লুকোচুড়ি_ভালোবাসা?পর্ব-৫

0
2626

লুকোচুড়ি_ভালোবাসা?পর্ব-৫
#লেখিকা:তানজিনা আক্তার মিষ্টি ( Tanjina Akter Misti)

গ্রামের মেয়ে আমি। ছোট থেকে গ্রামেই থেকেছি বাবা মা আর ছোট বোন নিয়ে ছিলো আমার ছোট হাসি খুশি পরিবার খুব আনন্দে আমাদের সময় কাটছিল আববু প্রাইমারি স্কুল টিচার নাম মইনুল ইসলাম। মা রুনা আক্তার আর আমি মিষ্টি। ছোট বোন মিনা। আমার থেকে চার বছরের ছোট ও। মধ্যবিও পরিবার আমাদের বাবা মা বোন নিয়ে খুব ভালোই কাটছিল সময় কিন্তু ভালো যে কারো কপালে বেশি দিন থাকে না আমাদের ও থাকলো না তখন আমি এইটে পরি আর আমার ছোট বোন ফাইভে তখনই সব তছনছ হয়ে গেল। সমস্ত সুখ কীরে নিয়ে আমার আববু পারি জমালেন পরপারে। খুব কিদেছিলাম সেদিন সেদিনের আগে এত কষ্ট আর কাদতে কেউ হয়তো আমাকে দেখে নি। খুব দুষ্টু ছিলাম ছোট থেকে বড় মেয়ে ছিলাম আববু আমার খুব ভালো বাসতো মিনাকে ও কিন্তু আমাকে বেশি। আববু কে হারিয়ে একেবারে চুপ হয়ে গেছিলাম আগের মতো আর দুষ্টু মি করতাম না কেন যেন সব আমার থেকে হারিয়ে গেছে চাইলো ও হতে পারতাম না। নিজের কষ্ট ভুলতে গেলে মাকে দেখতাম রাতে একা একা কাদতো তখন আমার বুকটা ফেটে যেত কেন এমন হলো।

কোন দিন নানা বাড়ি দাদা দাদি কাউকে দেখি নি বাবা মায় ছিলো আমার সব বাবাকে এভাবে হারিয়ে সবাই একটা কঠিন পরিস্থিতির সমোক্ষিণ হয়েছিলাম। টাকা পেতাম সেটা সরকারি জব ছিলো বলে কিন্তু কম টাকা যা দিয়ে দুই বোনের পড়া লেখায় হিমসিম খাচ্ছিলো আম্মু যা তার মুখের চিন্তার সাফ দেখে বুঝেছিলাম। কিন্তু আম্মু আমাদের সেই চিন্তায় ফেলতো না। কষ্ট হলেও বুঝতে দিতো না আমি তখন আববুর কষ্ট নিয়ে ছিলাম আস্তে আস্তে সেটা কমে আসে ভুলতে থাকি কষ্ট হালকা হয় আবার আগের মতো হতে থাকি মাঝে মাঝে আববু বলে কাদি মিস করি। আমার মাধ্যমিক পরিক্ষা চলে আসে মন দিয়ে পরি আববু পাশে ছিলো না আম্মু কথা ভেবেই পরি এবং জি পি এ ফাইভ পেয়ে খুশির জুয়ার আসে বাড়িতে আববুর শূন্য তা উপভোগ করি আববু চাঈতো আমি ভালো রেজাল্ট করলে আববু সবাইকে মিষ্টি খাওয়াবে কিন্তু আম্মু সেটি করে না আমি বললে চুপ থাকে আমি বলি আববুর মতো সবাইকে মিষ্টি খাওয়াও না আম্মু আববু তো এটা করবে বলেছিল তুমি কেন করছো না?
“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
আম্মু সেইদিন আমাকে প্রথম এতো বড় একটা ধমক দিয়েছিল যাতে আমার আত্মা কেপেঁ উঠেছিলো…. আম্মুর দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে ছিলাম আম্মু একটা কথায় বলেছিল যাতে আমি বুঝেছিলাম কতো টা কষ্ট ভেতরে চেপে রেখেছে আম্মু আর আমি তা বুঝিনি। বা বুঝার চেষ্টা ও করিনি আববু কে নিয়ে কষ্ট তারপর নিজে সামলে স্বাভাবিক হয়ে আবার সব ভুলে যেতে বসেছিলাভ কিন্তু অভাব ঘিরে ধরে আববু বেতন আস্তে আস্তে কমতে থাকে এক পযার্য়ে তারা বলে আর দেবে না একে বারে অভাবে পরে যায় আমি ডিসিশন নিয়ে নেই কলেজে ভর্তি হবো না কিন্তু আম্মু ধমক দিয়ে ভর্তি করিয়ে আনে ব্যাংকে কিছু টাকা জমানো থাকে যা দিয়ে। আম্মুর এক কথা যাই পরিস্থিতি আসুক লেখাপড়া কখনো ছারতে দেবে না। আমার হাত ধরে বলে….. কথা দে কখনো পড়া লেখা ছাড়ার কথা বলবি না নিজের পায়ে দাড়াতে হবে এই সমাজ থাকা অনেক কঠিক টাকা ছাড়া চলে না তুই ভালো পড়ে আমাদের দেখবি না মা।
সেই দিন প্রতিজ্ঞা নেই যাই হোক ভালো করে পড়া শুনি করবো। কলেজে গিয়ে আমি টিউশনি করি তখন আম্মুর কথা ভেবে কিন্তু আম্মুকে বললে না করবে তাই লুকিয়ে করি কিন্তু ধরা পরে যাই তা নিয়ে কি বকাটাই না বকে আম্মু।

তারপর বাদ দিয়ে দেয় কিন্তু কলেজে টাকা লাগে বেশি এদিকে মিনা ও হাই স্কুলে ওর ও ভালোই লাগে আমি আম্মুকে অনেক বুঝিয়ে বললাম যে প্রাইভেট পরালে আমার পড়ার ক্ষতি হবে না আমি পড়া ঠিক মতোই করবো আম্মু রাজি হয়ে গেল। এইচ এস সি পরিক্ষায় গোল্ডেন পেলাম না A+ পেলাম খালি কিন্তু আমি খুশিই ছিলাম আম্মুর মুখটি ভারছিলো। এখন আসলো ঢাকায় কোচিং নিয়ে আমি বললাম নিজেই পরতে পারবো আম্মু মানতে নারাজ কোচিং করিবেই ন য় পাবলিকে চান্জ পাব না রাজি হলাম বিপদ হলো থাকবো কোথায় তখন হঠাৎ আম্মু তার ভার্সিটির বান্ধবীর কথা মনে পরে আমার আম্মু কিন্তু শিক্ষিত। ধনী ঘরের মেয়ে আম্মু আর আববু ছিলো একা ছেলে যার বাবা মা কেউ নেই আম্মা সাথে আববু রিলেশন ম্যারিজ হয়।
সেই বান্ধবী সাথে ফোনে যোগাযোগ করে আমাকে ও কথা বলায় আর সেখানেঈ থাকতে পাঠায় কোচিং এর জন্য।

দুটো ব্যাগ হাতে নিয়ে ট্রেনে বসে আছি। ফোনের ব্যালেন্স কখন শেষ হলো খেয়াল ই করিনি এখন নেমে আমি তাকে চিনবো কি করে আন্টি বলেছে তার ছেলে আসবে নিতে কিন্তু আমি তো তাকে চিনি না আন্টিকে ফোন দিয়ে যে জিগ্গেস করবো তার ও উপায় নেই।
ট্রেন থেকে নেম দাড়িয়ে আছি প্রচণ্ড ভার হয়েছে ব্যাগ গুলো আম্মু রান্না করে দিয়ে অথচ আমি কিছু ই খায় নি সব সেই ভাবেই আছে। যার জন্য এতো ভার লাগছে।
ঘড়ির কাটায় দুটো বাজে কে আসবে নিতে কেউ তো আসছে না আশেপাশের সবাই কে চোখ ভুলাচ্ছি কাউকে চোখে পরছে না যে আর জন্য আছে। দূর কতোক্ষণ দাড়িয়ে থাকবো দুটো বিশ বেজে গেছে পা ও বিশ হয়ে আসছে। মিষ্টি খেয়াল করলো ওর থেকে কিছুটি দূরে একটা ছেলে গাড়িতে হেলান দিয়ে ফোন টিপছে একবারের জন্য ও উপরে তাকাচ্ছে না। মিষ্টি একবার পরো ক্ষ করলো কি এতো দেখে ফোনে আল্লাহ জানে এভাবে একধ্যানে তাকিয়ে আছে। আশেপাশের সব ধংস হয়ে গেলে ও চোখ উপরে তুলবে না আমি সিউর কিন্তু এভাবে দাড়িয়ে আছে কেন ছেলেটা। ছেলেটার শরীরে সাদা শার্ট হাতে ঘড়ি কালো পান্ট গিয়ের রং ফর্সা একদম সাদা আমার থেকে ও ফর্সা। এতো ফর্সা কেন রে বাবা ছেলেদের এতো ফর্সা ভালো না। আবার দাড়িয়ে আছে আমাকে কি কেউ নিতে আসবে না কাউকেই তো আমার জন্য অপেক্ষা করতে ও দেখছি না। আবার ওই ছেলেটার দিকে তাকালো মিষ্টি।

ওই ছেলেটি তো অনেক ক্ষণ নরে ওই ভাবে আছে ওনি ও কি কারো জন্য অপেক্ষা করছে হ য়তো বা। একবার জিগ্গেস করি এগিয়ে এমন ও তো হতে পারে ওনি আমাকে নিতে এসেছে।
মিষ্টি এগিয়ে গেল সামনের ছেলেটির দিকে।

–এই যে আপনি কি…..

আমার কথা শেষ হওয়ার আগেই ছেলেটি বলে উঠলো….

— ইউ তুমি এতো লেট করলে তোমার জন্য আমার বেড়িতে যাওয়া কান্সেল হবে সবাই পাগল করে খাচ্ছে এই জন্য আম্মুকে বলেছিলাম এ সব ফালতু কাছে আমাখে পাঠিয় না কিন্তু না আমাকে ই পাঠাতে হবে। তারাতারি খিড়িতে উঠো আমার হাতে সময় খুব কম?

মিষ্টি হা হয়ে কথা শুনছে ছেলেটি কি পাগল এভাবে কেউ কাউকে গাড়িতে উঠতে বলে জীবনে দেখে নি। মিষ্টি ভাবছে আচ্ছা ছেলেটি যদি সত্যি পাগল হয় না ভাঈ এর সাথে যাওয়া যাবে না। চেনে না জানে না হঠাৎ গাড়িতে উঠতে বলেছে নিশ্চিত পাগল হবে কোন আমি যেই পেছনে ঢ়রে চলে আসতে যাব আবার কথা বলে উঠলো…..

— তুমি ওই দিকে কোথায় যাচ্ছে আমি তো গাড়িতে উঠতে বললাম?

— আপনি কি পাগল?

— হুয়াট

এত জোর বশল যে আমি কেপে উঠলাম।

— না মানে রাগবেন না প্লিজ। আমার মনে হচ্ছে আপনি পাগল আমি কি আপনার সাথে কথা বলেছি বলে এভাবে নিয়ে যেতে চাইছিন সরি আসলে।

— স্টপ ইট কি সব আবুল তাবুল বলছো আমি ম্যাড রিয়েলি এটা তুমি আমাকে বলছো আমার মতো এতো কিউট সুইট একটা ছেলেকে তোমার পাগল মনে হচ্ছে লাইক সিরিয়ালি?

— না আপনাকে দেখে একদম তা মনে হয় না পাগল হলে ও কেউ বলবে না আপনি এতো স্মার্ট যে সবাই

— হুয়াট তুমি আবার আমাকে পাগল বলছো।

— হুম আপনি পাগল না হলে এভাবে আমাকে গাড়িতে উঠতে বলতেন না অচেনা কাউকে।

— ও মাই গড এই জন্য। হ্যা এটা ঠিক তোমাকে চিনি না বাট আমি একটা মেয়েকে রিসিভ করতে এসেছি। আর তুমি একটা মেয়ে সো সেই তুমি আমি সিউর।

— এভাবে যাচাই না করে কনফিডেন্স দেওয়া ভালো না আমি সেই মেয়ে নাও হতে পারি। আপনার যাচাই করা উচিত ছিলো আচ্ছা আপনি না করলে ও আমি না করে যাচ্ছি না।

— আমার এমনিতে লেট হয়ে গেছে এখন এত যাচাই করা লাগবে না তুমি চলো পড়ে করে নিয়।

— পরে করলে হবে না এখন ই করতে হবে আপনি সাথে চলে গেলে যদি ভুল জায়গার চলে যায় তখন আমি আসল জায়গায় পৌঁছাবো কি করে? আপনার ফোনটা দেন আমি আন্টি কে ফোন দেব?

— কেন

ওনাকে কিছু না বলে আমি ফোন টান মেলে।আতে থেকে নিয়ে নিলাম।

চলবে❤

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে