু বলতে পারলো না তার আগেই আহাদ রাফির নাক বরাবর ঘুসি মারে নাক দিয়ে গল গল করে রক্ত বার হয় …আহাদ ডাক্তারকে ফোন করে রাফিকে hospital এ পাঠিয়ে দেয় আহিবা সেই তখন থেকে কেদে যাচ্ছে …

আহাদ:আহিবা I’m sorry তোমায় এভাবে রেখে যাওয়া আমার উচিত হয়নি …সরি ..আহিবা প্লিজ কান্না থামাও …আহিবা চুপ কান্না থামাও কিছু হয়নি আহিবা চুপ
আহিবা হিচকি দিতে দিতে :আমি সত্যিই খারাপ হয়ে গেলাম আপনি না আসলে হয়তো আজ আমার গায়ে একজন রেপ একজন ধর্শিতার দাগ পরে যেতো ?

আহিবার এমন কথায় আহাদ এর বুকে যেন তীর এর মতো লাগে

আহাদ:কে বলতো তুমি যতো ফালতু চিন্তা ভাবনা করছো এমন কিছুই হতো না আহিবা ?.তুমি আমার ওয়াইফ তোমার সম্মান হানি আমি কি করে হতে দেই ….

আহিবা চুপ করে বসে আছে সে কিছুই বলছে না

আহাদ:আহিবা আর শাড়ি পরতে হবে না তুমি এমনি থ্রী পিজ পরো আর যাও ফ্রেস হয়ে এসো আমি আজ আর অফিসে যাবো না ..ম্যানেজারকে ফোন করে বলে দিচ্ছি …তুমি ফ্রেস হয়ে আমায় এক কাপ ব্লাক কফি দিও তো আহাদ সোজা গিয়ে খাটে সুয়ে পরে …..

আহিবা আস্তে করে উঠে ফ্রেস হতে চলে যায় ফ্রেস হয়ে এসে নিজেকে সাভাবিক করে নেয় ..আহাদ কে কফি দিয়ে কাজে লেগে পরে আবার …

হঠাৎ আহাদ এর ফোন বেজে ওঠে আহাদ এর ভালো লাগছিল না …তাই আর ফোন এর দিকে তাকিয়েও দেখে নি কে ফোন দিছে ….আহাদ ফোনটা সুইচ অফ করে ফেলে রাখে ….

??

এনি ঐ সময় দৌড়ে বাড়ি থেকে চলে আসে একদম মেইন রোডে আর তখনই একটা গাড়ির সাথে এনির এক্সিডেন্ট হয় ….গাড়িটা একটা মাঝ বয়সি ছেলে চালাচ্ছিল ..?সে এনিকে নিয়ে তারাতারি হাসপাতালে চলে যায় আর সেখান থেকেই ছেলেটা আহাদ এর নাম্বার পেরে তাকে ফোন দেয় কিন্তু আহাদ না দেখেই ফোনটা অফ করে দেয় …ছেলেটা তাই বর ফোন দেয়নি আহাদ এর কাছে …ডাক্তার ট্রিটমেন্ড করতে থাকে …প্রায় দু ঘন্টা পরে এনির হুস আসে …ডাক্তার তাকে যানায় …ছেলেটা এনির সাথে দেখা করতে ভিতরে যায়

ছেলেটা:কেমন লাগছে আপনার
এনি:জ্বি ভালো
ছেলেটা:আপনার বাড়ি কে কে আছে আমায় তাদের নাম্বার দিন আমি তাদের সাথে যোগাযোগ করে আপনাকে তাদের হাতে তুলে দেই
এনি (একদম শান্ত দৃষ্টিতে ):আমার কেউ নেই আমি একা
ছেলেটা:একা
এনি:হুম বিয়ে হয়েছিল কিন্তু স্বামীর সাথে বুনি বনা নেই তাই বাড়ি থেকে চলে এসেছিলাম
ছেলেটা:ওহ আর আপনার মা
এনি :সে মারা গিয়েছে (হ্যা যেদিন এনি বাসা থেকে পালিয়েছিল ঐ দিন রাতেই এনির মা ব্রেন স্টোক করে মারা যান যেটা এনি ওদের বাসায় গিয়ে জানতে পারে ..আর এনির বাবা আগেই মারা যায় )
ছেলেটা:আপনি থাকেন কোথায়
এনি:মামার বাসায় থাকতাম কিন্তু সেখানে আর যাবো না এখন যে দিক দু চোখ যায় সেদিক চলে যাবো
ছেলেটা:তার দরকার নেই আপনি আমার সাথে আমার বাসায় যাবেন আমার মা ও একটা মানুষ তার সাথে না হয় আপনি ও থাকলেন
এনি:তা কি করে হয়
ছেলেটা :সব হয় …এই দেখলেন আপনার নামটাই যানা হলো না
এনি :ওহ আমার নাম …নুরায়রা ইসলাম এনি আপনার
ছেলেটা:নাইম ইসলাম রাহুল
এনি:ওহ
ছেলেটা :আপনি আমার থেকে ছোট এই জন্য তুমিই বলি যদি কোনো সমস্যা না থাকে ?
এনি:নাহ সমস্যা নেই আপনি বলেন
রাহুল:আচ্ছা চলো তোমায় রিলিস করে দিয়েছে …তোমায় একদৃ মায়ের কাছে নিয়ে যাবো
এনি:ওকে চলুন
এনি রাহুল বর নার্সের সাহায্যে রাহুলের বাসায় চলে যায়

হয়তো এখানে সে ভালো থাকবে বহাদ কে ভুলতে পারবে এই আশায় ডিভোর্শটাও খুব তারাতারিই দিয়ে দেবে এনি এটাই তার পরিকল্পনা …বাকিটা এনি বুঝে উঠতে পারছেনা সে কি আদো আহাদকে ভালোবেসেছিল নাকি সবটাই আবেগে ঘেরা

??

আবেগ দিয়ে হয়না ঘর
কজন বুঝে এর কদর
ভালোবাসি বল্লেই হয়না ভালোবাসা
না চাইলে ও হয়ে যায় কাছে আশা
বন্ধি করে রাখা পাখি
যখন যায় মুক্ত বাতাসে ছল ছল করে ওঠে তার ঐ আখি
আবেগে নাকি ভালোবাসায়
তার কাছে ছুটে যাওয়ার কারন বোঝা বড্ড দায়
আফসোস সময় তাকে বুঝতে না দেয়
সময় হাড়িয়ে সব টুকু বুঝিয়ে দেয়
এটাই জীবন
জীবনের ঘোর মিলন

[কবিতায় জেবিন ]

বিকালে সবাই বাসায় আসলে রাফিও আসে …রাফি তার বাবা মাকে বুঝ দেয় আশার সময় গাড়ি এক্সসিডেন্ট হয়েছে তার এই জন্য এমন হয়েছে কিন্তু মনে মনে ঠিকই সে প্রতিশোধ এর আগুন জ্বালিয়ে রেখেছে ….অন্যদিকে আহাদ ফোন অন করেই আননোন নম্বার থেকে ফোন বশায় সেটার প্রতি অতো মাথা ঘামায় না ….ফ্রেস হয়ে চলে যায় সাবার মধ্যে রাফিকে দেখেই রাগ উঠে যায় তবুও নিজেকে সামলে নেয় …আহাদ

দাদী:আহাদ নত বউকে ডাক দে তো
আহাদ:হুম বসো আমি ডেকে আনছি
আহাদ উঠে গিয়ে আহিবাকে ডেকে আনে
আহিবা:দাদী ডাকছিলে
দাদী:দেখি তোর হাতটা দে তো
আহিবা হাত এগিয়ে দিতেই ওর দাদী আহিবার হাতে এক জোরা বালা পরিয়ে দেয় আর একজোরা ছোট বাচ্চাদের বালা ওর হাতে ধরিয়ে দেয়
আহিবা:দাদী এগুলো কি দরকার ছিল…আর আমায় নয় দিলা কিন্তু এই ছোট বালা জোড়া
দাদী:তুই এবো বোকা কেন রে নাতবউ ..বড় জোরা তোর জন্য আর সেইম ডিজেনের তোর মেয়ের জন্য নিয়ে এলাম
আহিবা বিষম খেয়ে :আমার মেয়ের জন্য
আহাদ:দাদী কি বলছো
কাকা:আরে মা কি করছো
দাদী:চুপ থাক তো আর শোন নাতবউ তোর যখন মেয়ে হবে তখন যদি আমি বেচে না থাকি এর জন্য আগেই দিয়ে দিলাম মা আর মেয়ের বালা এক রকমের থাকবে
আহাদ ওর দাদীর কথায় বড় সর বেষম খায় (ওহ এই দাদী এতো.কথা বলে.কি করে (মমে.মনে ))
আহিবা প্রচন্ড রকমের লজ্জা পেয়ে ওখান থেকে কেটে পরে ?
দাদী:নাতবউ লজ্জা পেয়ে চলে গেল হাহাহা দাদুভাই তুমিও যাবে নাকি
আহাদ:আহ দাদী তুমিও না
কাকি:কি রে আহাদ বউকে প্রথম দেখলাম শাড়ি পরতে আর এখন শাড়ি কি উঠিয়ে রেখে দিয়েছে নাকি
আহাদ:কাকি ও বাসায় শাড়িই পরে সব সময় ….এখন পরতে মানা করছি আমিই …প্রচন্ড গরম এতে শাড়ি পরা ঝামেলা হয়ে যায়
কাকি:তাই বলে
দাদী:আহা বউমা আহাদ তো ঠিকই বলেছে এই টুকু মেয়ে শাড়ি পরার দরকার কি …থ্রীপিজই পরুক ..তাছারা ও তো দেখি সব সময়ই মাথায় কাপড় দিয়ে চলে তার জন্য শাড়ির থেকে জামাই ভালো….বুঝলি দাদুভাই বউ পেয়েছিস কপাল করে
রাফি(পেয়েছে ঠিকই কিন্তু বেশী দিন এই সুখ টিকতে দিবো না [মনে মনে ])
আহাদ প্রতি উওরে কিছু বলে না শুধু একটা শুকনো হাসি দেয় …

তারপর সবাই মিলে গল্প করে একেবারে রাতের খাবার খেয়ে সুতে চলে যায় যে যার রুমে .?.আহিবা নিচে বিছানা করার জন্য সব ঠিক করে তখন আহাদ বাধা দেয়
আহাদ:তোমায় নিচে শুতে হবে না তারপর সকালে দাদী এসে ডাক দিবে আমার আবার তোমায় কোলে নিয়ে বিছানায় দিতে হবে

চলবে….,,,,,,

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে