লুকোচুড়ি_ভালোবাসা?পর্বঃ- ২৭
#লেখিকাঃ-তানজিনা আক্তার মিষ্টি
–তুই এতো খুশি কেন? আর কী বললি রাজকে পেয়ে গেছিস মানে।
মারিয়ার ফ্রেন্ড তোয়া অবাক চোখে মারিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে কি চলছে ওর মনে ওবুঝতে পারছে না।
মারিয়া কিছুদিন খুব ডেসপারেট হয়ে গেছিল ওর বাবার হ্যাট এ্যাটাক হলো সেদিন ও তেমন কষ্ট ওর মধ্যে দেখি নি। ফোনে খবর টা শুনে দিলাম ও কোন রিয়াকশন করলো না নিজের ইচ্ছে মতো পার্টি করে বাসা চলে গেল আমি সাথে গেলাম ওর বাসায় ডাক্তার নার্স ভর্তি সেদিকে খেয়াল করলো না রুমে গিয়ে ঘুম।
নিজের কষ্ট নিয়ে এতো ভাবছে যে আমি জিগ্গেস করলে বলতো,,” পাপ্পা কে নিয়ে আমি বসে থাকি নাকি ওনাকে দেখার অনেক লোক আছে ঠিক হয়ে যাবে কিন্তু রাজকে এনে দেওয়ার কেউ নেই। পাপ্পা আমার কথা ভেবে যেতে পারলো না রাজের বাড়িতে তাই তো আমি নিজে ই সব সেট করে এসেছি এবার রাজ আমার হবেই। ”
” মানে কি বলছিস কি করেছিস?”
” সময় মতো জানতে পারবি এখন কিছু বলছি না।”
কয়েকদিন ধরে মারু কে একটু বেশি খুশি দেখছি ও কি করেছে এতত কনফিডেন্টলি কি করে বলছে কি করেছে। রাজের জন্য এতো হাইপায় অথচ নিজের বাবার জন্য এর একটু চিন্তা ও দেখছি না।
–কি রে তোয়া কি ভাবছিস এমন করে? চল তারাতারি আজকে রেস্টুরেন্টে চল যা ইচ্ছে খা বিল আমি প্রে করবো। আজ আমি খুব খুব খুশি।
তোয়া কিছু বলার সুযোগ পেল না ওকে টেনে নিয়ে রেস্টুরেন্টে গেল।
.
রেহেনা বেগম গভীর ভাবে চিন্তায় মগ্ন হয়ে আছে। মন টা খুব অশান্ত তার সে মানতে পারছে না কি ভেবেছিল আর কি হতে যাচ্ছে। কতো আশা রাজ আর মিষ্টি কে নিয়ে ওদের বিয়ে দেব। কিন্তু ছেলে আমার নিজেই মেয়ে পছন্দ করে রেখেছে কে জানতো। সেদিন মেয়েটা এসে না বললে তো জানতেই পারতাম না।একবার ও ভাবিনি ছেলের পছন্দ থাকতে পারে ভেবেছি আমার ইচ্ছেতেই চোখ বন্ধ করে মমেনে নেবে। এখন দেখছি এটা ভুল ছেলেও যে পছন্দ থাকতে পারে ভাবা উচিত ছিলো। মিষ্টি মা এসেছিল ওকে তো এবারই বলতে চেয়েছিলাম রাজ আর ওর বিয়ের কথা খুব বাচা বেচে গেছি বলে দিলে কী হতো? কোন দিকে যেতাম ছেলের দিকে নাকি বান্ধবীর দিকে। মেয়েটাকে আমার একটু ও পছন্দ হয় নি দেখতে ভালো হলে ও ড্রেস আপ একটু ও ভালো না। কি সব ভাবছি আমার এক ছেলে ওর সুখই তো আমার সুখ ও যাকে নিয়ে সুখি তাকেই মেনে নেওয়া উচিত আমার।
মাথা ধরেছে খাটে এসে শুয়ে পরলো কাল বাড়ি গিয়ে বিয়ের চিন্তা ভাবনা করতে হবে।
সেদিন
রাজ মিষ্টি চলে ভার্সিটিতে যাওয়ার পর সোফায় বসে ছিলো। হঠাৎ সঙ্গে সঙ্গে কলিংবেল বেজে উঠে।
এখন আবার কে এলো সব তো গেল। কে এলো আবার চিন্তা করছে একের পর এক বেল বেজেই চলেছে। তারাতারি উঠে গেল দরজায় কাছে দরজা খুলে ভ্র ঢ় কুচকে এলো তার এ আবার কে।
তার সামনে দাড়িয়ে আছে একটা মেয়ে। পরনে শর্ট ড্রেস পরা যা তার একদমি পছন্দ না। মেয়েটি গায়ের রং ফর্সা। মেয়েটি কে ভাবছ।
–আন্টি আপনি নিশ্চয়ই রাজে আম্মু।
হঠাৎ একথা জিগ্গেস করায় অবাক হ য়ে তাকিয়ে আছে। এই মেয়ে জানলো কেমনে আমি কে? মাথা নেড়ে সম্মতি জানালো।
–তুমি কে আমাকে চিনলে কি করে আর বাবুনকেই চিনলে কিভাবে?
–আন্টি আপনি আমাকে চিনবেন না আমি রাজের খুব কাছের একজন।
“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
–মানে বুঝলাম না।
–আন্টি এখানেই দাড়িয়ে কথা বলবেন নাকি ভেতরে যেয়ে।
–ওহ আমার খেয়ালই ছিলো না আসো ভেতরে আসো।
সোফায় এসে আরাম করে বসলো মারিয়া।
–তা তোমার নাম কি রাজের ফ্রেন্ড নিশ্চয়ই রাজকে খুজতে এসেছো নাকি?
–না আন্টি রাজকে খুজতে আসি নি।
–তাহলে।
— রাজ তো জানেই না এখানে এসেছি। আমি তো না জানিয়ে এসেছি আপনার সাথে আমার কিছু কথা আছে সেগুলো বলতে।
–কি কথা?
–বুঝতেছিনা কি ভাবে কথা টা বলবো? রাজ আপনাদের অনেক মানে আপনাদের কথার বাইরে যাবে না। আর আপনাদের জানাতেও পারে না যে আমরা দুজন দুজন কে ভালোবাসি। বিয়ে করতে চাই কিন্তু আপনাকে জানাতে সাহস পায় না।
একে একে যা বলল মেয়েটা সব শুনে আমি পাথর হয়ে বসে ছিলাম। রাজ মেয়েটাকে ভালোবাসে আমাদের বলতে ভয় পায় তাই বলে নি। মেয়েটা রাজকে না জানিয়ে আমাদের জানাতে এসেছে ওদের কথা। আমি যাতে রাজি হয়ে যাই যাওয়ার আগে এ ও বলেছে রাজকে যেন না বলি রে ও এসেছিল।
.
–এসব কি মিষ্টি তুমি রেডি না হয়ে এভাবে বসে আছো কেন আর শাড়ি এভাবে পেছিয়ে আছো কেন?
–কি করবো আমি শাড়ি পরতে পারি নাকি যাই এভাবে বসে আছি। আপনাকে আগেই বলেছিলাম আমি শাড়ি পরতে পারিনি আগের বার মিনা পরিয়ে দিতেছিলো কিন্তু এখন তোমার আর মিনা নাই কে পরিয়ে দেবে মামুনি ও নাই।
–একটু টাই করো না প্লিজ কোনভাবে পরে ফেলো। এভাবে তো আর যাওয়া যায় না আজ আমাদের একটা বিশেষ দিন আর তুমি শাড়ি পরবে না।
–আমার ভয় করছে বিয়েটা করতে হবে না। মামুনি রা যদি আমাদের মেনে না নেয় তখন কী হবে বলেন তো। হুট করে কিছু করা উচিত না আমার…
–মিষ্টি স্টপ তুমি তারাতারি রেডি হয়ে আসো আমি কিছু শুনতে চাইনা। আর আম্মু আববু কে নিয়ে তোমার এতো ভাবতে হবে না। আমি তাদের একমাএ ছেলে তারা আমার ইচ্ছে কেই প্রাইরটি দেবে আমি জানি।
–হ্যা তাহলে একা কেন সবাইকে ঠকানো হবে এভাবে সবাইকে না জানিয়ে কাজটা করলে।
–আমরা বলবো না বিয়ের কথা। তাদের কাছে আমরা আমাদের ভালোবাসার কথা বলেই রাজি করিয়ে সবার মতে বিয়ে করবো। কিন্তু আজকে বিয়ে হবেই আমার মনে তোমাকে হারানোর ভয় পাচ্ছি প্লিজ মিষ্টি কথা বারিয় না।
মিষ্টি রাজের মুখের দিকে তাকিয়ে আছে এক দৃষ্টিতে রাজকে ভয় পেতে দেখছে হারানোর। মুখটা মলিন করে
আছে যা দেখে আমার বুকের ভেতরে তীব্র কষ্ট হচ্ছে না রাজকে কষ্ট দিতে পারব না আমি। একদিন আগে পরে তো রাজকেই আপন করে নেব। আজকে নিলে সমস্যা কি? ও যদি খুশি থাকে আজকে বিয়ে করে করে নেয় ওর খুশির জন্য। রাজকে নিচে পাঠিয়ে দিলাম।
আবার শাড়ির পরতে লাগলাম অনেক ভাবে পেচাচ্ছি হচ্ছে না পরতে পারলে ও খুলে যাচ্ছে। বাইরে থেকে রাজের ডাক কানে আসতেই কোন ভাবে পেচিয়ে নিলাম আয়নার সামনে গিয়ে দাড়ালাম হয়েছে কিছুটা এখন খারাপ লাগছে না কিন্তু পেট এতো উচু হয়েছে। কেমন হয়েছে কুচি আর ও ঘুরিয়ে দিলাম তবুও নিচু হচ্ছে না ওইভাবেই আচল দিয়ে শরীর ঢেকে নিলাম।
চুল খোলা পছন্দ করে রাজ তাই চুল খলা রাখলাম আর হালচা সাজলাম। লাল শাড়ি পরেছি এটা রাজ কিনে এনেছে। আবার ডাক আসতেই মিষ্টি দৌড়ে বেরিয়ে এলো সিড়ি দিয়ে নেমেই কুচী খুলার মতো অবস্থা হাত দিয়ে চেপে ধরে হাটছে।
রাজের দিকে চোখ পরতেই লজ্জা চোখ নামিয়ে নেয় মিষ্টি হা করে তাকিয়ে আছে মিষ্টি লজ্জা পেয়ে হাটছে হঠাৎ কুচি ছেড়ে হাটতে লাগে আচল আঙ্গুলে পেচাতে পেচাতে সাথে সাথে কুচিতে পা বেজে ধরাম করে পরবে কিন্তু রাজ সঠিক সময় ওকে বুকে জরিয়ে নেয়।
–এখনই তো গেছিলা ধপ করে নিচে পরতে একটু সাবধানে হাটতে পারো না। আর আমাকে দেখে লজ্জা পেতেপ না করেছিলাম না তোমাকে।
মিষ্টি ভয় পেয়ে গেছে অনেক তাই রাজের বুকে মাথা রেখে আছে চুপ করে কিছুই বলছে না। রাজের কথা কানে আসতেই মাথা উচু করে তাকালো ওর দিকে।
–আপনি ওই ভাবে তাকিয়ে ছিলেন কেন আমার লজ্জা করে না বুঝি।
–আবার লজ্জা আমাকে এতো লজ্জা পাও কেন।
–জানি না।
–তোমাকে দেখে কি মনে হচ্ছে জানো।
মিষ্টি ভ্রু কুচকে তাকালো।
–তোমাকে বলবো না চলো।
রাজ মিষ্টির হাত ধরে গাড়িতে উঠে বসলো। মিষ্টির ভয় করছে মার কথা মনে পরছে মাকে কি ভুল বুঝবে আমাকে। কিন্তু রাজ তো খুব কষ্ট পাচ্ছিল তাই তো রাজি হওয়া। রাজকে খুব ভালোবাসি মা ওর কথা ফেলতে পারলানা তুমি আমাকে ভুল বুজো না প্লিজ।
গাড়ি থেমে যাওয়ায় মিষ্টি তারাতারি রাজের দিকে তাকালো,
–আমরা কি এসে গেছি?
রাজ কিছু না বলে মিষ্টি কে একটানে বুকে এনে ফেলল, তারপর চোখের পানি মুছে দিলো।
–কাদছো কেন কি হয়েছে? আমি কি তোমাকে বেশি জোর করে কষ্ট দিয়ে ফেলেছি আচ্ছা সরি। বিয়ে করবো না চলো চলে যাই তোমাকে কষ্ট দিয়ে আমি কিছু করতে চাইনা। তোমার চোখের পানি দেখলে আমার খুব কষ্ট হয় খুব। তুমি রাজি না থাকলে বাদ সবাই কে না জানিয়ে কিছু করবো।
চলবে❤