লুকোচুড়ি_ভালোবাসা ?পর্বঃ- ৩৭
#লেখিকাঃ-তানজিনা আক্তার মিষ্টি
সাথে সাথে রাজ চোখ মেলে তাকায়। মিষ্টি লজ্জা পেয়ে অন্য দিকে ঘুরে। রাজের রাগ ভাঙাতে করলে ও এখন লজ্জা মরে যাচ্ছে মিষ্টি। রাজ তো চরম রকমের অবাক হয়েছে কি বলবে বুঝতে পারছেনা। মিষ্টি এইকাজ করবে ওর কল্পনার বাইরে ছিলো। মিষ্টিকে কিছু বলতে যাবে তার আগেই মিষ্টি বলে উঠে ওই দিকে থেকেই।
–প্লিজ কিছু বইলেন না আমার খুব লজ্জা লাগছে। আপনি রেগে ছিলেন তাই রাগ কমানোর জন্য এমন টা করেছি সরি।
— রাজ মিষ্টির দিকে তাকিয়ে আছে। একবার মিষ্টির লজ্জা মাখা মুখটা দেখতে ইচ্ছে করছে কিন্তু মিষ্টি তো অন্য দিকে ফিরে শুয়ে আছে। কিন্তু মিষ্টি তো বলল এখন কিছু বলবে না ওকি ঘুমিয়ে গেল নাকি সারা শব্দ পাচ্ছি না। রাজের চোখ তো একটু ঘুম নেই সব শেষ মিষ্টি কে দেখতে মন চাইছে ওর লজ্জা মাখা মুখটা। নিজে থেকে চুমু দেবে ভাবতেই পারছে না রাজ ও এখন পযর্ন্ত এই কাজটা করেনি।
–মিষ্টি [রাজ]
–ঘুমিয়ে গেছ? [রাজ]
–এই মিষ্টি প্লিজ একবার এই দিকে ফিরো না তোমার লজ্জা মাখা মুখটা না দেখলে আমি ঘুমাতে পারবো না। তুমি তো আমাকে নিজে থেকে চুমু দিছো আমি কিন্তু কিছু করিনি। সব সময় তুমি ই দূরে থাকার কথা বলো এখন নিজেই চুমু খেলে আমি বিশ্বাস করতে পারছি না একবার তাকাও না তুমি কি সত্যি নাকি আমি সপ্ন দেখেছি বলো।[ রাজ]
মিষ্টি জেগেই আছে কিছু বলছে না ঘুমের ভান করে আছে। আর রাজের সব কথা ও শুনে যাচ্ছে লজ্জা আর ও ঘিরে ধরছে মিষ্টি কে না কিছু তেই বুঝতে দেওয়া যাবে না আমি জেগে আছি তাহলে রাজ আমাকে লজ্জা দিবে আর ও অনেক কিছু বলে। আসলেই তো রাজ জরিয়ে ধরা ছাড়া কিছু করেনি আমার সাথে আমি একবার বলেছিলাম ওর মত একজন হাজবেন্ট পেয়ে আমি,,
আর কিছু ভাবার আগেই কেউ আমার হাত ধরে ঝাকাতে লাগলো, এটা কে বুঝতে অসুবিধা নাই আমার ইচ্ছে করেই চোখ শক্ত করে বন্ধ করে রইলাম। যদি সত্যি ঘুমে থাকতাম তাহলে এই ঝাকুনিতে উঠে যেতাম কিন্তু আমি তো ইচ্ছে করে উঠতে চাইনা উঠাবে কি করে।
কিছুক্ষণ পরই ঝাকুনি অফ রাজ ব্যর্থ হয়েছে আমি উঠিনি তার পর আর কিছু মনে নেই ওইভাবে থাকতে থাকতে কখন ঘুমিয়েছি খেয়াল নেই।
মিনার ডাকে সকালে ঘুম ভাঙলো আমার মিনা রেডি হয়ে আছে। আমি ভ্রু কুচকে ওর দিকে তাকিয়ে আছি এতো সকালেই এমন রেডি হয়ে কোথায় যাচ্ছে। আমার তাকানোতে হয়তো কিছু বুঝলো,…..
–আপু উঠ তারাতারি।
–কেন কি হয়েছে তুমি কোথায় যাচ্ছিস এই সকালে?
–বাড়ি যাচ্ছি আর ওতোটাও সকাল রয় নি এখন আটটার উপরে বাজে।
–বলিস কি আমি তো প্রতিদিন আগেই জেগে যাই আজ এতো ঘুমালাম।
–হ্যা আমরা সবাই অনেক আগে উঠেছি তোকে আমি তখনই ডাকতে চেয়েছিলাম কিন্তু আম্মু আটকে দিয়েছে। বলে রাতে তো অনেক জাগা হয়েছে তুই ঘুমা তোকে না বলেই চলে যাতে চাইছিল।
এটা শুনেই মিষ্টি খেপে উঠলো,, তা তো চাইবেই এখন আর আমাকে ভালোবাসে নাকি দূরে পাঠিয়ে পর করে দিয়েছে এখন আমাকে বলবে কেন? এক মেয়েতো আছেই আমাকে কি দরকার আর।
রেগে মিষ্টি উঠে বসলো তারপর কোন রকম একটু ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে পরল সোজা নিচে এসে থামলো। আম্মু সোফায় বসে আছে পাশে রাজ কি যেন বলছে রাজ কে রাজ বাধ্য ছেলের মতো মাথা নারাচ্ছে।
“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
–আম্মুহহ
হঠাৎ মিষ্টি চিৎকার শুনে রাজ ও মিষ্টির মা দুজনেই অবাক হয়ে তাকায় মিষ্টির দিকে এভাবে চিৎকার করে ডাকার কারণ কি? মামুনি রান্না ঘর থেকে চলে এসেছে এভাবে ডাকার জন্য। মিনা ও এসেছে মিষ্টির পেছনে পেছনে রাজ বুঝতে পারছে না মিষ্টির কি হয়েছে? রাজ মিষ্টির দিকে হা করে তাকিয়ে আছে মিষ্টি ঘুম থেকে উঠে শুধু পানি দিয়েই নিচ চলে এসেছে পানি এখন মুখে লেগে আছে ভালো করে মুছে ও নি। চুল গুলো এলোমেলো ভাবে ছরিয়ে আছে কিছু সামনে কিছু পেছনে আজ ওরনা মাথায় দেয়নি তাই এলোমেলো চুল গুলো বারবার মুখে আসছে মিষ্টি বিরক্ত হয়ে কানে গুজৈ রাখছে। রাজ নেশাতুক চোখে তাকিয়ে আছে হঠাৎ চোখ সরিয়ে অন্য দিকে ফিরে রইল এভাবে দেখলে নিজেকে কন্টোল করতে পারবোনা। অন্য দিকে ফিরে আছে হঠাৎ মিষ্টির কান্না মিশ্রিত কথা আসতে তারাতারি ফিরে তাকালো কি হয়েছে দেখতে দেখলো আন্টি কে জরিয়ে কাদছে আন্টি মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। মিষ্টি নানা অভিমানের কথা বলছে এর মাঝেই আমার আম্মু এসে লাগলো সে মিষ্টি কে বলছে,,
— আমি কি তোর মা না? আমি কি তোকে আদর করি না নাকি খালি কষ্ট দেয় যে এতো কাদছিস আমার কাছে থাকতে তোর ভালো লাগেনা বল। কয়দিন পর থেকে তো এখানেই থাকতে হবে তখন কি করবি?
শুরু হয়ে গেল আবার সবাই মিলে কান্না কান্না জিনিস টা একদম লাইক করে না রাজ। তার উপর মিষ্টির কান্না তো আর ও না। অনেকক্ষণ চললো কান্না অতপর আন্টি আর মিনা কে নিয়ে আমি বেরিয়ে পরলাম।
মিষ্টি রুমে বসে আছে হঠাৎ ফোনটা বেজে উঠলো নাম্বার টা দেখেই মুখে হাসি ফুটে উঠলো,, তিথি খর করেছে কাল ওক ফোন করে হঠাৎ ই বলেছিলাম রাজা আর আমার এনগেজমেন্টের যা শুনে তো ও ফোনেই লাফালাফি করা শুরু করে দিয়েছিলো খুশিতে। কিন্তু আসতে পারেনি কারণ বেচারি ঢাকাতে নেই বেরাতে গেছে। আর আমি সিউর ছিলাম না তাই আগে বলিনি এনাউজমেন্ট হওয়ার পর বলেছিলাম।
–হ্যালো জানটু কেমন লাগছে তোর ভাইয়া সাথে এনগেজমেন্ট হয়ে আর কাল পিক তুলেছিস তো সব সেন্ড কর তারাতারি দেখার জন্য পাগল হয়ে আছি তোদের কি সুন্দর ই না লাগছে খুব মানিয়িছে সবাই বলেছে তাইনা। বলবেই তো তোরা পারফেক্ট কাপেল। আগে বললে আমি কিছুতেই বেরাতে আসতাম না তোদের এনগেজমেন্ট ছেড়ে কি মিস টাই না করলাম।
আমাকে কিছু বলায চান্স ই দিচ্ছে না একাই বকবক করে যাচ্ছে।
–আরে থাম আমাকে কিছু বলতে দে নিজেই প্রশ্ন করছিস নিজেই উওর দিচ্ছিস তাহলে আমাকে কেন কল করেছিস।
–জানি না দোস্ত আই আম সো হ্যাপি দোস্ত তোর আমার রাজ ভাইয়ার বিয়ে হবে এটা ভেবে। কিন্তু তুই যে বলেছিলি মারিয়ার সাথে..
–মুখে থেকে কথা কেড়ে নিয়ে,, ওইটা ভুল ওনারা জাস্ট ফ্রেন্ড আমি ভুল বুঝেছিলাম।
–ওকে মন খারাপ করিস না। সেসব তো শেষ এখন জাস্ট ইনজয় ওকে আমাকে ট্রিট দিতে হবে বলে দিলাম।
মিষ্টি আর তিথি কিছু ক্ষণ কথা বলে ফোন রেখেদিলো।
ফুন রেখে পেছনে ঘুরতেই দেখি রাজ দাঁড়িয়ে আছে। আমি তাকাতেই চুমু দেখালো সাথে সাথে রাতে কথা মনে পরে গেল আবার সেই লজ্জা।
মাথা নিচু করেই বললাম,, আপনি কখন এলেন, আম্মু আর মিনা কে….
মিষ্টি কথা বলার মাঝেই উচু করে একবার রাজের দিকে তাকায় সঙ্গে সঙ্গে কথা অফ হয়ে যায় রাজ ওর দিকে আসছে মিষ্টি,, আপনি এগিয়ে আসছেন কেন?
রাজ কিছু বলছেসনা এগিয়ে আসছে মিষ্টি উপায় না পেয়ে পিছাতে থাকে। একদম দেয়ালের সাথে আটকে যায়। রাজ ওর গা ঘেষে দাড়িয়ে দু পাশে হাত রাখে।
–কাল আমার কোন খালে যেন চুমু দিয়ে ছিলে।
এটা বলতেই মিষ্টি লজ্জা লাল হয়ে উঠে মাথা নিচের দিকে করে রেখেছে তাকাবেনা কিছু তেই না। কেন যে রাগ ভাঙাতে চুমু টা দিয়েছিল এটা আমার সব চেয়ে বড় ভুল।
–আমার দিকে তাকাও।
রাজ তাকাতে বলছে মিষ্টি তাকাচ্ছে না। রাজ মিষ্টির থুতনি তে হাত দিয়ে মুখ উচু করে। সাথে সাথে মিষ্টির শরীরের কারেন্টের শক লাগে ও সাথে সাথে চোখ বন্ধ করে নেয়।
–ওফ জান তোমার এতো লজ্জা এই লজ্জা পেয়ু না নিজেকে কন্টোল করতে কষ্ট হয়।
বলেই রাজ মিষ্টি কে ছেড়ে দূরে গিয়ে দাড়ায়।
–এই লজ্জা মাখা মুখ দেখতেই এতো কিছু করলাম। এবার যাই এখানে আর একটু থাকলে কিছু করে ফেলবো।
বলেই রাজ দ্রুত পায়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যায়।
সময় টা খুব ভালোই যাচ্ছে মিষ্টির মামুনি সাথে রাজের সাথে সময় পেলেই ঘুরতে যাওয়া ছাদে বসে আড্ডা দেওয়া বিয়ে নিয়ে পরিকল্পনা আবার দুবার বিয়ে এটা ভাবতেই হেসে উঠা। পরিক্ষা চলে এসেছে এর মাঝে পরা হয়ে উঠে নি অনেক দিন তাই মিষ্টি একেবারে পড়া মন দিয়ে দিয়েছে। এটা ও বাবা মায়ের সপ্ন পূরণ করতেই হবে। আর একসপ্তাহ পর পরিক্ষা তাই এই কয় দিন অন্য সব মনোযোগ বাদ দিয়ে এক দমে পরবে। তাই করছে রাজ হেল্প করছে মাঝে মাঝে আর মামুনি তো আর ও ঠিক মতো খাচ্ছি না দেখে খাইয়ে দিচ্ছে সে সময় নিজের আসল মাকে ভুলে যাই সত্যি আমি খুব ভাগ্যবান এমন একটা পরিবারের পেয়েছে। মা পেয়েছি বাবা পেয়েছি নিজের বাবা নেই তবুও ও কষ্ট নেই রাজের আববু আমাকৈ নিজের মেয়ের মতো ভালোবাহসে এখন তো সে ও বলে আন্কেল না আববু বলে ডাকতে কয়দিন পর তো তাইই বলতে হবে তখন ই লজ্জা পায় মিষ্টি।
এক সপ্তাহে পেরিয়ে গেল কালকেই এক্মাই এখন বাজে রাত দুই টে মিষ্টি ঘুম ঘুম ভাব নিয়ে বই নিয়ে বসে আছে। হঠাৎ কারো ডাকে মিষ্টির ঘুম ভাব কেটে যায়। হুম আর কেউ না রাজ দাড়িয়ে আছে এই কয়দিন রাজ আসে নি রাতে পড়ায় ডিসটার্ব হবে বলে আজ হলো যে রাজ এসে মিষ্টি কি টেনে বিছানায় নিয়ে গেল।
চলবে❤