লুকোচুড়ি_ভালোবাসা?পর্বঃ- ২২
#লেখিকাঃ-তানজিনা আক্তার মিষ্টি(Tanjina Akter Misti)
—একটা কোথায় এলাম, এটা তো কোন বাসা মনে হচ্ছে না এটা তো রেস্টুরেন্ট এখানে কেন এলাম? মারিয়া আপুর বার্থডে পার্টি কি এখানে হচ্ছে? কিন্তু এমন নিরব লাগছে কেন জায়গা কোন মানুষ নেই।
মিষ্টি গাড়ি থেকে নেমেই একশ কথা বলে ফেলল,,, পাশে দাড়িয়ে আছে মিনা ওর হাত পা কাঁপছে কি বলবে ও আপুকে ভয়ে আছে। এটা তো অন্য জায়গা ভাইয়াটাও নাই সে তো আগেই নেমে ভেতরে গেছে সব ঠিক আছে কিনা দেখতে। আমাকে একটুপর যেতে বলেছে কিন্তু আপুর যে এই একশ প্রশ্ন আসতে পারে আমার খেয়ালই ছিলো না। চিন্তা হয়ে আকাশ পাতল ভাবছে মিনা কি বলবে কি বলবে?
–কিরে কিছু বলছিস না কেন? তুই ই বা কি বলবি উনি আমাদের কোথায় নিয়ে এলো বল তো। আর কি অসভ্য ভাব একবার আমাদের একা রেখেই চলে গেল। আমার কেমন জানি সন্দেহ সন্দেহ লাগছে কিছু লাকাচ্ছে না তো বার্থডে পার্টি বলে কোথায় নিয়ে এলো বলতো।
মিষ্টি সন্দেহ চোখে মিনার দিকে তাকালো বুঝতে চাইলো মিনা ও সন্দেহ করছে নাকি কিছু জানে ওর সাথে তো খুব ভাব হয়েছে রাজের এই কয় দিনে কিছু জানতে পারে। চারপাশে আর একবারে ফিরে তাকালো মিষ্টি না রেস্টুরেন্ট বাইরে তো দুই একজন ছাড়া লোক ও দেখছি না। পার্টি হবে তা যদি রেস্টুরেন্টে ও হয় গেস্ট তো অনেক হওয়া দরকার কিন্তু এখানে তো।
মিনা মিষ্টি কে সন্দেহ চোখে নিজের দিকে তাকাতে দেখেই আর ও ভয় পেয়ে যায়। না মিনা ভয় পেলে হবে না আপুকে ভুলিয়ে ভালিয়ে তারাতারি ভিতরে নিয়ে চল। না হলে সব বেস্তে যাবে।
–আপু তুই আমার দিকে এভাবে তাকাচ্ছিস কেন? আমি কি জানি এসবের তুইই বল চল না ভেতরে গিয়ে দেখি কি হচ্ছে?
–ঠিক তো তোরাই তো জোর করে আনরি আমার কিছু গন্ডগোল হলে তোর কিন্তু খবর আছে।
মিনা কিছু বলল না প্রতি উওরে মিষ্টি হাত ধরে এগিয়ে যেতে লাগলো মিষ্টি ওর হাত ছিরিয়ে নিলো।
–হাত ধরিস কেন শাড়ি পরেছি দেখতে পাচ্ছিস না এমনিতে পরে যাচ্ছি জালা আমাকে ধরে হাটতে দে না ধপাস করে পরে কেলেঙ্কারি হয়ে যাবে।
–ওহহহ সরি রে ভুলেই গেছিলাম।
–দেখতো ঠিক আছে কিনা খুলে যায় নি তো কোথায় ও
–নাহ ঠিক আছে।
–আমার খালি মনে হচ্ছে খুলে যাচ্ছে কি যন্ত্রণা এই জন্য আমি শাড়ি পরতে চাই নি। তোর জন্য শুধুমাত্র এমন জামেলা করতে হচ্ছে।
–বকাবকানি বাদ দিয়ে চল তো এমন একটা সময়ে এটাই ঠিক আছে পরে এর জন্য তুই আমাকে ধন্যবাদ দিবে দেখিস।
–মানে ধন্যবাদ বাদ দিতে যাব কেন?
মিনা বিরক্ত হয়ে তাকালো মিষ্টি আর কিছু না বলে সামনে এগুলো কিন্তু চিন্তা যাচ্ছে না এ কোথায় নিয়ে এলো এখানে তো কেউ নেই।
–আপু তুই ভেতরে যা আমি একটু আসছি।
–আসছি মানে তুই আবার কোথায় যাবি।
–গাড়িতে একটু দরকার তুই যা না।
“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
কিছু বলবে কিন্তু মিনা আর শুনলে তো চলে গেল দরজায় কাছ চলে এসেছে তাই একাই ভেতরে ঢুকে এলো কিন্তু একি এতো অন্ধকার কেন। লোডশেডিং হয়েছে নাকি কারো আওয়াজ তো কানে আসছে না ঘুটঘুটে অন্ধকার আর মনে হচ্ছে আমি একাই আছি। ফোনের টচ জালি সামনে ধরতেই রাজকে চোখে পরলো আমার থেকে কিছু টা দূরে দাঁড়িয়ে ওইদিকে ঘুরে আছে। পেছনে থেকেই আমি চিনতে পেরেছি তাকে কিন্তু আর তো কেউ নেই একা কেন বিরবির করে কি যেন বলছে। আমি ডেকে কিছু বলবো তার আগেই শাড়িতে বেজে পরে যেতে নিলাম সাথে জোরে চিৎকার দিলাম।
কিন্তু পরতে পারলাম না তার আগেই কেউ ধরে ফেলল আমায় ভয়ে চোখ খিচে বন্ধ করে আছি। চোখ বন্ধ থাকা অবস্থা তেই মনে হচ্ছে কিছু পরছে আমার উপরে সাথে কেউ গভীর ভাবে তাকিয়ে আছে আদোআদো চোখে তাকালাম নিজেকে কিছুটা স্বাভাবিক করে তাকিয়ে দেখি রাজ আমাকে ধরে কেমন দৃষ্টি দিয়ে তাকিয়ে আছে। কি পরছে মুখে ও পরছে চোখ বন্ধ করে নিলাম। কারো হাতে স্পর্শে তাকিয়ে দেখি রাজ কিছু ফেলছে সাথে সাথে আলো জ্বলতে শুরু করলো আশেপাশে তাকিয়ে আরো অবাক হলাম আশেপাশে কেউ নেই শুধু আমরা দুজন আছি। পুরো রুমে চোখ বুলিয়ে নিলাম রঙিন বাতি ফুল দিয়ে সাজানো। এখনো ছারছেনা কিন রাজ আর এভাবে তাকিয়ে এ বা আছে কেন? আর এখানে কেন এনেছে এসবের মানে কি মারিয়া আপুরা কেউতো নেই নেই এখানে আর মিনা কোথায় গেল। মিষ্টি অসম্ভব রকমের কাপছে হার্টবিট এতো জুরে কম্পন করছে যেন বেরিয়ে যাবে। রাজ কাছে এলেই এমন হয় নিজেকে দূর্বল লাগছে না এই লোকটা আমার না আমি দৃর্বল হবো না।
–ছারুন এভাবে ধরে আছেন কেন?
রাজ মিষ্টি মুখ পানে তাকিয়ে ছিলো মুগ্ধ হয়ে ওর মায়াবী মুখের দিকে তাকিয়ে হারিয়ে গেছিলো হঠাৎ মিষ্টির কথা শুনে কল্পনা থেকে ফিরলো মিষ্টি রাগী চোখে তাকিয়ে আছে।
–এসব কি আমরা কোথায় আছি এটা কোথায় নিয়ে এসেছেন। আমাদের তো মারিয়া আপুর বার্থডে পার্টিতে যাওয়ার কথা ছিলো তাই না। এখানে তো কেউ নেই এখানে কেন এসেছেন। আপনার মতলব টা কি বলেন তো আমাদের কি ইচ্ছে করে এখানে এনেছেন ওইখানে নিয়ে যেতে চান না। আমাদের কিছু জানাতে চান না আপনার আর মারিয়া আপুর…
আর কিছু বলতে পারলো না রাজের দিকে তাকিয়ে সঙ্গে সঙ্গে ভীতু হ য়ে গেল মিষ্টি রাজ রাগি চোখে তাকিয়ে আছে এমন করে প্রশ্ন করার জন্য যে এমন করেছে বুঝলো। ভয়ে মাথা নিচু করে ফেলল মিষ্টি,,
–ননা মমানে বলছিলাম কি? [ তোতলাতে লাগলো]
–তোতলাচ্ছো কেন কি বলবে বলো তুমি আমার কাছে কৈফত চাইছো। আর ভাবলে কি করে আমি কৈইফত দেবো তোমাকে আমার যা ইচ্ছে তাই করবো আর কি বারবার এক কথা বলছো বুঝতে পারছো না আমি এখানে যাই নি তোমাকে নিয়ে অন্য জায়গায় এসেছি সেখানে গেলে এমন নিরব পেতে এতো বোকা তুমি মিষ্টি।আর সেসব ভেবে তুমি একবার আশেপাশে ভালো করে দেখেছো কি আছে তা না ফালতু কথা ভেবে যাচ্ছো।
রাজের রাগ লাগছে প্রচণ্ড এতো অবুজ নাকি সাজছে এতোক্ষণে ও কি কিছু মাথায় ঢুকে নি তার। কেন এনেছে এখানে মারিয়ার বলে মাথা খাচ্ছে এতো জম্মদিনের অনুষ্ঠানে যাওয়ার শখ জেগে অসহ্য আমি যে তার মুখে হাসি দেখার জন্য এতো কিছু করছি পুরো রেস্টুরেন্ট বুক করে সাজানো হয়েছে সেদিকে লক্ষ্যে করছে না।
–আমি ফালতু কথা কি বললাম?
–জানি না। আমি কিছু বলতে চাই তোমাকে যার জন্য এখানে এসেছি।
মিষ্টি অবাক হয়ে তাকালো রাজকে কেমন অন্য মনষ্ক লাগছে কি এতো ভাবছে আর কি বা বশবে যে এখানে আসতে হলো। তার ভালোবাসার মানুষের জম্মদিন আজ সেখানে না গিয়ে এখানে নিয়ে এলো আর এতো ডেকোরেশনই বা কেন করা হয়েছে এখানে। চোখ জুরিয়ে যাওয়ার মতো মিষ্টি আড়চোখে দেখছে কিন্তু রাজকে বুঝতে দিচ্ছে না।
–মিষ্টি তোমাকে একটা ইম্পটেন্ট কথা বলবো মনোযোগ দিয়ে শুনবে বুঝেছো।
–হুম [ বলেই মাথা নাড়ালো ]
রাজ কিভাবে কথাটা বলবে বুঝে উঠতে পারছে। মিষ্টি কি সত্যি ওকে ভালোবাসে নাকি মিনা সব মিথ্যে বলেছে। আমি এতো ভাবছি কেন ভালো না বাসলে বাসবে সমস্যা কি কিন্তু ও আর কারো হতে পারবে না। যাই বলুক না কেন রাজ ওর নার্ভাস নেস কমছে না জীবনের ফাস্ট এমন পরিস্থিতির সামনে ও কখনো কোন মেয়েকে এভাবে প্রপোজ করেনি ভাবে ও নি। আজ কিভাবে বলবে কি বলে শুরু করবে। কপালে ঘাম চলে এসেছে বিন্দু বিন্দু হাতে ফুল আছে কিন্তু সামনে আনার সাহস হচ্ছে না আমি কি ভয় পাচ্ছি কিন্তু কাকে মিষ্টি কে এসব কি হচ্ছে আমার সাথে। চোখ বন্ধ করে নিজেকে স্বাভাবিক করেতে ব্যস্ত হলো তারপর চোখ খুলে মিষ্টির দিকে তাকিয়ে দেখলো ও অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে আমাকে এভাবে দেখে হয়তো শক হয়ে আছে।
–মিষ্টি আই……
রাগে চেয়াল শক্ত হয়ে এলো রাজের এই সময় ই ফোন টা আসতে হলো কেন যে ফোনটা সাথে এনেছিলাম মিনার কাছে রেখে আসা উচিত ছিলো।ফোন বেল করে দেখে মারিয়া কাটতে গিয়ে ও কাটলো না। রিসিভ করে একটু অন্য দিকে গেল।
এদিকে মারিয়া অস্থির হয়ে আছে যাচ্ছে না বলে একের পর এক কল করছে কিন্তু রাজ রিসিভ করেনি। এখন রিসিভ করাতে মারিয়ে খুশীতে লাফিয়ে উঠে সাথে হালকা অভিমান ও হয়।
–কোথায় তুই রাজ আমি কখন থেকে তোর জন্য ওয়েট করে আছি তুই এখন ও এসে পৌছালি না কেন?
–সরি ইয়ার আমি আসতে পারছি না।
–হোয়াটটট আসতে পারবি না মানে কি রাজ? আমি কিছু শুনতে চাই না তোকে আসতেই হবে আমি কেক কাটি নি এখনো তুই না এলে আমি কিছু করবো না আববু তোকে খুজছে তুই তারাতারি চলে আয় না প্লিজ।
–আমি বিজি আছি এখন আর ওয়েট করিস না বাই।
আর উওরের আশা না করে ফোন কেটে দিলো রাজ ফোন কেটে পেছনে তাকিয়ে দেখে মিষ্টি তাকিয়ে আছে। মিষ্টি এতোক্ষণ সব কথায় শুনেছে রাজের তাতে বুঝেছে মারিয়াই ফোন দিছিলো কিন্তু রাজ সেখানে না গিয়ে এখানে কেন এলো।
–আপনার ওইখানে যাওয়া উচিত ছিলো যতই হোক আজ আপনার ভালোবাসার মানুষের জীবনের এতো বড় একটা দিন আর আপনি সেখানে না গিয়ে এখানে আমাদের কেন নিয়ে এলেন আমার মাথায় কিন্তু কিছু ডুকছে না।
–কি বললে ভালোবাসার মানুষ মানে?
–ঠিকই তো আমি জানি না বুঝেছেন আপু আমাকে সব বলেছে যে আপনারা দুজন দুজনকে ভালোবাসেন।
–হোয়াট, কোন আপু কাকে ভালোবাসি।
–এতো না বুঝার মতো করছেন কেন মারিয়া আপুকে আপনি ভালোবাসেন না। আজকে তার আববু কে আপনার সাথে পরিচয় করিয়ে দেবে বলেছে। এটা সারপ্রাইজ ছিলো কিন্তু আপনি তো গেলেনই না এখন কি হবে আপু কষ্ট পাচ্ছে হয়তো। এখানে কেন এসেছেন আমাকে কিছু বলতে চাইলে বাসায় ই বলতে পারতেন এখানে আসার কি দরকার। আর কি এমন কথা যে…..
–স্টপ ইট [জোরে চিৎকার করে বলল রাজ কথাটা মিষ্টি ভয়ে চুপ হয়ে গেল। ]
চলবে❤