লুকোচুড়ি_ভালোবাসা?পর্বঃ- ২০
#লেখিকাঃ-তানজিনা আক্তার মিষ্টি
রাতে মিষ্টি ওর মার সাথে গল্প করে মিনাকে খুজছে কখন থেকে দেখছে না আছে কই উনি। হঠাৎ রাজের রুমের সামনে নিয়ে যাওয়ার সময় হাসির আওয়াজ পায় হাত হাসাহাসি এই রুমে রাজ আর মিনার শব্দ আসে। মিষ্টি দরজায় কাছে এসে হালকা করে দরজা খুলে উকিঁ দেয় হ্যা ঠিকই তো রাজের সাথে খাটের উপর বসে আছে মিনা কি যেন বলছে কিছু বুঝা যাচ্ছে না। মিষ্টি অবাক হয়ে ওদের বিহেভ দেখছে রাজ তো সহজে ওর রুমে কাউকে ঢুকতে দেয় না তার উপর খাটে বসে আছে কি এমন বলছে মিনা যা মনোযোগ সহকারে শুনছে আর কিছু একটা বলে হেসে উঠছে আমি হা করে তাকিয়ে আছি।
হঠাৎ ওদের কথায় হাতের ধাক্কা লেগে দরজা খুলে গেল আমি অপরাধীর মতো দাড়িয়ে আছি। মনে হচ্ছে চুরি করতে গিয়ে ধরা খেয়েছি।
–আপু তুই এখানে এভাবে লুকিয়ে দাড়িয়ে ছিলি কেন?
–[ মিনার কথা শুনে রাগ সাত আসমনে উঠে গেল কিছু বলতে যাব ]
–কি হলো মিষ্টি কিছু বলছো না যে তুই আবার আমার রুমে লুকিয়ে দাড়িয়ে ছিলে? আচ্ছা আমাদের কথা লুনতে এভাবে দাড়িয়ে ছিলে নাকি।
–না মানে [ কি বলা যায় ]
মিষ্টি কিছু ভেবেই রাগি ভাবে তাখালো মিনার দিকে,,,
–আপু এভাবে তাকাচ্ছো কেন তুমি আমার দিকে।
–তুই এখানে কি করছিস?
–দেখতেই তো পারছিস কি করছি? আমি আর হ্যান্ডসাম গল্প করছি।
–[ মিষ্টি ভ্রু কুচকে তাকালো মিনার দিকে] হ্যান্ডসাম টা আবার কে এখানে আমি তোদের ছাড়া আর কাউকে দেখতে পাচ্ছি না।
–তুই কি কানা রে আপু !
–কি বললি আমি কানা?
–তা বলতে চাইনি তুই দেখছিস তো আমি আর হ্যান্ডসাম বসে গল্প করছি তবুও বলছিস আমি দেখতে পাচ্ছি না।
–ন্যাকামি আমি পছন্দ করি না মিনা। চল তো ঘুমাবিনা তোর বাজে কথা আমি শুনথে চাইনা।
–হুয়াই মিষ্টি মিনার সাথে আমার কথা আছে। তুমি যাও ও একটু পরে আসবে?
–আপনার কথা মতো চলবো নাকি আমি?
–অবশ্যই শুনবে যাও মিনা তুমি বসো।
–না মিনা বসবে না কি কথা বলবেন এতোক্ষণ ও তো বললেন কি এতো কথাওর সাথে আপনার?
–সেসব তুমি বুঝবে না বাচ্চা মেয়ে যাও আমাদের পারর্সনাল কথা আছে।
–আমি বাচ্চা।
–হ্যা
–আরে আপু যা না আমি তারাতারি চলে আসবো।
–না আমি কোথায় ও যাচ্ছি না কোন কথা বলবি না তুই চল আমার সাথে।
–না ও যাবে না।
— আমার বোন তাই ও আমার কথায় শুনবে আপনি কে যে আপনার কথা শুনবে আয় বলছি।
-আমি কে ও খুব ভালো করে জানে তাই না মিনু পাখি।
–হুম হ্যান্ডসাম আপু রা তো।
–আমি যাবো না বলেছি তো যা বলার আমার সামনেই বল।
–সব কথা কি সবার সামনে বলা যায় তুই কিছু বুঝিস না।
–মানে,,
মিষ্টির ভয় পেয়ে যায় ওদের আবার কি পারসনাল কথা না রাজের কাছে আর আসতে দেওয়া যাবে না মিনা কে। ভয়ে ও তারাতারি মিনার হাত শক্ত করে ধরে নেয় তারপর টেনে বেরিয়ে আসে রুমে থেকে।
–এই কি কথা বলছিলি?
–বলা যাবে না।
–কি এমন কথা যে আমাকে বলা যাবে না। তুই কিন্তু জানিস ওনাকে,,
–হুম জানি তো কিন্তু হ্যান্ডসাম তোকে পছন্দ করে না এটা তো তুই আমাকে বলেছিলি। তাই এখন সে যদি আমার সাথে [ বলেই লজ্জা পাওয়ার ভঙ্গি করলো ]
–এক থাপ্পর দিয়ে তোমার প্রেমের শখ গুচিয়ে দেবো অসভ্য মেয়ে একদিন যেতে না যেতেই এইসব। আর যেন তোকে রাজের আশেপাশে না দেখি ব ড় ভাই হয় তোর ভাই বলে সম্মান করবি বুঝছিস।
মিনা সামনে দাড়িয়ে কথা গুলো বলে শুয়ে পরলো মিষ্টি।
পরদিন শক্রবার তাই সব কিছু অফ।
মিষ্টি মেজাজ খারাপ করে দাড়িয়ে আছে ও বলার পর মিনা রাজের পিছু ছারে নি। দুজনের কি ভাব রাজের সাথে বেশি রাগ লাগছে ও না হয় ছোট ভবুঝে না তাই তুই ও এমন করবি। নিজের গালফ্রেন্ড থাকতে ও। রেগে খালি পরোক্ষ করছে ক রছে সব কিছু বিকেলের দিকে মেজাজ আরও খারাপ হয়ে গেল। বেরাতে কোথায় যা দেখে আর এ বেশি রেগে যায় কিন্তু ওর রাগ থাকলে বা কার কি কেউ তো শুনছে না। তাই নিজে ও রেডি হয়ে নিলো ওদের সাথে যাবে।
–একি আপু তুই আবার কোথায় যাচ্ছিস এই সময়?
আমি আসছি দেখে এ কথা বলল মিনা। মিনা রাজের গাড়ির সামনে দাড়িয়ে আছে আর রাজ এখন নাই মনে হয় বের হয় নি এখন ও। ওর কথা শুনে দাতে দাত চেপে উওর দিলাম।
–কোথায় আমি কি করে জানবো?
–কি বলছিস তুই বেরাতে যেতে রেডি হয়েছিস না জেনেই কার সাথে যাচ্ছিস।
–হ্যা না জেনেই তোরা কোথায় যাবি আমাকে কি বলেছিস বা যেতে বলেছিস আমি ও যে কতো দিন হলো বেরাতে যাই না আর তুই কিনা আমাকে রেখেই যাওয়ার জন্য চলে এলি।
বকে লাভ নেয় জোর করে ও না ইমোশনাল হয়ে বললে মিনা আমাকে রেখে যাবেই না।
রাজকে একবার হাতের কাছে পাই তারপর সেনা আমার বোনকে অবলা পেয়ে এমন করা না। একজন কে ভালোবেসে দুইদিন পর এনগেজমেন্ট এখন এইসব আমি মারিয়া আপু বলে দেব সেই কথা বলবো তাহলে আর,, পেছনে থেকে রাজ কণ্ঠ পেলাম।
–মিনা তোমার বোন ও কি যাচ্ছে নাকি আমাদের সাথে। ও গেলে তো আমাদের একা বেরানো হবে না।
কথাটা কানে আসতেই আগুন চোখে তাকালাম,,
–আপু যাবে আমার সাথে।
–কেন তখন যা বললাম,,
–বাদ দাও তো আপুকে ছাড়া আমি যাবো না আপু কষ্ট পাচ্ছে। আপু চল গাড়িতে উঠ,
–আরে শুনো তো আমার কথা।
আমার উদ্দেশ্যে সফল আমার নাটক ভালোই হয়েছে। সারা রাস্তায় আমি আর মিনা গল্প করলাম। রাজ সারা রাস্তায় আর কিছু বলে নি।
মিষ্টি রাগী ভাব নিয়ে তাকিয়ে আছে। সামনে দাড়িয়ে ফুসকা খাচ্ছে রাজ আর মিনা মিষ্টি রাগে ফায়ায়হয়ে আছে এই লোকটা সেই দিন আমার সাথে ফুসকা খেলো না সে নাকি পছন্দ করে না জোড়া করে খাওয়ানোতে জালের মরে যাওয়ার অবস্থা আজ এতো সুন্দর করে খাচ্ছে যেন এইটা তার সব চেয়ে প্রিয় খাবার আমি বললে সেটা অপছন্দ আর এখন।
চোখের সামনে নিজের ফেবারিট খাবার খাচ্ছে কি মজা করে আর আমি একবার না করেছি বলে কি না বলে খাবে আর একবার বলবি না। খাওয়ার জন্য মনটা ব্যাকুল হয়ে আছে কেউ আর ডাকলো না। দূর রেগে বসে থাকলে কি হবে? আমাকে যেতেই হবে লাজ লাজুকতা বাদ দিয়ে এগিয়ে গেলাম।
–মামা দুই প্রিলেট ফুসকা দেন জ্বাল বেশি করে তারাতারি।
কারো দিকে না তাকিয়ে নিজের মতোখেয়ে যাচ্ছি। দুজন ভূতের মতো আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
–কিরে এভাবে তাকিয়ে আছিস কেন? আমি কি বাঘ নাকি ভাল্লুক আগি কখনো দেখিস নি তোরা তো আমাকে রেখেই খাবি কি করবো তাই নিজের রাগ মাটি করে চলে এলাম।
–আপু আস্তে খা গলায় আটকাবে।
–আমি আস্তে খাচ্ছি তোদের আমার খাওয়া সহ্য হচ্ছে না তাই আমি জানি।
–আরে এমন না তোকে তো বললাম তুই ই তো আসলি না।
–একবার কেন বলবি আরেকবার কি বলা যেত না। ফাজিল মেয়ে উনি তো আমাদের কেউ না উনি নাই বলতে পারে তুই তো আমার বোন তুই তো জানিস আমি কতো পছন্দ করি ফুসকা এটা আমার চোখের সামনে থাকলে না খেয়ে থাকতে পারি।
কথা বলছি আর খাচ্ছি ফট করে গলায় আটকে গেল ফুসকা রাগে তারাহুরা করে বেশি মুখে দিয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে কেশে উঠলাম,,,
চোখ দিয়ে পানি চলে এসেছে এতত কাশছি মিনা তো ভয় পেয়ে গেছে রাজ পাশে ফোনে কথা বলছিলো আমার কাশি শুনে ভ য় পেয়ে ব্যস্ত হয়ে উঠে একের পর এক কথা বলেই যাচ্ছে সাথে বকা ফ্রী। রাজ দৌড়ে পানি এনে আমাকে খাওয়ায় আসতে আসতে ঠিক লাগে নিজেকে কিন্তু গলা ব্যাথা করছে কাশার ফলে চোখ। কথা বলছি না রাজ এমন করছে যেন কষ্ট আমার না তার হচ্ছে।
–আপু ঠিক আছিস তুই।
–এমন রাক্ষসীর মতো খেলে ঠিক কি করে থাকবে। তোমার আপু কে বলো আমরা তাকে রেখে খাচ্ছি লাম না তার জন্য প্যাকেট করে নিয়েছি। এমন ভাবে না খেলে ও হতো এখন কোন খারাপ কিছু হয়ে গেলে কি হতো। ননসেন্স কোন কিছু ঠিক মতো করতে পারে না এখন বাচ্চামো গেল না।
আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি। সব সময় সবাইকে কেন যে এতো ভুল আমি বুঝী রাজ রাগ লাল হয়ে অন্য দিকে তাকিয়ে আছে।
চলবে❤