লুকোচুড়ি_ভালোবাসা?র্পব:২
#লেখিকা:তানজিনা আক্তার মিষ্টি (Tanjina akter misti)
ঘুমের ঘুরে কারো ছোঁয়া পেয়ে ধরফরিয়ে উঠে বসলো মিষ্টি। সারা ঘরে চোখ বুলালো কিন্তু একি রুমে তো কেউ নেই। আমি একাই আছি তাহলে আমার যে মনে হলো কেউ আমায় ছুয়ে দিচ্ছে পায়ে হ্যা পায়ে। মিষ্টি উঠে দাড়ালো বিছানা থেকে দরজা তো ভালো করেই বন্ধ করা আর রুমে ও কেউ নাই তাহলে আমি কি ভুল বুঝলাম। হঠাৎ মিষ্টি খেয়াল করলো আমি দাড়িয়ে আছি পায়ের ব্যাথা ও তো নেই পা আঠা আঠা লাগছে কেন মনে হচ্ছে মলম লাগিয়েছে। কিন্তু মামুনি তো তখন বরফ লাগিয়ে দিয়েছিলো? পরে এসে আবার মলম দিয়েছে মনে হয় ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি তিনটা বাজে আল্লাহ এতো সময় পার হয়ে গেছে আমি এতো সময় ঘুমালাম। কেউ আমায় ডাকলো না কেন? হঠাৎ ফোন বেজে উঠলো হাতে নিয়ে দেখি মা ফোন দিছে। তারাতারি করে ফোন রিসিভ করলাম?
–হ্যালো আসসালামু আলাইকুম, কেমন আছো আম্মু?
–ভালো আছি আল্লাহর রহমতে। তুই কেমন আছিস?
–ভালো, মিশু কেমন আছে?
–ভালো কিন্তু সারাদিন তোর কাছে যাওয়ার বায়না করে?
–তাহলে আসো এখানে?
–নারে এখন আর যাব না।
“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
মার সাথে কিছু ক্ষণ কথা বলে ফোন রেখে দিলাম। মিশু আমার ছোট বোন। ফোন রেখে চোখে মুখে পানি দিয়ে বাইরে বেরিয়ে এলাম। ডয়িং রুমে দেখি রাজ ভাইয়া সোফায় বসে ফোনে কিছু করছে আমাকে দেখে একবার মাথা উচু করে আমায় দেখলো তারপর আবার ফোনের দিকে তাকিয়ে টিপতে লাগলো। এমন ভাবে তাকিয়ে টিপছে যেন তার আশেপাশের মানুষ আছে না গরু ছাগল আছে বুঝবে ও না। এতো কি করে সারাদিনে ফোনের ভেতরে আল্লাহই জানে। সকালে এতো খারাপ বিহেভ করলো মিষ্টি সাথে সেসব ভুলে গেছে মিষ্টি কারণে এমন ব্যবহার প্রায় ই পায় সে তাই মনে রেখে ও লাভ নেই। মনে রাখতে ও চায় না কিন্তু মাঝে মাঝে কষ্ট ধরে রাখতে পারে না যা চোখের অশ্রু হয়ে বেরিয়ে আসতে থাকে শত বাধা দিলে ও।
মিষ্টি কিছুক্ষণ রাজের দিকে তাকিয়ে থেকে চোখ ফিরিয়ে মামুনির দিকে যেতে লাগলো। মামুনি রান্না ঘরে কি যেন করছে। আমাকে আসতে দেখেই এগিয়ে এলো আমি আর যেতে পারলাম না মামুনি রেগে বেরিয়ে এলো মামুনির রাগ টা বুঝতে পারছি না কি জন্য রেগে আছে।
–এসব মিষ্টি কতো বার ডেকেছি তোকে জানিস মানলাম পায়ে ব্যাথা উঠতে পারবি না। তাই বলে এতো সময় কিউ ঘুমায় দুপুর ঘরিয়ে বিকেল হয়ে গেছে দেখ চারটা বেজে গেছে। এতো সময় ঘুমিয়ে কাটালি আমি তাতে কিছু বলবো না কিন্তু সময় মতো খাবার টা তো খেতে হবে। সকালে ও ভালো মতো খেলি না দৌড়ে ভার্সিটিতে চলে গেলি। সারাদিন না খেয়ে থাকলি কি সুস্থ থাকতে পারবি অসুস্থ হয়ে যাবি আর তোর মা আমাকে বলবে আমার মেয়েকে দেখে রাখে না?
এক দুমে কথা বলে গেল মাভুনি মাঝে আমার কথা বলার কোনো সুযোগ নেই। মামুনি এমন ই কথা শুরু করলে আর থামে না অনেক সময় তো বকে ও কিন্তু আমার খারাপ লাগে না। ভালোবেসে এর থেকে হাজার গুন কথা শুনতে ও আমি রাজি। ঘুম এই ঘুমের জন্য মার কাছে ও বকা খেতাম সব ঠিক একবার ঘুমিয়ে পরলে সহজে উঠতে পারি না।
— মামুনি তুমি এতো ব্যস্ত হচ্ছো কেন? আমার খিদে পায় নি তো পেলে খেতামই?
–খিদে পায় নি মানে কি সারা দিন চলে গেল আর তুমি এখন বলছো খিদে পায় নি। তারাতারি খেতে চলো?
— সত্যি বলছি আমি?
–থাক তোমার সত্যি আর আমার শুনে লাভ নেই। আমাদের কি তুমি আপন ভাবো নাকি যে কথা শুনবে নিজের র্মজি মতো চলবে। আর চলছো ও তো আমরা কি কিছু বলেছি?
আমি কিছু বলতে যাবো মামুনি কে কিন্তু বলতে পারলাম না রাজের কথা শুনে…
–আম্মু এতো জোর করার কি আছে বুঝি না আমি? যখন খিদে পাবে একাই খাবে তুমি এতো জোর কেন করছো ওকে?
— কি বলছিস রাজ সারাদিন না খেয়ে রইল আমি জোর করবো না?
— না করবে না; ও কি ছোট বাচ্চা যে তোমাকে বলে বলে খাওয়াতে হবে। খেতে মন চাইলে খাবে নয়তো খাবে না এতো তোলা তোলা করা কি আছে? খেতে বললেই না খাব না, না খেয়ে থাকনা আমাদের কি আসে যায় যতসব?
–রাজ এভাবে কথা বলছিস কেন মেয়েটাকে?
–যথেষ্ঠ ভালো করেই বলেছি। এর থেকে ভালো তুমি বলো দাম দেখায় তাকে খেতে বললে তার খিদে পায় না এতো নেক্যামো কেন করে বুঝি না আম্মু তুমি সেগুলো সহ্য করো?
কাউকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে রাজ নিজের রুমে দিকে চলে গেল সিড়ি বেয়ে মামুনি পেছনে থেকে ডেকে বকে যাচ্ছে। আর আমাকে কিছু মনে করতে না করছে। আমি কিছু মনে না করলে ও বুকের ভেতরে কষ্ট অনুভব করছি। খুব কষ্ট হচ্ছে আমার সব সময় তো এমন ই করে তাহলে কষ্ট কেন পাচ্ছি আমি?
মামুনি কী কি যেন বলছে হাত ধরে ডায়নিং টেবিলের কাছে নিচ্ছে আমার কানে কোন কথা যাচ্ছে না রাজের কথা গুলো কানে বাজছে আমি নেক্যামো করি কিন্তু কখন করলাম। দাম দেখায় সামান্য খেতে মানা করাকে কি কেউ দাম দেখানো বলে আজই জানতে পারলাম। আমার গল্প টা চুড়ি হয়েছে অনেকে করেছে এটার রিয়েল ওয়েটার তানজিনা আক্তার মিষ্টি যারা রাইটার এর জায়গায় এই নাম বাদ দিয়েছে সেখানে দয়া করে একটা করে রিপোর্ট করবেন প্লিজ মামুনির হাত ছাড়িয়ে নিলাম খেতে সত্যিই মনন চাইছে না তবুও এতো বলাতে খেতে চেয়েছিলাম কিন্তু এখন সে টুকু ও মরে গেছে আমার গলা দিয়ে এক ফোটা জল ও নামবে না এখন মামুনি কে অনেক বললাম মামুনি ভাবছে ভাইয়ার জন্য খাবো না আমি বললাম না তার জন্য না এমনি খাবো না। বলে এক মুহূর্তে না দাড়িয়ে রুমে এসে দরজা বন্ধ করে দিলাম। মামুনি আবার এসে ডাকবে জানি তার থেকে দরজা বন্ধ করে থাকাটাই ভালো হবে। হুম তাই হলো দরজা বন্ধ করতেই মামুনির ডাককানে এলো।
— মামুনি আমি কারো সাথে রাগকরি নি বিশ্বাস করো। তুমি এতো চিন্তা করো না তো। আমার পা ব্যাআ করছে তাই এখন শুয়ে থাকবো আজকে আর ডেকো না কাল কথা হবে।
মামুনি কে অনেক বলে পাঠাতে পারলাম। আর একবার এসেছিলো কিন্তু কিছু বলে নি তখন নয়টা বাজে তখন সবাই খাওয়া দাওয়া করে আমি আর গিয়ে রাজের কাছে কথা শুনতে চাই না। এখন গেলে আর ও কথা শুনতে হবে। তার চেয়ে আজ আর বের ই হবো না তাই ভালো শুয়ে আছি ঘুম আসছে না আসবেই কি করে সারাদিন ঘুম এসে এখন আর ঘু কোথা থেকে আসবে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি দশটা দশ বাজে। সারারাত পার করবো কিভাবে এদিকে পেটে ইদুর দৌড়াচ্ছে মনে হয় খিদের জালায় ইস কেন যে রাগ করে ঘরে আসছিলাম। এখন খাবো কি খিদে আমার সহ্য হয় না ঘুম আর খাওয়া ঠিক মতো না করতে পারলে মাথা এলিয়ে যায়। কি খাবো সবাই ঘুমিয়ে পরলে গিয়ে দেখবো কিছু আছে নাকি থাকবে না সিউর এরা গুনে গুনে রান্না করে বেশি থাকেই না। হঠাৎ ভাবনার মাঝে দরজায় ধাক্কা পরলো। এখন আবার কে ডাকছে আমি কে বলার আগে ওই পাশে থেকে একজনের গম্ভীর কথা কানে এলো আর আমি ঠাস করে উঠে দরজা খুলে দিলাম। নিচের দিকে তাকিয়ে আছি আর ভাবছি এতো রাতে ভাইয়া আমার রুমে কি করছে বকতে এসেছে নাকি আবার।
— ওইখানে মূর্তির মতো দাড়িয়ে আছিস কেন?
–না মানে আপনি কি কিছু বলবেন ভাইয়য়য়…
তারাতারি মুখে হাত দিয়ে আটকে ফেললো কথা টা মিষ্টি কি বলতে যাচ্ছিলাম আর একটু হলেই ঠাসসস করে খেতাম একটা সঙ্গে সঙ্গে মিষ্টি বাম হাত গালে চলে গেল। কারণ মিষ্টি যতবার ভাইয়া বলেছে একটা করে চর খেয়েছে তাই আজ এতভয় পেলো রাজর দিকে তাকিয়ে দেখে আগুন চোখে তাকিয়ে আছে। হঠাৎ খাটের উপর চোখ গেল খাবার হ্যা খাবারের প্রিলেট ভাইয়া খাবার নিয়ে এসেছে কেন?
–কি আবার দাড়িয়ে আছিস তারাতারি খাবার টা শেষ কর?
–আমি খাবো না।
–কি বললি খাবি না?
–নাহ
ঠাসসসস, পরলো এক থাপ্পড় আমি গালে হাত দিয়ে রাজের দিকে তাকিয়ে আছি। সব সময় হাতটা রেডিই থাকে।
–তুই কি ভেবেছিস তোর মতলব আমি বুঝি না। আর কেউ না বুঝলেও আমি ঠিক চিনি তোকে হাড়ে হাড়ে এখন না খেয়ে অসুস্থ হয়ে সবাইকে বলে বেড়াতে চাস যে আভরা তোকে অত্যাচার করি ঠিক মতো খেতে দেয় না তাই না? কিন্তু তা তো হবে না আমি বেচে থাকতে অন্তত হবে না?
–কি বলছেন আপনি আমি এইসব কেন চাইবো? আমি এমন কিছু কখনো চাইনা এমন কি ভাবতে ও পারি না?
–একদম নাটক করবি না ভাফতে ও পারিস না। তুই বলবি আর আমি বিশ্বাস করবো আমাকে এতো বোকা পেয়েছিস নাকি হ্যা?
–আপনাকে বোকা ভাববো কেন? আমি তো জাস্ট…
— নো এক্মকিউজ, আমি সব জানি বিশ্লেষণ শুনতে চাই না?
বলেই আমাকে টেনে খাটে নিয়ে বসিয়ে দিলো।
–তুই না খেয়ে ইচ্ছে করে আমাদের ফাসাতে পারবি না? আমি সেই সুযোগ তোকে দেবো না তোকে খেতেই হবে দরকার পরলে আমি জোর করে খাওয়াবো।
বলেই খাবার নিজে হাতে আমার মুখে ঢুকিয়ে দিলো। চোখের পানি বাধা মানছেই না খাওয়াচ্ছ সাথে বকা মার ফ্রি খাবার গিলতে ও পারছি না গলায় যেন আটকে পরেছে আর একজন হিলিয়ে খালি দিয়েই চলেছে…?
চলবে❤
[ সবার রিকোয়েস্ট এ গল্প দিলাম। ভুলক্রুটি ক্ষমার চোখে দেখবেন]